দিদি নমস্কার
জলফড়িং কে সময় দেবার জন্য ধন্যবাদ
নমস্কার, জলফড়িং কে সময় দিতে পেরে আমি আপ্লুত
বলো কেমন আছো?
ভালোই আছি। তোমরা সবাই ভালো আছো নিশ্চয়ই।
এই লকডাউনে কি করে সময় কাটছে?
এখন যা পরিস্থিতি চলছে, তাতে তো ঘরেই কাটছে সময়। আজ প্রায় ২০দিনের ওপর ঘরেই, তবে নিজেকে কোথাও সময় দিতে পারছি। লেখা, গান, আঁকা, পড়া, রান্না, আর মেয়ে তো রয়েছেই। সব মিলিয়ে সময় কেটে যাচ্ছে। তবে বাইরের জগতটাও খুব মিস করছি।
তোমার এত জনপ্রিয়তা কিন্তু এটা টের পেতে দাও না কাউকে কিভাবে করো এটা?
আমি জনপ্রিয় কতটা নিজেকে নিজে বুঝতে দিই না। এখনো কিছু সেরকম করতেও পারিনি বলেই মনে করি। মন যা লেখায়, কলম লেখে। এইটুকুই আমার জীবনের সত্যি। আমি মানি আমার অনেক পড়া, অনেক লেখা এখনো বাকি আছে। হ্যাঁ, অনেকেই আছেন, খুব ভালোবাসেন আমার লেখাকে, প্রাপ্তি আমার। তাই মাটি আঁকড়ে পড়ে থাকতেই ভালোবাসি।
তোমার সাহিত্য চর্চা র শুরু টা একটু বল
সাহিত্যচর্চা শুরু কলেজে পড়ার সময় থেকে। কলেজের ম্যাগাজিনে প্রথম কবিতা লেখা, তাও ইংরেজিতে। এরপর নানা কারণে নিজের ডায়েরিতেই বন্ধ থাকে শব্দেরা। তিন বছর আগে নতুন করে শুরু এই পথচলা। প্রকাশ পেতে থাকে কবিতারা কোলকাতা ও বাইরের নানা ম্যাগাজিনে।
ইংরেজি সাহিত্যের তুমি বাংলা য় লিখছ দুটো র মেলবন্ধন কি করে করলে?
এটা আমার ইংরেজির প্রফেশর ডঃঅনিন্দ্য পুরকায়স্থ স্যারের অনুপ্রেরণায়। তিনি বলেছিলেন, বাংলা সাহিত্য না জানলে, ইংরেজি সাহিত্যকেও বোঝা সম্ভব নয়। বাংলা ভাষার প্রতি অসম্ভব টান ছোট থেকেই ছিলো, গল্প আর উপন্যাসের বই বাবা কিনে এনে দিতেন, আর সেগুলো পড়েই সময় কাটতো।
প্রিয় লেখক কে বা কারা?
অনেকে। নীরেন্দ্রনাথ, শঙ্খ ঘোষ, জীবনানন্দ, অমিয় চক্রবর্তী, অমিতাভ দাসগুপ্ত, আরও আছে।
তুমি সেরম একটা পত্রিকায় লেখো না কেনো?
একসময় পত্রিকায় লিখেই আমার পথ চলা শুরু হয়েছিল। আজও লিখি কিন্তু অনেক পত্রিকায়, তবে একটু বেছেই লিখি এখন। সব পত্রিকা লেখা আর লেখককে মান দিতে পারে না বলেই মনে হয়েছে আমার।
প্রথম কাব্যগ্রন্থ নৌকাজন্মের অনুপ্রেরণা কি?
আমার শাশুড়ি মা, উনি আমাকে লেখা নিয়ে এত উৎসাহ দিয়েছেন। তারপর তখন মনেও হয়েছে, যাই লিখি না কেন, দু মলাটে যদি বন্দ করতে পারি, মন্দ কি!
প্রথম কাব্যগ্রন্থের যে সাড়া সেটা কেমন লাগল?
ভাবতে পারিনি সত্যি, এতটা সাড়া পাবো। কারণ তখন সবে এক বছরও হয়নি আমি কবিতার জগতে এসেছি। সবার ভালোবাসা আরও সাহস দিয়েছিল নিজেকে গড়ে নেওয়ার জন্য।
বর্তমানে মানুষ বই কম পড়ছে এ সম্বন্ধে কি বলবে?
ভীষণ হতাশ হই দেখে। আজকাল পড়ার চেয়ে লেখার প্রবণতা বাড়ছে। লেখাটা যেমন দরকার, পড়াটা তার থেকেও বেশি প্রয়োজন। আমি নিজে সারা সপ্তাহ পড়ি, লেখা এলে তবেই লিখি৷ লিখতে হবে ভেবে লিখতে বসলে লেখা কতটা হয় জানি না আমি। না পড়লে লেখা গন্ডীর মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে যায়।
বর্তমানে সাহিত্যে ব্লগের ভূমিকা কতটা?
ব্লগ কিন্তু খুব ভালো একটা জায়গা এখনো করতে পারেনি।
ইদানিং সবাই লেখা ছাপানোর প্রতিযোগিতায় নেমেছে এটা তে তোমার কি মত?
আমি লেখা ছাপানোর প্রতিযোগিতার বিরোধী। নিজে কিন্তু সবথেকে ভালো সবাই বোঝে যে লেখাটা ছাপার যোগ্য কিনা! তাও আজকাল লেখা ছাপানোর ইঁদুর দৌড়ে যারা দৌড়ে চলেছে, তাদের কজন শেষ অবধি পৌঁছাতে পারছে!
তুমি নৌকাজন্মের জন্য পুরস্কার পেয়েছ কেমন লাগল?
ভীষণ ভালো লেগেছে। যে কোনো পুরস্কার তৃপ্তি দেয়, এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা দেয়।
সমালোচনা কি করে সামলাও?
প্রথমে অসুবিধে হয়েছে অনেক। কারণ আমি ভাবিনি সাহিত্যের জগতে এমন কিছু ঘটে! সরলভাবে মেশা এখানে অপরাধ। তাই নিজে অনেক ভেঙেছি, আবার গড়েও নিয়েছি। আসলে জটিলতা আমার কখনোই পছন্দ নয়, না লেখায়, না জীবনে। তাই নিজের আশেপাশে পাথরের বলয় তৈরী করে রেখেছি, তাতেই সামলাতে সক্ষম হয়েছি। আর একটা জিনিস খুব ভালো বুঝেছি, যে যাই বলুক, নিজের মতো চলতে হয়, বেশি পাত্তা দিতে নেই কখনোই।
অপেক্ষায় মেঘ বারি নিয়ে কিছু বলো
এই বইটা হয়তো পরের বছর করতাম। কিন্তু হটাৎ প্রকাশকের কথায় রাজি হয়ে গেলাম, কারণ এই বইয়ের সমস্ত কবিতা একেবারে অন্যরকম করে লেখা। এতে প্রেম, বিরহ আছে, সাথে আছে অপেক্ষা। তবে নিজের ভালোবাসা নিয়ে বেঁচে থাকার গল্প আছে এতে।
তোমার মেয়ে তোমায় কতটা উৎসাহিত করে?
ভীষণ, ওর বয়স এখন চার। কিন্তু ও ১বছর থেকেই বোঝে যে মা পড়াশোনা করে, আর তখন চুপ করে খেলতো। এখন আমি পড়তে বসলেই নিজেও বই নিয়ে বসবে, বলে "আমিও কবিতা লিখছি মা" 😀।
আর যেদিন ঘরের কাজে ব্যস্ত থাকি, রীতিমতো বকে আমাকে, যে আমি কখন কবিতা লিখতে বসবো।
তোমার থেকে পরবর্তী তে আমরা কি গল্প বা উপন্যাস পেতে পারি?
হ্যাঁ ইচ্ছে তো আছে।
বর্তমান সময়ে র লেখকদের মধ্যে কার লেখা ভালো লাগে?
অনেকের লেখাতেই অনুপ্রেরণা পাই। অংশুমান দা, বিনায়ক দা, সমরেশ চৌধুরী, স্মরণজিৎ দা, বিভাস রায়চৌধুরী, আরও অনেকে।
শেষ প্রশ্ন বর্তমানে যারা লিখছে (তোমার থেকে ছোটো) তাদের জন্য কিছু বার্তা?
আমার থেকে ছোট অনেকেই আমার থেকেও ভালো লিখছে। শুধু বলবো, পড়তে হবে অনেক, লেখা থামাবে না। অনেকরকম পরিস্থিতি আসবে, কিন্তু নিজের কলমের ওপর ভরসা রাখতেই হবে। এগিয়ে যাওয়ার পথ কখনোই মসৃণ হয় না।
ধন্যবাদ ভালো থাকবে সুস্থ থাকবে।
ধন্যবাদ ।
উপস্থাপনা
অরূপ
জলফড়িং কে সময় দেবার জন্য ধন্যবাদ
নমস্কার, জলফড়িং কে সময় দিতে পেরে আমি আপ্লুত
বলো কেমন আছো?
ভালোই আছি। তোমরা সবাই ভালো আছো নিশ্চয়ই।
এই লকডাউনে কি করে সময় কাটছে?
এখন যা পরিস্থিতি চলছে, তাতে তো ঘরেই কাটছে সময়। আজ প্রায় ২০দিনের ওপর ঘরেই, তবে নিজেকে কোথাও সময় দিতে পারছি। লেখা, গান, আঁকা, পড়া, রান্না, আর মেয়ে তো রয়েছেই। সব মিলিয়ে সময় কেটে যাচ্ছে। তবে বাইরের জগতটাও খুব মিস করছি।
তোমার এত জনপ্রিয়তা কিন্তু এটা টের পেতে দাও না কাউকে কিভাবে করো এটা?
আমি জনপ্রিয় কতটা নিজেকে নিজে বুঝতে দিই না। এখনো কিছু সেরকম করতেও পারিনি বলেই মনে করি। মন যা লেখায়, কলম লেখে। এইটুকুই আমার জীবনের সত্যি। আমি মানি আমার অনেক পড়া, অনেক লেখা এখনো বাকি আছে। হ্যাঁ, অনেকেই আছেন, খুব ভালোবাসেন আমার লেখাকে, প্রাপ্তি আমার। তাই মাটি আঁকড়ে পড়ে থাকতেই ভালোবাসি।
তোমার সাহিত্য চর্চা র শুরু টা একটু বল
সাহিত্যচর্চা শুরু কলেজে পড়ার সময় থেকে। কলেজের ম্যাগাজিনে প্রথম কবিতা লেখা, তাও ইংরেজিতে। এরপর নানা কারণে নিজের ডায়েরিতেই বন্ধ থাকে শব্দেরা। তিন বছর আগে নতুন করে শুরু এই পথচলা। প্রকাশ পেতে থাকে কবিতারা কোলকাতা ও বাইরের নানা ম্যাগাজিনে।
ইংরেজি সাহিত্যের তুমি বাংলা য় লিখছ দুটো র মেলবন্ধন কি করে করলে?
এটা আমার ইংরেজির প্রফেশর ডঃঅনিন্দ্য পুরকায়স্থ স্যারের অনুপ্রেরণায়। তিনি বলেছিলেন, বাংলা সাহিত্য না জানলে, ইংরেজি সাহিত্যকেও বোঝা সম্ভব নয়। বাংলা ভাষার প্রতি অসম্ভব টান ছোট থেকেই ছিলো, গল্প আর উপন্যাসের বই বাবা কিনে এনে দিতেন, আর সেগুলো পড়েই সময় কাটতো।
প্রিয় লেখক কে বা কারা?
অনেকে। নীরেন্দ্রনাথ, শঙ্খ ঘোষ, জীবনানন্দ, অমিয় চক্রবর্তী, অমিতাভ দাসগুপ্ত, আরও আছে।
তুমি সেরম একটা পত্রিকায় লেখো না কেনো?
একসময় পত্রিকায় লিখেই আমার পথ চলা শুরু হয়েছিল। আজও লিখি কিন্তু অনেক পত্রিকায়, তবে একটু বেছেই লিখি এখন। সব পত্রিকা লেখা আর লেখককে মান দিতে পারে না বলেই মনে হয়েছে আমার।
প্রথম কাব্যগ্রন্থ নৌকাজন্মের অনুপ্রেরণা কি?
আমার শাশুড়ি মা, উনি আমাকে লেখা নিয়ে এত উৎসাহ দিয়েছেন। তারপর তখন মনেও হয়েছে, যাই লিখি না কেন, দু মলাটে যদি বন্দ করতে পারি, মন্দ কি!
প্রথম কাব্যগ্রন্থের যে সাড়া সেটা কেমন লাগল?
ভাবতে পারিনি সত্যি, এতটা সাড়া পাবো। কারণ তখন সবে এক বছরও হয়নি আমি কবিতার জগতে এসেছি। সবার ভালোবাসা আরও সাহস দিয়েছিল নিজেকে গড়ে নেওয়ার জন্য।
বর্তমানে মানুষ বই কম পড়ছে এ সম্বন্ধে কি বলবে?
ভীষণ হতাশ হই দেখে। আজকাল পড়ার চেয়ে লেখার প্রবণতা বাড়ছে। লেখাটা যেমন দরকার, পড়াটা তার থেকেও বেশি প্রয়োজন। আমি নিজে সারা সপ্তাহ পড়ি, লেখা এলে তবেই লিখি৷ লিখতে হবে ভেবে লিখতে বসলে লেখা কতটা হয় জানি না আমি। না পড়লে লেখা গন্ডীর মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে যায়।
বর্তমানে সাহিত্যে ব্লগের ভূমিকা কতটা?
ব্লগ কিন্তু খুব ভালো একটা জায়গা এখনো করতে পারেনি।
ইদানিং সবাই লেখা ছাপানোর প্রতিযোগিতায় নেমেছে এটা তে তোমার কি মত?
আমি লেখা ছাপানোর প্রতিযোগিতার বিরোধী। নিজে কিন্তু সবথেকে ভালো সবাই বোঝে যে লেখাটা ছাপার যোগ্য কিনা! তাও আজকাল লেখা ছাপানোর ইঁদুর দৌড়ে যারা দৌড়ে চলেছে, তাদের কজন শেষ অবধি পৌঁছাতে পারছে!
তুমি নৌকাজন্মের জন্য পুরস্কার পেয়েছ কেমন লাগল?
ভীষণ ভালো লেগেছে। যে কোনো পুরস্কার তৃপ্তি দেয়, এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা দেয়।
সমালোচনা কি করে সামলাও?
প্রথমে অসুবিধে হয়েছে অনেক। কারণ আমি ভাবিনি সাহিত্যের জগতে এমন কিছু ঘটে! সরলভাবে মেশা এখানে অপরাধ। তাই নিজে অনেক ভেঙেছি, আবার গড়েও নিয়েছি। আসলে জটিলতা আমার কখনোই পছন্দ নয়, না লেখায়, না জীবনে। তাই নিজের আশেপাশে পাথরের বলয় তৈরী করে রেখেছি, তাতেই সামলাতে সক্ষম হয়েছি। আর একটা জিনিস খুব ভালো বুঝেছি, যে যাই বলুক, নিজের মতো চলতে হয়, বেশি পাত্তা দিতে নেই কখনোই।
অপেক্ষায় মেঘ বারি নিয়ে কিছু বলো
এই বইটা হয়তো পরের বছর করতাম। কিন্তু হটাৎ প্রকাশকের কথায় রাজি হয়ে গেলাম, কারণ এই বইয়ের সমস্ত কবিতা একেবারে অন্যরকম করে লেখা। এতে প্রেম, বিরহ আছে, সাথে আছে অপেক্ষা। তবে নিজের ভালোবাসা নিয়ে বেঁচে থাকার গল্প আছে এতে।
তোমার মেয়ে তোমায় কতটা উৎসাহিত করে?
ভীষণ, ওর বয়স এখন চার। কিন্তু ও ১বছর থেকেই বোঝে যে মা পড়াশোনা করে, আর তখন চুপ করে খেলতো। এখন আমি পড়তে বসলেই নিজেও বই নিয়ে বসবে, বলে "আমিও কবিতা লিখছি মা" 😀।
আর যেদিন ঘরের কাজে ব্যস্ত থাকি, রীতিমতো বকে আমাকে, যে আমি কখন কবিতা লিখতে বসবো।
তোমার থেকে পরবর্তী তে আমরা কি গল্প বা উপন্যাস পেতে পারি?
হ্যাঁ ইচ্ছে তো আছে।
বর্তমান সময়ে র লেখকদের মধ্যে কার লেখা ভালো লাগে?
অনেকের লেখাতেই অনুপ্রেরণা পাই। অংশুমান দা, বিনায়ক দা, সমরেশ চৌধুরী, স্মরণজিৎ দা, বিভাস রায়চৌধুরী, আরও অনেকে।
শেষ প্রশ্ন বর্তমানে যারা লিখছে (তোমার থেকে ছোটো) তাদের জন্য কিছু বার্তা?
আমার থেকে ছোট অনেকেই আমার থেকেও ভালো লিখছে। শুধু বলবো, পড়তে হবে অনেক, লেখা থামাবে না। অনেকরকম পরিস্থিতি আসবে, কিন্তু নিজের কলমের ওপর ভরসা রাখতেই হবে। এগিয়ে যাওয়ার পথ কখনোই মসৃণ হয় না।
ধন্যবাদ ভালো থাকবে সুস্থ থাকবে।
ধন্যবাদ ।
উপস্থাপনা
অরূপ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন