যাদের লেখা পড়ব বলে অপেক্ষাতে আছি
[ এ জগতে কবিতা পড়তে ভালোবাসে এমন মানুষদের জন্য এই সংকলন ]
★আপনি পড়ছেন কবি প্রভাত চৌধুরীর লেখা কবিতা
আঁচিল-পাঁচিল
আঁচিল এবং পাঁচিল , এই শব্দদুটির অন্তে চিল থাকলেও
শব্দদুটির কোনো ডানা নেই
ছোঁ-মারার কোনো প্রবৃত্তিও নেই
আর শব্দদুটি যে চিৎকার থেকে দূরে থাকতে চায়
এটাও আমাদের অজানা নেই
পাঁচিল- কে বেশ শান্ত তথা নিরীহ বলে মনে হয় আমার ,
আর এ কারণেই পাঁচিলকে নিয়ে মস্করা করার সময় ভুলে যাই
পাঁচিল না থাকলে বাড়ির আবরু রক্ষা করা যেত না
আর আবরু না থাকলে চিলের আক্রমণ থেকে
রক্ষা পেতাম কীভাবে
সম্ভবত এই কারণেই পাঁচিলের মধ্যে অবস্থান করে চিল
আঁচিলের কথা পরের এপিসোডে
★এখন আপনি কবি সুবোধ সরকারের লেখা কবিতা পড়ছেন
ষাট বছরে যা পেয়েছি
একটা ছোট ঘর পেয়েছি
ছ'শ স্কয়ার ফিট।
একটা ভাল ছেলে পেয়েছি
আমার বিপরীত।
এক টুকরো মেঘ পেয়েছি
এই তো হলো বৃষ্টি।
তোমার দুটো চোখ পেয়েছি
মেলানকলি দৃষ্টি।
আর পেয়েছি গরমভাত
লঙ্কা, পাশে নুন।
আর কী লাগে বাঁচতে হলে
আপনারাই বলুন?
সোনা লাগে না, হিরে লাগে না
বাঁচার মতো বাঁচতে।
ঝড়ের রাতে সঙ্গে ছিলে
এখনো যদি থাকতে।
★এখন আপনি কবি শ্রীজাত বন্দ্যােপাধ্যায়ের লেখা কবিতা পড়ছেন
পন্থা
সংগোপনে মন রেখেছি, সম্মোহনে পা -
এখন বুঝি হৃদয় নেবেন বিষণ্ণ পন্থা।
মেঘ তো ছিলই উপন্যাসে, কুহকে বৃষ্টি...
এসব গাঁয়ে অনেক প্রবাদ এখনও সত্যি।
ঝমঝমিয়ে ছুটল ঘোড়া, ভেজা হ্রেষার দেশ...
বার্তা এল, ‘আমায় তুমি জানালে পারতে’।
মন কি লুকোয়? যেমন লুকোয় আয়নাকোণে টিপ?
এমন ঝড়ে দু’খানা গাছ বিমলা-সন্দীপ
তাদের মধ্যে কী কথা হয়, বাতাসে ঝাপটায়
তার উপরে আকাশ এমন বিরহপ্রাপ্তা...
পথমধ্যে পাতাউড়ান, বাইরে ঘরে ঝড়
বিবাদ হয়ে দাঁড়ান এসে আন্না তরখড়।
দিগন্তে সেই শিরাচমক, এমন যাবে দিন?
আমার দেশে অনেক লোকই বর্ষাতিবিহীন।
সংগোপনে পাঠাল মন, সম্মোহনে পা –
এখন বুঝি হৃদয় নেবেন বিষণ্ণ পন্থা...
★এখন আপনি পড়ছেন কবি অংশুমান করের লেখা কবিতা
খান্ডবদাহন
আমি তোমাদের পাশে গিয়ে বসিনি
সঙ্গে জাগিনি একটি রাতও কারণ
আমার গায়ে বুদ্ধিজীবীর চামড়া যা দেখতে মানুষের চামড়ার মতো
কিন্তু আসলে গন্ডারের।
আমি তোমাদের নিয়ে একটি লাইনও লিখিনি কারণ
আমি কবি, হাত বোলালে মনে হবে আমার চামড়া
হ্যামলিনের সেই বাঁশিওয়ালার
কিন্তু আসলে পাজি পিটারের।
আমি তোমাদের মাথার ওপর থেকে খুলে দিয়েছি ত্রিপল
কারণ আমার গায়ে পুলিশের চামড়া যাকে দেখতে লাগে
ডোরাকাটা বাঘছালের মতো কিন্ত যা আসলে
প্রভুভক্ত সারমেয়ের।
সাতাশ দিন ধরে আমি কিছুই করিনি কিছুই করিনি
শুধু অপেক্ষা করেছি, অপেক্ষা করেছি
আর একের পর এক হাসপাতালে গিয়েছ তোমরা
নষ্ট হয়েছে কারও ভ্রূণ, কারও বাবা
ছেলের চাকরির স্বপ্ন দেখতে দেখতে চোখ মুদেছেন।
আর এইসব দেখতে দেখতে
আমার গায়ে আজ গজিয়ে উঠেছে নতুন চামড়া
হাত বুলিয়ে দেখছি সেই চামড়া একজন মাস্টারমশাইয়ের
যিনি প্রশ্ন করছেনঃ
মাননীয়, মাননীয়া, কতদিন
আর কতদিন দেখব এই খান্ডবদাহন?
যাঁকে ‘আপনি কিন্তু কিছুই দেখেননি’ বলে
আর চুপ করিয়ে রাখা যাচ্ছে না।
★এখন আপনি পড়ছেন কবি নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা কবিতা
সহজ সুন্দরী
বইমেলাতে
দেখা,
একাই ছিলে,
একা.
হাতের
নতুন টেলিফোনে,
কী লিখছিলে
কে জানে!
নরম
রোদ পড়েছে মুখে,
আছ কি
ফেসবুকে?
নাক্ছাবিটা
হীরের?
কোথায়
হারিয়ে গেলে ভীড়ে!
★এবারে আপনি পড়ছেন কবি তুষারকান্তি রায়ের লেখা কবিতা
এবং ভূমিকা
প্রসঙ্গ তো ছিলোই
আসলে তোমাকে শঙ্খলাগা
নতুন শতকে নিয়ে যাবো, রাধারানী !
চৈত্র ও যে মূর্তমান কবিতা সমগ্র
সেকথা বোঝাবো
গৃহস্থ ময়ূরের পালকেও
বয়স্ক সময় লেখা থাকে !
তুমি কি দেওয়াল ঘড়ির গায়ে
আঙুল ফুটিয়ে দেখেছো ?
নবপানিনি ?
অপ্রত্যাশিত ভূমিকার বাইরে
দ্যাখো, কেমন মেঘ করেছে !
তোমার ভেতরে ' নিদ নাহি . . . '
শোনার অপেক্ষায় চতুর্দশীর চাঁদ
প্রকাশিত হোক !
প্রাসঙ্গিক শব্দের মধ্যে
দরিদ্র ব্রাহ্মণের বেশে ট্রামের ঘন্টা
আলো বাজিয়ে চলে গেছে
কতকাল !
এখন তোমার মুখোমুখি বসে আছে
বাক্যপ্রাণহীন অপূর্ব নিসঙ্গতা. . .
মাত্রাহীন হতাশ অক্ষর ; আর
কীটদগ্ধ অলৌকিক পদাবলী
খুলে রাখা নির্মম মহাকাল
------------------সমাপ্ত---------------------
অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর সুন্দর কবিতা পোস্ট করার জন্য।। গ্ন
উত্তরমুছুনদারুণ... দারুণ ।
উত্তরমুছুনআবারো অপেক্ষায় থাকলাম, এমন আরে কবিদের কবিতা পড়ার জন্য ।
অসম্ভব ভালো লাগা, রেশ রয়ে যায় প্রাণে
উত্তরমুছুনঅসাধারণ লেখা, প্রণাম ও ভালোবাসা সকলকে
উত্তরমুছুন