ভিড় থেকে সরে আসি। সমুদ্র জানে না কারও নাম। অনেক লেখার শেষে সাদা পাতা এখনও আরাম...শ্রীজাত

বুধবার, ৩১ জুলাই, ২০১৯

: #শেষ_দৃশ্য
#মুনমুন_মুখার্জ্জী

এসেছে আজ আমার কাছে সব আপনার জন,
বহুদিন পর এল এই আনন্দের ক্ষন,
মনে হচ্ছে অতীত যেন ফিরে এল আবার,
বর্তমান জীবনকে যেন করতে চনমন।

কান্না হাসির কত গল্প, কত স্মৃতিচারণ,
সুখ দুঃখ মিশিয়ে হল মধুর বাতাবরণ,
অবাক হয়ে আমি শুধু দেখে শুনে যাই,
নির্বাক শ্রোতার এই  উপভোগ দারুণ।

পুরোনো স্মৃতি ঘাঁটতে গিয়ে হয়ত অকারণ,
চিকচিক করে ওঠে কারো চোখের কোণ,
কারোবা চোখ মুখ দিয়ে অঝরে মুক্ত ঝরে
ভিজে যায় তাতে আমার এ শরীর মন।

বৃথায় চিৎকার করে উঠতে চাইল মন,
"কোথায় ছিলে বল আমায় তোমরা এতদিন,
খোঁজ নিলেনা, একাকী কাটল শেষটা আমার--
দেখা করার সময় হয় নি কি একদিন?"

কিন্তু সেকথা থেকে যায় মনে মনেই,
কোনো কথা আজ বলার উপায় যে নেই,
নির্জীব শরীর ঘিরে কেন যে শোক মানায়,
মনের চাপা কষ্ট থেকে আমার মুক্তি নেই।

কেউ এসেছে নাটক করতে, কেউবা দেখতে,
কেউবা সত্যি করে আমার খোঁজ করতে,
ভালবাসার জোয়ার এসেছে আজ এ ঘরে,
সবাই এসেছে আজ শুধু শেষ বিদায় জানাতে।


: #সুদখোর
#মুনমুন_মুখার্জ্জী

ছোট্ট ছেলে বাবাকে শুধায়
ব্যাঙ্কে সবাই টাকা জমায়,
ব্যাঙ্ক সে টাকা নিজে খাটায়
নির্দিষ্ট সময় বেশি ফেরত দেয়।
বই বলে সুদ হল বেশি যা দেয়
তবে তো দেখি সবাই সুদ খায়,
কিন্তু সুদখোর তারা কেন নয়
সাহায্যকারীর কেন বদনাম হয়?
বাবা বলেন শোনো তবে
যুক্তিতে কি সব এক হবে?
ওরকম সাহায্য ব‌্যাঙ্কও করে
সুদটা নেয় তবে কান ধরে।
সুদখোরেরা -- আদায় করে
লাঞ্ছনা আর অপমান করে।
সুদের হারটাও হয় বেশ চড়া
আসলের টিকি তো যায় না ধরা
জীবন চলে যায় ঋণশোধ করতে
দিন দিন ঋণ থাকে শুধু বাড়তে।


: #কিছু
#মুনমুন_মুখার্জ্জী

কিছু মানুষ থাকে যাদের বোঝালেও বোঝে না,
কিছু মানুষ থাকে যাদের মানা করলেও মানে না,
কিছু মানুষ থাকে যাদের অভিযোগ থাকে না,
কিছু মানুষ থাকে যারা ক্ষমা করতে ভোলে না।

কিছু মানুষ থাকে যাদের অহংকার কমে না,
কিছু মানুষ থাকে যাদের নালিশ করা থামে না।
কিছু মানুষ থাকে যারা খুঁত না ধরে পারে না।
কিছু মানুষ থাকে যারা কে কি বললো দেখে না।

কিছু মানুষ থাকে যারা লোক ঠকাতে ছাড়ে না।
কিছু মানুষ থাকে যাদের ঠকেও শিক্ষা হয় না,
কিছু মানুষ থাকে যারা অভাবেও বলদায় না,
কিছু মানুষ থাকে যারা সুযোগের ব্যবহার করে না।

কিছু মানুষ থাকে যারা ছেঁকা দিতে ছাড়ে না,
কিছু মানুষ থাকে যারা নিন্দা করতে ছাড়ে না।
কিছু মানুষ থাকে যারা দুঃখকে বড় করে দেখে না,
কিছু মানুষ থাকে যারা কখনো হাসতে ভোলে না।
: #জীবন
#মুনমুন_মুখার্জ্জী

জীবন বড়ই অদ্ভুত,
  বাঁধা ছকে চলে না,
    অঘটন ঘটে হটাৎ,
      তবু চলার পথ থামে না।

সে চলে চলার নিয়মে
  নিত্য নতুন খোঁজে পথ,
    থামার তো উপায় নেই
      মৃত্যুতে থামবে এ রথ।

জীবন যতই এগিয়ে চলে
  পরিচিত মুখ পথে হারায়,
    সময় কখনো বাধা দেয় তো
      মুখোশ হয় কখনো অন্তরায়।

তবু জীবন এগিয়ে যাবে
    বাঁচতে হলে লড়তে হবে,
       হাত গুটিয়ে বসে থাকলে
          মশা আনন্দে গান গাইবে।
মনখারাপি মেঘ//

আকাশটা কেমন থমকে আছে দেখো।
সারা সময় বৃষ্টি মাখছে গা'য় ।
জ্বরে যখন পুড়বে শরীরখানা
ধরতে ঠিক আসবে কবির পা'য়।

মনখারাপি দু-এক ফোঁটা
আমার কপাল ছুঁয়ে বুকের ওপর গড়িয়ে পড়বে।
রবিরশ্মি নিস্তেজ তবুও রুক্ষ লাগবে দুপুরটা।
আর অভিমানে ভাঙবো-গড়বো নিজেকে।

সকাল গড়িয়ে দুপুর
                                দুপুর থেকে বিকাল,
লাল আভাময় আকাশজুড়ে
সন্ধ্যে নামার তাড়া লাগবে।

অদ্ভুতভাবে আকাশের সেই জ্বরটা ছড়িয়ে পড়বে মনের ভেতর,
বাড়তে থাকবে অভিমান।
কেন??
সে বোঝেনি বলে তাই?
কি জানি।
হয়তো...

একাজে ওকাজে ব্যস্ত হবো
এক প্রকার জোরবশত বলতে পারো।
স্তব্ধ তবুও মনখারাপি ঘড়ি,
কাটতেই চাইবে না ব্যর্থ মুহূর্ত।

আকাশের কোল জুড়ে থোকা থোকা মেঘ যেমন
তার জন্যে প্রেমের বৃষ্টি ঝরায়,
আমিও তেমন অপেক্ষা সাজাবো,
অপেক্ষা করবো আসবে কখন সে,
অপেক্ষা করবো ভালোবাসবে কখন সে।
অপেক্ষা করবো।।

                                          ____শিল্পা মণ্ডল

(গুগল ইস্যু)
[30/07, 21:05] shilpa mandal. jholfhoring: //গোপন প্রেম//

অভিমানে অভিমানে সরে যাবো বহুদূরে,
চায়লেও পাবে না তখন তোমার প্রেমের সুরে।

চাইনি তো এত্ত আদর, রাশি রাশি ভালোবাসা,
চাইনি কখনো তোমার জমিয়ে রাখা গুচ্ছ সময়,
শুধু একটু,
কেবল একটু মনে কোরো প্রিয়
খোঁজ নেওয়াতে টুকরো মুহূর্ত কোরো ব্যয়।

কি চাই বলো ছোট্ট মন আরেকটি মনের থেকে!
দূরে থেকেও কাজের মাঝে যাতে একটু মনে রাখে।
পারবে না কো রাখতে মনে!
পারবে না কো বাসতে এমন!
তোমার বুকে উঠলে ঝড়, আমারও যে হয় মন কেমন।
কতটুকু বোঝ তুমি! না বোঝারই সংখ্যা বেশি,
ভাসবো না জেনেও আমি চুপিচুপি ভালোবাসি।
সময়ের কাঁটা ধরে ভিক্টোরিয়ার প্রাঙ্গণে
বা গঙ্গার ধারে হেঁটে বেড়ানোর অঙ্গীকার করিনি,
তবুও ফাঁকা রাস্তা হোক কিংবা সে কল্লোলিনী কলকাতা,
বলো কোথায় তোমায় মনে রাখিনি!!
তবুও বোঝ না। খোঁজো না প্রেম চোখের মাঝে,
তোমার আমার রাগ-অভিমান বুকের মধ্যে বড্ড বাজে।
আর না হয় নাহি বা বললাম "ভালোবাসি"
"ভালোবাসি"।
স্বপ্নতে না হয় হাঁটবো দুজন হাত ধরে
পাশাপাশি।।
     
                                             ____শিল্পা মণ্ডল
-কিরে কখন থেকে ডাকছি..
- ও তুই, শুনতে পাইনি..
- সকাল থেকে ফোন করছি ধরছিস না কেন?
- কই ,শুনতে পাইনি তো..
-নির্ঘাত আবার সাইলেন্ট করে রেখেছিস ,কই দেখি ,এই তো ঠিক ধরেছি ।।
- কি বলবি বল।।
- কি হয়েছে তোর? ভালো করে কথা বলিস না আজকাল?

তৃপ্তি হেসে সৌরভের হাতটা ধরে জানলার সামনে নিয়ে এসে দাঁড়ায়।।আর বলে .......

- কান পেতে শোন জল পড়ার শব্দ পাচ্ছিস ? ভিজতে খুব ইচ্ছে থাকলেও মারণ রোগটা আমায় ভিজতে দিলো না রে।।

বাইরে অঝোর ধারায় বৃষ্টি নামে।।


.........তন্মনা
 উলঙ্গ
~বিদিশা নাথ
রাস্তায় আজ সবাই নেমে পড়েছে
উলঙ্গ,উন্মত্ত, উন্মুখ।
সবাই হাঁটছে সজোরে,
হাঁটতে হাঁটতে ওরা সবাই,
রাজবাড়ীর ঠিক দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে।
দশটা সান্ত্রী, কুড়িটা বর্শা, দুটো লোহার শিকল।
শত শত উলঙ্গ সোজা শিরদাঁড়া দেখে ওরাও ভয় পেয়েছে।
আজ সব খুলে রেখে
স্তাবকতার জঞ্জাল,
পৃষ্ঠপোষকতার মোহ,
বাহবার মুখোশ,
তৈলমর্দনের ঘনিষ্ঠ আওয়াজ,
সব দুমড়ে মুচড়ে  ওরা শুধু শরীরটাকে সঙ্গে এনেছে।
নির্বাক,উন্মুক্ত স্পর্ধার শরীর টাকে।
উলঙ্গ এই মন গুলোই আজ
এই অচলায়তন ভেঙে ফেলবে এক নিমেষে।

অপেক্ষা
~বিদিশা নাথ
তুমি বুঝবে কি পরের বার?
আদৌ পরের বার বলে যদি কিছু থাকে?
যদি পরের বার অপেক্ষা করাও,
আমি অপেক্ষাতে থাকব।
যদি বলে যাও,'এ যাওয়া শেষ যাওয়া নয়",
"বছর খানেক পরে ফিরে আসব আবার সঠিক সময় হলে"।
হাতে অনেক সময় নিয়ে থাকব।
যদি বলে যাও,"পরের বার ঠিক আসব,
ঠিক সময়ই আসব"।
রেলগাড়ির ঝমঝম আওয়াজে,
লাইনদুটো যেমন চলতে থাকে পাশাপাশি ,
এজনম নয় সেভাবেই চলব।
তবু থাকব।
পরের জনম দেখবে মিশে যাওয়া,
ভুলে যাওয়া আর যা কিছু।
তবু মনে রাখব।
পরের বার এবারের দেওয়া কথা,
আঁকড়ে ধরে বাঁচব।


ছোট্ট গল্প
~বিদিশা নাথ
বাড়ি থেকে বেরিয়ে বুঝলাম পথ হারিয়েছি,
বাড়িতেই ফেলে এসেছি,
চশমা, লাঠি আর পুরানো শিরদাঁড়াটা,
মানে যা যা লাগে ভালো করে দাঁড়াতে আর দেখতে।
বাসের পাদানি তে দাঁড়িয়ে চিন্তা করলাম,
আমি কি দেখতে পেলাম!
উস্কো খুস্কো দাড়ি ওলা লোকটাকে?
যে পরম মমতায় মেয়েটার বুকে কনুই বোলাচ্ছে,
ওহ! আমি তো চশমা আনিনি!আনিনি শিরদাঁড়াও!
ছেলেটার মুখে অশ্রাব্য শব্দ,
আমি বোবা দৃশ্যপট নিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম,
আমি স্রোতের মধ্যে ভাসতে ভাসতে,
বাড়ি এলাম।
মিথ্যের দুর্গন্ধ ওলা একটা স্রোত।
এসে বুঝলাম ঘরের ভিতর 'আমি' টাকেই
 ফেলে এসেছিলাম আজ।

সোমবার, ৮ জুলাই, ২০১৯

বুঝতে পারি নি , সরি

অর্পনের ফ্লাটের দরজায় কলিং বেল টা বাজিয়ে কিছুক্ষন অপেক্ষা করলো সুদেষ্ণা। কিছুক্ষন বাদে অর্পনের কাজের দিদি মানুদা মাসি দরজা খুলে বললো , "বাবু স্নানে গেছে, তুমি বসো।" সুদেষ্ণা বসার ঘরের সোফায় বসে কিছুক্ষন বাদে অর্পনের ঘরে ঢুকে পড়লো। ঢুকতেই একটা চেনা গন্ধ তাকে আকৃষ্ট করলো যেন।
            অর্পনের ফ্ল্যাটের এই ঘরটা সুদেষ্ণার খুব পরিচিত। একই অফিসে চাকরি করতে করতে ওদের বন্ধুত্ব। একটা সময় এমন ছিল যে দুজন একে অপরের সাথে কথা না বলতে পারলে কারুরই মুড ভালো থাকতো না। দিনে অন্তত একবার করে অফিস থেকে ফিরে ফোনে কথা হতোই। সুদেষ্ণার বাড়ি পার্ক সার্কাস। অর্পণ উত্তরবঙ্গ থেকে এসে ফ্ল্যাট নিয়েছিল টেকনোপলিসের কাছেই। তবে রাজারহাটে অফিস শেষ হওয়ার পর দুজনেই করুণাময়ী অবধি মুড়ি খেতে খেতে ইভনিং ওয়াক করতো। তারপর সুদেষ্ণাকে শাটল গাড়িতে তুলে দিয়ে অর্পণ একটা বাসে করে ফ্ল্যাটে ফিরত। সুদেষ্ণা জানতো যে অর্পণ ওকে খুব পছন্দ করে। কিন্তু সে কখনোই অর্পণকে বোঝাতে দ্যায়নি যে সে জানে। অর্পণ কখনো কখনো আকারে ইঙ্গিতে বোঝানোর চেষ্টা করেছিল। সুদেষ্ণা হাবভাবে বুঝিয়ে দিয়েছিল যে সে বন্ধুত্বে এই ব্যাপারগুলো পছন্দ করে না। একদিন অর্পণ যখন মেসেজে বলেছিল "তোকে আমার ভালো লাগে", সুদেষ্ণা রিপ্লাই দিয়েছিল যে , "বন্ধুত্ব রাখার হলে এই মেসেজ গুলো মোবাইলে যেন না আসে, নাহলে বাধ্য হবো বন্ধুত্ব নষ্ট করতে।"
             তারপর থেকে অর্পনের দিক থেকে ওরকম মেসেজ সত্যিই আসেনি। বন্ধুত্বে ছেদও পড়েনি। শুধু অর্পণ একটু সামান্য শান্ত হয়ে গেছিলো। সুদেষ্ণা পরে ভেবেছিল যে ওরকম ভাবে বলা উচিত হয়নি, কিন্তু সে অবশ্য এসব নিয়ে বেশি ভাবেনি। সে ভেবেছিল ছেলেদের স্বাভাবিক গুন,মেয়ে বন্ধু দেখলেই ভালো লাগা , সেটারই একটা বহিঃপ্রকাশ মাত্র। এটাকে বেশি পাত্তা দেওয়া উচিত না, আস্তে আস্তে আবেগ কমবে। ধীরে ধীরে সব ঠিক হয়ে যায়। অর্পণ কিছুদিন বাদে অন্য অফিসে চাকরি পেয়ে চলে যায়, ফ্ল্যাট টা রেখেই দেয়, কিন্তু যোগাযোগ কমে। অন্যদিকে সুদেষ্ণা নতুন প্রজেক্টের টিম লিড সৌম্য দা র সাথে কাজ করতে করতে তারই প্রেমে পড়ে ধীরে ধীরে রিলেশনে চলে যায়। সামনের মাসে ওদের বিয়ে। তারই কার্ড দিতে অর্পনের ফ্ল্যাটে আসা।
         সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে হটাৎ সুদেষ্ণার চোখ যায় অর্পনের ড্রয়িং খাতায়। চিত্রশিল্পী হিসাবে অর্পনের নামডাক ভালো ছিল। অর্পনের খাতা ওল্টাতে ওল্টাতে হটাৎ একটা পাতা ও নিচে কয়েকটা লাইন দেখে শিহরিত হয়ে যায় সে, হ্যাঁ এটা তো তারই ছবি, অর্পনের নিজের হাতে আঁকা। নিচে লেখা পেন্সিলের কটা লাইন "যেটা ছিলোনা ছিলোনা, সেটা না পাওয়াই থাক, সব পেলে নষ্ট জীবন। " এটুকু দেখে সুদেষ্ণার সব গুলিয়ে যেতে লাগল। এই ছবি আঁকা, তারপর লাইন গুলো, এগুলোতো শুধু ভালোলাগা না, কখনোই না। তড়িঘড়ি উঠে অর্পনের রোজনামচা লেখার ডাইরি টার গত বছরের সংখ্যাটা সে আলমারির পাশে সেলফ থেকে নিল। 20 মে ছিল সেই দিন যেদিন সে অর্পণ কে তিরস্কার করেছিল। হ্যাঁ, খুলে দেখলো লেখা আছে , "আজ আমি হয়তো তোর মেসেজ পড়ে অল্প কেঁদেছিলাম, কিন্তু বিশ্বাস কর, আমার রাগ হয়নি, আমি তোর যোগ্য না আমি জানি, কিন্তু তুই আমার কাছে সেরাই থাকবি, তোকে পাইনি, কিন্তু একটা এত ভালো বন্ধু পেয়েছি সেটাই আসল, ভালো থাকিস সুদেষ্ণা, আর আমি একাই থাকবো, তোর মতো কাউকে তো পাব না, তাই আমি এমন কারুর সাথে রিলেশনে যেতে পারব না, যেখানে সারাক্ষন তোর কথা, ওই ইভনিং ওয়াক, মুড়ি খাওয়া, তোর আমায় লেগ পুলিং করা মনে পড়বে, তাই একাই থাকি, সব কিছু সবার জন্য না।"

কিছুক্ষন হতভম্ব হয়ে বসে রইলো সুদেষ্ণা, তারপর কার্ড টা টেবিলের উপর রেখে জলদি তাড়াহুড়ো করে প্রায় দৌড়ে বেরিয়ে গেল অর্পনের ফ্ল্যাট থেকে। পিছনে তখন মানুদা মাসি চেঁচাচ্ছে "কি গো, চা টা খেয়ে যাও।" আজ আর অর্পণকে মুখ দেখানোর অবস্থায় নেই সুদেষ্ণা। একটা দমবন্ধ করা পরিবেশ তাকে ঘিরে ধরেছে, এখান থেকে তাকে পালাতে হবে। অর্পণ তাকে সত্যি ভালোবাসতো, এটা ও বোঝেনি। সৌম্য দা সত্যি একজন দায়িত্ববান ও ভালো স্বামী, কিন্তু অর্পনের মতো আগে ভালো বন্ধু ও তাকে সম্পূর্ণ বোঝাটা সেখানে একটু মিসিং, কারণ প্রথমত বয়সের গ্যাপ, দ্বিতীয়ত ওরা বন্ধুত্ব থেকে প্রেম করেনি, প্রেমের ইচ্ছায় প্রেম করেছে, আর অর্পনের মতো সৌম্য দার অতো সময় নেই সারাক্ষন ওর যত্ন নেওয়ার। এক লহমায় অনেক কিছু গোলমাল হয়ে যায় সুদেষ্ণার। ট্যাক্সিতে ওঠার আগে একবার বাড়িটার দিকে তাকিয়ে সে বলে উঠলো, "বুঝতে পারিনি অর্পণ, সরি।"
বারাণসী ও এলাহাবাদ দর্শন

অফিসের একঘেয়েমির  চাপ ও ক্লান্তি থেকে মুক্তি পেতে হটাৎ করে ঠিক হলো বারাণসী ও এলাহাবাদ ভ্রমণ করা হবে। সেই মতো প্ল্যান বানিয়ে কলকাতা স্টেশন থেকে শব্দভেদী এক্সপ্রেসে চড়লাম এক শুক্রবার রাত 10 টা 35 মিনিটে। বারাণসী পৌছালাম পরেরদিন সকাল 10 টায়। অটো নিয়ে গেলাম 3 কিমি দূরে হোটেল জানকী ইন্টারন্যাশনাল । আগে থেকে রুম বুক করা ছিল। ফ্রেশ হয়ে অল্প খাওয়া দাওয়া করে একটা গাড়ি নিয়ে প্রথমে গেলাম কোতোয়ালিতে কালভৈরব মন্দিরে। সেখান থেকে 13 কিলোমিটার দূরে সারনাথ গেলাম। বোধগয়ায় 'বোধি' লাভের পর বুদ্ধদেব সারনাথে এসে এখানকার মৃগ উদ্যানে ধর্মীয় উপদেশ দান করেন 5 জন শিষ্যের কাছে । বৌদ্ধদের কাছে এই ঘটনা 'ধর্মচক্র প্রবর্তন' নামে খ্যাত। সারনাথ নামটা এসেছে সারঙ্গনাথ (সারঙ্গ শব্দের অর্থ মৃগ) থেকে। সারনাথের প্রবেশের পথেই বাদিকে চৌখন্ডি স্তূপকে ছোটখাটো টিলা বললেও অত্যুক্তি হায় না। সম্রাট অশোক ২৩৪ খ্রি: পূর্বাব্দে এখানে এসেছিলেন। উনি এই সুবিশাল স্তূপটি নির্মাণ করান। সারনাথের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দ্রষ্টব্য চোঙ্গাকৃতি সাড়ে তেতাল্লিশ মিটার উচু ধামেক স্তূপ। ভূমির কাছে এই স্তূপের ব্যাস ২৮ মিটার এবং নিচের অংশে দেখবেন গুপ্তযুগের স্থাপত্য নিদর্শন। সারনাথের অপর আকর্ষণ মহাবোধি সোসাইটি নির্মিত বুদ্ধমন্দির। এই মন্দিরে মূর্তিটি তৈরি করেন রাজা ধর্মপাল। সারনাথের সংগ্রহশালায় অসংখ্য বুদ্ধ মূর্তির সংগ্রহ বিস্ময় উদ্রেক করে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ হলো বৌদ্ধ শিল্প ও ভাস্কর্যের শ্রেষ্ঠ নিদর্শনগুলো এবং অশোকস্তম্ভের শীর্ষদেশের চারটে পরস্পর সংলগ্ন সিংহমূর্তি। শুক্রবার মিউজিয়াম বন্ধ থাকে। অন্য দিন খোলা থাকে সকাল ১০টা থেকে ৫টা। এরপর আমরা গেলাম অন্নপূর্ণা মন্দির। পেশোয়া বাজিরাও ১৭২৫ সালে এই মন্দিরটি নির্মান করেন। এরপর লাল রঙের দূর্গা মন্দির ও কুন্ড দর্শন করলাম। মন্দিরটি অষ্টাদশ শতকের। গর্ভাগৃহে দেবীর বিগ্রহ খুব জাগ্রত। দূর্গা মন্দির থেকে আরও কিছুটা এগিয়ে বাঁ হাতে পড়ে সাদা রঙের সুবিশাল তুলসী মানস মন্দির। মন্দিরে শ্রীরামের বিগ্রহ ছাড়াও আকর্ষনীয় এখানকার দেওয়াল, যেখানে খোদাই করা আছে রামচরিতমানসের বিভিন্ন পদ। এরপর গেলাম বেনারস হিন্দু বিশ্ব বিদ্যালয়। পণ্ডিত মদনমোহন মঙ্গল কাব্যের সক্রিয় উদ্যোগে গড়া বেনারস ইউনিভার্সিটি কমপ্লেক্সের মধ্যেই রয়েছে ভারত কলা ভবন নামক মিউজিয়াম এবং বিড়লাদের তেরি  সুউচ্চ নব বিশ্বনাথ মন্দির। সেখান থেকে সংকোটমোচন মন্দির দর্শন করে চলে এলাম দশাশ্বমেধ ঘাট অঞ্চলে। অসাধারণ গঙ্গা আরতি দর্শন করে রাস্তায় বারাণসী স্পেশাল ডিনার করে টোটো ধরে ক্লান্ত শরীরে হোটেল ফিরলাম ।
                 পরেরদিন সকালে উঠে গেলাম কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরে পুজো দিতে। প্রাচীন মন্দির ধবংস হয়ে যাবার পর বর্তমান মন্দিরটি নির্মান করেন ইন্দোরের মহারানি অহল্যাবাঈ হোলকার (১৭৭৭) সাল। পাঞ্জাবের মহারাজা রঞ্জিত সিং প্রায় সাড়ে আটশো কেজি ওজনের সোনার পাতে মন্দিরের উপরের অংশ মুড়ে দেন। মন্দিরের মধ্যেই রয়েছে আওরঙ্গজেবের তৈরি জ্ঞানবাপী মসজিদ। 3 ঘন্টা লাইন দিয়ে দ্বাদশ জ্যোতিলিঙ্গের অন্যতম বিশ্বনাথ দর্শন হলো। এরপর কিছু খাওয়া দাওয়া করে গেলাম চুনার দুর্গ। বারাণসী থেকে ৩৫ কিমি দুরে চুনারের প্রধান আকর্ষণ গঙ্গার ধারে সুবিশাল দুর্গ। পুরানমতে বামন অবতারে ভগবান বিষ্ণু তার প্রথম চরণ স্থাপন করেন এখানকার পবিত্র ভূমিখন্ডে তাই এর নাম হয় চরনাদ্রি। উজ্জয়িনীর শাসক মহারাজা বিক্রমাদিত্যের ভাই ভতৃহরি এখানে কঠিন তপস্যা করার পর জীবন্ত সমাধি নিয়েছিলেন। চুনার দুর্গের ইতিহাসও সুপ্রাচীন। অনেক ঐতিহাসিকের মতে রাজা সহদেব ১০২৯ সালে বর্তমান দুর্গটি নির্মান করেন। প্রথম মুঘল সম্রাট বাবর ১৫২৫ সালে এই দুর্গের অধিকার নেন। মাঝে শেরশাহের হাতে চলে যাবার পর আকবর পুনরায় দুর্গ জয় করেন ১৫৭৪ সালে। এরপর টানা প্রায় দুশো বছর মোঘলদের অধীনে থাকার পর ১৭৭২-এ ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দখল করে ঐতিহাসিক চুনার ফোর্ট। জনশ্রুতি আছে এই দুর্গ থেকে একটি ঐতিহাসিক গোপন সুরঙ্গ পথ গঙ্গায় নেমে গেছে। বর্তমানে ভারত সরকার এখানে গড়ে তুলেছে প্যাকের (প্রভিনশিয়াল আমর্ড কোর) ট্রেনিং সেন্টার। তাই কেবলমাত্র সোনহা মন্ডপ ও ভতৃহরির সমাধি ছাড়া দুর্গের অভ্যন্তরে সাধারন পর্যটকদের প্রবেশ অধিকার নেই। দুর্গ ছাড়াও চুনারে দেখবেন হজরত সুলেমানের সমাধি  ও প্রায় ২ কিমি দূরে দূর্গামন্দির ও কালীমন্দির। দুর্গের কুঁয়া টি বিশাল । এরপর গেলাম পূর্বের বারাণসীর  রাজাদের দুর্গ  রামনগর ফোর্ট। এখানে দেখবেন - রাজাদের ব্যবহত বিভিন্ন আমলের ঘোড়ার গাড়ি,  পালকি , কারুকার্যমন্ডিত হাওদা , পোশাক পরিচ্ছদ ,অভিনব ঘড়ি , প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র।
দুর্গের একটা অংশে দেখবেন রামনগরের বিখ্যাত রামলীলার কিছু দৃশ্যের  ফটোগ্রাফ।  দুর্গের প্রবেশমূল্য 25 টাকা। এরপর গেলাম বারাণসী থেকে ৭০ কিমি দুরে ৫১ সতীপীঠের অন্যতম বিন্ধ্যাচলের প্রধান দ্রষ্টব্য বিন্ধ্যাবাসিনী মন্দির। এই স্থানে সতীর বাম পায়ের আঙুল পড়েছিল। পুরানমতে এই সেই স্থান যেখানে দেবী স্বহস্তে শুম্ভ নিশুম্ভকে বধ করেন। বিন্ধ্যবাসিনী মন্দির থেকে ৩ কিমি দুরে বিন্ধ্যপবর্তের ওপর দেবী অষ্টভুজা মন্দির। সংকীর্ণ গুহাপথে ভেতরে গিয়ে মূর্তি দর্শন করতে হয়। এরপর ফিরে এসে অসি ঘাট থেকে নৌকো  নিয়ে দর্শন করলাম দশাশ্বমেধ ঘাট,
মনিকর্নিকা ঘাট, হরিশ্চন্দ্র ঘাট, তুলসী ঘাট,
মানমন্দির ঘাট, কেদার ঘাট প্রভৃতি। এরপর একটু কেনাকাটা করে হোটেলে ফিরে ডিনার করে শুয়ে পড়লাম।।
                  পরেরদিন সকালে 9.40 ঘটিকায় বিভূতি এক্সপ্রেসে চেপে বারাণসী স্টেশন থেকে রওয়ানা দিয়ে 12.30 এ পৌছালাম এলাহাবাদ স্টেশনে। রিকশ করে গেলাম আমাদের গন্তব্য হোটেল কাশীতে। এরপর লাঞ্চ করে একটা গাড়ি নিয়ে  চললাম শহর দর্শনে। প্রথমে গেলাম আনন্দ ভবন।  নেহরুর পৈতৃক বাসভবন বর্তমানে জাতীয় সংগ্রহশালা। পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের ব্যক্তিগত ব্যবহৃত জিনিসপত্র এখানে খুব সুন্দর করে সাজানো আছে। এখানে আরও দেখবেন , স্বরাজভবন ও জহর প্ল্যানেটোরিয়াম। এরপর দেখলাম এলাহাবাদ  মিউজিয়াম ও চন্দ্রশেখর আজাদ গার্ডেন যেখানে উনি পিস্তলের গুলিতে আত্মাহুতি দিয়েছিলেন ব্রিটিশ পুলিশের হাত থেকে অব্যাহতি পেতে। এরপর  গেলাম ত্রিবেণী সঙ্গমে যা প্রয়াগ নামে পরিচিত। এখানে  উত্তর ভারতের প্রাণদায়ী দুটি প্রধান নদী গঙ্গা ও যমুনার সঙ্গমস্থলে সরস্বতী মিশেছে।  ত্রিবেণীকে ঘিরে প্রতি বছর মাঘমাসে বসে মকরসংক্রান্তি মেলা। ছয় বছর অন্তর অর্ধকুম্ভ  আর বারো বছর অন্তর বসে পূর্ণকুম্ভ মেলা। পিতামহ ব্রহ্মা 'প্রকৃস্ট যজ্ঞ' করে এই স্থানের নাম রাখেন 'তীর্থরাজ'। নৌকা করে সঙ্গম দর্শন ও পুজো দেওয়ার ব্যাবস্থা আছে। সঙ্গমের কাছে আকবরের তৈরি সুবিশাল এলাহাবাদ কেল্লা যার অধিক অংশ মিলিটারিদের দখলে। সামনের অংশে পাতালপুরী মন্দির ও অক্ষয়বট দেখতে পারেন। পাশেই রয়েছে হনুমান মন্দির। অভিনব মন্দিরে দেখবেন পবনপুত্র হনুমানের বেশ বড় আকারে শায়িত মূর্তি। বলা হয় বছরে একবার হলেও সঙ্গমের জল ফুলে উঠে পবনপুত্রের চরণ ধুইয়ে দেয়। এর পর গেলাম শঙ্কর বিমান মণ্ডপম। সঙ্গমের কাছে হাল আমলে তৈরি ১৩০ ফুট উঁচু চারতলা মন্দিরের বিভিন্ন তলায় দেখবেন তিরুপতি বালাজি, কমক্ষাদেবী, শিবলিঙ্গ সহ জগৎ গুরু শঙ্করা চার্যের বিগ্রহ। এরপর এলাহাবাদ হাই কোর্ট ও চার্চ দেখে চলে গেলাম খুসরুবাগ। সুসজ্জিত উদ্যানের মাঝে জাহাঙ্গিরের বড়ছেলে খুসরুর এই সমাধি সৌধ মোগল স্থাপত্যরীতিতে নির্মিত। বেলে পাথরের এই সৌধের পাশে যুবরাজের মা শাহ বেগমকে সমাহিত করা হয়েছে। এরপর হোটেলে ফিরে ডিনার করে রাত 11.40 এ রাজধানী এক্সপ্রেসে চড়ে পরেরদিন সকাল 10 টায় হাওড়া পৌছালাম। স্বল্প সময়ের এই ট্রিপে দর্শন করলাম ইতিহাসের কিছু মনোমুগ্ধকর দলিল।।


বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য:

1) জানকী হোটেলের ফোন নম্বর 8067616761. রুম ভাড়া 2000 টাকা সর্বনিম্ন।

2) হোটেল কাশীর ফোন নম্বর 5322400812. সর্বনিম্ন রুম ভাড়া 1900.এখানে লাঞ্চ ও ডিনারে 200 টাকায় নিরামিষ আনলিমিটেড থালির সুব্যবস্থা আছে।।

3) সারনাথের পবিত্র ভূমিতে একরাত কাটাতে চাইলে পাবেন পর্যটন বিভাগের-রাহী ট্যুরিস্ট বাংলো। ফোন নম্বর 5822595965 ।

4) বারাণসীতে স্বল্প দামের অনেক ধর্মশালা আছে যেখানে থাকা ও খাওয়ার সুব্যবস্থা আছে।

5) ট্রেন ছাড়াও বারাণসী থেকে এলাহাবাদ যাওয়ার বাস ছাড়ে টার্মিনাস থেকে।।

6) নৌকাবিহারের জন্যে অনেক টাকা বেশি চায়। দরাদরি করা অবশ্যকর্তব্য। শেয়ারে 100 টাকা করে নৌকা ভ্রমণে নেয়। তবে ভালো করে ঘুরতে চাইলে আলাদা নৌকা ভাড়া করা ভালো।।

মহারাজের জন্য





তুমি এক আগুন যেন
খোলা মাঠ বাইশ গজে
প্রথমেই সেলাম জানাই
মহারাজ তোমায় সাজে।

তুমিই তো কাঁপিয়ে ছিলে
বাঙালির সাহস মনে
কোনো এক বাঙালি ছেলেও
জিতে কাপ আনতে জানে।

গজে মাঠ পেরিয়ে গিয়ে
বল তো উড়ছে হাওয়ায়
বাঙালির গর্ব তুমি
এমন এক ছেলেকে পাওয়ায়।

যে ছেলে পাহাড় প্রমান
রেকর্ডকে গড়তে পারে
বিদেশে বুক দেখাল
ভারতের অহংকারে।

তুমি এক স্বপ্ন যেন
ফুটে ছিলো হাসনুহানায়
দাদার আজ জন্ম দিনে
দাদাকে সেলাম জানাই।



লেখাঃ- সুদীপ্ত সেন(ডট.পেন)
অসাধারণ ছবিটি করেছেন আমাদের খুবই পরিচিত জন অভিব্রত দা

শনিবার, ৬ জুলাই, ২০১৯

 সংসার সুখের হয় --------------
--------------------------------------
কলমে # সোনালী নাগ
-----------------------------------------

বাইরে শুধু লড়াই সে নয়,
সেতো অন্দরে তেও আছে,
দাপুটে মেয়েও  নিজের ঘরে ভয় তাড়িয়ে বাঁচে,
চরিত্র নিয়ে টানাটানি হয়তো খুবই সোজা,
মেয়ে মানেই টানা পোড়েন,
মেয়ে মানেই বুঝি বোঝা,
মুখোশ গুলো খুব আপনার,
হয়তো প্রিয়জন
বিশ্বাসে যে  বিষ ঢালা আছে,
তা বোঝে কি মন?
শাড়ির আঁচল আর
পোশাকে মেয়ের নাকি মরণ,
বলো তবে দুধের শিশুর রক্তযোনি,
কি তার কারণ?
ইচ্ছে ক'রে গুঁড়িয়ে ফেলি দাঁতের গোড়া যত,
ইচ্ছে করে মুখোশ টেনে হিঁচড়ে আনি 
দিনের আলোয় ইচ্ছেমত,
অষ্টমীর মা যখন জাগছে মনে মনে,
কানের কাছে কে বলে যায় -----
"সংসার সুখের হয় রমণীর গুনে "
আর তারপর,
তারপর তো সবই জানা,
মেনে নেওয়া মানিয়ে নেওয়া বেদ বাক্য যত,
নিজেকে বুঝিয়ে চলা দিনে রাতে রীতিমতো,
দূর্গা কে তাই বছর ভর আসনে তুলে রাখা
স্বর্গ থেকে নেমে আসা, 
চমৎকারের আশায় বেঁচে থাকা !!!
বস্তা পঁচা এঁদো কথার জাল বুনে যাওয়া মনে
বদলে নিয়ে লেখো দেখি ----
সংসার সুখের হয় রমনীর খুনে !!!!


: রাজকন্যের গপ্পো
==============
সোনালী নাগ
--------------------------

কথার টানে কথার পাহাড়,
কাছে কিংবা দূর,
রূপকথাতে ছুঁয়ে দেখা নদী সমুদ্দুর !!
রাজকন্যা দৈত্য দানব পক্ষীরাজের দেশে
রাজারকুমার দাঁড়ায় এসে  অন্ধকারের শেষে !!
দুয়ো রানীর দুঃখ থাকুক, সুয়ো রানীর সাধ,
মন্ত্রী কোটাল হাতিশালের গল্প থাকুক অবাধ !
নটে গাছটা বাঁচুক আরো, বাঁচুক ছেলেবেলা,
তবু সত্যি ছিলো সে আজগুবি গল্প গুলোর মালা
মায়ের আঁচল হারিয়ে দেখি, হায় -জীবন নাট্যশালা !!
বড় হবার তাগিদ তাতে মনটা ছোটো হয়,
অশুভ সব শক্তি গুলো জাঁকিয়ে বসে
 আর  জীবন বয়ে যায়,
কোন পুকুরে ডুব দেবো? কোন গুহাতে তাকে পাবো?
মাকড়সার জালে বন্দি, গুমরে মরি তায়,
দৈতটার প্রাণভোমরা খুঁজে পাওয়া দায় !!
আকাশ কালো সূর্য উধাও এক গ্রহণের ফাঁদে,
একটু আলোর খোঁজে তাই সকাল সন্ধ্যে এখন জানো,  রাজকন্যা কাঁদে !!!
 হঠাৎ সেদিন

সৌমেন দাস

যেদিন তোর কবোষ্ণ বুকে
রেখেছিলাম প্রথম হাত,

বুঝেছিলাম
ঘনিয়ে এসেছে রাত,

বাড়ি ফিরতে হয়েছিল হঠাৎ ...!


অন্য মোহনা

সৌমেন দাস

একবার ফিরে আয়
দেখবি বারান্দা জুড়ে সেই চেনা গন্ধ
বাগানে এখনও পিউলিরা হাসে
এখনও ছাদের ওই কোণটাতে ঠিকরে পড়ে বিকেল রোদ্দুর
আর ওই বেহায়াটা সকাল-সন্ধে ডাক দিয়ে যায়
পিউ কাঁহা পিউ কাঁহা পিউ কাঁহা পিউ ...

একবার ফিরে আয়
শুধু একবারটি
দেখে যা-না কতই সুখে আছি
ভরা সংসার, টবের মানিপ্লান্ট
আর ওই বেহায়াটাকে নিয়ে ...

তবু
শুধু একবার ফিরে আয়
আমার সঙ্গে এক অন্য মোহনায় ...
জীবন_কথা

#মুনমুন_মুখার্জ্জী

ছুটছে সবাই ছুটছে ভাই
ছোটার কোনো বিরাম নাই।
উপরে ওঠার চলছে লড়াই
বন্ধুকে হারানো সহজ উপায়।
বিশ্বাস অর্জন করছে আগে
পিছনে ছুরি চালিয়ে ভাগে।
ভালবাসার নেই প্রতিদান
স্বার্থ সিদ্ধি চলছে স্লোগান।
সবাই সবার শত্রু আজ
ধোঁকা দিতে নেই তো লাজ।
শত্রু ভাবনাটা সিঁড়ি যে হয়
পথ তাই তো সহজেই হয়।
বন্ধু সবাইকে বলতে হয়
বিশ্বাস করলেই ঠকতে হয়।
ভালবাসার মুখোশ পরে
চরম ক্ষতি করতে পারে।
ভালো চায় যে, দোষটা ধরে
চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে।


ক্ষোভ

#মুনমুন_মুখার্জ্জী

পাহাড়ে জ্যাম, অভিযাত্রীরা চলেছে স্বদলবলে,
এভারেস্টকেও রাখতে চায় নিজের পদতলে।

এভারেস্টের উঁচু মাথা ওর গর্ব নয় সহ্য ক্ষমতা,
আনাচে কানাচের মায়াবী দৃশ্য তারই  মহানুভবতা--

পারলে তাকে মন থেকে করো সম্মান--
মাথায় চড়ে তাকে করো না অপমান।

উপরে ওঠার মোহে সবার বুদ্ধি পেলে লোপ,
ক্ষোভ বাড়তে বাড়তে হয়ত পৃথিবী হবে বিলোপ।


#অভিমানী_মেঘ

#মুনমুন_মুখার্জ্জী

মনের কোণে জমে আছে অভিমানী মেঘ,
ছিনিমিনি খেলে সবাই নিয়ে সবার আবেগ।

সবাই দেখি উঠেছে আজ পুতুল নাচে মেতে,
টানছে সুতো সুযোগ বুঝে মুখোশ মুখে এঁটে।

হাত জোড় করে একদিন ভিক্ষা করেন যিনি,
ভোটের পরে কুকুরের মত তাড়িয়ে দেন তিনি।

আচ্ছে দিনের স্বপ্ন দেখিয়ে বহুমত পেল যে,
স্বল্পসঞ্চয়ের হার কমিয়ে শেষে ভাতে মারবে সে।

যে মেয়েটি ভালবাসায় সবাইকে জড়িয়ে রাখে,
একলা ঘরে রক্তাক্ত হয়ে ডাকতে পারে না মাকে।

আনুগত্য দেখে যার সবাই চোখ বুজে বলে খাঁটি,
হিংসায় উন্মত্ত কেউ তাকে দিতেই পারে কাঠি।

লোভের আগাছা প্রতিনিয়ত দিচ্ছে যে হাতছানি,
সেই আগুনে হাত সেঁকলে টানতে হতে পারে ঘানি।

ক্ষমতার দম্ভে কেউ সর্বস্ব কাড়ছে কারো,
কেউ হয়ত ঘুম কাড়বে একদিন ঠিক তারও।

দেখে বুঝে এসব কিছু মাথা যাচ্ছে ঘেঁটে,
প্রতিবাদী মানুষ পাই না, সবাই পড়ে কেটে।

সবার মাঝে দিচ্ছি মিছে আনন্দে গড়াগড়ি,
আয়রে বৃষ্টি তোকে জড়িয়ে ঝরঝরিয়ে ঝরি।



 #দিতে_পারবে

#মুনমুন_মুখার্জ্জী

দিতে পারবে এমন একটাও সকাল,
যে সকালে কোনো বৃদ্ধ হাহাকার করবে না,
যে সকালে কোনো নারী আর্তনাদ করবে না,
যে সকালে কোনো একাকিত্বে ভুগবে না,
যে সকালে কোনো শিশু খিদেয় কাঁদবে না,
যে সকালে কোনো কুঁড়ি ফোটার আগেই ঝরবে না --
জানি কেউ কোনদিন পারবে না, তুমিও না, আমিও না ---
আর যে মানুষগুলো সবার দোষ ধরে তারাও না।
আমরা নিজের গোছাতে ব্যস্ত, কারোর জন্য ভাবি না।
একই অবস্থা আমাদেরও হতে পারে সে চিন্তা করি না।
: চাল

বিদিশা নাথ

দু মুঠো চালে কতটুকু ভাত হয় জানা নেই।
বাসনে ধরে না যতটা,
হাঁড়িতে উপচায় না যতটা,
মা বলে গেছে দু মুঠোই নিতে হাতে।
মা-র শাড়িটা একটু কম ছেঁড়া আজ,
ঘরে আজ তেলের গন্ধ ভাসছে,
চুলে মেখে মা আজ বেরিয়েছে।
দু মুঠো চালে কোন পেট টা ভরে জানা নেই,
বড়-র ,মেজ-র না সেজ-র!
মা বলে গেছে বড় কে দিতে বেশী টা।
মা জানে ওর চামড়া কত নরম।
মা জানে পরের দিন ছেঁড়া শাড়ী টা
বড়-ই পরবে।
বড়-র চামড়া খুব নরম।


বিশ্বাস ভাঙার আগে

~বিদিশা নাথ

বিশ্বাস ভাঙার ঠিক আগে,
অবাঞ্ছিত কোনো শব্দ হয়না।
তারপর একদিন বেশ সাজানো গোছানো একটা মোড়কে,
মৃত হৃদয় জড়িয়ে আমি,
শেষমেশ প্রেমিকার বাড়ি ফেলেই এলাম।
একটা ছুরি দিয়ে বললাম,
"নাও এবার তো পারবে!
যত্নে খোদাই করতে!
খোদাই করো অজন্তার কারুকার্য,
খোদাই করো ইলোরার ভাস্কর্য, যত্নে;
খুব যত্নে কেটে কেটে বসাও
সূর্যমন্দিরের ঢলে পড়া
সূর্যের শেষ ছাপ"।
তোমার গোপন আশ্লেষ ভরা চোখ দেখে,
কষ্ট হয়নি আমার!
শুধু কান পেতে শুনছিলাম
কই কোথাও আওয়াজ হল না তো!
ও! আমি তো ভুলে গেছিলাম,
বিশ্বাস ভাঙার পরেও ,
কোনো টুকরো,বাজে,অতিরিক্ত আওয়াজ হয় না!


ক্ষুধা

~বিদিশা নাথ

লাইনের আমি, চটপট ঝটপট।
ফেলো কড়ি মাখো তেল,কাজ সারো।
শেষ করো ভুয়ো দাপাদাপি,
ঠোঁটে কামড় দেওয়া শুকনো রক্ত,
বুকের খাঁজে আঁচড়,
কপালের কোণে একটা অবাঞ্ছিত কালশিটে দাগ,
সব নিয়ে সেজে দাঁড়িয়ে
লাইনের আমি,
খকখক, ঘঙঘঙ কাশির আওয়াজ চাপা পড়ে,
বিকৃত চিৎকার আর শীৎকারে।
সব ঢাকা দিয়ে দোমড়ানো শরীর ,
আর কুঁচকানো নোটের তাড়া নিয়ে,
লাইনের আমি।
বাড়ি যেতে হবে,
জলন্ত কিছু শ্বদন্ত-এর সামনে দিয়ে,
লাইনের আমি,
শেষরাতে তবু ওরাই আমার সম্বল