ভিড় থেকে সরে আসি। সমুদ্র জানে না কারও নাম। অনেক লেখার শেষে সাদা পাতা এখনও আরাম...শ্রীজাত

বুধবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২০

না সেরকম কষ্ট হয়না, আসলে গল্পটা কষ্টের থেকেও রিভেঞ্জ নেওয়াটা মজা লেগে ছিলো


অনিমেষ:- নমস্কার দাদা। প্রথমেই জানাই
 জলফড়িং ও আমার তরফ থেকে একরাশ শুভেচ্ছা

অর্নব:- ধন্যবাদ

 অনিমেষ:- তোমার প্রথম প্রকাশিত লেখা কি ছিল, এবং  কোন পত্রিকায় বেরিয়েছিল ?

অর্ণব:- "ভালোবাসা তোকে দিলাম ছুটি!" কল্পবিতান পত্রিকা।

 অনিমেষ: আচ্ছা দাদা,তুমি কি মনে করো সোশ্যাল মিডিয়ার লেখক বা লেখিকা দের নিয়ে? আর সোশ্যাল মিডিয়া কি লেখক দের সব থেকে বড় প্রকাশ করার মঞ্চ?

অর্ণব: একদম, আমিই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সিনেমায় এসেছি, এখনও লেখালেখি করি সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং এখানে লিখবে কেন, তার একটা কারণ একটা প্রশ্নের মাধ্যমে বলি, তুমি দিনে কতক্ষন গল্পের বই পড়ো আর কতক্ষন ফেসবুকে থাকো?

অনিমেষ: বলতে গেলে গল্পের বই রাতে 2ঘন্টা আর বেশিরভাগ সময় ফেসবুক

অর্ণব: এটাই তো আমার ফেসবুকে লেখার কারণ। ম্যাক্সিমাম একজন মানুষ যেখানে থাকে আমার লেখা সেখানেই পাওয়া যাবে।

 অনিমেষ: বর্তমানে এমন পাঁচজন ফেসবুকের লেখক লেখিকার নাম বলো যারা তোমার পছন্দের।

অর্ণব: ১.) অনির্বাণ ঘোষ
২.) প্রতীক মুখার্জী
৩.) শ্রীতমা সেনগুপ্ত
৪.) অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায়
৫.) পৃথা সামন্ত

 অনিমেষঃ- আচ্ছা দাদা ,"পরিনীতা"র জার্নি টা কেমন ছিল পর্দা আগে যাওয়া পর্যন্ত যদি একটু শেয়ার করো আমাদের সাথে সঙ্গে এই আড্ডায় কফিতে চুমুক দিতে দিতে।

অর্ণব: সেরকম নয়, একটা ছোট্ট প্লট আমার ফ্রেন্ডলিস্টের একটি মেয়ে আমাকে শেয়ার করে, প্লটটা মফস্বলের, আমার ঠিক মফস্বল সম্পর্কে ধারণা কম, তাই সেই প্লট টিকে আমি উত্তর কলকাতায় নিয়ে এসে, একটা করপোরেট থ্রিলার বানিয়ে ফেলি, সেটাই আমার ফ্রেন্ডলিস্টে থাকা শুভশ্রী গাঙ্গুলির দিদি দেবশ্রী পড়ে, আমাকে সে ফোন করে জানায় শুভশ্রীর গল্পটা খুব পছন্দ হয়েছে, ব্যস সেটাই রাজ চক্রবর্তী শোনেন তারপর আমার সাথে কন্ট্যাক্ট করেন, প্লট যিনি লেখেন তারনাম আমি ওভার দ্য মেল তাঁকে জানাই, প্লট আর অথর হিসেবে প্রথমে একটা ড্রাফ্ট হয় তারপরে কিছু টেকনিক্যাল অসুবিধা থাকার জন্যে আমাদের দুজনের নাম গল্পের লেখক হিসেবে যায়, পদ্মনাভ দাশগুপ্ত চিত্রনাট্য লেখেন, এভাবেই এগিয়ে যায় "পরিনীতা"।

অনিমেষ: এই "পরিনীতা" নাম টা কি তোমারই দেওয়া?

অর্ণব: হ্যাঁ, আমারই দেওয়া, 'রাজ'দা প্রথমে কপিরাইট নিয়ে একটু অসুবিধে হবে ভেবেছিলেন, পরে দেখলেন না ১১ বছরের পুরনো হিন্দী "পরিনীতা"। যদিও প্রথমে নাম ছিলো "তেরে ইশক নে মুঝে লে ডুবা!" আমার সেটা একদম পছন্দ হয়নি বলে চেঞ্জ করি আর শেষের সিঁদুরের ডায়লগটা আমার আগের একটা লেখার সেটা এখানে ইউজ করি আর নামটা "পরিনীতা" রাখি।

অস্পৃশ্য: আচ্ছা: মানুষ অর্ণব ভৌমিক আর লেখক অর্ণব ভৌমিক পার্থক্য  কী লড়াই করার নিরিখে?

 অর্ণব: এটা আমি নিজে কী করে বলি? অল্প পার্থক্য তো আছেই, লড়াই করার ক্ষমতা মানুষ অর্ণবের কম তাই লেখায় চেষ্টা করি দুজনকে যাতে লড়তে শেখাতে পারি, জিততে সাহায্য করতে পারি, নিজেও নিজের লেখা থেকে শেখার চেষ্টা করি। কিন্তু এটাও সত্যিই পারিনা, খুব সাধারণ হয়ে পড়ি দিনের শেষে।

অনিমেষ: আচ্ছা দাদা "পরিনীতা"তে তুমি এতজনকে কাঁদালে।  তোমার কতখানি কষ্ট হয়েছিল?

অর্নব: শেষে একটা চিঠি ছিলো, যেটা বাবাই মেহুলকে লিখে যায়, সেই চিঠিটা পড়তে গেলে আজও কষ্ট পাই।

অনিমেষ: আরো অন্য কোন জায়গা তোমার দেখলে কষ্ট হয়?

অর্ণব: না সেরকম কষ্ট হয়না, আসলে গল্পটা কষ্টের থেকেও রিভেঞ্জ নেওয়াটা মজা লেগে ছিলো আমার কাছে, যেটা অনেকটাই বাঙালি দর্শককে মাথায় রেখে পরিচালক চেঞ্জ করেন।

অনিমেষ: তুমি কি চাও এরকম "পরিণীতা" আরও একটা হোক এবার বাস্তবে?

 অর্নব: বুঝলাম না প্রশ্নটা

  অনিমেষ : মানে পরিণত যদি বাস্তবে হয় কোনোদিন কখন, কাকতালীয় ভাবে।

অর্নব: আবারও বুঝলাম না, মানে এরকম ঘটনা যদি বাস্তবে ঘটে? তাহলে বলবো রোজ ঘটে, শুধু সেটা নিয়ে সিনেমা হয় না আবার এটাও ঠিক এই মেহুলের মতন "আগলে রাখবো" এটা সত্যিই খুব রেয়ার, কিন্তু হ্যাঁ আছে তো বটেই, আসলে সব গল্পই লখিন্দর আর বেহুলার।


জেতা অভ্যাস দোষ দেওয়াটাও, তাই লিখে যাও, সবাই একসাথে এগোবো। অল দ্য বেস্ট।|






অনিমেষ: উত্তরে আবেগঘন হলাম দাদা,এবার আমরা আড্ডার শেষ লগ্নে।

 অর্ণব: হু

 অনিমেষ: কার অভিনয় তোমার মন করেছে(একজন) ঋত্বিক দার না শুভশ্রী দির?

অর্ণব: শুধু এই সিনেমায় না, ২০১৯ সালে বাংলা সিনেমায় মন কেড়েছে শুভশ্রী গাঙ্গুলী, এটা নিঃসন্দেহে।

অস্পৃশ্য: দাদা, তুমি বর্তমান লেখক লেখিকাদের  কি বার্তা দেবে?

অর্নব:- প্রত্যেকের একটা সময় হয়, সবার সময় ঠিক আসবে, সৎ হলে তো আসবেই, আর তারপরেই টিকে থাকার লড়াই, যে ভালো সে থাকবে, যে একটু কম ভালো তাকে আবার নতুন করে লড়তে হবে, কিন্তু সময় তো আসবেই, তবে ঐ যে বললাম সৎ থাকতে হবে, নিজেকে প্রমাণ করতে অন্যকে ছোট না নিজেকে বড় প্রমান করতে হবে, জেতা অভ্যাস দোষ দেওয়াটাও, তাই লিখে যাও, সবাই একসাথে এগোবো। অল দ্য বেস্ট।

 অনিমেষ: প্রত্যেক কথার মতো এই কথারও প্রেমে পড়লাম তোমার।
অবশেষে জলফড়িং পরিবারের তরফ থেকে আগামী দিনের জন্য শুভেচ্ছা পৃথিবীর সুস্থ হোক ততদিন বাড়ি তে থেকো ভালো থেকো।

অর্ণব: ধন্যবাদ, তোমরাও সুস্থ থেকো। সব ঠিক হয়ে যাবে।



সঙ্গেঃ- অনিমেষ ভট্টাচার্য (অস্পৃশ্য)   



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন