ভিড় থেকে সরে আসি। সমুদ্র জানে না কারও নাম। অনেক লেখার শেষে সাদা পাতা এখনও আরাম...শ্রীজাত

মঙ্গলবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০১৯

Xক্লুসিভ ঋতব্রত


জলফড়িং-র পক্ষ থেকে তোমাকে প্রথমেই জানাই নমস্কার

ঋতব্রতঃ- নমস্কার।আমি ঋতব্রত, জলফড়িং'র সকলকে আমার পক্ষ থেকে নমস্কার।

১.) প্রথম ছবি কাহিনী,প্রথম বড়ো পর্দা কেমন অনুভূতি ছিল?

উঃ- খুবই ভালো আর অনেক ছোটো ছিলাম, ১০ বছর বয়স আমার তখন এবং যেটা হয়েছিল 'ভুলভুলাইয়া' দেখেছিলাম।কয়েকবছর আগেই তখন ভুলভুলাইয়া রিলিজ করেছিল এবং টাটকা ছিল মাথায়। সেখানে অত ভালো একটা অভিনয় বৃদাবালানের আর তারপরই তাঁকে চোখের সামনে দেখি মানে স্বাভাবিকভাবে কি একটা স্টার স্টার্ক হয়েছিল সেদিন আমি বুঝতে পেরেছিলাম স্টার স্টার্ক ব্যাপারটা কি। আসলে ছোটো থেকেই বাবার সাথে স্টুডিওই গেছি, বুম্বা কাকুর বাড়ি গেছি, ঋতু পিপির বাড়ি গেছি সো যেহেতু সকলকে চোখের সামনে দেখেছি তাই স্টার স্টার্ক ব্যাপারটা বুঝিনি এবার এরপর যখন প্রথম বৃদাবালানকে দেখলাম তখন সত্যিই স্টার স্টার্ক হয়ে গেছিলাম। এতো ডাউন টু আর্থ একজন উনি আর এতো আনন্দ করে কাজটা করেছিলাম সেকারণে অনেকবছর হয়ে গেছে তাও আমার কিছু কিছু খুচরো স্মৃতি মাথায় রয়েছে এবং সুজয় দাও খুব মজা করে কাজ করে তাই প্রথম অভিজ্ঞতা খুবই স্মরণীয় আমার কাছে। কাহিনী'র ব্যাপারটা আমি সবটা বলে ব্যক্ত করতে পারিনা।

২.)ছোটোতেই কি ভেবেছিলে নায়ক হবে?

উঃ- আমি নায়ক নই এখনও। ভবিষ্যতেও হবো কিনা জানিনা। আমি নায়ক কনসেপ্টটাই খুব একটা বিশ্বাস করিনা আমি মনে করি নায়ক বলে আসলে কিছু হয়না। নায়কটা একটা চাপিয়ে দেওয়া নাম বলে মনে হয় আমার, আসলে আমরা সবাই মানুষ। তবে সিনেমার ক্ষেত্রে যদি নায়ক বলো তাহলে আমি কোনোদিন নায়ক হতে পারবনা। আমার চোখে যারা নায়ক টলিউডে যদি বলতে হয় নায়ক আমি একজনকেই সুপার স্টার মনে করি টলিউডে সেটা হচ্ছে প্রসেনজিৎ চ্যাট্টার্জী উনি একজন সুপার স্টার উনি একজন নায়ক। সো আমার মনে হয়না আমি কোনোদিন হতে পারব। মিটুন চক্রবর্ত্তি,চিরঞ্জিৎ চক্রবর্ত্তি, রঞ্জিত মল্লিক এনারা নায়ক আমি কোনোদিন হতে পারব না এবং আমার সেরকম কোনো চাহিদাও নেই নায়ক হওয়ার আলাদা করে।প্রশ্নটা যদি এরকম হয় যে ছোটো থেকেই কী ভেবেছিলে অভিনেতা হবে তাহলে প্রশ্নটা ঠিক হয় কারণ আমি নায়ক হবে বা নায়ক হব বা নায়ক নই আমি এখনও। তো অভিনেতা হবো এটা ছোটো থেকে ঠিক করেছিলাম বলতে বাবাকে দেখতাম টিভিতে এবং মায়ের মুখে শোনা সেটা হচ্ছে খুব ছোটোবেলায় কয়েকমাস বয়স তখন থেকেই বাবার গলা টিভিতে  শুনে নাকি কাঁদতাম বা হাসতাম এরকম আরকি ব্যাপার এবং আমার যেগুলো মনে আছে সেটা হচ্ছে বাবাকে যখন স্ক্রিনে মারা হচ্ছে বা বাবা কাঁদছে এরকম কোনো দৃশ্যে আমি টিভির সামনে গিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তাম।এইসব কিছু কিছু জিনিস এবং তারপর থিয়েটার শুরু করা একদম ছোটো বয়স চার বা সাড়ে চার বছর বয়স থেকে থিয়েটারে গেছি তখন বলে দেওয়া হয়েছে জোরে বলবি যা বলবি,চন্দন কাকু (চন্দন সেন) বলে দিয়েছিল। সেইখান থেকে আসতে আসতে যতদিন গেছে তত বেশি আগ্রহ জন্মেছে তত বেশি পড়াশোনা বেড়েছে সেটা নিয়ে, তত বেশি ছবি দেখা, থিয়েটার দেখা, গান শোনা সবটাই বেড়েছে সেটা করতে করতেই ছোটোথেকেই হ্যাঁ আমি এখনও অনেক ছোটো বলে আমি মনে করি তবে অভিনেতা যে এম(aim) ব্যাপারটা হয়তো বুঝতে পারি তবে জানিনা, এখন দেখা যাক কি হয়।

৩.)প্রথম পাওয়া পুরস্কার?তার উপলব্ধি টা কেমন ছিল?

উঃ-কাজের ক্ষেত্রে প্রথম পাওয়া পুরস্কার এবিপি আনন্দের 'সেরা বাঙালী'। সেই পুরস্কার পেয়েছিলাম নাট্যকলার জন্য বুঝতেই পারছ অনেক ছোটো বয়সে অনেক বড়ো একটা সমান যেটা পেয়েছিলাম শ্রী দেবশঙ্করের হাত থেকে সুতরাং আরও বড়ো ব্যাপার ছিল তাই উপলব্ধিটা যেটা হয়েছে সেটা হলো আমার ওপর দায়িত্বটা অনেক বেড়েগেছিল। পরে আমি তাদের জিজ্ঞেস করেছিলাম আমাকে কেন দেওয়া হলো আমি তো এটার যোগ্যও নই? বলেছিল এটা তোকে দেয়নি, আমরা এই পুরস্কার ভেবেছিলাম তোকে দেব as the representative of that generation, যারা ফোনে angry birds না খেলে, নেটে সময় নষ্ট না করে বা কলকাতার যেখানে সেখানে শুধু hang out না করে যারা থিয়েটার দেখছে, নিয়মিত থিয়েটার করছে এবং থিয়েটার নিয়ে ভাবনা চিন্তা করছে। এই কথাটা আমায় খুব ভাবিয়েছিল।আমি সত্যিই ভেবেছিলাম যে হ্যাঁ তাহলে আমি সেই
generation এর একজন যাকে সম্মানিত করা হয়েছে এবং এটা আমার দায়িত্ব অনেক বারিয়েছিল বলে আমার মনে হয়। এবং সেটাই আমি এখনও মনে করি।

৪.)নাটকের মঞ্চটা প্রিয় নাকি সিনেমার ক্যামেরা?

উঃ- এটা কোনো প্রশ্ন নয় বাজে প্রশ্ন এটা, সবাই করে। আমার মনে হয় অভিনেতার কাছে অভিনয়টাই আসল। সিনেমা বা নাটক আমার কাছে একই রকম গুরুত্বপূর্ণ। আমার কাছে artform টাই improtant.

৫.)একটা নিউজ পেপারে বুম্বা দা বলেছিলেন তাঁকে অনেক খাটনি করতে হয়েছে তবেই তিঁনি নায়ক হয়েছেন এরজন্য তাঁর বাবার সবটা কৃতিত্ব নেই। এই বিষয়ে তোমার মতামত তোমার সিনেমা জীবনে।

উঃ- আমার বাবা না থাকলে প্রথমত আমি অভিনেতা হতেই পারতাম না, আমার ইচ্ছেটাই জাগত না,আমি জানতামই না সেটা কি খাই না মাথায় দেয় তো আমার বাবা আমার অভিনেতা হওয়ার পিছনে সমস্ত রকম কারণ।  আমার নিজের বাবা এবং আমার আরেক বাবা চন্দন সেন এই দুই বাবা আরকি এনাদের অবদান প্রচুর। এবার যদি বলি বাবার কৃতিত্বের কথা, সবাই বলে হ্যাঁ শান্তিলাল মুখার্জীর ছেলে তো ওই বাবার সুযোগে চান্স পায়, এটা কি বলব আর এটা আমাদের তথাকথিত ধারণা যে সব অভিনেতার ছেলেমেয়েরাই বাবার দৌলতে কাজ পায়।ব্যাপারটা হচ্ছে অভিনয় না জানলে  কাউকেই কাজ দেওয়া যায়না। অভিষেক বচ্চনের মতো এতো ভালো অভিনেতায় বছরে কটা ছবি আর করতে পারেন,কে সুযোগ দেন উনাকে এতো ভালো একজন অভিনেতা হওয়া সর্তেও। তাই সবই যদি চান্সের ওপর হতো পৃথিবীতে তাহলে আর কিছু বলার ছিলনা।
যেটা প্রথমে দরকার একটা গাইড আর আমার বাবা যেহেতু সেই পথটা দিয়ে হেঁটেছেন তাই আমি ওই গাইডটা পেয়েছি হাতে ধরে ধরে শিখে নেওয়ার। তাই আমার মনে হয় আমার যেটুকু পাওনা সবটাই আমার মা এবং বাবার জন্য।

৬.)  open tea বায়োস্কোপ চোখ বন্ধ করে বলা যেতে পারে এটা টিনেজারদের ছবি,একটা আলাদা ইমেজ আছে।
Generation আমি কেন দেখবে লোকে?

উঃ- generation আমি দেখে ফেলেছে লোকে আর যারা এখনও দেখেননি তাদের জন্য বলি open tea বায়োস্কোপ টিনেজারদের ছবি ছিলো, একটা ফ্রেস ছবি ছিল তাই আবার অনেক বছর পরে একটা ফ্রেস ছবি হয়েছে generation আমি। generation আমি একটা খুব important প্রবলেমকে adress করে সেটা হচ্ছে over parenting এবং under parenting। over parenting বলতে বাবা মায়ের নিজের ইচ্ছে ছেলেমেয়েদের ওপর জোড় করে চাপিয়ে দেওয়া, ছেলেমেয়েদের বন্দি করে রাখা। এটা আমি প্রচুর দেখিছি এখনও হচ্ছে যারা বিয়ে করে তাদের ওপরেও এরকম প্রেসার দেওয়া হয়। এরকম লোক আছেন যারা generation আমি দেখে চুপ করে গেছেন কারণ তারা জানেন তারা নিজেরাই এটা করেছেন এবং under parenting হচ্ছে আমি এটাও দেখেছি যারা ডিভোর্স বা সেপারেটেড parents সেটা বাচ্চার মেন্টালিটিতে কতটা ডিপ্রেশন এনে দেয় তবে এই ছবিতে কোথাও দেখানো হয়নি বাবা মায়েরা ভুল আর সন্তানেরা ঠিক। এই ছবিতে বাবা মায়েদের দিকটাও জরুরি কারণ তাঁরা চায় ছেলেমেয়েদের সুস্থ ভালো ভবিষ্যত সমস্তটাই important। আমরা এই ছবিতে বলিনি  পড়াশোনা বন্ধ করে দাও, না একদমই নয় পড়াশোনাটা ভীষণ জরুরি, যদি গান করতে ইচ্ছে হয় তাহলে পড়াশোনাটাও করো গানটাও করো।কাজেই ছবিটা খুব important একটা ছবি যারা দেখননি তারা মিস করেছেন। hoichoi তে আছে ছবিটা দেখে নিন আর যারা এখনও মনে করছেন তারা দোখবেন না তারা দেখবেন না তারা নিজেরাই মিস করবেন কারণ খুব জরুরি একটা ছবি হয়েছে।

৭.)এখন অবধি তোমার পছন্দের এবং তোমার অভিনিত সেরা নাটকের নাম?

উঃ- আমি চন্দন সেনের সঙ্গে অভিনয় করি মানে আমাদের দল আশোকনগর নাট্যআনন সেখানে চন্দন সেন নাটক পরিচালনা করেন, বাবা করেন, পঞ্চানন ব্যানার্জী করেন, আমাদের ওয়ার্কশোপে অনেক কাজ হয়। আমার কাছে সব নাটকই খুব প্রিয় এবং কাছের। আমার কাছে নাটকের বক্তব্যটা জরুরি, নাটকের সংলাপটা জরুরি, নাটকের যেটা সামাজিক দায়িত্ব সেটা জরুরি তবে যদি খুব কাছের কিছু নাটক বলতে হয় তাতে আমি একটা নাম কখনই করতে পারিনা তবে আমি বলব রাজগুরু বলে একটা নাটক আমি করেছিলাম শুভানিতা গুহ'র নির্দেশনায় সেখানে আমি চন্দ্রগুপ্তের ছোটোবেলার পাঠ করেছিলাম চাঁদ। ওই নাটকটা আমাকে অভিনেতা হিসেবে অনেক কিছু শিখিয়েছে। এবং Personally  যদি বলি আমাদের দলে সমস্ত নাটকই আমার কাছের,ক্লাস থ্রীতে একটা নাটক করেছিলাম সত্যজিৎ রায় চলচিত্র অবলম্বনে হিরক রাজার দেশে সেটা আমার কাছে খুব ক্লোজ একটা নাটক, অনেক ছোটোবেলায় করেছিলাম তো তাই অনেক মেমোরিবল সমস্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে।




"যদি কারোর অভিনয় করার জন্য dadecation থাকে,honesty থাকে, passion থাকে তাহলে কেউ তাকে আটকাতে পারবেনা"


এবার দু-এক কোথায় উত্তর দাও

৮.)ঋত'র শর্টকাট

[ ঋতঃ-আমি শর্টকার্টে বিশ্বাস করিনা, সমস্তটাই লংকার্ট হতে হয় অনেক পরিশ্রম করতে হয়]

ক.) পর্ণমোচী?
উঃ-পর্ণমোচী আমার কাজ করা সেই ছবি যেখনে আমি নিজেকে ধুয়ে ফেলে একটা অন্য মানুষ হতে পেরেছিলাম,সৎ ভাবে কাজ করতে পেরেছিলাম। খুব কাছের একটা ছবি।

খ.) অনুপম রায়?
উঃ- অসম্ভব ভালো গান লেখেন। তার গানে কবিতার একটা ছাপ আছে, উনার গানের কথা শুনলে বোঝা যায় যে উনি এক্সটেনসিভলি পড়েছেন বাংলা সাহিত্য, কবিতা সমস্তটাই। উনার লেখা খুব ভালো লাগে আমার।

গ.)রাইমা সেন?
উঃ- খুব ডেডিকেটেড একজন অভিনেত্রী।


৯.) না হলেও বলতে হবে(মজা টাইপের প্রশ্ন)

যদি বলি হিংসা হয়, কেন হয়?

ক.) উত্তম কুমার
উঃ- কারণ উনি উত্তম কুমার তাই হিংসে হয়। উত্তম কুমার উত্তম কুমার উনাকে হিংসে করে কি হবে উনি তো ভগবান।

খ.)শান্তিলাল মুখার্জি
উঃ- আমি উনার মতো শিক্ষীত হতে পারিনি যেটা হওয়া উচিত ছিল। প্রচুর শিক্ষা লোকটার কাছে।


গ.)শিলাজিৎ?
উঃ- ওরকম এনার্জি কেন নেই আমার?  খুব হিংসা হয়, অসম্ভব এনার্জেটিক।


১০.) যারা নায়ক হবার স্বপ্ন দেখে কিন্তু তাদের তিনকুলে ইন্ডাস্ট্রিতে কেউ নেই, তারা তাদের স্বপ্ন কীভাবে পূরণ করবে?

উঃ- দেখো অনেক অনেক actor, actress যারা থিয়েটার বা সিনেমার কাজ করেন তাদের অনেকেরই তিনকূলে কেউ নেই industry তে তারা কিন্তু কাজ করছেন। যেরকম খুব সহজ দু-একটা example দিলে সবার বুঝতে সুবিধে হবে সেটা হচ্ছে অনির্বাণ দা বা কৌশিক দা, অঙ্কিতা মাঝি। এনারা কিন্তু নিজের অভিনয়ের ক্ষমতাতেই সবটা করেছেন। যদি কারোর অভিনয় করার জন্য dadecation থাকে,honesty থাকে, passion থাকে তাহলে কেউ তাকে আটকাতে পারবেনা।

১১.)ছোটোবেলার কোনো মজার ঘটনা স্কুল জীবনে?

উঃ- আমার পুরো স্কুল জীবনটাই মজার, ভীষণ আনন্দে কেটেছে।  একটা মজার ঘটনা আমার মনে নেই আমি অনেক কিছু করেছি আর যা করেছি এখানে বলাও যাবেনা (হালকা হেসে),মানে অনেক  দুষ্টুমি করেছি সেই সব থাক নাহয়।




অভিনেতা বেশি শান্ত। আমি খুব দূরন্ত


ঋত'র পছন্দ কী

১. প্রিয় রঙঃ- কালো

২.প্রিয় খাবারঃ- বিরিয়ানী

৩.প্রিয় পোশাকঃ- এমনি টিশার্ট আর একটা প্যান্ট।


৪.ঋত'র চোখে চন্দ্রিল ভট্টাচার্যঃ- অসম্ভব ভালো একজন লেখক।


৫.ঋত'র কাছে অভিনেতা পরমব্রতঃ- খুবই ভালো অসাধারণ একজন অভিনেতা। আমার মনে হয় under used মানে পরমদা যতটা ভালো অভিনেতা তত বেশি তাকে use করা হয়নি এবং অসম্ভব ভালো পরিচালক একজন। আমার মনে হয় পরম দার মতো একজন যোগ্য অভিনেতাকে আরও বেশি use করা যায়।


৬.প্রিয় গান এবং সিনেমাঃ- আমার প্রিয় গান বা সিনেমা একটা একটা কোনোটাই বলতে পারিনা। প্রচুর গান শুনি, প্রচুর সিনেমা দেখি কাজেই একটা নাম বলতে পারবনা।


৭.ঋতব্রত'র কাছে সত্যজিৎ রায়ঃ- ভগবান। হ্যাঁ এটুকুই থাক।


৮.গায়ক অনিন্দ্য প্রিয় নাকি ডিরেক্টর অনিন্দ্যঃ- গায়ক অনিন্দ্য কারণ অনেক ছোটো থেকে চন্দ্রবিন্দু শুনেছি এবং ডিরেক্টর অনিন্দ্যও খুব কাছের যেহেতু প্রথম ছবি অনিন্দ্য দা করেছে তখন আমরা সবাই ছিলাম একটা ফামেলির মতো।

৯.অন্ধকার হয়ে গেছে,হয়তো লোডশেডিং, inverter কাজ করছে না। ঋতব্রত কাকে ডাকবে, মাকে নাকি বাবাকে?

উঃ- দু'জনকেই ডাকব। এই একটা comparison আমি করতে পারিনা মা না বাবা৷ আমার কাছে দু'জনেই একই রকম important।

১০.)অভিনেতা ঋতব্রত ভালো ছেলে নাকি অভিনেতা সরিয়ে রেখে যদি বলি শুধু ঋতব্রত মুখার্জি, সে ভালো ছেলে? মানে কে বেশি শান্তশিষ্ট এটাই জানতে চাইছি।


উঃ- অভিনেতা বেশি শান্ত। আমি খুব দূরন্ত।




        ======================

[অভিনেতা ঋতব্রত'র সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন জলফড়িং'র ইভেন্ট ম্যানেজার সুদীপ্ত সেন]

শুক্রবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০১৯

২য় চুমুক

আজ কফিকথায় কবি মৌসুমী ভৌমিকের সাথে সুদীপ্ত সেন জলফড়িং ওয়েব ম্যাগাজিন থেকে।
===========================




সুদীপ্তঃ- লেখিকা আপনাকে প্রথমেই জানাই নমস্কার এবং শৈতীক সান্ধ্যকালীন শুভেচ্ছা।

লেখিকা মৌসুমীঃ-তোমাকেও শৈত্যকালীন শুভেচ্ছা।

সুদীপ্তঃ-এবারে সরাসরি প্রশ্নই আসি

লেখিকা মৌসুমীঃ- সেই ভালো

১. এখন পর্যন্ত বেশ কতগুলো নিজস্ব কাব্যগ্রন্থ অলরেডি বেরিয়ে গেছে আপনার। যদি বলি এই কাব্যগ্রন্থ গুলি প্রকাশের পর আপনার উপলব্ধিটা কেমন ছিল।

উঃ-ভীষণ আনন্দ।  নিজের সৃষ্টি যখন দুই মলাটের মধ্যে প্রথম দেখা যায় তার আনন্দানুভূতিই অন্যরকম। অবশ্য প্রতিটি বই প্রকাশের সময় একটা উত্তেজনা তো থাকেই। আমারও ছিল।
[লেখিকার কাব্যগ্রন্থগুলোর নাম 'যাপন' , 'বৃষ্টির জলছাপ' ও 'শব্দপিঁড়ি']

২.) বিভিন্ন ছোটো বড়ো পত্রিকা, ব্লগজিনে আপনার লেখা প্রকাশ পায়। এই ব্যাপারে নিজের অনুভূতিটা যদি জানান।

উঃ-কে না চায় তার লেখা প্রকাশ হোক। আমিও ব্যতিক্রম নই। অবশ্যই ভাল লাগে। আর কবিদের সার্থকতা তো লেখার মধ্যেই। যতজন ভালবেসে ছাপবে/প্রকাশ করবে ততোই তো ভাল।

৩.) ব্লগজিন যেন একটা সহজ জিনিস। এখানে যে কেউ লেখক লেখিকা হতে পারে কিছুদিনের মধ্যেই। কি মনে হয় ব্লগজিন কি এতোই সহজ নাকি ব্লগজিনকে সহজ ভাবে নেওয়া হচ্ছে ?

উঃ-ব্লগ একটি অনলাইন মাধ্যম। যে কেউ ব্লগে লিখতেই পারে। কিন্তু টিকে থাকতে গেলে লেখা ভাল হতেই হবে। সে কোন মাধ্যমই হোক না কেন।

৪.) আজ ফেসবুকের পাতায় হাজার হাজার কবি লেখকের ভিড়। নাম করা কবিরাও এখানে লিখতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। যদি বলি এই ফেসবুক নতুন লেখক/লেখিকা তৈরী করতে পারে। এ বিষয়ে আপনাার কী বক্তব্য?

উঃ-বর্তমানে ফেসবুক একটি বিশাল প্লাটফর্ম। কে বলতে পারে এই ফেসবুক কবিদের মধ্যে থেকেই একদিন বড় কাউকে পাব না! বলা মুশকিল।

৫.)আপনি মূলত প্রকৃতি প্রেমিক লেখিকা। এখন প্রশ্ন হলো সমাজের যা অবস্থা তাতে অন্য কোনো লেখিকা লিখছেন সমাজের কথা, প্রচুর কমেন্ট পাচ্ছেন। আপনার কি মনে হচ্ছে আপনি আদতে তাহলে পিছিয়ে পড়েছেন?

উঃ-না, তা মনে করি না। আমি যে বিষয়ে স্বচ্ছন্দ সেটাই লিখতে চেষ্টা করি ও করব। অন্যরাও তাই। তবে অন্য বিষয়েও লিখি না এমন নয় কিন্তু। লিখতে ইচ্ছা হলে অবশ্যই লিখি।
বিষয় অনুসারে বা কমেন্ট অনুসারে পিছিয়ে পড়ার ধারনায় আমি বিশ্বাসী নই।

সুদীপ্তঃ- বাহ্, ভালো লাগলো।

৬.) কবি মৌসুমী ভৌমিকের যখন ৫০ বছর বয়স হবে৷ তখন কোনো এক গ্রীষ্ম দুপুরে ঘুঘুর আওয়াজ শুনতে শুনতে একখানা বিরহের কবিতা কি লিখতে চাইবেন নাকি বয়সের কথা,প্রতিবেশীদের কথা, সমাজের কথা মাথায় রেখে প্রকৃতির কথায় লিখবেন?

উঃ-হা হা, সেটা ৫০ বছর বয়স হলে বলব

সুদীপ্তঃ-😀 হা হা হা

৭.)এতো কবি ফেসবুকে লেখেন তাদের মধ্যে আপনার প্রিয় পাঁচজন কবির নাম বলুন।

উঃ-অনেক কবিই ভাল লেখেন। অনেকের লেখা নিয়মিত পড়ি। শুধু পাঁচজনের নাম বলা ঠিক হবে না।


৮.) ওয়েব ম্যাগাজিনের ভবিষ্যৎ আপনি কি দেখতে পাচ্ছেন?  যদি  পাচ্ছেন তাহলে মতামত জানতে চাই।

উঃ-অসুবিধাও রয়েছে কিছু। বয়স্কদের চোখের অসুবিধা, গেজেট নির্ভরতা, ইন্টারনেট সংযোগ এসব। তবে ডিজিটাল যুগে ওয়েব ম্যাগাজিন প্রকাশ করা সুবিধাজনক। দূরত্ব, সময় অর্থ এগুলোর সাশ্রয়ে লেখক, পাঠক উভয়েই লাভবান। আশা করি ওয়েব ম্যাগাজিন ভালই চলবে।


সুদীপ্তঃ-☕☕ আসুন মৌসুমী দি এই শীতল সন্ধ্যায় আমরা এবার কফিতে চুমুক দিই তারপর আবার আলোচনায় ফিরব।

লেখিকা মৌসুমীঃ-বেশ


৯.) শীত কাল, ধরুন জানুয়ারির ৫ তারিখ আর শীতের গায়ে হঠাৎ বৃষ্টির আগমন। আপনার ফ্লাটের জানলার গায়ে বৃষ্টি ফোটার আঁচড়। আপনি এবার কফিতে চুমুক দিলেন (এমন একটা অবস্থায় লেখিকা কি লিখবেন? (দুটো লাইন এখনি লিখুননা আমাদের ভালো লাগবে)।

উঃ-"কথা তো ছিল না হঠাৎ এভাবে আসবে
হিমবাসরে হিমঝরনায় এভাবে ভালবাসবে"।

সুদীপ্তঃ-সাধু সাধু। আর এটাই বোধহয় কবি মৌসুমী ভৌমিক।

১০.) লেখিকা মৌসুমী, অন্ত্যমিল নাকি গদ্য কবিতা কোনটাতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন ?

উঃ-আমি অন্ত্যমিল পছন্দ করি। তবে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আজকাল গদ্য কবিতাও লিখছি। ভালও লাগছে।

সুদীপ্তঃ-আচ্ছা যুগ বলতেই মনে পড়ল, যুগ তো অন্তঃমিলই চায়----
দেখুন না কবি জয় গোস্বামি,কবি  শ্রীজাত

লেখিকা মৌসুমীঃ-কবিতার নিজস্ব ছন্দ থাকে। সেটা অন্ত্যমিল নাও হতে পারে। কবি জয় গোস্বামী, কবি শ্রীজাত ছাড়াও প্রচুর কবি আছেন যারা অন্ত্যমিলে লেখেন না।

সুদীপ্তঃ- আচ্ছা আর কথা বাড়াবনা, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, আজ আপনার মূল্যবান সময় থেকে এতটা সময় আমাদের জলফড়িং কে দেওয়ার জন্য । শেষে এটাই জানতে  চাইব আপনার কাছ থেকে, এই যে জলফড়িং ওয়েব ম্যাগ আয়োজিত কফিকথা আপনার কেমন লাগলো?

লেখিকা মৌসুমীঃ-বেশ উপভোগ্য। শেষে জলফড়িং এর জন্য রইল অনেক অনেক শুভেচ্ছা। আরও শ্রীবৃদ্ধি ঘটুক জলফড়িং ওয়েব ম্যাগাজিনের, কামনা করি।


   
                ৷ শুভ সন্ধ্যা ৷ 

মঙ্গলবার, ৮ জানুয়ারী, ২০১৯

              "অবস্থান"

                         স্নেহা সরকার।

আজ ওদের হাল বদলের পালা,
নিথর শরীর হচ্ছে কুপকাত।
সত্যি বলতে আমিও ওদেরই মতো,
মানুষ তো তাই একই পরিমাপ।।

ওরাও যেমন বৃষ্টি ভেজার দিনে,
প্রেমিক সেজে মায়ের ছোট্ট খোকা,
চিলেকোঠার দরজা গুলো চেপে,
ফুপিয়ে কাঁদে?এক্কেবারেই বোকা,,

ওর মনেতেও পাথর চাপায় রোঁদ,
হোক না কিশর শরীর টা পিলপিলে।
আবেগ গুলো পিষিয়ে রাখা যায়?
ভেবে দেখো তুমিও ওমন ছিলে।

পথের পাশে ওই যে দেখো কাব্যি করা মেয়ে,
শব্দ সাজায় কষ্ট গুলো নিয়ে,
ওই মেয়েটাও বিরহে ডুবে বাঁচে।
মিথ্যে ঢাকে অপেক্ষাদের দিয়ে।

তবুও পাহাড় খরস্রোতার কাছে।
ঝড়ো হাওয়ায় পাতারা নির্ভিক।
ভালোবাসা আর বিরহ গুলো তেমন।
একসাথে হয় সমানুপাতিক।

সত্যি বলতে আমিও ওদেরই মতো,
আবেগ গুলো বাঁচাতে চাইছে মান,
মানুষ তো, তাই কষ্টরা ঠিক আসে।
তবু হারিয়ে ফেলেছি আমার অবস্থান।।
' সালাম কবিতা '
                   ---------------------
                       ----------রাজা সেখ
হে মোর অন্তর আত্মা
                     হে কবির কবিতা,
জ্বলেছো তুমি আঁধার ভবে
                  কিরণ দানের সবিতা।
উঠেছো তুমি নিঃস্ব শিরে
                            নিঃস্ব ভুবন তীরে,
তুমি দিয়েছো কিরণ অবিরত
                            সকল তমসা ঘিরে!
তুমি তাই করেছো দান
                       যেটা দেখেনি জগৎ,
তুমি সন্ন্যাসীরে করেছো দান
                        ওই প্রেমময়-পর্বত!
যেই বাণী শোনেনি ভুবন
                      হয়তো জানিতো সে,
অমৃত করেছো ছন্দ দানে
                     শোনালে তুমি এসে!
হে কবি তুমি অমর
                     মরণ করেনা জয়,
আছো তুমি কাব্য হৃদয়
                     নাহি তব ক্ষয়!
"চূড়ী নেহি ইয়ে,মেরা দিল হ্যায়"

অভিজিৎ দাসকর্মকার।

সস্তার পোস্টার থেকে নদীকোষ
বয়ে যায় জ্যামিতির বক্রকলা ধরে

বিভাজিকায় নিউক্লিয়াস
মিয়োসিসের গন্ধ পায়

বাসি শরীর থেকে
হুঁক খোলা বুকে টানটান কিশোরী
হাতে কাঁচের চূড়ীতে রজঃস্বলার সকাল-
   যন্ত্রণা
   বিজ্ঞাপন
   ফার্টিলাইজেশন

তবুও
উভচরটির শ্যাওলা ধরা ভোকাল কর্ড
পাশে বসে
অনন্তকাল গান করে
'চূড়ী নেহি ইয়ে, মেরা দিল হ্যায়....'
""""""আশা""""""""
------++++++----++
                       রাজা সেখ

মনে মোর জাগিওনা আশা
                  চোখেও প্রেমের ভাষা,
নাহি দিও প্রেমের মালা
                    ভাঙো যদি বাসা!
 চঞ্চল মন কেন খুঁজে
                         তব মায়ার ছবি,
যেই প্রতিমায় হারিয়ে যায়
                      তোমার প্রিয় কবি!
সখী যেই হৃদয় দ্বারে
                      জ্বেলে ছিলে বাতি,
আজি সেই হৃদয় কোনে
                  আমিই আমার সাথী!
যেই ছন্দ নেচে ছিলো
            লিখতে তোমার  কবিতা,
সবই চরণ পাষাণ বেশে
                      দেয় মোরে ব্যথা!
যেই আশায় চেয়ে ছিলাম
            শুধুই তোমার ভালোবাসা,
সেই আশায় কাঁদাই মোরে
                    আজও প্রেমের নিরাশা!

"যার তরে"
---------------
------------রাজা সেখ

আজি হারিয়ে গেছি আমি
                       ব্যস্ত ভুবন ভিড়ে,
একাই ঘুরি নিঃস্ব মনে
                       আসি আবার ফিরে!
জীবন আজি গেছে ডুবে
                      বেদনার সিন্ধু তীরে,
নাবিক হয়েও পাইনা কূল
                   জীবন কাঁদে হাহাকারে!
কৃষ্ণ মনে পেয়ে ছিলাম
                      ফণী হারা মণি,
দীপ্ত নাহি করিলো মন
                 দিলো বেদনার শনি!
যারে দেখে হৃদয় মোর
               নেচে ছিলো উল্লাসে,
আজি সেই প্রিয়ার মুখ
                    নয়ন জলে ভাসে!
যারে দেখে আঁখি মোর
                     হয়ে ছিলো নীরব,
 তাতেই আমি দেখেছি ভুবন
                       দেখেছি আমি সব!
যার এলো চুলে মন
                   মন্থর হয়ে ছিলো,
তার আশাতেই  হৃদয় মোর
                     সময় গুনে গেলো!
যার কথাতেই ভাঙা বাঁশি
                       বেজে ছিলো সুরে,
তারই বাণী যাইগো শোনা
                   আজি সীমান্তের দূরে!
যার হাসিতেই মনে হলো
                    দুঃখ গেলো ঝড়ে,
আপন মনে গেলো পাখি
               আপন ঘরে উড়ে!
তারই আশাই আজও আছি
                      চাতক পাখি বেশে,
জানিনা সে ফিরিবে কি
         আমায় তুচ্ছ ভালোবেসে!

সোমবার, ৭ জানুয়ারী, ২০১৯



    বসন্ত
        ------------প্রীতি মান
                
এসো বসন্ত, এসো বসন্ত
এই ধরনীর বুকে,
স্নেহ মাখাময় রৌদ্র-ছায়ায়
সবাইরে রেখো সুখে ।
শুষ্ক মাটি, রুক্ষ ধরায়,
দাও ফুল-ফল ভরিয়ে,
জীর্ণ প্রদীপখানি নিভেছে কখন্
দাও ফিরে তারে জ্বালিয়ে ।
রঙ ছড়িয়ে পাখনা মেলে
পাখির কলরবে,
হল ভোর, ভাঙল ঘুমের ঘোর
ভাবছি মনে সবে ।
রাজার আসন পেলে তুমি
সেরা ঋতুর মাঝে,
পাচ্ছি যেন এই ধরাকে
মায়ের মতোন সাজে ।
শিশির ঘেরা সবুজ ঘাসে,
শুভ্র মেঘের চাদর,
বসন্ত হাওয়ায় দুলছে মন,
যেন পাচ্ছি মায়ের আদর ॥
কবিতা:-হারানো খাতার কবিতারা

ফুলের ভিতর আগুন...সন্ধ্যা নামছে

ঈশ্বরকে রেখে এসেছি কারখানায়-

উঠোনের কাঁচা মাটিতে দিদার আলতার ছাপ

দুর্গা বেঁচে আছে...দুপুরের পর,দুপুর

ফিরে আসে পুনর্জন্ম...জাতিস্মর কথক

আহ্লাদী  বিড়ালটা অলীক জ্যোৎস্না মেখেছে রাতে

চুম্বনের কাছাকাছি গিয়ে দিতে পারিনি-  প্রেম বিসর্জন

রাত্রি হরফ পুরনো বন্ধুর গান তোলে আকাশে

পাখি পালায় কাঁটাতার  টপকে রঙিন জানালায়

তোমার ক্রুশ কাঠি প্রত্যাখানের প্রতিটা আঁচড়...


লেখকঃ-সৌরভ দত্ত 
স্বপ্নই তো সবকিছু

© আম্রপালী দে

না না না , এসব জায়গায় কোনোমতেই কবিতাকে বসতে দেওয়া যায় না !

দেশলাই বাক্সের মতো ঘুপচি একটা চারকোণা , এতো ঝাড়বাতি , লাল-নীল লন্ঠন , ওদিকে আতশবাজি ফুটছে রেসের ঘোড়ার চেয়েও বেশি বেগে ।

জীবন হারছে , সময় জিতছে । আর জেতাটুকু হাঁ করে গিলে খাচ্ছে এক একটা করে স্বপ্নকে । প্রতিটা সেকেন্ড থেকে তফাতে থেকে যাওয়া সেসব স্বপ্ন ।

দুপুরের রোদেও তেমন তেজ নেই ।
এবাড়ি ওবাড়ি ঘুরে রঙ্গ দ্যাখে যেন...
আর গল্প জানা বিকেলগুলো আজকাল নিজেরাই তিন মাথার গল্পে বিভোর ।

পাতা ছেঁড়া মাঠ ।
ওইতো রথের চাকাটা ঢুকে গেছে মাটির বর্তমান ফাটলে । বড়ো অসহায় কবচকুন্তলধারি ।

আহ ,
আহ , কি করছো...
পাঁচিল বেঁধো না বলছি...বলছি বেঁধো না...
শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে...কষ্ট হচ্ছে...


যাওয়া আসা
------------------জ্যোতির্ময় রায়

তখন তোমার বৌ-চি খেলার বয়স।
    আমিও সদ্য পোয়াতি চাঁদ দেখে বলে ফেলি
             "ছুঁয়ে দেখাবো ঠোঁট "

মুখ ঢাকা বিজ্ঞাপনে বেনামি চিঠি
               "প্রেম না ,কাছে আসা হোক ।"

ধর্ষিত হওয়ার ভয়ে থমকে দাঁড়াই ট্রাফিকে

ফিকে হয়ে আসা রোদ্দুরে মুখ ধুয়ে সে
       চলে যায় ছায়া।ভুল চালে মন্ত্রী গেছে খোয়া
                   ভুল প্রেমের শেষে ...

পূর্ণিমার চাঁদ আজও ঝলসানো রুটির মতো।

মঙ্গলবার, ১ জানুয়ারী, ২০১৯

তনয় সংখ্যা



=========
সম্পাদকীয় ,
=========

বছর পেরিয়ে যায় খবর রাখে না আর, কেউই।সেরম ভাবেই জলফড়িং'র একটা বছর পেরিয়ে গেছে নভেম্বরে, যেন হাওয়ার মতো করে পেরল। 
আর এবছরের প্রথম সংখ্যায় আমার,আপনার সকলের প্রিয় তিন মানুষকে স্পর্শ করে শুরুটা করতে চাইল জলফড়িং ওয়েব ম্যাগাজিন।

নতুন লিখতে আসা ছেলেমেয়ে যারা ভালোবেসে কলম ধরল,যারা নতুন প্রেমে পড়েছে কিংবা সেই মানুষটি যে বাটি ভরতি চানাচুর মুড়ি খেতে খেতে তার বহুমূল্যবান 
এলইডি টিভি দেখছিল কিন্তু হঠাৎ মনে পড়ল তার পুরনো সাদাকালো টেলিভিশনের কথা, পাড়ার লোকের কথা,নিজেদের দুঃসময়ের কথা কিংবা ধরুননা যারা তার প্রেমিকাকে ভালোবেসে পাগলী বলে ডাকতো এবং একআকাশ স্বপ্ন দেখেছিল কিন্তু পূর্ণ হয়নি সেইসব স্বপ্ন কিংবা লিখতে চেয়েছিল এক পৃথিবী বা হয়তো সদ্য বিয়ে হওয়া পুরুষটি ডিসেম্বরের শীতে শ্যাম্পু করা ডাইনি আর বিছানা নিয়ে কাটাতে চায় বছরের ১ লা ছুটির দিন। হা'হা এভাবেনা বলা মুশকিল আসলে সাহিত্যের এই তিন মানুষকেই স্পর্শ করার ইচ্ছে সবাই রাখে কমবেশি,কেউ মুখফুটে বলে, কেউ আবার বললে হাসে কিন্তু নিজে বলতে পারেনা। 

যাই হোক, যে সমস্ত লেখক/লেখিকারা "তনয়" সংখ্যায় কলম ধরলেন তাদের অনেক অনেক ধন্যবাদ, ভালোবাসা আর নতুন বছরের একরাশ শুভেচ্ছা।



     ------------| সূচিপত্র |-------------

•[কবিতা]

    | কবিতা |             | কবি |

১. ফিরছো যখন :-   অনুপ কুমার রায়

২. জেগে ওঠো :-    সুহৃদ মন্ডল

৩. মেলায় মুখোমুখি :-  অমিত পাটোয়ারী

৪.  জীবন  :-            সুষ্মিতা  কর

৫. মুখোশ ধারি বেনিয়া যত:-  রফিউল আলম

৬. অচল কবিতা :-  হামিম রায়হান

৭. মেয়ে মানুষের সংসার:- বিকাশ দাস

৮. আমি শুধু বলতে এসেছি:- মন্নুজা খাতুন

৯. প্রেমিক হবে:-  চঞ্চল ভট্টাচার্য

১০. চিরস্মরনীয়:-  নরেশ বৈদ্য

১১. তনয় :-      সুনন্দ মন্ডল

১২. শিকার:-  তিথি সরকার

১৩. এসো নতুন বছর:- মৌসুমী ভৌমিক

১৪. মরসুমী মন:-    অরূপ সরকার

১৫. বিরহ জানলা:- সুদীপ্ত সেন

•[প্রেমিকজনকে চিঠি]

১.)ঐটার খোঁজে :-  কবি সুমিত দেবনাথ

২.)প্রিয় রোদ্দুর:- কবি  অনুরাধা সরখেল

==============================
---|কবিতা|---

১.)
ফিরছো যখন
----------------অনুপ কুমার রায়

নিজেকে শুইয়ে রেখেছো সুরঞ্জনা, জড়িয়ে শরীরে নীচে স্বচ্চ বরফের স্তর,
সিক্ত বসনা ,যদিও পায়ের কাছে,ক্ষিণতয়া নদী, বালি, পাথর, তারপর।

সময় মেদুর ঘন সবুজ শ্যাওলার মতো, ছোপ, তবে স্মৃতির ফাঁকে ফাঁকে।
নীলচে আশ্বাসে ,শেষ সুরাহা নিয়ে, দূরে কোনো উজানিয়া বাঁশি ডাকে।

তোমাকে বলিনি ,গতবসন্তের সুখ করেছিলাম জমা, সেটুকুও নিলেনাযে,
অনেক দূরের পথ যেতে হবে খালি, খরচের হিসাব ভ্রান্ত জীবনের অকাজে।

মৃত্যুর কারণ খুঁজতে তৎপরি হাত, নিপুনতাহীন পদ্ধতিগত কেটেছে হৃদয়,
ডাক্তারী কাগজ নির্দ্বিধায় বলছে সেচ্ছাচারী, যদিওজানি আসলে তানয়।

কিছুটা সময়ের দাবী ছিলো বাকিটা বাঁচার অংকের নিমিত্ত আয়োজনে,
ক্লান্ত হৃদয়ের অভিশাপে শুকিয়েছে ফুল,নিজেরই পাঁজরের নীষিক্ত প্রাঙ্গনে।

ঊনিশের যৌবনা তেততিরিশে এসে,স্থলিত বসন,হিমায়িত রুদ্ধ দৃষ্টির দ্বারে,
নিরুত্তর প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে যাচ্ছে বাতাসে,ফেরার তাড়া ছিলো তবে কেন এসেছিলে সংসারে।

২.)
জেগে ওঠো
------------------সুহৃদ মণ্ডল

হলুদ শিসে্র দোলা লাগিয়ে, সবুজ ঘাসের পথ মাড়িয়ে,শাল মহুয়ার দেশে, কোকিলের কুহু ডাকে জেগে ওঠো ভোরের রাগিণী সুর;
বীরাঙ্গনার প্রতিরূপে, ভেজা মাটির সোঁদা গন্ধে, ঘুম ভাঙ্গা সকালে জেগে ওঠো একবার;
মিথ্যে নীতি,অন্ধ সংস্কার দূর করে, চেতনা ফেরাও মনে।
দুর্ভিক্ষের হাহাকারে পিপাসার্ত মানবী ভাবনার শ্রদ্ধাঞ্জলি দেয়, তোমার চরণে;
হে ধরণী,পরাবো আবার মুকুট, জাগবে নতুন করে।
শুরু হবে উৎসব, নিশান উড়বে বাতাসে;
শ-এ শ-এ আলো জ্বলে উঠবে, বরণ করবে সাদরে।
জেগে ওঠো, সেই সুরে, সেই ডাকে, সেই মনমাতানো জুঁই, শিউলি, টগর ফুলের সুবাসে,
তোমার শয়নে রেখেছি অশান্তি যদিও!
তবুও স্নেহশীলা রূপে,মাতৃত্ববোধে রক্ষা করো মানবের,
জেগে ওঠো প্রার্থনার অনুরোধে নয়, ভারসাম্যের দায়িত্বে;
শেষ অস্তিত্বের আগে চোখ খোলো সতেজ বাতাসে।

৩.)মেলায় মুখোমুখি
-----------------অমিত পাটোয়ারী

জয়বাবু এখনো কি রানাঘাটে ?
তোমার প্রশ্ন আরও এক যুবকের সাথে
এই লিলিপুট সরণীতে যদি আসো
তাহলে একা চেয়ার পেতে বসে থাকি সূর্যাস্তের পর।
অনেক অনেক প্রশ্নের উত্তর আমি জানিনা
আমাকে সঙ্গ দেয় নীল জ্যাকেট, তোলা কলার, সুচিত্রা...
তুমি ঠিক জানো, আজও আমি বেঁচে আছি কিনা!


৪.) জীবন
----------------সুষ্মিতা কর

শূন্যহীন বাতাস বয় ধূলিকণায় ভর দিয়ে
পাটাতনের যন্ত্রনা বৃদ্ধি হয় আমার পায়ের ঘায়ে।
তপ্ত হাতুড়ির আঘাত দেহে জলন্ত চিহ্ন আঁকে
শুষ্ক মাটি চেয়ে থাকে ঢেউয়ের হাসির ফাঁকে।
ওহে রবি! এ কি খেলায় মত্ত ভাই?
মায়ের তৃষ্ণার জল তোমার কাছে ভিক্ষা চাই।
তেজ তোমার সীমাহীন, যুগ হেসে কয়
জ্বলসানো বর্ণহীন পাতা মায়ের পায়ে পড়ে রয়।
প্রসারিত জীবনের হাত দুটি আজ শূন্য
তেজের ছায়ায় চাঁদও আজ বন্য।
জীবন প্রবাহিত সময়ের খেয়া রূপে;
আঁকা-বাঁকা রাস্তা নুড়ি পাথরে মণ্ডিত।
উষ্ণতার ছোঁয়ায় কখনও শীতল কখনও বা তপ্ত
প্রকৃতির ছলনা আজও পারিনি করতে রপ্ত।
নিয়মের বাঁধায় তাই পড়েছি গো ভাই
আজ আছি কাল নেই মৃত্যুপথে এগিয়ে যাই।

৫.) মুখোশধারী বেনিয়া যত
--------------------------মহঃ রাফিউল আলম

তোর বুকের উপত্যকা বেয়ে----
প্রেম খুঁজি নাভিদেশে। মানস মৈথুনে কবি হয়ে উঠি-----
নষ্টা চাঁদের মাথায় সতীত্বের ঘোমটা কিংবা প্রদর্শনী।
সুযোগের অভাবে কিংবা আমি গর্বিত মুখোশধারী সতী।
           
কাপুরুষের বীর্যে
তুমিই প্রকৃত বীরাঙ্গনা সোনাগাছি-মা।মুখোশহীন----
সতী কে?
টেবিলের নীচে হাত পাতে---
সুট-বুট পড়া ভদ্রলোকের দল!ঘামমাখা মানুষের রক্তে লাঞ্চ করে যারা!যে শাসকের তলপেটে
স্বৈরাচার!রং মাখে যে নেতার দল!কিংবা পরজীবী যত!

যে নারীর উরু রক্তাভ
হায়নার আঁচড়ে----যাদের ডিনারে নারী মাংস----
যখন বিচার পায়না ক্ষমতাহীন অস্তিত্ব।হয় প্রহসন যত---
শাসক---তখন তোমার সতীচ্ছেদ পর্দা নিয়ে সন্দেহ থাকে বৈকি!

৬.) অচল কবিতা
--------------হামীম রায়হান

হেমন্তের বিকালে ধান কাটা মাঠে-
দুষ্ট ছেলেদের আসর বসে,
শীতের বার্তা নিয়ে নামে কুয়াশার দল,
ঘাসের ডগায় জমতে থাকে জল।
অগ্রহায়ণের শেষ দিনগুলো মিশে পৌষে।
আধো আলো, আধো ছায়া অন্ধকার ঘরে-
স্বপ্নরা ডানা ঝাপটায়।
এক সময় ভাঙ্গে ডানা
হঠাৎ লক্ষীপেঁচা দেয় হানা-
সদ্য বানানো চড়ূই পাখির ঘরে।

৭.) মেয়েমানুষের সংসার
 ------------------বিকাশ দাস

পুরুষের অসুখ
সারিয়ে নিতে আসে মেয়েমানুষের শারীরিক
সন্ধির সুষমায় ।
পুরুষ নিজের জন্য বাঁচে । নিজের সুতানে নিজের সুরায় ।
পুরুষের সুখ মেয়েমানুষের আঢাকা শরীরের চিকণ শিরীষে ।

মেয়েমানুষ নিজের ঘর ছেড়ে ছুড়ে
অন্য বাড়ির উঠোন থেকে ঘর হয়ে উঠতে
এক জীবনও কম পড়ে জানলা দরজা ঠুকরে ।

শব্দহীন শরীর
মেয়েমানুষের রাত      সংসারের এঁটো বাসন ধুয়ে
নিজের লাশ বিছিয়ে পুরুষের বাসনার কাঁটায় শুয়ে
পুরুষই পারে জোর করে বাগিয়ে নিতে নিজের ফুর্তি
ছিঁড়ে ছিঁড়ে খুবলে মেয়েমানুষের যুবতী স্তনের মূর্তি

দিগন্ত অবধি
নির্লজ্জ ভাঙচুর শরীরের বিরাগ নিরর্থ নিন্দিত রতিসার
দিনরাত্রির চৌকাঠে তবু মেয়েমানুষের নন্দিত সংসার
ঝাড়পোঁছ সেরে নিকিয়ে ঘর দুয়ার ।


৮.) আমি শুধু বলতে এসেছি
-------------------------মান্নুজা খাতুন

আজকের বর্নালী সন্ধ্যায় আপনাদের ডাকা সভায়

আমি কারো প্রতি অভিযোগ জানাতে আসি নি

আসি নি জীবনানন্দের মতো জন্মভূমিকে ভালোবেসে

দু এক কলি গান কিংবা কবিতা বলতে।

আসি নি দেশত্যাগের আত্মগ্লানিতে দগ্ধ হয়ে মধুর মতো কাব্যপাঠ করতে

আসি নি সুবোধের লেখা সমাজ বাস্তবতার বিরুদ্ধে দু এক চরন পাঠ করতে,

কিংবা ফিরোজার মতো অভিযোগের ঝাঁপি নিয়ে গলা ফাটাতে

আসি নি ধর্মাধর্ম নিয়ে এক প্রস্থ বকে যেতে

আসি নি দেশের উচ্চপদস্থকর্তাদের তীক্ষ্ণতীরের ফলায় বিদ্ধ করতে  ।

আসি নি আমার ভালোবাসার কথা ব্যক্ত করতে

আসি নি কবি নাম ঝুলিতে ভরে দর্প ভরে মঞ্চ থেকেই নেমে যেতে

আমি শুধু এসেছি

আমি শুধু তুলে ধরতে এসেছি

পাশের বাড়ির ছোট বোনটার কথা,

ওপাড়ার সুমিত্রার কথা

উকিল পাড়ার মেধাবী ছাত্রীটির কথা

আমি শুধু জানাতে এসেছি তাদের আজাহারী আর্তনাদের কথা

তাদের প্রতি অমানসিক অত্যাচারের কথা

শুধু বলতে এসেছি এরা কি বিচার পাবে না?

আমাদের সমাজ কি কোনদিনই পাল্টাবে না?


৯.)"প্রেমিক হবে"
-----------------চঞ্চল ভট্টাচার্য

যুদ্ধে যেদিন অস্ত্র দিয়ে রক্ত আঁকা বন্ধ হবে,
সেদিন হবে প্রেমিক সবাই,
গোলাপ দিয়ে যুদ্ধ হবে,
গোলাপ কাঁটাও মগ্ন রবে
প্রেমিক হবে।

তারাও যেদিন পণের যুদ্ধে মাতবে না আর,
পণের জন্য ভালোবাসা হবে সহস্র লাখ,
যুদ্ধ হবে গোলাপ , গোলাপ,
প্রেমিক হবে।


১০.)চিরস্মরণীয়
 --------------নরেশ বৈদ্য

একটি ছোট্ট শিশু কাঁদছে পথের ধারে বসে--
হারিয়ে ফেলেছে ও যে নিজের বাবা মাকে।
পথচলতি কত মানুষ ,যাচ্ছে নিজেদেরই কাজে-
তবুও কেউই খোঁজ নিচ্ছে না ,শিশুটির কান্নার আওয়াজের।
এমন সময় হঠাৎ সেখানে আসে এক পাগলিনী,
বক্ষ মাঝে জড়িয়ে ধরে, শিশুটিরে কাছে টানি।
জনমানবের দল চিৎকার করে বলে ওঠে--
মারো ,মারো ঐ ছেলেধরা ডাইনীকে,
শিশুটি তখন ভয়ার্ত কন্ঠে
বার বার বলে ওঠে মেরোনা, মেরোনা ওনাকে।
জনতার ভিড়ে আওয়াজ শুনতে পায়নি ওই মানবিক মুখোশধারী গন
ততক্ষণে ওরা কেড়ে নিয়েছে পাগলিনীর প্রান।
ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে ছোট শিশুটি বলছিল জনতাকে--
পাগলিনী মা ছেলে ধরা ডাইনি নয়কো মোটেও
তোমরা যখন কান্নার আওয়াজ শুনেও শোনোনি
পাগলিনী মা আদর করে নিয়েছিল আমায় কাছে টানি।
চোখ ফেটে এলো জল পাগলিনীর মরদেহ দেখে
নীরব হলো জনতার দল , নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে অবশেষে।
এর পরে পুলিশ বাহিনী আসে জিপগাড়ি করে
নিয়ে চলে গেল মরদেহ ও শিশুটিরে
সেইদিন টাকে আজও ভুলতে পারেনি এ জীবনে
মানবতার প্রথম দেখে শিহরিত হই মনে মনে।


১১.)তনয়
    ----------সুনন্দ মন্ডল

চালাঘরে আসন পাতা
নৈবেদ্য সাজানো কবিতার রসে
বিল্বপত্রে গড়ে তোলা পুজোর মাস।

শ্রীজাত-জয়-অংশুমান
পুরোহিত সেজে মন্ত্র দিয়েছেন কবিতায়
কাব্যের লালারসে ভিজে গেছে পাঠক হৃদয়।

তিন প্রজন্ম এক সূত্রে
যেন চর্বিত চর্বনে হীরক গাথা
রক্তিম অভিবাদন মূল্যায়নের পিঞ্জরে।

বাংলার গর্ব তোমরাই, প্রকৃত তনয়।
           

১২.)শিকার                        
-------------তিথি সরকার

ছোট বেলা থেকে আমার একটা শখ ছিল
শিকারে যাওয়ার,
কখনও সেটা হয়ে ওঠেনি
যখন সময় এল __
খুঁজে  পেলাম ভালোবাসাকে
সবাই জানে শিকারের থেকে ভালোবাসা অনেক মধুর,
তবুও  আমি ভালোবাসা চাই না,
শিকার করতে চাই।
কারণ আমি ভালোবাসাতে ভয় পাই,
"ভালোবাসা" কে ভয় পাই।
ভালোবাসা আনন্দ দেয়, নতুন প্রাণ দেয় ,
শিকার বেদনা দেয়,প্রাণ নেয়,
তবুও আমি শিকার করতে চাই।
জানি একদিন আসবে, অবশ্যই আসবে
যে দিন সমস্ত নারী জাতি সবাই চাইবে
ভালোবাসাকে দূরে ফেলে পুরুষ শাসিত
সমাজের পশুকে শিকার করতে।
সে দিন হবে দেশের উন্নতি, সমস্ত নারীর উন্নতি।
সেই দিনই আমি "ভালোবাসা "কে ভালোবাসব।
তাই আমি আজও ভালোবাসাকে ভয় পাই__
তাই শিকারে যেতে চাই, শিকার করতে চাই।


১৩.)এসো নতুন বছর
  ---------------- মৌসুমী ভৌমিক

বাড়িয়ে রেখেছি দুহাত
এসো নতুন বছর
ঝলমল উজ্জ্বল উদ্ভাসে
আলোকিত হোক চরাচর।

দিগন্ত জুড়ে নামুক আলো
সৃষ্টির নতুন আবেশে
নতুন বছর বাঁচুক এবার
বাঁচার প্রবল সাহসে।

বাড়িয়ে রেখেছি দুহাত
এসো ঝলমল দিন
সবুজ অঙ্গীকারে লেখা হোক
এবার কিছু মুহূর্ত অমলিন।


১৪.)মরসুমী মন
---------------অরূপ সরকার।

শীতকালীন রোদে হাসতে শেখায়  কে?
ওপারার কোনো প্রেমিক মনের মেয়ে,
এভাবে তোমায় দেব না তো কথা ;
আগে অনুমতি নাও আমার থেকে চেয়ে ।
ওই দেখ হাসছ তুমি প্রেমিকজন সেজে,
তোমার জাতেই শ্রী এর শোভা আছে ,
তাই জানাচ্ছ অনুভূতি নিয়ে খেলে ?
যদি জানতে চাই কী করে করছো এমন ম্যাজিক,
বলবে তুমি বলব সবই তার আগে তো সময় বাঁধো হাতে


১৫.)বিরহ জানলা
---------------------সুদীপ্ত সেন

বাইরে আমার আকাশ ভর্তি তারা
বাইরে আমার পুকুরঘাটের পানা
রাতের আকাশ, মুক্ত জোনাকি পোকা
পাগলা ছিঁড়ছে বরাদ্দ রুটিখানা।

জানলা পেরিয়ে হাওয়াদের যাতায়াত
জানলা পেরল ঘরের হাওয়ার ঝাঁক
এপার থেকে ওপারের সংযোগ
বরং এবার প্রেমহীন হয়ে থাক।

শীতের কুয়াশা নিমন্ত্রণের আগেই
শহর পেরিয়ে আমাদের গ্রামে গ্রামে
নতুন সড়ক হচ্ছিল তোর জানি
আটকে পড়েছে প্রেম, বিরহের খামে।

কথা ভেঙে গেছে চুরমুর ভাবে হঠাৎ
মনখারাপের ঠিকানা জানে না সে তো
বহুদিন ওই বিচ্ছিরি হাসি-খানি
শুনতে পাইনি যেরকম আগে পেতো।

বিরহ কতটা কঠিন, যে কঠিনও সহজ হতে শেখে
বিরহ আমার দেখা হয়ে গেছে প্রিয়, চলে যেতে চাই প্রেম বন্ধক রেখে।


--| প্রেমিকজনকে চিঠি |--

১.)

ঐটার খোঁজ
 ------------------------------ নিউ ইয়র্ক,
                                     ইউ.এস.এ

প্রিয়,
দ্বীপদা।

২৩ বছর ! ২৩টা বছর চলে গেল... কিভাবে চলে গেল উপলব্ধি করতে পারিনা। এই এতগুলো বছরের মধ্যে একটা বারের জন্যেও আমাদের মধ্যে চোখের দেখাটুকুও হয়নি। কি করে হবে?
আমিই তো মোটে এই তেইশটা দুর্গাপুজার মধ্যে দুটি দুর্গাপুজাই পেয়েছিলাম ভবানীপুরের সেই দাদুদের বাড়িতে আনন্দ উপভোগ করার। যাক গে সেসব কথা।

তুমি কেমন আছ এখন? শুনলাম তোমার নাকি একবার অ্যাটাক হয়েছে!! নিজের শরীরের যত্ন নিও। সারাজীবন তো অপরের সুখ-শান্তির কথা ভেবে ভেবেই জীবন কাটিয়ে দিলে। বাড়ির বড়ো ছেলে হয়েছ বলে কি সব দায়িত্ব তোমাকেই নিতে হবে? এখন তো নিশ্চ‌ই রুনু ও টুনুর বিয়ে হয়ে গেছে। অংশুমানের তো শুনেছি পাঁচ বছরের মেয়েও হয়ে গেছে। এখন হয়তো সে মেয়ে ম্যাট্রিক দেবে। সে দশবছর আগের কথা। দুর্গাপুজায় গিয়ে বৌঠানের মুখে শুনেছিলাম।


সেবার বৌঠানকে তোমার কথা জিজ্ঞেস করার সুযোগ হয়ে ওঠেনি। বিয়ের পাঁচবছর পরে যেবার ভবানীপুর গেছিলাম, সেবার শুধু জিঞ্জেস করেছিলাম দাদাকে তুমি বিয়ে করেছ নাকি?
সেই শুনে দাদা আমাকে কি অপমান করেছে তুমি জাননা। জানবে কি করে? তুমি তখন দুর্গাপুরে। সবে ব্যাঙ্কের চাকরিতে যোগ দিয়েছ।
দাদার সেই অপমানের কারণেই আমি বহু বছর আর ওখানে যাইনি।

আচ্ছা, তুমি আর বিয়ে করলেনা কেন? আমাকে না হয় তুমি ভালোবাসতে না!! তারজন্য কি সারাজীবনে আর কোনো ভালোবাসার মানুষ পেলে না? নাকি অন্য কোনো কারণ ছিল?
ভাই-বোন তোমার সবাই তো সুখে সংসার করছে। তাহলে তোমার ...

তুমি সেদিন যে কেন দাদাকে বলেছিলে আমাকে ভালোবাসো না,তা আমি আজও বুঝে উঠতে পারিনা। কিন্তু যে ভালোবাসা তোমার চোখে আমি দেখেছিলাম আমার জন্য তাকেও আমি বারবার অস্বীকার করতে চেয়েও পারিনি অস্বীকার করতে। কুড়ি বছর বয়স থেকে আজ ছেচল্লিশ বছর বয়স হয়ে গেল আমার। শুধু মাত্র তোমার সেই ভালোবাসা নিয়েই বেঁচে আছি।

তুমি আমাকে বিয়ে করবে না বলে যখন দাদাকে ফিরিয়ে দিলে তখন আমার এত কষ্ট হয়েছিল, এত কান্না পাচ্ছিল...

কিন্তু আমি একটুও কাঁদিনি। দাদা তার অফিসের বন্ধুর ভাই-এর সাথে আমার বিয়ে ঠিক করল। আমার নীরবতাকেই ওরা সম্মতী মনে করে বিয়ে দিল। আমি কি করতাম বলো? একবছর হয়েছিল বাবা মারা যাওয়ার পর আর আমার বোঝা কেউ টানতে চায়নি। তাই আমিও নিরুপায় হয়ে ...

বিয়ের পর অষ্টমঙ্গলায় যখন ভবানীপুরে এসেছিলাম, তখন  আশীর্বাদ নিতে তোমাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম।অনেক ভয়ে ও গোপনে তোমার মাকে তোমার কথা জিঞ্জেস করলে তিনি বলেছিলেন তুমি নাকি ব্যারাকপুর গিয়েছ চাকরির ইন্টারভিউ দিতে।আরও বলেছিল যেন তোমাকে ভুলে গিয়ে অক্ষয়কে নিয়ে সুখে থাকি। তাতেই নাকি তোমার আমার সকলের মঙ্গল।

যাই হোক, মঙ্গল চেয়েছিলাম বলেই আজ হয়তো এত সুখেও আমার আর শান্তি এল না। বিয়ের পর পরেই চলে এলাম এখানে। উনিও চাকরি করতেন সংবাদ সংস্থায়। মানুষ কত কর্মব্যস্ত এখানে তা হয়তো তুমি জান। অনুভূতির কোনো জায়গা নেই এখানে। উনি টানা দু-দিন, তিন-দিন হয়ে যেত বাড়ি আসতেন না। টাকা-পয়সার অভাব আমার কোনোদিন‌ও হয়নি, অভাব ছিল  শুধু ভালোবাসার।

ছেলটাও ঠিক বাপের মতোই হয়েছে। বাড়ি বলে হয়তো এদের কিছু নেই। আমি এই বিশাল বাড়িতে একা। এই শহরটাই কেমন যেন ভালোবাসাহীন। আকাশ নেই! সূর্য নেই!চাঁদ নেই!
মাঠ নেই! শুধু এই বড়ো বড়ো ইমারত। সুখ-বৈভব! কিন্তু ভালোবাসা নেই।শান্তি নেই।

একা বললে ভুল হবে। আমার এই একাকী জীবনে তোমার ঐ ক্ষুদে ক্ষুদে দুটি চোখে আমার জন্য যে সুবিশাল সমুদ্রের মতো প্রেম দেখেছিলাম তাই আমার সঙ্গী।

ভাবছি এবার পুজোয় ভবানীপুর যাব। তুমি এখন ওখানেই। আর দশ-বারো বছর হয়তো চাকরি আছে তোমার।

আর এইবার তোমার ঐ দুখানা চোখ দেখে উত্তর খুঁজব আমার মনের এতদিনকার প্রশ্নটির।
ভালো থেকো। যত্ন নিও তোমার শরীরের ও "ঐটার"।
   

                                           ইতি,
                                                   
                                      তোমার সৃষ


২.)

প্রিয় রোদ্দুর,

এখন প্রিয় শব্দটা লেখার অধিকার আছে কিনা জানি না।আমাদের প্রেমটা সামাজিক স্বীকৃতি যে পাবে না তার আবেশ আমরা অনেক আগেই পেয়েছিলাম।মা ছোটোবেলায় বলতো জানো,কোনো মানুষ এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলে ঈশ্বর তাকে নিজের কাছে সযত্নে রাখে।তুমি কি তবে এখন ভালো আছো?এখন খেতে পাও দুবেলা মাছ,ভাত।ভাতের ওপর দু হাতা ডালের জন্য এপাড়া ওপাড়া কত ঘোড়াঘুড়ি করেছো একসময়।আমরা দুজনেই বাস্তবিক ছিলাম খুব।তোমার আমার জানালার মাঝের যে দুরত্বটা ছিল তা ধর্মের আচড় কেটে ক্ষত বিক্ষত করেছে বহু মানুষ।এখন তো মানুষ অনেক বেশি উন্নত,মোবাইল আর কমপিউটারের যুগ।মানষিকতা কি এক বিন্দুও এগিয়েছে?
                   তোমায় দেওয়া রোদ্দুর নামটা শুনে তোমার ছোটো খালার সেদিন কি হাসি।বাস্তবিক আমি বোধ করি তোমায়  সেদিন পরিবারের কাছে খুব ছোটো করেছিলাম।হিন্দু নাম যে তাদের অপছন্দের।নামেরও যে ধর্ম থাকতে পারে সেদিন প্রথম বুঝেছিলাম।প্রতিটা রাত কাটতো বাবার মায়ের ওপর অকথ্য অত্যাচারের আওয়াজে,আমিও সেই অত্যাচারে মাঝে মাঝেই সামিল হতাম।হাতে গায়ে অজস্র লাঠির,আর চরের দাগ,এখন অবশ্য দাগের সংখ্যা বেড়েছে।রোজ সকালে তুমি মসজিদ যেতে আমার জানালার সামনে দিয়ে আর আমার ঘরটা আলোয় ভরে উঠতো।তোমার এক পলকে মিষ্টি হাশি আমার ব্যথাগুলোয় মলমের মতো কাজ করতো।আলোয় ভরে যেতাম আমি,তাই নাম রেখেছিলাম রোদ্দুর।
              আচ্ছা রোদ্দুর জানো,তোমার কবিতার খাতাগুলো ওরা ছেপেছে।যেসব কবিতা তুমি নিয়ে ঘুরেছো কয়েকশো প্রকাশকের কাছে দুটো ভাত জোগাড় করতে।তুমি চলে যাওয়ার পর সেসব লেখার কত নাম।তোমার ভাই সেসব ছেপে বেশ বড়লোক হয়ে গেল।কত অনুষ্ঠান তোমায় নিয়ে।আর আমি সেসব অনুষ্ঠানে যায়,তোমায় খুঁজি শুধু।আমার দেওয়া সোনালি খাতাটাই তুমি লিখেছিলে আমাদের প্রেমের কবিতা।ধর্মবিরোধী দুটো মানুষের মিলনের কবিতা,তা এখন রমরমিয়ে চলছে।কবিতাগুলো পড়ে মানুষের চোখে জল আসছে,কেও আবার তোমার প্রশংসায় পন্চমুখ।তারা জানেনা রোদ্দুরের অন্তিম পর্যায়টা কতটা মর্মান্তিক।তুমি খুব বোকা ছিলে তাই এমন মেয়েকে ভালোবেসেছিলে যে তোমার থেকেও বেশি বোকা।তাই হয়তো এই প্রেমের শেষ লাইনে তুমি নেই,আর আমি আজও রয়ে গেছি।ঠিক হয়েছিল দুজনে একসাথে যাবো।তোমার আধপেটা শরীরে একটা বিষের ওষুধ যথেষ্ট ছিল,আমার তো মার খাওয়া শরীর তাই একটা ওষুধে কাজ হয়নি।তুমি মুক্তি পেলে,আর আমিরোজ দুবেলা তোমায় না পেয়ে মরন খুঁজি।আর বাবার হাতের লাঠিটা এখন জলন্ত কাঠে রুপান্তরিত হয়েছে।রোজ রাতে আমি যখন বিছানায় শুয়েছি,রান্নাঘরে গরম উনুনের জলন্ত কাঠ এনে চেপে ধরে শরীরে।মা ও আর আটকায় না।আসলে ব্রাহ্মন পরিবারের মেয়ে মুসলিম ছেলেকে ভালোবেসেছে তো।গঙ্গা জলে শীব পুজো করা পুরোহিতের সম্মানহানি হয়েছে কিনা,এটুকু তো প্রাপ্য আমার।
                       তোমার লেখা এটাই আমার শেষ চিঠি।তোমার কবরে আজ রেখে আসবো সঙ্গে তোমার প্রিয় দুটো কাঠি লজেন্স।মনে আছে তোমার নিজেরটা খাওয়ার পর আমারটা নিয়ে কাড়াকাড়ি করতে।এবার আর একটা ওষুধ খাবো না,দশটা খাবো।রোজ রাত্রে জলন্ত কাঠের ছেঁকার থেকে অনেক ভালো দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠা।জানো আমি চেয়েছিলাম বাঁচতে।পুলিশের কাছে গিয়েও বলেছিলাম।বাবা বড়বাবুর বাড়িতে পুজো করে যে,ভগবানের এত সুযোগ্য পুরোহিতের বিরুদ্ধে কোনো আইন খাটলো না।তোমার বাড়িও গেছিলাম,তারা তো আমাকে মারতে বাকি রেখেছিল।তোমার মৃত্যুর জন্য যে আমি দায়ী।আমার যে আর যাওয়ার কোনো জায়গা নেই।জানো খুব ইচ্ছে ছিল আমার কবর টা তোমার পাশে থাকুক।এখানেও ধর্ম আমাদের আলাদা করে দিল।জানিনা মৃত্যুর পর ধর্মের কতগুলো চোখ তোমার আমার মাঝে বাঁধা হয়ে দাড়াবে?তবুও তোমায় দেখতে তো পাবো।আজ আর ভালো থাকো লিখবোনা।আজ বলবো আসছি আমি রোদ্দুর।আমি আসছি।
                                     -------ইতি,
                                        তোমার জান্নাত

                       
                                       




Exclusive কৃপা

প্রথমেই জলফড়িং-র পক্ষ থেকে তোমাকে জানাই নমস্কার

কৃপাঃ- নমস্কার



১.) লেখিকা কৃপা বসু, নামের আগে লেখিকা শব্দের অনুভূতি কিরকম হয় ?

উঃ- আমি নিজেকে লেখিকা বলে ভাবিনি এখনো, নিজের প্রোফাইলে কোথাও লিখিনি যে আমি লেখিকা। এই শব্দ গুলো নিজের নামের পাশে বসানোর যোগ্যতা এখনো হয়নি। এখনো অনেক পথ চলা বাকি। আর কেউ যদি ভালোবেসে বা টোন কেটে লেখিকা বলে ডাকে, দুটোতেই বড্ড বেশি লজ্জা করে আর একটা জায়গায় খুব লজ্জা করে যখন কেউ অটোগ্রাফ চায়, কবে এত বড় হলাম যে অটোগ্রাফ দেবো! কিছুই তো এচিভ করিনি জীবনে, সবটাই শূণ্য ফাঁকা, আমি বরং জড়িয়ে ধরতে পারি অটোগ্রাফ দিতে পারিনা।


২.) প্রথম লেখার নাম? কত বছর বয়স থেকে লেখালেকির শুরু?

উঃ- প্রথম লেখার নাম মনে নেই রাদার নামহীন কিছু কবিতা লেখা শুরু করি প্রথমে। মোস্ট প্রবাবলি 2 বছর হলো লিখছি, হাতেখড়ি বলা ভালো।


৩.)তোমার ছাপানো একক কাব্য গ্রন্থের নাম?উপলব্ধি কিরকম ছিল?

উঃ- "দ্রাঘিমা ও প্রত্নবলিকা"। কাঁচামাটিতে মূর্তি গড়ে একজন মধ্যবিত্ত সাধারণ মানুষ যেমন নিজেকে মনে মনেই ঈশ্বর ভাবতে শুরু করে, ঠিক তেমনটাই উপলব্ধি ছিল।



৪.)এত মানুষের ভালোবাসা,এতো এতো শেয়ার, লাইক। এতোদিন লিখলেনা নিজের কাছে কিরকম লেগেছে নিজেকে এই অবস্থায়।

উঃ-ফেসবুকে লাইক কমেন্ট শেয়ার যদি জীবনের একমাত্র লক্ষ্য তাহলে বলতে হবে ভীষণ খারাপ। কিন্তু এটা সঠিক উত্তর নয়। আমি প্রতিটা অবস্থায় ভালো থাকি, থাকার চেষ্টা করি। জীবনের লড়াই তো এটাই প্রতিটা মুহূর্তে নিজেকে নতুনভাবে গড়ে তোলা, একঘেয়ে জীবন কিংবা অভ্যাসের জীবন মানেই তো নিজের কাছে নিজের হেরে যাওয়া। আমরা তখনই জিতি যখন গতানুগতিক জীবনকে একসেকেন্ডে ভেঙে গুঁড়িয়ে আবার নতুন রূপে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারি। ফেসবুকটাও ভীষণ একঘেয়ে হয়ে গিয়েছিল, ফেসবুকের বাইরের জগৎ টাতে আমি বেশি ভালো আছি।



৫.) এখন একটা লেখা ছাড়লে আগের মতো লাইক,কমেন্ট,শেয়ার এলো না। কার খারাপ লাগবে লেখিকা কৃপার নাকি কৃপা বসুর।

উঃ- একদিনেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, একদিনেই ফেসবুক ছেড়েছি এমনটা নয় যে যাচ্ছি বলে দুঘন্টা পরে আবার ফিরে এসেছি। কাজেই লাইক কমেন্ট শেয়ারের লোভ কোনোটাই নেই। এরপর যদি লিখি তখনও থাকবেনা আশা করি, কারণ ফেসবুক নামক ড্রাগের নেশা থেকে আমি মুক্ত হয়ে গেছি।


৬.) কৃপা বসু কি শান্ত স্বভাবের মানুষ? লেখালেখি ছাড়া আর কি কি করা হয়?

উঃ-শান্ত একেবারেই না। যারা কাছ থেকে দেখেছে তারা ভালোমতো জানে আমি কিরকম চিজ। ভীষণ চঞ্চল, প্রাণবন্ত, বাচাল, দুস্টু স্বভাবের।


৭.)কৃতি্তবাস কিংবা দেশ সবার স্বপ্ন থাকে। তোমারও আছে নিশ্চয়?

উঃ- নাহ, তেমন কোনো স্বপ্ন নেই, লেখালেখি যখন ছেড়ে দিয়েছি তখন কৃত্তিবাস দেশের স্বপ্ন দেখে কি লাভ।



৮.) এতোদিন থেমে থাকলে কেন?

উঃ- মানুষ থেমে থাকেনা কখনোই, কিছুদিন বিরতি নিতে পারে। আসলে ফেসবুক বন্ধ করার পর আমার শ্বাসপ্রশ্বাসটা ভালো ভাবে চলাচল করছে, স্বচ্ছ বায়ু, স্বচ্ছ পরিবেশ, মুখোশ হীন মানুষ, বেশ বেশ ভালো আছি।


৯.) নিজের প্রতিদ্বন্দী কাকে মনে করো? নাকি নেই।

উঃ- মানুষের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী সে নিজেই, নিজেকে বেটার থেকে বেটার মানুষে পরিণত করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। অন্য কাউকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবার এত সময় কোথায়! অন্য কাউকে এত প্রায়োরিটি দিতে আছে নাকি, নিজেকে নিজে চ্যালেঞ্জ করো,নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী নিজে হও।


-----------------------


কাজেই আমার সবচেয়ে বেশি ভয় করে নিজেকে।
------------------------


১০.) তোমার কাছে সব চেয়ে প্রিয় ঘটনা যাকে তুমি ভুলতে পারবেনা কোনো দিন?

উঃ- অনেক অনেক, খারাপের চেয়ে আমার জীবনে ভালো ঘটনাই বেশি আছে। তার মধ্যে একটা মাধ্যমিকে ভালো নাম্বার পাওয়ায় ফার্স্ট টাইম বাবার হাত বোলানো মাথায়।



১১.) ফেসবুকে অনেক পপুলার কবিরা আছেন, কখনও কখওন মনে হয়না যে তোমার লেখা গুলো কেমন যেন কথা কথা? (খারাপ ভাবে নেবে না প্লিস)

উঃ- খারাপ ভাবে নেবার কি আছে! সবাই তো একধারায় লিখতে পারেনা, বা লেখেনা, আমিও চেষ্টা করেছি একটু অন্যভাবে লেখার,অন্যধারায় লেখার, খারাপ ভালো ঠিক ভুল এত ভাবিনি কিন্তু। এবং এটা আমার প্রাপ্তি এই কনসেপ্টটা অনেকেই চুরি করে নিজের শব্দ সাজিয়ে লিখছে আজকাল।


১২.)আচ্ছা ধরো এই একই রকম লেখা অন্য একটা ছেলে লিখল মানে তুমি যেরকম ভাবধারায় লেখ তার ক্ষেত্রে তোমার মতো অতো কমেন্ট, শেয়ার এলো না। কখনও মনে হয়না তুমি মেয়ে বলে যেন একটু বেশিই পপুলার হয়ে গেছ?

উঃ- ভারতের মতো দেশে এরকম প্রশ্ন করাটা এবং প্রশ্নের উত্তরে হ্যাঁ বলাটাই স্বাভাবিক। মানুষ জনপ্রিয় হওয়ার জন্য অনেককিছুই করতে পারে, কিছু মেয়েরা "মেয়ে" হওয়া টাকেই এক্স ফ্যাক্টর হিসেবে কাজে লাগায় জনপ্রিয় হওয়ার জন্য এবং নেগেটিভ পাব্লিসিটিকেও একরকম প্রচার হিসেবে মনে করে। "তবে সবার উপর কর্মই একমাত্র সত্য, তাহার উপর নাই," এখনো এই কথাতেই বিশ্বাস রাখি।


১৩.) লেখার জগতে এসে এতো পপুলার, কাউকে ভয় পাও যে তোমার ক্ষতি করবে বলে মনে হয়।

উঃ- বোকারা সবচেয়ে বড় এবং বেশি ক্ষতি নিজের করে, বোকারা নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনে, কাজেই আমার সবচেয়ে বেশি ভয় করে নিজেকে।



১৪.) ফেসবুকে লেখেন এমন তোমার প্রিয় লেখক এবং লেখিকার নাম?

উঃ- লম্বা লিস্ট হবে আগেই বলে রাখলাম। অভীক রে, দেবজ্যোতি দাশগুপ্ত, অর্ঘ্যদীপ আচার্য, রুদ্র গোস্বামী, সুব্রত বারিষওয়ালা, মুকুলিকা মীরাবাই চ্যাটার্জি, আজহারুল ইসলাম, আত্রেয়ী ভৌমিক।





কৃপার পছন্দ কি?
============

প্রিয় রঙঃ- ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট।

প্রিয় খাবারঃ- সাদা ভাত, আলু ভাজা, মুড়িঘন্ট, মটন কষা।

প্রিয় পোশাকঃ- কুর্তি, জিন্স, পাজামা, যা পরতে আমি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি।

প্রিয় গানঃ- প্রচুর, এভাবে যে কোনো একটা বলা মুশকিল, মুডের উপর নির্ভর করে কখন কোনটা শুনবো

প্রিয় লেখকঃ- সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, জয় গোস্বামী,  ভাস্কর চক্রবর্তী।

প্রিয় নায়কঃ- নওয়াজ উদ্দিন

কৃপার ক্রাশের নামঃ- অনেক, এবং প্রতিনিয়ত চেঞ্জেবল😂 এভাবে বলা চাপের বিষয়।

শীতের দিন প্রিয় নাকি রাতঃ- অবশ্যই রাত।

কৃপার চোখে জয় গোস্বামীঃ- আধুনিক কবিতার একাধিক অগ্রদূতের মধ্যে তিনি অনন্য এবং অন্যতম, আধুনিক কবিতার ঈশ্বর বলা ভালো।

তোমার কাছে তোমার মাঃ- প্রতিটা সন্তানের কাছে তার মা যেমন হয় আমার কাছেও তাই। পাঁচমেশালি সম্পর্ক, বান্ধবী, বোন, দিদি, সন্তান, একটা শক্তপোক্ত ছাদ, আদর জমানো ঘর এককথায় আশ্রয়।