ভিড় থেকে সরে আসি। সমুদ্র জানে না কারও নাম। অনেক লেখার শেষে সাদা পাতা এখনও আরাম...শ্রীজাত

বুধবার, ৩১ জুলাই, ২০১৯

 উলঙ্গ
~বিদিশা নাথ
রাস্তায় আজ সবাই নেমে পড়েছে
উলঙ্গ,উন্মত্ত, উন্মুখ।
সবাই হাঁটছে সজোরে,
হাঁটতে হাঁটতে ওরা সবাই,
রাজবাড়ীর ঠিক দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে।
দশটা সান্ত্রী, কুড়িটা বর্শা, দুটো লোহার শিকল।
শত শত উলঙ্গ সোজা শিরদাঁড়া দেখে ওরাও ভয় পেয়েছে।
আজ সব খুলে রেখে
স্তাবকতার জঞ্জাল,
পৃষ্ঠপোষকতার মোহ,
বাহবার মুখোশ,
তৈলমর্দনের ঘনিষ্ঠ আওয়াজ,
সব দুমড়ে মুচড়ে  ওরা শুধু শরীরটাকে সঙ্গে এনেছে।
নির্বাক,উন্মুক্ত স্পর্ধার শরীর টাকে।
উলঙ্গ এই মন গুলোই আজ
এই অচলায়তন ভেঙে ফেলবে এক নিমেষে।

অপেক্ষা
~বিদিশা নাথ
তুমি বুঝবে কি পরের বার?
আদৌ পরের বার বলে যদি কিছু থাকে?
যদি পরের বার অপেক্ষা করাও,
আমি অপেক্ষাতে থাকব।
যদি বলে যাও,'এ যাওয়া শেষ যাওয়া নয়",
"বছর খানেক পরে ফিরে আসব আবার সঠিক সময় হলে"।
হাতে অনেক সময় নিয়ে থাকব।
যদি বলে যাও,"পরের বার ঠিক আসব,
ঠিক সময়ই আসব"।
রেলগাড়ির ঝমঝম আওয়াজে,
লাইনদুটো যেমন চলতে থাকে পাশাপাশি ,
এজনম নয় সেভাবেই চলব।
তবু থাকব।
পরের জনম দেখবে মিশে যাওয়া,
ভুলে যাওয়া আর যা কিছু।
তবু মনে রাখব।
পরের বার এবারের দেওয়া কথা,
আঁকড়ে ধরে বাঁচব।


ছোট্ট গল্প
~বিদিশা নাথ
বাড়ি থেকে বেরিয়ে বুঝলাম পথ হারিয়েছি,
বাড়িতেই ফেলে এসেছি,
চশমা, লাঠি আর পুরানো শিরদাঁড়াটা,
মানে যা যা লাগে ভালো করে দাঁড়াতে আর দেখতে।
বাসের পাদানি তে দাঁড়িয়ে চিন্তা করলাম,
আমি কি দেখতে পেলাম!
উস্কো খুস্কো দাড়ি ওলা লোকটাকে?
যে পরম মমতায় মেয়েটার বুকে কনুই বোলাচ্ছে,
ওহ! আমি তো চশমা আনিনি!আনিনি শিরদাঁড়াও!
ছেলেটার মুখে অশ্রাব্য শব্দ,
আমি বোবা দৃশ্যপট নিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম,
আমি স্রোতের মধ্যে ভাসতে ভাসতে,
বাড়ি এলাম।
মিথ্যের দুর্গন্ধ ওলা একটা স্রোত।
এসে বুঝলাম ঘরের ভিতর 'আমি' টাকেই
 ফেলে এসেছিলাম আজ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন