Mousumi Bhowmick: ছেলেমেয়েরা যখন পড়াশোনা করে তখন বাবামায়েদের মূলত লক্ষ্য থাকে একাডেমিক রেজাল্ট অর্থাৎ পরীক্ষার ফল যেন ভালো হয়। মাধ্যমিক পাস করার পর যদি ছেলেটি অথবা মেয়েটি অংক কিংবা বিজ্ঞানে ভালো হয় তাহলে উচ্চমাধ্যমিকে তাকে বিজ্ঞান শাখায় ভর্তি করা হয় নচেৎ আর্টস শাখায় ।
এই স্কুল জীবনে কোন একটি সাবজেক্ট কোন একটি ছাত্র-ছাত্রীর ভালোলাগা কিংবা খারাপ লাগার পেছনে অনেক সময় কোনও কোনও শিক্ষকের অবদান থাকে । হয়তো কোন শিক্ষকের শেখানোর পদ্ধতির জন্য যে কোন একটি সাবজেক্ট না ভালোলাগা সত্ত্বেও হয়তো প্রিয় হয়ে উঠল। তারপরে হয়তো সেই সাবজেক্টটি নিয়েই সে ভবিষ্যতে পড়বে ঠিক করল। আবার কখনও হয়তো এমন ভীতি তৈরি হলো সে আর সেই সাবজেক্টটিকে পড়তেই চাইল না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ছেলেটি কিংবা মেয়েটি সেটা নিয়েই এগোতে চায় যা তার ভালো লাগে। ভবিষ্যতের সুদূর প্রসারী ফল সম্পর্কে তার ঝুঁকি কিংবা ফল কোনোটাই সে তখন ভাবে না অথবা জানার সুযোগও থাকে না।
মা-বাবারা সবসময় চায় তার ছেলেটি কিংবা মেয়েটি, যা নিয়েই পড়ুক সেটা নিয়ে জীবনে যেন প্রতিষ্ঠিত হতে পারে অর্থাৎ একটি ভালো পেশা গ্রহণ করতে পারে। এবার এখানে অনেকগুলো ফ্যাক্টর কাজ করে। প্রথমতঃ, হয়তো একজন ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে একটি প্রাইভেট জবে ঢুকলো কিন্তু চাকরিক্ষেত্রে হয়তো তাকে অনেক ছোটাছুটি করতে হলো কিংবা নাইট শিফটে কাজ করতে হলো কিংবা যেকোনো সময়ে তাকে চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হল । তখন হয়তো ছেলেটির সামনে হঠাৎ একটা সুযোগ এসে গেল তার আরেক ভাললাগা একটা শিক্ষকতা কিংবা সাংবাদিকতা করার সুযোগ। কিছুদিনের জন্য সে সেটাই করতে শুরু করে, ক্রমে হয়তো সেটাকেই পেশা হিসেবে বেছে নিল। এ ক্ষেত্রে তো বাবা-মাকে দোষ দেওয়া যায় না।
আবার কখনো কখনো এমনও ঘটে যে ছেলেটি কিংবা মেয়েটি উচ্চ মাধ্যমিকের পর যা পড়তে রাজি নয় হয়তো বাবা-মার জোর জবরদস্তিতে সে তাই নিয়ে ভর্তি হল তারপর ভালো ফল করলো না, হয়তো তারপরে এসে স্ট্রিম চেঞ্জ করলো আবার এরকমও ঘটেছে ভালো ফল করেও পরবর্তীতে সে আবার অন্য প্রফেশনে চলে গেল। এক্ষেত্রে হয়তো বাবা-মায়ের কিছুটা দোষও রয়েছে। হয়তো পারিপার্শ্বিক চাপ, অথবা নিজেদের অপূর্ণ সাধ মেটাবার কিছুটা চেষ্টা।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে আবার পরিস্থিতির জন্য। যেমন কেউ হয়তো টাইপরাইটারে টাইপিং শিখেছিল। তারপরে কম্পিউটার এসে যাওয়ায় সে ক্ষেত্রে তাকে অন্য কোন কিছু করার চেষ্টা করতে হয় অর্থাৎ পরিস্থিতির সাথে চলতে শিখতে গিয়ে মানুষের পেশাও অনেক সময় পরিবর্তন করতে হয় ।
আবার কখনও কেউ শিক্ষক হতে চায়, কিন্তু পরিস্থিতি (যেমন পশ্চিমবঙ্গে) তাকে অন্য পেশাতে যেতে বাধ্য করে। রাজনৈতিক ও পারিপার্শ্বিক পরিবেশ, পরিস্থিতি ও সময়ের সাথে সাথে মানুষের পেশার পরিবর্তন ঘটে । এটা অনস্বীকার্য যে সফল হতে হলে মানুষকে এই পরিবর্তন গ্রহণ করেই এগোতে হবে। কি হতে চেয়েছিলো সে ভেবে বসে থাকলে চলবে না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন