ভিড় থেকে সরে আসি। সমুদ্র জানে না কারও নাম। অনেক লেখার শেষে সাদা পাতা এখনও আরাম...শ্রীজাত

শুক্রবার, ৩১ মে, ২০১৯

শুরু হচ্ছে এই কলম
রবিবারের গপ্পো

লেখিকা পিয়ালী দাসের কবিতা




১.)
বৈপ্লবিক দামামা

তুমি কি নীরব দৃষ্টিতে শুধু দেখেই যাবে নারী জাতির এই লাঞ্ছনা।
করবে না এর প্রতিবাদ? হে মহামানব ওঠো , জাগো,থেকো না বোবা হয়ে,বাঁচাও নারী জাতির সম্মান।
লোলুপ দৃষ্টির গোচরে প্রতিনিয়ত ধর্ষিত হচ্ছে নারী,আবার লোকচক্ষুর অগোচরেই পাচার হচ্ছে সেই নারী, হে মহামানব তোমারই তো সৃষ্ট এই নারী,সৌন্দর্যের শিখরে অধিষ্ঠান তার,ভয়াল ভয়ঙ্কর নখের আচরে সেই সৌন্দর্য হয়েছে ম্লান,নারীর রূপবত্তাকে টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে নিয়ে এসেছে কদর্য কদাকার রূপে, নারীকে স্থান দিয়েছে ভোগ লালসার বস্তুর স্তরে,নারীকে করেছে অসম্মান।
যে নারী তোমার আশীষে প্রাণ প্রতিষ্ঠার ভূমি,সেই নারীকেই করেছে বঞ্চনা,নিপীড়িত নিঃশেষিত নারী আজ বাকরুদ্ধ,প্রতিবাদের ভাষা হারিয়েছে।
সময় এসেছে হে মহামানব ,তোমার শিঙ্গায় দাও ফুত্কার,বাজাও যুদ্ধের দামামা,উড়িয়ে জয়ের ধ্বজা ভেঙে দাও শৃঙ্খলের বেড়াজাল,গুড়িয়ে দাও তাদের পৈশাচিক হাত,অবসান ঘটাও নারী জাতির অপমান।

২.)
                     মাতৃদিবস

জানিস মা,বলছে সবাই আজকে মায়ের দিবস,
মায়ের দিবস জিনিসটা কি বলিস নি তো আমায় কিছু।।
ও পাড়ার বড়ো দিদি মাকে জড়িয়ে ধরে,বললে হেসে,জানিস ছোটু তুলবো ছবি মায়ের সাথে সব কাজ ফেলে।
শুধাই তাকে কি হবে গো এতো ছবি তুলে,
বললে দিদি দিনটা আজ মায়ের দিবস ওরে বোকা ছেলে।
আমি তো মা তোমার ছোট্ট ছোটু ওতো কিছু বুঝি?
আমি জানি মা,তুমি আমার,জড়িয়ে তোমায় ভালোবাসা খুজি।
জানো মা,দিদির মা শুয়ে বিছানায়জলের জন্য আকুল,
দিদি তো শুধু মায়ের সাথে ছবি তুলতে ব্যাকুল।
এইটাই কি বলে মায়ের দিবস , বলো না মা আমায় সবকিছু।
এমন দিবস চাই না মাগো,কেন এমন হয়,
মায়ের চেয়ে আপন কেউ আছে কি কেউ এই ধরায়?
তাই তো মাগো,লাগছে ভয়,জড়িয়ে ধরো আমায়,
পুত্রদিবস বলে বর্ষেতে কোন দিন যেন না হয়।
তুমি আমার সবকিছু,তুমি না জল দিলে,
ছোট্ট ছোটু মরেই যাবে সবার অবহেলে।।

৩.)
                      অনুভূতি

হৃদয়ের অনুভূতি নীরবে ছুটে বেড়ায় শিরা উপশিরায় ,
চোখের ভাষাতে উজ্জ্বল তার উপস্থিতি,বাধা পায় সামাজিকতায়।।
চায় যে মিলন , মনের নিশীথে অবিরাম বয়ে চলে তারই আবেশ,
ছুটে চলে ফল্গুধারার ন্যায় প্রকাশের তাড়নায়,
আছে উদ্যম,নেই সাহস ,প্রাপ্তি বিন্দু জল।
সমাপ্তি জেনে ও বাচিয়ে রাখার তাগিদ,
অলীক বাসনা ,কালের মিলনের হাতছানি।
চোখের দীপ্তি পুনরায় উজ্জ্বল ,প্রকাশের আশায়।
হায় রে হায় ,কালের নিয়মে যায় সে চলে অতল গহ্বরে,
পাথর চাপা পরে যায় অনুভূতির তীব্র বাসনা।
মৌনবেশে রয়ে থাকে জেগে স্মৃতির ঘেরাটোপে,
বেচে থাকে ভালোলাগার পুরানো অনুভূতি মনের মিলনতলে।।
৪.)
              সুন্দরের পিয়াসী

সুন্দর বলে চেয়ে থাকি তোমা পানে,
তাই তুমি দিয়েছো মোরে অপবাদ।
তুমি ভেবেছো এই চেয়ে থাকার মাঝে আছে শুধু পরমাদ।
না গো না নেই তাতে কালিমা-
এ ভাবনা শুধুই অলীক-
যে চেয়ে থাকে তার এ শুধু সুন্দরের সাধনা।
কঠিন পাথরের ফাটলে
যে লাল গোলাপটি আছে ফুটে
সে চেয়ে আছে নীলাকাশে,
ঊষার স্নিগ্ধ বাতাসে
দোল দিয়ে যায় হিল্লোলে সুখের পরশে,
আবার মধ্যাহ্নের খর প্রদাহে
সেই তাকিয়ে থাকে দীপ্ত দীপকের পানে তেজের আস্বাদনে,
সেই আবার চন্দ্রমার জোছনায়
তাকিয়ে থাকে অনিমেষ নয়নে মনের সুখেতে,
সে মেটায় তার সুন্দরের পিয়াসা।
আমি ও মেটাই আমার পিয়াসা দেখে তোমায় দুনয়নে।
   
৫.)
তোমাকে হারিয়ে

চোখেতে হারিয়েছি তোমাকে, সে কথা সত্য-
তোমাকে হারিয়ে হারিয়েছি আরো অনেক কিছু-
হারিয়েছি সেই ভোরের শিশিরে ভেজা ফুলের গন্ধের মাদকতা-
হারিয়েছি মাদলের সনে মেঠো সুরের মিলনের উন্মাদনা-
হারিয়েছি সেই গাছের ডালে বসা কোকিলের কুহু কুহু রব-
হারিয়েছি অপলক দৃষ্টিতে তোমার দিকে চেয়ে থাকা-
শুধু কি তাই,হারিয়েছি হঠাত্ করে চোখের মিলনে ভয় পেয়ে চোখ নামিয়ে নেওয়া।
হারিয়েছি পাশাপাশি বসে পুরানো স্মৃতি রোমন্থন করা, প্রাকৃতিক দৃশ্য অনুভব করা।
হ্যাঁ হ্যাঁ বলবে পাগল আমি জানি,
সত্যি পাগল হয়েছি তোমার রূপের কাছে,
তোমার মায়াবি দু-নয়নের দৃষ্টি আমার সযত্নে গড়ে তোলা মনের মনিকোঠায় প্রেমের সঞ্চার করেছে,ডুবিয়েছে প্রেমের সাগরে ,করেছে প্রেমের নেশায় উন্মাদ।
প্রেমহীন মানুষকে তোমার ছোয়ায় করেছো প্রেমময়,
কঠোর বাস্তব থেকে তাকে তুলে এনেছো মায়াবী রূপকথার দেশে- সেখানে সব আছে - আছে সেই গাছ,আছে ফুলের গন্ধ,আছে কোকিলের কুহু কুহু রব, শুধু নেই তুমি,নেই তোমার ভালোবাসা,নেই সেই ভালোলাগার অনুভূতি, নেই সেই মাদকতা, সব কিছু থেকে ও শূণ্যতা চারধারে তোমাকে হারিয়ে।
                                              
লেখিকার ঠিকানা:
100 J Jaigirghat Road ,
Thakurpukur,kolkata -700061

বৃহস্পতিবার, ৩০ মে, ২০১৯

লেখিকা স্নেহা সরকারের কবিতা





১.)
 উপকথা


স্বপ্ন বুনি উপকথার মতো
হাল ছেড়ে দি ছোট্ট ছোট্ট ভুলে,
ইনসোম্যানিক শরীরে অক্ষত,
হাসতে পারি ঝড়ো হাওয়া ছুঁলে।

কপাল বেয়ে চিন্তা নামে পায়ে,
হাঁটতে থাকি ছায়াপথের দিকে।
যেমন করে গোধূলী নামার গায়ে,
মেঘের আলো নিম্নমানের ফিঁকে।

রক্ত পানে রপ্ত জীবন দশায়,
ইচ্ছে বিকই ভবিৎষতের দায়ে।
অক্ষম হই জাপটানো প্রত্যাশায়।
বুকের পাঁজর সেলাই করা বাঁয়ে।

তবুও মনে আরশি নগর খুঁজি।
পরশিরা আজ বড্ডই একঘেয়ে,
মিলিয়ে যাব এমন ভাবেই বুঝি?
আরো একবার ভালোবাসতে চেয়ে।।




২.)
অ যুক্ত মানুষ


স্পর্শ করে হাত গুটিয়ে এলে
বিরুদ্ধতার দায় বেড়ে যায় খুব।
তোমায় মনে সংশয় ঠাঁই পেলে
তার প্রতিদান আসন্ন নিশ্চুপ।

যারা শুধু সত্যি সত্যি খেলে,
হাসির কোপে ঝড়ায় অভিশাপ।
এগুলো সব জনগনের ভুল।
ভাষন শুধু, কেউ পাবেনা মাপ।

শহর জুরে কঠিন কঠিন রব,
ধুলোর ওপর ছড়াচ্ছে নিশ্বাস।
গাছেরা শুধু রুপকথা হতে বাকি,
স্ট্যাটাসে ঘোরে মানুষের উচ্ছাস।

আপন হতে যারা হঠাৎ আসে,
ভালোবাসে, ভালো বাসায় খুব।
তারাও আবার অন্তবিহীন হয়ে,
পাঠিয়ে দেবে বিষন্ন চিরকূট।

বিদ্রোহ আজ বিদ্রোহী হয়ে উঠে,
পিছন থেকে কথা বলাই স্বভাব।
এসো তবে মানুষের কথা বলি।
যাদের বড্ড মানুষ হওয়ার অভাব।।

রবিবার, ২৬ মে, ২০১৯

কবি রহিমা খাতুনের কবিতা


অজান্তে 


যেদিন আমি প্রথম তাকে দেখি, 
শুধিয়েছিলাম, আপনার শ্বশুরবাড়ি কোথায়? 
সে জানিয়েছিল, " হয়নি কো সে বাড়ি "।
এমনই ছিলাম আমি; 
পাগল- পাগল ,  গাঁয়ের মাটি মাখা। 
আবোল- তাবোল, আলগোছে ভুল বকা।
বয়স টি যে কম ছিল, তা নয়;
এই ধরো, বছর কুড়ি প্রায়,
' সে' ছিল তিরিশ কাছাকাছি।
  বলেছিলো, সে বছর  সে বাবা হারিয়েছিল নাকি'
এই রকম কত কথার সারি,
আমার  সাথেই  করেছে আলাপন।
ভেবেছিলাম - এত  বেশি বয়স,
এখনও বিয়ে হয়নি কেন?
খেয়ে দেয়ে আর কিছু না, 
ওই একখানি ই কাজ যেন। 
বলেছিল " রঙের শহর এটা,
রঙিন হোয়ো না তুমি "।
শুনে মন আৎকে ছিল কিছুটা,
তবে ঠিক ভয় পায়নি আমি  । 
পাবো কেন বা বলো,
আমি ছিলাম  সাদা কালোর প্রেমে  । 
চিন্তাই নেই রঙের ফাঁদে পড়ার,
আওড়ে ছিলাম মনে।
হতে পার, ছোটো বড় সাঁকো,
ভাবতাম না, লাগবে কারো হাত।
যবে থেকে হাত বাড়ালো সে,
মনে হতো,  পেলাম কারোর সাথ।  
চলতে শহর পথে, লাগতো বড় ভয়,
সরাতে আমার চোখের ভীতি, 
থাকতো সদাই যেন 'জয়'
ভরসায় পাড়ি দিত এ মন।
কাটাতাম স্টেশন পাড়ায় প্রহর,
গুনতাম শিশির- হাওয়ার  তাল,
দেখতাম জন জোয়ারের ঢেউ,
পড়তাম আপন হওয়ার পাঠ। 
ভাবতাম, ' সে' যেন এক বিশাল বড় গাছ,
আমি তাতে কিচিরমিচির পাখি।
অবাক চোখ তাকিয়ে থাকতাম আকাশের দিকে, 
মন  করে উঠতো  কখন চেচাঁমেচি।    
"আমি  কি করি তার জন্য?  
শুধু তো শুনতে থাকি কথা, 
অকারণ বকিও মাঝে মাঝে, 
তাতে কি মলম কিছু লাগে তার কাটা ঘায়ে?   
আমি বলতাম, তা ঠিক নয়, তবে?   
তবে সে কেন এত সাধে আমায়?
কেন ডাকে এত আপন করে?   
কেন বলে, "মরমিয়া , তুমি যেওনা আমায় ছেড়ে"।
কিছু প্রশ্নের উত্তর ছিল অজানা তখন, 
অজানাতেই, দিয়েছি অচেনা পথ পাড়ি। 
গিয়েছি সাগর জলে ভিজতে সাথে তারই,
হেঁটেছি বৃক্ষলতার গোপন বৃন্দাবন ।
চলতে চলতে হঠাৎ করে একদিন বলল আমায়,
" তুই আমার হলি এবার,
আজ থেকে তুই আমার... "
আজ, এই বছর আটেক পরে ও বলছি,
আমি সত্যিই তোর।
যেদিন তুই হাত দিয়েছিলি, দুই স্তনের মাঝে, 
আমিও রেখে দিয়েছিলাম তোর বুকেতে, ' আমাকে'
তাই এদেহে প্রাণ নেই আর।
সে প্রাণ  এখন তোতেই থাকে,
আমি ও আর আমার না। 
অজান্তে তোর আপন হয়েছিলাম,
জেনেও দিলাম তোকে, "আমার আমি কে"  । 

শনিবার, ২৫ মে, ২০১৯

কবি হুমায়ুন কবিরের কবিতা পড়ুন




ক.)
আতঙ্কে
------কবি হুমায়ুন কবির

হ্যাঁ ভয় পাই,
ভয় পায় আমি সম্পর্কের স্থাপন,
কখনো ভেঙে না ফেলি!

ভয় পায় আমি বিশ্বাসী মানুষ,
কেউ যখন দাবী করে,
এই জানো―
তুমি আমার খুবই কাছের মানুষ,
তখন ভীষণ ভয় পায়,
আমি বিশ্বাস ঘাতকতা করে না বসি!

ভয় পায় আমার ফেলে আসা অতীত,
বড়োই নিষ্ঠুর ছিলো!

ভীষণ ভয় পায়!
ভয় পায় মায়ের স্নেহ,
ঋণ কখনোই শোধ হবেনা।

ভয় পায় বাবার শাসন―
তখন তো আমি ছোট্ট খোকা,
এখনো মনে পড়ে বন্ধুরা মিলে―
পাখির নীড়ে ডিম ভাঙার কথা।
মনে পড়ে সল্লার জলের মাঝে লুকোচুরি,
আমি প্রচুর জল খেয়ে ফেলে ছিলাম।
সেদিন হয়েছিল ভয়।

হ্যাঁ ভয় হয়,আজো হয়,
প্রশংসিত বন্ধু বান্ধ,
তৃপ্তিকর বিচিত্রময় বসুন্ধরা, ছেড়ে―
যাওয়ার কথা ভাবলে।

ভয় পায় আমি অতীত,
কারণ―
আমিও একদিন হয়ে যাবো ইতিহাস, উপন্যাস,
হয়তো বা ছোটো গল্পো।
ভয় পায়, হ্যাঁ ভয় পায়।
ভয় পায় আমি প্রেমিকা মানসী,
হৃদয়ে ভুগান্তী বেদনার শত কোপ।


খ.)
প্রেম সুধা
--------কবি হুমায়ুন কবির

জীবনের দিন-ক্ষণ গুলো যদি তোমার কারণে  বিফল বিনিষ্ট হয়ে থাকে তবে থাক,
চলে যাও!
কোনো ক্ষতি নেই!
হৃদয় আমার, হৃদয় স্পন্দনে স্ফুটিত―
প্রেমও আমার।
গেছিলো ভরে―নিষ্কাম নির্মল কষ্টি শীলা―
যাচিত সরল স্বচ্ছ প্রেমে!
তুমি ভেবেছো কি, তোমার বিরহে, কষ্ট?
কখনো না!
আপন হৃদে―অতিরিক্ত প্রেমে হয়েছি―
নেশা গ্রস্ত।
প্রেম বীজ আছে গোপনে সাদ্ধ কার,
যে―ধরবে-?
যতক্ষণ না হবে বৃক্ষ রোপণে।
ধরতে পারলে ধরো,
না-পালে, বৃক্ষের ফল খাবে সর্বজনে!
অনুপম বিশুদ্ধ পবিত্র প্রেম আমার সঙ্গে আছে।
আমার আর কোনো চাওয়া-পাওয়ার নেই।
পূর্ণ―হৃদয় পাত্র আমি করেছি বরণ,
কাঙ্গালী হৃদে প্রেম করিবো বিতরণ।
হে পবিত্র সর্ব ত্রুটিমুক্ত নির্মল প্রেম―
তুমি আমার সঙ্গী থাকলে, আমার আর কোনো― আক্ষেপ পরোয়া নেই।
বরং হে প্রেম, তুমি আমায় ধর, আমি তোমায়―করিবো ধারণ।

গ.)
অভিযোগ
-------কবি হুমায়ুন কবির

তোমার ইশারায় নিভে যাবে ভাবিনি কখনো।
পড়ে থাকা ধূলী-কণা গচ্ছিত করে,
মায়ার প্রলেপ দিয়ে তৈরী তোমার―
কারণ-অকারণে।
তাতে দিলে জল বায়ূ অগ্নি কিরণ,
মিস্রিত করে ঢেলে দিলে প্রাণ।
বাঁধন-ছাধন বেশ পোক্ত, ধমনী শিরা-উপশিরা তাতে বইতে শুরু হলো, রক্ত নদীর ধারা।
সমস্তকে একক করে,
নির্মাণ করলে তুমি―সৃষ্টির সেরা।
তা না হয় বুঝলাম।
তবুও অভিযোগ তোমার কাছে।
আকাঙ্খিত হৃদয় দিয়ে কেন দিলে প্রীতি-?
প্রীতি না হয় দিলে তুমি।
দুটো প্রেমিক হৃদয়ের মাঝে বেধেঁ দিলে― একেমন রীতি?
শুধু ভালোবেসে গেলাম, কখনো হতে দিলেনা?
মিলন তিথী!
পুরুস্কার ভালোই দিয়েছো তুমি,
পেলাম শুধু দুটো হৃদয়ের অতীতে ফেলে আশা স্মৃতি।
যে প্রদীপ জ্বলে ছিল দুটো হৃদয়ের পরশে।
আজ সে প্রদীপ নিভে গেছে তোমার কারণে―
শুধু পড়ে আছে বাতি।

আমার আপনার প্রিয় কবি রবীন বসুর লেখা দুটি কবিতা





ক.)
বর্ণের সবুজ ঘেঁষে জেগে উঠছে ঢেউ
——————————————


ভিতর থেকে উঠে আসছে ঝড়
টাইফুন আয়লা সাইক্লোন বিধ্বস্ত মানচিত্র
বর্ণের সবুজ ঘেঁষে জেগে উঠছে ঢেউ
পারাপার লোকহিতের বর্ম পরে
তবুও অনিকেত মানুষের বসবাস
শিকড় চুঁইয়ে পড়ে দুঃখের ফ্যান
হাভাত ভারতবর্ষ চেটে নেয় প্রসাদের পরমান্ন
ন্যুব্জ দেহে গণতন্ত্র বলড্যান্স রুমে
সম্মোহিত কারুকাজ অন্ধত্ব দু’পা বাড়িয়ে বলে
কেয়া তুম  মুঝে কুছ দে সেকতে হো…

হোক কলরব বেয়ে উঠে আসছে প্রতিবাদ
বিপ্রতীপ মৃত্যু ডাকে সমূহ বিনাশ
গঙ্গাকে বাঁচাতে গিয়ে অনশন দীর্ঘ হয়
প্রলম্বিত ‘মৃত্যু উপত্যকা’ সরকারী উদাসীনতার ফাঁস
ভিতর থেকে উঠ আসছে যে ঝড়
তার গতিমুখ বরাবর উন্নয়ন নেই
আবহবিদ আর পরিবেশবিদ একই টেবিলে মুখোমুখি
এবার বোধহয় সমাপতন কেঁপে উঠবে
আকাশ ঝাঁপিয়ে নামবে বৃষ্টি, বৃক্ষরা বেঁচে যাবে
আর বেঁচে যাবে আমার হাড়-জিরজিরে ভারতবর্ষ l



খ.)
হাঙ্গার ইনডেক্স
——————


এই যে শিকড়ে হাত, এই যে আগ্রহ ভরে নেয় জল
গভীর আশ্লেষ নিয়ে আমাদের যাবতীয় চলাচল
প্রাচীন মুদ্রায় ভাঙে

একতারা হাতে নেয় বৈশাখি দিন
সন্ন্যাসী হাওয়ায় ওড়ে দিগ্বিদিক
তবু কোন্ মন্ত্রবলে কারা যেন হেঁটে গেল দূরে

নতুনের দূত শব্দের কারিগর
তোমরা যে করিডর পার হয়ে গেলে
সীমান্ত পাঁচিল না হয় কাঁটাতার

সব আজ উধাও ডেটিংয়ে যাবে
পরিসীমা ব্যাপ্ত আজ সম্পর্ক গ্লোবাল
হাঙ্গার ইনডেক্স দিয়ে প্রেম শুধু মেপে নেওয়া যায়…

সোমবার, ২০ মে, ২০১৯

এই বেশ ভালো আছি

সুমন কুমার দত্ত

আজ সায়কের 28 তম জন্মদিন। খুব হৈ হুল্লোড় বাড়িতে। পুরানো অনেক বন্ধুই উপস্থিত। কেক কেটে জন্মদিন সেলিব্রেট করে হালকা ডিনার করে সবাই শুভেচ্ছা জানিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছে। এখন শুধু প্রিয়াঙ্কা রয়ে গেছে অফিস সংক্রান্ত কিছু কথা শেয়ার করার জন্যে। প্রিয়াঙ্কা, সায়কের কলেজ কাম অফিসের বেস্ট ফ্রেন্ড। একসাথেই ক্যাম্পাসিংয়ে চাকরি পেয়ে দুজন ট্রেনিংয়ে গেছিলো। কলেজ লাইফে সায়কের প্রিয়াঙ্কা কে ভালো লাগতো, কিন্তু বয়ফ্রেন্ড থাকার কারণে সম্পর্কটা বেস্ট ফ্রেন্ড হয়েই রয়ে গেছিলো। যাইহোক, ডিনারের পর দোতলায় সায়কের বেডরুম সংলগ্ন ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে দুজনের কথা হচ্ছিল। প্রিয়াঙ্কা বলে যে "বিয়ের পাত্রী দেখছিস ?", সায়কের উত্তর "ধুস,পছন্দ হচ্ছে না"। প্রিয়াঙ্কা বললো "আমি ছাড়া আর কাউকে মনে ধরবে না,শয়নে স্বপনে তো আমিই আছি।" সায়ক তখন প্রিয়াঙ্কাকে বলে যে "জানিস, আমাদের অফিসের রিয়া, কমিটেড ছিল, ট্রেনিংয়ে ব্যাঙ্গালোর গিয়ে একটা নতুন ছেলের সাথে আলাপ হলো, ওর আগের বয়ফ্রেন্ড একটু ডমিনেটিং ছিল, তাই ওর সাথে সম্পর্ক চুকিয়ে এই নতুন ছেলেটার সাথে রিলেশানে চলে গেল, আমার জীবনে আমি এরকম কাউকে পাইনি যে এই সাহস টা নিতে পেরেছে, বরঞ্চ আমি কত ঝগড়া নিজের চোখের সামনে দেখেছি, ভাবিনি যে কেউ কাউকে ছেড়ে আমার কাছে আসবে।" প্রিয়াঙ্কা -"তুই কি আমার কথা বলছিস নাকি রিয়া কে ভালোবাসতিস, ভাগ্যিস ওর সাথে ট্রেনিং পড়েনি, নাহলে আমায় ভুলে যেতিস।" কপট রাগ দেখিয়ে সায়ক বললো যে "মোটেও না, তুই যে সঞ্জয়কে ছেড়ে আসিসনি এটা প্রমান করে তুই কতটা ভালোবাসিস ওকে।" নির্লিপ্ত ভাবে প্রিয়াঙ্কা উত্তর দিল " আমি ওকে ছেড়ে আসিনি কারণ এটা নয় সায়ক যে আমি ওকে পাগলের মতো ভালোবাসি, আমাদের ঝগড়ার সময় হয়তো তুই চেষ্টা করলে আমায় পেয়ে যেতিস যেটা তুই কখনো করিসনি। ওকে না ছাড়ার কারণ এটা যে, আমার জেদ আমায় বলেছিল এতদিন ধরে যে রিলেশান ছিল সেটাকে ধরে রাখবো, তাকে যেতে দেবনা, এটা আমার ইগো, আমার আত্মসম্মানবোধ, আর তোকে আমি ওই জায়গায় কেন বসাইনি জানিস? কারণ ভয় লাগে, তুই আমায় পেয়ে যদি নিজেকে চেঞ্জ করে ফেলিস, কিছু জিনিস না পাওয়াই ভালো, সম্পর্ক মজবুত থাকে, অনেকে পেয়ে ভুলে যায় আসল মানুষের আত্মাটাকে, রিয়া ভালো করেছে, নিজের সুখ নিজে খুঁজে নিয়েছে, বেশ করেছে। একটা কথা মনে রাখবি সায়ক, মানসিক বা শারীরিক, সুখ ও সম্পর্ক তোর নিজের, একটা মানুষ একের বেশি মানুষকে মন দিতে পারে, এটা হিউম্যান নেচার, তুই এটাকে ডিনাই করতে পারবি না, যতই তোর প্রেমিক বা প্রেমিকা থাক, যতই ভালোবাসিস তাকে, সে যদি দূরে থাকে আর বিপরীত সেক্সের কেউ যদি ভালো বন্ধু হিসাবে তোর কাছে থাকে, তোর ভালো লাগবেই, যদি মনের মিল হয়, সেটাই নরম্যাল, সেটাই সম্পর্কের সংজ্ঞা, আমরা এই বেশ ভালো আছি, এরকমই থাকি, আর জলদি একটা লাল টুকটুকে বউ আন।"
দেয়ালের টিকটিকিটা যেন শুনে সমর্থন করে উঠলো "টিক টিক টিক"।
ঈশ্বরের সাক্ষাৎ
বিকাশ দাস (বিল্টু
(03-05-19)

ঈশ্বরের কথা শুনে বড্ড ছ্যাত  করে উঠে বুকটা
ফেনীতে বাড়ি ছিল,গোছালো সংসার
ফনীতে মিলিয়ে গেলো মুখাবয়ব......
ঈশ্বরের মুখ রুগ্ন, উদাসী চোখ পরিজন খোঁজে.....

প্রাণচঞ্চল ঈশ্বর হারিয়া খেয়ে উদ্দাম নাচে ছুটে আসে মধু গরানের দেশে
অভিমান ফুঁসলিয়ে উঠে, তান্ডব লীলায় খৈ হয় ত্রাণ তহবিলের গুদামে.....

ঈশ্বর তো অবলা, নির্ভেজাল।
ভেজাল হারিয়া খাইয়ে উদ্দাম নাচ দেখতে -- এনাউন্সমেন্ট শুনতে কি বেশ লাগে?
নীরব আর্তনাদ দেখনি? দেখনি ঈশ্বরের সারা শরীরে যখন কেমিকেলের আস্তরণ দিয়ে ওর বুকের ক্ষত দূর করো...

তখন কি অসহায় হয়ে তাকিয়ে ছিলো তোমার আমার মুখের দিকে
করুণ চোখ জলে টলমল করছিলো
শুনিনি কেউ, অবহেলা !

আজ অবাক লাগে বাস্তবের মাটিতে ঈশ্বরকে কাঁদতে দেখে --

বাস্তবে আজ দেখি :

জানালার ও পাশে ঈশ্বর ঘুমায় -খিড়কি দিয়ে ঈশ্বরের গান আসে --
ঈশ্বর হাত বাড়িয়ে দু টাকা চায়
"ঈশ্বর" ডাকি জপে-তপে; ঈশ্বরের মুখে শুন্যতা -

প্ল্যাটফর্মে  আমি আর ঈশ্বর মুখোমুখি
ঈশ্বর কথা বলে আমার সাথে
আমি  ঈশ্বরকে  ডাকি
ঈশ্বর বড়োই পথভোলা, মিলিয়ে গেলো ভিড়ে.....

       
গন্তব্য:
জয়ীতা চ্যাটার্জী


আজ বুঝি পেয়ে গেছি পথ, ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছি শুরুর দিকে, এগিয়ে যাচ্ছি উৎস শেকড়ে।
দুপাশে ভাবলেশহীন কাঁটার পাহাড়, রাত বাড়লে মনে হয় যেন কালো একটা রাস্তা ঢুকে যাচ্ছে আমারই ভেতরে।
আমার আগে ছুটে যাচ্ছে কালো স্যুট পরা বিশালাকার গর্জনশীল শরীর,
আমিও সেই বিকট প্রবাহকে জড়োসড়ো পায়ে অনুসরণ করে চলেছি, হিম দৃষ্টি পথেই স্হবির।
উথলে উঠছে ব্যথার রাত, উদ্ধত দাঁড়িয়ে আছে অসচ্ছ নিষ্ঠুর কটূ হাসি।
এ এক শূন্যতলের ঘেরাটোপ, দৌড়োতে দৌড়োতে পুড়ে যাচ্ছি দূর থেকে আমি।
একই বেশে একই চেহারায় দাঁড়িয়ে থাকে পথ, থমকে থাকে কেন্দ্র থেকে পরিধি পর্যন্ত।
নিঃশব্দে দাঁড়ানো সারি সারি রাস্তার একটি ধরে হাঁটতে থাকি আত্মহারা, হাঁটতে থাকি উৎস থেকে আমার গন্তব্য।

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে, ২০১৯

এই সময়ের কবি ও কবিতা






---পাঠকেরা জড়ো হও কবিতার পাশে---





ক.)


কবি অর্জুন দাস
জন্ম ১৯৯৪ সালের ১৮ ই জুলাই, কলকাতা।






আপনারা পড়ছেন কবি অর্জুন দাসের লেখা
শখ

কিছু খাতায় ওড়ে ভাষা, থাকে অনন্ত জিজ্ঞাসা
তুমি আদিম ভালবাসার ঝোঁকে জড়িয়ে ধরো রাত।

ঠোঁটে নতুন কোনও ভাঁজে, চেনা ভারিক্কি আন্দাজে-
বহু বারণমানা কাজের পরও আচমকা সংঘাত...

জুড়ে কথার পাশে শ্লোকও, মেলে দিগন্ত ফাঁকফোকর
ভাঙা ফটক দিয়ে ঢোক আমার অতীতমাখা গা'য়।

মাঝে কয়েকসদর খোলা, মৃত ডিঙিতে পালতোলা
আমি আবরণের কোলাজ আঁকি ভিনদেশী জামায়...

ভাবি ভেতর কেমন ফাঁকা, সময় ওড়াচ্ছে পতাকা
থামা ঘড়ির মতো আকার নিয়ে কাটিয়ে চলি রেশ।

যতই আদর মাখো গালে, এখন আজন্ম শীতকালে-
শুধু শিশিরভেজা শালের কাছেই আগুন নিরুদ্দেশ...

তাকে খোঁজার ছুতোয় এসে, চাপা রহস্যে-বিদ্বেষে
শত আদিখ্যেতার শেষে সবার হুকুম ফেরায় জ্বিন।

যদি পরশ নিতে পারো, পাবে দু'পশলা চিৎকারও-
ভয়ে চোখ নামাবার আরও আগে বাড়িয়ে দিই আস্তিন...

তুমি হাজার রাতের আরব, আমি শখের আলাদিন...




খ.)

কবি রেজমান
জন্ম তারিখঃ- ১ জানুয়ারি,
জন্মস্থানঃ- বাগনান



তাঁর লেখা একক কাব্যগ্রন্থ গুলি হলো
১.)"ক্যাটাস্ট্রোফে", ২.)"হ্যালুসিনেশনের আগেরগুলো", ৩.)"ইমোশন থেকে ইলিউশান অবধি"
প্রকাশনঃ- নবজাতক









এখন আপনারা পড়ছেন কবি রেজমানের লেখা
 ডিসটোপিয়া


অভাবগুণে সমস্ত পথ রাস্তা খোঁজে শেষের...
'চাকরি না হয় বুলেট দিও' ; 'বুলেট না হোক লাঠি'
গোটা কয়েক লাশ বাড়লে একশো কোটির দেশে,
কিচ্ছু কারও যায় আসে না, যে যার মতোন হাঁটি।

ভোটের প্রচার রমরমিয়ে বিজ্ঞাপনের বাজার
নরম সুরে উপচে ওঠে অঙ্গীকারের ধারণ,
ডিসটোপিয়ান রাজশাসনে ঠিক করে দেয় রাজা
কার কতদূর সীমারেখা, কার কী বলা বারণ।

গল্প ভালোই জমে শুধু বাগড়া বাধায় ভূতে,
অন্ধকারের ভবিষ্যতে তলিয়ে যাওয়া খাদে...
লেঠেল নিয়ে তৈরী রাজা বুঝিয়ে দেবে বুথে
ভোটের শহর ছড়িয়ে গেছে ফেস্টুনে-প্ল্যাকার্ডে

সিমপ্যাথেটিক মিথ্যে ভাষণ জমজমাটি সভা
শিরদাঁড়াহীন সুবিধাবাদ হাততালিতে সামিল
আর কতবার মরার পরে বুঝবে শেষে সবাই
ক্ষমতাসীন সমস্তটাই ডিসটোপিয়াগামী...




গ.)



কবি আজাহারুল ইসলাম

জন্মতারিখ ২১ শে ডিসেম্বর, ১৯৯৭
শান্তিনিকেতন, বীরভূম

এখন পড়ছেন কবি আজাহারুল ইসলামের লেখা
বড় হয়ে গেছি


গ্রীষ্মকালে কলতলার মুখ কাদা দিয়ে
ঘিরে স্নান করার স্মৃতিগুলো,
এখন ইতিহাস,

তিনটাকা দামের বরফের লাল নীল সবুজ আইসক্রিম আর খাওয়া হয় না,

জোগাড় করা আইসক্রিমের কাঠি গুলো হারিয়ে ফেলেছি দেশলাইয়ের তাসের মতো...

আইসক্রিমের মাথায় চিড়ের পরিমাণ বেশি থাকলে,
'না কাকা, অন্যটা দাও', আর বলা হয়না,

কাঁচা লঙ্কা ঘষে পান্তা ভাত খাওয়াটাও ছেড়ে দিয়েছি,

পাড়ার আমবাগানে নুন মরিচ কুচি দিয়ে কাঁচা আম পেড়ে খাওয়া থেকে শুরু করে
পেয়ারা চুরি করে খাওয়া, সবটাই এখন অতীত,

মাঝেমাঝে তাই ইচ্ছে করে ছোট হয়ে যেতে,

আবারও আগের মতো কোমরে নুন গুঁজে,
আম বাগান ছুটে যেতে ইচ্ছে করে,

কিন্তু কি করবো!
সবটাই যে অতীত,
আর যে ফিরবে না,

চুলে লালফিতে বেঁধে রাখাটা প্রেমিকারও আজকাল মানায় না,
মানায় না আমাকে লাটাই হাতে,

ইচ্ছে হলেও হবে না যে...

আগে চুল কাটাতে নিয়ে যেতো বাবা,
মা বকতো, চিনি চুরি করার জন্য..

আর দাদু বকতো হোমিওপ্যাথি ওষুধের মিষ্টি দানা  চুরি করার জন্য,

এখন আসলে এমনভাবে থাকি,
এতোটাই বড় হয়ে গেছি যে...
ওরা চুপ করে গেছে,

অবশ্য মা এখনও বকে,
রাত্রি করে ফিরলে...

সত্যি ভুলে গেছি,
আর ছোট হয়ে নেই আমরা
বড় হয়ে গেছি, অনেক বড়...

দুই মিনিট বাবাকে
তিন মিনিট মায়ের সাথে,

আর নতুন একজনের সাথে ৫ ঘন্টা ফোনে কথা বলাটাই আমাদের জীবন এখন,

জানি, সবাই জানে...

আমাদের বাবার সাইকেলে আর,
ছোট্ট কোনো সিট লাগানো নেই....




ঘ.)

কবি কাব্য ব্যানার্জি
জন্মতারিখঃ- ১৯/১২/১৯৯২
জন্মস্থান- বাটানগর




লেখিকার একক কাব্যগ্রন্থের নাম "তিতাস"।
প্রকাশন - বার্তা প্রকাশন।







এখন পড়ছেন কবি কাব্য ব্যানার্জি'র লেখা
 ছন্নছাড়া

বাঁধণ অনেক তোমার
নিজেই আমি বাঁধন ছাড়া
তবু কোথাও আগলে রেখে
সাড়া দিই সে ডাকে।

উদ্দাম ঝড়, অন্যরকম
উষ্ণতা কই নিয়ম মাফিক?
আকর্ষণে মিললো মন
আমরা তখন আপনজন!

শুকনো যখন হল জমি
দেখছি মনে মরুভূমি
মন বলছে তুই কোথা?
তার ব্যবহার একরোখা!

ভীষণ বৃষ্টি আসলো ছাদে
দূষণ ঘটলো ঘরের বাতাসে
তিক্ত হলো কথার ধার
আমরা আলাদা হলাম এবার।

আঁচল উড়লো আকাশ মাঝে
শঙ্খচিল খুঁজতে আসে
দরজা বন্ধ মনের ঘরে
এখন শুধুই বৃষ্টি পড়ে।

বায়না গুলো ঘরের ভিতরে
পচে, গলে, কেবল পোড়ে
আত্মসম্মান ধরে রেখে
আলতো আলতো গা সেঁকে।

তারপর একদিন আবার ঝড়
কানে চেনা কণ্ঠস্বর
পোড়ার গন্ধ ছড়িয়ে গ্যাছে
সে আমাকে দুর্বল ভেবেছে!

না তাকিয়ে চেনা চোখে
দেখলাম কেমন দেখছে লোকে
হাত ধরে সে বললো ফিরতে
আমিও জানি বুক চিঁড়তে।

বাঁধন খুলে মুক্তি দিয়ে
চোখে সাহসী ঝর্ণা নিয়ে
বলেছিলাম, এ মনকবর
আর রাখেনা কারো খবর।

শুনে সে দাঁড়ালোনা
ফেরার কথা বললোনা
আকর্ষণের বাঁধন ছিলো
তাইনা ছেড়ে চলে গেলো?



সোমবার, ১৩ মে, ২০১৯

গুগল ইস্যু


লেখাটা ফেসবুক কবিদের জন্য, অকবিদের জন্যও

 লেখাটা ফেসবুক কবিদের জন্য, অকবিদের জন্যও
============কলমে সুদীপ্ত সেন(ডট.পেন)


ফেসবুকে অঢেল লেখালেখির ভীড়। লেখক, লেখিকা, কবি হ্যাঁ কবিটাও উল্লেখ করলাম জানি লেখক / লেখিকা বলেই ছেড়ে দিলে হতো কিন্তু ছাড়লাম না অনেকে আবার কবিটা বেশি পছন্দ করে একটা প্রমোটেড ব্যাপার থাকে কবি'তে।

লেখা প্রায় প্রতিদিন ঝুলে যায়, একজন একদিনে পাঁচটাও পোস্ট করে বা কেউ  পাঁচদিনে একটি করে তবে তার সংখ্যা কম। যাই হোক লেখার সাথে তাল মিলিয়ে পাঠক-পাঠিকার সংখ্যাও প্রচুর যাদের কে ফ্যান বলে দাবী করে ফেবু কবিরা। অথচ সেই ফ্যানরাও বেশি পরিমানে কোনো না কোনো কবি তাই তাদের লেখাই আপনি নিজে যদি কমেন্ট না করেন তাহলে দেখবেন কিছুদিন পর সেই ফ্যান অভিমান করেছে যার পুরোটাই এসে পড়ল আপনার কমেন্টে। ফলাফল সেই ফ্যান যে ফ্যান ছিলনা ফ্রিজ ছিল অর্থাৎ কারেন্ট পেলেই তবেই চলবে নতুবা মাল নষ্ট আরে মানেটা হলো তাদের লেখায় কমেন্ট করলে তারাও কমেন্ট করবে আপনার লেখাতে নতুবা থাক আসছি।

এই গেল এক এবার আসব দুই নম্বর কথায়।

চরম পপুলার, দুই একটা বই বেরিয়ে গেছে এরা পপুলার এরা মনে করে আজ কিছু লিখব না আবার কাল লিখব তবে তারা দুই প্রকার,  কিছুজন পপুলার মনে করে আর কিছুজনকে লোকে বলে। এদের নিয়ে কিছু না বলাই ভালো।

আর লেখিকাদের ক্ষেত্রে একটু সুযোগ থেকে যায় কিরকম বলি, ধরুন পাঁচজন ছেলে কারোর বয়স বেশি তো কারোর কম সেটা ডন্ট ফ্যাক্ট। কবি যে লিখেছেন প্রেমের বয়স নেই আর এটা যে ভাবছেন তার হয়েই গেল। ভীড় করবে সব বয়সের পাবলিক আর রোজ একটু করে আলত হয়ে ম্যাসেজ করলেই ফ্যান আর তার এই ম্যাসেজে একটু বেশি পাঠক গুলো পাতলা হয়ে গেলেই মুশকিল তাহলে কাল হয় ব্লক খাবেন নতুবা স্ক্রিন শর্ট
আর এটা খুব শক্তিশালী প্রমান ,সেক্ষেত্রে বাবা তুমি গেলে।

মূলত গেল এই এই ব্যাপার গুলো সব শেষে যদি আসি তাহলে দেখব ভালো লেখার মান কমে আসছে, প্রেম বেড়ে কান্না পাচ্ছে একসময় আর নতুবা সমাজ কে নাড়িয়ে দিয়ে গীর্জার গায়ে লিখে আসছে আমার নাম সহিদুল খান আমাকে তুমি ঢুকতে দেবে ব্যস এটুকুই, কাল তুমি  হো হো করে বেড়ে যাবে শুধু এটুকু লেখাই, আর যারা লিখল কোনো প্রকৃতির কথা অথচ সেখানে বুক খুলে থাকা কোনো মেয়েকে তার লেখাতে নামাল না সে থেকে গেল খুব বেশি হলে একটা লাইক নিয়ে।
অথচ যাঁরা পপুলার সত্যি করেই, যাঁরা বিদেশে যাচ্ছেন কবিতা পড়তে, অ্যাকাডেমি পুরস্কার পাচ্ছেন তাঁরাই আসল কবি এটা আমরা ভুলে যায় বিশেষ করে ফেবু কবিরা। কিন্তু পাঠকদের মনে থাকে তাই তাঁরা(আসল পপুলার কবিরা) গাছের কথা লিখলেও লোকে পড়ে আবার ল্যাংটো প্রেমেরর কথা লিখলেও লোকে পড়ে।

আর আমরা তাকেই ফোলো করি। আরে বাবা এটা বুঝিনা তোমাকে বাড়তে হবে তোমাকে দেখে, যেখানে তুমি বেড়ে উঠছ কিনা সেটা দেখার।

তাই বলে কি কেউ ফেসবুকে ভালো লিখছে না?  অবশ্যই লিখছে তবে তার সংখ্যা কম।

আসল কথা হলো শুধু ফেসবুক কে লেখার গন্ডী করে কয়েক হাজার ফ্যান ফোলোয়ারস নিয়ে যারা রোজ লিখছ তারা একটু গন্ডী ভেঙে কখনও সখনও কোনো ওয়েব ম্যাগাজিন বা প্রিন্টেড পত্রিকায় লেখা পাঠাও আবার কৃত্তিবাস কিংবা দেশের ইমেলেও লেখা জমা দাও। দেখো সেখানে থাকা ওই দক্ষ চোখে তোমার লেখা মনোনীত হয় কিনা।

আর এরপরে যারা এটা বলবে যে না আমি এসবের জন্য লিখিনা ভালোবাসি তাই লিখি, তাহলে আমি বলব আমার এই লেখা তাদের জন্য নয় তাই এই লেখাটা তাদেরই জন্য রাখলাম যারা এটা কে ভাবতে পারবে, নিতে পারবে এবং লেখাটার সাথে রিলেট করতে পারবে নিজেকে।

রবিবার, ১২ মে, ২০১৯

## কবিতা ##
◆◆ আঙ্গুল ছুঁয়ে লেখা ◆◆

চাইনা তোমার হৃদয় ভাঙার নেশা
চাইনা তোমার বিলুপ্ততার গান
ইচ্ছে হলে তবেই অন‍্যে মেশা
অ্যাসট্রের বুকে রেখে যাওয়া অভিমান।

ঠিক কত ভোর সকাল হবেই বলে
কোলবালিশে প্রেম জড়িয়ে থাকে
ঠিক কত সাঁঝ রাতের দিকে চেয়ে
ঠোঁটের আদর ঠোঁটেই পুষে রাখে।

ওড়না বুকে আলগা চুলের ভাঁজে
হালকা আলোয় কলেজ মোড়ের বাঁক
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে থাকা নীরবতা
প্রেমের চাওয়ায় ফুটখানেকের ফাঁক।

তবুও চাঁদের আলো প্রতিবাদী হলে
নীলঘরে পোড়ে নিষিদ্ধ নিকোটিন
আসবে ভেবেই শব্দে ভরানো পাতা
ডটপেন মাপে ব‍্যবধান প্রতিদিন....

ভার্নিয়ারের স্কেলে বসন্ত এলে
পিপেট গোপন ভালোবাসা পেতে চায়
গীটারের তারে জড়ানো আবেগ মেখে
পরিযায়ী প্রেম পোড়া স্মৃতি রেখে যায় ।।
              ##########
                              ---------------------© সন্দীপ (অর্কিড)
এক বুক আকাশ
 ~~দ্বৈপায়ন চ্যাটার্জী

জানালার ধারে বসে বৃষ্টির কথা ভাবছি,
সে আসবে বলেছিল,এখনো তো এলোনা!
আমি একমনে ভেবে চলেছি ,
হঠাৎ তুমি আসলে,
বৃষ্টির আসার কথা ছিলো,
তুমি এলে,
দেখো আমার চোখে বৃষ্টি নেমে এলো ,
অপ্রত্যাশিত মূল্যবান জিনিস হঠাৎ পেয়ে গেলে বুঝি এভাবেই বৃষ্টি নেমে আসে চোখে!
আমি আকাশের বৃষ্টির অপেক্ষায় সারা সন্ধ্যে কাটিয়ে দিলাম,
বৃষ্টি এলোনা,
তুমি এলে,দেখো বৃষ্টি নেমে এলো।
আমার কাছে এসে আমার চোখ মুছলে,
তোমার দিকে তাকিয়ে রইলাম কিছুক্ষন,
তুমি অদ্ভুত সুন্দর,
তোমার ওই আঁখিপটে সত্যি ই কি আমারই নাম লেখা আছে,
নাকি অজস্র সৌন্দর্য্যের মাঝে আমি বিলীন!
দুজনে এসে বসলাম পাশাপাশি,
হঠাৎ করে তোমাকে পেয়ে ভুলে গেছি আকাশের কথা,
ভুলে গেছি বৃষ্টির কথা,
ভুলে গেছি মেঘেদের কথা!
তুমি এত সুন্দর,
আদর চাইনা আজ,
সে তো অনেক দামি,
শুধু তাকিয়ে থাকতে দাও,
যেমন করে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিলাম বৃষ্টির আশায়!
তুমিতো আমার আকাশ,
এক বুক আকাশ!
মনপোডিয়ামে বেকার-কাব্য!

সৌমেন দাস

ইচ্ছেফানুস
উড়তে দেখি,
ভালো মানুষ
করছে এ কী?

নদীর জলে
ভিজছে সবাই,
হলদে রোদে
কুলফি মালাই!

সবুজ ভিড়ে
মাখছে খুশি,
কেমন করে
ইচ্ছে পুষি?

নতুন নতুন
ফুলের হাসি,
সবাই দেখুন
রাশি রাশি।

একতারাটির
মন ভেঙেছে,
সোঁদা মাটির
বুক ভিজেছে।

রাতেরবেলায়
দেখছি রবি,
হট্টমেলায়
বেকার কবি!
#প্রণমি_তোমায়
#মুনমুন_মুখার্জ্জী

কবিদের গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
তোমার দান সবার জীবনে প্রচুর,
অ আ ক খ সহজে তুমি শিখালে,
ফল সবজির বিভেদ তাও জানালে

তুমি দেখালে সমাজের কুৎসিত রূপ,
বড়লোক মনিবদের প্রকৃত স্বরূপ,
লোভ দেখিয়ে ভাইদের আলাদা করে,
পণের জন্য কাউকে মারতেও পারে।

রক্তের চেয়ে অনাত্মীয় হতে পারে আপন,
গাছের প্রতি উৎসর্গ হতে পারে মন,
কোনটা বাস্তব কোনটা যে স্বপন,
তোমার রচনায় তারও নানা উদাহরণ।

তোমার ভাণ্ডারে বাঙালি চিরধন্য,
সাহিত্যের জগতে তুমি যে অনন্য,
বিশ্ব সাহিত্যেও ছড়িয়েছে প্রাধান্য,
প্রণাম জানাই তোমায় হে অগ্রগন্য।
//মুক্তি//

ভালোবেসে শিকল দেবে না বলেছিলে,
শুধু আলগা সুতোয় বেঁধে রাখবে,
আমি যখন গোটা আকাশ ঘুরে এসে ক্লান্ত হব, শ্রান্ত হব,
আদর দিয়ে সব ক্লান্তি মুছে দেবে।
আর যদি না ফিরে আসি সে প্রশ্নও রেখেছিলাম,
বলেছিলে_
আলগা বাঁধন খুলে স্বাধীনতা দেবে,
দূর থেকেই ভালোবাসবে,
বড়ো প্রেম শুধু কাছে টানে না, দূরেও করে!!
আচ্ছা,
তবে এই যাওয়ার কালে কেন এত পিছু ডাকো?
পুরনো সেই ডাকনামে কেন শুধু বেঁধে রাখো?
আজকে কেন আপন স্বার্থে পাল্টে গেছে ভালোবাসা?
এসব বুঝি কথার কথা, বাহানা মনের কাছে আসার?
     
                                                __শিল্পা মন্ডল
অবগাহন
**********
কলম:তন্মনা চ্যাটার্জী

   প্রথম দেখা হওয়ার স্মৃতিরা ওদের দুজনের মধ্যে আজও অম্লান।। ওরা তমসা ও দীপায়ন।।  একটা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রথম আলাপ, তারপর বন্ধুত্ব।। ওরা দুজনেই ছবি আঁকতে আর লিখতে ভালোবাসে।। তমসা ছবি আঁকলে দীপায়ন মিলিয়ে লিখে দিত কবিতা ।।খুনসুটি আর সখ্যতায় কেটে যাচ্ছিল বেশ।।দুজনে মিলে ঠিক করছিল একটা ছবি-কথার প্রদর্শনীর আয়োজন করবে, আর এভাবেই একে অপরের সাথে কাটাতে কাটাতে ওরা জড়িয়ে পড়েছিলো কোনো এক নাম না জানা সম্পর্কের বন্ধনে।।
   কিন্তু কিছুদিন যাবৎ তমসা লক্ষ্য করে দীপায়ন বেশ কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখছে।। কথাই বলে না।।অনেক জিজ্ঞেস করেও কোনো উত্তর পায় না তমসা।।বুঝতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।।

    তারপর হঠাৎ একদিন দীপায়ন একটি ঝড় জলের রাতে তমসাকে ম্যাসেজে জানায় "যোগাযোগ করিস না আর আমার সাথে।।দেখা করাও সম্ভব নয়।।ভালো থাকিস।।"  তমসার চারপাশ অন্ধকার হয়ে আসে।।বহুবার ম্যাসেজ করেও উত্তর পায় না সে।। কি করবে বুঝে উঠতে পারে না।। সকাল হতেই বেরিয়ে পড়ে।।দীপায়নের বাড়ী পৌঁছে দেখে সেখানেও তালা লাগানো।।উদ্ভ্রান্তের মত রাস্তা দিয়ে হাঁটতে থাকে মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ছে।। একবার সবটুকু সমস্যা আলোচনা করা যেত না ? দুজনে মিলে মোকাবিলা করার একটা চেষ্টা কি করা যেত না? এসব ভাবতে ভাবতেই সন্ধে নামে।। বাড়ি ফেরে তমসা।। সবটুকু ভালো থাকা যেন এক নিমেষে হারিয়ে গেছে ঠিক দিপায়নের মতই।।

   এতগুলো বছর পর মুখোমুখি বসে সবটা যেনো আরও একবার নতুন করে মনে পড়ছিলো দুজনেরই।।নিঃশব্দে আরও কাছাকাছি এসে বসে দুজন কাছের মানুষ।। ওষ্ঠ ছুঁয়ে যায় অধর।।তিন বছর পর প্রথম চুম্বন করেছিল দীপায়ন আর তমসা,অতর্কিতে।। অপাপবিদ্ধ আলিঙ্গনে জড়িয়ে ঠোঁটের ভেতর ঠোঁট গুঁজে চোখ বুজে অনুভব করেছিল দুজনকে।। পুরোনো অভিমানগুলো দূরেই থাক -এটাই বলছিল দুটো মন।। কারণ, কখনও বলা হয়নি কতটা ভালোবাসে ওরা দুজন দুজনকে ।। ভালোবাসা কি ওভাবে মাপা যায় না কথায় ব্যক্ত করা যায়।।আর কখনও ওরা তো মুখ ফুটে বলতেও পারবেনা সবটা অনুভবের কথা ;আর কোনোদিনও...... কারণ ওরা দুজনই মুক ও বধির।।

***************************************************
রাজকন্যের গপ্পো
==============
সোনালী নাগ
--------------------------

কথার টানে কথার পাহাড়,
কাছে কিংবা দূর,
রূপকথাতে ছুঁয়ে দেখা নদী সমুদ্দুর !!
রাজকন্যা দৈত্য দানব পক্ষীরাজের দেশে
রাজারকুমার দাঁড়ায় এসে  অন্ধকারের শেষে !!
দুয়ো রানীর দুঃখ থাকুক, সুয়ো রানীর সাধ,
মন্ত্রী কোটাল হাতিশালের গল্প থাকুক অবাধ !
নটে গাছটা বাঁচুক আরো, বাঁচুক ছেলেবেলা,
তবু সত্যি ছিলো সে আজগুবি গল্প গুলোর মালা
মায়ের আঁচল হারিয়ে দেখি, হায় -জীবন নাট্যশালা !!
বড় হবার তাগিদ তাতে মনটা ছোটো হয়,
অশুভ সব শক্তি গুলো জাঁকিয়ে বসে
 আর  জীবন বয়ে যায়,
কোন পুকুরে ডুব দেবো? কোন গুহাতে তাকে পাবো?
মাকড়সার জালে বন্দি, গুমরে মরি তায়,
দৈতটার প্রাণভোমরা খুঁজে পাওয়া দায় !!
আকাশ কালো সূর্য উধাও এক গ্রহণের ফাঁদে,
একটু আলোর খোঁজে তাই সকাল সন্ধ্যে এখন জানো,  রাজকন্যা কাঁদে !!!

শুক্রবার, ১০ মে, ২০১৯

প্রিয় কবিদের কবিতা এক পাতাতেই




 যাদের লেখা পড়ব বলে অপেক্ষাতে আছি





এ জগতে কবিতা পড়তে ভালোবাসে এমন মানুষদের জন্য এই সংকলন ]







 আপনি পড়ছেন কবি প্রভাত চৌধুরীর লেখা কবিতা

আঁচিল-পাঁচিল



আঁচিল এবং পাঁচিল , এই শব্দদুটির অন্তে চিল থাকলেও
শব্দদুটির কোনো ডানা নেই 
ছোঁ-মারার কোনো প্রবৃত্তিও নেই 
আর শব্দদুটি যে চিৎকার থেকে দূরে থাকতে চায় 
এটাও আমাদের অজানা নেই 

পাঁচিল- কে বেশ শান্ত তথা নিরীহ বলে মনে হয় আমার , 
আর এ কারণেই পাঁচিলকে নিয়ে  মস্করা করার সময় ভুলে যাই 
পাঁচিল না থাকলে বাড়ির আবরু রক্ষা করা যেত না 
আর আবরু না থাকলে চিলের আক্রমণ থেকে
রক্ষা পেতাম কীভাবে 
সম্ভবত এই কারণেই পাঁচিলের মধ্যে অবস্থান করে চিল 

আঁচিলের কথা পরের এপিসোডে




এখন আপনি কবি সুবোধ সরকারের লেখা কবিতা পড়ছেন

ষাট বছরে যা পেয়েছি

একটা ছোট ঘর পেয়েছি
ছ'শ স্কয়ার ফিট।

একটা ভাল ছেলে পেয়েছি
আমার বিপরীত।

এক টুকরো মেঘ পেয়েছি
এই তো হলো বৃষ্টি।

তোমার দুটো চোখ পেয়েছি
মেলানকলি দৃষ্টি।

আর পেয়েছি গরমভাত
লঙ্কা, পাশে নুন।

আর কী লাগে বাঁচতে হলে
আপনারাই বলুন?

সোনা লাগে না,  হিরে লাগে না
বাঁচার মতো বাঁচতে।

ঝড়ের রাতে সঙ্গে ছিলে
এখনো যদি থাকতে।


এখন আপনি কবি শ্রীজাত বন্দ্যােপাধ্যায়ের লেখা কবিতা পড়ছেন

পন্থা

সংগোপনে মন রেখেছি, সম্মোহনে পা -
এখন বুঝি হৃদয় নেবেন বিষণ্ণ পন্থা। 

মেঘ তো ছিলই উপন্যাসে, কুহকে বৃষ্টি... 
এসব গাঁয়ে অনেক প্রবাদ এখনও সত্যি। 

ঝমঝমিয়ে ছুটল ঘোড়া, ভেজা হ্রেষার দেশ...
বার্তা এল, ‘আমায় তুমি জানালে পারতে’। 

মন কি লুকোয়? যেমন লুকোয় আয়নাকোণে টিপ?
এমন ঝড়ে দু’খানা গাছ বিমলা-সন্দীপ

তাদের মধ্যে কী কথা হয়, বাতাসে ঝাপটায় 
তার উপরে আকাশ এমন বিরহপ্রাপ্তা... 

পথমধ্যে পাতাউড়ান, বাইরে ঘরে ঝড়
বিবাদ হয়ে দাঁড়ান এসে আন্না তরখড়। 

দিগন্তে সেই শিরাচমক, এমন যাবে দিন? 
আমার দেশে অনেক লোকই বর্ষাতিবিহীন।

সংগোপনে পাঠাল মন, সম্মোহনে পা – 
এখন বুঝি হৃদয় নেবেন বিষণ্ণ পন্থা...



এখন আপনি পড়ছেন কবি অংশুমান করের লেখা কবিতা

খান্ডবদাহন

আমি তোমাদের পাশে গিয়ে বসিনি
সঙ্গে জাগিনি একটি রাতও কারণ 
আমার গায়ে বুদ্ধিজীবীর চামড়া যা দেখতে মানুষের চামড়ার মতো
কিন্তু আসলে গন্ডারের।
আমি তোমাদের  নিয়ে একটি লাইনও লিখিনি কারণ
আমি কবি, হাত বোলালে মনে হবে আমার চামড়া
হ্যামলিনের সেই বাঁশিওয়ালার
কিন্তু আসলে পাজি পিটারের।
আমি তোমাদের মাথার ওপর থেকে খুলে দিয়েছি ত্রিপল
কারণ আমার গায়ে পুলিশের চামড়া যাকে দেখতে লাগে 
ডোরাকাটা বাঘছালের মতো কিন্ত যা আসলে
প্রভুভক্ত সারমেয়ের।
সাতাশ দিন ধরে আমি কিছুই করিনি কিছুই করিনি
শুধু অপেক্ষা করেছি, অপেক্ষা করেছি
আর একের পর এক হাসপাতালে গিয়েছ তোমরা
নষ্ট হয়েছে কারও ভ্রূণ, কারও বাবা 
ছেলের চাকরির স্বপ্ন দেখতে দেখতে চোখ মুদেছেন।
আর এইসব দেখতে দেখতে 
আমার গায়ে আজ গজিয়ে উঠেছে নতুন চামড়া
হাত বুলিয়ে দেখছি সেই চামড়া একজন মাস্টারমশাইয়ের
যিনি প্রশ্ন করছেনঃ
মাননীয়, মাননীয়া,  কতদিন 
আর কতদিন দেখব এই খান্ডবদাহন? 
যাঁকে ‘আপনি কিন্তু কিছুই দেখেননি’ বলে 
আর চুপ করিয়ে রাখা যাচ্ছে না।



এখন আপনি পড়ছেন কবি নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা কবিতা

সহজ সুন্দরী 


বইমেলাতে 
দেখা,
একাই ছিলে,
একা.

হাতের
নতুন টেলিফোনে,
কী লিখছিলে
কে জানে!

নরম 
রোদ পড়েছে মুখে,
আছ কি 
ফেসবুকে? 

নাক্ছাবিটা
হীরের?
কোথায়
হারিয়ে গেলে ভীড়ে!


এবারে আপনি পড়ছেন কবি তুষারকান্তি রায়ের লেখা কবিতা


এবং ভূমিকা

প্রসঙ্গ তো ছিলোই
আসলে তোমাকে শঙ্খলাগা
নতুন শতকে নিয়ে যাবো, রাধারানী !
চৈত্র ও যে মূর্তমান কবিতা সমগ্র 
                              সেকথা বোঝাবো 
গৃহস্থ ময়ূরের পালকেও 
      বয়স্ক সময় লেখা থাকে !
তুমি কি দেওয়াল ঘড়ির গায়ে 
            আঙুল ফুটিয়ে দেখেছো ?
                                   নবপানিনি  ?
অপ্রত্যাশিত ভূমিকার বাইরে 
দ্যাখো,  কেমন  মেঘ  করেছে  !
   তোমার ভেতরে ' নিদ নাহি . . .  ' 
শোনার অপেক্ষায় চতুর্দশীর চাঁদ 
                            প্রকাশিত হোক  ! 
প্রাসঙ্গিক শব্দের মধ্যে 
   দরিদ্র ব্রাহ্মণের বেশে ট্রামের ঘন্টা 
আলো বাজিয়ে চলে গেছে 
                                       কতকাল  !
এখন তোমার মুখোমুখি বসে আছে 
             বাক্যপ্রাণহীন অপূর্ব নিসঙ্গতা. . . 
মাত্রাহীন হতাশ অক্ষর ;  আর 
    কীটদগ্ধ অলৌকিক পদাবলী 
খুলে রাখা নির্মম মহাকাল  
          

 ------------------সমাপ্ত---------------------




      








      



একটা সত্যি সেলের গল্প

সেল। সেল। সেল।

লেখিকাঃ-মৌমন মিত্র

অরবিন্দ বাবু স্ত্রী হারা হয়েছেন এক যুগেরও বেশি সময় ধরে। স্ত্রী বেঁচে থাকতে তেমন ভাবে  সাংসারিক তিনি কোন কালেই ছিলেন না। দুই কন্যা, জ্যেষ্ঠ কন্যা রুপে গুনে মহীয়সী আর  কনিষ্ঠ কন্যার বিদেশে পাকাপাকি বসতী।  একাকী জীবন যাপনের জ্বালা অসহনীয় হয়ে উঠলে, তাঁর কন্যারা তাঁকে নিজেদের কাছে ডেকে নেয়। অরবিন্দ বাবুও মানসিক ভাবে হাঁপিয়ে উঠেছেন। ঠিক করলেন পালা করে দুই কন্যার বাড়িতেই  থাকবেন। কখনো বা এলোপাথাড়ি এদিক ওদিক চলে যাবেন। বেশ কিছু বছর এভাবে কেটে যায়। ক্রমশ তার হৃদয়ের পরতে জমতে থাকে এক অপরাধবোধ। ইদানীং তিনি, নিজের ইনভেস্টমেন্ট ভাঙ্গিয়ে প্রায়ই কন্যাদের জন্যে চড়া দামের আসবাব, গয়না কেনা শুরু করেন। কনিষ্ঠ কন্যা বিচক্ষণ বুদ্ধি সম্পন্না। কদিনের মধ্যে বাবার জামাই বাড়িতে এই ‘দেনাপাওনা’ র খেলা ঠাহর করতে পারে। চৈত্র সেল? দামি পন্যের বদলে হালকা দাম। সাংসারিক বসতি?



লিনার এক সময় কলেজ ছিল বেথুনে। কলেজ পাড়া থেকে কখনো হাতি বাগান মোড়, কখনো আরও বারতি সময় থাকলে সাউথ এর গড়িয়াহাট। চৈত্র সেল এ কেনা গয়না লিনা সারা বছর আর পরবে কিনা বলা দায়। তবু ওই কটা দিন ভিড় ঠেলে, বুকের সামনে চওড়া ফাইল বর্মের মতো দিয়ে বেমালুম চলত সেল্‌ এর কেনা কাটা। এখন, লিনা ইংল্যান্ড এর কোন এক পাহাড়ি উপত্যকায়।  লিনার দিদি নিয়ম করে ঠিক এই সেল্‌ এর সময় অসুস্থ হওয়ার ভান করে, বলতে চায় চৈত্র সেল এ কি আর যাব, ‘হাঁটুতে অমন বেদনা যে’!



ঋতু কে আপনাদের মনে আছে? সেই সাংবাদিক? চোখের তলায় ওর এক পোঁচ কালি? আর ওর জীবনের বারো তম  প্রেম? প্রায় আধ বছর পর আজ ওর  প্রেমিক এসেছে। মনে এক পলি দুঃখ, আর খামখেয়ালিপনা নিয়ে। বেড্‌ সাইড টেবিলে ঋতু র রাখা বাউল journal এর পাশে নিজের ছাইদানি টা । ওর জন্যে এতটা পথ  শুভঙ্কর এসেছে সেটার ই ধন্যবাদন্তে ঋতুর অনেক না বলা কথা। কোন এক ঘন মুহূর্তে শুভঙ্কর নিজের পুরনো প্রেমিকাকে ভাবতে ভাবতে  ঋতুকে  প্রশ্ন করে  ’কখনো হার্ট অ্যাটাকের মতো হয়েছে তোমার? আমার হয়েছিল ওকে দেখে। প্রথমবার! পুরনোর সুতো টেনে এনে কি হবে বল? নতুন পুরনোকে  ভুলিয়ে দেয় , managebily’

ঋতুর চোখ ঝাপসা। পাশের আধপোড়া সিগারেট হাতড়ে পাওার চেষ্টা করছে। কোন দামি পন্য নিছকই সময়ের তাগিদে সেল্‌ চলে। চৈত্র সেল! ঠিক এই সময়। কম দামে বিকিয়ে দেই দোকানদার গুলো। আর আমরা ফুতি করে কিনি। জিতব বলে? কে জেতে? কি জেতে?



জয় বড় বেপরোয়া পুরুষ। বেপরোয়া অফিস, বেপরোয়া জীবন যাপন। এমন এক ব্যক্তির সাথে বিবাহ হয় ডাকসাইটে সুন্দরী ললনা সৃজার। রূপ বাদে সৃজার  যা রয়েছে সেটা হল ক্ষুরধার ইন্টেলেক্‌ট। সে  রন্ধন পটীয়সী। আর? আর ছিল তার লেখার হাত। তবে এই ললনা কি আর সংসার যোগ্যা? মানে সংসার করার যোগ্যা? অন্তত ভারতীয় ভাবনায়, না। জয় এমন স্ত্রী কে হারাতে চায় না। দামি সৃজা কে চৈত্র সেল্‌ এর মতো বেশ সহজ ভাবে বিবাহের মাধ্যমে পেয়েছে সে। রেশন লাইনের মতো প্রেমিকের লাইনেও তাঁকে দাড়াতে হয় নি। সৃজার জীবনে আদর খুব গৌণ হয়ে গিয়েছে বহু কাল। সেল এর মতো পাওয়া সৃজার একটু ‘নিভৃত যতনে’ আদর হলেই কেল্লা ফতে। আর জয় সেটা জানে!



ওষ্ঠ বাড়ির কনিষ্ঠ  কন্যা। খুব ছোটবেলা থেকে ওষ্ঠ বুঝেছিল তার দিদির মতো লেখাপড়ায় ফাঁকি দিয়েও বাড়ির আহ্লাদি সে হয়ে উঠতে পারবে না। বাবা,মা, জ্যাঠা, কাকা প্রত্যেকের কাছে এমন হাড়ে পাঁজরে, এমন কি নিজের প্রেমের কাছে তাকে প্রমাণ করতে হয়েছে সে কতটা  eligible। আর এমন টা প্রমাণ করতে করতে কখন যেন নিজেকে প্রমাণ করাটাই তার অভ্যেস হয়ে উঠল। এ হেন ওষ্ঠের মাঝ জীবনে এক প্রেমিক আসে। গণিতের প্রফেসর। ওষ্ঠের ত্বক, চুল, নাক কোন কিছু নয় কয়েক লাইন লেখনীতেই এই প্রফেসর তার প্রেম খুঁজে পায়। ওষ্ঠ কে আজীবনের প্রেম ভাবতে চায় এই প্রফেসর। কিন্তু ওষ্ঠ  তো ফাঁপরে! কিছুই তো প্রমাণ করে নি সে নিজেকে! তাহলে কিভাবে এই প্রফেসর পড়ে ওর প্রেমে? অনেক দামি ওষ্ঠ সারা জীবনের বেচা কেনায় সেল এর দরে এধার ওধার হল যে! সেই চৈত্র সেল গেল কই! প্রফেসর অবুঝ না তো? ওষ্ঠ ভেবে যায়। সেল সেল সেল কোথায় গেল আমার চৈত্র সেল !


সোমবার, ৬ মে, ২০১৯

অনুগল্প:বেলা-অবেলার গল্প
**************************
কলমে : তন্মনা চ্যাটার্জী

তিথি আজ "অধ্যায় পুরান" পড়তে গিয়ে কেমন যেন নিজের জীবনকে মিলিয়ে নিচ্ছিলো প্রতিক্ষণে।।গল্পের চরিত্রগুলো ভীষণ চেনা।ভীষণ কাছের।। পড়তে পড়তে তিথি যেন কখন পেরিয়ে যাচ্ছিল পুরোনো সময়।।গল্পের অধ্যায়ের ছত্রে যে অনুরণন তাতো ভীষণ চেনা।।শুধু শেষটা অন্য হতে চেয়ে একটা এক অদ্ভুত ভাবনায় ভাবিত করে তিথির কল্পনার জগৎকে।।শেষ করে গল্পের সবটুকু অধ্যায়।।এদিকে কখন ঘড়ির কাঁটা বিকেল ছুঁয়েছে বুঝতেই পারেনি সে।। অনেক প্রশ্ন রেখে গেলো গল্পের শেষটা আর প্রধান দুই চরিত্র !! তিথির মন অচেনা অথচ ভীষণ জানা আরেক গল্পকারকে চিঠি লিখতে বসে ।। আজ শুধু তার মনে বহুপ্রশ্নের ঝড় ,তবু সবচেয়ে বড় প্রশ্ন তার প্রিয় গল্পকার কি এভাবেই আত্মপ্রকাশের একটা সময় খুঁজছে !!নাকি চিরতরে আত্মগোপনেই কাটাবে তার নিরলস শব্দচর্চা!!
চিঠিটা পাঠানো হয়না আজও।।তিথি তো ঠিকানাটাই খুঁজছে পুরোনো ডাকবাক্সের বন্ধ ঘরে!!হঠাৎ কোনো দমকা হাওয়ার অপেক্ষায় তিথি তাকায় জানলার বাইরে।। বাইরে তখন সন্ধ্যা নামছে।।দূর থেকে ভেসে আসে শঙ্খধ্বনি।। ইচ্ছেশক্তিকে সঙ্গী করে একবার চোখটা বোজে তিথি।।অভ্যাস অথবা প্রবল বিশ্বাসে।।
//আমি এখনও সেই অভিমানী//

আমাদের সম্পর্কটা ছিল এক্কেবারে আলাদা,
হয়তো বা অনেকের মতই কিন্তু আমার চোখে একেবারেই আলাদা।
যাকে এককথায় বলতাম, না দেখেও এতোটা ভালোবাসা যায়!
কেউ কিভাবে পারে এত ভালোবাসতে!
পড়ন্ত এক বিকেল বেলায় সেই যেদিন হাতে হাত রেখে বলেছিলে,
"ভালোবাসো"
আমি একটু যেন অবাকই হয়েছিলাম,
তারপর সেই খোলা হাওয়ায়,একলা প্রান্তরে
অবনমিত মুখেই বলে উঠেছিলাম, "আমিও"
তারপর কত দিনের অপেক্ষা...
আমাদের সম্পর্কটা ছিল এক অপেক্ষার সম্পর্ক,
আসবে আসবে করেও অনেকটা দিন পেরিয়ে যেত,
দীর্ঘ বিকেলগুলো আর কাটতেই চাইতো না,
তবুও দূর থেকেই অনুভব করতাম তোমায়,
একসাথে কাটানো সময়গুলোকে বার বার মনে করতাম,
আর এভাবেই আমার মধ্যে বেঁচে থাকতে
তুমি, তোমার ভালোবাসা,আমাদের ভালোবাসা।
রোজ রোজ নতুন করে প্রেমে পড়তাম,
নতুন এক তুমিকে খুঁজে পেতাম,
তবে অভিমানও হতো খুব,
কিন্তু অভিমানগুলো কত্ত সহজে তোমার গলার স্বরে গলে যেত, আমি বুঝতেই পারতাম না।
ভেবেছিলাম দীর্ঘ এই অপেক্ষার অবসান ঘটবে কোনও একদিন,
আর ঘটেও ছিল শীঘ্রই।
তবে, এই দীর্ঘ অপেক্ষার বিকেলগুলোর মতো
ফিকে হয়েছিল সেই পুরনো প্রেম,
সেই পুরনো তুমি!
প্রথমে ভ্রম বলেই মনে হয়েছিল,
কিন্তু পরে মনে হলো না সবটাই সত্যি।
পরিমাণ বাড়ল সবকিছুর,দেখা করার,কথা বলার
আর কড়াপাকের ঝগড়ার..
অভিমানগুলোও কেমন যেন জেদী হয়ে গেল,
তোমার গলার স্বরে কিছুতেই ভুলতে চায়লো না আর,
নতুন করে চিনতে শেখালো তোমায়।
তবুও নিজেকে বোঝাতাম, একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে,
সময়কেও দিয়ে ছিলাম অনেকটা সময়,
কিন্তু তারাও কেমন যেন অচেনা অতিথির মত ধরা দিল না,
দিনের সাথে যত ঠিক ছিল সব ভুল হতে লাগল,
চেনা মানুষকে খুঁজে পেলাম অচেনার গাম্ভীর্যে।
যে তুমিটা ভীষণভাবে আপন ছিলে,
যে তুমিটা প্রত্যেকবার দূর থেকেই এই হাতে হাত রেখেছিলে,
যে তুমিটা মান ভাঙাতে গলার স্বরে আদর করে,
যে তুমিটা বেধে ছিলে পাশে থাকার অঙ্গীকারে,
সেই তুমি অচেনা হয়ে গেলে, কেমন করে যেন বদলে গেলে,
দূর থেকেই যাকে বুঝতাম, বুঝিনা আজ তার কাছে এলে।
তারপর একদিন শেষ সিদ্ধান্তটা নিয়েই নিয়েছিলে,
একবার জানতেও চায়লে না আমি কি চাই?
আর মনের মধ্যে চরম অভিমান পুষে,
আমাকে দোষী সাব্যস্ত করে
অনেক দূরে চলে গেলে,
যেখান থেকে চায়লেও আর ফেরা যায় না কোনোদিন,
যদিও তুমি চাইবে না জানি,
তোমার সুখ আজ মধ্যগগনে,
আমি এখনও সেই অভিমানী...

                                  শিল্পা মণ্ডল

(গুগল ইস্যু)
## কবিতা ##
◆◆ আঙ্গুল ছুঁয়ে লেখা ◆◆

চাইনা তোমার হৃদয় ভাঙার নেশা
চাইনা তোমার বিলুপ্ততার গান
ইচ্ছে হলে তবেই অন‍্যে মেশা
অ্যাসট্রের বুকে রেখে যাওয়া অভিমান।

ঠিক কত ভোর সকাল হবেই বলে
কোলবালিশে প্রেম জড়িয়ে থাকে
ঠিক কত সাঁঝ রাতের দিকে চেয়ে
ঠোঁটের আদর ঠোঁটেই পুষে রাখে।

ওড়না বুকে আলগা চুলের ভাঁজে
হালকা আলোয় কলেজ মোড়ের বাঁক
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে থাকা নীরবতা
প্রেমের চাওয়ায় ফুটখানেকের ফাঁক।

তবুও চাঁদের আলো প্রতিবাদী হলে
নীলঘরে পোড়ে নিষিদ্ধ নিকোটিন
আসবে ভেবেই শব্দে ভরানো পাতা
ডটপেন মাপে ব‍্যবধান প্রতিদিন....

ভার্নিয়ারের স্কেলে বসন্ত এলে
পিপেট গোপন ভালোবাসা পেতে চায়
গীটারের তারে জড়ানো আবেগ মেখে
পরিযায়ী প্রেম পোড়া স্মৃতি রেখে যায় ।।
              ##########
                              ---------------------© সন্দীপ (অর্কিড)
এক বুক আকাশ
 ~~দ্বৈপায়ন চ্যাটার্জী

জানালার ধারে বসে বৃষ্টির কথা ভাবছি,
সে আসবে বলেছিল,এখনো তো এলোনা!
আমি একমনে ভেবে চলেছি ,
হঠাৎ তুমি আসলে,
বৃষ্টির আসার কথা ছিলো,
তুমি এলে,
দেখো আমার চোখে বৃষ্টি নেমে এলো ,
অপ্রত্যাশিত মূল্যবান জিনিস হঠাৎ পেয়ে গেলে বুঝি এভাবেই বৃষ্টি নেমে আসে চোখে!
আমি আকাশের বৃষ্টির অপেক্ষায় সারা সন্ধ্যে কাটিয়ে দিলাম,
বৃষ্টি এলোনা,
তুমি এলে,দেখো বৃষ্টি নেমে এলো।
আমার কাছে এসে আমার চোখ মুছলে,
তোমার দিকে তাকিয়ে রইলাম কিছুক্ষন,
তুমি অদ্ভুত সুন্দর,
তোমার ওই আঁখিপটে সত্যি ই কি আমারই নাম লেখা আছে,
নাকি অজস্র সৌন্দর্য্যের মাঝে আমি বিলীন!
দুজনে এসে বসলাম পাশাপাশি,
হঠাৎ করে তোমাকে পেয়ে ভুলে গেছি আকাশের কথা,
ভুলে গেছি বৃষ্টির কথা,
ভুলে গেছি মেঘেদের কথা!
তুমি এত সুন্দর,
আদর চাইনা আজ,
সে তো অনেক দামি,
শুধু তাকিয়ে থাকতে দাও,
যেমন করে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিলাম বৃষ্টির আশায়!
তুমিতো আমার আকাশ,
এক বুক আকাশ!
সংসার সুখের হয় --------------
--------------------------------------
কলমে # সোনালী নাগ
-----------------------------------------

বাইরে শুধু লড়াই সে নয়,
সেতো অন্দরে তেও আছে,
দাপুটে মেয়েও  নিজের ঘরে ভয় তাড়িয়ে বাঁচে,
চরিত্র নিয়ে টানাটানি হয়তো খুবই সোজা,
মেয়ে মানেই টানা পোড়েন,
মেয়ে মানেই বুঝি বোঝা,
মুখোশ গুলো খুব আপনার,
হয়তো প্রিয়জন
বিশ্বাসে যে  বিষ ঢালা আছে,
তা বোঝে কি মন?
শাড়ির আঁচল আর
পোশাকে মেয়ের নাকি মরণ,
বলো তবে দুধের শিশুর রক্তযোনি,
কি তার কারণ?
ইচ্ছে ক'রে গুঁড়িয়ে ফেলি দাঁতের গোড়া যত,
ইচ্ছে করে মুখোশ টেনে হিঁচড়ে আনি 
দিনের আলোয় ইচ্ছেমত,
অষ্টমীর মা যখন জাগছে মনে মনে,
কানের কাছে কে বলে যায় -----
"সংসার সুখের হয় রমণীর গুনে "
আর তারপর,
তারপর তো সবই জানা,
মেনে নেওয়া মানিয়ে নেওয়া বেদ বাক্য যত,
নিজেকে বুঝিয়ে চলা দিনে রাতে রীতিমতো,
দূর্গা কে তাই বছর ভর আসনে তুলে রাখা
স্বর্গ থেকে নেমে আসা, 
চমৎকারের আশায় বেঁচে থাকা !!!
বস্তা পঁচা এঁদো কথার জাল বুনে যাওয়া মনে
বদলে নিয়ে লেখো দেখি ----
সংসার সুখের হয় রমনীর খুনে !!!!
মনপোডিয়ামে বেকার-কাব্য!

সৌমেন দাস

ইচ্ছেফানুস
উড়তে দেখি,
ভালো মানুষ
করছে এ কী?

নদীর জলে
ভিজছে সবাই,
হলদে রোদে
কুলফি মালাই!

সবুজ ভিড়ে
মাখছে খুশি,
কেমন করে
ইচ্ছে পুষি?

নতুন নতুন
ফুলের হাসি,
সবাই দেখুন
রাশি রাশি।

একতারাটির
মন ভেঙেছে,
সোঁদা মাটির
বুক ভিজেছে।

রাতেরবেলায়
দেখছি রবি,
হট্টমেলায়
বেকার কবি!
মাছ
~বিদিশা নাথ
বাজারের মুখটায় মস্ত বড় একটা ডাস্টবিনে রোজ সমালোচনা আর আত্মসর্বস্বতার ময়লা ফুলে ফেঁপে ওঠে,
আঁশের মতো অতিরিক্ত স্তর,
সবজির খোসার মতো নড়বড়ে মতামত,
জমতে জমতে মুখটা বুজে গেছে পুরো।
নতুন কিছু সৃষ্টি হয়না,তৈরি হয়না,
কেবল কাদা জমে,থকথকে লাল রক্তের কাদা।
মাছ কটা কাটা হয়ে বাসী পরে আছে যেন মর্গের বেওয়ারিশ লাশ,
 ওদের ময়নাতদন্ত হয়নি।
দাঁড়াও ওরা আগে মুখপুস্তিকার থলে তে ভরে বাড়ি বাড়ি যাক।
প্রত্যেকের গোপন ডাকবাক্সে মুখ দেখাক।
মাছের গায়ে ছুটকো কিছু হলুদের দাগ লাগুক আলগা ভালোবাসা স্বরূপ।
পঞ্চাশের বিপদজনক সীমা দিয়ে ঘোরাফেরা করা কাকু কামুক দৃষ্টি দিক।
মাছ গুলো আরো পড়ে থাকুক,
পচতে থাকুক গৃহীত হওয়ার হ্যাঙলা আবদারে,
বলাই বাহুল্য আজকাল তো বাজারী মাছ আর কবিতা কেবলই মুড়ি মুড়কির আত্মা ও পরমাত্মা।
#নতুনের_আহ্বান
#মুনমুন_মুখার্জ্জী

আজ যা আছে কাল থাকবে না,
কাল যা ছিল আর আসবে না,
আসবে তবু নতুন সকাল, আসবে নতুন দিন--
সাথে থাকবে নতুন আশা,
সত্যি হবে কারো ভালবাসা,
নতুন দিনের স্বপ্ন দেখতে সাজবে রঙীন।
পুরোনো কালিমা সব মুছে দিও,
সুখকে মধুর স্মৃতিতে রেখে দিও,
নতুন উদ্যমে, নতুন ভাবে সাজাও জীবন ডালি,
ঝরা পাতার যত দুঃখ ভুলে,
মনের দরজা দাও গো খুলে,
নবজীবন লাভ করুক সবে নতুন আলো জ্বালি।

রবিবার, ৫ মে, ২০১৯

রাজর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা "পরিশেষ"


পরিশেষ

কবিঃ-রাজর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়

যখন তোমার পুষ্প ও ফল
সমস্ত রূপ পল্লবদল
ছিনিয়ে নিল দস্যু হাওয়া এসে
তখন বসে ভাববে তুমি
মস্ত উজাড় মরুভূমি
আবার সবুজ হাসবে কিনা শেষে?

আজকে যদি একলা বসে
ভাবতে থাক কার কী দোষে
আজকে তুমি উজাড় মরুভূমি?
উত্তর তার পাবে না ভাই
বরং আবার বাঁচার লড়াই
এবার শুরু করতে পার তুমি!

অনেক স্নেহের মূর্তি গড়ে
ভাসিয়ে দিয়ে শোকসাগরে
আবার কত গড়তে তোমায় হবে
যাদের জন্য মরলে এত
তারাও হবে দূর বিগত
স্মৃতির কাঁটা হারিয়ে যাবে কবে।

রাতের পিছে ছুটন্ত দিন
দায়িত্ব সে অন্তবিহীন
এমনি করেই চিতার কাছে থামে
শত্রু মিত্র এক হয়ে যায়
জীবন শেষের ধূসর ছায়ায়
শান্তিময়ী রাত্রি যখন নামে।।