ভিড় থেকে সরে আসি। সমুদ্র জানে না কারও নাম। অনেক লেখার শেষে সাদা পাতা এখনও আরাম...শ্রীজাত

বুধবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৯

ভালোবাসা বাকি আছে সংখ্যায় মনোনীত কবি বর্গের লেখা




১.)
প্রবজ্যা
সুকুমার কর


যে মেয়েটি রোজ চাঁদের কাছে
রাতকে বাঁধা দিয়ে ভাত জোগাড় করে.
তার শরীর জুড়ে মহুলের নেশা.
তুমি লং ড্রাইভে মাতাল হও.

তার খোলা কেশে
তোমার আঙ্গুল বাঁধে
ভালোবাসর বিনুনী.
তারাদের মেলা বসে.

নকল প্রেমের শামিয়ানায়
তুমি কাব্য চর্চা করো.
সূর্যোদয় হলে তোমার নেশা কাটে.
মেয়েটি ভাতের গন্ধ পায়.


২.)
স্মৃতি অমলিন
  কেয়া রায়

তোমাকে যেদিন প্রশ্নবাণে বিধ্বস্ত করেছিলাম,

"কোনওদিন তোমাকে সত্যিই ভুলে গেলে কি করবে তখন??"

মনে পড়ে, তোমার জবাবটা সেদিন কি ছিল??

বলেছিলে, "ভোলার চেষ্টাও করে দেখো...ছিনিয়ে আনব ঠিক সবকিছু বাজি রেখে।"

আমি জানি তুমি কিছুই ভোলার পাত্রী নও
প্রশ্নটা তখন ঠাট্টা গোছের ছিল ঠিকই,,
কিন্তু কিছু সময় পর তাকে বাস্তবে রূপ দিয়েছিলাম নিজে হাতে ;

তিল তিল করে গড়ে তোলা আমাদের স্বপ্নগুলোকে গলা টিপে হত্যা করেছিলাম...

শুধুমাত্র সেদিন মায়ের আদেশ অমান্য করতে পারিনি বলে।।

৩.)
ফিরে এসো স্বপ্নে
রোনক ব্যানার্জী


আবারও ফিরে এসো স্বপ্নে
জলরঙ্গে এঁকে নেবো চিত্রপট
ট্রপোস্ফিয়ারের ঝঞ্ঝা তোমাকে পারবে না ছুঁতে
তোমার আকাশ সজ্জিত হবে সাতরঙ্গে।


দূরপাল্লার ট্রেনে চলে যাবো নিরুদ্দেশ
নিয়নবাতির মিছিলে মিলে যাবো ধীরে
পাহাড়িয়া সবুজে খেলা করবো দুজনে
সমুদ্রসৈকতে খুঁজে নেবো অজস্র ঝিনুক।


লক্ষীপেঁচার ডাক শুনে জ‍্যোৎস্নাটুকু মেখে নেবো
নেপথ্যে বেজে যাবে সুদূরের বংশীধ্বনী
অলির ঘ্রাণ নিয়ে ত্রিতালে মেতে উঠবো দুজনে
প্রণয়ের তরঙ্গে ঘুম ভেঙ্গে যাবে অনুভূতিদের।


নিশির দপ্তর হতে খুঁজে নেবো হৃদয়ের প্রশান্তি
স্মৃতির কোলাজ থেকে মুছে ফেলব মতানৈক্য
অভিসার ও বিশ্বাসের দোহাইয়ে আবারও গড়বো নতুন অধ্যায়
অভিমান ভুলে প্রতিষ্ঠা পাবে তোমার আমার লাল নীল সংসার।

৪.)
মানবিকতা
প্রদীপ কুমার দাস

আপন ট্রাকে দৌড়ে চলছে
সামনে লাল ফিতে,
ছুঁতে হবে,আরও জোরে
দৌড়ে যাচ্ছে মিছে|

পিছে পড়ে রইল কেউ
ফিরে তাকানো মানা,
যে পড়ে পড়ুক ট্রাকে
হাল ছাড়বে না|

রং রুটটাই পয়লা নম্বর
করছে ওভার শেষ,
একে অন্যকে দেখিয়ে বলছে
এই তো আছি বেশ|

পাশের বাড়ি আগুন লাগলে
আগুনে পিঠ সেঁকে,
শুধু একটু আহা সূচক
শব্দ খরচ করে|

মানবিকতা হারিয়ে যাচ্ছে
সারা পৃথিবী জুড়ে,
মানুষ আসলে যন্ত্র হচ্ছে
মানবিকতা তাই দূরে|

৫.)
আত্মরতিপ্রিয়
পঙ্কজ চক্রবর্তী


গায়ক সহজ নয়
গান তবু ব‍্যর্থ এক অভ‍্যাসবশত
দূর থেকে দেখি সুর নেমে আসেনি জীবনে

শব্দ দিয়ে ছুঁয়ে আছি অর্থের বিনিদ্র কেকা

মুগ্ধতার আজীবন অভিশাপে ছুটে গেছি আমি

অসময়ে গেয়ে ওঠো গান--  দরজায় করাঘাত শুধু
শুদ্ধতার ছলনায় সে তবু দূরে সরে গেছে

গায়ক সহজ নয়
মনে মনে গান তার একার প্রসাদ




৬.)
অন্ধপ্রেমিক
রথীকান্ত সামন্ত

শুধু চোখ দুটি নয়, সমস্ত সমস্ত দেহ হোক দৃশ্য গ্রাহক
চোখের মনিতে ডুব, শিরো থাক চেতনা সবল
চিররাত্রির দেশে ধরে ফেলি সাগরের লহর ঠমক
কাটাতে কাটাতে শোক খুঁজে পেয়ে স্পর্শ-উপল
ছোঁয়াই পাগল প্রায় শ্রবণে ধ্বনিত হয় স্বর্ণহুল্লোড়
পথিক দুহাতে কুড়ায় এমনই অরূপ পথে কোন একদিন
আমায় ছুয়েছ তুমি গল্প পার করে দিতে ওই বড়জোর
মাত্র কয়েক পল হলাম পাথরাতীত স্বর্ণে বিলীন।
সেই হাত খুঁজে হই নিজে নিজে কত গল্প পার
অক্ষরেখার পথে হয়তো ফেলেছি ধরে বিপরীত দিক
তবু নিশ্চিন্ত এই পৃথিবীতে ঠিকানার চিরবৃত্তাকার
অবিরল অনুভবে অনিমিখে হেটে যাই অন্ধ প্রেমিক
কল্পনা ভাঙে এই চৌকাঠটিকে  দূর মাইলস্টোন ভ্রমে
মিলন তীর্থপথে আমার থেমে যাওয়াই সবার প্রথমে।


৭.)
একাল সেকালে
  হাফিজুর রহম


পেরিয়ে যাচ্ছে সময়
এগিয়ে যাচ্ছি বার্ধক্যের দিকে

দিনের পর দিন কিসের শুন্যতায়?
শুধু আবেক জড়িয়ে থাকে।

স্মৃতির পরানে প্রতিক্ষণ ক্রন্দন
আবেগ ঝরে পরে বৃষ্টি মতো অশ্রু হয়ে!

একা নই আমি তবু লাগে বড়ো একা মন
জীবনের সেরা কিছু মুহূর্ত নিয়ে যায় প্রাণ বয়ে।

সুখের সরিষা খেতে ভুল সেবাচারী
যা ছিলো হলুদে হলুদ সে কালে

আজ কিসের অভাবে তা ফ্যাকাসে ভারী?
আবেগ আটকে গেছে কোন মায়া জালে?
বোধহয় উচিত হয়নি এত বেশি স্মৃতি গড়িবার!
তাই একাল সেকালে চলে যায় বার বার।।


             
৮.)
আজ পড়বে ইশতেহার 
রাজিত বন্দোপাধ্যায়

ঘুনধরা সমাজ বৃত্তের ছায়ায় 
হঠাৎ আবিষ্কার করা নিজেকে   
বড্ড অচেনা লাগে আজ -- 
শহরের গায়ে আজ পড়বে ইশতেহার 
আগামীর পঙ্গু ভারত , 
চলে ফেরে বিত্তহীন কক্ষপথ ধরে ! 
সেদিন তোমার নামে হে পৃথিবী 
আসবে চিঠি -- 
ক্ষণজন্মা এই সব রাজনীতির তলে 
কেমন আছে ভারতভূমি ? 
শতাব্দীর গর্বের ইতিহাস ভেঙ্গে 
নিঃশ্বাস ফেলবে ধর্মনীতি !! 

৯.)
উপজাতি-ফুল
প্রতিমা রায়বিশ্বাস


যে কথার ভিতর আসা যাওয়া করে কিছু কথা, কিছু গান,  উড়ো কিছু রোদ্দুর,
পিচঢেলে পুড়ে যায় যে কথায় অনার্যমাখা গ্রামীণ ধূলো,

 যে কথায় পুজো পুজো গন্ধ,যে কথা ঠিকানা কারো সদ্য, যে কথা  আঁধারে আঁধারে অবাধ্য।

সে কথার পাশে আমি কথা রাখি না কিছুই।
বৃহন্নলা ফুল তুলি শুধু।


এখনও আলো ঠেলে মহিষাসুরের ঢাল হয়ে আসে আর্য।
আর কিছুটা সময় দাও হে কুরুক্ষেত্র....
শেষ  দ্রাবিড়  কাগজী যুদ্ধে পরাজিত হয়েছে ওই,
নিঃস্ব ঠিকানা  নিয়ে ওই ওরা পথের উপর উঠে আসছে দেখো।


এদিকে বেদের উপর রোয়া আছে ধানক্ষেত।
ওদিকে আর পিচের তাপে পুড়ে যাচ্ছে দ্রাড়ির ঈশ্বর।



আমার রক্তে যে দেবতার বসবাস তোমরা জানো না ইন্দ্র,
তুমিও জানো না দুর্গা।

ও সূর্যকে আমরা ডাকি উনুন। এ বাতাসকে বলি নিভা।
এ নদী পিপাসা আমার। ও ফাগুন পাহাড় হাড়িয়া।


যে কথার ভিতর সংখ্যালঘু শব্দ কতক আমি 
আমার মায়ের হাতে  বাক্সমনষার ভয়ে

নিশ্চয়ই  কুচকে গেছে সভ্যতার ভ্রু।
সেখানে তোমরা অবহেলা মেখে বল না কিছুই।

বৃহন্নলা  ফুল তোলো শুধু।
এ শরতে উপজাতি-ফুল অক্ষর আকার নিয়ে নিয়ে মহালয়ার মাতৃপক্ষের মন্ত্রপাঠ।
কাশ পাপড়িতে গাছ ভরিয়ে রাখে সমস্ত পাতার উপেক্ষী  সুর।

ক্ষত বুক এত ভালো লাগে  ঊমা?
দ্রাবিড় ফুলের উপর হে আর্যময়  ঈশ্বর ঈশ্বরী
তোমারই  কেবল শুধু  এ অলংকার বোধ !

১০.)
প্রতিবাদী চাঁদ উঠেছে ধর্মতলায়
তুহিন কুমার চন্দ

ভ্রুপল্লবে ডেকেছে মানুষ কত,
তবুও চলেছি একা হেঁটে অবিরত।
সূর্য খেয়েছে সূর্যমুখীর লজ্জা মাখানো রোদ,
চারদিকে শোক বড় যন্ত্রণা সব ঋণ শোধবোধ।


ডেকেছিলে তুমি আউস গন্ধে রোদমাখা সন্ন্যাসী
চাঁদ সদাগর মধুকর নিয়ে চলে গেছে বানভাসি।
ভ্রুপল্লবে ডেকেছে মানুষ কত,

তবুও চলেছি একা হেঁটে অবিরত।
শ্যাওলা জড়ানো পবিত্র ভরা ঘাটে,
মানচিত্রে কত যন্ত্রনা মিথ্যা সময় কাটে।


যুবতীর বুকে সূর্য জেগেছে, ধমনীতে সংগ্রাম,
দুঃশাসন বুকের রক্ত ঝড়াতে প্রতিবাদ অবিরাম।
রক্তেরও রং বদলে দিয়েছে সত্য মিথ্যা বলায়
দূর থেকে দেখি প্রতিবাদী চাঁদ উঠেছে ধর্মতলায়।










১১.)
মুখ
ভগীরথ সর্দার

বাসনার কাছে মায়া বড় হচ্ছে
ভেসে যেতে দেখেছি একটা পাখি
তোমার স্রোতে


ঝুঁকে পড়ে , স্পর্শ করে
দু'খানি এঁকেছি মাত্র ভ্রু
প্রতিটি চোখের কোনে এখনও
অশ্রু আঁকা বাকি।

১২.)
অতীত পড়ে আছে
চৈতালী রায় 

কাটা ঘুড়িতে অতীত পড়ে আছে
আমের পাতায় সিঁদুরের ফোঁটা লাগিয়ে
পূর্ণ ঘট বসানো ছিল সদর দরজায় ।
সন্ধ্যেবেলায় শাঁখ বাজতো নিয়ম করে
তুলসী তলায় প্রদীপ জ্বলতো ।
ঝোড়ো হাওয়া তখনও ওঠেনি
ব্রহ্ম কমল কিংবা নিশিপদ্ম আঙিনা জুড়ে
পাপড়ি খোলার মজায় মত্ত ছিল -

রাজমহিষী হওয়ার উদগ্র বাসনায়
চোখে বেঁধেছিলাম - গান্ধারীর লাল মখমল বস্ত্র।
সূর্যের রোদে বিষণ্ণতার তাপ বয়ে আসলেও
নিবিড় প্রেমে কখনোই তার জীবন্ত হলো না -

আমি চোখ বেঁধেই রাজমহিষী হওয়ার স্বপ্নে তা দিচ্ছিলাম
তোমার বয়ে চলা হাসি , আনন্দ, উচ্ছ্বাস
এসবই শুঁয়োপোকার মত পাল্টে যাচ্ছিল
রঙিন গোলাপ ফুলের গন্ধেও বাতাস ভারী হয়েছিল ।


আজ যখন সুতোটা হাতড়াচ্ছি
দেখছি - অতীতটা পড়ে আছে ঐ এক কোণে
তুমি চলে গেছো - বেমালুম ভুলের হিসেব মেটাতে ‌

ভুল করে ---

১৩.)
মলাট 
 সুপ্রসন্ন কুণ্ডু

স্মৃতি সুখ ধুলোয় মোড়া

পুরানো বইয়ের পাতা উল্টে খুঁজে পাই
স্নেহ চুম্বন । তোমার পারিবারিক শোক

ধুলো ঝাড়ি,  একে একে সাজাই বাসনা
পিঠোপিঠি দাঁড়িয়ে থাকে রঙ বেরঙের মলাট

প্রকৃতিপাঠের পাশে ইতর ঈশ্বর বসতে চায় না

১৪.)
আলোর শিশু
সজল বন্দ্যোপাধ্যায়


আয়রে তোরা দস্যি দামাল
আমার কাছে আয়
নষ্ট চাঁদের গন্ধ মাখাই
তোদের সারা গা'য় !

চাঁদের আলোও মাখবি সাথে
পুনম জোছন রাতে
না হলে তো থাকবি পড়ে
আধপেটা সেই ভাতে !

আয় না তোদের ভাত বেড়ে দিই
কিংবা চাঁদের রুটি
আজ দিনটা পেট পুরে খা
কর না হুটোপুটি !

কাল থেকে তো আগের জীবন
আগের মতোই খাওয়া
পথ শিশুদের সারা জীবন
এমন করেই পাওয়া !!

১৫.)
স্মৃতি
বিশ্বজিৎ মণ্ডল


সদ্য খোঁড়া কবরের সামনে গিয়ে দাঁড়াই____
এখানেই সতেরোটি বছর ধরে মাটি কুপিয়ে নির্মাণ করেছি অনিবার্য অন্ধকার

প্রিয়তুতো আশয়গুলো তুলে রেখেছি____আমাদের

মধ্য যুগীয় বুক রাকে
আরো একবার ঠিকঠাক দেখে নিই,বিমুখ স্বজনের অবয়ব
অভিমানে ডুবে যাওয়া আমাদের প্রেমের অপরিণত নৌকা,
সোনাঝুরি তলায় ছিঁড়ে ফেলা প্রথম প্রেমপত্র

আজ আর রিবন অন্ধকার নেই....
দশক ফেরত পেঁচার  মগডালের কান্না নেই
কেবল নেশাতুর বিকেল এলেই ইচ্ছে আঁকি
কবরের কফিন ঘুমে।

১৬.)
নিশ্চয়তায় পদচারণ
অভিজিৎ দাশগুপ্ত


শুনেছি, এ জন্মের পাপের শাস্তি এ জন্মেই পেতে হয়, হবে হয়তো....... শুনেছি, এ পৃথিবীতে ভুলের হিসাব এ পৃথিবীকেই দিয়ে যেতে হয়, হবে হয়তো....... শুনেছি, যা কিছু সর্বনাশ তার নাশ একদিন হতেই হয়, হবে হয়তো....... তবে জোর দিয়ে বলার মত কিছু যদি থেকে থাকে, তবে তা হৃদয়ের আঁটোসাঁটো বাঁধন। এ বন্ধনের প্রতিধ্বনিতে ভালোবাসার সুর শোনা যায়, অভিকর্ষজ বলে হৃদয়ের গ্লানি ভোলানো যায়। অনিশ্চয়তা থেকে নিশ্চয়তায় নিশ্চিন্তে পদচারণ করা যায়।।

১৭.)
ধুলো খড়ের পান্ডুলিপি
খুকু ভূঞ্যা



পেঁয়াজ কাটার ছলে কান্না সেরে নিচ্ছে মা,
আমি তখন সজনে গাছের দিকে তাকিয়ে ফুল ফোটা দেখছি,
দেখছি শুঁয়োপোকার জন্ম।

গাঢ় কুয়াশার ভেতর দিয়ে বক উড়ে যাচ্ছে
সরপড়া ডোবায় চোখ মেলছে কলমী,
বেতো দিদা হাঁপানি দাদুর সঙ্গে মেঘ রোদ্দুরের গল্প বলছে
কত ধান হলো,কত পাট,,কত আলু লংকা পটল বেগুন---


দেখলাম চোখ মুছে আধখানা আলু সরিয়ে রাখল মা,
কাঁকর মেশানো চাল পিঁপড়েরও অরুচি
একদানা চিনির খোঁজে হয়রান--
পাতলা চিকনী শাকের ঘন্টে মায়ের সব যন্ত্রনা সেদ্ধ হয়ে যায় একসময়,
যখন গোটা একটা সূর্য সন্তানের ভাতের থালার পাশে
সবাক তাকিয়ে--

১৮.)
বহমান
সুলেখা সরকার

কতটা ভালোবেসে যত্নে রাখো !
অর্জুনের রথে উঠে বসি,
যুদ্ধ রীতি শিখি,
ঈশ্বর হতে হতে মানুষ হয়ে যাও। 

যে দুঃখে কাক উড়ে যায় একা,
সে দুঃখেই ভেসে থাকে ঘর,
দেশ ক্রমশ একা হয়।

এই যে শরীরের সাথে মনের উপবাস,
সময়ের উপবাস,
গতির হাত ধরে নিস্তব্ধতা,
কতটা সভ্যতা এনে দেয় তোমার চোখে,

সন্ত্রাসে কতটা সমাধান ঢেলে দেয়, জানি না।
আকাশে গা এলিয়ে দেয় স্বাধীন পাখি।
আমারও ইচ্ছে করে নীরব হতে।
মৃত শরীর পালটে নিতে।

আর কাটাকুটি নয়,
এবার ঘাসের ওপর বসিয়ে দাও,
অনেকদিন আমার এ-বয়স বহন করেছো।

১৯.)
ফেরা
ঋতশ্রী সামন্ত(মান্না)

যদি পথ আটকে দাঁড়িয়ে বলি,ফেরো।
বলি-যাওয়া হবেনা।কেন বোঝোনা,
কিছু তো দাবি থাকতে পারে বসন্তেরও!
হলোই বা সে নিরুচ্চার,শান্ত,মৃদুভাষ...
তুমি তো ঠিক পেয়েইছিলে,পাওনি
বলো,তার মনের ভেতর অশান্তি আভাস?

-তবে?মন খোয়া যায় বসন্তেরও কবে,
জানতেই তো।আচ্ছা,যায়না ফেরা?...
দরজাটা নয় খুলেই দিলে;কি আর হবে?
যদি ছুঁয়েই ফেলো?ভুলক্রমেও?মনস্তাপ,
নাকি অন্য কিছু হবে?বলো,সত্যি চাওনি
দিতে সবটা ভুলেই মরণ ছুঁয়েই অন্ধঝাঁপ?

এক মৃত্যু ছুঁয়ে দেখতে চেয়ে,আজও বসন্ত
অহর্নিশই মরে।মরণ কেন প্রানবন্ত এত?
জানো?বলো,মৃত্যু কি আর পক্ষপাতী হয়?
যদি বলি-এসো,ছুঁয়ে নাও এই মৃত্যুভয়।
বসন্ত আর একাই কেন আত্মঘাতী হয়?

যদি বলি-ফেরো।আজও বলবে না-ফিরি?
বলবে না কি-যেতেই পারি।কিন্তু,চলে যাওয়া      আর এমন কি দরকারী?"









 






কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন