ভিড় থেকে সরে আসি। সমুদ্র জানে না কারও নাম। অনেক লেখার শেষে সাদা পাতা এখনও আরাম...শ্রীজাত

বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৯

রিভিউ ।

সিনেমার নাম   শঙ্কর মুদি।
পরিচালক  অনিকেত চ্যাটার্জি ।

চরিত্র  কৌশিক গাঙ্গুলী, কাঞ্চন মল্লিক,অঞ্জন দত্ত,শাশ্বত চ্যাটার্জি ।

প্রথমে হাঁটতে শেখা তারপর দৌড় ও গতির সঙ্গে তাল মেলাতে অক্ষম হওয়া অতঃপর পতন ।
চম্বকে এই হল শঙ্কর মুদির কাহিনী,

বাংলার হয়ত সেই ছবি যা সংঘবদ্ধ জীবন দেখায় ।
সকলেই যেখানে আছে সকলের সাথে।
পাড়ার সাথে পরিবার তন্ত্র মিশে গেছে যেখানে।।

      অভাব যেখানে নিত্যসঙ্গী  সকলেই ভবিষ্যতে র চিন্তায় রাতের ঘুম উড়ে যায়।
তবুও হাসতে জানে ওরা ।

প্রত্যেকটি  চরিত্র ই দৈনন্দিন সমস্যায় জর্জরিত ।
যেমন  মূল্যবৃদ্ধি এবং বিশ্বায়ন দুটোই সমান্তরাল

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি  ক্যাপিটালিজম এর প্রভাব সাংকেতিক।
দেখাযায় সুনিপুণ শ্রেনীর বিন্যাস ।

নারাণ(কাঞ্চন মল্লিক) নাপিত, কালি(শাশ্বত চ্যাটার্জি), অটো চালক,শঙ্কর মুদি(কৌশিক গাঙ্গুলী) যিনি চরিত্রের মধ্যে সমুজ্জ্বল  নিম্নমধ্যবিত্ত দের কলতান একসাথে পেরিয়ে যাবার চেষ্টা ।

শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ধারক হিসেবে আছেন অঞ্জন দত্ত  যিনি স্যার নামে অভিহিত হন।
বাস্তব টা যিনি জানেন দূরদর্শী ।
আছে পারিবারিক জ্বালায় জ্বলা মদ্যপ পুরুষ ।

রাজনৈতিক  পরাকাষ্ঠা ও সাধারণের লড়াই এখানে উপজীব্য ।
             নিয়ম যা কিছু থাকে সাধারণের জন্য ,সমাজের মাথার জন্য কোনো নিয়ম নেই ।তাদের কার্যকলাপ "উন্নয়ন " নামে পরিচিত হয়
সোসালিস্ট ফেডারলিসম এখান  আকাশ কুসুম ।

   অধিকার রক্ষার অসম লড়াই এখানে জারি কিন্তু "অসম লড়াই মানে আত্মহত্যা " যা দেখিয়েছেন সিনেমার প্রোটাগনিস্ট শঙ্কর মুদি।

আমরা ঝা চকচকে জীবন পছন্দ করি,ব্রান্ডেড বিশ্বায়ন  একমাত্র পন্থা ।আর আমরা এগিয়ে চলি এই শঙ্কর মুদি দের বুকে পা দিয়ে ।যেখানে হেরে যায় পরিবার তন্ত্র  হেরে যায় মানুষ ।

কোথায় একটা প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে ডারউইনবাদ।

কলমে অরূপ ।





বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯

জলফড়িং  নমস্কার 
শুভ বিজয়া

কৃপা শুভ বিজয়ার শুভেচ্ছা।

প্রশ্ন  বলো পূজো কেমন কাটল?

উত্তর এবারের পুজো টা খুবই ভালো কেটেছে, আমি পুজোয় তেমন কোথাও একটা বেরোইনা, কিন্তু এবারে প্রায়
 প্রতিদিন বেরিয়েছি
 প্রচুর আনন্দ করেছি


 প্রশ্ন    পোস্ট   দেখেছিলাম তুমি ষষ্ঠী র দিন কেনা কাটা  করেছ এটা সত্যি?

উত্তর  হ্যাঁ ষষ্ঠীর দিন দুপুরে ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে জুতো আর একটা কুর্তি কিনেছি। বাঙালি রা ষষ্ঠীর দিনই কেনাকাটা করে নইলে কিসের বাঙালি

হাসি

প্রশ্ন  পুজোয় যদি কেউ বলত যে আপনাকে দেখে ক্রাশ খেয়েছি তোমার উত্তর কি হবে?

উত্তর  লজ্জা পেতাম। থ্যাংকিউ বলে কেটে পড়তাম🙈 ক্রাশ খাওয়া ভালো তো, ক্রাশ খেলে মন ফ্রেশ থাকে, আর মন ভালো থাকলে শরীর ভালো থাকে

প্রশ্ন  তোমার একটা ছবিতে 10 মিনিটে 500 লাইক এটা উপভোগ করো?

 উত্তর কোনোদিন পড়েনি, বাজে কথা। 300 বা 350 পড়ে। হ্যাঁ খুবই ভালো লাগে, সবাই চায় মানুষের মনে জায়গা পেতে, আমার ছবিতে যাঁরা লাইক করেন তাঁরা আমায় ভালোবাসেন পছন্দ করেন তাইতো লাইক করেন। এটা তো উপভোগ করারই বিষয়

প্রশ্ন   সোশ্যাল মিডিয়াড় অনেক কেই তুমি ব্যক্তিগত ভাবে চেনো তারা বাস্তব জীবনে কতটা আলাদা?

উত্তর  আমরা সবাই ব্যক্তিগত জীবনে আলাদা, আমি নিজেও। ফেসবুক সত্যি সত্যি ফেকবুক, এখানে সবাই প্রিটেন্ড করে, প্রতি মুহূর্তে সবার কাছে ভালো হয়ে থাকার অভিনয়। আর এই অভিনয় টা খারাপ কিছু নয়। আমি বাইরের লোকদের দেখাবোই বা কেন যে আমি আদৌ কেমন! কোনো দরকার নেই তো

প্রশ্ন  তোমার ছোটো বেলার পুজো টা কেমন কেটেছে?

উত্তর   তখন একটা আলাদাই পরিবেশ ছিল, এত ঝুটঝামেলা এত প্রেসার এত বোঝা নিতে হতো না। পুজো বলতে তখন স্কুলের ছুটি বুঝতাম, জমিয়ে খাওয়াদাওয়া বুঝতাম, নতুন জামার গন্ধ, বাবার সাথে। ঘুরতে  যাওয়া, ঠাকুর দেখা, বান্ধবীর বাড়ি সারাদিন কাটানো, গল্প করা বুঝতাম। তখন পুজোর একটা গন্ধ ছিল, বয়স বাড়ার সাথে সাথে পুজোর গন্ধটা ফিকে হয়ে যাচ্ছে কেমন

প্রশ্ন   তোমার যে এতো জনপ্রিয়তা বাড়ির লোকের অনুভূতি কেমন?

উত্তর  কেউ কিছু জানেনা। তারমানে কোনো জনপ্রিয়তা নেই আদতে। কারণ কেউ নিজে মুখে বলে না সে কতটা জনপ্রিয়। আমার বাড়ির লোক যেদিন টের পাবে যেদিন ফলাও করে খবরের ফ্রন্ট পেজে আমায় নিয়ে খবর ছাপা হবে এবং অবশ্যই তা ভালো, তখন বিশ্বাস করবো যে হ্যাঁ আমি জনপ্রিয়। ফেসবুকে অনেকেই জনপ্রিয়, আর এই জনপ্রিয়তা আজ আছে কাল নেই। তাই ফেসবুকের বাইরে বেরিয়ে আমি কাজ করতে চাই এবং জনপ্রিয় হতে চাই।

প্রশ্ন  বাড়ি থেকে এই চাপ টা আসেনি যে সরকারি চাকরি করতে হবে?

উত্তর  এখন মনে হচ্ছে চাকরি করাটা দরকার, এখন খুঁজছি।

প্রশ্ন 
তোমাকে আমরা বহু ভাবে দেখেছি কিনতু শাড়ি তে দেখিনি তুমি কি শাড়ি পড়তে ভালোবাসনা?

উত্তর  খুব ভালোবাসি, কিন্তু পারিনা পরতে, শাড়ি পরে হাঁটতে পারিনা, আসলে সেভাবে কোনোদিনও চেষ্টাও করিনি, এত তাড়াহুড়ো করে বেরোই সব জায়গায়।  তবে ইচ্ছে আছে , আশা করি খুব তাড়াতাড়ি শাড়ি পরে ছবি দেবো।

প্রশ্ন   লেখিকা কৃপা বসু আর অভিনেত্রী কৃপা বসু কোন টা কে এগিয়ে রাখবে?

উত্তর  লেখিকা অবশ্যই। অভিনেত্রী হতে চাইনা।

প্রশ্ন
তোমার নতুন ছবি one day র    গল্প সম্পর্কে একটু বলো।

উত্তর 
কদিন পরেই রিলিজ করবে, আমি চাই সবাই দেখুক ও  নিরপেক্ষ মতামত দিক। এখন শুধু এটুকু বলতে পারি মিষ্টি প্রেমের গল্প কিন্তু জরাসা হটকে

প্রশ্ন এটা তোমার প্রথম কাজ  নায়িকা হিসেবে কতোটা challenge র ছিল?

উত্তর  না না এর আগেও কাজ করেছি। এখনো পর্যন্ত চ্যালেঞ্জিং রোলের মুখোমুখি হইনি
 আমার কাছে সহজ ছিল

প্রশ্ন
এর আগে side roll ছিল এটা   main দায়িত্ব কি সত্যি বেড়ে যায়?

উত্তর  হ্যাঁ তা বাড়ে। সবাই দেখবে একটা মানুষকে, ভেতর ভেতরে একট ভয় কাজ করে

প্রশ্ন  তোমার  বই কবে বেরচ্ছে?

উত্তর  জানিনা, এখন ইচ্ছে নেই।

প্রশ্ন ফিল্ম টা পুজোর সময় রিলিজ হলে ভাল হতো না?

উত্তর 
না না তখন সবাই পুজো নিয়ে মেতে ছিল। এটাই পারফেক্ট টাইম

প্রশ্ন  এরপর হতে আর কি কি কাজ আছে?

উত্তর   কিছু কাজ আছে, দেখা যাক কবে শুরু হয়

প্রশ্ন   ফিল্ম এ তোমার  character টা র নাম কি?

উত্তর  আদর।

প্রশ্ন  আদরের থেকে কৃপা কতটা আলাদা?

উত্তর   আদর আর কৃপার কিছু কিছু জায়গায় মিল আছে আবার কিছু কিছু জায়গায় অমিল।
 আদর বাড়ির লোকের কাছে হার মেনে তার প্রেমিককে অস্বীকার করে, কৃপা সেটা করতো না। আবার আদর আর কৃপা দুজনেই চটজলদি ডিসিশন নেয় তা সে ঠিক হোক বা ভুল

প্রশ্ন এরপর যদি কোনো ফিল্ম এ র প্রস্তাব আসে করবে?

উত্তর হ্যাঁ ভালো কাজ পেলে গল্প স্ট্রং হতে হবে
 
প্রশ্ন শেষ প্রশ্ন 
দ্রাঘিমা ও প্রত্নবালিকা র কোন কবিতা টি প্রিয়?

উত্তর    নিজের বই তো, সবগুলোই। তবে বেশি ভালো লাগে: বাবা তোমাকে, এবং আমার একটি মেয়ে ছিল

শুভেচ্ছা তোমাকে আর জ্লফরিং কে সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ



অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা এই পত্রিকাকে। পত্রিকার বয়স দীর্ঘজীবি হোক

বড়দিনে জলফড়িং

আমার বড়দিন

আমার বড়দিনটা একটু অন্যরকম
পার্কস্ট্রীটের বাহানাটা আজ আর মনে পড়ে না,
মনে পড়ে বাড়ির পাশের স্ট্রীটটার
সন্ধ্যে নেমে আসার পর সোয়েটারহীন ঠান্ডায়
কুকড়ে যাওয়া মুখ গুলো,
আমার বড়দিন ঠিক একটু অন্যরকম
হাফছুটির পর ছুটে আসা স্ট্রীটের ধারে
চলে যাই ছেলেপুলে গুলোর আবদার মেটাতে
মলিন ওই মুখটায় হাসি খুঁজে দিতে।
পার্কস্ট্রীটের বদলে চলে যাই ওদের
লাল সাদা টুপি পরে সান্তা হতে।
                                                 জয়দীপ রায়









বড়দিনে জলফড়িং

বড়দিন / ব্রতীন বসু

আজ বড়দিন
তাই দুপুরে বেড়িয়েছিলাম একটু পার্ক স্ট্রিটের দিকে
অন্যদিন সময় বা ইচ্ছে হয় না হুজুগকে প্রশ্রয় দেবার
ভিড় ঠেলে ভিক্টোরিয়ার কাছে যখন পৌছুতে পারলাম তখন বিকেল শেষ
লাল অন্ধকার আর রকমারি আলোয় যেন রাধাগোবিন্দের গোপন প্রেম
পুরনো বন্ধুদের সাথে দেখা হল
হাসিঠাট্টা ঘোড়ার গাড়ি বেলুনের উড়ুউড়ু ভাব
লাল টুপি পরা অজস্র  সান্তার আনন্দ
যেন খুব আপন কারুর জন্মদিন আজ।
দেখে মনে হতেই পারে উৎসব
কোন ঈশ্বরের সৃষ্টি নয়
কোন জাতির সৃষ্টি নয়
এর কোন সীমা থাকাও উচিৎ নয়
অষ্টমী বা ঈদ কি বড়দিন যাই হোক
আনন্দ মানুষের।
তার মধ্যে
একটা বাচ্ছা ছেলে
ফাঁকায় ফাঁকায় ঘোড়া নিয়ে ঘুরছে
অসুস্থ মত দেখতে একটা ঘোড়া
নাম কি তোর? আজ্ঞে কৃষ্ণ।
আর ঘোড়ার নাম?  রাধা।
চড়াবে বাবুকে? আজ একটাও সওয়ারী পাইনি।
না থাক।যদি ফেলে দেয়।
অসুস্থ মত দেখতে একটা ঘোড়া।
অন্য শক্তপোক্ত ঘোড়াতে চড়ে ছেলে যখন
টগবগ করে মিলিয়ে গেল আনন্দমেলায়
বুঝলাম
উৎসবের সীমাবদ্ধতার একটা কারণ ঈশ্বর হলে
বাকি নিরানব্বইটা আমি নিজেই।



















মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৯

সান্তাক্লোজ সেজে আমার বাবা নেমে আসুক এমনটাই ইচ্ছে বড়োদিনের...🖋সুদীপ্ত সেন




বড়োদিনের ইচ্ছে বড়ো

আমাকে সরিয়ে রাখো তোমার ভিড়ের মধ্যে থেকে
শহরের ট্রাম ছুটে যাওয়া শব্দে আমি আমার বাবাকে খুঁজি
নিউমার্কেটের সেই লোকটা যে সার্ফজলের  ফ্যানা উড়িয়ে উপার্জন করে
কিংবা ধর্মতলার ট্রাফিক জ্যামে আমাকে ফেলে রাখো
ফুটপাতে বসে থাকা লোক গুলোর দিকে- তাকিয়ে আমি আমার বাবাকে খুঁজি
ছোট্টো ফুলের মতো মেয়েটা আমাকে ওই ওই বলে সেদিন ভুট্টা খেতে চাইলো
তাকে কিনে খাইয়েছিলাম অথচ টাকা দিই না তাদের
অথচ এ কলকাতা আমার বাবাকে নিয়ে নিলো, হারিয়ে দিলো তার ভিড়ের মধ্যে।
আজও হাতড়ে খুঁজি, কালকেও খুঁজবো....

পার্কস্ট্রীটের আলোকসজ্জা থেকে চার্চের কাছাকাছি কোনো ফুরসত পেলে
সান্তা সেজে আমার বাবা নেমে আসুক।
কিচ্ছু চাই না আমার, শুধু বলে যাক ভালো আছি
বাড়ি ফিরে মা'কে জানাব সেটুকুই।