ভিড় থেকে সরে আসি। সমুদ্র জানে না কারও নাম। অনেক লেখার শেষে সাদা পাতা এখনও আরাম...শ্রীজাত

শুক্রবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২০

ওয়াকিটকি নিয়ে ব্রতীন বসুর কলম


কি ছিল জানি না
🖋 ব্রতীন বসু

আমার বোন।নিজের না পাড়াতুতো। দুবছরের ছোট।
এক দেওয়ালে দুটো বাড়ি। বাড়িগুলো জমজ। একটা অর্ধশতাব্দীর সম্পর্ক।
আমি বাবা মার একমাত্র ছেলে।মেয়ে বলতে ওই প্রথম চেনা।জন্ম থেকে একসাথে।
প্রেম নয়।অত ছোটবেলায় প্রেম হয় না।আমরা ভাইবোন ছিলাম।ভাল লাগতো ভাইফোঁটা পেতে।
ভাল লাগতো চুপি চুপি একসাথে বড়দের গল্পের বই পড়তে।ভাল লাগতো বিকেলে ছাদ থেকে ছাদে নারকেল মালা দিয়ে বানানো ফোনে কথা বলতে।
ভাল লাগতো ওকে শাষণ করতে।কাদাতে হাসাতে।
একদিন দুই বাড়ির গিন্নির মধ্যে কি নিয়ে যেন বাদানুবাদ লাগল। আসাযাওয়া বন্ধ হল।
বড়রা একেওকে দেখলে মুখ ঘুরিয়ে নিত।
আমাদের দেখা বলতে বিকেলের ছাদ।কত কথা।
ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যু সারা দেশ পুড়ছে,
ভারত শারজায় জিতেছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে,সবাই হাসছে,এই সব কিছু যেন অন্য জগৎ।ক্ষুদ্র।
আমরা বিকেলটুকুতে মত্ত থাকতাম।
ছাদ থেকে ছাদ যেন সৌরজগতের ভাগাভাগি খেলা।
প্রেম নয়,পরে বুঝেছি ভাই বোন ও নয়।
একটা 'তুই আমার' নামের খেলা।
একটা 'তুই আগে আমার' খেলা।
তারপর আমাদের ছাদ ছাদ খেলা শেষ হল একদিন।অনেক কিছুই আর বলা হত না।
প্রথম কিসের পর ওকে বলতে ইচ্ছে হয়েছিল।
কিন্তু বলিনি।কেন জানিনা মনে হয়েছিল
ওর ভাল নাও লাগতে পারে।ওর ও হয়ত তাই মনে হয়েছিল।
কেমন আছিস? একদিন  দেখা। এফ বি তে।
খানিকবাদে টিং করে বলল,ভাল।তুই?
ভাল।
আর কথা এগোলো না।ছাদ নেই নারকেল মালার ওয়াকিটকি নেই।দুজনে দু মিনিট বাদে এওয়ে হয়ে গেলাম।
কি ছিল জানি না ওই দিনগুলোতে।
তাই,কি হারিয়ে গেছে তাও জানি না।

প্রচ্ছদঃ- অনুরূপা মাইতি

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন