ভিড় থেকে সরে আসি। সমুদ্র জানে না কারও নাম। অনেক লেখার শেষে সাদা পাতা এখনও আরাম...শ্রীজাত

বৃহস্পতিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯










| তাই একা লাগে |


চাওয়া পাওয়ার মধ্যবর্তী সীমানায় দাড়িয়ে
             আমি প্রতীক্ষার প্রহর গুনি
তখন ঘড়ির টিকটিকে
                           আয়ু বয়ে চলে

কাফেনের চাদর মুড়িয়ে ভুলে যাই
          বিষাক্ত গোলাপের করুণ আভা

উষার স্বপ্ন জড়িয়ে
      যে  শিশির কনা জমা হয়
তাতে কাদম্বরীর দীর্ঘশ্বাস খুঁজতে গিয়ে
হারিয়ে ফেলেছি রবির প্রাণশক্তিকে

তাই বড়ো একা একা লাগে।।

----------সুদীপ্তার কলম থেকে

বুধবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

আমন্ত্রিত কলম

 ‌ইচ্ছেনদী
-----------সুপ্রীতি বর্মন।

 আঁশটে গৃহকোণে সাংসারিক চলমান আলাপন,
প্রাচীন মুখখানা বইয়ের ভাঁজে লুকিয়ে পেতে চায়,
দমবন্ধ গুমোট যন্ত্রনা থেকে নিষ্কৃতির সুখ।
ছন্নছাড়া প্রেমিক তুমি একদিন স্বামীতে উত্তরন হবে,
এই ছিল ঐকান্তিক প্রত্যাশা কিন্তু ধূলিসাৎ সে আশা।
রংচটা বয়স ঝরা পাতা অসাড় হাত পা ফুঁপিয়ে কান্নার শোক,
কে দেবে তোমার বুকের লোমশ বাগানে অঙ্কুরিত সোহাগ মুকুল,
আমার খোঁপায় গুঁজে।
আস্ত ছেলেবেলার দহন দাপাদাপি সরাতে চায় ঠোঁট,
বঞ্চিত করে আস্বাদন তোমার অজ্ঞাত উষ্ণ চুম্বন।
ব্যস্ত ভিড়ে দাঁড়ানোর অভাব তবু উড়ে এসে জুড়ে বসে,
তোমার আমাকে আলিঙ্গনের খামখেয়ালী ক্ষোভ।
বিনিদ্র রাত ইচ্ছার বালি তবুও দৃঢ়মুষ্ঠির আবদ্ধ সম্পর্ক,
তোমার গন্ধ শুঁকে কান পেতে তোমার কন্ঠস্বরের অমৃতভোগ।
তোমার শারীরিক স্পর্শে সর্পের মরন আলিঙ্গন,
প্রস্তুতিবিহীন আমার জিদের আঠালো এঁটেল মাটি,
কখন যেন ফসকে যায় রুষ্ঠতা ঠোঁটের আলিস্যি বেয়ে।
বেকারত্বের অজ্ঞাতবাসে আবর্জনাসম কূটকাচালির তিরস্কারে,
গা সওয়া ভাবে ভদ্রতার পোষাক ছুঁড়ে ফেলে,
শূন্য বিকেলে তারারা লোপাট অন্ধ মহাকাশের বুকে মাথা গুঁজে,
চাতালে গল্পেরা মশগুল, ছোঁয়াচে একাকীত্ব থেকে পরিত্রানে,
দুগ্ধ স্রোতস্বিনীতে অবগাহনরত স্নিগ্ধ বালিকার সখ্যতা।
নষ্ট আকাঙ্খা শব্দঘরে ঐকান্তিক পিপাসায়,
আজ শুধু দিনরাত উজাড় করে তোমাকে খোঁজে।


আমন্ত্রিত কলম

উড়ন্ত চাঁদের বৃত্তনাল
------------------------------
অনুরূপা পালচৌধুরী


আসক্ত অবসাদের চাদরে জমে থাকা গতমেঘের উর্বর মাটি
আরো ১টা তুমি ভেদ : একুইনাস
সেসব কথার পদপৃষ্ঠ বিষবাউল
নেশাখোর আয়নার চলাচল। ছিন্ন করি মৃতদেহ
চিনতে চিনতে গলীয় অজগরের গতিপথ
ক্রমশ গড়ায় শিকড়ভাজা জ্বরনামা
এসো অপলক জিভের গ্রহণরতি
       
            মুহুর্তের ঘুমপথে অবশ পায়ের শীত্কার


রাত থেকে অতীতে


ক্ষতের হিসাব কষতে গিয়ে কখন দেখি উপন্যাস লিখেছি রাত্রি জুড়ে।

অদ্রাব্য স্বপ্নেরা প্রতিফলিত হতে থাকে প্রহরের পৃষ্ঠায়,

অঙ্কুরিত হয় অদেখা বিষন্নতা।

নিদ্রাচ্ছন্ন শহরটা যখন নিস্তব্ধতা বোনে রাতের সুতোয়,

আমি তখন কবিতায় খুঁজে ফিরি অগোছালো জীবনটাকে।


ছন্দের তীর ঘেঁষে হাঁটতে হাঁটতে এসে পড়ি অতীতনগরে,

দেখা মেলে অজস্র অগঠিত প্রতিশ্রুতির ।

এভাবেই নোনতা স্বাদে মন ভরায় ঠোঁটের স্পর্শকোষ।

যেমনটা অবিরাম চলে সমুদ্রের বুকে। 



------------অতনু রায়


মেঘ বলছে 
------------জয়দীপ রায়

শ্যাওলা বৃত্তের নীচে বৃষ্টির বারান্দা
জিজ্ঞেস করছে, “ কিরে ভিজতে যাবি”
কবির কল্পনায় আঁকাগেরুয়া নদীর কাছে 
কখনও মেঘের পালকি চড়ে 
মুষলধারে বর্ষে যাবি
মোহনার তুমুল ধারায়
দেখিস প্রেমের রাগ জন্ম নেবে ঠিক
আঁচল ছুঁয়ে কোমর জুড়ে  
যাব হয়তো এক ছুট্টে 
স্বপ্ন ছেড়ে তোর বাস্তবে
স্বাক্ষী থাকবে কেকার ধ্বনি 
তোরই মতো নুপূর পড়ে।
               



 ভুলেছিস কি আমায়?

যতবার, যতবার তুই আমাকে কিছু বলতে চেয়েছিস—
আমি ততবারই হেসে উড়িয়ে দিয়েছি,
পাত্তা দিইনি,কেয়ার করিনি,
কিছু বলার মুডে থাকলে 
মুখ ঘুরিয়ে রাগ দেখিয়েছি,
কথা ঘুরিয়েছি।

তুই বলতে চেয়েছিলিস—
আমি জানি কি কথা তোর মুখে এসেছিল–
লোক লজ্জার ভয়ে,আত্মসম্মানের তাগিদে 
তোকে খ্যেস্যা করেছি,
পরে বারান্দার রড ধরে নিজেই কেঁদেছি।
তোকে সে কথা বলতে দিইনি,
আড়ালে আবডালে লুকিয়ে গেছি।

ছেড়ে চলে এসেছি অনেক পথ
ভুলে যাবার চেষ্টা করেছি অহর্নিশ 
ভোলা কি অত সহজ? যে ভুলে যাব—
আমি নিশ্চিত তুই ও আজ আমায় ভুলিসনি।

খাতায় লিখতে গিয়েও চোখ বুজি
চোখের কোনদিয়ে যেন অশ্রু না বেরোয়
মনকে বোঝাতে পারিনি
বুকের ভিতরটা এখনও ডুকরে ডুকরে কাঁদে...

বারবার এক প্রশ্ন মনে জাগে..
সত্যিই ভুলে গেছিস আমায়?
ভুলেছিস কি আমায়?

---------------মানসী


তোমার মধ্যেই মিশে থাকবো
-----------------------পাখি পাল

জীবনে চলার পথে
ঝড়-বৃষ্টি যদি আসে....
আমি সূর্য হতে পারবো না
পাছে মেঘ এসে ঢাকে....
আমি গাছ হতে পারবোনা
পাছে ঝড়ে ভেঙে পড়ি....
আমি ছাতাও হতে পারবোনা
যা  মনে করে নিতে হবে...
তবে থাকব তোমায় জুড়ে
হয়তো দেখতে পাবে না....
কিন্তু উপলব্ধি করতে পারবে
বৃষ্টির ওই ফোটায়....
গাছের ওই দোলায়....
আর ঝড়ের ধূলো এসে
যখন পড়বে চোখে....
তখন আমি তোমার হাত
দিয়েই ঢাকবো চোখ দুটো,
আর চারিদিক তছনছ....
হয়েগেলেও, আমি তোমার মধ্যে দিয়েই তোমায় রক্ষা করবো, এভাবেই আমি 
হার না মানা শপথ হয়ে, তোমার মধ্যেই
 মিশে থাকবো....।।


বসন্ত সেনা।
 -----------অরূপ ।

 আবির টা ছড়িয়ে দিয়েছিলে আগেই,
তবু রং আজ ফ্যাকাশে, গোধূলীর আকাশে।
বসন্তসেনার দিক পরিবর্তন অনেক সহজ
স্থবিরতা টা আমার থাক 
সবই কি থাকবে প্রকাশ্যে 
পেইন কিলারে কাজ হয়না 
অভিমানের নেই ভাষা ,সব ভাষা  যদি মুখেই থাকে চোখের কাজ কি শুধুই কান্না ?
যদিও কংক্রিটে মজে মন 
তাতে কি অনুভূতি ফেরানো যায় না?



◆◆কেউ কি বুঝেছে ◆◆

মুখভার করা আকাশটা জুড়ে
শুধুই মনখারাপের বিজ্ঞাপন
সরু আলপথ ধরে হেঁটে আসা শালিক দুটোও রাতজাগা চোখে কাকে যেন খুঁজছে
এদিক ওদিক তাকিয়ে,
তালগাছের পাতারা ঝাঁকড়া চুল দুলিয়ে যেন
আকাশকে বোঝাতে ব‍্যস্ত----জীবনের মানে।
একঝাঁক পায়রা উড়েছে আকাশের দিকে
বাতাসের কোল ঘেঁষে,
উৎসাহব‍্যঞ্জক কিছু শব্দ মুখে নিয়ে।
অথচ,কাল পর্যন্ত আকাশের বুক জুড়ে ছিল
প্রশান্তির হাসি
চোখে অন্তহীন স্বপ্ন.....প্রেম।
তবে আজ হঠাৎ তার কি হল?
উত্তর জানেনা কেউ
নদী,ধূলোমাখা শহর,আমি-তুমি আর
সেই মাঝি,
যে উজানে নৌকো দিয়েছে ভাসিয়ে,সে ও না।
আজ সাত বসন্ত পেরিয়ে
আকাশের বুকে আর্তনাদ...চোখে জল।
নীলচে অনুভূতিরা হিমাঙ্করেখার নীচে
স্তরীভূত বরফ কেলাস,
ঝরে পড়ে......
ঝরে পড়ে এ জন্মের সুখ
হাসি-কান্না, বিরহ।
আচ্ছা, কেউ কি খুঁজেছে আকাশের প্রেম??
বুঝেছে যন্ত্রণাসুখ
আবেগের দীর্ঘশ্বাস ।
ভাঙা গোয়ালে থাকা পাগলটা হয়তো বুঝেছে, তাই তো
মাটিতে আঁচড় কাটে,আর
আকাশের দিকে চায়,
আবার কাটে
বিড়বিড় করে বলে....
তোর প্রেমও অমর হবে,
সব না বলা শব্দ হয়ে ।।
             
                      ---------------------সন্দীপ 

ক্যানভাস
---------গৌতম সমাজদার।
তুমি প্রায়ই বলতে
   মন মিথ্যে বলে,বলায়--
   ইনিয়ে বিনিয়ে রামধনু ছড়ায়--
   র‌ঙীন ফানুসে পৃথিবী ভরায়।
আমি তর্ক জুড়ে বলতাম,
      হৃদয়‌ই তো হাল,
      যা ভাবে তাই করায়
       ভাসায়, নোঙর এ জড়ায়।
তুমি বলতে সোহাগ ভরে
        শরীর কখনো মিথ্যে বলেনা,
         মিথ্যে বলায় না সতর্ক মুহূর্তেও।
শরীরের রং ক্যানভাসে আঁকা যায় না
        বলতে তুমি, শরীর নিজেই ক্যানভাস
         যতখুশি তুলির আঁচড় টানো--
         মন না চাইলেও ভেসে যাও,
          শুধুই ভেসে যাও.......।।


"প্রেমের স্মৃতিচারণ"

প্রেমিক -চঞ্চল ভট্টাচার্য।

তোমার চোখের ঐতিহাসিক দৃষ্টি,
আমার চোখে প্রেমের তীরধনুক,
তোমার হাসির অঝর ধারায় বৃষ্টি,
আমি,
 তোমার প্রেমে পাগল, উন্মুখ।

তোমার সেদিন গোলাপ রঙের শাড়ি,
আমার মনে  প্রেমের তরবারি,
লিখতে বসে তোমার কবিতারা,
হারাচ্ছিলো কমা কিম্বা দারি।

হাজার লোকের মধ্যে আমি তোমায়,
লজ্জাহীন সেই প্রেম নিবেদন আমার,
রিজেক্ট তুমি করেছিলে বটে,কিন্তু
চান্স ছিলো না আমার প্রেম কমার।

তাই ফোন করা আর মেসেজ পায়নি বিরাম,
তুমি ব্লক করতে প্রায় প্রতিদিনই,
আমার নতুন নতুন ফেসবুক একাউন্টে
আমি ঘৃণা করার সুযোগ তোমায় দিইনি।

অবশেষে হয়েছিলে রাজি,
শর্ত ছিলো প্রেমের থেকে বেশি,
 ভালোবাসা জিতেছিলো সেদিন
কারণ আমি হলাম প্রেমের খেলায় মেশি।

এখন আমার বয়স বছর ষাট,
তুমি আমার পাশেই বসে ছিলে,
হঠাৎ করেই প্রেমের স্মৃতিচারণ,
তুমি একটু লজ্জাবতী হলে।