ভিড় থেকে সরে আসি। সমুদ্র জানে না কারও নাম। অনেক লেখার শেষে সাদা পাতা এখনও আরাম...শ্রীজাত

রবিবার, ২৩ জুন, ২০১৯

কবি রিফাত ফাতিমা তানসির কবিতা পড়ুন


১.)
  প্রতিচ্ছায়া

তোমার আঁখিতে ভেসে বেড়ায় উপচে পড়া এককৌটো জল
তোমার আঁখিতে উড়ে চলে গোধূলী বিকেলের সোনালি রোদ্দুর,,

তোমার হাসিতে উঁকি মারে হিন্দুস্থানী সুর মেঘমল্লার
তোমার হাসিতে বাঁধে বাসা গোফওয়ালা হ্যাটম্যান যাদুকর...

তোমার গ্রীবায় উঠে যায় অশরীরী রূপ রক্তাক্ত মারমুখো তেজওয়ালা শঙ্কু
তোমার গ্রীবায় ভর করে বাজি ধরে নরম তুলতুলে আদুরে লন্ঠন,,

তোমার ললাটে  মসৃন গালিচা অরুণ
তোমার ললাটে ধূসর আবেগী স্মৃতি রোমন্থন...

তোমার চাউনি দূর থেকে ছুড়ে মারা ঝকমকে লিটমাস পেপার
তোমার চাউনি ঘুম পালিয়ে কবিতা পড়া,,

তোমার ঘ্রাণেতে অসহ্য সুন্দর শাদা জাফরান শিউলি
তোমার ঘ্রাণেতে টলমল মাতাল চুরুট মাতোয়ারা...

তোমার আবদারে
মায়াবী মনোহারী আহ্লাদের বৃষ্টিবিলাস:

তোমার আবদারে
স্বপ্নপুরীর
নীলপরীটি আমি,,

তোমার রোমাঞ্চে-

বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসের
একটি চাঁদের দেশ;

তোমার আমিতে
খেলা করে ক্ষণতরে
শুধু
আমার তুমি!


   


২.)
আবার একটা মিছিল হই

আমার বড় সাধ জাগে আবার একটা মিছিলে যোগ দেই,
আবার একটা মিছিল হই!
আর সমস্ত অন্যায়ের মস্তিষ্কে আগুনগরম পানি ঢেলে ঢেলে তাকে ভোঁতা থোঁতা বানিয়ে দেই!

আমার বড় সাধ জাগে আবার একটা মিছিলে যোগ দেই,
আবার একটা মিছিল হই!
আর দূর্নীতির হাত পায়ের শিরা-উপশিরাগুলো তার দিয়ে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে শক্ত বেঁধে বস্তায় ঢুকিয়ে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে চৌদ্দশিকের মোটা চালের ভাত খাওয়ায়!

আমার বড় সাধ জাগে আবার একটা মিছিলে যোগ দেই,
আবার একটা মিছিল হই!
আর লোভী লালায়িতদের লকলকে জিভটাতে ১০ নং সুঁই দিয়ে এফোঁড়-ওফোঁড় করে নির্লোভের এমব্রয়ডারি করে দেই!

আমার বড় সাধ জাগে আবার একটা মিছিলে যোগ দেই,
আবার একটা মিছিল হই!
আর চরিত্রহীনদের ভ্রষ্ট প্রগলভ চোখেতে প্রখর রোদে পোড়া কচকচে বালি ঢুকিয়ে তাকে অনন্ত অন্ধ করে দেই!

আমার বড় সাধ জাগে একটা মিছিলে যোগ দেই,
আবার একটা মিছিল হই!
আর ভন্ডদের ভণ্ডামো ভরা বুকের ওপর দৌঁড়ে উঠে গিয়ে বুটজুতো দিয়ে লাথি মারতে মারতে তার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়াটাই বন্ধ করে দেই!

আবার একটা মিছিল হই!




৩.)
সেদিন

প্রথম কবে কোথায় দেখা হয়েছিল মনে করতে পারো?
দাঁড়াও, বলছি আমি..

কোনো এক শীতের আলো ঝলমলে বিকেলে...
মনমাতানো পরিবেশে জানা- অজানা পাখিরাও হঠাৎ তোমায় দেখে ভড়কে গিয়ে পালাতে লাগল আড়ালে..

ফুটন্ত কুঁড়িগুলো চুপসে গেল ফাটা বেলুনের মতো সব
প্রজাপতির দল অস্ফুটস্বরে বিড়বিড় করে আওড়াতে লাগল কল্পনাস্তব...

আর আমার কথা!
কী বলব!
মাথা থেকে পা পর্যন্ত আপাদমস্তক কথা কইছিল যেন তোমার আগমনের উত্তেজনায়..
চোখে চোখ, হাতে হাত, একটু পর তোমার কাঁধে মাথা রেখে অদ্ভুত স্বস্তির নিশ্বাস; পরম ভালোবাসায়...

তোমার সাথে জুড়ে থাকার ইচ্ছে ছিল যে খুব;
যেমনি করে প্রসূন
সাথে পাতা,
তেমনি করে বাঁধতে চাইলুম
রঙিন স্বপ্নগাঁথা...

সেভাবে রেখেছিলুম তো-
যেভাবে বিছিয়ে রাখে মাকড়সা জাল;
কিন্তু তুমি বোধহয় ভালোবাসার মানেটাই ধরতে পারোনি,
পারোনি বুঝতে অতল আমিটিকে..
বিভীষিকার অন্ধকারে তাইতো
পালিয়ে গিয়েছিলে চুপটি করে;
ফিরে দেখনি পেছনটা একটিবারও
কোথাকার হলো কী হাল!


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন