শনিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২১
সম্পাদকীয়
প্রথম পুরস্কার
কলমেঃ- শ্রেয়া রায়
ছোট্ট বিনি রোজ দোতলা- তিনতলা বাড়ি গুলোর দিকে তাকিয়ে থাকত একদৃষ্টে। আর শুয়ে শুয়ে মাকে জিজ্ঞাসা করত,"মা, আমাদের এমন বাড়ি কবে হবে?" মা তার ছোট্ট ৫ বছরের শিশুর প্রশ্নে মৃদু হাসি হেসে বলতেন,"ভগবান যে দিন চাইবেন!" এভাবেই প্রত্যেক দিনই মা তার অবুঝ শিশুকে কথায় ভুলিয়ে রাখতেন। কিন্তু শিশু যতই অবুঝ হোক না কেন, সে তার স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখত মায়ের কথায়। এভাবে দিনের পর দিন কেটে গেল, পেরিয়ে গেল বেশ কিছু বছর। বিনির এখন বয়স ৮ বছর। পথে ঘাটে ঘুরে ঘুরে এখন বাস্তবটাকে ধীরে ধীরে চিনতে শিখছে। সারাদিন ঘুরে বেড়ানোর পর দিনের শেষে মায়ের সাথে দুটো রুটি কোনক্রমে ভাগ করে নেয় পথের ধারে। পিতৃ পরিচয়হীন কন্যা সন্তানকে নিয়ে পথের ধারেই ঘর বেঁধেছে মা।
ছোটবেলা থেকেই একটি অঙ্গনওয়াড়ি স্কুলে বিনে পয়সায় পড়াশোনা করতো বিনি। পড়াশোনার প্রতি তার আগাগোড়াই বেশ ঝোঁক ছিল। ফুটপাতে খবরের কাগজের দোকানের কাকুর থেকে রোজ সে খবরের কাগজ নিয়ে পড়তো। একদিন বিদ্যালয়ের তরফ থেকে একটি কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে সে। সেই ক্যুইজ প্রতিযোগিতায় সমস্ত প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিয়ে প্রথম স্থান অধিকার করে বিনি। প্রতিযোগিতার প্রথম পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয় নগদ ১০ লক্ষ টাকা। এরপর পূরণ হয় এত দিনের স্বপ্ন। মায়ের সাথে রোজ যে স্বপ্নের ঘর বুনতো একটু একটু করে, বিনির সেই স্বপ্নের ঘর আজ বাস্তবে তৈরি হলো।
আমার নবীন কুঁড়ে
কলমেঃ- শুভঙ্কর নস্কর
জীবন নদীর পারাবারে আমরা সবাই একা,
দুরন্ত- দুর্নিবার এই সময়কে পাল্লা দিতে দিতে
অবসন্ন শরীরের ঘামও আজ ক্লান্ত,
পথ চলতি মানুষের ভিড়ের মধ্য থেকে
হঠাৎ অস্পষ্ট স্বর- সাথেই থাকব..
পাশে আছি'র বার্তায় বাড়িয়ে দিলুম হাত।
মুহূর্তে স্বপ্নের ভিড়ে পার করেছি সপ্তসিন্ধু..
শরীরের মলিন পরিধেয়-কে মুহূর্তে করেছি
রত্ন-খচিত রেশমিকা ভূষণ, রাজশাহী আভিজাত্যে।
এক লহমায় সূর্যের তেজস্বিতা আর
জ্যোৎস্নালোকিত চন্দ্রের মায়াকে ,
যেন স্ব-অধীনতায় করে ফেলেছি বন্দি।
কিন্তু হায়! স্বপ্নীল মুহূর্তে-
দুরন্ত ঘূর্ণিপাকে স্বপ্নালোকের ছাদ গেলো উড়ে,
কল্পলোকের মায়াজাল বাস্তবের মাটিতে দিশেহারা।
ভালোবাসার নেশায় মাতন লাগানো মৃগনাভিটি আজ
সুবাস বিতরণে বড়ো-বেশি ক্ষয়িষ্ণুপ্রায়,
তবুও অস্ফুট স্বর, দূর থেকে ভেসে আসে যার প্রতিধ্বনি,
-আমি মারের সাগর পাড়ি দেবো ফিরবো দেশে দেশে ,
বাঁধবো আমার নবীন কুঁড়ে পথের প্রান্তে শেষে।।