এক নয় একজোড়া বৈঠক |
১.)
"একা মরবে জেনেও অস্ত্র তোলে সৈনিক"-- এই কথা ধ্রুব সত্য আর এই সত্যি কথার বক্তা কবি অর্জুন দাস। জলফড়িং এর পক্ষ থেকে তোমাকে প্রথমেই জানাই নমস্কার।
অর্জুনঃ- ধন্যবাদ ভাই
২.)
"আচ্ছিল্য ভয় উপেক্ষা করে, সরিয়ে রেখে চোট-
নিজেকে প্রমান করতে হবে। জিতবে হবে। ওঠ।"
এই সাহসের কথা যার কলম থেকে উঠে আসে তার নাম সূর্য সুরেলিয়া।
দাদা নমস্কার।
সূর্য্যঃ- নমস্কার ভাই। 😁
৩.)
কবিতায় যাপন করতে হয় আর যারা যাপন করে তাদের আমরা কবি বলে ডাকি কিন্তু সেই যাপনের মাধ্যম যখন ফেসবুক তখন তারা ফেবু কবি। এই ফেবুকবি বা ফেসবুক কবি শব্দটা কেমন লাগে?
সূর্যঃ- সেরকমভাবে আলাদা করে তো কথাটির কোনো অর্থ নেই। প্রথমত ফেবুকবি কোনো শব্দ না। শব্দ বন্ধনীটি হলো, ফেসবুক কবি। অর্থাৎ যারা নিজেদের কাব্যচর্চার মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছেন ফেসবুককে।
তবে হ্যাঁ কবি শব্দটির কিন্তু একটা নিজস্ব অর্থ এবং মর্ম আছে। সেটি এতখানি সহজে এবং এত স্বল্প বিবেচনায় যে কারোর উপর প্রযোজ্য হয় না।
অর্জুনঃ- আমি তো নিজেকে কবি ব'লে মনে করি না সেভাবে। আসলে কবিতা লিখতে গেলে বা কবি হতে গেলে অনেকটা রাস্তা হাঁটতে হয়, অনেকটা গভীরতা প্রয়োজন। আমার এখনও সেটা আসেনি মনে হয়।
আর ফেবুকবি প্রসঙ্গে বলবো, অনেকেই খুব ভাল লেখে এখানে, অনেকেই খারাপ লেখে। সুতরাং প্রিন্ট মিডিয়ার মতোই এটা কোয়ালিটি অনুযায়ী একটা মিক্সড মিডিয়া। তাই ফেবুকবি শব্দটা আমার কাছে একটা বিশেষণ মাত্র, অপমানজনক তিরস্কার নয়।
আর যারা খারাপ লেখে, তারা অন্তত প্রোডাক্টিভ কিছু চেষ্টা করছে পার্টির ফ্ল্যাগ হাতে না ধরে। এর চেয়ে ভাল সময়যাপন হয় না বলেও আমি মনে করি।
৪.)
দুই লাইনের কবিতা বা কখনও কখনও বড়ো কবিতা। তবে বেশি সময় দুই লাইনকেই বেছে নাও তোমরা দুজনেই। তাই জানতে ইচ্ছে করছে তোমাদের কলমে 'কাপলেট' লেখার প্রবণতা বেশি কেন?
অর্জুনঃ- শুরুতে একটা কারণে কাপলেট লিখতাম, চাইতাম ছন্দের অভ্যেসটা থাকুক, জঙ না ধরানোর জন্য রোজ লেখা প্রয়োজন। কিন্তু রোজ যেহেতু বড় লেখার সময় পেতাম না, তাই কাপলেট বেশি লিখতাম।
কিন্তু আমায় পীযূষ দা, মুক্তিপ্রকাশ দা, রাজা ভট্টাচার্য স্যার, শুভদীপ দা, অর্ঘ্য দা, সুমন দা, অজয় দা এরা ক্রমাগত ব'লে গেছে যে বড় লেখার সংখ্যা বাড়াতে। সবশেষে অর্পণ আর অভীক দা বলার পর ঠিক করি, যদি অভ্যাস করতে হয় বড় লেখা লিখেই করবো, রোজ না হলেও মাঝেমধ্যে বড় কবিতাই লেখার চেষ্টা করবো। কখনও কাপলেট মাথায় এলে লিখবো। কিন্তু রোজ নিয়ম ক'রে লেখার জন্য লিখবো না। তারপর থেকে এখন বড় লেখাই বেশি লেখার চেষ্টা করি। তবে কাপলেট পড়তে ভাল লাগে, লিখতেও।
সূর্যঃ- কবিতার ক্ষেত্রে একটা কথা ভীষণ সত্যি, পরিসর যত ছোট হয় মর্মার্থ বোঝানো কঠিন হয়ে ওঠে ঠিক ততখানিই। তাই দুটো লাইন উপর নীচে বসে গেলে এবং তাদের শেষদুটো শব্দের পশ্চাৎভাগ রাইম করলেই সেটা কবিতা হয় না। তার জন্যে দরকার ছন্দ ও মাত্রার ঢের অনুশীলন। আমাদের এই প্রবণতাও হয়তো সেই অনুশীলনেরই। আজকের এই বর্তমান সময়টা পুরোটাই আমাদের ওই শিক্ষাগ্রহণের প্রথম ধাপ।
৫.)
উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েরা অন্তঃমিলের লেখা বেশি পছন্দ করে। এই বিষয়ে তোমার মতামত?
অর্জুনঃ- নিজে এসব চেষ্টা করেছি, তাই নিজের বোধ থেকে স্বীকার ক'রে নিই, যে বহু চিন্তাকে ঠিকঠাক বোঝাতে পারি না, কম্প্রোমাইজ করতে হয় এই অন্ত্যমিল ঠিক রাখতে গিয়ে আমাকে। তাই মাঝেমধ্যে মুক্তগদ্য বা গদ্য লেখা উচিৎ। নিজেকে অনেক বেশি এক্সপ্রেস করা যায়।
আর পছন্দ তো নিজের নিজের কাছে। অনেকেই গদ্যকবিতা বেশি পছন্দ করে। আমি নিজে ওটা লিখতে না পারলেও গদ্যকবিতা পড়তে বেশি পছন্দ করি।
৬.)
অনেক সময় দেখা যায় অন্তঃমিল তো হলো কিন্তু লাইনের কোনো মানে নেই অথচ তিনি( সেই লেখক) গদ্য কবিতা ভালো লেখেন। সূর্য দার কাছ থেকে জানতে চাই তাহলে কি তার অন্তঃমিলের কবিতা লেখা উচিত নাকি তাকে গদ্য কবিতাতেই থাকা উচিত?
সূর্যঃ- পুরোটাই নির্ভর করে সেই মানুষটার শিক্ষাগ্রহণের ইচ্ছার উপর। একজন ছাত্র সাহিত্যে ভীষণ ভালো, অথচ তার কোনোকালেই অংকের উত্তর মেলে না। সে যদি নিজস্ব সাহিত্যজ্ঞান নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে এবং সেটিরই যথার্থ পরিচর্যা করতে থাকে তবে সে অদূর ভবিষ্যতে নিশ্চিতভাবে সাহিত্যের একজন সুদক্ষ পন্ডিত হয়ে উঠবে। কিন্তু সেই পন্ডিত মানুষটি নিজের জীবনের প্রত্যেকটা অংক পরীক্ষায় ফেল করবে। পুরোটাই তার উপর যে সে নিজের সাফল্য নিয়ে সন্তুষ্ট থাকবে নাকি নিজের অনুত্তীর্ণ হওয়া নিয়ে সচেতন।
একটা কথা মাথায় রাখতে হবে, কোনো মানুষের শিক্ষা কখনো সম্পূর্ণ হতে পারে না। আপনি নিজের আয়ুকালে আজীবন'ই একজন ছাত্র।
৭.)
ফেসবুক কবিরা সমসাময়িক কথা লিখে থাকেন, যাতে করে খুব তাড়াতাড়ি মানুষের চোখে পড়া যায় তাই 'ফেসবুক কবিরা প্রত্যেক জন মিমার'। এই ট্যাগ লাইনটা তোমরা স্বীকার করো?
সূর্যঃ- এক্ষেত্রে এই জেনারাইলজড "ফেসবুক কবি" টার্মটা থেকে বেরিয়ে এসে বলি যে কবিরা প্রায়শই সমসাময়িক বিষয়ে কবিতা লিখে থাকেন। শুধু কবি কেন, যে কোনো শিল্পীর ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য। ঠিক যেমনটা একজন মিমারের ক্ষেত্রে'ও। তিনিও সমসাময়িক বিষয়েই মিম বানান। তবে প্রথম ক্ষেত্রে প্রয়োজন কাব্যগুণ আর দ্বিতীয় ক্ষেত্রে হিউমর।
মিম বানানোটাও একটা আর্ট। তাই কোনো মানুষের কাব্যগুণ এবং কাব্যরস ব্যতীত কয়েকটা পরিচিত বাংলা শব্দ পরপর বসিয়ে একটা উদ্ভট একটা কোনো লেখাকে কবিতা তো দূর কোনোভাবেই সেটাকে মিম'ও বলা যায় না। দুটো ক্ষেত্রেই দু'প্রকার প্রকৃত শিল্পীর অপমান হয়।
অর্জুনঃ- ব্যক্তিগত জায়গা থেকে বলি, এই কথাটার মধ্যে একচুলও মিথ্যে নেই, অন্তত আমার ক্ষেত্রে অবশ্যই সত্যি। তাই আবারও এটাকে আমি কোনও নিন্দে বা সমালোচনা হিসেবে না নিয়ে সত্যি হিসেবেই নিলাম।
স্রেফ একটা কথায় আপত্তি আছে, ফেসবুক কবিরাই শুধু সমসাময়িক কথা লিখে বা মিম শেয়ার ক'রে, বানিয়ে মানুষের চোখে পড়ার ধান্দা করে না, ফেসবুকে থাকা বেশিরভাগ মানুষই তাই করে। সবাই নিজের নিজের মতো ক'রে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সরব হয়। কেউ মিম শেয়ার করে, কেউ কবিতা লেখে, কেউ প্রতিবাদী পলিটিক্যাল পোস্ট শেয়ার করে, কেউ আবার তেড়ে খিস্তায়। । It is a great platform of expressing yourself..
৮.)
কোনো প্রতিষ্ঠিত কবির লেখায় অনুপ্রাণীত হয়ে
বহু ছেলে/মেয়ে একই ভাবধারায় কবিতা লেখেন এবং শুধলে বলে ইন্সপায়ার হয়ে লিখেছেন এমনকি অন্তঃমিল করার সময় সেই প্রতিষ্ঠিত কবির শব্দই ব্যবহার করছেন শুধু বাক্যের অর্থ পরিবর্তন করে। সূর্য দা তোমার কাছে জানতে চাই তাহলে এটা ইন্সপায়ার নাকি কপি? এবং তুমি এটাকে কতটা সাপোর্ট করো?
সূর্যঃ- 'অনুসরণ' আর 'অনুকরণ' এই শব্দদুটোর মধ্যে ঠিক ততটাই ফারাক যতখানি ফারাক অনুপ্রাণিত হওয়া এবং চুরি করার মধ্যে। ভাবধারার অনুকরণ সম্ভব নয় তাই একজন কবির মতো করে তার অনুজ কবি লেখার চেষ্টা করলে সেটা চিরকালই অনুপ্রেরণা।
তবে সেই অনুপ্রেরণা যখন অনুকরণ হয়ে দাঁড়ায় তখন সেই ফারাকটাও ততখানিই সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে।
আর হ্যাঁ, অন্ত্যমিল সৃষ্টি এবং অন্ত্যমিল গঠন একজন কবির ক্ষেত্রে সাধনার চেয়ে কম কিছু না তাই সেগুলিকে অতি সহজলভ্য কিছু লাইনের শেষে অর্থহীনভাবে ব্যবহৃত হতে দেখাটা কখনোই সুখকর নয়।
৯.)
আচ্ছা অর্জুন দা তোমার কখনও ইচ্ছে করে না 'দেশে' লিখি বা 'কৃত্তিবাসে' লিখি নাকি ফেসবুকেই ভালো আছো?
অর্জুনঃ- না ভাই, আসলে বছর চারেক আগেও নিয়মিত ম্যাগাজিনে লেখা পাঠাতাম। কোনওটা মনোনীত হত, কোনওটা হত না। এখন কেউ চাইলে অবশ্যই দিই, কিন্তু নিজে থেকে দিতে আগ্রহবোধ করি না। কিন্তু ফেবুতে নিয়মিত লেখার পর ভাবলাম মানুষ লেখা পড়বে, এর চেয়ে বেশি কিছু আমি চাই না। অতএব এই প্ল্যাটফর্মেই লিখি। আর কোনওদিকে সেভাবে যাবো না। তবে আমি নিজেও একটা ম্যাগাজিন উদ্যোগের সাথে যুক্ত ছিলাম, 'Mag-মা' নামে
আমি শুরু থেকেই লাইমলাইট খুব বেশি পছন্দ করি না। কেউ আমায় 'ফেবুসেলেব' ব'লে ট্যাগিয়ে দিয়ে মিশতে এলে অস্বস্তি হয়।
১০.)
কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায় "লেখার জন্য পড়ার অভ্যেস দরকার"। এই বিষয়ে তোমার বক্তব্য?
সূর্যঃ- যথার্থ পড়ার অভ্যেস না থাকলে নিজস্ব লেখার ক্ষেত্রে উন্নতিসাধন অসম্ভব। যে মানুষ পড়তে শেখেনি সে কখনো লিখতেও শিখবে না।
১১.)
কাপলেট লেখার জন্য কিছু মানুষ বললো আহা, দারুণ ইত্যাদি আর কিছু নিন্দুকেরা বললো 'হ্যাঁ অজুন তো কেবল দুই লাইন লেখে। এই নিন্দুকদের কী বলতে চাও?
অর্জুনঃ- আমি নিয়মিত দু'লাইন লিখতাম, এটা তো সত্যি কথা। কিন্তু সমালোচনা করার হলে শুধু এটুকু কথা দিয়ে করা যাবে না, কারণ দু'লাইন লেখায় লেখকের কোনও লজ্জা থাকা উচিৎ না। দু'লাইন খারাপ না ভাল, সেটা নিয়ে বললেও ঠিক আছে।
আর প্রশংসা পেতে কার না ভাল লাগে! আমারও খুব ভাল লাগে। তবে আমি চাই প্রতিদিন আমার মন রাখার জন্য খাঁজা লেখার নীচে 'উফ', 'আহা' না করাই ভাল। তারা যদি আমায় স্নেহ করে, তাহলে তাদের সমস্ত রকম মতামত আমার লেখার নীচেই প্রকাশ করুক, বা ব্যক্তিগত ভাবে প্রকাশ করুক। এতে আমি ভুলত্রুটি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করতে পারবো।
১২.)
'তাসলিমা নাসরিন' একজন বড়ো মাপের কবি অথচ তার ঘরে ফেরার পথ বন্ধ। সূর্য দা তোমার ব্যক্তিগত মতামত থেকে বলো 'তাসলিমা নাসরিনকে' বাড়ি ফিরতে দেওয়া উচিত?
সূর্যঃ- একজন মানুষ দিনের শেষে নিজের ঘরে ফিরতে চাইলে তুমি আমি সেই বিষয়ে মতামত প্রকাশ করার কে'ই বা হই বলো!
১৩.)
শ্রীজাত বন্দোপাধ্যায়ের বির্তকিত কবিতার অতি বিতর্কিত শব্দ 'কন্ডোম'। এরপর থেকে তাঁকে বহু প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে বিরাজ করতে হচ্ছে। তাহলে বাক্ স্বাধীনতা কোথায় অর্জুন দা?
অর্জুনঃ- বাক্ স্বাধীনতা শব্দটা কেমন মিথের মতো শোনায়। ওসব নেই এখন আর। অফিসের বসের সামনে, স্টুডেন্টের গার্জিয়ানের সামনে, ক্ষমতাশালী রাজনৈতিক নেতার সামনে আমাদের নিজেদের আদর্শের সাথে করা বেইমানিগুলো আমাদের বাক্ স্বাধীনতার গলা টিপে ধরে, আরও ধরবে।
আর হ্যাঁ, কন্ডোম প্রসঙ্গে বলি। যে দেশে কন্ডোম একটি বিতর্কিত শব্দ, সেখানে গত বারো বছরে শুধুমাত্র নথিভুক্ত সাড়ে তিনলক্ষ ধর্ষণের সংখ্যাটা স্বাভাবিক।
১৪.)
অনেক প্রশ্ন হলো এবার এই রাউন্ডের নাম
[ কবিরা কেমন পাঠক দেখি]
ক.)
"পুড়ে গিয়ে অ্যাসিডেও, চিৎকার করে গেলো পাখি"--- লাইনটি কার লেখা?
অর্জুনঃ- পড়িনি বোধ হয় ভাই, বা পড়লেও মনে পড়ছে না।
খ.)
"তাইরে নাইরে নাইরে। আমি শরীর বেচে খাই রে"---- লাইনটি কার লেখা ?
সূর্যঃ- শিলাজিৎ সম্ভবত...
গ.)
"সারাটা দিন জুড়ে তুমি আনাগোনা করেছ সেই সুরে তার রঙ লেগে আছে"....লাইনটি কার লেখা?
অর্জুনঃ- অনুপম রায়, বোবা টানেল, চতুষ্কোন।
ঘ.)
"ভাসবে নাকি ঝরবে হঠাৎ? সম্মতি নেয় চাঁদও" --- লাইনটি কার লেখা?
সূর্যঃ- এটা জানা নেই আমার...😁। কার লেখা।
১৫.)
অনেকে আছেন যাঁরা রাতে কবিতা লিখতে পছন্দ করেন। কবিতা লেখার জন্য তোমাদের এমন কোনো specific সময় আছে?
অর্জুনঃ- আমার নেই। তবে পড়ানো থাকে সারাদিন, রাতেই স্থির হয়ে ভাবতে পারি। কখনও দিনে সময় পেলেও লিখি। সেরকম OCD নেই।
সূর্যঃ- সেরকম করে কখনো ভেবে দেখিনি। যখন সময় থাকে হাতে, লিখতে ইচ্ছে করে তখনই লিখি।
নিয়ম এবং সময় বেঁধে আর যাই হোক কবিতা লেখা সম্ভব বলে তো আমার মনে হয় না।
১৬.)
যারা স্টুডেন্ট এবং ফেসবুকে লিখছে আর তাতে করে তারা ভালোই নাম করেছে। এখন তাদের addiction তৈরী হচ্ছে এই মনে করে যে আজ একটা লেখা লিখতে হবে, কমেন্ট কুড়োতে হবে। এটা করতে গিয়ে তারা তাদের পড়াশোনার ক্ষতি করছে। তাদের জন্য কি পরামর্শ দিতে চাও অর্জুন দা?
অর্জুনঃ- যেটা বলছি, সম্পূর্ণটাই আমার ব্যক্তিগত মতামত।
পড়াশুনো বা কেরিয়ার নিয়ে চিন্তা এবং একাগ্রতাটা সবার আগে। আমি নিজে মনে করি, কবিতা আমার ভাত জোটাবে না৷ আর জোটালেও বিভিন্ন মহলে আমায় যে চাটুকারিতা করতে হবে, সেটা আমি পারবো না। তাই আমি প্রেফার করি, আর বাকিদেরও বলি, পারলে অন্য প্রফেশনে নিজেকে স্টেবল ক'রে ফাঁকা সময়ে কবিতা লেখো। লেখালেখি সব বয়সেই করা যায়।
১৭.)
ফেসবুকে লিখতে এসে একটা দারুণ সমস্যা হয় প্রায় সবার, সেটা হলো লেখা চুরি হওয়া।
এই সমস্ত চোরদের কি বলতে চাও সূর্য দা?
সূর্যঃ- কিচ্ছু না। যে মানুষ শিল্পের কদর বোঝে না সে এখন তোমার আমার এই কথোপকথন পড়ার জন্যেও বসে নেই। সে এতক্ষণেও নিশ্চয় অন্যকারোর কোনো লেখা কপি করে সেটাকে এডিটিং অ্যাপে ফেলে পেস্ট করে তার তলায় বাঁকা হরফে নিজের নাম বসাতে ব্যস্ত।
১৮.) লাস্ট রাউন্ড
[ না বললে চলবে না ]
ক.)
কে প্রিয় 'অভিক রায়' নাকি 'শ্রীজাত বন্দোপাধ্যায়'?
সূর্যঃ- ওনাদের জীবনবোধ...
খ.)
'রেজমান' নাকি 'কৃপা বসু'?
সূর্যঃ- স্পষ্টবাদী রেজমান...
গ.)
'সুজয়নীল দা' নাকি 'সত্যজিৎ রায়'?
অর্জুনঃ- এক্ষেত্রে দু'ভাবে দু'জন। পরিচালক হিসেবে সত্যজিৎ রায়, আর দাদা হিসেবে সুজয় দা। কারণ সত্যজিৎ রায়ের সাথে আমার ব্যক্তিগত পরিচয় ছিল না।
ঘ.)
'আজাহারুল ইসলাম' নাকি 'অনুব্রতা গুপ্ত'?
অর্জুনঃ- অনুব্রতা গুপ্ত
★শেষে জানতে চাই তোমাদের কেমন লাগলো আজকের এই "এক নয় এক জোড়া বৈঠক"★
সূর্যঃ- ভীষণ ভালো লাগলো রে।
তোর এই বৈঠক চলতে থাকুক। আমাদের মতোই আরও অনেক মানুষের সাথে কথা হোক তোর, যাদেরও স্বপ্ন দেখার শুরু হয়েছে সবেমাত্র। পরিচিত হ তাদেরও মতামতের সঙ্গে। লিখতে থাক তাদের কথাও।
খুব ভালো থাক তুইও...
অনেক ভালোবাসা রইলো আমার আর তোর কাজের প্রতি আরও অনেক শুভেচ্ছা। ❤
অর্জুনঃ- দারুণ লাগলো ভাই, আমি আসলে এটা ইন্টারভিউ বা ওরকম হিসেবে বলিইনি৷ তুই আমার ভাইয়ের মতো, তুই জানতে চেয়েছিস, ব'লে গেছি যা যা মনে হয়েছে। ❤
ধন্যবাদ ভাই। অনেক শুভেচ্ছা জলফড়িংয়ের জন্য। ভাল থাকিস। শুভরাত্রি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন