ভিড় থেকে সরে আসি। সমুদ্র জানে না কারও নাম। অনেক লেখার শেষে সাদা পাতা এখনও আরাম...শ্রীজাত

মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২০

এক নয় একজোড়া বৈঠক

এক নয় একজোড়া বৈঠক


১.)
"একা মরবে জেনেও অস্ত্র তোলে সৈনিক"-- এই কথা ধ্রুব সত্য আর এই সত্যি কথার বক্তা কবি অর্জুন দাস। জলফড়িং এর পক্ষ থেকে তোমাকে প্রথমেই জানাই নমস্কার।

অর্জুনঃ- ধন্যবাদ ভাই

২.)
 "আচ্ছিল্য ভয় উপেক্ষা করে, সরিয়ে রেখে চোট-
নিজেকে প্রমান করতে হবে। জিতবে হবে। ওঠ।"

এই সাহসের কথা যার কলম থেকে উঠে আসে তার নাম সূর্য সুরেলিয়া।
দাদা নমস্কার।

সূর্য্যঃ- নমস্কার ভাই। 😁

৩.)
 কবিতায়  যাপন করতে হয় আর যারা যাপন করে তাদের আমরা কবি বলে ডাকি কিন্তু  সেই যাপনের মাধ্যম যখন ফেসবুক তখন তারা ফেবু  কবি। এই ফেবুকবি বা ফেসবুক কবি শব্দটা কেমন লাগে?

সূর্যঃ- সেরকমভাবে আলাদা করে তো  কথাটির কোনো অর্থ নেই। প্রথমত ফেবুকবি কোনো শব্দ না। শব্দ বন্ধনীটি হলো, ফেসবুক কবি।   অর্থাৎ যারা নিজেদের কাব্যচর্চার মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছেন ফেসবুককে।
তবে হ্যাঁ কবি শব্দটির কিন্তু একটা নিজস্ব অর্থ এবং মর্ম আছে। সেটি এতখানি সহজে এবং এত স্বল্প বিবেচনায় যে কারোর উপর প্রযোজ্য হয় না।


অর্জুনঃ- আমি তো  নিজেকে কবি ব'লে মনে করি না সেভাবে। আসলে কবিতা লিখতে গেলে বা কবি হতে গেলে অনেকটা রাস্তা হাঁটতে হয়, অনেকটা গভীরতা প্রয়োজন। আমার এখনও সেটা আসেনি মনে হয়।
আর ফেবুকবি প্রসঙ্গে বলবো, অনেকেই খুব ভাল লেখে এখানে, অনেকেই খারাপ লেখে। সুতরাং প্রিন্ট মিডিয়ার মতোই এটা কোয়ালিটি অনুযায়ী একটা মিক্সড মিডিয়া। তাই ফেবুকবি শব্দটা আমার কাছে একটা বিশেষণ মাত্র, অপমানজনক তিরস্কার নয়। 
আর যারা খারাপ লেখে, তারা অন্তত প্রোডাক্টিভ কিছু চেষ্টা করছে পার্টির ফ্ল্যাগ হাতে না ধরে। এর চেয়ে ভাল সময়যাপন হয় না বলেও আমি মনে করি।

৪.)
দুই লাইনের কবিতা বা কখনও কখনও বড়ো কবিতা। তবে বেশি সময় দুই লাইনকেই বেছে নাও তোমরা দুজনেই। তাই জানতে ইচ্ছে করছে তোমাদের কলমে 'কাপলেট' লেখার প্রবণতা বেশি কেন?

অর্জুনঃ-  শুরুতে একটা কারণে কাপলেট লিখতাম, চাইতাম ছন্দের অভ্যেসটা থাকুক, জঙ না ধরানোর জন্য রোজ লেখা প্রয়োজন। কিন্তু রোজ যেহেতু বড় লেখার সময় পেতাম না, তাই কাপলেট বেশি লিখতাম।
কিন্তু আমায় পীযূষ দা, মুক্তিপ্রকাশ দা, রাজা ভট্টাচার্য স্যার, শুভদীপ দা, অর্ঘ্য দা, সুমন দা, অজয় দা এরা ক্রমাগত ব'লে গেছে যে বড় লেখার সংখ্যা বাড়াতে। সবশেষে অর্পণ আর অভীক দা বলার পর ঠিক করি, যদি অভ্যাস করতে হয় বড় লেখা লিখেই করবো, রোজ না হলেও মাঝেমধ্যে বড় কবিতাই লেখার চেষ্টা করবো। কখনও কাপলেট মাথায় এলে লিখবো। কিন্তু রোজ নিয়ম ক'রে লেখার জন্য লিখবো না। তারপর থেকে এখন বড় লেখাই বেশি লেখার চেষ্টা করি। তবে কাপলেট পড়তে ভাল লাগে, লিখতেও।


সূর্যঃ- কবিতার ক্ষেত্রে একটা কথা ভীষণ সত্যি, পরিসর যত ছোট হয় মর্মার্থ বোঝানো কঠিন হয়ে ওঠে ঠিক ততখানিই। তাই দুটো লাইন উপর নীচে বসে গেলে এবং তাদের শেষদুটো শব্দের পশ্চাৎভাগ রাইম করলেই সেটা কবিতা হয় না। তার জন্যে দরকার ছন্দ ও মাত্রার ঢের অনুশীলন। আমাদের এই প্রবণতাও হয়তো সেই অনুশীলনেরই। আজকের এই বর্তমান সময়টা পুরোটাই আমাদের ওই শিক্ষাগ্রহণের প্রথম ধাপ।

৫.)
 উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েরা অন্তঃমিলের লেখা বেশি পছন্দ করে। এই বিষয়ে তোমার মতামত?

অর্জুনঃ- নিজে এসব চেষ্টা করেছি, তাই নিজের বোধ থেকে স্বীকার ক'রে নিই, যে বহু চিন্তাকে ঠিকঠাক বোঝাতে পারি না, কম্প্রোমাইজ করতে হয় এই অন্ত্যমিল ঠিক রাখতে গিয়ে আমাকে। তাই মাঝেমধ্যে মুক্তগদ্য বা গদ্য লেখা উচিৎ। নিজেকে অনেক বেশি এক্সপ্রেস করা যায়।
আর পছন্দ তো নিজের নিজের কাছে। অনেকেই গদ্যকবিতা বেশি পছন্দ করে। আমি নিজে ওটা লিখতে না পারলেও গদ্যকবিতা পড়তে বেশি পছন্দ করি।

৬.)
অনেক সময় দেখা যায় অন্তঃমিল তো হলো কিন্তু লাইনের কোনো মানে নেই  অথচ তিনি( সেই লেখক) গদ্য কবিতা ভালো লেখেন।  সূর্য দার কাছ থেকে জানতে চাই তাহলে কি তার অন্তঃমিলের কবিতা লেখা উচিত নাকি তাকে গদ্য কবিতাতেই থাকা উচিত?

সূর্যঃ- পুরোটাই নির্ভর করে সেই মানুষটার শিক্ষাগ্রহণের ইচ্ছার উপর। একজন ছাত্র সাহিত্যে ভীষণ ভালো, অথচ তার কোনোকালেই অংকের উত্তর মেলে না। সে যদি নিজস্ব সাহিত্যজ্ঞান নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে এবং সেটিরই যথার্থ পরিচর্যা করতে থাকে তবে সে অদূর ভবিষ্যতে নিশ্চিতভাবে সাহিত্যের একজন সুদক্ষ পন্ডিত হয়ে উঠবে। কিন্তু সেই পন্ডিত মানুষটি নিজের জীবনের প্রত্যেকটা অংক পরীক্ষায় ফেল করবে। পুরোটাই তার উপর যে সে নিজের সাফল্য নিয়ে সন্তুষ্ট থাকবে নাকি নিজের অনুত্তীর্ণ হওয়া নিয়ে সচেতন।
একটা কথা মাথায় রাখতে হবে, কোনো মানুষের শিক্ষা কখনো সম্পূর্ণ হতে পারে না। আপনি নিজের আয়ুকালে আজীবন'ই একজন ছাত্র।

৭.)
ফেসবুক কবিরা সমসাময়িক কথা লিখে থাকেন, যাতে করে খুব তাড়াতাড়ি মানুষের চোখে পড়া যায় তাই 'ফেসবুক কবিরা প্রত্যেক জন মিমার'। এই ট্যাগ লাইনটা তোমরা স্বীকার করো?


সূর্যঃ- এক্ষেত্রে এই জেনারাইলজড  "ফেসবুক কবি" টার্মটা থেকে বেরিয়ে এসে বলি যে কবিরা প্রায়শই সমসাময়িক বিষয়ে কবিতা লিখে থাকেন। শুধু কবি কেন, যে কোনো শিল্পীর ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য। ঠিক যেমনটা একজন মিমারের ক্ষেত্রে'ও। তিনিও সমসাময়িক বিষয়েই মিম বানান। তবে প্রথম ক্ষেত্রে প্রয়োজন কাব্যগুণ আর দ্বিতীয় ক্ষেত্রে হিউমর।

মিম বানানোটাও একটা আর্ট। তাই কোনো মানুষের কাব্যগুণ এবং কাব্যরস ব্যতীত কয়েকটা পরিচিত বাংলা শব্দ পরপর বসিয়ে একটা উদ্ভট একটা কোনো লেখাকে কবিতা তো দূর কোনোভাবেই সেটাকে মিম'ও বলা যায় না। দুটো ক্ষেত্রেই দু'প্রকার প্রকৃত শিল্পীর অপমান হয়।


অর্জুনঃ- ব্যক্তিগত জায়গা থেকে বলি, এই কথাটার মধ্যে একচুলও মিথ্যে নেই, অন্তত আমার ক্ষেত্রে অবশ্যই সত্যি। তাই আবারও এটাকে আমি কোনও নিন্দে বা সমালোচনা হিসেবে না নিয়ে সত্যি হিসেবেই নিলাম। 
স্রেফ একটা কথায় আপত্তি আছে, ফেসবুক কবিরাই শুধু সমসাময়িক কথা লিখে বা মিম শেয়ার ক'রে, বানিয়ে মানুষের চোখে পড়ার ধান্দা করে না, ফেসবুকে থাকা বেশিরভাগ মানুষই তাই করে। সবাই নিজের নিজের মতো ক'রে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সরব হয়। কেউ মিম শেয়ার করে, কেউ কবিতা লেখে, কেউ প্রতিবাদী পলিটিক্যাল পোস্ট শেয়ার করে, কেউ আবার তেড়ে খিস্তায়। । It is a great platform of expressing yourself..


৮.)
কোনো প্রতিষ্ঠিত কবির লেখায় অনুপ্রাণীত হয়ে
বহু ছেলে/মেয়ে একই ভাবধারায় কবিতা লেখেন এবং শুধলে বলে ইন্সপায়ার হয়ে লিখেছেন এমনকি অন্তঃমিল করার সময় সেই প্রতিষ্ঠিত কবির শব্দই ব্যবহার করছেন শুধু বাক্যের অর্থ পরিবর্তন করে। সূর্য দা তোমার কাছে জানতে চাই তাহলে এটা ইন্সপায়ার নাকি কপি? এবং তুমি এটাকে কতটা সাপোর্ট করো?

সূর্যঃ- 'অনুসরণ' আর 'অনুকরণ' এই শব্দদুটোর মধ্যে ঠিক ততটাই ফারাক যতখানি ফারাক অনুপ্রাণিত হওয়া এবং চুরি করার মধ্যে। ভাবধারার অনুকরণ সম্ভব নয় তাই একজন কবির মতো করে তার অনুজ কবি লেখার চেষ্টা করলে সেটা চিরকালই অনুপ্রেরণা। 
তবে সেই অনুপ্রেরণা যখন অনুকরণ হয়ে দাঁড়ায় তখন সেই ফারাকটাও ততখানিই সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। 
আর হ্যাঁ, অন্ত্যমিল সৃষ্টি এবং অন্ত্যমিল গঠন একজন কবির ক্ষেত্রে সাধনার চেয়ে কম কিছু না তাই সেগুলিকে অতি সহজলভ্য কিছু লাইনের শেষে অর্থহীনভাবে ব্যবহৃত হতে দেখাটা কখনোই সুখকর নয়।

৯.)
আচ্ছা অর্জুন দা তোমার কখনও ইচ্ছে করে না 'দেশে' লিখি বা 'কৃত্তিবাসে' লিখি নাকি ফেসবুকেই ভালো আছো?

অর্জুনঃ- না ভাই, আসলে বছর চারেক আগেও নিয়মিত ম্যাগাজিনে লেখা পাঠাতাম। কোনওটা মনোনীত হত, কোনওটা হত না। এখন কেউ চাইলে অবশ্যই দিই, কিন্তু নিজে থেকে দিতে আগ্রহবোধ করি না। কিন্তু ফেবুতে নিয়মিত লেখার পর ভাবলাম মানুষ লেখা পড়বে, এর চেয়ে বেশি কিছু আমি চাই না। অতএব এই প্ল্যাটফর্মেই লিখি। আর কোনওদিকে সেভাবে যাবো না। তবে আমি নিজেও একটা ম্যাগাজিন উদ্যোগের সাথে যুক্ত ছিলাম, 'Mag-মা' নামে

আমি শুরু থেকেই লাইমলাইট খুব বেশি পছন্দ করি না। কেউ আমায় 'ফেবুসেলেব' ব'লে ট্যাগিয়ে দিয়ে মিশতে এলে অস্বস্তি হয়।

১০.)
কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায় "লেখার জন্য পড়ার অভ্যেস দরকার"।  এই বিষয়ে তোমার বক্তব্য?

সূর্যঃ- যথার্থ পড়ার অভ্যেস না থাকলে নিজস্ব লেখার ক্ষেত্রে উন্নতিসাধন অসম্ভব। যে মানুষ পড়তে শেখেনি সে কখনো লিখতেও শিখবে না।

১১.)
কাপলেট লেখার জন্য কিছু মানুষ বললো আহা, দারুণ ইত্যাদি আর কিছু নিন্দুকেরা বললো 'হ্যাঁ অজুন তো কেবল দুই লাইন লেখে। এই নিন্দুকদের কী বলতে চাও?

অর্জুনঃ- আমি নিয়মিত দু'লাইন লিখতাম, এটা তো সত্যি কথা। কিন্তু সমালোচনা করার হলে শুধু এটুকু কথা দিয়ে করা যাবে না, কারণ দু'লাইন লেখায় লেখকের কোনও লজ্জা থাকা উচিৎ না। দু'লাইন খারাপ না ভাল, সেটা নিয়ে বললেও ঠিক আছে।
আর প্রশংসা পেতে কার না ভাল লাগে! আমারও খুব ভাল লাগে। তবে আমি চাই প্রতিদিন আমার মন রাখার জন্য খাঁজা লেখার নীচে 'উফ', 'আহা' না করাই ভাল। তারা যদি আমায় স্নেহ করে, তাহলে তাদের সমস্ত রকম মতামত আমার লেখার নীচেই প্রকাশ করুক, বা ব্যক্তিগত ভাবে প্রকাশ করুক। এতে আমি ভুলত্রুটি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করতে পারবো।

১২.)
'তাসলিমা নাসরিন' একজন বড়ো মাপের কবি অথচ তার ঘরে ফেরার পথ বন্ধ। সূর্য দা তোমার ব্যক্তিগত মতামত থেকে বলো 'তাসলিমা নাসরিনকে' বাড়ি ফিরতে দেওয়া উচিত?

সূর্যঃ- একজন মানুষ দিনের শেষে নিজের ঘরে ফিরতে চাইলে তুমি আমি সেই বিষয়ে মতামত প্রকাশ করার কে'ই বা হই বলো!

১৩.) 
শ্রীজাত বন্দোপাধ্যায়ের বির্তকিত কবিতার অতি বিতর্কিত শব্দ 'কন্ডোম'। এরপর থেকে তাঁকে বহু প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে বিরাজ করতে হচ্ছে। তাহলে বাক্ স্বাধীনতা কোথায় অর্জুন দা?

অর্জুনঃ- বাক্ স্বাধীনতা শব্দটা কেমন মিথের মতো শোনায়। ওসব নেই এখন আর। অফিসের বসের সামনে, স্টুডেন্টের গার্জিয়ানের সামনে, ক্ষমতাশালী রাজনৈতিক নেতার সামনে আমাদের নিজেদের আদর্শের সাথে করা বেইমানিগুলো আমাদের বাক্ স্বাধীনতার গলা টিপে ধরে, আরও ধরবে। 
আর হ্যাঁ, কন্ডোম প্রসঙ্গে বলি। যে দেশে কন্ডোম একটি বিতর্কিত শব্দ, সেখানে গত বারো বছরে শুধুমাত্র নথিভুক্ত সাড়ে তিনলক্ষ ধর্ষণের সংখ্যাটা স্বাভাবিক।

১৪.) 
অনেক প্রশ্ন হলো এবার এই রাউন্ডের নাম
[ কবিরা কেমন পাঠক দেখি]

ক.) 
"পুড়ে গিয়ে অ্যাসিডেও, চিৎকার করে গেলো পাখি"--- লাইনটি কার লেখা?
অর্জুনঃ- পড়িনি বোধ হয় ভাই, বা পড়লেও মনে পড়ছে না।

খ.) 
"তাইরে নাইরে নাইরে। আমি শরীর বেচে খাই রে"---- লাইনটি কার লেখা ?
সূর্যঃ- শিলাজিৎ সম্ভবত...

গ.) 
"সারাটা দিন জুড়ে তুমি আনাগোনা করেছ সেই সুরে তার রঙ লেগে আছে"....লাইনটি কার লেখা?
অর্জুনঃ- অনুপম রায়, বোবা টানেল, চতুষ্কোন।

ঘ.)
 "ভাসবে নাকি ঝরবে হঠাৎ? সম্মতি নেয় চাঁদও" --- লাইনটি কার লেখা?
সূর্যঃ- এটা জানা নেই আমার...😁। কার লেখা। 

১৫.) 
অনেকে আছেন যাঁরা রাতে কবিতা লিখতে পছন্দ করেন। কবিতা লেখার জন্য তোমাদের এমন কোনো specific সময় আছে?

অর্জুনঃ- আমার নেই। তবে পড়ানো থাকে সারাদিন, রাতেই স্থির হয়ে ভাবতে পারি। কখনও দিনে সময় পেলেও লিখি। সেরকম OCD নেই।

সূর্যঃ- সেরকম করে কখনো ভেবে দেখিনি। যখন সময় থাকে হাতে, লিখতে ইচ্ছে করে তখনই লিখি।
নিয়ম এবং সময় বেঁধে আর যাই হোক কবিতা লেখা সম্ভব বলে তো আমার মনে হয় না।


১৬.)  
যারা স্টুডেন্ট এবং ফেসবুকে লিখছে আর তাতে করে তারা ভালোই নাম করেছে। এখন তাদের addiction তৈরী হচ্ছে এই মনে করে যে আজ একটা লেখা লিখতে হবে, কমেন্ট কুড়োতে হবে। এটা করতে গিয়ে তারা তাদের পড়াশোনার ক্ষতি করছে। তাদের জন্য কি পরামর্শ দিতে চাও অর্জুন দা?

অর্জুনঃ- যেটা বলছি, সম্পূর্ণটাই আমার ব্যক্তিগত মতামত। 
পড়াশুনো বা কেরিয়ার নিয়ে চিন্তা এবং একাগ্রতাটা সবার আগে। আমি নিজে মনে করি, কবিতা আমার ভাত জোটাবে না৷ আর জোটালেও বিভিন্ন মহলে আমায় যে চাটুকারিতা করতে হবে, সেটা আমি পারবো না। তাই আমি প্রেফার করি, আর বাকিদেরও বলি, পারলে অন্য প্রফেশনে নিজেকে স্টেবল ক'রে ফাঁকা সময়ে কবিতা লেখো। লেখালেখি সব বয়সেই করা যায়।

১৭.) 
ফেসবুকে লিখতে এসে একটা দারুণ সমস্যা হয় প্রায় সবার, সেটা হলো লেখা চুরি হওয়া।
এই সমস্ত চোরদের কি বলতে চাও সূর্য দা?

সূর্যঃ- কিচ্ছু না। যে মানুষ শিল্পের কদর বোঝে না সে এখন তোমার আমার এই কথোপকথন পড়ার জন্যেও বসে নেই। সে এতক্ষণেও নিশ্চয় অন্যকারোর কোনো লেখা কপি করে সেটাকে এডিটিং অ্যাপে ফেলে পেস্ট করে তার তলায় বাঁকা হরফে নিজের নাম বসাতে ব্যস্ত।

১৮.) লাস্ট রাউন্ড 

[ না বললে চলবে না ]

ক.) 
কে প্রিয় 'অভিক রায়' নাকি 'শ্রীজাত বন্দোপাধ্যায়'?
সূর্যঃ- ওনাদের জীবনবোধ...

খ.) 
'রেজমান' নাকি 'কৃপা বসু'?
সূর্যঃ- স্পষ্টবাদী রেজমান...

গ.) 
'সুজয়নীল দা' নাকি 'সত্যজিৎ রায়'?
অর্জুনঃ- এক্ষেত্রে দু'ভাবে দু'জন। পরিচালক হিসেবে সত্যজিৎ রায়, আর দাদা হিসেবে সুজয় দা। কারণ সত্যজিৎ রায়ের সাথে আমার ব্যক্তিগত পরিচয় ছিল না।

ঘ.) 
'আজাহারুল ইসলাম' নাকি 'অনুব্রতা গুপ্ত'?
অর্জুনঃ- অনুব্রতা গুপ্ত



শেষে জানতে চাই তোমাদের কেমন লাগলো আজকের এই "এক নয় এক জোড়া বৈঠক"

সূর্যঃ- ভীষণ ভালো লাগলো রে। 
তোর এই বৈঠক চলতে থাকুক। আমাদের মতোই আরও অনেক মানুষের সাথে কথা হোক তোর, যাদেরও স্বপ্ন দেখার শুরু হয়েছে সবেমাত্র। পরিচিত হ তাদেরও মতামতের সঙ্গে। লিখতে থাক তাদের কথাও।
খুব ভালো থাক তুইও... 
অনেক ভালোবাসা রইলো আমার আর তোর কাজের প্রতি আরও অনেক শুভেচ্ছা। ❤


অর্জুনঃ- দারুণ লাগলো ভাই, আমি আসলে এটা ইন্টারভিউ বা ওরকম হিসেবে বলিইনি৷ তুই আমার ভাইয়ের মতো, তুই জানতে চেয়েছিস, ব'লে গেছি যা যা মনে হয়েছে। ❤
ধন্যবাদ ভাই। অনেক শুভেচ্ছা জলফড়িংয়ের জন্য। ভাল থাকিস। শুভরাত্রি।

শনিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২০

ভুতের রাজা বলছে করোনা কেটে যাবেই

মাস্ক ওয়লা ও ভুতের রাজা




ভুতের রাজাকে সবার মনে থাকে। তাই এবার লোকডাউনের সময় এক চরম নস্টালজিয়ায় নিয়ে যেতে জলফড়িং-র  আয়োজন

#মাস্কওয়ালা_ও_ভুতেররাজা


#কলমেঃ- সুদীপ্ত সেন ( founder of jolfhoring) 

#বিশেষ ধন্যবাদঃ- আনন্দবাজার পত্রিকা

★media partner:- the classmate entertainment 

voice:- SOURYADIP, BEDANTA, DEBANJAN, PAPIYA 

★And Many many thanks to Sudipta Debnath for helping us edit.

ভিডিও দেখুন আর কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না 












বুধবার, ২২ এপ্রিল, ২০২০



নমস্কার অনেক ধন্যবাদ জলফড়িং কে সময় দেবার জন্য ।

                    নমস্কার এবং অনেক ভালবাসা                                রইল জলফড়িং এর জন্য।

আপনার সাহিত্য জীবনের শুরু সম্পর্কে একটু বলুন?

 প্রথাগত ভাবে আমি সাহিত্যের ছাত্রী নই এবং কোনরকম পরিকল্পনা ছাড়াই এই জগতে প্রবেশ। আমি ক্লাস ৬ এ স্কুল এর পত্রিকায় একবার একটি ছড়া লিখেছিলাম। নামটাও মনে আছে 'দুর্গাপূজা', তারপর আর লেখার সাথে সম্পর্ক ছিল না, আবার ২০১৬ সালে হঠাৎ করেই লিখতে শুরু করি, আশ্রম এর পত্রিকায় দেওয়ার জন্য। তারপর ফেসবুকে নিজের মতো করে লিখতাম। এরপর আমি কবি সুজিত মুখার্জির সংস্পর্শে আসি, ওনার অনুপ্রেরণাতেই ওয়েব ম্যাগাজিনে লিখতে শুরু করি। তারপর আমার প্রথম বই প্রকাশ ও ওনার অনুপ্রেরণাতেই। সত্যি বলতে আমি serious ভাবে লিখব এটা ভাবিনি, কিন্তু ধীরে ধীরে বেশ কিছু মানুষের সঙ্গ ও আশ্বাস আমাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। এখনও ওই মনের তাগিদে ভালবেসে সাহিত্য জগতের সাথে একটা সম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করছি। কবিতা খুব সুক্ষ জিনিস, মানে সুক্ষ অনুভূতি, ক্রমাগত শিখে ও লিখে যেতে হয়, এখন সেই চেষ্টাই চলছে। আর তোমাদের মতো কিছু মানুষের ভালবাসা সাহস জুগিয়ে চলেছে। 



উদ্ভিদ বিজ্ঞান এর ছাত্র তারপর সাহিত্য এই বদল টা কি করে সামলান?


 হম আমি Botany'র ছাত্রী। এম এস সি করার সময় ইচ্ছে  ছিল Botanical Survey of India তে কাজ করবো, যদিও বাবা তখন চেয়েছিলেন আমি এম বি এ তা করি, বাবার ব্যবসাতে যুক্ত হই। কিন্তু আমি তখন NET দিয়ে লেকচারশিপ কোয়ালিফাই করলাম। কিন্তু এই সময় একটা মজার ব্যপার হল, আমি NET এর রেসাল্ট বেরনোর আগে ছয় মাস বাবার ব্যাবসাতে যুক্ত হয়ে গেলাম সময় কাটাবার  জন্য, আর এই সময় ব্যবসার প্রতি একটা আলাদা টান অনুভব করলাম, সেটা হয়তো জেনেটিক কারণ হবে। তাই ব্যবসাকেই পেশা করবো ঠিক করলাম, যদিও লেখার মতো ওটাও এখনও শিখছি। আবার মা এর আপত্তি ছিল, মা চাইতেন আমি প্রফেসার হই, কিন্তু আমি কোনদিনই চাইতাম না। মানে এটাই বলতে চাইছি যে আমার নেচারটা বড় অদ্ভুত আর আমি খুব মুডি, তাই বাবা যখন চাইলেন ব্যাবসা করি, তখন আমি বটানিস্ট হতে চাইলাম আবার যখন সেরম সুযোগ পেলাম তখন আমার মন থেকে একটা সাড়া এল যে আমি Entrepreneur হব। I have lots of different kinds of dreams, তাই লেখাটাও ওভাবে সামলে নিই, mixed types of characters নিয়ে।

বই করবেন এই ভাবনা টা কবে এলো ?


দেখো সব সাধারন মানুষ তো নিজেদের জীবনের ঘটনা গুলকে সাজিয়ে তুলে ধরতে পারে না, অথচ আমি বিশ্বাস করি  প্রতিটা মানুষ তার জীবনের হিরো, তাই প্রতিটা মানুষের একটা গল্প থাকে এবং সমাজে ঘটে চলা প্রতিটা ঘটনা একটা নিখাদ সত্যি কাহিনীর জন্ম দেয়, তাই একজন সাহিত্যিক পারেন সাধারনের হয়ে কলম ধরতে। আর আমি চাই যেকোন সৃষ্টি সমাজকে একটা পজিটিভ মেসেজ দেবে। সাহিত্য এক অমূল্য সৃষ্টি, তাই আমার কাছে সাহিত্যের গুরুত্ব হল, সাহিত্য সমাজকে সব সময় একটা নতুন পথ দেখাবে, প্রেরণা দেবে। আর ঋনাত্মক কোন সৃষ্টি আমার কাছে শিল্প নয়। 


বর্তমানে বই পড়ার ঝোঁক কমে যাচ্ছে এ নিয়ে আপনার কী মত?


আমার পরিচিত সব বন্ধু বা জুনিয়ররা কিন্তু ভীষণ ভাবে বই প্রেমী, এবং রীতিমত বই পড়ে, তবে হ্যাঁ এখনকার ছোট ছোট বাচ্চারা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এ ব্যস্ত থাকে, বিভিন্ন মোবাইল গেম আরও নানা জিনিস। তবে মা বাবা রা যদি বই পড়ার হেলদি হ্যাবিট তৈরি করতে পারেন তবে তারাও বই ভালবাসতে শিখবে।

বর্তমানে ব্লগে র প্রয়োজনীয়তা কতটা?


এই প্রশ্নটার আমি কতটা সদুত্তর দিতে পারবো জানিনা
, কারণ আমি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে লেখার ব্যাপারে অনেকটাই উদাসীন, ফেসবুকে লেখা দিই তাও খুব কম, কিন্তু আমাদের জেনেরেশনের ডিজিট্যাল প্ল্যাটফর্মে লেখার প্রবণতা অনেক বেশী। সেটার ভালো খারাপ দিকে যাচ্ছি না তবে আমার মনে হয় সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতেই হয় আমাদের, তাই ব্লগ এর মাধ্যমে যদি বেশী সংখ্যক মানুষের মধ্যে সাহিত্য ছড়িয়ে পড়ে তবে ক্ষতি কি! ভালোই তো।

অনেকেই বলেন জনপ্রিয়তা র জন্য Facebook এ লেখা টা জরুরি এই ব্যাপারে আপনার কি মত ?

জনপ্রিয়তা একটা আলাদা পার্ট, সাহিত্য একটা আলাদা ব্যাপার। সাহিত্যিক হতে গেলে প্রথমে লেখার কোয়ালিটির উপর মেন ফোকাস রাখার দরকার, তারপর যদি কেউ ফেসবুককে প্রোমোটিং মিডিয়াম হিসেবে বেছে নেয় সেটা ভালো জিনিস, কারণ সত্যিই সোশ্যাল সাইট এর মাধ্যমে অনেক মানুষের কাছে পৌঁছানো যায়। কিন্তু যে কোন সৃষ্টির মেন ফোকাস হবে তার কোয়ালিটি তারপর সে যেই প্ল্যাটফর্ম ব্যাবহার করে মানুষের মাঝে পৌঁছাতে চাইবে সেটা তার ব্যাপার।

প্রথম বার ক্যমেরার সামনে কেমন লাগল?



খুবই ভালো লাগল, আমি এমনিতেই মানুষের সঙ্গে খুব সহজে বন্ধুত্ব করতে পারি, তাই প্রথমেই সবার সঙ্গে হাসি খুশী সম্পর্ক হয়ে গেছিলো। ক্যামেরার সামনে তাই unfamiliar বা nervous লাগেনি খুব একটা।



আপনার এটা দ্বিতীয় বই  লোকেদের খুব ভালো সাড়া এটা কেমন লাগল?

 এটা আমার কাছে এগিয়ে যাওয়ার জন্য একটা স্টেপ বলতে পারো। আমরা জানি কেউ appreciate করলে আমাদের কিছু করবার ইচ্ছে আরও বেড়ে যায়। এই ব্যাপারটাও সেভাবেই নিচ্ছি। আরও ভালো লেখার জন্য নিজেকে তৈরি করছি।



চারিদিকে এত নেগেটিভ কথাবার্তা কি করে সামলান?


আমি না সত্যি বলতে সব কিছু থেকে একটু দূরে থাকি, আমার তাই বন্ধুই কম। আর শত্রু কেউ আছে নাকি জানি না, আসলে মানুষ কে শত্রু ভাবতেই কেমন লাগে মত কথা শত্রু কনসেপ্টটাই মনে নিয়ে আসি না। নেগেটিভ কিছু আমার ব্যপারে শুনিনি এখনো, যদি কেউ বলেও থাকে কখনও আমি চাইবো সেগুলো যেন না শোনার মতো করে ঝেড়ে ফেলতে পারি। যদি কেউ গঠনমূলক সমালোচনা করে তবে অবশ্যই নেবো, বাকীটুকু নেবো না।



পরিযায়ী পাখি দের লিরিক্স এর ধারনা কোথা থেকে এলো?

 আমি দার্শনিক ভাবে চিন্তা করতে ভালবাসি, আর সেখান থেকেই আমার মনে হয় মানুষ আসলে পরিযায়ী পাখিই কারণ, জীবনে নানান কারনে, নানান দিকে আমরা ছুটে বেড়াই আর সব শেষে ফিরতে হয় নিজের কাছে। একটা স্বচ্ছ আয়নার সামনে দাঁড়াতে হয়, সেটা থেকেই এই নাম।

অবসর যাপন কিভাবে?



 অবসর বই পড়া, লেখা, তারপর বাড়িতে ৩ তে বোন আছে ওদের সাথে সময় কাটে। আমি একদম family-type এর একজন মানুষ, মানে আমার জীবনের পুরো সময়টাই পরিবারের সাথে কাটে। আর তা ছাড়া আমার আরও কিছু ভালোলাগার দিক আছে, সেইসব নিয়ে থাকি। আমি motivational speaker দের শুনি খুব। ওখানে সময় দিই।

 বর্তমানে কার কার লেখা ভালো লাগে ?



আংশুমান করের লেখা আমার খুব ভাল লাগে আর সুজিত সরকারের লেখাও ভাল লাগে। সহজ অথচ গভীর জীবন বোধ।

শেষ প্রশ্ন 
আগামী বছর কী বই আসছে আপনার ?


 প্রতি বছর বই করবো এমন ইচ্ছে নেই, তবে নিজের কন্টেন্ট দেখে যেদিন মনে হবে আবার বই করা যায় সেদিন আবার করবো। ধন্যবাদ, তোমরাও ভালো থেকো, সাহিত্যে থেকো।

শুভেচ্ছা আপনাকে।



মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল, ২০২০

ভ্রুন হত্যা

         জয়দেব বেরা (পূর্ব মেদিনীপুর)


মা গো ,কতো স্বপ্ন দেখেছিলাম
তোমার গর্ভে গিয়ে দশ মাস-দশ দিন
কতই না খেলা করবো,
তারপর এই সুন্দর পৃথিবীর
আলো দেখবো,আর
তোমায় মা,মা বলে ডেকে বেড়াব,
তোমার কোলে থেকে নিস্তব্ধে
ঘুমের দেশে পাড়ি দেবো।
আর বাবার কাঁধে চেপে
সারা দুনিয়ায় ঘুরে বেড়াবো
কিন্তু হঠাৎ এক ধারালো জিনিসে
আমার স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হতে লাগলো।
কে যেন আমার সব অঙ্গখানি খণ্ড খণ্ড করে
আমাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিলো।
অবশেষে আমি টুকরো টুকরো হয়ে
পড়ে থাকলাম এক আস্তাকুঁড়েতে।
কুকুরে শেয়ালে,ছিঁড়ে ছিঁড়ে আমায় খাচ্ছে।
উঃ কি কষ্ট,সে কি যন্ত্রণা।
তাইতো,বাবা-মা কে আমি প্রশ্ন করি?
কেন করেছিলে এমন আনন্দ?এমন ফুর্তি?
যে ফুর্তি করলো আমায় ধ্বংস।
যে আনন্দ ধ্বংস করলো আমার স্বপ্ন।
জবাব দাও?উত্তর দাও?

সোমবার, ২০ এপ্রিল, ২০২০

ডিভোর্স হওয়া বাবা....ছবিটি সুদীপ্তা ঘোষের আঁকা, কলমেঃ- সুদীপ্ত সেন



ডিভোর্স হওয়া বাবা
🖋সুদীপ্ত সেন ( ডট.পেন)

সময় ফুরিয়ে গেছে কাজে। আজ একটুখানি ছুটি তাই নিছক ছাদে বসি
তুমি চলেই গেছ কবে, তাই শূন্যতাকে মুছব বলেই পাশে বোতলখানা পুষি।

তোমার যাওয়ার কয়েকখানা মাসেই আমার অবস্থাটা ম্রিয়
সেসব কথা জানে পাড়ার লোকে। পারলে একটু খবর-টবর নিও....।

আমারই ভুল। এসব এখন অতীত জেনেও বলতে এলাম ছাদে৷
আসলে হয় না ওই মনখারাপে পুরুষমানুষ একলা দেখে কাঁদে।

sorry, একটু খানি দাঁড়াও আগে আগুনটাকে ধরাই
ধরলে আগুন বুঝতে পারি।  পোড়ার গন্ধ কেমন ছড়ায়।

এবার বলো কেমন আছো লোকডাউনে, আন্টি কেমন আছেন?
তাঁকে দেখেই বুঝতে পারি। আগাছারা কেমন করে ভরসা নিয়ে বাঁচে।

ভুলেই গেছি লকডাউনে কি যায় আসে তোমার? তুমি তো সেই কবে থেকেই ভাঙা
Pls don't mind, আসলে একটু সময় পেলেই আমি সাজতে থাকি কাঙাল।

তাই ওভার টাইম করি৷ তবু নিয়তির এই খেলায় আমায় কে আর জেতায় বলো?
ভাগ্যিস সেই খেলাটা জিতেই ছিলাম। জানো, তুলি তোমার মতোই ভালো।

তোমার মতো টিপ পরে সে, রঙ একটু কালোই
নাম রেখেছি তুলি। সে তোমার মতোই ভালো!

ছবিঃ- সুদীপ্তা ঘোষ

শুক্রবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২০

ওয়াকিটকি নিয়ে কলমে রথীকান্ত সামন্ত


কথাচ্ছলের কথা

আজও ছাদগুলো আছে কাছাকাছি শুধু গিয়ে বসবার চল নেই
আর ভাবগুলো বড়ো অক্ষরময়, কথা বলবার ছল নেই।

ক্ষীণ সুতোগুলো কিছু খেয়েছে সময়, কিছু উড়ে গেছে হাওয়াতে
কত মুঠো মুঠো কথা ভনিতাবিহীন অবিরাম চাওয়া পাওয়াতে

খুব কম চোখ যায় জানালায়, হাতে খেলা ফোন নয়, সত্যি।
আর মনে পড়ে মৃদু শব্দেই তুই সুতোবাঁধা ফোন ধরতিস।

গেছে অ্যান্টেনা, সেথা নিভু বৈকালে সান্ধ্যপাখির দল নেই
আজ অভিসার বড়ো মৌখিক, তাই ছাদে আসবার চল নেই।
           _____________
   
🖋 রথীকান্ত সামন্ত

প্রচ্ছদঃ- অনুরূপা মাইতি

ওয়াকিটকি নিয়ে কলমে প্রেমা নাহা বসাক



ওয়াকি-টকি
🖋 প্রেমা নাহা বসাক

ফোনটা আজও রিং বেজে বেজে কেটে গেল।
একটা চেনা গলার প্রতীক্ষা করি রোজ
জানি নেই তুই ওপারে, অনেক দূরে হারিয়ে গেছিস অজানায়,
সেখানে এই ফোনের তার যায় না।
তাই ইচ্ছে করে ফিরে গিয়ে আমাদের সেই ছেলেবেলার
নারকেল মালার ওয়াকি-টকিতে চিৎকার করে বলি
"ফিরে আয় একটিবার বিনিই........"
ওপাশ থেকে বলবি কি তুই, "আমি আসছি"?


প্রচ্ছদঃ- অনুরূপা মাইতি


ওয়াকিটকি নিয়ে কলমে নীতা কবি


ছোটবেলার ফোন
🖋নীতা কবি


ছোট্ট-বেলার ছোট ছোট খেলা মনে পড়ে আজ বড়ো
ছোট্ট হাতে বানাতাম ফোন, হতাম সকলে জড়ো
নারকেলের দুটো খোলা দিয়ে আর লম্বা সুতোর টানে
বলতাম কথা, চুপিচুপি যেন কেউ শুনবে না কানে
এক ছাদ থেকে আর এক ছাদের দূরত্ব গড়ে নিয়ে
ফোন -ফোন খেলায় মেতে উঠতাম ,সবার আড়ালে গিয়ে
সংসার চাপে ছিন্ন হয়েছি ,হারিয়েছে ছোটবেলা
বার বার মনে ঘুরপাক খায় ছোট ছোট  সেই খেলা।


প্রচ্ছদঃ- অনুরূপা মাইতি

ওয়াকিটকি নিয়ে সাগর হালদারের লেখা



খেলার ছলে বিজ্ঞান
     🖋 সাগর হালদার

দুটো নারকেল মালায়
তোমার-আমার ছোট্ট তফাতে
অনুরণন জাগাতাম কর্ণকুহরে।

তুমি দাঁড়িয়ে থাকতে কথার ওপারে
ছেলেবেলায় বিজ্ঞান সৃষ্টি করেছি বটে!
কবিতা ও গানে একে ওপরের শিহরণ জাগাতাম।

এই লকডাউনে পুরোনো ওয়াকি-টয়াকি থাকলে...
তোমার সাথে কথা বলার ক্ষোভটা উপড়ে দিতাম।

প্রচ্ছদঃ- অনুরূপা মাইতি

ওয়াকিটকি নিয়ে ব্রতীন বসুর কলম


কি ছিল জানি না
🖋 ব্রতীন বসু

আমার বোন।নিজের না পাড়াতুতো। দুবছরের ছোট।
এক দেওয়ালে দুটো বাড়ি। বাড়িগুলো জমজ। একটা অর্ধশতাব্দীর সম্পর্ক।
আমি বাবা মার একমাত্র ছেলে।মেয়ে বলতে ওই প্রথম চেনা।জন্ম থেকে একসাথে।
প্রেম নয়।অত ছোটবেলায় প্রেম হয় না।আমরা ভাইবোন ছিলাম।ভাল লাগতো ভাইফোঁটা পেতে।
ভাল লাগতো চুপি চুপি একসাথে বড়দের গল্পের বই পড়তে।ভাল লাগতো বিকেলে ছাদ থেকে ছাদে নারকেল মালা দিয়ে বানানো ফোনে কথা বলতে।
ভাল লাগতো ওকে শাষণ করতে।কাদাতে হাসাতে।
একদিন দুই বাড়ির গিন্নির মধ্যে কি নিয়ে যেন বাদানুবাদ লাগল। আসাযাওয়া বন্ধ হল।
বড়রা একেওকে দেখলে মুখ ঘুরিয়ে নিত।
আমাদের দেখা বলতে বিকেলের ছাদ।কত কথা।
ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যু সারা দেশ পুড়ছে,
ভারত শারজায় জিতেছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে,সবাই হাসছে,এই সব কিছু যেন অন্য জগৎ।ক্ষুদ্র।
আমরা বিকেলটুকুতে মত্ত থাকতাম।
ছাদ থেকে ছাদ যেন সৌরজগতের ভাগাভাগি খেলা।
প্রেম নয়,পরে বুঝেছি ভাই বোন ও নয়।
একটা 'তুই আমার' নামের খেলা।
একটা 'তুই আগে আমার' খেলা।
তারপর আমাদের ছাদ ছাদ খেলা শেষ হল একদিন।অনেক কিছুই আর বলা হত না।
প্রথম কিসের পর ওকে বলতে ইচ্ছে হয়েছিল।
কিন্তু বলিনি।কেন জানিনা মনে হয়েছিল
ওর ভাল নাও লাগতে পারে।ওর ও হয়ত তাই মনে হয়েছিল।
কেমন আছিস? একদিন  দেখা। এফ বি তে।
খানিকবাদে টিং করে বলল,ভাল।তুই?
ভাল।
আর কথা এগোলো না।ছাদ নেই নারকেল মালার ওয়াকিটকি নেই।দুজনে দু মিনিট বাদে এওয়ে হয়ে গেলাম।
কি ছিল জানি না ওই দিনগুলোতে।
তাই,কি হারিয়ে গেছে তাও জানি না।

প্রচ্ছদঃ- অনুরূপা মাইতি

ওয়াকিটকি নিয়ে প্রীতম রায়ের কলম


নস্টালজিক ওয়াকি টকি

বাড়ি ফিরে সেদিন বইয়ের তাক টা গোছাতে গিয়ে
খুঁজে পেয়েছিলাম পুরোনো অ্যালবামটা।
বাবার তোলা জেনিথের ক্যামেরাটায়
জড়িয়ে আছে আমার আর রঞ্জুর ছোটবেলা
নারকেল মালায় সুতো ভরে দিতাম ছুড়ে ওদের ছাদে।
ক্যাচ রঞ্জু, হ্যালো বল, শুনতে পাচ্ছিস!
অনেক গোপন কথার সাক্ষী ছিল আমাদের এই ওয়াকি টকি।
ছবি টা হাতে হারিয়ে গেলাম আমি আর রঞ্জু ছোটবেলার নস্টালজিয়ায়।
                                             

🖋 প্রীতম রায়

প্রচ্ছদঃ- অনুরূপা মাইতি

বুধবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২০

না সেরকম কষ্ট হয়না, আসলে গল্পটা কষ্টের থেকেও রিভেঞ্জ নেওয়াটা মজা লেগে ছিলো


অনিমেষ:- নমস্কার দাদা। প্রথমেই জানাই
 জলফড়িং ও আমার তরফ থেকে একরাশ শুভেচ্ছা

অর্নব:- ধন্যবাদ

 অনিমেষ:- তোমার প্রথম প্রকাশিত লেখা কি ছিল, এবং  কোন পত্রিকায় বেরিয়েছিল ?

অর্ণব:- "ভালোবাসা তোকে দিলাম ছুটি!" কল্পবিতান পত্রিকা।

 অনিমেষ: আচ্ছা দাদা,তুমি কি মনে করো সোশ্যাল মিডিয়ার লেখক বা লেখিকা দের নিয়ে? আর সোশ্যাল মিডিয়া কি লেখক দের সব থেকে বড় প্রকাশ করার মঞ্চ?

অর্ণব: একদম, আমিই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সিনেমায় এসেছি, এখনও লেখালেখি করি সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং এখানে লিখবে কেন, তার একটা কারণ একটা প্রশ্নের মাধ্যমে বলি, তুমি দিনে কতক্ষন গল্পের বই পড়ো আর কতক্ষন ফেসবুকে থাকো?

অনিমেষ: বলতে গেলে গল্পের বই রাতে 2ঘন্টা আর বেশিরভাগ সময় ফেসবুক

অর্ণব: এটাই তো আমার ফেসবুকে লেখার কারণ। ম্যাক্সিমাম একজন মানুষ যেখানে থাকে আমার লেখা সেখানেই পাওয়া যাবে।

 অনিমেষ: বর্তমানে এমন পাঁচজন ফেসবুকের লেখক লেখিকার নাম বলো যারা তোমার পছন্দের।

অর্ণব: ১.) অনির্বাণ ঘোষ
২.) প্রতীক মুখার্জী
৩.) শ্রীতমা সেনগুপ্ত
৪.) অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায়
৫.) পৃথা সামন্ত

 অনিমেষঃ- আচ্ছা দাদা ,"পরিনীতা"র জার্নি টা কেমন ছিল পর্দা আগে যাওয়া পর্যন্ত যদি একটু শেয়ার করো আমাদের সাথে সঙ্গে এই আড্ডায় কফিতে চুমুক দিতে দিতে।

অর্ণব: সেরকম নয়, একটা ছোট্ট প্লট আমার ফ্রেন্ডলিস্টের একটি মেয়ে আমাকে শেয়ার করে, প্লটটা মফস্বলের, আমার ঠিক মফস্বল সম্পর্কে ধারণা কম, তাই সেই প্লট টিকে আমি উত্তর কলকাতায় নিয়ে এসে, একটা করপোরেট থ্রিলার বানিয়ে ফেলি, সেটাই আমার ফ্রেন্ডলিস্টে থাকা শুভশ্রী গাঙ্গুলির দিদি দেবশ্রী পড়ে, আমাকে সে ফোন করে জানায় শুভশ্রীর গল্পটা খুব পছন্দ হয়েছে, ব্যস সেটাই রাজ চক্রবর্তী শোনেন তারপর আমার সাথে কন্ট্যাক্ট করেন, প্লট যিনি লেখেন তারনাম আমি ওভার দ্য মেল তাঁকে জানাই, প্লট আর অথর হিসেবে প্রথমে একটা ড্রাফ্ট হয় তারপরে কিছু টেকনিক্যাল অসুবিধা থাকার জন্যে আমাদের দুজনের নাম গল্পের লেখক হিসেবে যায়, পদ্মনাভ দাশগুপ্ত চিত্রনাট্য লেখেন, এভাবেই এগিয়ে যায় "পরিনীতা"।

অনিমেষ: এই "পরিনীতা" নাম টা কি তোমারই দেওয়া?

অর্ণব: হ্যাঁ, আমারই দেওয়া, 'রাজ'দা প্রথমে কপিরাইট নিয়ে একটু অসুবিধে হবে ভেবেছিলেন, পরে দেখলেন না ১১ বছরের পুরনো হিন্দী "পরিনীতা"। যদিও প্রথমে নাম ছিলো "তেরে ইশক নে মুঝে লে ডুবা!" আমার সেটা একদম পছন্দ হয়নি বলে চেঞ্জ করি আর শেষের সিঁদুরের ডায়লগটা আমার আগের একটা লেখার সেটা এখানে ইউজ করি আর নামটা "পরিনীতা" রাখি।

অস্পৃশ্য: আচ্ছা: মানুষ অর্ণব ভৌমিক আর লেখক অর্ণব ভৌমিক পার্থক্য  কী লড়াই করার নিরিখে?

 অর্ণব: এটা আমি নিজে কী করে বলি? অল্প পার্থক্য তো আছেই, লড়াই করার ক্ষমতা মানুষ অর্ণবের কম তাই লেখায় চেষ্টা করি দুজনকে যাতে লড়তে শেখাতে পারি, জিততে সাহায্য করতে পারি, নিজেও নিজের লেখা থেকে শেখার চেষ্টা করি। কিন্তু এটাও সত্যিই পারিনা, খুব সাধারণ হয়ে পড়ি দিনের শেষে।

অনিমেষ: আচ্ছা দাদা "পরিনীতা"তে তুমি এতজনকে কাঁদালে।  তোমার কতখানি কষ্ট হয়েছিল?

অর্নব: শেষে একটা চিঠি ছিলো, যেটা বাবাই মেহুলকে লিখে যায়, সেই চিঠিটা পড়তে গেলে আজও কষ্ট পাই।

অনিমেষ: আরো অন্য কোন জায়গা তোমার দেখলে কষ্ট হয়?

অর্ণব: না সেরকম কষ্ট হয়না, আসলে গল্পটা কষ্টের থেকেও রিভেঞ্জ নেওয়াটা মজা লেগে ছিলো আমার কাছে, যেটা অনেকটাই বাঙালি দর্শককে মাথায় রেখে পরিচালক চেঞ্জ করেন।

অনিমেষ: তুমি কি চাও এরকম "পরিণীতা" আরও একটা হোক এবার বাস্তবে?

 অর্নব: বুঝলাম না প্রশ্নটা

  অনিমেষ : মানে পরিণত যদি বাস্তবে হয় কোনোদিন কখন, কাকতালীয় ভাবে।

অর্নব: আবারও বুঝলাম না, মানে এরকম ঘটনা যদি বাস্তবে ঘটে? তাহলে বলবো রোজ ঘটে, শুধু সেটা নিয়ে সিনেমা হয় না আবার এটাও ঠিক এই মেহুলের মতন "আগলে রাখবো" এটা সত্যিই খুব রেয়ার, কিন্তু হ্যাঁ আছে তো বটেই, আসলে সব গল্পই লখিন্দর আর বেহুলার।


জেতা অভ্যাস দোষ দেওয়াটাও, তাই লিখে যাও, সবাই একসাথে এগোবো। অল দ্য বেস্ট।|






অনিমেষ: উত্তরে আবেগঘন হলাম দাদা,এবার আমরা আড্ডার শেষ লগ্নে।

 অর্ণব: হু

 অনিমেষ: কার অভিনয় তোমার মন করেছে(একজন) ঋত্বিক দার না শুভশ্রী দির?

অর্ণব: শুধু এই সিনেমায় না, ২০১৯ সালে বাংলা সিনেমায় মন কেড়েছে শুভশ্রী গাঙ্গুলী, এটা নিঃসন্দেহে।

অস্পৃশ্য: দাদা, তুমি বর্তমান লেখক লেখিকাদের  কি বার্তা দেবে?

অর্নব:- প্রত্যেকের একটা সময় হয়, সবার সময় ঠিক আসবে, সৎ হলে তো আসবেই, আর তারপরেই টিকে থাকার লড়াই, যে ভালো সে থাকবে, যে একটু কম ভালো তাকে আবার নতুন করে লড়তে হবে, কিন্তু সময় তো আসবেই, তবে ঐ যে বললাম সৎ থাকতে হবে, নিজেকে প্রমাণ করতে অন্যকে ছোট না নিজেকে বড় প্রমান করতে হবে, জেতা অভ্যাস দোষ দেওয়াটাও, তাই লিখে যাও, সবাই একসাথে এগোবো। অল দ্য বেস্ট।

 অনিমেষ: প্রত্যেক কথার মতো এই কথারও প্রেমে পড়লাম তোমার।
অবশেষে জলফড়িং পরিবারের তরফ থেকে আগামী দিনের জন্য শুভেচ্ছা পৃথিবীর সুস্থ হোক ততদিন বাড়ি তে থেকো ভালো থেকো।

অর্ণব: ধন্যবাদ, তোমরাও সুস্থ থেকো। সব ঠিক হয়ে যাবে।



সঙ্গেঃ- অনিমেষ ভট্টাচার্য (অস্পৃশ্য)   



রবিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২০

লকডাউনে শ্রীজাত...


খুললে পাতা দেখতে পেলাম পত্রিকায়....
শ্রীজাত দা মেটাচ্ছে তাঁর ঘরের দায়
নিজের কফি নিজেই করে সকালে খায়
আর দুপুরে নাটক শুনে ঘুমোতে যায়।

রোদের ছাদে কাপড় ম্যালে দূর্বা দি
বলল দাদা, সাহায্যতে আমিও একটু হাতটা দিই
ভিটামিন রোজের সাথে, গ্রুপটা-সি(c)
পত্রিকাতেই জানতে পারি তথ্যটি।

কবিতা আর গল্প পড়ি তাঁর হাতের
উপন্যাসের খবর পেলাম আজকে কথায় বার্তাতে
তাঁর বিকেল প্রেমের সব লেখনীই রাত্রিতে
না লিখলে কি এমন খবর কেউ পেতেন?

দাদা যদি রুটিন করে কাজ করেন
এমন করে সামলে নেন এসব দিন
আমরা কেনো পারব না ঠিক এইভাবে?
মনকে বোঝান, বাড়িতে থেকেই জিততে হবে যুদ্ধটি।

আমিও নাহয় ভাগ করে নিই ঘরের কাজ
এমন অসুখ মিটবে সিওর কালকে ঠিক
মিটতে হবেই, আবার নতুন ফুটবে প্রাণ
মিটলে পরে শুনব দাদার নতুন গান
মিটবে ঠিকই..., শুনব দাদার নতুন গান।।


লেখা&ছবিঃ- সুদীপ্ত সেন( ডট.পেন)
[ founder of jolfhoring ]

তথ্য সংগৃহীতঃ- আনন্দবাজার পত্রিকা 

শনিবার, ১১ এপ্রিল, ২০২০

নতুন পৃথিবী

                জয়িতা ঘোষ


সভ্যতার শিখরে উঠে মানবজাতি ভাবে-
পৃথিবীর সব এবার আমার
হাতের মুঠোয় রবে।
বিষাক্ত এক প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকবে বলে,
প্রকৃতিকে নিজের ইচ্ছেমত
শোষন করে চলে।
প্রকৃতির আজ এসেছে
সময় প্রতিশোধ নেবার-
নিজের মত বাঁচার, সমান অধিকার আছে সবার।
যে দেশ যত প্রকৃতি থেকে নিয়েছিল শুষে-
প্রকৃতি আজ নেবে ফেরত, হিসেব নিকেশ কষে।
ছোট এক অনুজীবের কাছে
গোটা মানবজাতি ত্রস্ত,
উন্নত টেকনোলজি,
পরিকাঠামো একে একে সবই হয়েছে পরাস্ত।
শুধরে নাও নিজেকে তবে, 
এখনো সময় রয়েছে
ভালোবাসা নয়, মৃত্যুভয় আমাদের একসুত্রে গেঁথেছে।
একসাথে বাঁচব মোরা,
একসাথে লড়ব
অশুভ শক্তির বিনাশ করে নতুন পৃথিবী গড়ব।
দূষণ মুক্ত পৃথিবীতে হবে
নতুন সূর্যোদয় ,
নতুন যুগের সেই প্রভাতে আমরা করব জয়।

আবার আকস্মিক...... ২ দিনের মধ্যে লেখা দিন।

আমরা ছোটোবেলায় এক ছাদ থেকে আরেক ছাদ (কাছাকাছি) নারকেল মালোয় দিয়ে ওয়াকি- টককি বানিয়ে কথা বলতাম বন্ধুদের সাথে।

মনে আছে কী ? বা এমন কাজ করতেন কী?



যদি মনে থাকে বা করে থাকেন তাহলে সেই স্মৃতিতে লিখে ফেলুন কবিতা ও গল্প। 


কবিতা ৮ লাইনের বেশি পাঠাবেন না৷ 


গল্প পাঠাবেন ১০০ থেকে ২০০ শব্দ দিয়ে।


ঠিকানাঃ- what's app করুন ৭৩৮৪৩২৪১৮০  এই নম্বরে...। 


সময়ঃ- ১৩ এপ্রিল রাত ১২ টা পর্যন্ত।

প্রচ্ছদেঃ- অনুরূপা মাইতি। 

বুধবার, ৮ এপ্রিল, ২০২০

দিদি নমস্কার

জলফড়িং কে সময় দেবার জন্য ধন্যবাদ


 নমস্কার, জলফড়িং কে সময় দিতে পেরে আমি আপ্লুত

বলো কেমন আছো?


ভালোই আছি। তোমরা সবাই ভালো আছো নিশ্চয়ই।


এই লকডাউনে কি করে সময় কাটছে?


এখন যা পরিস্থিতি চলছে, তাতে তো ঘরেই কাটছে সময়। আজ প্রায় ২০দিনের ওপর ঘরেই, তবে নিজেকে কোথাও সময় দিতে পারছি। লেখা, গান, আঁকা, পড়া, রান্না, আর মেয়ে তো রয়েছেই। সব মিলিয়ে সময় কেটে যাচ্ছে। তবে বাইরের জগতটাও খুব মিস করছি।


তোমার এত জনপ্রিয়তা কিন্তু এটা টের পেতে দাও না কাউকে কিভাবে করো এটা?



আমি জনপ্রিয় কতটা নিজেকে নিজে বুঝতে দিই না। এখনো কিছু সেরকম করতেও পারিনি বলেই মনে করি। মন যা লেখায়, কলম লেখে। এইটুকুই আমার জীবনের সত্যি। আমি মানি আমার অনেক পড়া, অনেক লেখা এখনো বাকি আছে। হ্যাঁ, অনেকেই আছেন, খুব ভালোবাসেন আমার লেখাকে, প্রাপ্তি আমার। তাই মাটি আঁকড়ে পড়ে থাকতেই ভালোবাসি।


তোমার সাহিত্য চর্চা র শুরু টা একটু বল


সাহিত্যচর্চা শুরু কলেজে পড়ার সময় থেকে। কলেজের ম্যাগাজিনে প্রথম কবিতা লেখা, তাও ইংরেজিতে। এরপর নানা কারণে নিজের ডায়েরিতেই বন্ধ থাকে শব্দেরা। তিন বছর আগে নতুন করে শুরু এই পথচলা। প্রকাশ পেতে থাকে কবিতারা কোলকাতা ও বাইরের নানা ম্যাগাজিনে।


ইংরেজি সাহিত্যের তুমি  বাংলা য় লিখছ দুটো র মেলবন্ধন কি করে করলে?

এটা আমার ইংরেজির প্রফেশর ডঃঅনিন্দ্য পুরকায়স্থ স্যারের অনুপ্রেরণায়। তিনি বলেছিলেন, বাংলা সাহিত্য না জানলে, ইংরেজি সাহিত্যকেও বোঝা সম্ভব নয়। বাংলা ভাষার প্রতি অসম্ভব টান ছোট থেকেই ছিলো, গল্প আর উপন্যাসের বই বাবা কিনে এনে দিতেন, আর সেগুলো পড়েই সময় কাটতো।

প্রিয় লেখক কে বা কারা?


অনেকে। নীরেন্দ্রনাথ, শঙ্খ ঘোষ, জীবনানন্দ, অমিয় চক্রবর্তী, অমিতাভ দাসগুপ্ত, আরও আছে।

তুমি সেরম একটা পত্রিকায় লেখো না কেনো?

একসময় পত্রিকায় লিখেই আমার পথ চলা শুরু হয়েছিল। আজও লিখি কিন্তু অনেক পত্রিকায়, তবে একটু বেছেই লিখি এখন। সব পত্রিকা লেখা আর লেখককে মান দিতে পারে না বলেই মনে হয়েছে আমার।

প্রথম কাব্যগ্রন্থ নৌকাজন্মের অনুপ্রেরণা কি?


আমার শাশুড়ি মা, উনি আমাকে লেখা নিয়ে এত উৎসাহ দিয়েছেন। তারপর তখন মনেও হয়েছে, যাই লিখি না কেন, দু মলাটে যদি বন্দ করতে পারি, মন্দ কি!

প্রথম কাব্যগ্রন্থের যে সাড়া সেটা কেমন লাগল?


ভাবতে পারিনি সত্যি, এতটা সাড়া পাবো। কারণ তখন সবে এক বছরও হয়নি আমি কবিতার জগতে এসেছি। সবার ভালোবাসা আরও সাহস দিয়েছিল নিজেকে গড়ে নেওয়ার জন্য।


বর্তমানে মানুষ বই কম পড়ছে এ সম্বন্ধে কি বলবে?


ভীষণ হতাশ হই দেখে। আজকাল পড়ার চেয়ে লেখার প্রবণতা বাড়ছে। লেখাটা যেমন দরকার, পড়াটা তার থেকেও বেশি প্রয়োজন। আমি নিজে সারা সপ্তাহ পড়ি, লেখা এলে তবেই লিখি৷ লিখতে হবে ভেবে লিখতে বসলে লেখা কতটা হয় জানি না আমি। না পড়লে লেখা গন্ডীর মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে যায়।


বর্তমানে সাহিত্যে ব্লগের ভূমিকা কতটা?


ব্লগ কিন্তু খুব ভালো একটা জায়গা এখনো করতে পারেনি।

ইদানিং সবাই লেখা ছাপানোর প্রতিযোগিতায় নেমেছে  এটা তে তোমার কি মত?


আমি লেখা ছাপানোর প্রতিযোগিতার বিরোধী। নিজে কিন্তু সবথেকে ভালো সবাই বোঝে যে লেখাটা ছাপার যোগ্য কিনা! তাও আজকাল লেখা ছাপানোর ইঁদুর দৌড়ে যারা দৌড়ে চলেছে, তাদের কজন শেষ অবধি পৌঁছাতে পারছে!

তুমি নৌকাজন্মের জন্য পুরস্কার পেয়েছ কেমন লাগল?

ভীষণ ভালো লেগেছে। যে কোনো পুরস্কার তৃপ্তি দেয়, এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা দেয়।

সমালোচনা কি করে সামলাও?

প্রথমে অসুবিধে হয়েছে অনেক। কারণ আমি ভাবিনি সাহিত্যের জগতে এমন কিছু ঘটে! সরলভাবে মেশা এখানে অপরাধ। তাই নিজে অনেক ভেঙেছি, আবার গড়েও নিয়েছি। আসলে জটিলতা আমার কখনোই পছন্দ নয়, না লেখায়, না জীবনে। তাই নিজের আশেপাশে পাথরের বলয় তৈরী করে রেখেছি, তাতেই সামলাতে সক্ষম হয়েছি। আর একটা জিনিস খুব ভালো বুঝেছি, যে যাই বলুক, নিজের মতো চলতে হয়, বেশি পাত্তা দিতে নেই কখনোই।

অপেক্ষায় মেঘ বারি নিয়ে কিছু বলো



এই বইটা হয়তো পরের বছর করতাম। কিন্তু হটাৎ প্রকাশকের কথায় রাজি হয়ে গেলাম, কারণ এই বইয়ের সমস্ত কবিতা একেবারে অন্যরকম করে লেখা। এতে প্রেম, বিরহ আছে, সাথে আছে অপেক্ষা। তবে নিজের ভালোবাসা নিয়ে বেঁচে থাকার গল্প আছে এতে।



তোমার মেয়ে তোমায় কতটা উৎসাহিত করে?


ভীষণ, ওর বয়স এখন চার। কিন্তু ও ১বছর থেকেই বোঝে যে মা পড়াশোনা করে, আর তখন চুপ করে খেলতো। এখন আমি পড়তে বসলেই নিজেও বই নিয়ে বসবে, বলে "আমিও কবিতা লিখছি মা" 😀।
আর যেদিন ঘরের কাজে ব্যস্ত থাকি, রীতিমতো বকে আমাকে, যে আমি কখন কবিতা লিখতে বসবো।


তোমার থেকে পরবর্তী তে আমরা কি গল্প বা উপন্যাস পেতে পারি?

হ্যাঁ ইচ্ছে তো আছে।

বর্তমান সময়ে র লেখকদের মধ্যে কার লেখা ভালো লাগে?


অনেকের লেখাতেই অনুপ্রেরণা পাই। অংশুমান দা, বিনায়ক দা, সমরেশ চৌধুরী, স্মরণজিৎ দা, বিভাস রায়চৌধুরী, আরও অনেকে।


শেষ প্রশ্ন  বর্তমানে যারা লিখছে (তোমার থেকে ছোটো) তাদের জন্য কিছু বার্তা?

আমার থেকে ছোট অনেকেই আমার থেকেও ভালো লিখছে। শুধু বলবো, পড়তে হবে অনেক, লেখা থামাবে না। অনেকরকম পরিস্থিতি আসবে, কিন্তু নিজের কলমের ওপর ভরসা রাখতেই হবে। এগিয়ে যাওয়ার পথ কখনোই মসৃণ হয় না।

ধন্যবাদ ভালো থাকবে সুস্থ থাকবে।

ধন্যবাদ ।

উপস্থাপনা
 অরূপ

সোমবার, ৬ এপ্রিল, ২০২০

পরিচালক অর্পন বসাক বললেন আগে মানুষের বাঁচাটা দরকার তারপর ছবি


রিচালক অর্পন বসাকের পরিচালনায় এবং ভাবনায় লোকডাউনের পরেই আসতে চলছে প্রযোজক বিশ্বজিৎ কুমারের প্রযোজনায় এক স্বল্পদৈর্ঘ্যর ছবি "মালিনি"।
২৫ মিনিটের এই ছবিটি তৈরী হয়েছে একজন লেখকের জীবনীকে কেন্দ্র করে। ছবিতে দেখা যাবে লেখক স্বরণজিৎ-এর  জীবন কাহিনী হঠাৎ করেই চলে আসে সাংবাদিকের সমানে আর সব মিলিয়ে একজন লেখকের জীবনের উন্মোচনের গল্প নিয়ে আসছে পরিচালক অর্পন বসাকের ছবি "মালিনি"।



ছবিতে অভিনেতা সুপ্রতিম সাহাকে লেখকের ভূমিকায় দেখা যাবে। এক অভিনব লুকে ধরা দেবে সুপ্রতীম। তার বয়সের চেয়ে কয়েক পা আরও সামনের দিকে এগিয়ে গিয়ে অভিনেতা সুপ্রতীম সাহা লেখকের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন এই ছবিতে। এছাড়াও এই ছবিতে অভিনয় করেছন  শ্রী সুজয় প্রসাদ চ্যাটার্জী, ঋ সেন, আনন্দ চৌধুরী, ঐশ্যি ভট্টাচার্যের মতো সুদক্ষ অভিনেতা-অভিনেত্রীরা।


পরিচালক বললেন এই ছবিটি তার একার জন্য হয়নি এখানে আরও সবাই মিলে তাকে সাহায্য করেছেন।
এ বিষয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন যাদের ছাড়া "মালিনি" কোনো ভাবেই সম্ভব হতো না তারা হলেন.....


প্রথমেই বলি প্রডিউসার তথা বিশ্বজিৎ কুমার, তাকে অংসখ্য ধব্যবাদ জানাই।
অনুভব চ্যাটার্জী ( যিনি একজন ডিরেক্টরের দৃষ্ট্যতাকে সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন নিপুণতার সাথে)
সায়ন্তন নাগ( এডিটর এবং কালারিস্ট)
Executive producer দেবার্ঘ্য মুখার্জি
আকাশ কুমার (  script writer) অর্থাৎ আমার ভাবনাকে লিখিত রূপ দিয়েছেন আকাশ।
ছবিতে মিউজিক করেছেন মেঘ ব্যানার্জী।
সজল মজুমদার( art direction)। সজল দা দারুণ ভাবে ওয়ার্ক আউট করেছেন।
লিংকন রায় ( make up artist)। লিংকন দা স্বরণজিৎ-এর আসল বয়স থেকে বয়স্ক হতে সাহায্য করেছেন।
অর্পিতা সরকার যিনি ঐশী ভট্টাচার্য্যের মেকআপ করেছেন এবং ছোট্টো ঐশীকে এক গৃহবধূর মতোন তৈরী করেছেন মেকআপের মাধ্যমে।
"মালিনি"-র সমস্ত styling costumes করেছে নিশ্চিতা সেনগুপ্ত।
এবং সোনালী সেন ঋ সেন , সুপ্রতীম সাহা এবং সুজয় প্রসাদের লুক রেডি করেছেন।
















সমস্ত আউটডোর লোকেশন ট্যাকেল  করেছেন এবং second unit cinematographer যিনি ছিলেন তার নাম চন্দন কুমার বিশ্বাস। অসম্ভব দক্ষ একজন মানুষ তিনি।
ড্রোন অপারেট করেছেন হিতেশ যেশওয়াল  হিতেশ Aerial view capture করেছেন।
খুব তাড়াতাড়ি "মালিনি"-র পোস্টার আসবে যা design করেছেন মোনালিসা দাস।

কিন্তু এই সংকটকালীন অবস্থায় পরিচালক বললেন আগে মানুষের বেঁচে যাওয়াটা দরকার তারপর ছবি। কারণ ছবির চোখ তো মানুষই। তিনি আরও বললেন, লোকডাউনের সময় কেউ বাইরে যাবেন না ঘরেই থাকুন। আমি আশাবাদী সব বিপদ কেটে যাবে খুব শীঘ্রই আর আমি আপনাদের "মালিনি" উপহার দেব।

শুক্রবার, ৩ এপ্রিল, ২০২০

*আমরা আবার পথে বেরোবো*
                 
জনমানবহীন পথে মৃত্যুর মিছিল,
শুনলাম আরো দুটো পড়েছে লাশ,
অন্দরমহলে আজ ভীত সন্ত্রস্ত মুখের ভীড়
দিন গুনছে কেবলই একটু ভালোর প্রত্যাশায়।
এ কোন মৃত্যু পরোয়ানা এসেছে আজ দ্বারে,
কোন অদৃশ্য যমদূত কড়া নাড়ছে সন্তর্পনে?
হ্যাঁ, এ মৃত্যু উপত্যকা আজ আমার ই দেশ।।
মৃত্যুভয় আজ এনেছে একতা, সব ভুলেছে দ্বেষ।
অনিশ্চয়তার কালো ছায়া ঘিরেছে বিশ্বকে,
আতঙ্কের ধূসর মেঘ ঘনীভূত হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
তবুও অন্ধকারের ঘনঘটায় থাকুক আশার আলো,
বিশ্ব আবার সুস্থ হবে,
মানবসভ্যতার জয়ধ্বজা উড়বে আবার,
নীল আকাশে, মলয় বাতাসে।।
        -- ঈশিতা মন্ডল