ভিড় থেকে সরে আসি। সমুদ্র জানে না কারও নাম। অনেক লেখার শেষে সাদা পাতা এখনও আরাম...শ্রীজাত

মঙ্গলবার, ২৩ জুন, ২০২০

চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছেন কবি অর্ঘ্য কমল পাত্র এবং কবি অস্মিতা মুখার্জী

এঁটো বান্ধবীকে
কবি অর্ঘ্য কমল পাত্র

কোনো স্ফুলিঙ্গ নেই।

তোমাদের একসাথে দেখে
বুঝতে পারি—
তোমার প্রেমিক আসলে ক্যালেন্ডার।

যাকে হারিয়ে দেবো ভেবে
প্রতিবছর শুধু শুধুই দিন গুনি আমি...

বি.দ্রঃ- কবি অর্ঘ্য কমল পাত্র এই লেখাটি লিখে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন কবি অস্মিতা মুখার্জীকে।




আর কবি অস্মিতা মুখার্জী চ্যালেঞ্জ অ্যাকসেপ্ট করে লিখেছিলেন স্পর্শ কবিতাটি।

স্পর্শ
কবি অস্মিতা মুখার্জী

ছুঁতে হলে এমনি করে ছোঁও,
এমন করে, যাতে শেষ দিন  অবধি
তোমার ছোঁয়াটুকু মনে করে রাখতে পারি।।

গর্ব করে, আনন্দ করে বলতে পারি
তুমি একটু হলেও অনেকখানি ছুঁয়েছিলে আমাকে.. এখনও ছুঁয়ে আছো।

প্রত্যেকবার এমনি করে ছুঁও,
সত্যি বলছি, আমার ভাল লাগে
আমি কিচ্ছু মনে করি না।।



ছোটবেলার রথযাত্রা : প্রীতম রায়



ছোটবেলার রথযাত্রা
 প্রীতম রায়

 ছোটবেলা থেকেই একা বড় হওয়ার সাথে সাথে ইচ্ছে জেদ দুটোই খুব বেশি ছিল।চাইতেই পেয়ে যেতাম হাতের মুঠোয়। ভালো খারাপ বোঝার বোধ টা তখন কোথায়? ছোট্ট মনে একটাই প্রশ্ন তখন ঘোরাফেরা করতো ওর এটা আছে সেটা আছে আমার কেন নেই?
তবে বড় হয়ে ওঠার সাথে সাথে ইচ্ছে গুলো কোথায় যেন হারিয়ে গেল, পড়াশুনা আর মোটা সোটা নোটবুকের মাঝে, মুখস্থ করে রাখা থিওরি গুলোর মাঝে।
ভুলেই গেছি শুভ র দেখা দেখি বাবার কাছে জেদ করে রথ কেনার কথা।আগে রথ কিনে দাও পড়ে খেতে বসবো মায়ের সাথে আড়ি করা আরও কত কি,মনে মনে নিজেই যখন দেখি আমার চেয়ে তেরো বছরের ছোট বুবু কে একইরকম জেদ করতে।কাকা বলে বুবু টা ঠিক তোর মতই হয়েছে।জেদ করে ও কাকার থেকে রথ কিনলো ওর রথ টা আমি সাজিয়ে দিলাম মার্বেল পেপার আর গাঁদা ফুলের মালা দিয়ে।যেভাবে বাবা সাজিয়ে দিয়েছিল ছোটবেলায় রথটাকে।তারপর জগন্নাথ, বলরাম আর সুভদ্রা কে সাথে নিয়ে ঘুরলাম এপাড়া সে পাড়া,তারপর সন্ধ্যে নামার পর বায়না মেটাতে যেতে হল রথের মেলায়।কিনে দিলাম জিলিপি আর পাঁপড়।
নিয়ম মাফিক বাঁচতে বাঁচতে অনেকদিন পর ভালো লাগা খুঁজে পেলাম ছোট ভাইয়ের বায়নায়। ঘুরে দেখলাম নিজের ছোটবেলার দিনগুলো ওর রথযাত্রায়।



নবারুণ সংখ্যার সূচীপত্র

নবারুণ সংখ্যার সূচিপত্র  

কবি                         সৃষ্টি
মলয় পাল          কুসুমের রং প্রেম
মুনমুন চক্রবর্তী   এসো আমার গাঁয়ে               
প্রনব রুদ্র                 অর্ধেক ওভার রুট             
বদুরোদ্দেজা শেখু        চৈতি চাঁদের কাছে
অঙ্কুশ ভৌমিক               প্রতিপক্ষ       
 শ্রেয়া রায় চৌধুরী       একলা নবারুণ
হারদিক কিশলয় গুপ্ত    প্রিয় শত্রু
সুনন্দ মন্ডল                ফিনিক্স
 সায়ক দাস                 ফিনিক্স

প্রবন্ধ                         বিষয়

ঈশিতা মন্ডল            ডিপ্রেশন ও বন্ধুত্ব

গল্প
পাপিয়া মন্ডল                 মনের ওপর

ছবি
সায়ন্তিকা খাঁ               করোনা পরিস্থিতি 

রবিবার, ২১ জুন, ২০২০

সাপ্তাহিকের সম্পাদিকা : প্রেমা নাহা বসাক

নমস্কার,
 আমি প্রেমা নাহা বসাক। জলফড়িং আয়োজিত 'আপনিই সম্পাদক আপনিই কবি' সাপ্তাহিক সংখ্যা বিভাগে এই সপ্তাহে আমায় সম্পাদনার ভার অর্পণ করা হয়েছে। যার জন্য জলফড়িং ওয়েব ম্যাগাজিন- কে আমি আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি।

এই সপ্তাহে সাপ্তাহিক সংখ্যায় লেখার বিষয় হিসেবে আমি 'একাকীত্ব- অবসাদ অথবা নিজের মতন বাঁচা' বিষয়টিকে নির্বাচন করেছি। আমরা আধুনিকতার গাড়িতে চড়ে বহুদূর এসেছি কিন্তু পথে একা থেকে ভীষণ একা হয়ে পড়েছি ক্রমশ। ভার্চুয়াল জগতে বন্ধুর অভাব নেই, কিন্তু বাস্তবজীবনে প্রতিযোগিতার খেলায় মেতে হয়েছি একে অপরের শত্রু। মন ভাঙতে ভাঙতে এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে তা আর জোড়া লাগেনা। সব আছে তবু কিছুই নেই। ভীড় ঘিরে আছে তবু ভেতরে ভেতরে সকলেই ভীষণ একা।

 এই একাকীত্বের গভীর শূণ্যতায় জন্ম হচ্ছে মানসিক অবসাদের মতো স্লো পয়সন। যাতে মৃত্যু অনিবার্য। কিন্তু ভাবার বিষয় এখানেই। আমরা কি আমাদের ইচ্ছাশক্তি দিয়ে পারিনা একাকীত্বতে অবসাদের দিকে নয়, ভালো থাকার দিকে হাত বাড়াতে? নিজের মতন করে , নিজের শর্তে এবং নিজের ভালোলাগা গুলোকে নিয়ে বাঁচতে? দুটো পথ .... বাছতে হবে যে কোনো একটা - মরণ অথবা জীবন - হেরে যাওয়া অথবা লড়ে যাওয়া - অবসাদ অথবা নিজের মতন বাঁচা।

 এই ভাবনায় তৈরী হয়েছে এই সপ্তাহের আমাদের কবিদের কথা ও কলম। সকলকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ ।

কবিতায়: পাখি পাল

একাকীত্বের বাসা
পাখি পাল

মনের ঘরের কোণে
একাকীত্ব বাসা বেঁধেছে আনমনে
যতই সাজাই খেয়াল-খুশির ঢঙে..
বার বার আঘাতে হৃদয় ভাঙে
বলার তো ছিলো অনেক কথা..
 লুকানো যা ছিলো বিরহ-ব্যাথা
 কিন্তু শোনার মানুষ কই..
শত কোলাহলেও তাই একলা হয়েই রই
জীবন সমুদ্রে বড় একা আজ..
যতই থাকুক হাসিমাখা সাজ
আজ আবেগগুলো কফিন বন্দি..
অভিযোজনের নামে চলছে শুধু সন্ধি
প্রতিটা দিন শুধুই কাটছে..
দিনের খিদে শুধু খাবারেই মিটছে
 অনুভূতির পিপাসাগুলো গলা শুকিয়ে মরে..
 বিচারগুলোয় হাজিরা দিয়ে একটু একটু করে
দিনের শেষে রোজনামচা জীবন..
জলের আঁকি-বুকিতেও দেখে দহন
তবু, বাঁচার মত করে বাঁচার করছি খোঁজ..
 ইচ্ছেশক্তির-দীপে তাই তেল ঢালি রোজ।



কবিতায় : আমিমোন ইসলাম

 মন খারাপের দিন
 আমিমোন ইসলাম

 যখন খুব মনে পড়ে তোমায়,
 কিন্তু তুমি করছ স্কুল কামাই।
সেটাই বুঝি মন খারাপের দিন,
সাদাকালো দেখি যা কিছু রঙিন।

স্কুলে যখন পুজোর ছুটি পরে,
আমার আকাশ মেঘলা মেঘলা করে,
মন-খারাপ সারা শরীর জুড়ে।
কাশ ফুলেও তোমায় মনে পড়ে।

 স্কুলের যেদিন শেষদিন, মাধ্যমিকের পরে,
 তোমার কথা রয়ে গেল, মন কেমনের ঘরে।
 ওটাই বুঝি মন খারাপের দিন,
 রঙিন স্মৃতি আজ বেরঙিন।



কবিতায় : সুনন্দ মন্ডল


একান্তে আত্মার বিলীন ‎
 সুনন্দ মন্ডল

 একা, একাকী
          একাকীত্ব
 পুষে রাখা অশান্তি
        মানসিক দোটানা।

  অবসাদ
      অবনমন
 জীবন্ত চিতা
     বুকে দহন

খনন, নিঃসরণ
    বিদগ্ধ বীজ  ‎
    নিজের মতো বাঁচা!

 নিজেকে অনেকখানি ভাঙতে ভাঙতে গড়তে হয়।

 অচেনা আত্মমুখীনতা
    ধ্বংস করে দেয় মন
 ‎  একান্তে আত্মার বিলীন ঘটায়।

অস্তিত্বের সংকটে বিবেক জ্বলতে জ্বলতে
 আর কতখানি পুড়লে
মৃত্যুর লাল সিঁড়ি দেখতে পাওয়া যায়?



কবিতায় : জয়ীতা চ্যাটার্জী

একা
জয়ীতা চ্যাটার্জী

আমার ডিঙি নৌকো ভাসিয়ে দিলাম ছলাৎ ছল জলে,
ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়ে আসে ঘর বাড়ি যেনো
তীর রেখা কথা বলে,
ওপরে চেয়ে দেখি তারকা মথিত আজ আকাশ
সেজেছে মহারূপে,
আমার ডিঙি নৌকা ভেসে চলেছে একা আপন মনে,
চিকচিকে বালি ধূলো ঘুমিয়ে পড়েছে অন্ধকারে,
আমিও চিৎ হয়ে শুয়ে আকাশ দেখি ছড়ানো পাটাতনে।
যতদূর দেখা যায় সেই চেনা ছবি,
ভুলে যাই সব ক্ষত সমস্ত আঘাত,
শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঝরে পড়ে মিহি শিশিরের কণা,
আমার শেষ নিঃশ্বাসের পাশে এসে বসে
প্রথম নিঃশ্বাস আর সমবেদনা।

কবিতায়: রথীকান্ত সামন্ত

নিত্যবিষাদ
রথীকান্ত সামন্ত

মনখারাপের পদ্য জমে মেঘলা দিনে।
হঠাৎ ঝড়ে মগ্ন ধুলো পাগলপারা,
খোঁজ থাকে না কোথায় কখন ঝরলো তারা,
পড়লো বেলা, এলো না কেউ এপথ চিনে।
বিষন্নতা ঘনিয়ে ওঠে মেঘলা দিনে।
মুখ বোজা আর মাথায় অলীক চিন্তাবমন।
মন্দশ্বাসে আবছা হলো কাঁচের দেওয়াল,
বাকি থাকে অশ্রুরাশির হিসাব নেওয়া,
পৃথিবীতে চলতে থাকে আত্মরমণ ঝড়ের নামে ।
বাড়তে থাকে চিন্তাবমন। 
হয়ে পড়ি একলা আরো। প্রেমও উধাও।
মুখে নিই হাসির মুখোশ, কান্না পিছে,
এভাবেই বাঁচার নাটক দীপের নীচে,
গোঙানির প্রতিধ্বনি জাগায় ক্ষুধা স্তব্ধতাতে।
ঠিক তখনই প্রেমও উধাও।
গেঁথে রাখি শেষ ক' কথা কঠিন পিনে–
বেঁচে আছি কেমন করে বিষাদ যুঝে।
অবসাদে রাঙাই নেশা মাত্রা বুঝে।
ঝোড়ো হাওয়া এলেই আমার অন্তরিনে ঝিমিয়ে পড়ে।
 আমার বিষাদ নিত্যদিনের।



কবিতায় : প্রীতম রায়

খোঁজ
প্রীতম রায়

খুঁজে দেখলে রাস্তাগুলো
কোথায় গিয়ে শেষ হচ্ছে,
বাঁ চোখে তখনও স্বপ্ন হাজার
করতালিরা কান পেতে শুনছে।
ডান চোখের নীচে তখন আসমুদ্র হিমাচল
গভীর খাত পিচ্ছিল রাস্তায় শ্যাওলা জমে
হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে।
বাইরে তখনও বৃষ্টি অনবরত ঝাপটা
জানলার ওপারে দুটো কাকের কথোপকথন
ঠায় বসে গিলছে অজানা শব্দ গুলোকে
এপারের তোলপাড় থামাতে।



বুধবার, ১৭ জুন, ২০২০

ফাউন্ডারের বাউন্ডারি




             ফাউন্ডারের বাউন্ডারি

ফেসবুকের আঙিনায় সাহিত্যের কাছে পেজ হিসেবে যারা ছাপ ফেলছে প্রতিনিয়ত তাদের মধ্যে অন্যতম পাঁচ পেজের ফাউন্ডারেরা রয়েছেন এখানে।
('কালপুরুষ' পেজের ফাউন্ডার  ডাঃ রিমো নস্কর , 'লাফালাফি' পেজের ফাউন্ডার FJ ROY,  'লেখালেখি' পেজের ফাউন্ডার  বিদিশা ভট্টাচার্য্য, 'আন্তরিক' পেজের ফাউন্ডার দেবায়ন চট্টোপাধ্যায়,  'এক কাপ কলকাতা' পেজের ফাউন্ডার উজান গুহ)

আর আপনারা পড়ছেন 'ফাউন্ডারের বাউন্ডারি'।

জলফড়িং-এর পক্ষ থেকে প্রথমেই স্বাগত জানাই তোমাদের।


১.) সমস্ত পেজের নিজস্ব কালচার রয়েছে একটা মূলমন্ত্র রয়েছে। কোনো পেজ একধরনের লেখা পোস্ট করে তো অন্যপেজ অন্যধরনের লেখা।
আমি জানতে চাইব সবার কাছ থেকে তোমাদের নিজস্বভাবে কোন ধরনের লেখা পোস্ট করার মন্ত্র গ্রহণ করতে হয়েছে।

কালপুরুষঃ- কালপুরুষ বাংলা সাহিত্যের সব বিভাগকে সমানভাবে গুরুত্ব দেয়। গল্প, কবিতা, পর্ব গল্প (বা সিরিজ), কাপ্লেট, কথোপকথন সব দিকটাই দেখা হয়। তবে এখনকার টু লাইনার, ফোর লাইনারের রমরমার দিনেও আমরা বিশেষভাবে সতর্ক থাকি বড় লেখা মানে গল্প, সিরিজ বা বড়ো কবিতার প্রতি। ইদানিং, আমরা শিশু সাহিত্যেও মনোনিবেশ করেছি।


লাফালাফিঃ- আমি একটু অন্য ভাবে বলি। ইলেকট্রনিক কোনো জিনিস বা যে কোনো জিনিসের ক্ষেত্রে বিভিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন ভাবে বেচার চেষ্টা করে। কিন্তু দিনের শেষে জিনিসটা তো একই। সাবান বলো, জুতো বলো, জামা কাপড় বলো।

তাই আমি মনে করি ভাব প্রকাশ এক হলেও আমরা যেটা করি সেটা হলো একটা জিনিসকে কিভাবে একটু অন্য ভাবে রিপ্রেজেন্ট করা যায়।

লেখালেখিঃ- কোনো একধরনের লেখা সেভাবে নির্বাচন করার মন্ত্র গ্রহণ করিনি। তবে লেখালেখি থেকে নস্টালজিক লেখা সব থেকে ভালো লাগে ফলোয়ার্স দের, আমারও ব্যাক্তিগভাবে সেধরনের লেখাই বেশি পছন্দের। তবে একটা পেজের মাধ্যমে পুরোপুরিভাবে সাহিত্য চর্চা কোনোদিনই হয় না। প্রয়োজন আর প্রিয়জনের মধ্যে তো একটা পার্থক্য থাকেই। হ্যাঁ, তবে সেটা কখনো মার্জ করে যা। তবে পেজের মূলধন মানে ফলওয়ার্সরা কেমন পছন্দ করছে সেটা বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখার চেষ্টা থাকে।

এক কাপ কলকাতাঃ- পেজ কালচারটির সাথে বেশ অনেক দিন ধরে আছি। যা দেখে এসেছি বেশির ভাগ ৪-লাইনার কবিতা বা অন্যান্য লেখা পোস্ট হয় ৮০শতাংশ পেজে।
তাই আমরা ১০০০০ হবার পর ঠিক করি যে না একটু কবিতা বা ৪-লাইনার বা ৬-লাইনার থেকে বেরিয়ে স্মৃতিচারণ বা ডেস্ক্রিপ্টিভ টাইপের কিছু লেখা লিখলে কেমন হয়।যেটা অনুগল্পও না আবার বড়ো গল্পও না জাস্ট একটা স্মৃতিকে তুলে ধরা। তারপর থেকে আমরা বাঙালিয়ানা বা কলকাতার কালচার এর উপর  টপিক ঠিক করি এবং তার উপর লেখালিখি করা শুরু করি।
যেমন - ছোটোবেলার দাদু বা দিদার কাছে গল্প শোনার স্মৃতি বা স্কুলে টিফিন ভাগ করে খাওয়া বা টিচারদের ব্যাঙ্গো করে ডাকার স্মৃতি এছাড়াও অন্যান্য। তো মোদ্দা  কথা হলো আমরা ঠিক করি আমাদের এক কাপ কলকাতা এমনিতেও সাহিত্যের পেজ নয়,তাই মানুষদের একটু অন্য রকম কিছুর স্বাদ দিলে কেমন হয়। এইটুকুই।


আন্তরিকঃ- আমরা বেশির ভাগই এমন লেখাকে গুরুত্ব দিই যে লেখা পাঠক খুব সহজে কানেক্ট করতে পারবে এবং তার মধ্যে সাহিত্যের বিভিন্ন অংশকেই কমবেশী তুলে ধরার চেষ্টা করি।


২.) প্রথম পেজ করার কথা বা প্ল্যান কীভাবে মাথায় আসে? এক এক করে সবার কাছ থেকে উত্তর নেব।

লাফালাফিঃ- ১১.১১.১৪ তে লাফালাফি শুরু হয় একটা জোকস ওয়েবসাইট হিসাবে। যেখানে রোজ জোকস যাবে এই পরিকল্পনা নিয়েই আমরা এগোই। নাম টা দ্বীপ দিয়েছে। আমি দিইনি। লাফালাফি ইংরাজিতে বললে হাসাহাসি করা আর বাংলাতে বললে লাফানো-ঝাপানো।
আমরা এটা ভেবে কখনো এগোইনি যে সাহিত্য নিয়ে আমরা কিছু করবো। তখন সেই ভাবে এতো প্রচার না থাকেলও আমরা এই দিকে আসতে আসতে করে নিজেদেরকে নিয়ে আসি।

কালপুরুষঃ- এটা লম্বা ইতিহাস। বিস্তারিত বলবো না।
২০১৩-১৪ সাল থেকে তৎকালীন বিভিন্ন স্বনামধন্য পেজে কন্টেন্ট রাইটার হিসেবে শুরু। শেষ যেখানে 2 বছর আশ্রয় বা ঠিকানা করেছিলাম সেটাও বর্তমানে বেশ নামকরা এবং জনপ্রিয় পেজ। কোনও কোনও বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য বা মতের অমিল হওয়ায় বেরিয়ে আসতে চাই। তখন একপ্রকার চ্যালেঞ্জ দেওয়া হয়েছিল 'কোনোদিন দশ হাজারি একটা পেজ খুলে দেখাস।' সেটা ২০১৭ সালের মাঝামাঝি।
লেখালিখি করা তখনকার আমি জানতামও না কীভাবে কী করতে হয়। ৭-৮ মাস ধরে জানা এবং সাহস জোগাড় করে কালপুরুষের জন্ম। মাত্র 2 জন মিলে। একজন আমি, আরেকজন সোমা বসাক। আমাদের কোনও WA, messenger কোথাও কোনও grp ছিলোনা। এই দু'জন মিলেই কালপুরুষের দশ হাজার... 6 মাসে... সেখান থেকেই শুরু।

লেখালেখিঃ- আমাদের লেখালেখি একদম প্রথমে পার্সোনাল ব্লগ লেখার আইডিয়া থেকে খোলা হয়। আমাদের পেজের মেইন অ্যাডমিন শুভজ্যােতি রায়, সেই নিজের লেখার জন্য প্রথম পেজটা খোলে 28th November,2018... তারপর 30 th November কিছুজন নিজেদের ফ্রেন্ড সার্কেলের মধ্যে,তারা পেজটার ব্যাপারে জানতে পারে এবং তারা নিজেরাও লেখা দিতে চায়।তারপর আস্তে আস্তে পেজটা অনেকটা পরিচিতি পায়। অনেকে যুক্ত হয় পেজটার সঙ্গে আর একটা পরিবারের মতো প্লাটফর্ম তৈরি হয়। লেখালেখি আমাদের সকলের কাছে একটা পরিবার।

আন্তরিকঃ- আমরা কিছু বন্ধুরা মিলে চেয়েছিলাম নতুন কিছু করতে, তবে কখনও বৃহত্তর ভাবে কিছু ভাবিনি, আমাদের ইচ্ছে ছিল সাহিত্য এবং সংস্কৃতি বিষয়ক একটা গ্রুপ তৈরি হোক।
এরপর আস্তে আস্তে অনেক মাথা এসে জড়ো হয় এবং এগিয়ে নিয়ে চলে আন্তরিককে।

এক কাপ কলকাতাঃ- এইটা খুব কঠিক একটা প্রশ্ন আমার জন্য অন্তত।
এটুকু বলতে পারি আমি সাহিত্য চর্চার পেজ কোনো দিনও বানাতে চাইনি,আজও যদি কেউ বলতে আসে কোথায় তোদের পেজ এ সাহিত্যের "স" ও তো দেখিনা তখন আমি হেসে উত্তর দি যে "এক কাপ কলকাতা" কলকাতার পেজ,বিশেষত কলকাতাকে এক্সপ্লোরেশন এর জন্য তৈরি,তাই এখানে সাহিত্য না পাওয়াটাই স্বাভাবিক।
তো উত্তরটা একটাই আমারা কলকাতা,মেনলি বাঙালীদের কালচারটা'কে বাঙালিদের কাছে নতুন ভাবে প্রকাশ করার জন্যই এই পেজ এর সৃষ্টি।
এছাড়াও এর আগে আমার আরো একটি পেজ ছিলো যদিও তবে সেটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই নতুন পেজ খোলা প্রায় ১বছরের ব্রেকের পর।

৩.) কালপুরুষের থেকে জানতে চাইব। পেজ মেম্বারদের অনেক সময় মানুষজনকে ইনভাইট করে দেওয়ার জন্য অ্যালার্ট করতে হয় কোর টিম থেকে। এটাকে পেজের সার্থকতা বলা যায় নাকি ব্যর্থতা?

কালপুরুষঃ- এটা কমবেশি সমস্ত page ই করে থাকে। আমরা যারা page boost এর বিরোধী (আবার বললাম, page boost, পোস্ট boost বলিনি) তাদের কাছে সম্বল বলতে নিজেদের কন্টেন্টের উপর বিশ্বাস, আর নিজেদের সদস্যরা। এতে অনেকে অনেক সময় বিরক্ত হলেও, আখেরে লাভ তাদের। তাদের লেখাই আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারা যায়। আরও বেশি মানুষ দেখতে পান তাদের কাজ।
এটার সাথে সাফল্য বা ব্যর্থতার কোনও সম্পর্ক আমি দেখি না।

৪.) লাফালাফির কাছ থেকে জানতে চাইব  সত্যিই কী একটা পেজ ভালো কাজের জন্য নাম করে নাকি পিছনে content writer এর উপর কোনোরকম froce থাকে অ্যাডমিন প্ল্যানেল থেকে শেয়ার বা কমেন্ট বা লাইক করার জন্য।

লাফালাফিঃ- আচ্ছা। সত্যি বলতে আমরা প্রত্যেক মেম্বারদের বলে রেখেছি যে নিজেরা কমেন্ট করে পেজ যেনো না ভরায়। মোট কথা কমেন্ট করা ব্যান। সেটা করবে যারা আমাদের অনুগামী, যারা আমাদের সমালোচনা করবে।

যখন শুরু হয় তখন আমরা বলতাম লাইক এবং শেয়ার করার জন্যে। কারণ প্রথম প্রথম কেউ জানতোই না। পরে সেটা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
হ্যাঁ কিছু কিছু জিনিস আছে যেগুলি শেয়ার করতে বলা হয়, যেই রকম কোনো এনজিও নিয়ে কাজ, কোনো তহবিল এর ব্যাপার থাকলে ইত্যাদি।
আমরা মনে করি আমাদের কে অনেকটা পথ চলতে হবে। এবং সেটা সবাইকে করতে হবে।
আমি একটা লেখা লিখে দিলাম সেটা শেষ নয়, সেটা ভালো লেখা না খারাপ, সেটার গ্রাফিক্স ঠিক আছে কিনা ইত্যাদি এই সব অনেক কিছু আছে যেটার ওপর ভিত্তি করে এগোতে হয়।
আর আমরা নাম করার জন্যে এগোইনা। এটা অনেকেই খিল্লি করে কিন্তু এটাই সত্যি। ভালো কাজ করলে আলাদা করে সেখানে প্রমোশন করতে লাগেনা। এটাই বলার।


৫.) লেখালেখির কাছে জানতে চাইব একটা পেজ সত্যিই কি without boost প্রতিষ্ঠিত হতে পারে?

লেখালেখিঃ- হ্যাঁ, এই প্রশ্নটা আমাদের পেজের জন্য সত্যিই যথাযথ। আজ পর্যন্ত কোনদিনও পেজ boost করানোর দরকার পরেনি। আর তাতেই আমরা 1 lakh ফলোয়ারস ক্রস করেছি খুব অল্প সময়েই। পেজ প্রতিষ্ঠা হওয়ার জন্য basic যে জিনিস গুলো প্রয়োজন হয়েছে সেগুলো হলো কন্টেন্ট creaters দের dedication,এবং সেটা পেয়েওছি সময় সময়। কখনোই জোরপূর্বক কাউকে লেখা দিতেই হবে কিংবা শেয়ার করতেই হবে এরোমটা করা হয় না। So without any boost page is going very well till now।
আর এই বিষয়টা আমরা ভীষণভাবে খেয়াল রাখি কি চলছে এখন আর কেমন পোস্ট ভালো লাগবে সবার। কারণ আমাদের পেজ 10k থেকে 40k তে পৌঁছায় একটা পোস্টের জন্য আর সেটা হলো types of bong রমণী।

৬.) এক কাপ কলকাতার থেকে জানতে চাইব যে আমরা জানি কবিদের বেঁধে রাখা যায় না কিন্তু একজন মানুষ একটা পেজের পাশাপাশি অন্য পেজেও জয়েন করে আর এটা করতে গিয়েই নানান সমস্যা হয়।  এই সমস্যা দূরীকরণের জন্য as a founder তোমার মতামত কী?

এক কাপ কলকাতাঃ- প্রথমে বলবো "কবি" শব্দটা খুব কঠিন। কজন কবি হতে পারে সেটা আমার জানা নেই।
আমি লেখক হিসাবে এগোলাম।
হ্যাঁ এটি একটি সমস্যা বটে। তার জন্য কিছু পেজ পদক্ষেপ নিয়েছে যে তাদের পেজ ছাড়া আর দুটি বা তিনটি পেজে থাকা যাবে।যেমন রয়দা মানে লাফালাফিতে আছে বা দলছুটেও আছে বা গ্রন্থকীট-এও রিসেন্টলি শুনতে পেয়েছি,যদিও কালপুরুষে এইটা নিয়ম করা হলেও এখন নিয়মটি নেই।
এবার ব্যাপারটা সবচেয়ে বেশী সমস্যা দেয় আমাদের পেজের পরিচালকদের। এরা কি করে, এই পেজে সিলেক্ট হলো না তো অন্য পেজে বা আর একটি পেজে তাদের কন্টেন্ট দিয়ে দেয়।এবার এদের মধ্যে অনেকে আছে যে তারা জানেই না যে এক লেখা বা ছবি দুটো পেজে দেওয়া যায় না। ফলে কি হয় পেজে পেজে ঝামেলা লেগে যায়।এই তুই আমাদের লেখা কেনো নিয়েছিস এই নিয়ে।
আমার নীতিগত ভাবে দেখতে গেলে আমার মত যে লেখকরা তো আমাদের পেজের পার্সোনাল  property  নয় তাই তাদেরকে আমরা কখনই বলতে পারিনা ভাই তুই ওই পেজে যাবি না বা আমাদের পেজে থাকলে অন্য পেজে থাকবি না।হ্যাঁ যদি আমরা তাদের বেতন দি, তবে এটা আমরা বলতে পারি।এটা সম্পূর্ণ আমার নিজস্ব মতামত।
তো এখন থেকে নয় আমাদের পেজ পরিচালকদের কঠোর হতে হবে যে ভাই তুমি ১০টা পেজে কেনো ১০০ টা পেজে থাকতে পারো কিন্তু সময় মতো এখানে কন্টেন্ট দিও, অন্য পেজের কাজের জন্য এখানে ইনঅ্যাকটিভ হলে আমরা রিমুভ করতে বাধ্য হবো।

৭.) অ্যাডমিনে অ্যাডমিনে ঝামেলা বা কনটেন্ট রাইটারদের সাথে। আবার পরবর্তীতে গলে জল। এতকিছু সহ্য করে ফাউন্ডারকে চলতে হয়। এই জার্নিটা কেমন লাগে?  আন্তরিকের থেকে জানতে চাইব।

আন্তরিকঃ- অ্যাডমিনে অ্যাডমিনে ঝামেলা বা মত বিরোধ কখনও হয়নি, তাই পরবর্তীতে গলে জল হওয়ার কোনো ব্যাপার নেই। তবে একটা কথা বলতে পারি, আমাদের হেডস্ টিমে মতবিরোধ হয় না বলাটা ভুল কারণ সবার চিন্তা ভাবনা তো সমান নয়, তবে আমরা খুব ভালো বন্ধুত্বের জায়গা থেকে সেটা মিটিয়ে নিই।
আমরা যারা আন্তরিকের হেডস টিমে আছি তাদের পেজতুতো সম্পর্কের থেকেও বন্ধুত্বের সম্পর্ক বেশি।
 অভিজ্ঞতা মন্দ নয়, ভালো খারাপ সব রকমেরই মানুষ নিয়ে চলতে হয়।

৮.) অনেক ভালো ভালো পেজ রিপোর্ট খেয়ে বন্ধ হয়ে যায়। কেউ তো করে?
তাদের কী বলতে চাই এক কাপ কলকাতা?

এক কাপ কলকাতাঃ- হ্যাঁ বন্ধ হয়ে গেছে অনেক পেজ তারপর আবার ঘুড়ে দাঁড়িয়েছে।সবচেয়ে বড়ো উদাহরন আন্তরিক।
তো যারা এটা করে তাদের বলবো যে আপনাদের ভালো নাই লাগতে পারে,আপনারা এড়িয়ে যান বা পার্সোনাল শত্রুতা থাকলে পার্সোনালি মিটিয়ে নিন।
পেজ মানে একটি সংগঠন তার পরিচালক মন্ডলী যারাই হোক না কেনো অনেকে সারাদিন খাটাখাটুনির পর পেজটি খুলে রিল্যাক্স করে।তাদের খুশিটা কেড়ে নেবেন না কারন একটি পেজ বা একটি পেজের গায়ে "ভালো" ট্যাগটি লাগাতে আমাদের বিনা পারিশ্রমিক এ যা পরিশ্রম দিতে হয় তা ভেবে দেখার ক্ষমতাও হয়তো আপনাদের নেই।

৯.) শুধুমাত্র প্রচুর শেয়ার, লাইক, কমেন্ট ব্যস, সেটা দেখেই কী  বিচারযোগ্য যে একটা পেজ সত্যিই শ্রেষ্ঠ। লাফালাফির থেকে জানতে চাইব উত্তরটা।

লাফালাফিঃ- হিহি। আমরা এখানে যারা আছি বা যারা পেজ চালায় বা পেজের সাথে কোনো প্রকারে যুক্ত, তারা এটা মানবে যে এখানে আমরা কেউ কারুর সাথে লড়াই করতে বা কে বড়ো কে ছোট বিচার করতে আসিনি। বরঞ্চ আমি এটা বলতে পারি যে যতই ঝামেলা হোক, দরকারে সবাই সবার পাশে দাঁড়াই। আর সেটা এখনি দেখা যাবে, যেখানে আমরা সবাই সাহায্য করছি করোনা এবং আম্ফান থেকে যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
একটা পেজ যেখানে ১০ টা লাইক আছে সেখানে অনেক ভালো লেখা পাওয়া যাবে। আবার একটা ১ লক্ষ লাইক থাকা পেজেও। তাই কটা লাইক, কটা কমেন্ট দেখে কোনোদিন কোনো কিছুর গুণগত মান বিচার করা যায়না।

১০.) একটা পেজ হুড়হুড় করে বড় হলো আবার নেমে গেলো কিছুদিন পরে৷ একটা পেজকে দাঁড় করানোর জন্য কী মন্ত্র গ্রহণ বা পালন করতে হবে।  আন্তরিকের ফাউন্ডারের থেকে জানতে চাই উত্তরটা।

আন্তরিকঃ- সততা, নিজের মেম্বারদের প্রতি আস্থা এবং নিজেদের কাজের প্রতি বিশ্বাস।
কারণ, আন্তরিক হ্যাক হয়েছিল কমবেশী সবাই জানে... এই তিনটি মন্ত্র না থাকলে আন্তরিক নতুন করে শুরু করে ঘুড়ে দাঁড়াতে সক্ষম হতো না।

১১.) পেজ করতে এসে পরিচিতি বেড়ে গেলো।সেটা সমস্যার নাকি সুবিধের এক কালপুরুষের ফাউন্ডারের কাছ থেকে উত্তরটা নেব।

কালপুরুষঃ- এটা বেশ মজার প্রশ্ন। কালপুরুষের ক্ষেত্রে দশ হাজার পর্যন্ত কেউ জানতো না যে কে এডমিন! অনেকেই দিদি বলে msg করতেন পেজে।
যাইহোক, পেজ একটু বড় হলে বা বলা ভালো জনপ্রিয় হলে, বিভিন্ন পুরস্কার প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের সামনে নিজেদের নিয়ে আসতেই হয়। আমার ক্ষেত্রে তো আর কোনও দ্বিতীয় option ছিলো না। তাই আসতেই হয়েছে সামনে।
এবার আসি খারাপ, ভালোর প্রশ্নে। সবকিছুরই ভালো এবং খারাপ দুটোই থাকে। ভালো যেটা, সেটা হলো নিশ্চিন্তে মানুষের সামনে আসা যায়, পরিচয় দেওয়া যায়। নিজেদের পেজ এবং সদস্যদের সামনে থেকে অনুপ্রেরণা দেওয়া যায়।

সমস্যা অনেক-
1. কোনও page এর সবাইকে নজরবন্দি করে রাখা, কোনও এডমিনের পক্ষেই সম্ভব নয়। কোনও সদস্য কিছু ভুল করলে, প্রথম আঘাত এডমিনের উপরেই আসে।

2. পরিচিতি আর সময়ের মধ্যে একটা ব্যস্তানুপাতিক সম্পর্ক আছে। পেজের খুঁটিনাটি দেখার সময় কমে যায়।

3. দিনের কোনও নির্দিষ্ট সময় শুধুমাত্র নিজের জন্য বরাদ্দ রাখা যায় না। ভিতর বা বাইরে যে সমস্যাই হোক না কেন, ডাক সেই মানুষটারই পড়বে, যাকে মানুষ চেনে।

আরও অনেক সমস্যা আছে, বাঙালি অনেক সময় কাঁকড়াকেও হার মানায় টেনে নামানোতে... সেইসব পরে কোনোদিন আলোচনা করা যাবে।

১২.) পেজ মানে খাওয়ানো কনটেন্ট রাখতে হবে আর তার মানেই হয় প্রেয় নয় বিরহ৷ এটা কতটা বিশ্বাস করে লেখালেখি?

লেখালেখিঃ- এই খাওয়ানো কথাটা খুব অপছন্দের। এত্ত ভালো ভালো খাবার থাকতে মানুষ লেখা খেতে যাবে কেনো! আর খাওয়ানোর ব্যাপার হলে রেস্টুরেন্ট খুলতাম পেজ খুলতাম কেনো।
তবে এইটুকু বুঝতে পারি এখন মানুষের পছন্দের variety আছে। তার মধ্যে প্রেম আর বিরহ যেটা প্রতিটা মানুষের জীবনেই আসে। সুতরাং এরম পোস্ট বারবার এসেছে আর আসবেও। তবে প্রেম বিরহ ব্যতীত প্রচুর লেখা আসে আমাদের পেজ থেকে। সমাজের কিছু মানসিকতা যেগুলো পাল্টানো দরকার তার ওপরে পোস্ট আসে প্রচুর। কেনো না আমাদের পেজের বেসিক একটা মূল লক্ষ্য আছে আর তা হলো সমাজের জন্য কিছু করা, প্রতিটা মানুষের কাছে পৌঁছানো, মানুষের পাশে থাকা, সাহায্য করা।
আরেকটা কথা এ প্রসঙ্গে বলতে চাইবো আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে আসে থ্রিলার গল্প যা প্রেম বিরহ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা গোত্রের।
সুতরাং আমরা সবরকমের কন্টেন্ট রাখারই যথাসাধ্য প্রয়াস করি। আর মানুষের ভালোলাগার ওপর পোস্ট depend করে আর আগামী দিনেও করবে কারণ তারাই পেজের সম্পদ।।

১৩.) পেজ মানেই এক আত্মীয়তা। এই আত্মীয়তা কতটা জরুরী পেজের জন্য? এক কাপ কলকাতার থেকে জানতে চাইব।

উজান (এক কাপ কলকাতার ফাউন্ডারঃ)- হ্যাঁ পেজ কালচার আমায় শিখিয়েছে যে পেজ মানে একটা পরিবার, একটা বন্ধুত্ব,একটা বন্ডিং।যেটা না থাকলে পেজের পরিকাঠামো ভেঙে পরে। ইন্টারনাল  প্রবলেম, ঝগড়া দেখা দেয়। তাই আমার মতে একটা পেজ চালাতে গেলে আগে নিজেদের মধ্যে, অন্তত কোর টিমের মধ্যে বন্ধুত্ব বা আত্মীয়তা থাকাটা খুব জরুরি।

১৪.) প্রশ্ন গুলো সেট করার জন্য তোমাদের পেজ গুলো ঘাঁটাঘাঁটি করতে হয়েছে। সেটা করতে গিয়ে যা দেখলাম লাফালাফির ফোলোয়ারস প্রচুর। প্রথমদিন থেকে আজ অবধি এই জার্নিটা নিশ্চয় মসৃণ নয়? নিন্দুকদের কী বলতে চাও?

রয় দা (লাফালাফির ফান্ডারঃ)- জীবনটাই তো (hurdles) খেলার মতন। খারাপ না হলে ভালো জিনিসটার মর্ম বুঝবো কেমন করে? বাঁধা আসে বলেই তো বুঝতে পারা যায় কোন পথ টা সঠিক আর কোনটা নয়।
হিহি।  আমার একটা টিপিক্যাল ডায়লগ আছে যেটা ব্যবহার করি।

দেখবি আর জলবি, পম পম করে ফুলবি।

পম পম টা নিজের মাথা থেকেই। মানে ঠাট্টা করে আর কি।
এটাই বলার। ভালো কাজকে যেমন সমর্থন করেন তেমন কোনো কিছু খারাপ লাগলে নিশ্চই সমালোচনা করবেন কিন্তু কাউকে ব্যক্তিগত ভাবে আক্রমণ  করবেন না।


আচ্ছা এবার একটু পছন্দ জেনে নিই ফাউন্ডারদের

১.) roy দা রাতের ছাদ ভালো লাগে নাকি রাতের ব্যালকনি ?

উত্তরঃ- নির্ভর করছে কার সাথে কোন সময় কোন দিন কি অবস্থায় আছি। মানে নিজে নিজের সাথেই নাকি অন্য কেউ। হিহি

২.) উজান sunday suspens প্রিয় নাকি কলেজ ক্যানটিন?

উত্তরঃ- sunday suspence

৩.) রিমো দা নাইট ল্যাম্ফের আলো প্রিয় নাকি ডিপ লাইট?

উত্তরঃ- আমি একটু মলিনতা পছন্দ করি, সেটা জীবনদর্শন হোক বা মানুষ। খুব দরিদ্র শৈশব আর কৈশোরের জন্য ছোট্ট থেকেই মৃদু আলোর সাথে বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছে। উজ্জ্বলতা আমায় টানে না।

৪.) বিদীশা ট্রাম প্রিয় নাকি মানুষ টানা রিক্সা?

উত্তরঃ- মানুষের টানা রিক্সায় উঠতে আমার কোনোদিনই ভালো লাগেনা। বরং মনে হয় রিক্সা চালককে বসিয়ে নিজে একটু টানি। কারণ আমার বরাবরই প্যাসেঞ্জার সিট থেকে ড্রাইভার সিট বেশি পছন্দের।😁
টানা রিক্সার থেকে ট্রামে চড়তে বেশি ভালো লাগে। ট্রামের মধ্যে একটা সেই ব্যাপার আছে।। ট্রাম একটা ভালোবাসা আর টানা রিক্সা ভালোলাগা তবে চড়তে না, দেখতে আর ছবি তুলতে ভালোলাগে।

৫.) দেবায়ণ দা অনুপম রায়ের গান নাকি বাংলার লোকসংগীত?

উত্তরঃ- এই দুটোর মধ্যে জানতে চাইলে লোকসঙ্গীত বেশি প্রিয়।

আচ্ছা এখন আমরা আবার  প্রশ্ন-উত্তরে ফিরছি

১৫.) ধরি 'ক' পেজ একটা শর্টফিল্ম করলো তারপরে 'খ' পেজ শর্টফিল্ম করলো। এটাকি নিছকই যুদ্ধে টিকে থাকার লড়াই?
আন্তরিকের থেকে জানতে চাইব।

দেবায়ণ দা(আন্তরিকের ফাউন্ডারঃ)- না অবশ্যই নয়।

১৬.) প্রতিদ্বন্দ্বি পেজের সাথে পেজের নাকি পেজের সাথে প্রিন্টেডের? আর তাই কি কখনও কখনও পেজ প্রিন্টেড পত্রিকা বা সংকলন করার কথা ভাবে বা করছে? কালপুরুষের থেকে জানতে চাই।

রিমো দা(কালপুরুষের ফাউন্ডারঃ)- আমাদের কালপুরুষ থেকে এখনও পর্যন্ত ৩ টি বই (পত্রিকা নয়, দুটিতে isbn no যুক্ত) হয়েছে, এই বছরেও আরো 2 টি হবে। আমরা কোনও প্রতিযোগিতায় ঢুকতেই চাই নি, চাই না... আমরা যখন বই করি, তখন এতো চারদিকে বই করা নিয়ে মাতামাতি ছিলো না। প্রকাশকদের কাছে গিয়ে ভিক্ষার মতো বলতে হত। আজ এই যারাই বিনামূল্যে বই করে দিতে চাইছে, সেদিন তারাই একটা 75 পাতার 50 কপি বই করতে কুড়ি হাজার টাকা চেয়েছিলো।🙂

আমরা সবটাই করেছি বা এখনও করি নিজেদের লেখক লেখিকাদের লেখাগুলোর দলিল বানানোর জন্য, তাদের মনোবল বাড়ানোর জন্য। অনেকই বলতো 'দাদা, বাড়িতে এইসব বুঝছে না, খুব সমস্যা করছে!'... এই অভিভাবকদেরই অনেককে রাতারাতি পাল্টে যেতে দেখেছি, তাঁদের সন্তানের লেখা ছাপার অক্ষরে আসার পর। এগুলোই তৃপ্তি দেয়। আর আমি এখনও প্রাচীনপন্থী... এখনও এটাই বিশ্বাস করি যে বইয়ের বিকল্প কিছু হয়না। কালপুরুষ আজকে আছে, কাল নাও থাকতে পারে। কিন্তু বইগুলো থেকে যাবে।

১৭.) আমরা দেখছি বিভিন্ন প্রকাশক এগিয়ে আসছেন পেজের কাছে৷ এই ব্যাপারে প্রকাশকদের কী বলতে চাইবে লেখালেখির ফাউন্ডার?

বিদিশা(লেখালেখির ফাউন্ডারঃ)- এই ব্যাপারটা নিয়ে আমরা প্রকাশকদের কাছে সত্যি কৃতজ্ঞ। একটা বই প্রকাশে পেজের অ্যাডমিন দের পাশাপাশি পেজের অন্যান্য মেম্বারদের মধ্যেও লেখা নিয়ে একটা অ্যাডভেঞ্চার তৈরি হয়। এটা লিখতে ভালোবাসা মানুষদের ভীষণভাবে inspire করে । তাই ভীষণভাবে চাইবো আরো প্রকাশক এগিয়ে আসুক। পেজে সাহিত্য চর্চার যতটা খামতি থাকে সেটা পরিপূর্ণ করা তাহলে সম্ভব হবে। আর শুধু লেখালেখি না বরং প্রতিটা লেখাপ্রেমি মানুষদের এই সুযোগটা করে দিক প্রকাশকরা সেটাই চাইবো।

১৮.) কোথাও গিয়ে কী মনে হচ্ছে না পেজ একে- অপরের  দেখাদেখি কাজ করছে  আর তাতে করে নিজেদের আইডিয়া বলতে কিছুই বেরিয়ে আসছে না নতুন করে দর্শকের কাছে বা পাঠকের কাছে? এক কাপ কলকাতার ফাউন্ডারের থেকে জানতে চাইব এই উত্তর।

এক কাপ কলকাতাঃ- না এটা আমার মনে হয়না। খুব কম সংখ্যক পেজ আছে যারা অপরের ভরসায় এগোয়। তারা কালচারাল পেজের আওতায় পরে না। ওই পেজ চালিয়ে সেলেব হবো ওই টুকুর জন্য পেজ চালায় কিন্তু যারা একটু প্রতিষ্ঠিত বা শিক্ষিত পরিচালক তারা অন্য পেজের কিছু জিনিস ভালো লাগলেও সেটিকে নিজেদের মতন করে প্রকাশ করে।

১৯.) একজন ভালো অ্যাডমিনের কী কী বৈশিষ্ট্য থাকা উচিত?  কালপুরুষের ফাউন্ডারের থেকে জানতে চাই।

কালপুরুষঃ- এটাও আপেক্ষিক। আমার যাকে ভালো এডমিন মনে হবে, বাকিদের তাকে নাও মনে হতে পারে।
তবে তৎকালীন বিভিন্ন page এ কাজের সূত্রে দেখেছিলাম একটা মালিকশ্রেনী আর একটা কর্মচারীবৃন্দের মতো মানসিক তফাত থাকে এডমিন আর সাধারন সদস্যদের মধ্যে। আমি শুরু থেকে আগাগোড়া এই সম্পর্কের বিরোধী ছিলাম। চেষ্টা করেছি বা করি, নিজের page এ এই ধরণের কোনও সংস্কৃতি যেন না আসে।

দ্বিতীয়ত, এডমিনকে অনেকটা sensible হতে হয় responsibility ছেড়েও। সদস্যদের মন, চাহিদা এমনকি তাদের অসুবিধাগুলোও ধৈর্য্য ধরে জানতে হয়। অন্তত আমি সেই চেষ্টা করি। সবাই কমবেশি করেন।
এবার বাকিটা তোমার আমার নিজস্ব মতের উপর নির্ভর করছে কে ভালো আর কে অতোটা ভালো নয়।

২০.) কই  কোনো প্রিন্টেড পত্রিকা তো পেজ  করছে না অথচ পেজ প্রিন্টেড করছে। তাহলে কী বলা যেতে পারে পেজ  প্রিন্টেডের কাছে পরাজিত। আন্তরিকের ফাউন্ডারের থেকে জানতে চাই।

আন্তরিকঃ- পেজ আর প্রিন্টেডের যুদ্ধ কবে হলো যে পেজ পরাজিত হবে? আর 'দেশ', 'আনন্দমেলা' ইত্যাদি প্রত্যেক ম্যাগাজিনের এখন ওয়েব পোর্টাল আছে। ইন্টারনেট দুনিয়ার সাথে সংযোগ রাখাটা এখন নেসিসিটি। সেটা ওয়েবসাইট হোক বা পেজ যেকোনো মাধ্যমেই...।
মানুষের হাতে সময় কমে গেছে। বই উল্টে পড়ার অভ্যাস চলে যাচ্ছে। ফেসবুক স্ক্রল করে দু'টো কবিতা বা গল্প পড়লে সাহিত্যেরই লাভ। আর পেজ থেকে একটা বই বের করলে দশজন যারা কখনও বই হাতে নিয়ে পড়েনি, তারাও যদি পড়ে  সেটাও সাহিত্যের লাভ। আর পেজ বা ওয়েবসাইট বা প্রিন্টেড মিডিয়া প্রত্যেকেই সেইটুকুর উদ্দেশ্যেই কাজ করে যায়। আর বর্তমান পরিস্থিতি যা আসছে তাতে একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠছে।

২১.) একটা পেজ বছরে একবার হলেও অনুষ্ঠান করে। অন্যদিকে অন্য কোনো পেজ সেটা করে না বা করে উঠতে পারে না ।  এই এফেক্টটা কী অনুষ্ঠান করতে অপারগ পেজের জন্য ক্ষতি ডেকে আনে? লেখালেখির ফাউন্ডারের থেকে উত্তরটা নেব।

লেখালেখিঃ- না ক্ষতি বলবনা। তবে একটা ইচ্ছা তো থেকেই যায় কারণ পরিচয় হওয়া আর পরিচয় পাওয়া দুটোরই গতিটা একটু হলেও কমে।
আমরা এবছর একটা প্রচেষ্টা করছিলাম, বেশ খানিকটা এগিয়েও পিছিয়ে আসতে হলো দুটো কারণে একটা স্পন্সরশিপ আরেকটা সাম্প্রতিক পরিস্থিতি। তবে আশা করছি পরিস্থিতি সামলে উঠলে এরম একটা আয়োজন করা হবে।

২২.) এবার একদম শেষ প্রশ্ন৷ একজন ভালো কনটেন্ট রাইটার বলতে কী বোঝো? লাফালাফির ফাউন্ডারের থেকে জানতে চাইব।

লাফালাফিঃ- বেশ। একটু বড়ো হবে এটা।
আমরা ভালো কন্টেন্ট খুঁজি। কিন্তু তাই বলে এটা নয় যে বাকি কন্টেন্ট খারাপ। আবার এটাও না যে আজ কেউ ভালো লিখতে পারিনি বলে সে খারাপ লেখে। কাউকে লেখা শেখানো যায়না, আবেগ শেখানো যায়না। কিন্তু কাউকে ঘষা মাজা করে তৈরি করা যায়।
আমার কাছে যেটা ভালো সেটা অন্য কারুর কাছে খারাপ হতেই পারে কিন্তু আমরা এটা বলতে পারি না যে সেটা বাজে বা ফেলে দেওয়ার মতন। হ্যাঁ এটা ঠিক যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে গুণগত মান একটু হলেও কমে যায়। সেটা ঠিক করার এবং বুঝিয়ে বলার দায়িত্ব আমাদের। কিন্তু আমরা সেটার চেয়েও বেশি যেটা করি সেটা হলো তাকে নিয়ে খিল্লি আর একটা হট টপিক নিয়ে ফালতু বকা। তাই বলে অনেকের ক্ষেত্রেই সেটি একটা নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট আসে। অনেকেই ভাবে যে সে হইতো সত্যি লিখতে পারেনা।

এই রকম অনেক লেখা আমি নিজেই দেখি, শুধু আমাদের না, সবার। কিন্তু আমি খুব কম সেটা কমেন্ট করে বলি বরং যেটা বলি আলাদা করে বলি। আর আমাদের পেজের একটা ট্যাগলাইন আছে।

You Create, We Nurture

তাই আমাদের কাজই হচ্ছে সেই সব ট্যালেন্ট দের সবার সামনে আনা।


                                                

'না' শব্দটা বলতে শিখতে হবে, আর 'না' শব্দটা নিতেও শিখতে হবে


 অবসাদ একধরনের মনের আবেগ বা বিশেষ মানসিক অবস্থান

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের অতিমারি চলছে, যত দিন যাচ্ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুমিছিল ক্রমশঃ বাড়ছে। করোনা প্রতিরোধে একটানা লকডাউনের পথেই হাঁটছে প্রায় গোটা বিশ্ব।
তাতে অনেককেই গ্রাস করছে মানসিক অবসাদ। মানুষ বড় একা হয়ে যাচ্ছে , বন্দি জীবন কাটাতে কাটাতে ওয়ার্ক ফ্রম হোম করতে করতে ক্রমশ একা হয়ে পড়ছে। সারাদিন অঢেল একাকী সময়। কী করবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না। অগত্যা ঘুমকেই নিজের সঙ্গী করে নিচ্ছেন। অবসাদ প্রভাব বিস্তার করছে সুক্ষ্মভাবে ।

বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় ও সফল নায়ক সুশান্ত সিং রাজপুতের অকাল প্রয়াণে অনেকেই মনে করছেন যে তিনি হয়তো চূড়ান্ত মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। অনেকেরই বক্তব্য বর্তমানে মানুষ খুব নিষ্ঠুর হয়ে গেছে।
নিজেদের লাভের জন্য অন্যদের কথা আমরা ভাবছি না। ছুঁড়ে দিই অপমান আর হিংসে। লাঞ্ছিত, অপমানিত, ধর্ষিত, অবহেলিতরা আরও তাড়াতাড়ি অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে।
আমি কোনো ডাক্তার বা মনোবিজ্ঞানী নই। তবে এইরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে আমি কী ভাবি, সেটুকুই বলি।  ভাবতে থাকি, 'চিরদিন কাহারও সমান নাহি যায়।' সময় ঘুরবেই। বাংলা প্রবাদ বাক্যটি মনে করি বারবার "যে সয়, সেই রয়"। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, ভাল থাকতে গেলে
'না' শব্দটা বলতে শিখতে হবে, আর 'না' শব্দটা নিতেও শিখতে হবে।

অবসাদ কোনও অনুভূতি নয়, এটা একধরনের মনের আবেগ বা বিশেষ মানসিক অবস্থান। অবসাদ, মানুষের মনে একেবারে চেপে বসে এবং তা কিছুতেই ফিকে হতে চায় না। অবসাদের মুহূর্তগুলোতে চূড়ান্ত মানসিক বিষণ্ণতাজনিত অনুভূতির সঙ্গে যুক্ত হয় অপদার্থতা ও অসহায়তার বোধ। সবারই  কথা বলার মতো দু একজন প্রিয় বন্ধু খুব দরকার।  যদি ব্যস্ততা বা অনাদরে কোন বন্ধু বা আত্মীয় একটু দূরে সরে গিয়ে থাকে , যোগাযোগ করে আবার নিয়মিত কথাবার্তা চালু রাখার চেষ্টা করা উচিত।  হয়ত দেখবেন ভাল একজন বন্ধু পেয়ে গেছেন কিংবা কারোর দুঃসহ সময়ে আপনি কিছু আলো ছড়িয়ে দিলেন। কিছুক্ষণ কথা বলা অ্যান্টি ডিপ্রেশনের ওষুধের চেয়ে ভালো কাজ দেয়।  তাই কথা হোক দেদার,  বাঁচুক জীবন হৈ হৈ করে।


কলমেঃ- মৌসুমী ভৌমিক 

মঙ্গলবার, ১৬ জুন, ২০২০

ঋতব্রত মুখার্জী এবং সুজাতা ঘোষ অভিনীত এই লকডাউনে পরিচালক অনুভব চ্যাটার্জীর নির্মিত ছোট ছবি "আত্মনির্ভর" আসতে চলেছে খুব শীঘ্রই।



এই জেনারেশন গ্যাপের যুগে ছেলেমেয়েদের পাশে থেকেও দূর হয়ে যাওয়া এক একা মায়ের গল্প "আত্মনির্ভর"। এই লকডাউন পরিস্থিতিতে কিভাবে নিজের শখ আহ্লাদ আবার খুঁজে পায় একজন মা সেই নিয়েই মাধবেন্দু হেঁসের কাহিনী অবলম্বনে পরিচালক অনুভব চ্যাটার্জ্জীর ছবি "আত্মনির্ভর" আসছে শীঘ্রই।


পরিচালক বললেন একটু বড় হয়ে বন্ধুবান্ধবদের মায়েদের সাথে আলাপ হল। বুঝতে শুরু করলাম মায়েদের কোন শখ আহ্লাদ থাকতে নেই। সমাজ এরকমটাই শিখিয়ে এসেছে। আমার নিজের মাকে যখন জিজ্ঞেস করি তোমার শখ কি? মা বলে তোদের শখই আমার শখ। সমস্যা শুধু এটা নয়। ভেবে দেখুন আমরা কজন মাকে জিজ্ঞেস করি আদৌ?

ছবিতে অভিনয় করেছেন ঋতব্রত মুখার্জ্জী ও সুজাতা ঘোষ। সিনেমাটোগ্রাফি করেছেন ওনাদেরই দুই বন্ধু, যথাক্রমে, কৌশিক পাল ও কমল মিশ্র। পরিচালনায় অনুভব চ্যাটার্জ্জী, কাহিনী মাধবেন্দু হেঁস, সম্পাদনায় সায়ন্তন নাগ, সঙ্গীতে সায়ক চ্যাটার্জ্জী, পোস্টার তীর্থঙ্কর গুপ্ত, কার্য্যনির্বাহী প্রযোজক দেবার্ঘ্য মুখার্জ্জী, প্রচারে টিএবি।

পরিচালক অনুভব চ্যাটার্জ্জী জানিয়েছেন এই ছবিটার মধ্যে দিয়ে তাদের একটাই কথা বলার আছে সেটা হলো, লকডাউন হয়তো আমাদের আরেকবার সুযোগ করে দিয়েছে অনেক না বলা কথা নতুন করে শুরু করার। মা বাবা কি খেতে পছন্দ করেন জিজ্ঞেস করে হাত পুড়িয়ে একবার বানিয়ে দেখুন না। পুরোনো এলবাম ঘেঁটে হয়তো খুঁজে পেলেন হারিয়ে যাওয়া কোনো গল্প। পরিবারের সাথে সময় কাটান। যতটা খারাপ মনে হচ্ছে ততটা হয়তো খারাপ  নয় এই সময়টা।

রবিবার, ১৪ জুন, ২০২০

ই-বুক "সামান্য"। তার হিসেবনিকেশ। দেখে আসার অনুরোধ করলাম।

হিসেব তুলে ধরা হলো




১.)কিংশুক চট্টোপাধ্যায় ----40
২.)আজাহারুল ইসলাম-----20
৩.)জয়াশিস ঘোষ----100
৪.)তিথি সরকার----20
৫.)ব্রতীন বসু-----20
৬) সুদীপ নীল তন্তুবায়---20
৭) প্রেমা নাহা বসাক----20
৮.) কথাকলি------20
৯.) পাখি পাল------20
১০.)নন্দনা বন্দ্যেপাধ্যায়---50
১১) জয়দ্বীপ------20
১২.) অর্ণব রায় চৌধুরী----50
১৩.) চঞ্চল ভট্টাচার্য-----20
১৪.) রথীকান্ত সামন্ত------20
১৫.) সৌরিশ-------20
১৬.)বিধান চন্দ্র রায়----20
১৭.) রিম্পা সাহা----100
১৮.) শ্রেয়া স্বপ্ননীল মুখার্জি---120
১৯.) অনাভি(সায়নী পাল)---20
২০.)  সৌমী সেনগুপ্ত -----20
২১.) নন্দিতা মুখার্জী(মিষ্টু)-----20
২২.) জবা মুখার্জী-----20
২৩.) সৈকত বালা----20
২৪) শুভেচ্ছা চ্যাটার্জী----20
২৫.) সঙ্কর্ষণ (শান) প্রামাণিক ----20
২৬.) শুভমিতা বিশ্বাস----20
২৭.) চৌধুরী সাঈদ আফ্রিদী-----20
২৮.) শ্রেয়া রায় চৌধুরী-----20
২৯.) অনির্বাণ ঘোষ-----20
৩০.)বিদিশা নাথ---100
৩১.) প্রিয়া মুখার্জী---21
৩২.) সালুনো সরকার---20
৩৩.) দিব্যেন্দু মান্না----20
৩৪.)  তিয়াশা-----20
৩৫.)জুঁই মুখোপাধ্যায় ---৫০০
৩৬.)সুমনা সানপুই----২০
৩৭.)সঞ্জয় বন্দ্যােপাধ্যায়ঃ- ২৫
৩৮.)উপাসনা মহাপাত্রঃ-২০
৩৯.)জয়দীপ সিনহা---২০
৪০.) আজাহারুল ইসলাম--- ২০
৪১.)পদ্মা বিশ্বাসঃ- ২০
৪২.)আশিষ রায়---২০
৪৩.)রতনা রায়---১০০
৪৪.)বিপাসা সেনগুপ্ত---২০
৪৫.)প্রণব নস্কর---৩০
৪৬.)প্লাবন সিংহ---২০
৪৭.)ইন্দ্রনীল রুদ্র---১০০
৪৮.)সরণ্য বিষ্ণু-----২০
৪৯.)রাজেশ চ্যাটার্জী---২০০
৫০.)প্রীতম রায় (জয়দীপ রায়)----150
৫১.) অরূপ সরকার---100
৫২.) সুদীপ্ত সেন--- 100
৫৩.)মৌসুমী বিশ্বাস----20
৫৪.) কৌশিক দাস---- 20
55.) Manowar sk-----20
56.) Bachchu bera-----20
 57.) আমিমোন ইসলাম---২০

মোটঃ- 26৮6 টাকা

যারা ট্যাক্স দিয়ে কিনেছেন
১.) মৌসুমী ভৌমিক---২৪.৭২
২.) ঈশ্বীতা মন্ডল( পতিতপাবন)---২৪.৭২
৩.) Gopal adok----২৪.৭২
৪.) akash plley---২৪.৭২
৫.)piyali das---২৪.৭২
৬.) রুন্না ভাওয়াল----২৪.৭২
৭.) জয়শ্রী ঘোষঃ- ২৪.৭২
৮.) ববি দাসঃ- ২৪.৭২
৯.) ঈশ্বিতাঃ- ২৪.৭২
১০.) জাসমিন খাতুন--২৪.৭২
১১.) শুভঙ্কর মান্না----২৪.৭২
12.) দীপঙ্কর সাহা----২৪.৭২
 মোটঃ-২৪০ টাকা

যারা লিঙ্ক থেকে কিনেছেন এবং তাদের ট্যাক্স আমাদের থেকে কেটেছে। আমরা পেয়েছি ১৫.২৮

১.)debashish CHATERJEE:- 20
২.)debsree dey---20
৩.) suryadip adhikary:--20
৪)soumajyoti haldar:- 20
৫.)debayan Chattopadhyay---20
৬.) roy-----20
৭.) দীপশিখা চক্রবর্তী----২০
৮.)জয়িতা চ্যাটার্জী----২০
৯.)কুণাল চক্রবর্তী---২০
১০.) স্তুতি বিশ্বাস-----২০
১১.) মাম্পি ঘোষ----২০
মোটঃ- ১৬৮.০৪ টাকা



তাহলে মোট  = 3094 টাকা

3100 করে দেওয়া হলো।

হিসেব আপনিও করে দেখতে পারেন। ভুল থাকলে বলতে পারেন।

মঙ্গলবার, ৯ জুন, ২০২০

সম্পাদকীয় জলফড়িং



 সম্পাদকীয় জলফড়িং

 নতুন উদ্যোম নতুন উদ্দীপনা নতুন সম্পাদক নতুন ভাবে হোঁচট ভুলে আবারও পথ চলা, কবিরাই সম্পাদক সম্পাদকই কবি হঠাৎই এই চিন্তাটা মাথায় এল ভাবলাম এরকম কিছু যদি করা যায় তো কেমন হয়।গুরুজনেরা বলেন ভাবিয়া করিওকাজ করিয়া আর ভাবিও না তবে আমাদের মতো আধ দামড়ারা হামেশাই উল্টো পথে চলে, এবারও যে অনয়থা হল তা নয়, বড় কাজের পর পেলাম একটা পরম সুখ সাইডলাইনের ধারে দাঁড়িয়ে মোটা ফ্রেমের চশমা ছাড়াই পরখ করে নিলাম নতুনদের দারুন কাজ ভয় চিন্তার লেশ মাত্র নেই, বিপদের মুখে দামাল ঘোড়া হতে ওরাই পিছনেই নয় থাকলাম আশ্বাসের হাত হয়ে।এগিয়ে চল নবীন এগিয়ে চল জলফড়িং। 


কবিতা - জয়দ্বীপ



ছুটির গন্ধ
জয়দ্বীপ

করোনার জেরে লকডাউন
 ইস্কুল কলেজ বন্ধ,
 পিটে নেই আজ ভারী ব্যাগখানা
 হঠাৎই ছুটির গন্ধ....

 মারকুটে ওই মাস্টার মশাই
 সেও আজ ঘরবন্দি,
 খোকা খুকিদের সস্তির দিন
 একি প্রকৃতির ফন্দি....

 তবু ক্লাস শুরু অনলাইনে
 পড়তে তো হবে অল্প,
 পড়ার ফাঁকেও নেট দুনিয়ায়
 লকডাউনেরই গল্প....

 ঘরবন্দি তাতে কার কি ?
 পড়াশোনাটাও দরকার,
 করোনা মুক্ত পৃথিবী গড়বো
 এই আমাদের অঙ্গীকার।


কবিতা - সুনন্দ মন্ডল

‎‎‎‎‎‎‎ লকডাউনে ছাত্রজীবন
 সুনন্দ মন্ডল

ছাত্রজীবনে
      শিকেই লেখাপড়া
 ‎         লকডাউনে মোবাইল ‎  ‎
 পরিপাটি যেন  ‎
খেজুর গাছে হাঁড়ি বাঁধা

 ক্লাস এক ঘন্টা
 গেম দশগুণ ‎

অনন্য নজির
      নিজের বার্ধক্যে স্মরণযোগ্য  ‎
      বিচিত্র পাঁচালি গাথা।



কবিতা - রথীকান্ত সামন্ত



 বন্দিমনা
রথীকান্ত সামন্ত 

 কত মুখ যেন গেছি ভুলে
 কত অভিলাষ নিস্ফল
চোখে প্রযুক্তি বেঁধে রাখি,
আলো খেলা করে চঞ্চল।
করি কল্পনা নিশাকাশে
বুঝি কৃষ্ণফলক ওই
তাতে আগামীর লিপি লেখা
পিছে তারাদের হৈচৈ।
সেই আলোচনা পার করি
তোমায় খুঁজে নিই আরবার
প্রেম এ বয়েসে গোপনীয়
এই প্রসঙ্গে দিনু ছাড়।
কত মুখ মনে পড়ে ফের
বাড়ে অক্ষর চলাচল
শুনি চোখ বুজে চেনা সুরে
মাঠে পৃথিবীর কোলাহল। 



কবিতা - পাখি পাল

লকডাউনে ছাত্র-জীবন
পাখি পাল 

পড়ার চাপে অষ্টপ্রহর
প্রাণ যখন ওষ্ঠাগত
চেয়েছিলাম একটু ছুটি
স্কুল-টিউশন আছে যত..
আজ পেয়েছি ছুটি, অনেক বেশি
যেন রবিবার কততো..
তবু এ মন পাচ্ছেনা শান্তি
ছটফট করছে অবিরত..
কারণ,আমরা সবাই লকডাউনে
আছি যে যার মত..
যদিও পড়াশোনাগুলো থামেনি
 মাল্টিমিডিয়ায় চলছে নিয়ম মত..
তবু কলেজ-ক্যাম্পাসের সুখ স্মৃতি
আজ ফিরে ফিরে আসে কত..
সবটা মেনে নিয়েই এগোতে হবে
জানি এ সময় থাকবেনা চিরদিনের মত..।



গল্প- প্রেমা নাহা বসাক

ছুটি
প্রেমা নাহা বসাক

মা, আকাশের চাঁদটা দেখ্, কেমন গোল ,কেমন সাদা ... যেন এক থালা ভরা সাদা ভাত। "- ক্লান্ত জড়ানো স্বরে কথাগুলো তার মাকে বলে মুনিয়া। মায়ের কোল ঘেঁষে শুয়ে আছে সে, মা আলতো আলতো ভাবে ফাটাফাটা চামড়ার আঙুলগুলো দিয়ে চুলে বিলি কেটে দিচ্ছে তার, আর ওই ঘুমপাড়ানিয়া গানটা গুনগুন করে চলেছে ক্ষীণস্বরে- সোনা ঘুমুলো পাড়া জুড়ুলো বর্গি ইলো দেশে বুলবুলিটো ধান খেয়েছে খাজনা দিবো কিসে মুনিয়ার পেটে নিদারুণ ক্ষিদের যন্ত্রনা। আজ কতো দিন হলো খাবার খায়নি সে। ... মায়ের গুনগুনানি গান চোখে ঘুম আনে। গভীর ঘুম। ঠিক যেমন ভাত খেলে ঘুম ঘুম পায় সেরকম মিঠে ঘুম আছে এই সুরটায়। একবার ঘুমোলে আর ক্ষিদে পায়না। ঢুলুঢুলু চোখ মুনিয়ার ... চোখের সামনে ভাসতে থাকে টুকরো টুকরো কিছু ছবি - গ্রামের ইস্কুলটা , মিনু ,বসির, ছুট্টন, গুড়িয়ারা, খেলছে একসাথে, ওরা পড়ছে একসাথে। স্কুলের ঘরটায় দুপুরে হাঁড়িতে ভাত চড়েছে - ফুটছে টগবগ্ টগবগ্ টগবগ্। পেটের ক্ষিদে টাও ফুটছে সাথে যেন টগবগ্ টগবগ্ টগবগ্ ...... ইস্কুলে গেলে ভাত মেলে, ওই ইঁটভাটাটায় রোদে পুড়তে ভালো লাগেনা মুনিয়ার। রোজের বাসি শুকনো রুটি আর সেদ্ধ মেটে আলু খেতে পারেনা আর। মাস্টার বলেছিল, "পড়ালেখা করলে অনেক বড়ো হবি, অনেক টাকা পয়সা হবে" রোজ ভাত পাবো, ডিমও খাবো রোজ। স্কুলটায় তো ওই একদিন ডিম দেয়। তাতে কি ... মুনিয়ার ওই ভাতই অনেক। ভাত খেতে ওর বড্ড ভালো লাগে যে। ওই আবার, আবার পেটটা ডাকছে ... কেমনধারা মোঁচড় দিচ্ছে যেন। বারবার... উফফ্! ... আজ কি বার যেন! রোববার? না শোনিবার? ... যেন দূর থেকে ভেসে আসা এক হতাশার দীর্ঘশ্বাস ফেলে মুনিয়া ... ইখন তো রোজ রোববার। রোজ ছুটি। রোজ ইস্কুল বন্ধ। এই রোববার টা মুনিয়ার কোনোদিন ভালো লাগতো না। ছুটির দিন খাওয়া জুটত না যে ভালো। মা টোর সাথে ওই ইঁটভাটাতেও যেতে হতো দুপুর রোদে। ইখন তো রোজ রোববার। রোজ ছুটি। কিন্তু ইঁটভাটায় যেতে হয়না। কাজও বন্ধ। মালিক বলেছে কাজে আসতে না, কিন্তু কবে আবার আসব তা বলেনি। .... সবই বন্ধ। মাস্টার বলছিলো - লোকেদের কি জানি কি রোগ হচ্ছে , ছুঁলে সে ছড়ায়... মহামারী। তাই সব বন্ধ থাকবে। মাস্টারও জানেনা কতোদিন। সেই থেকে পেটও বন্ধ। ইস্কুলে ছুটির সময় মা তে আর ওতে মিলে কিসুন্দর পেটপুরে দুটো ভাত খেতো। কই আবার কবে ইস্কুল খুলবে ভাত পাবে মুনিয়া জানে না। মাস্টার কাল জানিয়ে গেছে, ইস্কুলে চাল দিয়ে যাবে খুব তাড়াতাড়ি ... কিন্তু আসবে কিভাবে , গাড়িগুলানও যে বন্ধ। তবু আসবে বলেছে, মাস্টার মিছে কয়না। ততদিন.....আঃ মা .... যন্ত্রনায় কুঁকড়ে ওঠে মুনিয়া। মা টার দিকে তাকিয়ে দেখে মা ঘুমে কাদা। গরম নিশ্বাস পড়ছে মুনিয়ার মুখে। বেঁচে আছে তবে এখনও । এরপর দিন মাস্টার এলে জানতে চাইবে মুনিয়া - কি রোগ এলো রে মাস্টার? এ রোগ মানুষ মারে না কি এ রোগে খাবার না পেয়ে মানুষ মরে? ছুটি তো মুনিয়া ভালোবাসে না। ভাত ভালোবাসে, ইস্কুল ভালোবাসে, ওই পড়ালেখাটো ভালোবাসে.... এ ছুটি ভালোনা, সব বন্ধ, কাজ বন্ধ, ইস্কুল বন্ধ, পেটও বন্ধ .... ঘুম জুড়িয়ে আসে মুনিয়ার দুচোখে। একটা সুর একটানা ভাসতে থাকে কানে- সোনা ঘুমুলো পাড়া জুড়ুলো বর্গি ইলো দেশে বুলবুলিতে ধান খেয়েছে খাজনা দিবো কিসে।









গল্প - অর্পণ বসাক

বিসর্জন
অর্পণ বসাক

দুর্গা আমার পাশের বাড়ির রথীন কাকার মেয়ে।আমার মা ওকে নিজের মেয়ের মতোই ভালোবাসত।দুর্গাও মাকে বেশ খাতির করত মাসি মাসি করে। ছোট থেকেই একটা উরণচন্ডী মেয়ে ছিল দুর্গা।তবে ওর মনটা বেশ ভালো।পড়াশুনায় কিন্তু দুর্গা বরাবরই স্যার ম্যামদের প্রশংসা কুড়িয়েছে। এবারে কলেজ শেষ করে ইউনিভার্সিটির দরজায় পা রেখেছে আমাদের দুর্গা।ও নিজের খরচ নিজেই চালাত।টিউশনি পড়িয়েই নিজের কলেজের ফিস,ভাইয়ের বই কেনা,মায়ের ঔষধ চালাত।বাড়তি টাকাটা জমিয়ে বস্তির ছেলেমেয়েগুলোকে ও রোজ চকলেট দিত,আবার কারো জামা ছিড়ে গেলে জামা।লক ডাউনের আগে দুর্গার জীবনটা ছিলো ঠিক একটা হলুদ ফিঙের মতো,গোটা আকাশ যেন ওর একার।একাই দাপিয়ে বেড়ায়।ডানা ঝাপটায়।নীল আকাশের বুকে যেন তুলি দিয়ে রূপকথার স্বপ্ন লেখে।

       কিন্তু পৃথিবী জুড়ে মহামারী নেমে এলে শুরু হয় লক ডাউন।লক ডাউন যেন হলুদ ফিঙের মতো দূর্গার পায়ে লোহার শিকল পরিয়ে দিলো।দুর্গার ইউনিভার্সিটির ক্লাস এখন অনলাইনে হয়।কিন্তু নেটপ্যাক সেটা ভরতে পয়সার দরকার।নেটপ্যাক ছাড়া দুর্গা ক্লাস করবে কি করে?এদিকে সোশ্যাল ডিস্টেন্স  মানতে গিয়ে দুর্গার টিউশনিও গত দু মাস ধরে বন্ধ।হাতে পয়সা নেই।যাদের কাছে বেতন পাবে তারাও হয়ত তার মতোই ,কিংবা কেউ না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে এসব ভেবে দুর্গা আর বেতন চাইতে পারে নি।অগত্যা বাবার কাছে এই প্রথমবার দুর্গাকে হাত পাততে হলো।ভরা হলো নেটপ্যাক।অভ্যস্ত না হলেও এক এক করে মানিয়েও নিতে পেরেছিলো অনলাইন ক্লাসগুলো।

   একে করোনার ছায়ায় এঁটে উঠতে না পেরে ভয়ানক অশান্তি, তার ওপর যেন আম্পান দুর্গাদের পরিবারকে যেন পঙ্গু করে দিলো।দূর্গার বাবা রথীন কাকার সব ধান আম্পানে নষ্ট করে দিলো।একে বারে যাকে বলে পাকা ধানে মই।গোটা বছর খাবে কি দুশ্চিন্তায় ঘুম নেই দুর্গাদের।তারপর আরাক অশান্তি মাথা চারা দিয়ে উঠেছে। ইউনিভার্সিটি নোটিশ জারি করেছে দ্বিতীয় সেমিস্টারে ভর্তির ফিস জমা দিতে হবে খুব শিগগিরই।এই দুঃসময়ে এত টাকা পাবে কোথায়?দুর্গা আর ভর্তির কথা বাবা কে জানায় নি, কারন একে সব ধান ডুবে যাওয়ার বাবা দুশ্চিন্তায় ভুগছে তার ওপরে ভর্তি এত গুলো টাকা কোথায় পাবে বাবা। এই অসময়ে বাবার থেকে তাই টাকা চাওয়াটা আর হলো না দূর্গার।

         কোনোদিন কারো কাছে দুর্গা মাথা নোয়াই নি।এই কটা টাকার কথা কি স্যারদের বলবে?না থাক।স্যারদের বললে মধ্যবিত্ত  বাবার সম্মানে লাগবে।বললে বাবা যে ছোট হয়ে যাবে।তাই আর বলা হয়ে ওঠেনি দূর্গার।

           দুচোখ ভরা স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে থাকা দুর্গার আকাশে যেন কালো অন্ধকার মেঘে ঢেকে দিলো।কোনো দিন হারতে না শেখা মেয়েটা এই যুদ্ধ জিতবে কি করে?দুশ্চিন্তায় ঘুম আসছিলো না দূর্গার।

     দুর্গা হেরে যেতে ভয় পায়।দুপুরে খাবার পর সবাই যখন ভাত ঘুম দিয়েছে তখন দুর্গা আলমারী থেকে কলেজের প্রথম হয়ে পাওয়া গোল্ড মেডেল টা নেড়েছেড়ে দেখছিল।

     দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে।আকাশে সন্ধাতারা জ্বলজ্বল করছে। দূর্গার মা দুর্গাকে ডাকছে ।কিন্তু দুর্গা কোনো উত্তর দিচ্ছে না।দরজাও খুলছে না।বোধয় একটু বেশিই ঘুমিয়ে গেছে।অনেক্ষন ডেকে না পেয়ে জানালার প্লালা দিয়ে দূর্গার মায়ের চোখ ঘরের দিকে এক দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে ছিল।দূর্গার বাবা কিছু বুঝে উঠতে না পেরে দরজায় ধাক্কা মেরে দরজাটা ভেঙে ফেলে।ঘরে গিয়ে দেখল লাল পাড় একটা সাদা শাড়ি পরে আছে দুর্গা। একহাতে সেই গোল্ড মেডেল।পায়ের কাছে প্রত্যেকটা পরীক্ষায় প্রথম হওয়ার মার্কশিট।অন্যহাতে একটা ছোট্ট চিরকুট তাতে লেখা "শিক্ষা কারো মৌলিক অধিকার নয়!"  আর গলায় ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে ফাঁস।

           হেরে যাওয়ার ভয়ে দুর্গা যেন পালিয়ে বাঁচল।ঠিক যেমন কুমোরটুলিতে বোধনের আগেই আম্পানের বৃষ্টিতে বিসর্জন হলো মাটির দূর্গার তেমনই।যেখানে অকাল বোধনের কথা ছিলো থেকে অকাল বিসর্জন হলো।

    পরদিন সকালের পেপারে দূর্গার ছবি দিয়ে বড় বড় অক্ষরে লেখা, "লকডাউনে ভর্তির ফিস জোগাড় করতে না পেরে আত্মঘাতী এক ছাত্রী।"