নিজের লেখা কবিতা, নিবন্ধ, গল্প পাঠান হোয়াটসঅ্যাপ করে 7384324180 এই নম্বরে

শুক্রবার, ৮ মে, ২০২০

পূর্ণিমার চাঁদ ও একবাটি মধু

লেখকঃ- উদ্ভাস সরকার

থমথমে মুখে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল কাঞ্চন। তাকিয়েছিল বাদামি ধূসর পাথরের মূর্তিটির দিকে। আপন মনে দেখছিল রামকিঙ্কর বেইজের অপূর্ব সৃষ্টি গুলির দিকে। মূর্তিগুলোর অপূর্ব সৌন্দর্য তাকে স্নিগ্ধ করছিল ধীরে ধীরে। মনের ভেতরে যে অপরিমেয় উত্তাপ ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছিল কিছুক্ষণ আগেও, অনেকটাই প্রশমিত হল তার। মাথার উপর একটা নিমগাছ তার। দেখল ঝকঝকে সবুজ পাতা দুলছে একটু একটু করে। মনের ভেতরে এখন অনেকটাই শান্ত কাঞ্চন।


সোনাঝুরির দিকে একটা রিসর্টে উঠেছে তারা। তারা বলতে, কাঞ্চন আর ওর স্ত্রী তপতী। সদ্য বিয়ে হয়েছে ওদের। সম্বন্ধ করে বিয়ে। বিয়ের আগের প্রাথমিক পরিচয়ে যে চমৎকার উৎসাহী আর সমঝদার তপতী কে পেয়েছিল সে, বিয়ের পরে সে মানুষ বদলে গেছে রীতিমতো। এই তপতী একটুতেই ভুল বোঝে, বড় বেশি অভিমানী। বিয়ের পরে প্রথম বাইরে এসে ভালোবাসার রঙে রঙিন হবে বলে এসেছিল কাঞ্চন। কিন্তু না, নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া তৈরি হচ্ছে না কিছুতেই। ছোটখাটো বিষয় নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি বাড়ছে ক্রমাগত। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কাঞ্চন নিজের উপরে সম্পূর্ণ দোষের দায় নিলে পরে, সাময়িক যুদ্ধবিরতি। অথচ শান্তিনিকেতনের দোলের অনুষ্ঠান উপভোগ করতেই তাদের আসা। সামান্য বিষয় নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি এতটাই চরম আকার ধারণ করে যে এ ক'দিনে ই কাঞ্চন জীবন তৃষ্ণা হারাতে বসেছে।


বৃদ্ধ বাউল কে দেখে বড় মায়া হল কাঞ্চনের। একা গাছের তলায় বসে আপন মনে গাইছিলেন। অচিন পাখির গান গাইছিলেন। মুগ্ধ হয়ে শুনছিল কাঞ্চন। ভিতরে ভিতরে শুদ্ধ হচ্ছিল মন। সত্যিই জীবন বড় বিচিত্র। সব কিছু পেয়েও এক মস্ত শূন্যতা কাঞ্চনের ভেতরে। এদিকে কিছু নেই বৃদ্ধ বাউলের। অথচ মন এক অপূর্ব প্রশান্তিতে ভরপুর। একঘন্টা পরে তার মনে হল, যেন এক পুনর্জন্ম হল তার।


রিসর্টের দিকে ফিরে চলল কাঞ্চন।








কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন