ভিড় থেকে সরে আসি। সমুদ্র জানে না কারও নাম। অনেক লেখার শেষে সাদা পাতা এখনও আরাম...শ্রীজাত

রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

কবি তুষারকান্তি রায়ের সাক্ষাৎকার




   সাক্ষাৎকার কার কবি শ্রী তুষারকান্তি রায়ের
♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥

জলফড়িং ওয়ের ম্যাগের পক্ষ থেকে আপনাকে প্রথমেই জানাই নমস্কার।

১.)এই সমসাময়িক সময়ে তুষার কান্তি অন্যতম কবিদের মধ্যে একজন। যদি বলি এই উপলব্ধিটা তোমার কেমন লাগে কি বলবে ?

উ:-আমি মনে করি না ।  তোমরা বলছো ভালো লাগছে ।


২.) প্রথমে শিক্ষকতা করতে, হঠাৎ করে লেখালেখি করতে করতে ঠিক কখন তুমি কবি হয়ে গেলে টের পেয়েছো?

উ:-২০০৭  সালের পর থেকে দেশ পত্রিকা সহ বিভিন্ন পত্রিকায়  আমার লেখা পরপর ঠাঁই পেলে অনেকে বলতে লাগলেন  আমার লেখা নাকি কবিতা হচ্ছে ।

৩.) কত বছর বয়স থেকে লেখালেখি করছো?

উ:-সাত বছর বয়সে ' দাদুর  পরিবার ' নামে একটি গল্প লিখে গোপন খাতায় রেখেছিলাম ।


৪.) তোমার প্রথম কবিতা কী মনে আছে?

উ:-পৃথিবীর বুক থেকে  অনেক দূরে,

৫.) কবিতা ছাড়া কিছু লেখো?

উ:-গান,  ছোটগল্প,  উপন্যাস,  আর্টিকেল, বইয়ের আলোচনা ।


৬.) আচ্ছা সবাই বলে কবিদের নাকি বয়স হয়না! তোমার কি মনে হয়?

উ:-কথাটা একেবারে মিথ্যে নয় ভাই ।তাদের মন সর্বদাই তরুন চোখে দেখতে ভালোবাসে ।না হলে আপডেট থাকা যায় না যে । তাই তাদের বয়স বাড়ে   না। ।  তারা সর্বদাই কচি সবুজ থাকতে পারেন ।   আসলে কবিতা তো পাগলদের জন্য । তবে লেখায় বয়সের ছাপ লাগেই । কারণ বয়সের সঙ্গে সঙ্গে  আবেগ সংহত হয়  আর লেখায় মেধা যুক্ত হয়,  অভিঞ্জতা তো তাকে  আরো সমৃদ্ধ করে ।

৭.) তুষার ছোটো বেলায় কেমন ছিলো! দুষ্টু/শান্ত?

উ:-যথেষ্ট শান্ত এবং  অন্তর্মুখী ।


৮.) তোমার লেখা কিছু বই-র নাম?

উ:-'সৃজন তুমি লিখতে পারো না তো ' ,  'আলাপী শিশির ' , '  বাউলের বারোকথা '  , 'অকাল কিশোর ' , '  সন্ধ্যা তারার গন্ধ '  , ' কিউমুলোনিম্বাস' ।

৯.) আচ্ছা এখন অবধি ক'জন মানুষ কবি তুষার কান্তি কে চেনে?

উ:-সঠিক জানি না ।

১০.) ছোটোবেলার কোনও স্মরণীয় ঘটনা যদি বলো?

উ:- আমাদের বাড়িতে কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যাযের সঙ্গে কথা  এবং মঞ্চে  তাঁর  উপস্থিতিতে কেউ কথা রাখেনি  আবৃত্তি করা ।


১১.) নিজেকে কীভাবে পছন্দ করো কবি না শিক্ষক?

উ:- মানুষ ।


১২.) এখনকার দিনে তোমার কী মনে হয়, যে তোমার কাছে পাবলিশার্স এসে কবিতা নিয়ে গিয়ে ছাপাবে?

উ:- আমার মনে হয়  আমি  এখনো সেই পর্যায়ে পৌঁছতে পারি নি ।


১৩.) আচ্ছা এলজন কবির শুধু লেখালেখি কি পেট চালাবে?

উ:- না ।

১৪.) কবি হিসেবে তুমি নিজেকে কত দেবে আর সাধারণ মানুষ হিসেবে কত দেবে?

উ:- এখনো সেভাবে ভেবে দেখিনি ভাই ।





১৫.) ভবিষ্যৎ-এর ইচ্ছা কী?

উ:-লেখালেখি ।







১৬.)  নতুন কী ভাবছো?

উ:-একটি  ঐতিহাসিক উপন্যাস লেখার জন্য পড়াশুনা ।


১৭.)  প্রতিদিন নিয়ম করে লেখার কাছে যাওয়া হয়?

উ:-প্রায় রোজই ।

১৮.) লেখালেখি ছাড়া অবসর টাইমে কি করো?

উ:- পড়াশুনা,   গান শোনা ।

১৯.)   কবি তুষারের প্রতিদিনের রুটিন?

উ:-আর পাঁচজনের মতো খুব সাধারণ ।

২০.) লিটিল ম্যাগাজিন নিয়ে তোমার মতামত?

উ:-ছোট পত্রিকা চিরকাল বৃহতের  আতুরঘর । জন্মের পর থেকেই দেখেছি '  আরশি '  পত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে  আমাদের বাড়ি থেকে । তৎকালীন প্রায় সকল প্রতিষ্ঠিত কবি লেখক এর সঙ্গে সঙ্গে প্রকাশিত  হচ্ছে কচি কাঁচাদের লেখা । তখন থেকেই জানি কাজটি অতি কঠিন । তাই যারা লিটল ম্যাগাজিন করেন আমি তাঁদের ভয়ানক শ্রদ্ধার চোখে দেখি । এখনো কোন ছোট পত্রিকা লেখা চাইলে সঙ্গে সঙ্গে লেখা দিয়ে গ্রাহক হবার  আবেদন জানাই ।ভাবি  আমার মতো  অন্তত একশো জন সামান্য প্রাণবায়ু দিলে পত্রিকাটি দীর্ঘজীবী হতে পারে । আমার প্রথম পাঁচটি বই লিটল ম্যাগাজিন কে উৎসর্গ করা । এমন কি আনন্দের সিগনেট থেকে প্রকাশিত বাউলের বারোকথা বইটি ও ।লিটল ম্যাগাজিন করা একটি কঠিন কাজ ।তবু বাঙালি রোমান্টিক মনের আকর ।সব বাঁধা  ডিঙিয়ে সে  এই কাজটি করে ।দ্যাখো, বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গে বাঙালিও অত্যাধুনিক হয়েছে কিন্তু কবিতা রোগে আক্রান্ত এবং  বাঙালি লিটল ম্যাগাজিন ছাড়েনি । আমি  এই পাগলামি ভালোবাসি । আসলে আমি ও একটি  আস্তপাগল ।


২১.) কৃত্তিবাস বা দেশ নতুনদের সুযোগ দেয়?

উ:- নিশ্চয়ই দেয় । এখন তো আমার বেশকিছু তরুণ কবিভাই  এর লেখা ছাপা হচ্ছে ।



২২.) ধরো কৃত্তিবাস এক নতুন কে সুযোগ দিলো যার পরিচিতি নেই, কোনো বই নেই, তুমি তাকে চেনো না,কৃত্তিবাসের অনুষ্ঠানে সে এসেছে তোমার সাথে কবিতা পাঠ করছে বয়সেও অনেক ছোটো সেখানে তুমি আছো আরও সেরা মুখ আছে। তোমার কী কোথাও একটা হেসিটেশন হবে না? যে এ কে!

উ:- ভারি আনন্দ হয় । একদম কম  আলাপী হয়ে ও আমি তাদের সঙ্গে  আলাপ জমাই । ভাবি,  অল্পবয়সী কতো ছেলে মেয়ে কী সুন্দর লিখছে ।আমার  ও তো তাদের কাছ থেকে শেখার  আছে । নিজেকে  সমসাময়িক রাখতে চেষ্টা করি।




২৩.) এখন প্রিন্টেডের পাশাপাশি ওয়েব ম্যাগও সাড়া তুলেছে। তুমি এ বিষয়ে কী বলবে?

উ:- ভালোই তো!  তবে কাগজের স্বাদ  আলাদা ।

২৪.) সমাজের প্রতি তোমার ইচ্ছা?

উ:-দ্রুত পাল্টে যেতে থাকা সমাজে সমস্যা নতুন । তবু চেষ্টা করি ।




২৫.) তুমি কী কোনো ওয়েব ম্যাগাজিনে লেখো?

উ:- নিশ্চয়ই লিখি ।আমার বেশকিছু তরুণ  কবিভাই এর  আমন্ত্রণে লিখছি ।




২৬.) যারা কবিতায়  # এই চিহ্ন ব্যবহার করে বা আরও কিছু চিহ্ন ব্যবহার করে তাদের জন্য কী বলবে?(ব্যক্তিগত দিক থেকে বলবে)

উ:-  # চিন্হটা স্পেস হিসেবে ব্যবহার করতাম।   বাকি সব ব্যক্তিগত ।


২৭.) নতুন যারা লেখা লেখি করছে তাদের নিয়ে কিছু কী বলবে?

উ:- প্রচুর পড়তে হবে ।পুরোনো লেখার পাশাপাশি নতুন একদম হাল  আমলের প্রতিষ্ঠিতদের লেখার সঙ্গে পরিচিত হতে বলবো ।  অনেকেই যারা পারবে বিদেশী তারা বাইরের লেখাও পড়তে পারে । লিখতে লিখতে ঠিক  একদিন দারুণ লেখা দাঁড়াবে ।





২৮.) ফেসবুকে অনেক ফ্রেন্ড তোমার, তারাও লেখালেখি করে সেখান থেকে তোমার প্রিয় এমন কেও যার লেখালেখি তোমার ভালো লাগে?

উ:-প্রতিষ্ঠিতরা ভালো লেখেন । নিশ্চয়ই নতুনদের কথা বলছিস ভাই ?  তাদের  অনেকেই খুব ভালো লিখছে । আমি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি যাদের লেখা ভালো লাগে ।নাম বলা যাবে না ।

২৯.) তোমার চোখে কবি তুষার কান্তি মানুষ হিসেবে কেমন?

উ:- যতটা সম্ভব  আন্তরিক ।



৩০.) জলফড়িং ওয়েব ম্যাগাজিন সম্পর্কে যদি  কিছু বলো?

উ:- বেশ ভালো ।  তোমাদের  আন্তরিক কলমবাজি টের পাই ।ভালো লাগে ।

 |     |       |       |       |      |       |        |       |


তুষারকান্তির রুচি 
_____♥_____
* আইকন : কবি শঙ্খ ঘোষ ।

* প্রিয় কবি : সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ।

* প্রিয় লেখক : তমাল বন্দ্যোপাধ্যায় ।

* প্রিয় লেখিকা : বাণী বসু ।

*  প্রিয় কবিতা : কেউ কথা রাখেনি ।

*  তোমার নিজের প্রিয় কবিতা :  যখন যেটা লিখি ।

* একাধিকবার পড়েছো  এমন কবিতা : 
অনেক ।

* প্রিয়  অভিনেতা অভিনেত্রী : ইরফান খান /  আলিয়া ভাট ।

*  প্রিয় বাঙলা মুভি : উনিশে এপ্রিল ।

* প্রিয় গায়ক গায়িকা :  অরিজিৎ সিং,  আলিয়া ভাট ।

* তোমার চোখে রবীন্দ্রনাথ :  পথের আলো ।

*  প্রিয় পোশাক : শার্ট ট্রাউজার ।

* প্রিয়  ইংলিশ কবি : ওয়ার্ডস  ওয়ার্থ ।

* প্রিয় লিটল ম্যাগাজিন : একটি নয় ।

* প্রিয় খবরের চ্যানেল : একটি নয় ।

* প্রিয় রঙ :  নীল ।

***************************

মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

৫২ তীর্থের শরীর

আমার আকাশের উপর খুব হিংসে হয় জানো!
কারন,তুমি তার দিকে তাকিয়ে,মেঘ হওয়ার স্বপ্ন দেখো।
আমার সূর্যের উপরও বেশ রাগ হয়,
কারন আলো ছড়ানোর বাহানায় সে
তোমার সোনালী ত্বককে স্পর্শ করার স্বপ্ন দেখে!
আমার অজয় নদের উপর তো আবার ইর্ষা হয়,
কত বার যে তুমি তোমার নরম শরীরকে
তার বালুচরে শুইয়েছ।
আর জ্যোৎস্না!,তাকে তো আমি দেখতেই পারিনা!
কারন প্রত্যেক পূর্ণিমায় বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে
তার সাথে তুমি কত গল্প করেছো,কত কবিতা লিখেছো!
আর বাতাসের সাথে তো আমার চিরকালের শত্রুতা,
কতবার যে তোমাকে সে তার স্পর্শে মাতাল করে তুলেছে,তার হিসেব নেই!
শুধু আমার নিজের উপর কোনোও হিংসে,রাগ,ইর্ষা হয়না,জানো!!
কারন তোমার ঐ শরীরকে জড়িয়ে ধরে,ধন্য হওয়ার মতো যোগ্যতা আমার শরীর রাখেনা,
তাই ভেবেছি!!!! একদিন,আকাশ,সূর্য,অজয়,জ্যোৎস্না,বাতাস সেজে
 তোমার ঐ ৫২ তীর্থের শরীর আমি ভ্রমন করব।

---------আজাহারুল ইসলাম,শান্তিনিকেতন,ভারত।