অবসাদ একধরনের মনের আবেগ বা বিশেষ মানসিক অবস্থান
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের অতিমারি চলছে, যত দিন যাচ্ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুমিছিল ক্রমশঃ বাড়ছে। করোনা প্রতিরোধে একটানা লকডাউনের পথেই হাঁটছে প্রায় গোটা বিশ্ব।
তাতে অনেককেই গ্রাস করছে মানসিক অবসাদ। মানুষ বড় একা হয়ে যাচ্ছে , বন্দি জীবন কাটাতে কাটাতে ওয়ার্ক ফ্রম হোম করতে করতে ক্রমশ একা হয়ে পড়ছে। সারাদিন অঢেল একাকী সময়। কী করবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না। অগত্যা ঘুমকেই নিজের সঙ্গী করে নিচ্ছেন। অবসাদ প্রভাব বিস্তার করছে সুক্ষ্মভাবে ।
বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় ও সফল নায়ক সুশান্ত সিং রাজপুতের অকাল প্রয়াণে অনেকেই মনে করছেন যে তিনি হয়তো চূড়ান্ত মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। অনেকেরই বক্তব্য বর্তমানে মানুষ খুব নিষ্ঠুর হয়ে গেছে।
নিজেদের লাভের জন্য অন্যদের কথা আমরা ভাবছি না। ছুঁড়ে দিই অপমান আর হিংসে। লাঞ্ছিত, অপমানিত, ধর্ষিত, অবহেলিতরা আরও তাড়াতাড়ি অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে।
আমি কোনো ডাক্তার বা মনোবিজ্ঞানী নই। তবে এইরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে আমি কী ভাবি, সেটুকুই বলি। ভাবতে থাকি, 'চিরদিন কাহারও সমান নাহি যায়।' সময় ঘুরবেই। বাংলা প্রবাদ বাক্যটি মনে করি বারবার "যে সয়, সেই রয়"। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, ভাল থাকতে গেলে
'না' শব্দটা বলতে শিখতে হবে, আর 'না' শব্দটা নিতেও শিখতে হবে।
অবসাদ কোনও অনুভূতি নয়, এটা একধরনের মনের আবেগ বা বিশেষ মানসিক অবস্থান। অবসাদ, মানুষের মনে একেবারে চেপে বসে এবং তা কিছুতেই ফিকে হতে চায় না। অবসাদের মুহূর্তগুলোতে চূড়ান্ত মানসিক বিষণ্ণতাজনিত অনুভূতির সঙ্গে যুক্ত হয় অপদার্থতা ও অসহায়তার বোধ। সবারই কথা বলার মতো দু একজন প্রিয় বন্ধু খুব দরকার। যদি ব্যস্ততা বা অনাদরে কোন বন্ধু বা আত্মীয় একটু দূরে সরে গিয়ে থাকে , যোগাযোগ করে আবার নিয়মিত কথাবার্তা চালু রাখার চেষ্টা করা উচিত। হয়ত দেখবেন ভাল একজন বন্ধু পেয়ে গেছেন কিংবা কারোর দুঃসহ সময়ে আপনি কিছু আলো ছড়িয়ে দিলেন। কিছুক্ষণ কথা বলা অ্যান্টি ডিপ্রেশনের ওষুধের চেয়ে ভালো কাজ দেয়। তাই কথা হোক দেদার, বাঁচুক জীবন হৈ হৈ করে।
কলমেঃ- মৌসুমী ভৌমিক
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন