অনুগল্প:বেলা-অবেলার গল্প
**************************
কলমে : তন্মনা চ্যাটার্জী
তিথি আজ "অধ্যায় পুরান" পড়তে গিয়ে কেমন যেন নিজের জীবনকে মিলিয়ে নিচ্ছিলো প্রতিক্ষণে।।গল্পের চরিত্রগুলো ভীষণ চেনা।ভীষণ কাছের।। পড়তে পড়তে তিথি যেন কখন পেরিয়ে যাচ্ছিল পুরোনো সময়।।গল্পের অধ্যায়ের ছত্রে যে অনুরণন তাতো ভীষণ চেনা।।শুধু শেষটা অন্য হতে চেয়ে একটা এক অদ্ভুত ভাবনায় ভাবিত করে তিথির কল্পনার জগৎকে।।শেষ করে গল্পের সবটুকু অধ্যায়।।এদিকে কখন ঘড়ির কাঁটা বিকেল ছুঁয়েছে বুঝতেই পারেনি সে।। অনেক প্রশ্ন রেখে গেলো গল্পের শেষটা আর প্রধান দুই চরিত্র !! তিথির মন অচেনা অথচ ভীষণ জানা আরেক গল্পকারকে চিঠি লিখতে বসে ।। আজ শুধু তার মনে বহুপ্রশ্নের ঝড় ,তবু সবচেয়ে বড় প্রশ্ন তার প্রিয় গল্পকার কি এভাবেই আত্মপ্রকাশের একটা সময় খুঁজছে !!নাকি চিরতরে আত্মগোপনেই কাটাবে তার নিরলস শব্দচর্চা!!
চিঠিটা পাঠানো হয়না আজও।।তিথি তো ঠিকানাটাই খুঁজছে পুরোনো ডাকবাক্সের বন্ধ ঘরে!!হঠাৎ কোনো দমকা হাওয়ার অপেক্ষায় তিথি তাকায় জানলার বাইরে।। বাইরে তখন সন্ধ্যা নামছে।।দূর থেকে ভেসে আসে শঙ্খধ্বনি।। ইচ্ছেশক্তিকে সঙ্গী করে একবার চোখটা বোজে তিথি।।অভ্যাস অথবা প্রবল বিশ্বাসে।।
: অবগাহন
**********
কলম:তন্মনা চ্যাটার্জী
প্রথম দেখা হওয়ার স্মৃতিরা ওদের দুজনের মধ্যে আজও অম্লান।। ওরা তমসা ও দীপায়ন।। একটা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রথম আলাপ, তারপর বন্ধুত্ব।। ওরা দুজনেই ছবি আঁকতে আর লিখতে ভালোবাসে।। তমসা ছবি আঁকলে দীপায়ন মিলিয়ে লিখে দিত কবিতা ।।খুনসুটি আর সখ্যতায় কেটে যাচ্ছিল বেশ।।দুজনে মিলে ঠিক করছিল একটা ছবি-কথার প্রদর্শনীর আয়োজন করবে, আর এভাবেই একে অপরের সাথে কাটাতে কাটাতে ওরা জড়িয়ে পড়েছিলো কোনো এক নাম না জানা সম্পর্কের বন্ধনে।।
কিন্তু কিছুদিন যাবৎ তমসা লক্ষ্য করে দীপায়ন বেশ কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখছে।। কথাই বলে না।।অনেক জিজ্ঞেস করেও কোনো উত্তর পায় না তমসা।।বুঝতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।।
তারপর হঠাৎ একদিন দীপায়ন একটি ঝড় জলের রাতে তমসাকে ম্যাসেজে জানায় "যোগাযোগ করিস না আর আমার সাথে।।দেখা করাও সম্ভব নয়।।ভালো থাকিস।।" তমসার চারপাশ অন্ধকার হয়ে আসে।।বহুবার ম্যাসেজ করেও উত্তর পায় না সে।। কি করবে বুঝে উঠতে পারে না।। সকাল হতেই বেরিয়ে পড়ে।।দীপায়নের বাড়ী পৌঁছে দেখে সেখানেও তালা লাগানো।।উদ্ভ্রান্তের মত রাস্তা দিয়ে হাঁটতে থাকে মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ছে।। একবার সবটুকু সমস্যা আলোচনা করা যেত না ? দুজনে মিলে মোকাবিলা করার একটা চেষ্টা কি করা যেত না? এসব ভাবতে ভাবতেই সন্ধে নামে।। বাড়ি ফেরে তমসা।। সবটুকু ভালো থাকা যেন এক নিমেষে হারিয়ে গেছে ঠিক দিপায়নের মতই।।
এতগুলো বছর পর মুখোমুখি বসে সবটা যেনো আরও একবার নতুন করে মনে পড়ছিলো দুজনেরই।।নিঃশব্দে আরও কাছাকাছি এসে বসে দুজন কাছের মানুষ।। ওষ্ঠ ছুঁয়ে যায় অধর।।তিন বছর পর প্রথম চুম্বন করেছিল দীপায়ন আর তমসা,অতর্কিতে।। অপাপবিদ্ধ আলিঙ্গনে জড়িয়ে ঠোঁটের ভেতর ঠোঁট গুঁজে চোখ বুজে অনুভব করেছিল দুজনকে।। পুরোনো অভিমানগুলো দূরেই থাক -এটাই বলছিল দুটো মন।। কারণ, কখনও বলা হয়নি কতটা ভালোবাসে ওরা দুজন দুজনকে ।। ভালোবাসা কি ওভাবে মাপা যায় না কথায় ব্যক্ত করা যায়।।আর কখনও ওরা তো মুখ ফুটে বলতেও পারবেনা সবটা অনুভবের কথা ;আর কোনোদিনও...... কারণ ওরা দুজনই মুক ও বধির।।
***************************************************
**************************
কলমে : তন্মনা চ্যাটার্জী
তিথি আজ "অধ্যায় পুরান" পড়তে গিয়ে কেমন যেন নিজের জীবনকে মিলিয়ে নিচ্ছিলো প্রতিক্ষণে।।গল্পের চরিত্রগুলো ভীষণ চেনা।ভীষণ কাছের।। পড়তে পড়তে তিথি যেন কখন পেরিয়ে যাচ্ছিল পুরোনো সময়।।গল্পের অধ্যায়ের ছত্রে যে অনুরণন তাতো ভীষণ চেনা।।শুধু শেষটা অন্য হতে চেয়ে একটা এক অদ্ভুত ভাবনায় ভাবিত করে তিথির কল্পনার জগৎকে।।শেষ করে গল্পের সবটুকু অধ্যায়।।এদিকে কখন ঘড়ির কাঁটা বিকেল ছুঁয়েছে বুঝতেই পারেনি সে।। অনেক প্রশ্ন রেখে গেলো গল্পের শেষটা আর প্রধান দুই চরিত্র !! তিথির মন অচেনা অথচ ভীষণ জানা আরেক গল্পকারকে চিঠি লিখতে বসে ।। আজ শুধু তার মনে বহুপ্রশ্নের ঝড় ,তবু সবচেয়ে বড় প্রশ্ন তার প্রিয় গল্পকার কি এভাবেই আত্মপ্রকাশের একটা সময় খুঁজছে !!নাকি চিরতরে আত্মগোপনেই কাটাবে তার নিরলস শব্দচর্চা!!
চিঠিটা পাঠানো হয়না আজও।।তিথি তো ঠিকানাটাই খুঁজছে পুরোনো ডাকবাক্সের বন্ধ ঘরে!!হঠাৎ কোনো দমকা হাওয়ার অপেক্ষায় তিথি তাকায় জানলার বাইরে।। বাইরে তখন সন্ধ্যা নামছে।।দূর থেকে ভেসে আসে শঙ্খধ্বনি।। ইচ্ছেশক্তিকে সঙ্গী করে একবার চোখটা বোজে তিথি।।অভ্যাস অথবা প্রবল বিশ্বাসে।।
: অবগাহন
**********
কলম:তন্মনা চ্যাটার্জী
প্রথম দেখা হওয়ার স্মৃতিরা ওদের দুজনের মধ্যে আজও অম্লান।। ওরা তমসা ও দীপায়ন।। একটা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রথম আলাপ, তারপর বন্ধুত্ব।। ওরা দুজনেই ছবি আঁকতে আর লিখতে ভালোবাসে।। তমসা ছবি আঁকলে দীপায়ন মিলিয়ে লিখে দিত কবিতা ।।খুনসুটি আর সখ্যতায় কেটে যাচ্ছিল বেশ।।দুজনে মিলে ঠিক করছিল একটা ছবি-কথার প্রদর্শনীর আয়োজন করবে, আর এভাবেই একে অপরের সাথে কাটাতে কাটাতে ওরা জড়িয়ে পড়েছিলো কোনো এক নাম না জানা সম্পর্কের বন্ধনে।।
কিন্তু কিছুদিন যাবৎ তমসা লক্ষ্য করে দীপায়ন বেশ কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখছে।। কথাই বলে না।।অনেক জিজ্ঞেস করেও কোনো উত্তর পায় না তমসা।।বুঝতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।।
তারপর হঠাৎ একদিন দীপায়ন একটি ঝড় জলের রাতে তমসাকে ম্যাসেজে জানায় "যোগাযোগ করিস না আর আমার সাথে।।দেখা করাও সম্ভব নয়।।ভালো থাকিস।।" তমসার চারপাশ অন্ধকার হয়ে আসে।।বহুবার ম্যাসেজ করেও উত্তর পায় না সে।। কি করবে বুঝে উঠতে পারে না।। সকাল হতেই বেরিয়ে পড়ে।।দীপায়নের বাড়ী পৌঁছে দেখে সেখানেও তালা লাগানো।।উদ্ভ্রান্তের মত রাস্তা দিয়ে হাঁটতে থাকে মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ছে।। একবার সবটুকু সমস্যা আলোচনা করা যেত না ? দুজনে মিলে মোকাবিলা করার একটা চেষ্টা কি করা যেত না? এসব ভাবতে ভাবতেই সন্ধে নামে।। বাড়ি ফেরে তমসা।। সবটুকু ভালো থাকা যেন এক নিমেষে হারিয়ে গেছে ঠিক দিপায়নের মতই।।
এতগুলো বছর পর মুখোমুখি বসে সবটা যেনো আরও একবার নতুন করে মনে পড়ছিলো দুজনেরই।।নিঃশব্দে আরও কাছাকাছি এসে বসে দুজন কাছের মানুষ।। ওষ্ঠ ছুঁয়ে যায় অধর।।তিন বছর পর প্রথম চুম্বন করেছিল দীপায়ন আর তমসা,অতর্কিতে।। অপাপবিদ্ধ আলিঙ্গনে জড়িয়ে ঠোঁটের ভেতর ঠোঁট গুঁজে চোখ বুজে অনুভব করেছিল দুজনকে।। পুরোনো অভিমানগুলো দূরেই থাক -এটাই বলছিল দুটো মন।। কারণ, কখনও বলা হয়নি কতটা ভালোবাসে ওরা দুজন দুজনকে ।। ভালোবাসা কি ওভাবে মাপা যায় না কথায় ব্যক্ত করা যায়।।আর কখনও ওরা তো মুখ ফুটে বলতেও পারবেনা সবটা অনুভবের কথা ;আর কোনোদিনও...... কারণ ওরা দুজনই মুক ও বধির।।
***************************************************
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন