ভিড় থেকে সরে আসি। সমুদ্র জানে না কারও নাম। অনেক লেখার শেষে সাদা পাতা এখনও আরাম...শ্রীজাত

মঙ্গলবার, ২৭ মে, ২০২৫

Anupam Roy: আর ঠিক তখন কী বলেছিলেন বাবা-মা ?

 


ছেলে অনুপম রায় বলেছিলেন 'আমাকে আমর মতো থাকতে দাও'। 

আর ঠিক তখন... 

বাবা হিসেবে সেই মুহূর্তে কী ভেবেছিলেন কিশোর রায়? (ভিডিওটি দেখতে নীচের লিঙ্কে ক্লিক করুন)


https://www.facebook.com/share/v/128zMbbgkBv/?mibextid=oFDknk


মা হিসেবে হিসেবে সেই মুহূর্তে কী ভেবেছিলেন মধুরিতা রায়? (ভিডিওটি দেখতে নীচের লিঙ্কে ক্লিক করুন)

https://www.facebook.com/share/v/1AQC62fuPK/?mibextid=oFDknk

Sudipta Sen: 'তুমি কী হতে চাও'? এই বোকা প্রশ্নের শিকার হয়েছে সব ছোটবেলা

 

Sudipta Sen: পথ সোজা হয় না কখনও। আঁকাবাঁকা পথ থেকে আরও পথ বেঁকে যেতে যেতে কোথায় গিয়ে যে কে থামবে? এটা যে ঠিক করেন লোকশ্রুতিতে তিনি ভগবান নতুবা নসিব।

'তুমি কী হতে চাও'? এই বোকা প্রশ্নের শিকার হয়েছে সব ছোটবেলা। 'এখানে আকাশ নীল' নামের বাংলা সিরিয়ালে উজান চ্যাটার্জীকে দেখে কখনও ডাক্তার হতে ইচ্ছে করেছে, পাড়ার কোনও দাদাকে একটি সরকারি উচ্চপদস্থ  পদে চাকরি  করতে দেখে আমারও মনে হয়েছে সেটাই হব, ইসরোর কথা জেনে মনে হয়েছে বিজ্ঞানী হব, নিরাপত্তা বলয়, দেশ ভ্রমণ, পাওয়ার দেখে প্রধানমন্ত্রী হতে ইচ্ছে করেছে। নচিকেতার মতো ভবঘুরে হতে ইচ্ছে করেনি ভাগ্যিস নইলে সহজ হবে ভেবে ওটাই হতাম নির্ঘাত।

উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে ইঞ্জিনিয়ার হয়েছিলাম। সেটাও করোনাকালে ভেঙে গেল। ভুলে গেলাম জেনারেটর, ট্রান্সফরমার, ওহম'স সব কিছুই। পরবর্তীতে হঠাৎ করে দেখলাম স্টেজে আবৃত্তি, নাটক কাজে লাগল। হয়ে গেলাম সাংবাদিক। এটাও আবার এতো জটিল আগে জানলে মন দিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিংটাই করতাম।

মনের আর কী দোষ? মন যে কী হতে চায় সেও তো নিজেই জানে না। অযথা লম্ফঝম্প করে, পানকৌড়ির ডুব দেখে, মেসির ভক্ত হয়, সচিন খেলা ছেড়ে দিলে কাঁদে, প্রেমিকার পা ভাঙলে মন খারাপ করে, বিরহে কবিতা লেখে, আনন্দে তরমুজ খায়, রেলিং বেয়ে আসা বৃষ্টিফোটা জিভ দিয়ে চেটে নামিয়ে নেয় আর পরে গা ঘিনঘিন করে মরে।

বিষয়টা এটা নয়, আসল বিষয় হল আমরা যারা ভেবেছি 'আমাকে আমার মতো থাকতে দাও' তারা আসলে স্বধীন হতে চেয়েছি। তাতে কিছু ক্ষতিও হয়েছে আবার লাভও হয়েছে। আর স্বাধীন হতে গিয়ে যখন বুঝেছি সবকিছু একটি নিয়মে বাঁধা তার বাইরে তুমি যেতে পারবে না তখন আবার এটা-ওটা পেতে চেয়েছি।

জীবনে সফল হওয়া আর সফল জীবন হওয়া দুটো এক জিনিস নয় তাই তো এতো আয়োজন, এতো আক্ষেপ, এতো হতে চাওয়া। আসলে ছোটোবেলা  থেকেই অনেক কিছুই হয়েছি। বড়বেলাতে এসে বুঝলাম আদতে কিছুই হওয়া হল না। তবু ওই যে সহজ বেছে নেওয়া 'আমাকে আমার মতো থাকতে দাও'। 

Arup Sarkar: শিশুকাল থেকেই মানুষ নিজের পছন্দ ও মতামত প্রতিষ্ঠা করতে চায়

 

Arup Sarkar:  আমাকে আমার মত থাকতে দাও আদতে একটি স্বমুখী প্রবনতা। মানুষের মানসিক গঠনে স্বাধীনচিন্তা ও আত্মপরিচয়ের আকাঙ্ক্ষা একটি মৌলিক উপাদান। মনস্তাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিচার করলে বোঝা যায়, "নিজের মত থাকতে চাওয়া" কেবল একটি সামাজিক প্রবণতা নয়, বরং এটি আত্মপরিচয় গঠনের এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্য, আত্মসম্মানবোধ এবং আত্মবিশ্বাস অনেকাংশেই নির্ভর করে তার নিজস্ব মতামত প্রকাশ ও অনুসরণের সুযোগের ওপর।

বিশ্বখ্যাত মনোবিজ্ঞানী এরিক এরিকসন তার "মনস্তাত্ত্বিক বিকাশ তত্ত্বে" বলেন, আত্মপরিচয়ের সংকট কাটিয়ে উঠেই একজন মানুষ পরিপূর্ণতা অর্জন করে। যদি কেউ তার নিজস্ব মত প্রকাশে বাধাগ্রস্ত হয়, তবে তার মধ্যে আত্মবিশ্বাসহীনতা, হতাশা ও হতদ্যমতা দেখা দিতে পারে। আবার কারও নিজস্ব চিন্তাধারা অবদমিত হলে, তা দীর্ঘমেয়াদে মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও হতাশাজনিত রোগের জন্ম দিতে পারে।

আলবার্ট ব্যান্ডুরা’র "Self-efficacy" তত্ত্ব অনুযায়ী, একজন ব্যক্তি যখন নিজের সিদ্ধান্তে চলতে পারে, তখন তার মধ্যে আত্মনিয়ন্ত্রণ ও দক্ষতার অনুভব জন্ম নেয়। এটি তার জীবনের প্রতি আস্থাকে বাড়ায় এবং মানসিক স্থিতিশীলতা এনে দেয়। অন্যদিকে, বারবার নিজস্ব মত প্রকাশে বাধা পেলে একজন মানুষের মধ্যে 'নির্বিকারতা' (learned helplessness) জন্ম নিতে পারে, যা তাকে নিষ্ক্রিয় করে তোলে।

মনস্তাত্ত্বিক গবেষণায় এটাও দেখা গেছে, শিশুকাল থেকেই মানুষ নিজের পছন্দ ও মতামত প্রতিষ্ঠা করতে চায়। যদি পরিবার ও সমাজ তার মতামতকে মূল্য দেয়, তবে তার ব্যক্তিত্ব দৃঢ় হয়। তাই মানসিক সুস্থতার জন্য নিজের মত প্রকাশের পরিবেশ অত্যন্ত জরুরি।

মানুষ প্রথমে অস্তিত্ব লাভ করে এবং পরে নিজের সারবস্তু বা স্বরূপ গড়ে তোলে। ঈশ্বরের অস্তিত্ব তিনি অস্বীকার করেন এবং বলেন, যদি ঈশ্বর না থাকেন, তবে নৈতিক ও অস্তিত্বগত দায়দায়িত্ব একান্তভাবে মানুষের। ফলে, প্রতিটি মানুষ নিজেই তার কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ী এবং সেই অনুযায়ী তাকে তার জীবন গঠন করতে হয়।

সর্বোপরি নিজের মত থাকা হল নিজের মনন মন্থন নিজেকেই গুছিয়ে নেওয়া It is a journey towards real to sourrieal.

Ashoka Kodali: এর উত্তর জানতে জানতে তুমি চিনবে, বুঝবে, মুখ কী, মুখোশ কী?

 


Ashoka Kodali: ছোটোবেলাটা সবার একরকম হয় না। তবে বেশিরভাগ জনের শুরুটা হয়তো স্বাভাবিকই হয়। যেমন, একটা বাড়ি থাকে, বাবা-মা থাকেন বা একটা পরিবার থাকে, যার মধ্যে বাচ্চাটা ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে।

পরিবারের শিক্ষা ,পরিবেশ, পরিস্থিতি সবই তার চরিত্রটাকে একটু একটু করে তৈরি করতে সাহায্য করে। তারপর আস্তে আস্তে সে বড় হয়ে ওঠে শরীরে,মননে। পরিবার, স্কুল, কলেজ.. এসবকিছু থেকে সে জানতে শেখে, বুঝতে শেখে যেকোনও বিষয়কে।

এতদসত্ত্বেও কিছু জন শেখে নিজের মতো করে নিজের জীবন থেকে নানা খুঁটিনাটি বিষয়। সবাই যখন বলতে থাকে তুই বড় হয়ে গেছিস এগুলো মানায় না, ওগুলো মানায় না। তখন বড় হয়ে যাওয়া মানেটা ঠিক কী? তা ভাবা সে অভ্যাস করে। গড়ে ওঠে একটু একটু করে নিজের জীবন দর্শন। মনে হয় এত দিন থেকে যা কিছু তোমরা শেখালে সেগুলোই তো করছি তবে ভুলটা ঠিক কোথায়?

এর উত্তর জানতে জানতে তুমি চিনবে, বুঝবে, মুখ কী...মুখোশ কী? আর ঠিক তখনই কত শত চরিত্র রাতারাতি বদলে যাবে তোমার মানস পটে। সবটা থেকে তখনও তুমি শুধু শিখবে। ভাববে এতদিন যাকিছু শিখলাম, যাকিছু দেখলাম তা আসলে সত্যি না। এবার তুমি কলাকুশলীদের সত্য-মিথ্যা যাচাই করতে পারবে। এসবই হবে ধীর প্রক্রিয়ায়।

একটা সময় এসে চারপাশের মানুষের মুখোশ গুলো যখন তুমি চিনে নিতে পারবে, তখন দেখবে নিজের বলে কেউ কথাও নেই,সবটাই প্রয়োজনে প্রিয়জন। তবু কাওকে বিচার করতে তুমি পারবে না। কাউকে দোষ দিতে তুমি পারবে না। এক নির্মম পৃথিবীর সম্মুখীন হবে তুমি।যার রূপ রুক্ষ,শুষ্ক। এরপরেও তোমাকে বাঁচার পথ খুঁজতে হবে, নতুন করে শিখে নিতে হবে নিজেকে সজীব রাখার পাঠ।

যেদিন তুমি পড়ে ফেলতে পারবে সকল চোখের ভাষা, পড়ে ফেলতে পারবে আপনজনের স্বার্থ,লোক দেখানো মানবিকতা, চরিত্রের মধ্যে লুকিয়ে থাকা দুশ্চরিত্র, ব্যবহারের প্রকৃত উদ্দেশ্য, অবহেলার মানে। আর ঠিক তখনই তুমি তোমাকে আবিষ্কার করবে নতুন করে। নির্দ্বিধায় বলে ফেলতে পারবে আমার ভাঙা আমিটাকে নিয়ে "আমাকে আমার মতো থাকতে দাও"। 

Munmun Mukherjee: আসলে সে ভালোবাসার কাঙাল

 


Munmun Mukherjee: "আমাকে আমার মতো থাকতে দাও" -- এই গানটি কবি তথা গায়ক অনুপম রায়ের বিখ্যাত পরিবেশন। লাইনটিকে শুধু মন্তব্য ভাবলে আপাতভাবে মনে হয় বক্তা কারোর কোনো পরোয়া না করে নিজের ইচ্ছা মতো যাবতীয় কাজকর্ম করে থাকেন অর্থাৎ শুধুমাত্র এই কয়েকটি শব্দ যেন একটা স্বার্থপর চরিত্রকে প্রকাশ করছে।

কিন্তু গভীর ভাবে ভাবলে আমরা বুঝতে পারি এই লাইনের মধ্যে একটা অদ্ভুত বেদনা ফুটে উঠেছে। একটা মানুষ তখনই নিজের মতো একেবারে একা নিঃসঙ্গ থাকতে চায় যখন সে পারিপার্শ্বিক পরিবেশ থেকে বারবার আঘাত পায়। বারবার আঘাত পেতে পেতে তার মন পাথর হয়ে যায়। সে ভালবাসতে ভুলে যায়, নিজের উপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। তখন সে  তার বৃত্তটাকে ছোট করতে করতে নিজেকে একেবারে গুটিয়ে ফেলে। নিজের চারপাশে তৈরি করে একটা অদৃশ্য পাহাড়সম প্রাচীর। তখন তার চারপাশে হাজার একটা ঘটনা ঘটে গেলেও তার মনে কোন দাগ কাটে না। সে যেন ভাবলেশহীন একটা মানুষ। তার যেন কিছুতেই কিছু যায় আসে না।

 আসলে সে ভালোবাসার কাঙাল। বাইরে থেকে তাকে দেখে যা মনে হয় সে যেন একটা দুর্ভেদ্য দূর্গ তৈরি করে রেখেছে তার চারপাশে। যেন জীবনে যত কষ্ট পাওয়ার পাওয়া হয়ে গেছে, আর কোনো দুঃখ যাতে তার মনকে ছিন্নভিন্ন করতে না পারে সেটা তারই প্রয়াস। নতুন করে ভালোবেসেও আবার ঠকে যাওয়ার ভয়ে ভীত সে। তাই মনের ঘরের সব দরজা জানালা সে বন্ধ করে রেখে দিয়েছে। যেন সে কোনো এক কারাগারে বন্দী।

আসলে সে জানেই না একটা কালবৈশাখী ঝড়ের অপেক্ষায় বসে আছে তার ভবিষ্যৎ। তার সমস্ত দ্বিধাদ্বন্দ্ব, মান অভিমান ভেঙে দিয়ে কেউ যদি তাকে ওই পাহাড় সমান অদৃশ্য কয়েদখানা থেকে বের করে নিয়ে আসতে পারে তবে তার মতো ভালোবাসতে আর কেউ পারবে না।

Sayan Das: একাকীত্বকে অপেক্ষা করতেও বলতে পারিনি

 


Sayan Das: সময় থেকে কিছুটা এগিয়ে নির্জনতা খুঁজে গেছি আমি বারংবার। বইয়ের পাতার আড়ালে আড়ালে কিংবা সবুজের সমারোহে থাকা সেই আমিটাই আমাকে অনেকাংশে একলা করে দেয়। এই যে নির্জনতা, কার থেকে? অবশ্যই নিজের থেকে। নিজের চিন্তা-ভাবনা, গতানুগতিক জীবন প্রবাহ এবং সর্বোপরি নিজের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার বিপ্রতীপে থাকা এই নির্জনতা আমার কাছে খুব দামী।

 কোনো এক সকালে ঘুম থেকে উঠে বাগানে থাকা কাঠগোলাপ এর কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা হয়নি, কেন সে আমার জন্য অপেক্ষা করে, জমিয়ে রাখা স্মৃতিকে মুক্ত করা হয়নি কতকাল। শুধু জলের কাছে গিয়ে দাঁড়াতেই সে দুহাত দিয়ে বারবার আমাকে আমন্ত্রণ করেছে তার কথা শোনার জন্য। আমিও কিছুক্ষণ থেকেই আবার চলে এসেছি নিজের এসব দুর্বলতার কাছে।

এবার কিন্তু আমার একা থাকার সময় সবাইকে বলে এসেছি যাতে তারা এসে ভিড় না করে। নিজের মতো করে যাবতীয় নির্জনতার সাক্ষ্য বহন করা এবং এই যাপনটাকে উপভোগ করার মধ্যেও আপাতভাবে একটা অলীক তত্ত্ব আছে মনে হলেও বাস্তবে যেন নিজের প্রতি এ এক গভীর পর্যবেক্ষণ। কতকাল একা থাকা হয়নি। যে নির্জনতা খুঁজে চলেছি সবার মধ্যে, তাকে কখনও নিজের কাছে পরিচয় করানো হয়নি।

আমার কান্না, আমার ব্যর্থতা যতটা আমাকে চিনেছে, ততটা চেনেনি নির্জনতা। তাকে বারবার গুলিয়ে ফেলেছি, একাকীত্বের সঙ্গে। তাই সে অতিথি হয়ে সময়ে সময়ে পর্যবেক্ষকের ভূমিকা পালন করেছে মাত্র। আমার এই নিজের যাপন আমার জন্যই আটকে ছিল এতদিন।

দাবি জানাবো কার কাছে? এতক্ষণের যা অভিযোগ অভিমান সবই তো নিজের প্রতি। আমার সত্তার একটা অংশের প্রতি। যে অংশ প্রতিনিয়ত সমাজ, পরিবার, রাজনীতি, এবং অন্যান্য প্রাতিষ্ঠানিক বিষয়ের কাছে দায়বদ্ধ থাকতে গিয়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছে বারবার। ভালো থাকার বদলে সঙ্গী করেছে যান্ত্রিক দায়বদ্ধতাকে।

এবার এসবের থেকে অব্যাহতি চাই। অব্যাহতি চাই সবকিছুর উত্তর দেওয়া থেকে। ভেঙে যাওয়া তারার মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সেসব মুহূর্ত যা আত্মপ্রকাশ করতে গিয়েও করতে পারেনি, এবার তাকে ধরে রাখার পালা।

আমার নির্জনতা, আমার নিজের মতো থাকতে চাওয়া আসলে কি বাইরের কাছে নাকি নিজের কাছে? আমি নিজের থেকে দূরে সরে গেছি? কতবার, কত মুহূর্তে, তার হিসাব নেই।

 আমি সবার মাঝে থেকেও একা একথা বলতে পারিনি কাউকে। আবার নির্জনতার খোঁজ করতে গিয়ে একাকীত্বকে অপেক্ষা করতেও বলতে পারিনি। এবার হয়তো কোথাও গিয়ে নিজের মতো করে থাকা হয়ে উঠবে নিজের কাছে। সমস্ত দুশ্চিন্তা, পরিকল্পনা একদিকে রেখে, এবারের আমার মতো করে থাকা হোক খানিকটা কবিতার মতো। মৌলিক অথচ সঙ্গত!

সমুদ্রের যতগুলো ঢেউ, ততবার আমি বেঁচে উঠবো আবার, এভাবেই, নিজের মতো করে থাকতে গিয়ে...নিজের কাছে।

Srija Das: এখন আর আগের মতো কষ্ট হয় না


 Srija Das: তুমি কী চাও বলো, ভালোবাসা কমিয়ে অবহেলা করবে ?..করো। মুখ ফিরিয়ে নেবে, কথা বলবে না ? বোলো না..। আ'ঘাত  দেবে ? ছেড়ে যাবে? যাও..।

বিশ্বাস করো..এখন আর আগের মতো কষ্ট হয় না...। বলতে পারো গায়ে মাখি না..।

সত্যি বলতে..এখন আর তেমন ইচ্ছেও করে না এটা ভাবতে যে, কেন কেউ আমায় ভালোবেসে মায়া দেখিয়ে ছেড়ে চলে গেল....? কেন কেউ আগের মতো করে সময় দেয় না? কেন এত অবহেলা করে..?

এগুলোর সঠিক ব্যাখ্যার খোঁজ এখন আর মন নিতে চায় না। আসলে আমি চাই না কেউ আমায় দয়া করে ভালোবাসুক, কিংবা উপর-উপর মিথ্যা ভালোবাসা দেখিয়ে অপছন্দের তালিকায় প্রথম স্থানে আমায় রাখুক ।

প্রচন্ডভাবে ভেঙেচুরে দিয়ে চলে যাওয়ার পর যেভাবে নিজেকে একটু একটু করে গুছিয়ে নিয়েছি আমার আমিটাকে, তাকে যে আর সহজে ভাঙা যাবে না..।

আজ মনের অন্দরমহলটা তোমার দেওয়া সমস্ত  অবহেলা, আঘাত, দুর্ব্যবহার, দুঃখ, কষ্টগুলো দিয়ে কংক্রিটের মতো মজবুত হয়ে গেছে। তাই আজ হাসি মুখে বলতে শিখে গেছি যে, আমি পারবো একা থাকতে ।

এবার...আমি বাঁচতে চাই, বাঁচতে চাই নিজের জন্য, নিজের মতো করে.....বলতে চাই,"আমাকে আমার মতো থাকতে দাও "।।

               

Papiya Mondal: অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো 'অলক্ষ্মী'রা বেড়ে উঠুক



Papiya Mondal: আমি অনেক লক্ষ্মী মেয়েকে  দেখেছি, সবাই কেমন লক্ষ্মী মেয়ের তকমা লাগিয়ে তাদের মনের মতো কাজ করিয়েছে। তাদের ইচ্ছে চাপিয়ে দিয়েছে তার উপর। নিজের ইচ্ছে, মতামত কখনো কখনো জানাতে গিয়েও কুণ্ঠিত হয়েছে, পাছে লক্ষ্মী মেয়ে হিসেবে যে সুনাম আছে সেটা নষ্ট হয়ে যায়!

জ্ঞান হওয়া ইস্তক শেখানো হয়েছে বড়রা যা বলে সেটা অকাট্য। তাই তাদের মুখে মুখে তর্ক করতে নেই। এতে নাকি লক্ষ্মী মেয়ে হওয়া যায় না। বিয়ে হয়ে শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে সেখানে সবাইকে খুশি করতে হবে এটাই জীবনের সারমর্ম হিসেবে গেঁথে দেওয়া হয় মনে। শত অন্যায়, অত্যাচার, কটু কথার উত্তর দিলেই কিন্তু লক্ষ্মী হওয়া যায় না।

তাই মুখ বুজে মেনে নিতে শেখানো হয়েছে।

কিন্তু , দুঃখ, কষ্ট বুকে নিয়ে ঘরের কোণে নিজেকে বন্দী করলেও, তারা আরও বেশি করে ডালপালা বিস্তৃত করে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরেছে। সমস্যায় দুশ্চিন্তা করতে করতে অতল গভীরে তলিয়ে গেলেও, কূলকিনারা মেলে কদাচিৎ। কত অবলা প্রাণ অকালে ঝরে যায়! অবজ্ঞা, অবহেলা, অপমান সহ্য করতে করতে একদিন অপারগ হয়ে মুখ খুলতে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে বাধ্য হয় কেউ কেউ।

আসলে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে মানুষ মরিয়া হয়ে ওঠে। আর তখনই গায়ে এসে লাগে 'অলক্ষ্মী'র তকমা। তথাকথিত লক্ষ্মী মেয়ে হওয়ার চেয়ে শত গুণে ভালো এমন 'অলক্ষ্মী' হওয়া।

যেখানে নিজের হাতিয়ার নিজেকেই হতে হয়। কারোর সাহস না হোক কারণে -অকারণে হেনস্তা করার। যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শিখতে হয়। শিখতে হয় মাথা উঁচু করে, আত্মসম্মান নিয়ে বাঁচতে। নিজেকে স্বাবলম্বী, স্বনির্ভর করে গড়ে তুলতে হয়।

প্রতিটি বাবা-মা'র উচিত তথাকথিত লক্ষ্মী মেয়ে হিসেবে নিজের কন্যাসন্তানকে তৈরি না করে, তাকে স্বাবলম্বী, স্বনির্ভরতার পাঠ দেওয়া। তাকে সবসময়ই এটা মনে করানো উচিত সে কারোর চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। কারোর কাছে অকারণে মাথা নোওয়ানোর কোনো প্রয়োজন নেই।

পৃথিবীতে সব  মানুষের অধিকার সমান। এখানে কোনো স্ত্রী, পুরুষ বিভেদ সৃষ্টির দরকার নেই। লক্ষ্মী মা দেবী হিসেবে যেমন পূজিত হন, তেমনই চলুক। তাতে কোনো বিরোধ নেই। কিন্তু কন্যাসন্তাকে বা নারীজাতিকে 'লক্ষ্মী'র প্রতিমূর্তি হতে হবে এমন নিদান বন্ধ হোক।

আমাদের ঘরে ঘরে শিক্ষিতা, স্মার্ট, রুচিশীলা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো 'অলক্ষ্মী'রা বেড়ে উঠুক। এতে সমাজের মঙ্গল, জাতির মঙ্গল, দেশের মঙ্গল সর্বোপরি সারা পৃথিবীর মঙ্গল।

Dibyendu Haldar: আমার সিদ্ধান্তর চেয়েও মুখ্য হয়ে উঠেছিল আর্থিক অনটন


Dibyendu Haldar: ‘আমারও তো মন ভাঙে, চোখে জল আসে আর অভিমান আমারও তো হয়।’

অনুপম রায়ের গানের এই সত্যিকথাগুলো যে শুধুমাত্র ‘আমার জন্যই’ প্রযোজ্য, একথা বলা ভুল হবে। বরং বলা যায় ‘আমার জন্যও’ প্রযোজ্য।

কেন? সেকথার উত্তরে আরেকটা গানের লাইন উঠে আসুক―'আমাকে আমার মতো থাকতে দাও'।

এখানে যদিও আমি অনুপম রায় নয়, আমারই আমার মতো থাকার কথা বলব। তালের রসের মতো গেঁজিয়ে বলব না। আমার কল্পনায়, অনুভূতিতে মিশে থাকা সত্যি কথা বলব। আসলে কি সত্যি বলে সত্যিই কিছু নেই?

অনেককাল আগের কথা। বাড়ি লাগোয়া আমের বাগান ছিল আমাদের। আরও বেশ কিছু গাছ ছিল। ঝড় বৃষ্টিতে যৌথ পরিবারের সকলে হইহই করে আম কুড়াতাম। বেশিরভাগ ব্যাপারটা ঘটত সন্ধেতে। তখন মা, জেঠিরা ছোটকরে হলেও ঘোমটা টানতে ভুলে যেত জেঠুদের সামনে। সে এক অদ্ভুত স্বাধীনতা ছিল, যা কাউকে কখনও চেয়ে নিতে হয়নি। আবার কেউ বাধাও দিত না। কেউ বলত না, আমাকে আমার মতো থাকতে দাও।

শুনেছি জেঠুর মেয়ের কোল থেকে নাকি একবার গরম উনুনে প্রায় পড়েই যাচ্ছিলাম! খুব ছোট ছিলাম কিনা। দেড় কিলোর কম। বড়মামা ভয় করত, এ ছেলে টিকবে কিনা!

অন্নপ্রাশনের দিন আকাশ কালো করে মেঘ উঠেছিল। বাড়িভর্তি লোকজন, এত আয়োজন সব পণ্ড হবে! বড়পিসি কী একটা মানত করেছিল। মেঘ কেটে গেছিল। মেঘ বাবাজীবনেরও তার মতো করে থাকার সাধ্য ছিল কই? পরে অবশ্য শোধ তুলে নিয়েছিল। বড়পিসিকে বুদ্ধি পরে আর দেখিনি।

আমার হামাগুড়ি দেবার বয়স পেরিয়ে যখন সামান্য এদিক ওদিক যেতাম, কেউ বাধা দেয়নি। মনে আছে, মাটি খেতাম, বকুনি খেতাম। ভাত তরকারি যে খাইনি তেমন নয়, তবুও শরীরটা মাটিতে মিশে যাবার মতো করেই বেড়ে উঠতে লাগল। আমি আমার মতো করে থাকার আগেই ভাই এল। ভাই বা বোন আসবে একথা শুনেই আমি ভাই চাইতাম। মেলা থেকে দুটো ভাইয়ের ছবি পোস্টার কিনে এনেছিলাম। একটা দরজায়, একটা দেওয়ালে। ভাইয়ের বয়স এখন প্রায় তেইশ। আমাদের মাটির দেওয়ালে ওই ছবি এখনও সাঁটা আছে।

ক্লাস ফোরে যখন বন্ধু পাপাই মানির সঙ্গে মিলে একটা ছড়া লিখলাম, সেদিনও টুটুল স্যার ফিসফিসিয়ে কথা বলার দরুন নিলডাউন করিয়ে দিয়েছিল। আমার মতো করে লেখা শুরু করার সেই প্রথম শাস্তি। তারপর থেকে মেয়াদ বেড়েই চলেছে।

ক্লাস ফাইভে উঠে ফুলপ্যান্টে হাইস্কুলে যেতাম। হাইটে অনেকের চেয়ে ছোট, সামনের দিকে বসতাম। সে কী ভীষণ চেহারার সব বন্ধু আমার! হলঘরে মঞ্চের নীচে ঢুকবার জায়গা ছিল। একটা ছেলে আমাকে ওর মধ্যে জোর করে অনেকক্ষণ ঢুকিয়ে রেখেছিল। আমি আমার মতো ছিলাম? বাবার সাইকেলে চেপে কল্যাণ স্যারের কাছে পড়তে যেতাম। কল্যাণ স্যার আমার রামকৃষ্ণ সারদা বিদ্যামন্দিরের স্যার ছিল। কিন্তু হাইস্কুলে উঠেও তার কাছেই পড়তে যেতে হতো। যদিও বাড়িতে আলাদাভাবে আমি দাদা দিদিরা পড়তাম রামকৃষ্ণ স্যারের কাছে।

যাইহোক, কল্যাণ স্যারের কাছে সিনিয়র জুনিয়র মিলিয়ে পড়া। বড়রা আমায় বেশ রাগাত। পড়তে যেতে চাইতাম না। বাবা এক টাকা করে দিত সাইকেল থেকে নামিয়ে দিয়ে। তবুও ওখানে পড়া ছেড়ে দিলাম। সেবছর বাবাও চলে গেল। আর আমাদের যৌথ পরিবারের ভাঙনও ওই শুরু হল। আমাকে বলা হল রাস্তার ছেলে।

রাস্তার নাকি ঘরের নাকি আমি শুধুই আমার তার জবাব দেবার বয়স তখন ছিল না। গায়ে জ্বর ছিল বলে বাবার মুখাগ্নি করতে দেওয়া হল না। ছোটমামা একটা আপেল কিনে দিয়েছিল। খেয়েছিলাম অনিচ্ছা সত্ত্বেও।

আমি ডানপিটে ছিলাম। মারপিট, গালিগালাজ এগুলোর মাঝে বেড়ে উঠছিলাম। কিন্তু ঘুরিয়ে কেউ মারার বদলে বলত, ওকে মারিস না, ওর বাবা নেই। আমাকে আমার মতো থাকতে দেবে বলে বন্ধুরা প্রায় সকলেই করুণা করত।

তারপর থেকে দীর্ঘ সময় আমি আমার মতো করেই থেকেছি।

টিউশনি পড়তে গিয়ে একই ঘটনা ঘটছে হায়ার সেকেন্ডারিতেও। পড়াশোনা আমি ছাড়িনি। কিন্তু একপেশে অঘোষিত র‍্যাগিংয়ের শিকার হয়েছি একথা বলতেই হবে। প্রভাব পড়েছে রেজাল্টেও। আমার পারিপার্শ্বিক জগৎ, আমার কবিতা চেতনা সমস্ত কিছুর ওপর। আমার নিজের মতো করে থাকার মানেগুলোও এর সাথে সাথে পাল্টে চলেছে।

কলেজে অনার্স পড়ব নাকি জেনারেল পড়ব সে নিয়ে আমার সিদ্ধান্তর চেয়েও মুখ্য হয়ে উঠেছিল আর্থিক অনটন। যাতে খরচ কম, তাই নিয়ে পড়া ভালো এবং জীবনের ভুলভাল রাস্তা বাতলে দেওয়ার লোকজন জুটতে থাকল আমার আর মায়ের আশেপাশে। আমি আর মা কেউই আজীবন আমাদের মতো করে থাকতে পারলাম না।

আমি গিয়ে উঠলাম মাসির বাড়ি। একবছর না গড়াতেই টিউশন ফি বাকি পড়ে গেল। আমার মতো করে রোজগারের সেই শুরু। ফিরলাম বাড়িতে। নিজে পড়াই, তাই দিয়ে পড়ি। চোখে জল আসে, অভিমান হয় বড়দের উপর। আমাকে আমার মতো পড়তে দাও―বলতে পারিনি আজও।

কর্মজীবনে কী করব তাও ঠিক করে দিতে লাগল কাছের মানুষেরা। সরকারি বিস্তর পরীক্ষা দিই, কয়েকটা পাশও করি। কিন্তু হয় না। এইবার কিন্তু কারোর কথা শুনলাম না। যেটুকু লেখালেখি, সম্পাদনার পুঁজি ছিল তাই নিয়ে ইন্টারভিউ দিলাম পত্রভারতীতে। হয়েও গেল চাকরিটা। আমি আমার মতো থাকব বলে চলে এলাম কলকাতা।

এইবার লড়াই শুরু অন্যরকম। মেসবাড়ি। বিছানায় আমি আর পাশবালিশ। একজন আরেকজনের পিঠে না উঠলে ধরে না। এখানেও তালাবন্ধ রইলাম রুমমেটের কৃপায়। মেসমালিকের এক্সট্রা চাবি বাঁচিয়ে দিল। কিন্তু আমি তারমধ্যেও থাকতে পারলাম কই! এত মানুষের সঙ্গে লড়াই করলাম। হারিয়ে দিল ছারপোকার গুপ্তদল। সে গল্প অন্যসময় হবে।

চলে এলাম অফিসলাগোয়া একটা ঘরে। এখন অফিসই বাড়ি, বাড়িই অফিস। আর রাতদিন আমাকে আমার মতো পড়তে দাও। আমাকে আমার মতো কাটতে দাও―গল্প, উপন্যাস এ বি সি...এম এন ও। কিন্তু আমি আমার মতো থাকতে পারলাম কি? এই প্রশ্ন এখনও মনে জাগে।

Mousumi Bhowmick: কি হতে চেয়েছিলো সে ভেবে বসে থাকলে চলবে না

 


Mousumi Bhowmick: ছেলেমেয়েরা যখন পড়াশোনা করে তখন বাবামায়েদের মূলত লক্ষ্য থাকে একাডেমিক রেজাল্ট অর্থাৎ পরীক্ষার ফল যেন ভালো হয়।  মাধ্যমিক পাস করার পর যদি ছেলেটি অথবা মেয়েটি অংক কিংবা বিজ্ঞানে ভালো হয় তাহলে উচ্চমাধ্যমিকে তাকে বিজ্ঞান শাখায় ভর্তি করা হয় নচেৎ আর্টস শাখায় ।

এই স্কুল  জীবনে কোন একটি সাবজেক্ট কোন একটি ছাত্র-ছাত্রীর ভালোলাগা কিংবা খারাপ লাগার পেছনে অনেক সময় কোনও কোনও শিক্ষকের অবদান থাকে । হয়তো কোন শিক্ষকের শেখানোর পদ্ধতির জন্য যে কোন একটি সাবজেক্ট না ভালোলাগা সত্ত্বেও হয়তো প্রিয় হয়ে উঠল। তারপরে হয়তো সেই সাবজেক্টটি নিয়েই সে ভবিষ্যতে পড়বে ঠিক করল। আবার কখনও হয়তো এমন ভীতি তৈরি হলো সে আর সেই সাবজেক্টটিকে পড়তেই চাইল না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ছেলেটি কিংবা মেয়েটি সেটা নিয়েই এগোতে চায় যা তার ভালো লাগে। ভবিষ্যতের সুদূর প্রসারী ফল সম্পর্কে তার ঝুঁকি কিংবা ফল কোনোটাই  সে তখন ভাবে না অথবা জানার সুযোগও থাকে না।

মা-বাবারা সবসময় চায় তার ছেলেটি কিংবা মেয়েটি, যা নিয়েই পড়ুক সেটা নিয়ে জীবনে যেন প্রতিষ্ঠিত হতে পারে অর্থাৎ একটি ভালো পেশা গ্রহণ করতে পারে।  এবার এখানে অনেকগুলো ফ্যাক্টর কাজ করে। প্রথমতঃ,  হয়তো একজন  ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে একটি প্রাইভেট জবে ঢুকলো কিন্তু  চাকরিক্ষেত্রে হয়তো তাকে অনেক ছোটাছুটি করতে হলো কিংবা নাইট শিফটে কাজ করতে হলো কিংবা যেকোনো সময়ে তাকে চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হল । তখন হয়তো ছেলেটির সামনে হঠাৎ একটা সুযোগ এসে গেল তার আরেক ভাললাগা একটা শিক্ষকতা কিংবা সাংবাদিকতা করার সুযোগ। কিছুদিনের জন্য সে সেটাই করতে শুরু করে, ক্রমে হয়তো সেটাকেই পেশা হিসেবে বেছে নিল।  এ ক্ষেত্রে তো বাবা-মাকে দোষ দেওয়া যায় না।

আবার কখনো কখনো এমনও ঘটে যে ছেলেটি কিংবা মেয়েটি উচ্চ মাধ্যমিকের পর যা পড়তে রাজি নয় হয়তো বাবা-মার জোর জবরদস্তিতে সে তাই নিয়ে ভর্তি হল তারপর ভালো ফল করলো না,  হয়তো তারপরে এসে স্ট্রিম চেঞ্জ করলো আবার এরকমও ঘটেছে ভালো ফল করেও পরবর্তীতে সে আবার অন্য প্রফেশনে চলে গেল। এক্ষেত্রে হয়তো বাবা-মায়ের কিছুটা দোষও রয়েছে।  হয়তো পারিপার্শ্বিক চাপ, অথবা নিজেদের অপূর্ণ সাধ মেটাবার কিছুটা চেষ্টা।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে আবার পরিস্থিতির জন্য।  যেমন কেউ হয়তো টাইপরাইটারে টাইপিং শিখেছিল। তারপরে কম্পিউটার এসে যাওয়ায় সে ক্ষেত্রে তাকে অন্য কোন কিছু করার চেষ্টা করতে হয় অর্থাৎ পরিস্থিতির সাথে চলতে শিখতে গিয়ে মানুষের পেশাও অনেক সময় পরিবর্তন করতে হয় ।

আবার কখনও কেউ শিক্ষক হতে চায়, কিন্তু পরিস্থিতি (যেমন পশ্চিমবঙ্গে) তাকে অন্য পেশাতে যেতে বাধ্য করে। রাজনৈতিক ও পারিপার্শ্বিক পরিবেশ, পরিস্থিতি ও সময়ের সাথে সাথে মানুষের পেশার পরিবর্তন ঘটে । এটা অনস্বীকার্য যে সফল হতে হলে মানুষকে এই পরিবর্তন গ্রহণ করেই এগোতে হবে। কি হতে চেয়েছিলো সে ভেবে বসে থাকলে চলবে না।

Aneesh Sarkar IPS: শুধু পাকিস্তান নয় গোটা বিশ্বকেই দেখিয়ে দিল আমার দেশ

 

Aneesh Sarkar IPS: ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও-এর হামলা আমাকে ভাবিয়ে তুলেছে। ধর্মের দাগ খুঁজে শান্ত মাথায় যে নৃশংস হত্যা জঙ্গীরা চালিয়েছে তা নিয়ে আমি সত্যিই খুব চিন্তিত ছিলাম। সেদিনের পর থেকেই শুধু ভেবেছি প্রতিশোধটা কবে দেখব? ঠিক যেভাবে প্রতিশোধ নেওয়ার দরকার ছিল ঠিক সেভাবেই প্রতিশোধ নিয়েছে আমার দেশ 'ভারতবর্ষ'। এই উচিত প্রতিশোধ নিয়ে ভারত শুধু পাকিস্তানকে নয় গোটা বিশ্বকেই দেখিয়ে দিয়েছে বলেই আমি মনে করি।

যে কাপুরুষেরা ধর্ম বেছে হত্যা করে আমার মা-বোনেদের সিঁদুর মুছে দিয়েছিল তারই যথোপযুক্ত জবাব দিয়েছে ভারত। এমনকি ৭ মে মক ড্রিলের দামামা বাজিয়ে গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়ে ৬ মের মধ্যরাতে পাক অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীর সহ পাকিস্তানের ভেতরে ঢুকে ৯ টি জঙ্গী ঘাঁটি উড়িয়ে দেওয়া

আমার কাছে গর্বের। ইতিহাসের পাতায় সেই সিঁদুরের লালেই লেখা থাকবে ৬ মের দিনটা 'অপরাশেন সিঁদুর'।

অন্যদিকে, নারীরা যে কখনই দুর্বল নয়।  সে কথায় ভারত সরকার আরও একবার তুলে ধরল বিশ্বের দরবারে। যখন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে 'অপারেশন সিঁদুর'-এর বিবৃতি দিতে এলেন দুই অফিসার কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং উইং কম্যান্ডার ব্যোমিকা সিং। এঁরা দুজনেই নারী। আমার মনে হয়েছে এঁদের দুজনকে এগিয়ে দিয়ে আমাদের দেশের নারীশক্তিকে গোটা বিশ্বের কাছে তুলে ধরে উপযুক্ত বার্তা দিল ভারত সরকার। একজন ভারতবাসী ও ভারতীয় অফিসার হিসেবে ভারতীয় সেনাদের আমার স্যালুট।  

রবিবার, ২৫ মে, ২০২৫

জলফড়িং ফিরেছে, লেখা পাঠান


 ২০১৭ সাল থেকে পথ চলা শুরু হয়েছিল। দীর্ঘ পথ হেঁটেছি। পাশে থেকেছে অনেকেই তাঁদের প্রতি আমরা ঋণ স্বীকার করছি। অনেকেই একসাথে পথ চলতে গিয়ে ছেড়ে দিয়েছে হাত তাঁদেরকেও কৃতজ্ঞতা জানাই৷

লড়াই, একনিষ্ঠতা আর ভালোবাসা মিলে শুরু হওয়া একটা ওয়েব ম্যাগাজিন একদিন ১ থেকে ৮০ হাজার মানুষের কাছে পৌঁছেছিল। পাঠকেরা ভালোবেসে তাঁদের লেখা পাঠিয়ে আমাদের সঙ্গে থেকেছিলেন। আমরা তাঁদের প্রতিও কৃতজ্ঞ।

আমরা বিশ্বাস করি কোনও কিছু যার সঙ্গে সময় জড়িত থাকে তা ভুখা পেটে হয় না। তাই আমরা যারা জলফড়িং চালাতাম একদিন কাজের সন্ধানে আমরা বেরিয়ে পরেছিলাম। বিরতি নিয়েছিলাম প্রাণের ওয়েব ম্যাগাজিন জলফড়িং থেকে। কিন্তু মনে মনে বলেছিলাম 'আবার ফিরব'।

অরূপ সরকার ও জয়দীপ রায় এই দুজন মিলে জলফড়িং সামলাবেন নতুন করে সম্পাদকের দায়িত্ব থেকে। আমিও চেষ্টা করব কমবেশি কাজ (আনঅফিসিয়ালি) করার।

আপাতত এই মে মাসেই আসছে জলফড়িং-এর ফিরে আসার সংখ্যা 'আমাকে আমার মতো থাকতে দাও'।

লেখা পাঠাতে হবে শুধু এই বিষয়েই। নিবন্ধ আর প্রবন্ধ নেওয়া হচ্ছে। লেখা পাঠানোর জন্য হোয়াটসঅ্যাপ করুন ৭৩৮৪৩২৪১৮০ নম্বরে। লেখা পাঠানোর শেষ দিন ২৬ মে, ২০২৫।

লেখা গৃহীত হলে তবেই প্রকাশিত হবে। কিছু বিশেষ কলম আছে উনারা আমন্ত্রিত। চমকও আছে। সূচীপত্র প্রকাশের দিন জানানো হবে।

ইতি,

সুদীপ্ত সেন, জয়দীপ রায়, অরূপ সরকার