ভিড় থেকে সরে আসি। সমুদ্র জানে না কারও নাম। অনেক লেখার শেষে সাদা পাতা এখনও আরাম...শ্রীজাত

রবিবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৮

সুবোধ সংখ্যা

         




"২০ বছর ধরে ওই ফোন বেজে চলেছে, আরো কুড়ি বছর বাজবে"
                 -----সুবোধ সরকার
🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻🌻
🌼🌼🌼🌼🌼🌼🌼🌼🌼🌼🌼🌼🌼🌼🌼🌼

সম্পাদকীয়,

কাশের দুলনি মেখে শরৎ কাটিয়ে হেমন্তের এই দিনটিতে (২৮ শে অক্টোবর) যার প্রাণ ফুটেছিল কোনো এক মায়ের কোলে আর আনন্দে উল্লসিত কোনো এক পিতার চোখ তাকিয়ে দেখেছিল তার নবজাতককে। সেদিন সেই পিতা-মাতা কি জানত তারা একটা তারার জন্ম দিয়েছেন!

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
            ৷ সুবোধ সূচীতে থাকলো যারা |
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
          | কবি |________________| কবিতা |

১.) সুনন্দ মন্ডল ----------------------দ্যোতনা
             
২.) চঞ্চল ভট্টাচার্য-------------কলমের জন্মদিন

৩.) অরূপ মাহাত-------------------ইচ্ছে-নীড়

৪.) পাখি পাল----------------------তুমি দীপ্তি

৫.) বৈশাখী গোস্বামী----------------কবির বয়স

৬.) অমিতাভ দাস-------------------বারুদ

৭.) সুদাম কৃষ্ণ মন্ডল-----------তুমি রবে গৌরবে


==================================
                       এবার কবিতায়
==================================

১.)
    ৷ দ্যোতনা |
              সুনন্দ মন্ডল

ষাটের সুবোধ ----     নতুন গতি
      স্বর্ণালী পটে জ্যোৎস্না
      ‎          প্রাণ ঝংকার স্নিগ্ধ জ্যোতি
      ‎                    প্রেরণার দ্যোতনা।

কালের চাকা ----   অবাধ নিরন্তর
           ঝড় তুফানের হাজার রিল
      ‎              শক্ত জীবন গড়তে আতর
      ‎                        গন্ধ ছড়ায় অন্ত্যমিল।

সুবোধ তুমি মুক্ত বায়ু আকাশের বুকে বিচরণ
সবুজ সেলাম কপাল ঘামে মিশলো আবরণ।
                   

২.)
| "কলমের জন্মদিন" |
----------চঞ্চল ভট্টাচার্য

তুমি কলম দিয়ে বইয়ের পাতায় সন্ধ্যা আঁকো,
তুমি কলম দিয়ে কবিতার
 কাছে জ্যোৎস্না  রাখো।

তুমি কলম দিয়ে সূর্য সমান
সুবোধ জাগাও পাঠক মনে,

তোমার কলম রত্ন হবে
যত্ন নিয়ে ঈশান কোণে।

তোমার কলম ভীষণ রকম
 আবেগ জাগাই সবুজ বনেও,

তোমার কলম অটুট থাকুক
ভীষণ রকম জন্মদিনেও।

৩.)
ইচ্ছে-নীড়
------অরূপ মাহাত

ইচ্ছে ছিল লিখব অনেক
মনের কথা জুড়ে,
স্বপ্নগুলো রাখব আড়াল
সযত্নে সব মুড়ে।

জ্যোৎস্না মাখা সন্ধ্যে বেলায়
তোমার হাতে হাত,
প্রেমিক যত জোনাক পোকা
খুঁজতে বেরোয় রাত।

তোমার বুকে আমার মাথা
তখন সময় ধীর,
লেখার কথা আজকে থাক
বাঁধব চলো নীড়।

৪.)
তুমি দীপ্তি
--------পাখি পাল

তুমি দীপ্তি তুমি আলো
তুমি প্রজ্জ্বলিত শিখা
তোমার সৃষ্টি তোমার বর্ণে
আঁকছে সহস্র রেখা

তোমার সৃজন তোমার শিল্প
গঠন করো তুমি
মায়ার জগতে তোমার প্রকাশ
অনেক অনেক দামি

তোমার হস্তে জ্বলছে দীপ
দূর হচ্ছে কালো
শত শত মনের আঁধার
পাচ্ছে দিশার আলো।।
                 
৫.)
কবির বয়স
-----------বৈশাখী গোস্বামী

কবিরও বয়স বাড়ে...
কবিতা লেখা হয় শুধুই কি অক্ষরে?
আবেগে 'আ'কারে কবিতা গড়ে,
অভিজ্ঞতায় কি আর  কবি কলম ধরে?

কবির চুলে রূপোলী ছোঁয়া...
প্রেয়সী! কেবলই হয়তো মায়া।
বয়স গোনা যায় সংখ্যাই
আর কবি চেনা যায় ভাষায়।

কবিরও নাকি সময় কমে!
অক্ষরে তার সংখ্যা জমে।
কবি চেনা যায়--- শুধুই শব্দ-শ্রমে।
কবির কি কেউ বয়স গোনে?


৬.)
   বারুদ
------------অমিতাভ দাস

এখন উঠোন দিচ্ছে ধুয়ে খরস্রোতা রক্তনদী
নিরুদ্দেশে জবাবদিহি সময় জুড়ে কিন্তু...যদি...
যাচ্ছে কেঁপে বুকের দেয়াল মৃত্যু বাজির বিস্ফোরনে
ভয়গুলো সব বারুদ সেজে জমতে থাকে মনের কোনে।

রোদ্দুরেরা বন্দী এখন অশনি এক মেঘের জেলে
হারিয়ে গেছে দস্যি মেয়ে হারিয়ে গেছে দস্যি ছেলে
হারিয়ে ফেলা মনের সাহস খুঁজতে গিয়ে আঁধার ঘেরে
যে যায় সে যায় আর কোনোদিন হারিয়ে ফেলা ঘরে ফেরে??

কোথাও নারী কোথাও শিশু কোথাও দেখা স্বপ্নগুলো
দানব থাবা গুঁড়িয়ে দিল ছড়িয়ে দিল পথের ধূলো
সেসব ধূলো জমাট বেঁধে জন্মনিল একটা ছবি
বিদ্রোহ আর প্রেমের ক্ষনে জন্মনিল বারুদ কবি।

৭.)
  তুমি রবে গৌরবে
---------------সুদাম কৃষ্ণ মন্ডল

শুভ হউক জন্ম বার
শুভেচ্ছা নিন আপনজনার
হাজার বছর আয়ু আপনার
বছর আসুক বার বার

লাল কুমুদ সোনার আলো
উদয রাগের আভাগুলো
পডুক মাথায় আশীষ ঝরে
সৃষ্টি মুখর মুক্তো হীরে


শিশুর মতো সরল থাকুন
সুস্থ সুন্দর সত্য বুঝুন
রঙিন গোলাপ হাতে দিলাম
স্বার্থক জীবন লহ প্রণাম





















শনিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৮

একদিন সব হারায়!
কিংবা বলা যায় সময়ের ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে যায়।
অমিত জীবন লালসার ভারে স্তব্ধ হয়ে যায় যদিও..
তবুও সোনারোদে লুকিয়ে থাকা স্মৃতিরা উঁকি দেয়।

জীবন এমনই!  সুবাতাসে প্রাণের অস্তিত্ব
অবগাহনে প্রানময় স্বপ্নপথের তারুণ্য
বেদনায় কেবল হতাশার দিনলিপি......!

যেদিন সব হারিয়েছি বলে মনে হয়!
সেদিনের মাঝে পড়ে থাকে হাজার সময়ে স্মৃতিকথা
তার হাত ধরেই বাঁচে চিরনতুনের আগামী।

ফিরে দেখা । অয়ন কর্মকার
।।আলো।।
        --  স্নেহা
 যখন তুমি প্রাপ্তপ্রায় বয়স ওই তিরিশ ছুঁই ছুঁই,আমার আলোখ্যে তোমার মেঘের এ সংসার। দুটিতে মিলে বেশ আছো..বেলেশেষে হাসির খোরাক জোগাও, অভিমান ভাঙাও, তার মিথ্যে নাটকে আগলে রেখে লাল পলাশ গুঁজে দাও খোপায়। হঠাৎ খবর পেলে তোমাদের মাঝে আসবে সদ্যজাত আশা, নাম নিয়ে বেশ কাড়াকাড়ি হঠাৎ দক্ষিণ জানালার পাশ কাটিয়ে এক টুকরো আলো চোখে পড়বে তোমার। তুমি দীর্ঘ স্তব্ধতা এনে বললে "আলো"।         আমি আবার ফিরে আসবো তোমার মনের মানুষের কোলে, চোখ দেখে থমকে যাবে তুমি,স্তব্ধতা আসবে গোটা আকাশ জুড়ে....গলা শুকিয়ে যাবে তোমার। ওই চোখে আটকে যাবে তুমি আবার নতুন করে।                         কারন,,,,
এভাবেও ফিরে আসা যায়।।

শুক্রবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৮

রাত্রি - - - - -

হঠাৎ যখন সন্ধ্যা নেমে আসে... সকাল হবে জানি কাল...
পূর্বের আকাশ করবে জানি লাল সেই আকাশে নেই কিন্তু চাঁদ
রজনী গন্ধার মর্মে চারি পাশে...
দিন কে যখন সবাই ভালোবাসে রাত্রি আমি থাকব তোমার পাশে...
রাত্রি তুমি মোর চাষিদের খামার...
রাত্রি তুমি মন ক্ষেতের বাবরি দোলানো স্নিগ্ধা....
রাত্রি তুমি উৎকণ্ঠিত হালকা হাওয়া বদল...
রাত্রি তুমি চির অশান্ত প্রকৃতির শীতলতম অধ্যায়...
কামিনীর সোপান... বিমর্ষের নীরবতা সেই রাত্রি...
অতঃপর??? আজ রাত বড্ড ছোট্ট সুদূর আকাশ পানে উড়াল সূর্য দেখার সময় ঘনিয়ে এলো... সেই কুসুমদোলার আভা....






অদিতি চক্রবর্তী ______
উন্নয়ন আজ বোঝা হয়েছে সকলের মাথায়,
বাঁচার উপায় নাকি শুধু রং নীল-সাদায়।
আঙুল মুখে থাকায় শ্রেয়, নইলে হবে ছবি আঁকা,
উড়ালপুল দিয়ে শুধু যাইবে সাইকেলের চাকা।
দোষের ভাগীদার সব দশ চাকার বড় যন্ত্র,
সমর্থন করিল সাথে থমকে যাওয়া, কাজ মেট্রো।
সিংহাসন রাখতে ধরে মেতেছে ধ্বংসের খেলায়,
অট্টালিকার ওই ছোট্ট চড়ুই আজ বিলুপ্তপ্রায়।।

               দূর্বিসহ/অয়ন কর্মকার
মৃত্যু
-----------
ঋতুপর্ণা ব‍্যানার্জী
১৪/০৯/১৮

চেয়েছিলাম সুউচ্চের সিঁড়ি ভাঙতে
চন্দন কাঠের সুগন্ধী ধোঁয়ায় উড়ে যেতে যেতে ভাবি অচিন আগামীকে
দেখি রইল না তো কিছুই শুধু একাকীত্ব ছাড়া

তাই তো মৃত‍্যুকে বলি-
মৃত্যু! সকল সময়ের অশ্রু বিন্দু সাগর করে রেখেছি বুকে
ভিজিয়ে যাবো শেষবারের মত

সমস্ত জীবন বসে আছি অহল‍্যা হয়ে তোমারই প্রতীক্ষায়
শৈশবে গ্রাস করেছিল অস্পষ্টতা
তাই অপেক্ষার শুরু কৈশোর থেকে
এবার বার্ধ‍ক‍্য ছুঁয়েছে যৌবনের উত্তাল নদী
থমকে গেছে মোহনার দ্বারে এসে।

দেহ...কত সুন্দর তুমি!
দেখেছি তোমাকে অনেক রূপে
প্রাণের শুদ্ধ প্রকাশে,
এত কাব্য এত ভাষা
থেমে থাকেনি নিতান্তই নারীর শরীর
হিসেবে
তবু তোমাকে দেখেছি দায়হীন অশ্লীলতার দায়ে

আজ অখণ্ড অবসর
অজস্র পলির ভারে স্থবির হয়েছো তুমি
মৃত্যু এসেছে নিভন্ত দীপের আলোয়
এসেছে যেন দুদণ্ড অবকাশ পেয়ে
চোখ বুলিয়ে নিয়ে যাবে সমস্ত জমা খরচের পাতার হিসেবে!!
ধুলোর শহর
--মধুমিতা নস্কর

তোমার আমার এই ধোঁয়াশা জগতে ধুলোদের অবাধ প্রবেশ,
তবু জোনাকি মানুষটি বিতাড়িত,আঁধারে আজও হাতড়ে চলে তার ক্ষুদ্র নিবেশ।
এ পৃথিবীর বিষন্ন ধোঁয়াশায় মিশে গেছো তুমি,
কিন্তু আবার ফিরে পেতে চাই তোমায়,বিষাদগ্রস্ত আকাশ আর আমি।
গাছেদের রুক্ষ কেশাগ্রের গোড়ায় আজ পুড়ছে অনল,
কাল সমস্ত আদ্র শহরের শরীরে লাগতে পারে দাবানল।
দেখো ঝমঝম আগুনে পুড়ছে শহর,পুড়ছে মানুষ মুখোশ!!

ধার্মিক বকও খুন হয রাজপথে!
লাল রক্ত লেগে থাকে জ্বলন্ত মানুষের চিবুক আর কাঁধে।
মায়াবিনী হরিণ ভোলাতে আসে শহর,ঘরে ঘরে
শহর তবুও জ্বলছে তার নিস্পলক মায়াবী চোখে।
অহেতুক যানজট শহরের শীরায় শীরায়,
ডানা মেলে সংকেত দৌড়ায় হাঁসের ডানায়।
বিষধর সাপের মণি শহরের শেষ প্রান্তের ল্যমপোষ্টে বাঁধা,
চারপাশে অসংখ্য ধার্মিক,শুধু তাকেই লুফে নেওয়ার প্রচেষ্টা।
উটের খুরের বালি,শহরের ভীতে অনবরত মিশছে,
'সুযোগে সদ্ব্যবহার',ধার্মিকের বুকেও দেখো পেন্ডুলাম ঝুলছে।

ছিপ ফেলে শহর, উঠে আসে রঙিন মাছ,
টোপ 'নাগরিক' আজ সৎভাই,তার পরণে বৃহন্নলা সাজ।
মমি পোপ দের ভিড়ে হারায় আলো তার প্রতিক,
অসময়ে চিনে ওঠা ভার সব শবের গতিক।
রাজহাঁস পাপী,শরীর গলা ছিঁড়ে দেয় গিলোটিন,
পতিতার ঘরে ঘোড়ার চোখও দেখো আজ টিমটিম।

তবু ধুলোবালি শহরে,মেঘময় আকাশে ফিরে এসো তুমি,,
অপেক্ষায় করুন-বিষাদ,চারমিনারের চতুষ্কোন আর আমি।।
ধুনোর গন্ধে উনি আসছেন
সেখ আমিমোন ইসলাম

শুকিয়ে যাওয়া চোখের জল;
     ওদের কষ্ট পাইনি ফল।
        শত চেষ্টায় অসফল
                        আমি।

টাকা টাকা― পকেট ফাঁকা
গায়ের জোরেই ঘুরছে চাকা।
     সবকটা ব্যাংকই ফাঁকা
               লুট চলছেই।

তার উপর ধুনোর গন্ধ― উনি আসছেন,
   সবজিগুলোয় পরসপাথর ছোঁয়াচ্ছেন।
                  উনি আবার আসছেন;
                           বাড়ছে খিদে।

   সাত'শ টাকায় বালির ট্রাক;
    পুজোয় ফ্ল্যাট পঁচিশ লাখ।
      শপিং মলে ফ্যাশন খুব;
       মিডল ক্লাস মারছে ডুব।
পুজোতে ছাড়, জামা কম দামী
   পকেট খালি, পাইনি আমি।
   ফুটপাত ধরেই হাঁটতে হচ্ছে,
         মানিব্যাগ খসে পড়ছে।
 
হাট-বাজারে সোনা রূপো,
    কেনা বেচা হচ্ছে খুব;
  ঘরের ভিতর মিডলক্লাস
  মজুত রাখা জার স্বভাব।
    দামের উপর দাবানল,
 নেই, ফায়ারব্রিগেড নেই।
চোরাশিকারী হল ভ্যানিশ
  পুলিশ ধরতে গেল যেই।

প্রাইজেরই দাম,
            থিম চলছে;
            পুজো হচ্ছে।
ত্রিশূল সরিয়ে
             রেখে পাশে
             বন্দুক হাসে।
             গোলাপ কাশে,
বদলাচ্ছে।
অসুরও সুযোগ বুঝে,
             কোট পড়ে,
             বিড়ি ধরে,
বেশ টানছে।

             তাও,
উনি আসছেন; হ্যাঁ আসছেন।
খ্রিস্টীয় চুমু
অভিজিৎ দাসকর্মকার

জামার বোতাম খুললে
চেক জামার ছাপ লাগা পাঁজরে
                         সন্ন্যাস শব্দ আছড়ে পড়লো
    ইতিবাচক দাম্পত্য কলায়
       বৃত্তের বিন্দুতে সাহিত্যবৃত্তি -
   
       ফার্নিশ মেঝে
       ফ্রাই প্যানে সাম্রাজ্যবাদ,আর-
মেঝেতে শুয়ে আছে বিকলাঙ্গ প্রেমিক
        ফেসবুকাব্দে প্রেমিকা খ্রিস্টীয় চুমু দেয়
                  সুখের কাপে বিকেলের চা আর
               অর্থবর্ষ হাতে লাল মুখো প্রেমিক।




।। আম্পায়ারদের ইজেল বক্স।।
        ।।  কার্তিক  ঢক্ ।।
হুইস্কি গন্ধের ট্রাউজারটি তার ইনার       শুকোতে দ্যায় রোদে।
হলুদ রঙের পুংকেশরটি আন্দারকি বাত
ঝুলিয়ে রাখে আকাশের হূকে --

কাক দেখছে,শালিক দেখছে-
ক্যাবলা চোখে দেখছে চড়ুই ও ...

মেঘ উড়ে যেতে যেতে
ঝরিয়ে দিচ্ছে তার ইনবক্সের শব্দ গুচ্ছ।
বৃষ্টিকে চেটে খাচ্ছে  লিপস্টিক-রসে ভেজা
ডালিম-ঠোট...

ভিজে বারুদ দোল খায় হ্যাঙ্গারে...
আয়না কুড়িয়ে রাখে খন্ড-চিত্র--
ম্যাগনিফাইন গ্লাসের নীচে ফিস্ ফিস্ জল।

পরকিয়ার বাইশ-গজে কে যে সেঞ্চুরি  হাকায়
আর কার উড়ে যায় মিড-উইকেট !
এখন দেখবো আম্পায়ারদের ইজেল-বক্সে
লাইক -- কমেন্ট --শেয়ার করা লম্ফবিদ
বল গুলিকে...

বৃহস্পতিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৮

বহুরূপী

        সুমিত বিশ্বাস

কোন মানুষ দেখি আমি পৃথিবীতে
মানুষ মানুষ মারে দিনে রাতে৷
রক্ত নিয়ে খেলছে হোলী
মুখে তাদের শুদ্ধ বুলি৷
রাস্তা ঘাটে চালায় গুলি
উড়িয়ে দিচ্ছে জনগণের খুলি৷
দিনের বেলায় সভ্য তারা
রাতে তাদের হাতে খাড়া৷
স্কুল কলেজে ছাত্র বেশে
ফন্দি নিয়ে তারা মিশে৷
স্বার্থ শেষে কেটে পরে
ছাত্র কে পুলিশ ধরে৷
ছাত্র শিক্ষক সমস্যা করতে আপোস
গুলি খেয়ে মরল তাপস৷
হায় রে আমার দেশ
তোর বহুরূপী বেশ৷
-: সুখ সমাহার :-

"আমার অঙ্গুলীহেলানে বিপাকে তোমার যৌনদ্বার"
"তোমার ঘন শ্বাস প্রশ্বাসের অনবরত অবনমন উত্তেজনায় থরহরিকম্প"
"তোমার বিগলিত কামরসপূর্ণ চেতনা
শিহরিত যৌনতার আবরণে আচ্ছাদিত"
"তোমার পরিমিত সুখনির্যাস কামসূত্রের বন্ধনে আবদ্ধ"
"তোমার অনন্ত সুখের অপর্যাপ্ত সমাহার
জাগ্রত ভাবসম্মিলিত উদ্ভুত কঠিন
সীমারেখা
চারিত্রিক স্বাধীনতা খর্ব করে" ।
আকাশ

একমুঠো রোদ ছড়িয়ে দিও যেন,
আমার আকাশে মেঘলা বাদল দিনে,

এখন আকাশে চাঁদের বড় অভাব,
তুমি না হয় সূর্যকে নিও কিনে।

তোমার আকাশে তারাদের হুড়োহুড়ি,
তুমিতো আবার জোৎস্না ভালোবাসো,

মেঘলা বাদল আমার আকাশখানি,
পারলে চাঁদের জোৎস্না নিয়ে এসো।

।।  চঞ্চল ।।
মায়া
-মধুমিতা নস্কর

আমার অগোছালো এলোকেশী চুল,
তোমার পিছুটান বৃষ্টি জলরেখা ভুল,
নিশ্বাসে মেশে সুখটান।
আমার পুষ্টিহীন একমাস তেল
না খাওয়া চুলের বাঁধনে
তোমার হাত পা আবদ্ধ অদৃশ্য মায়ায়,
বাতাসে ছড়িয়ে মৃত্যুবাণ।
অলীক যন্ত্রণায় ছটফটে তোমার জ্বলন্ত দুচোখ
গুপ্তস্থান থেকে আজ সরানোর দিন
ব্যস্ত আমি,
দৈবাৎ যদি বাঁধন ছিঁড়ে যায়!
পালাবে কি?
পারবেনা।
পালাতে পারবেনা কখনও এ মায়ার বাঁধন ছেড়ে।
অশ্রুপ্রপাতে করাব ধারাস্নান।
চারিদিকে নিশ্চিদ্র দেওয়াল,অন্ধের অন্ধকার
অন্ধকূপে আবদ্ধ।
ঠিক আমার চুলের মতোই ভুলভুলাইয়া
বেরতে গেলেই জট পাকাবে,
জড়িয়ে পড়বে আরও।
তারচেয়ে কিছুকাল তোমার অন্ধ থাকাই ভালো।
রাঙামাটি
অভিজিৎ দাসকর্মকার

রাঙামাটির ধ্রূপদী ক্ষুদায় পুটুসফুল
উলঙ্গ বিড়াবতির কোলে শারদীয় নক্সিবালি
রবিবার সাদা সকাল
         কাজ সারে উঠোন ছায়ায়
লেবু তলার আঘ্রানে
        অহল্যা নামের পাথরটি ঝিনুকের কোলে
   দুপুরের যোনপুরি রাগ আঁকে।

ষষ্ঠীতলার অশোকের বিকেলে
     টেরাকোটা শরীরে আগমনীর ঘরানা
               চিৎ হয়ে শুয়ে থাকা
       পাঁজরে এক খাবলা আলাপি মমি
নৈঋতি সন্ধ্যায় পুরিয়া মাখে বর্গি হারা মেয়েটি
      ঘটমান সমাপিকার ব্যাকরণ লেখে
     তেওড়া বাঁধা পায়ে দ্বীমাত্রার বনবিবি বাৎসল্য নূপুরের শব্দকোষে নিয়ে এগিয়ে চলে
কির্তনীয়ার করতালি গান।

১ টি বৈধব্য সান-পাথরের গায়ে
অভিজিৎ দাসকর্মকার

১টি বনসাই মানিপ্লান্ট গাছের পাশটিতে
২টো প্লাস্টিক পাতা
২য় ফুলটি শালুকপাতার উপরি তলের বুদবুদে জলজকোষ পড়ে
XY ক্রোমোজোমে পুরুষ-নারীর হাত ধরাধরি পড়ে
ভালদারামার গোল পড়ে, আর-
||
১ম কদমফুল হয়ে
সাদা-কালো উত্তম-সুচিত্রা লেখে
'নীড় ছোট ক্ষতি নেই' শোনে-
কোমরে আদর জড়ানো বারান্দা বলে আর -
সামনে এসে দাঁড়ায় চাঁদ
গায়ে প্রুসিয়ান রঙের জ্যোৎস্নাকলা
||
চাঁদকলা আর সুর্যকোষের মেঘমিলনে
বিশমিল্লাহর সানাই বেতার তরঙ্গের দরজা খোলে
১ টি বাদাম গাছ বাড়িয়ে দিয়েছে বর্ষাসকালের রান্নাঘর  আর
মেঘমল্লারের আলাপী নদী
তাতে
||
১টি ডিঙি নৌকা তারই অব্যক্ত অবয়ব রেখেছে
বাৎসল্যময়ী ১ টি বৈধব্য সান-পাথরের গায়ে...
আমার শহর
             -- স্নেহা

এই শহরে ক্লান্ত বিকেল বেলায় প্রেমিকার কোলে চোখ বুজে রাখে 'পাশে আছি'-র নীরব প্রতিশ্রুতি। এই শহরে পড়তে আসা একলা মেয়ের গায়ে হাত পৌঁছয় না মাঝবয়সী মাস্টারের, তাকে আগলে রাখে মেয়ের মতো। এই শহরে ব্যস্ত হওয়া ট্রেনের চাপেও জায়গা পায় গর্ভবতী। এই শহরে মাতাল স্বামী শীতের রাতে একটা কাঁথা, কুকরে যাওয়া সাবালিকার গায়ে টেনে দেয়। এই শহরে চালচুলোহীন কবিও আজ পরিশ্রমী,মেয়ের জন্যে। এই শহর আমার মনের মতো,আমার মায়ের মতো। আমি দেখেছি অর্ধনগ্ন মা শীতের রাতে বুকের কাপড় দিয়ে আগলে রাখে সন্তান কে।

শনিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৮

| অ্যাস্ট্রের ছাই |
-----------------সুদীপ্ত সেন(ডট.পেন)

আমি চুরুটের কাছে প্রতিশ্রুতি বদ্ধ
সে বলেছে এটা খেলে তুমি কবিতা লিখতে পারবে দু-কলম, আমিও চেষ্টা করলাম।

আমি ছিলিমের কাছে বারবার জেদ করেছি ঘুমোনোর,
ছিলিম আমায় দিয়েছিলো একবার 'ঘুম' ক্লান্তিহীন পাগলা করা ঘুম।
একটা সবুজ রঙের বমি করা হয়েছিলো খাটের নীচে,সেখানে ব্যাক্টেরিয়া আর মাছি বসেছিল।

আমি লোকাল ট্রেনের ভিড়ে ঘেমে যাওয়া টি-শার্ট হোস্টেলের তারে ঝুলিয়ে দিয়েছিলাম, হাওয়াই শুকলো।

আমি আজাহারুলের চোখে ঘন্টা আর আজানের শব্দকে মেলাবার চেষ্টা করেছি বহুবার কিন্তু কেমন একটা দূরত্ব আতর আর চন্দনকে চিহ্নিত করেছে.....

আমি ক্লান্ত হয়েছি আর ব্যর্থ হয়ে ফিরে গেছি সিগারেটের কাছে
জ্বলে গেল কিন্তু কিছু লাভ হয়নি, ছাই পেল অ্যাস্ট্রে।

শুক্রবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৮

"আসছে পুজো" -- গানের রিভিউ কলম




 আসছে পুজো, হুম পুজো তো আসছেই আর পুজো তো আসবেই। আমরা দেখতে পাচ্ছি তার সাজগোজও শুরু হয়ে গেছে শহর থেকে গ্রাম সবেতেই। পুজো'র আগমনী বার্তা পাঠিয়ে দিয়েছে মহালয়া, কাশের হওয়া,  শরতের মেঘ, বোধনের জলঘট, শিউলির গন্ধগুলো আর এখন পুজোর ঠিক মুখোমুখি সময়ে কেউ আবার নতুন করে বলল "আসছে পুজো"।



হ্যাঁ ঠিকই ধরেছ, এখানে উতথ্য ঘোষ'র লেখা গান "আসছে পুজো"র কথায় বলছি, যেটা গেয়েছে অরিত্রম দাস ।

আর অরিত্রম দাসের কন্ঠে এই গান এক নতুন আমেজের কথা বলে, যা প্রত্যেক প্রেমিক-প্রেমিকা তো বটেই এবং তাদের নাছোড়বান্দা দাদা / দিদিদের মানতে শিখিয়েছি যে বোন / ভাই ঠিক আছে গুরু  করো,প্রেম ভালো জিনিস, আর যেটা আমি করছি সেটা কেন তুই করবিনা?

গোটা গল্পটাও এর ছন্দ বহন করে শুরু থেকে শেষ অবধি যার ডিরেকশন দিয়েছে ডিরেক্টর সায়ন্তন মন্ডল।

হুম সত্যিই ৮ মাস পর ঘরে ফিরে উমা তো চাইবেই তার প্রেমিক তাকে সময় দিক আফটারওল ৮ মাস না ছেড়ে থাকাটা অনেক বেশিই সময়।
আবার অন্যদিকে ক্রাশ খেলে বাবা পাঞ্জা কেন সবেতেই তুমি হেরে যাবে।
সে যাগ্গে উমার ওই হাসিখানা যেন দেখার মতো ছিল আর আরিত্রম প্রেমিক হিসেব ভীষণ রোমান্টিক এবং দায়িত্বশীল, তা না হলে ওরমভাবে চুপিচুপি পেছন থেকে এসে তাকে গিফট করতে পারে যা তার প্রেমিকার হাসি ফোটায়। এটাই তো উচিত প্রেম মানেই একটা সারপ্রাইজ তো থাকবেই।
উমা তার দাদার হোয়াটস্ অ্যাপ স্ট্যাটাস দেখে যেটা বুঝেছিল পরে দেখা গেল ঠিক তাই সায়ন্তন আর অদিতি ভীষণ প্রেমে বন্দি না'তো পাঞ্জাবি পরা প্রথম ছবিটা সায়ন্তন দেবে কেন অদিতিকে?



এ গেল প্রেমের হিসেব, কতকি দেখানো হলো পুজো আসা মেখে মেখে, সেল্ফিও তুললো মা'কে সঙ্গে নিয়ে অদিতি ও সায়ন্তন।



পুড়ো গ্রাফিক্সটা এক অন্যমাত্রা দিয়েছে ভিডিওটির আর গ্রাফিক্সটা করেছে সৃজন কুমার পাল।

এ'তো গেল গান আর গানের আবহাওয়া তা আবহাওয়া গরম, ঠান্ডা নাকি নাতিশীতোষ্ণ সেটা বোঝা গেল লাস্ট লাইনে।
ভিডিওর লাস্টে দেখানো হলো একটা দাদা কীভাবে তার বোনের প্রেমিককে বুকে জড়িয়ে নেয় আর বলে GO AHEAD তার পাশাপাশি দাদার প্রেমিকা বোনের কাছে যেন বন্ধু হয়ে যায় আচমকায়।

সবশেষে এটাই বলতে পারি এ গান দেখার পর কিছুজন হয়তো সে পথেই হাঁটতে রাজি হবে।
আর পুজো মানেই প্রেম আর পুজোয় প্রেম মানেই অনুভূতির নতুন রেশ, একলা পাওয়ার তাগিদ যার উত্তেজনার পারদ ছুঁয়ে আনন্দে মাততে চাইবে গোটা দেশ তথা দেশের প্রেমক-প্রেমিকাগণ আর এই জন্য দুর্গা পুজো কিন্তু ভীষনই দরকার।




রবিবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৮

কাশফুলের গন্ধে এলো 'উমা'

কাশ ফুলের গন্ধে এলো "উমা"





              আমি কোন অবস্থাতেই বাচিক শিল্পী নই
-----------------------------------------------------------------------------

জলফড়িং-র পক্ষ থেকে আপনাকে প্রথমেই জানাই নমস্কার।
-->> প্রতি নমস্কার!  🙏

১.)বাচিক শিল্পী জয়িতা ভট্টাচার্য, প্রথমেই যদি বলি কত নম্বর দেবে নিজের কন্ঠ কে?
উ:- প্রথমেই বলি, বাচিক শিল্পের পরিধি অনেক বড়। আমি তার একটা ছোট্ট অংশ চর্চা করি। তাই আমি কোন অবস্থাতেই বাচিক শিল্পী নই।
নম্বরের কথায় বলি, আগে আমার চোখকে নম্বর দিতে হবে কারণ ওটা দিয়ে লেখাটা পড়ি, মন কে দিতে হবে কারণ লেখাটা মনে যাপন করি, বোধ কে দিতে হবে কারণ ওখানেই অনুভূতির বাসা, তারপর তো আসে কন্ঠ।
তাছাড়া, আমি আমার কন্ঠকে নম্বর দেবার কেউ নই। সে অধিকার আমার শ্রোতাদের।

২.) কত বছর বয়স থেকে আবৃত্তি করো?
উ:- ঠিক মনে পড়েনা। অনেক ছোট থেকেই।

৩.) এই যে শিল্পী জীবন এটা কবে থেকে শুরু হলো আর কীভাবে হলো?
উ:- শিল্পী কিনা জানি না। আবৃত্তি চর্চা করি। কারন আবৃত্তি করতে ভালোবাসি। মাঝে আমার একটা ১৪ বছরের বনবাস ছিলো। সেই বনবাস কাটিয়ে আবার আবৃত্তিতে ফিরতে পেরেছি। এটাই অনেক।

৪.) বাচিক শিল্পী  জয়িতা ভট্টাচার্য  প্রিয় নাকি শুধু জয়িতা ভট্টাচার্য প্রিয়?
উ:- আগেই বলেছি, আমি শুধু আবৃত্তি চর্চা করি। শিল্পী জয়িতা আর শুধু জয়িতা কয়েনের এপিঠ ওপিঠ। একজনকে ছাড়া অন্যজন অচল।

৫.) বৃষ্টিতে ভিজতে ভালো লাগে নাকি মেঘ চমকানো দেখতে ভালো লাগে?
উ:- দুটোই ভালো লাগে। একটি ভালো লাগলে অন্যটি ভালো লাগা যাবে না, এমন কোন কথা তো নেই।

৬.) তোমার থেকে ভালো আবৃত্তি করে এমন শিল্পীর নাম জানতে চাই শিল্পী জয়িতা নয় শুধু জয়িতার ঠোঁট থেকে?
উ:- প্রজাপতি ব্রহ্মার মুখ নিঃসৃত প্রথম শব্দ "নাদ", যদিও নিজে কানে শুনিনি তবু জানি তাঁর চেয়ে ভালো কেউ উচ্চারণ করতে পারেন না, কারণ প্রথম সবকিছু প্রথমই হয়।

--------------------------------------------------------------------------



                  চিনিও ভালো গুড়ও ভালো
------------------------------------------------------------------------

৭.) আচ্ছা আবৃত্তির জন্য আবহ সঙ্গীতের প্রয়োজন কতটা?
উ:- নিশ্চয়ই প্রয়োজন আছে। তবে সেটা পরিপূরক হতে হবে। মনে রাখতে হবে, আবৃত্তির জন্য আবহ। আবহ আবৃত্তিকে সাজিয়ে তোলে। কিছু একটা বাজনা পিছনে চললেই হয় না।

একই সাথে এটাও বলি, আমি আবহ ছাড়াও আবৃত্তি করে থাকি।

৮.) এখন পর্যন্ত পাওয়া পুরস্কার বা সম্মান?
উ:- হাততালি আর প্রচুর মানুষের ভালোবাসা।

৯.) শুধু মাত্র একজন কবিরই লেখা  আবৃত্তি কেন করে জয়িতা ম্যাডাম?
উ:- আমার মনে হয়  The Drama Queen এর এপিসোডগুলো ঠিক মতো দেখা হয় নি আপনার। সেখানে অনেক কবির কবিতাই আছে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এই বছর (২০১৮) শুধু কবি অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায় এর লেখাই পড়ব। এই বছরে এখনো পর্যন্ত পড়া প্রতিটি কবিতা নিজ নিজ ক্ষেত্রে আলাদা। আর আমি নিশ্চিত, যদি কবিতা এক রেখে, কবির নাম বিভিন্ন হতো, তাহলে এই প্রশ্নই উঠত না। আমার প্রশ্ন, আমি কবিতা আবৃত্তি করবো নাকি কবি নিয়ে চিন্তিত হবো? আমি কন্টেন্ট দেখবো, ভ্যারাইটি দেখবো। এক কবির লেখাতেই যদি সব রকমের ইমোশান পাই, তবে আসুবিধাটা কোথায়?

১০.)আচ্ছা আমরা দেখি প্রত্যেকটা ভিডিও'র শেষে একজন বয়স্ক মতো মহিলার ছবি,ওই ছবিটি কার জানতে পারি?
উ:- হাহাহাহাহ...অনেকদিন ড্রামা কুইনের লাস্ট স্লাইডের ছবিটা লক্ষ্য করেননি বুঝতে পারছি, এখন তাকিয়ে দেখবেন ব্রান্ড নিউ একদম।

১১.) রবীন্দ্র সঙ্গীত পছন্দ নাকি বাংলা ব্যান্ড?
উ:- কী বলি! চিনিও ভালো গুড়ও ভালো।

১২.)প্রশ্ন করি যদি আবৃত্তি করে কী পাও?
উ:- মুক্তি।

১৩.) কখনও মনে হয়না যে সুযোগ আরও কিছুটা হলে ভালো হতো?
উ:- মানুষ যতো বড় হয় তার চাহিদা মানে ভিক্ষার পাত্রটা আরো বড় হতে থাকে। সুতরাং এ ভালোর কোন শেষ নেই।

১৪.) যদি বলি ব্রততী ম্যাডাম তোমার চেয়ে ভালো আবৃত্তি করে তো তোমার কন্ঠ শুনব না, কী বলবে?
উ:- দেখুন, আমি তো তুলনাতে বিশ্বাসী নই। তবে জানেন তো যেমন এই সময়েও বি এম ডাব্লু, হুন্ডাই, মাহিন্দ্রা, টাটা, মারুতি ইত্যাদি সব ধরণের গাড়ি কিন্তু পাওয়া যায়, লোকে পছন্দমতো  কেনেন। তেমনই মানুষের মন যদি স্পর্শ করতে পারি তবে মানুষ নিশ্চয়ই শুনবেন।

১৫.) কোনো একদিন দেখা গেল যে, কেউ  তোমায় হুমকি দিল, বলল আবৃত্তি করা যাবে না, কী করবে?
উ:- যুদ্ধ।

------------------------------------------------------------------------------


শরীরে অক্সিজেন নেবার কোন নির্দিষ্ট সময়কাল থাকে নাকি!
-----------------------------------------------------------------------------------------

১৬.) এতো মানুষের ভালোবাসা, মুগ্ধতা,  প্রাপ্তি  ইত্যাদি কেমন লাগে?
উ:- খুব ভালো লাগে। নিজেকে স্পেশাল মনে হয়। সেই সঙ্গে কিছু দায়িত্বও অনুভব করি।

১৭.) নতুন যারা আবৃত্তি করছে তাদের জন্য কী বলবে?
উ:-  কবিতাকে জীবনের সাথে মিশিয়ে নেওয়া দরকার। কবিতা যাপন করা জরুরি।

১৮.) তোমার জীবনে ঘটা সেরা একটা মজার ঘটনা?
উ:- মজার ঘটনা অনেক আছে। তবে এই মুহূর্তে যেটা সবচেয়ে বেশী মজার লেগেছে তা হলো আপনার করা ১০ নম্বর প্রশ্নটি। হাহাহাহাহা!

১৯.) আবৃত্তি করার কী কোনো সময় হয়?
উ:- বাঙালির চা প্রীতির মতোই আমার কাছে আমার আবৃত্তি। কোন নির্দিষ্ট সময় নেই। শরীরে অক্সিজেন নেবার কোন নির্দিষ্ট সময়কাল থাকে নাকি!

২০.)কোনো লেখা আবৃত্তি করতে গেলে জয়িতা কত বার পড়ে লেখাটা ?
উ:- ইনবক্সে প্রচুর মানুষ বলেন, এটা পড়ে দিন, ওটা পড়তে পারেন, আরো অন্য অনেক কিছু চেষ্টা করা উচিত, আরো অনেক কবি নিয়ে কাজ করলে আমার ভালো হবে, ইত্যাদি নানান রকমের প্রলোভন থাকার পরেও আমি বিশ্বাস করি, মুখে পড়ার থেকেও মনে পড়াটা বেশী জরুরি। যেটা মন ছুঁলো সেটাই পড়ি। সেটা যদি হয়, তারপর সবটুকু। হয়তো একবার। হয়তো একশোবার।


              | জয়িতার পছন্দ জানবো |

প্রিয় খাবার:- আমি একেবারেই ভোজন বিলাসী নই। খাবার খাওয়াটা জরুরি তাই খাই।

প্রিয় পোশাক:- যে পোশাকে কম্ফর্টেবেল। আমি অবশ্য শাড়িতেই নিজেকে বেশী চিনতে পারি।

প্রিয়ঋতু:- এক এক ঋতুর রং রস গন্ধ এক এক রকম। আমার সব কিছুই ভালো লাগে।

প্রিয় রং:- সাদা

প্রিয় শহর :- কলকাতা

প্রিয় মানুষ:- যাঁর মধ্যে নিজেকে দেখতে পাই।

প্রিয় বাংলা গায়িকা:- অনেকের গান ভালো লাগে। কোন একজন গায়িকার নাম বলতে পারবো না।

প্রিয় কবি (বেনামি) :- বেনামী সম্পত্তি শুনেছি। তবে বেনামী কবি শুনিনি। আর তাছাড়া, এক এক কবির এক এক রকমের কবিতা ভালো লাগে। কি করে একজনের নাম বলি বলুন তো!

প্রিয় বাংলা সিনেমা:- অনেক সিনেমা আছে।

প্রিয় বাংলা অভিনেতা:- এক্ষেত্রেও একই কথা বলবো। কোন একজন বিশেষ কেউ নন। যাঁর অভিনয় চরিত্রটিকে জাস্টিফাই করে, আমার তার অভিনয়ই ভালো লাগে।

জয়িতার চোখে কবি শ্রীজাত:- এতজন কবি থাকতে, আলাদা করে শুধু শ্রীজাত কেন? যাঁরা স্বনাম ধন্য, তাঁরা নিজ নিজ গুণে মানুষের মন জয় করেছেন। সেখানে আমার মতো নগন্য মনুষের মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন।

👀[জয়িতার কাছে রবীন্দ্রনাথ ঠিক কিরকম]
--->>> জীবন। জীবনকে নতুন করে দেখার নাম রবীন্দ্রনাথ।


==================================
প্রশ্নে সুদীপ্ত সেন (ডট.পেন)
জয়িতা ম্যাডামের সাথে কথা বলে আমি মুগ্ধ,
অনেক গভীর তিঁনি।

কাশফুলের গন্ধে এলো "উমা"

জলফড়িং ওয়েব ম্যাগের পক্ষ থেকে আপনাকে প্রথমেই জানাই নমস্কার।
-->>

১.) ছোটো থেকেই গানের সাথে বড়ো হওয়া।  ছোটোতেই কী ভেবেছিলেন  আজকের   শুভাশিস মুখোপাধ্যায়কে ?

উ:- গান নিয়েই জীবন কাটাতে চেয়েছি ছোট থেকেই।তবে গান যে একটা তুমুল পরিশ্রমের শিল্প সেটা বুঝেছি অনেক পরে।আজ তারই ফল পাচ্ছি এ বয়সে এসে।

২.) কত বছর বয়স থেকে গান বাজনার শুরু?

উ:- ২ বছর।


৩.) গান ছাড়াও অন্যকোনো পেশা কী আছে?

উ:- না।তবে নেশা আছে।লেখার ও ছবি আঁকার।

৪.) এতদিন পর্যন্ত ক'টা অ্যালবাম হয়েছে আপনার ?

উ:-একটাও নয়।

৫.) মূলত শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী, এছাড়া আর কী ভালো লাগে?

উ:- যে কোনো ধরণের ভালো গানই, যা শান্তি দেয় মনকে, ভালোবাসি।

----------------------------------------------------------------------------
    

     যথেষ্ট বেশি।তবে শিক্ষিত শ্রোতা খুব কম
---------------------------------------------------------------------------

৬.) শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে নিজেকে পছন্দ করেন কতটা?

উ:- যতটা পছন্দ করলে গানটা ভেতরকে শান্তি দেয়।

৭.) এখন শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শোনা মানুষের সংখ্যা কতখানি?

উ:- যথেষ্ট বেশি।তবে শিক্ষিত শ্রোতা খুব কম।

৮.) কখনও গান, কখনও তানপুরা কখনওবা দু-চার লাইনে কথা প্রকাশ। তাহলে কী বলতে পারি শুভাশিস একজন কবিও?

উ:-মন যখন যাকে মাধ্যম করে,তখন সে'ই প্রকাশ পায়।তবে নিজেকে কবি ভাবার স্পর্ধা নেই আমার।

৯.) এখন অবধি পাওয়া পুরস্কার?  প্রথমের  উপলব্ধি কেমন ছিল?

উ:-পুরস্কার অনেক পেয়েছি।সুরমনি, আচার্য গিরিজাশংকর চক্রবর্তী পুরস্কার, বিজন ঘোষ দস্তিদার স্বর্নপদক।প্রথম পেয়েছিলাম যদুভট্ট পুরস্কার। নিয়েছিলাম গুরু মানস চক্রবর্তীর হাত থেকে। খুবই রোমাঞ্চকর সে অনুভুতি।

১০.) আচ্ছা এরকম মনে হয় কখনও যে, মাঝে মাঝে আধুনিক কিছু গায় যেমন ধরুন পাগলু বা ড্যাডিকে তোর আমি শ্বশুর বানাবো?
👏(মজা করলাম কিন্তু )👏

উ:-দুটোই শুনিনি। তাই বলা মুশকিল। তবে এটুকু ভাবি,যে কোনো গান বানানোই একটা বিশেষ ক্ষমতা ও যোগ্যতার ব্যাপার।কে কোনটা বানিয়ে আনন্দ পাবেন,একান্তই তার ব্যাপার।

--------------------------------------------------------------------------------------------



কিছুই দিতে পারিনি।চেষ্টা করছি সুর লাগাবার।শিখছি প্রতিনিয়ত।
-----------------------------------------------------------------------------------------------

১১.) অরিজিৎ সিং বা অনুপম রায়ের মধ্যে থেকে যদি বলি নির্বাচন করে নিন ১০ এর মধ্যে ৯ দেওয়ার জন্য, কাকে দেবেন?

উ:-অরিজিৎ সিং

১২.) পুজোতে আপনার গান বেরল,বেরল জয় দার গান তারপর নচিকেতা দার, জানি সব গানই আলাদা ভাবধারার তাও বলব কী মনে হয় কার গান মানুষ বেশি চায়বে?

উ:- আমার গানের থেকে এদের গান অনেক বেশি চাইবে মানুষ। এরা এ জগতে প্রথিতযশা ও অভিজ্ঞতায় অনেক বড় আমার চেয়ে।এটুকু বলতে পারি।

১৩.) কেমন ভাবে কাটে ছুটির দিনগুলো?

উ:- গান শুনে,ভালো খাওয়াদাওয়া করে।সৃষ্টি শীলতায়।

১৪.) সঙ্গীতকে কতটা কী দিয়েছেন এখন অবধি, যাতে করে সঙ্গীত আপনাকে মনে রাখবে?

উ:-কিছুই দিতে পারিনি।চেষ্টা করছি সুর লাগাবার।শিখছি প্রতিনিয়ত।

১৫.) প্রশ্ন করি যদি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত কী দিলো আপনাকে, কী বলবেন শুভাশিস মুখোপাধ্যায়?

উ:- ভালোবাসার আশ্রয়। বিশ্বাসের অবলম্বন। নিঃশ্বাসের আয়ু।

১৬.) ইমন প্রিয় নাকি ভৈরব?

উ:-দুটোই।তবে গাওয়া বেশী হয় ইমন।

১৭.) রাগ রেওয়াজ করার জন্য কী নির্দিষ্ট কোনো সময় হয়? (একান্ত আপনার মতামত চাই)

উ:- নিশ্চয়ই হয়।যে সময়ের রাগ অন্তত তার কাছাকাছি সময়ে সেই রাগ সাধলে সে রাগের অন্তর্নিহিত ব্যঞ্জনা উপলব্ধিতে ধরা পড়ে।

১৮.) নতুন কী উপহার পাচ্ছি আপনার থেকে?

উ:-বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী আমার রচিত নতুন মৌলিক  বাংলা গান নিয়ে আসছে সামনে।এছাড়া আমি নিজেও কিছ কাজ করবো ভাবছি, দেখা যাক কি হয় শেষপর্যন্ত।

১৯.) নতুন যারা উঠছে তাদের কী বলবেন?

উ:-সঙ্গীত কেবল বিনোদন নয়,শিক্ষা নিয়ে পরিশ্রম করে,সাধনা করে আয়ত্ত করতে হয়।এইটি মনে রেখে আজীবন সুরের অনুগত হয়ে থেকো।

২০.) ওয়েব ম্যাগ সম্পর্কে আপনার কাছে কী রকম অনুভূতি?

উ:-ভালোই তো লাগে।ঘরে বসে শুধুমাত্র একটি আঙুলের চাপেই এক বইঘরে প্রবেশ।


            ♥ | স্বাদে  শুভাশিস | ♥

প্রিয় খাবার :-কুঁচো চিংড়ি দিয়ে আলু পোস্ত,পাঁঠার মাংস, বিভিন্ন ধরনের মাছ,চাইনিজ

প্রিয় পোশাক :-পাঞ্জাবি পাজামা

প্রিয়ঋতু :- শীত

প্রিয় রং :- বাসন্তী

প্রিয় রবীন্দ্র সঙ্গীত :- তব প্রেম সুধারসে মেতেছি

প্রিয় কবি :-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নজরুল ইসলাম, শ্রীজাত

প্রিয় গায়িকা :-লতা মঙ্গেশকর, নির্মলা মিশ্র,গীতা দত্ত,সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, বেগম আখতার,শ্রীলা বন্দ্যোপাধ্যায়

প্রিয় গায়ক :-পন্ডিত মানস চক্রবর্তী, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, জগজিৎ সিং,উস্তাদ আব্দুল করিম খাঁ,পন্ডিত ভীমসেন যোশী,পন্ডিত মল্লিকার্জুন মনসুর।

প্রিয় সিনেমা :-সীমাবদ্ধ,জন অরণ্য, শাখা প্রশাখা,  শোলে,ওহ মাই গড,vertigo,গল্প হলেও সত্যি,ধন্যিমেয়ে,নায়ক,মেঘে ঢাকা তারা,একদিন প্রতিদিন

আপনার চোখে কিশোর কুমার :-
ব্যাকরণ দিয়ে যাকে বিচার করা যায়না,তেমন এক ক্ষণজন্মা শিল্পী

মায়ের জন্য একলাইন :- আমার অস্তিত্বর ধারক

দূর্গাপূজোর কোন দিনটা প্রিয় :- সপ্তমী

(😂) তানপুরা আর হারমুনিয়াম এর মধ্যে কোনটা চুরি গেলে দুঃখ পাবেন (👏)
উ:-তানপুরা


=================================
প্রশ্নে সুদীপ্ত সেন (ডট.পেন)
শুভাশিস বাবুর সাথে কথা বলে অসম্ভব ভালো লেগেছে আমার।

শনিবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৮

ডাস্টবিন
 
              ---     পল্লব


তুমি ভাবছো এতটা বৃষ্টি হলো
তবু আমায় ভেজালো না
   আমি ফুটপাতে দর করি
তবু বাকি রয়ে যায় দেনা

 এতগুলো কাঁটাতারে হাঁটলাম
তুমি ভাবছো, একটাও কী শরীরে ফুটলো না !
  তুমি কংক্রিটে রাখা অর্কিডের টব
 যাকে  অযত্ন হাতে ছুঁতে মানা

 তোমায় অামি রোজ দেখছি
যাচ্ছো হাইওয়ে ধরে হেঁটে
   ফ্লাইওভারে একটা শোরগোল উঠছে
   ছেলের দলরাও পড়ছে ফেটে

 আমায় তুমি দেখলে না তবু
দেখতে যদি মেট্রো ছেড়ে ধরো ট্রেন
  আমি একবেলার ডালভাতে খুশী
  আমার চাই না রাত্রি জাগা উত্তপ্ত ইস্ট্রোজেন

  এভাবেই দেখছি তোমায়
  আবারও দেখবো
 কখনো উত্তেজনায়, কখনো শিহরণে সিক্ত
 আমি স্নান করি রোজ ডাস্টবিনের ধারে
আর তুমি ঠিক গঙ্গার মতোই পবিত্র।


শুক্রবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৮

প্রথম চুমুক

আজ কফিকথা তে কবি 'তুষার কান্তি রায়ের' সাথে সুদীপ্ত সেন "জলফড়িং" ওয়েব ম্যাগ থেকে
================================================================

সুদীপ্তঃ-নমস্কার তুষার বাবু

কবিঃ- স্নেহের ভালোবাসা

সুদীপ্তঃ- তাহলে কথায় যাওয়া যাক

কবিঃ-কথা হোক

সুদীপ্তঃ-পুজোতে কি নতুন বই আসছে কবি তুষারের


কবিঃ-পুজোয় ঠিক নয় । সামান্য পরে । আমার 'দাহপুরুষ' উপন্যাসটি প্রকাশ করছে অভিযান প্রকাশনা

সুদীপ্তঃ- আচ্ছা ভালো খবর অগ্রীম শুভেচ্ছা জানাই তোমায়

কবিঃ- থ্যাঙ্কু থ্যাঙ্কু

সুদীপ্তঃ- আজকের প্রথম আলোচনা
বাঙালীরা কতখানি সাহিত্য বোঝে?

কবিঃ-সাহিত্যের বোঝা বাঙালি বহন করে বেশি । আর বোঝার কথা যদি বলো তবে বলতে বাধ্য হচ্ছি দু'লাইন  লিখছি মানেই বুঝি সেটা কিন্তু নয়

সুদীপ্তঃ-আচ্ছা

সুদীপ্তঃ- আচ্ছা যদি তাই হয় সাহিত্যের বোঝা বাঙালী বহন করে বেশি
তাহলে আজ কোনো বাঙালী রিক্সাওয়ালা কে গিয়ে যদি বলি তুমি কবি অংশুমানকে চেনো??

ভ্যাল ভ্যাল করে তাকাই

অথচ অংশুমান সাহিত্যের লোক

কবিঃ- এটা তো একটা চিরকালীন সত্য! !!
আজ ও রবীন্দ্রনাথের নাম জানেন কিন্তু কবিতা চেনেন না  এমন শিক্ষিত বাঙালি  আছেন।
জীবনানন্দ দাশ  এর কথা তো ছেড়েই দিলাম  অথচ তিনি বাংলা কবিতার মাইলফলক

সুদীপ্তঃ- আচ্ছা ধরো তুমি কোনো দিন দেখলে তোমার লেখায় পাঁচজন বাঙালী কমেন্ট করলো।
তার মধ্যে একজন বলল যে, লেখাটা এটা হলে ভালো হতো, ঘেঁটে দেখলে উনি লেখার কেউ নন কি এফেক্ট হবে তোমার মধ্যে।
both এফেক্ট বলো ফেসবুকের কমেন্ট বক্স আর তোমার মনের

কবিঃ-হতেই পারে । লেখা যখন তৈরি হয় তখন যিনি লিখেছেন তার । কিন্তু পরে যাদের হাতে পড়ছে তারা তাদের মতো করে দেখতে পারেন

সুদীপ্তঃ- আচ্ছা পাঞ্জাবি পড়া = বাঙালী= সাহিত্য বোঝা
নাকি ≠ সাহিত্য বোঝা

কবিঃ- লিখতে  এলেই পাঞ্জাবি পরে  থাকতে হবে সেই বিষয়টি বহু  আগেই ভেঙে গেছে । কবি সুনীল গাঙ্গুলী জিনস পরে রবীন্দ্রনাথের গান গেয়েছিলেন কবি শক্তির সঙ্গে।সাহিত্য  অন্তর দিয়ে গ্রহণ বিষয়টি খুবই  আপেক্ষিক । কাউকে দেখে বা শুনে সাহিত্যের বোদ্ধা মনে করা হয়তো ঠিক নয়


সুদীপ্তঃ-এক কাপ চা নাকি এক কাপ রাম বাঙালী সাহিত্যের জন্য দায়ী
( বিরহের লেখা লেখার সময়)?


কবিঃ-বিরহের লেখার জন্য চা -কফি - মদ কিছুই বাধ্যতামূলক নয়, বলে মনে করি ।  এমন  অনেক কবি লেখক  আছেন যারা লেখার জন্য নেশা করেন না । তবে তো সব নেশারু কবি হয়ে যেতেন।
 এই বিষয়ে  আর কিছু? ??

সুদীপ্তঃ-😆( হাসি)

সুদীপ্তঃ- আচ্ছা এটা মনে হয় তোমার যে বাঙালী যেন একটু বেশি অন্তঃমিল পছন্দ করছে আজকাল?

কবিঃ-না, একদম নয় । এটা কবিতার চাহিদা ।  প্রথম কবিতা তো অন্তমিল দিয়েই শুরু হয়েছে ।  তারপর মনে হোলো  হয়তো যথেষ্ট প্রকাশ হতে  অন্তমিল বাঁধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে তখন মুক্ত লেখা এলো । ছন্দ বা অন্তমিল খুব সহজ তো নয়, কেউ পিঁড়ি এবং বিড়ি দিয়ে যুক্তিহীন  অন্তমিল করলেন  ।  তবে বিষয়টি কেমন হয়! !!!  আবার  অন্তমিল পেরিয়ে গেছে  এমন লেখাই তো তখন লিখতে হবে যখন  অনেকেই সেটি পছন্দ করছেন । কারণ বিশেষরা সর্বদা বিপরীত পথে হাঁটতে ভালোবাসেন । যেভাবে ভীষণ গদ্যছন্দের মধ্যে  অন্তমিল শুরু হয়েছিলো।

সুদীপ্তঃ- বাহ্, ভালো জবাব।

কবিঃ-থ্যাঙ্কু সুদীপ্ত । আসলে  আরো ভালো করে বলা যেতো

সুদীপ্তঃ- আচ্ছা তোমার লেখায় ৫০০ টা লাইক এলো, কমেন্ট এলো ২৩৮ টা, তাহলে যারা লাইক দিলো সবাই লেখা পড়লনা না??কী মনে হয়???

কবিঃ- ওসব দিয়ে কিস্যু বিচার হয় না । এমন তো দেখাই যায় খুব ভালো লেখাতে তেমন লাইক কমেন্ট নেই যতটা খুব খারাপ লেখা পেযেছে । আমি নিজেই তো আমার প্রিয়কবি বা লেখকের লেখায় লাইক কমেন্ট করি নি নজরে আসে নি বলে । হয়তো তার লেখা যখন  এসেছিলো আমি তখন  অনলাইন ছিলাম না

সুদীপ্তঃ-হতে পারে

সুদীপ্তঃ- অনেক সময় দেখা যায় কোনো পত্রিকা বলল এতো জন তরুণ কবিকে (খুব বাজে শব্দ) পুরষ্কার দেওয়া হলো,
কিন্তু দেখা গেল, যে কবি পুরষ্কার পেলনা অথচ তরুণ, তদের চেয়ে ভালো লেখে!
তাহলে এখন প্রশ্ন হচ্ছে ভেতর ভেতর কিছু একটা হচ্ছে না তো?

কবিঃ-এসব ঠিক ভাবতে ভালো লাগে না । চিরকাল  এসব ছিলো আছে থাকবে । কতো ভালো কবি লেখক  আছেন যারা তেমন  প্রচার পেলেন না! !!
কিছু  একটা তো হচ্ছেই । সর্বত্র হচ্ছে

সুদীপ্তঃ- পূজোর শপিং শেষ

কবিঃ- প্রায়। এটা  আমার ছোটবেলার  অভ্যাস ।

সুদীপ্তঃ- কি অভ্যাস

কবিঃ-বাবা রেলের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছিলেন তাই পুজোর কাছাকাছি সময়ে সপরিবারে  একটা দোকানে ছেড়ে দিতেন  আর  আমরা বোকা বোকা পছন্দ করে কিনে আনতাম । পরে বুঝতাম ভাই এর টা আমার খুব পছন্দের

সুদীপ্তঃ- 😆(হাসি)😆

সুদীপ্তঃ- কোনো এক বসন্তে ভিজে গেলে পরে, ফিরে এসে মাথা শুকনোর পর তুমি কী বৃষ্টির কথা ভাববে আবার???


কবিঃ- বৃষ্টি তো সবসময়ই সিরিয়াসলি সঙ্গে থাকে

সুদীপ্তঃ- মৌসিনরাম??😛

কবিঃ-মেঘ-বাদল। মল্লারে ভিজতে সকলের পছন্দ বলে মনে হয

সুদীপ্তঃ- তাহলে পুজোয় বৃষ্টি হোক??🤨


কবিঃ-আমার কথায় সুদীপ্ত খুব কষ্ট পাবে😁

সুদীপ্তঃ-না না কেন, তুমি বললেই কী বৃষ্টি হবে নাকি,,, আর বরং তোমারই কষ্ট হবে কারণ বৃষ্টি পড়বে না

কবিঃ-খুব ভালো লাগলো রে সুদীপ্ত । আসলে  এমন  খোলা মেলা কথা তো তেমন বলা হয়ে ওঠে না ।
পুজোর  আনন্দ  সকলের হোক এই বাসনা করি।

সুদীপ্তঃ- তবুও তুমি খুললে কই

সুদীপ্তঃ- আচ্ছা একটা কথা জানতে ইচ্ছে করছে খুব,বলছি--
সুনীল বাবুর নীরা, জীবনানন্দের বনলতা, আর তুষারের???
এটা খুলে বলো

কবিঃ-জানি না । এবছরের বহু লেখায় খুব রাধারানী  এলো । আগে তিনি রাইকিশোরী ছিলেন

সুদীপ্তঃ- আচ্ছা, মানে বদলাই আরকি

সুদীপ্তঃ-☕ কফি নাও



কবিঃ-থ্যাঙ্কু থ্যাঙ্কু

সুদীপ্তঃ-হুম, ধন্যবাদ

কবিঃ- সত্যিই মনটা কফি কফি করছিলো । কেমন ঠিক বুঝে গেলি 💜💜

সুদীপ্তঃ-বুঝি তো, পাঠকের এটাই কাজ, কি বলো?

কবিঃ- খুব ভালো থাকিস । লেখায় থাকিস । স্নেহের ভালোবাসা নিস! ! !

সুদীপ্তঃ- পান করতে করতে,  কফি নিয়ে দু-লাইন শেষক্ষণে

কবিঃ- "ভেজা তোর চুলের ছায়ায়
          দানা দানা জল জমে
          কথা লেখে কফির ধোঁয়ায়"
কফিকথা প্রকাশ পাবে প্রতি মাসের একটা শুক্রবারে
৷ চোখ রাখুন কফিকথা তে নানান গুনিজনের কথা থাকবে।

সোমবার, ১ অক্টোবর, ২০১৮

শালিকের বারান্দায়
সেখ আমিমোন ইসলাম

আমার বাড়ির ফাঁক-ফোঁকরে
কত শালিক বাঁসা করে,
ভোরের আলোয় কিচিরমিচির
আমায় জাগিয়ে তোলে।
সন্ধেবেলায় চায়ের কাপের
সঙ্গে নতুন সুর তোলে।

কত নতুন ছন্দ সুরে
আমার চোখকে বন্ধ করে,
বালিশের 'পরে।

ওর সুরের বারান্দায়
তাই আমি রোজ যায়,
আমার নতুন ছন্দের অপেক্ষায়।
কবে
সেখ আমিমোন ইসলাম

কালের আশায়, ‘কবে’র নেশায়
ভুলতে বসেছি আজ-কে
ভালো খারাপ কেমন আছি
কে কার খবর রাখে।
সেই ‘কবে’ যে আসবে কবে
কেই বা তা জানে?
অসম্ভবের ‘কবে’র আশায়
হারাচ্ছি আজকের মানে।
সেই আশার ধোঁয়াশা নিয়েই
বেঁচে আছি তা কে জানে?
বিষের গরল, কঠিন তরল
আঘাত হানে প্রাণে।
কঠিন বিষের কঠিন ওষুধ
পাবো কবে কোনখানে?
ভালোবাসা অসন্তুষ্ট
অভিজিৎ দাসকর্মকার

ক্যাবলা নজর স্নানঘরে, এয়ার পকেটের গন্ধ সুগার ফ্রি ভাষায় কথা বলে।

কাছে থাক কবিতা, সমালোচনা,  ঠোঁটে থাকুক বিষ রস।
টসটসে আঙুরে আজ শেয়ালও নাগাল পায়।

তুমি নরক, তাই আমি বিচ্ছিরি থাকি, এনসিওর করি পাঁজরের খাঁজে প্রোটিন।

হিমগ্লোবিন কাভার ড্রাইভ মারে, বুকের অলিন্দ যুদ্ধে স্কোয়ামাসি যানজট।

চাঁদের শ্বসনে জোৎস্না জ্বলে জোনাকির পিঠে,সপ্তর্ষিমণ্ডল লুব্ধকের লেজ ধরে চলে।

আমি কান্না হয়ে বলি,তুমি ঝাপসা হয়ে থেকো।

আবাসভূমি থেকে
শান্তা কর রায়
 ইদানীং সে সুবিমল মিশ্র পড়ছে তাই এসিতে শোয়না,বেশিরভাগ সময় রামায়ণ চামারের মতো আচরণ করে ।

 কোথায় লুকিয়েছে দেশ! অথৈ জল,আর সে-,চুড়ান্ত অপরাধী নিচুস্তরের যিনি খাবার দিয়েছিলেন!-তারও জরিমানা, তাকে বাঁচিয়েছিল ইসলাম । ---এদের কারোরই আজ দেশ নেই!
হঠাৎ লোকটা চিৎকার করতে শুরু করে
হে প্রভু এতো প্রশ্ন করছো কেন!!
ভিতরের ঘড়িটা টিকটিক করছে,শিরায় নেমে এলো পর্দা,জড়িয়ে ধরলো সিল্ক অনুভূতির চাদর। মেঘ করেছে বৃষ্টি হবে,নইলে তোমাকেই উত্তর পদে যেতে হবে বাজার। থলি পূর্ণ হলে ফিরে এসো, অমীমাংসিত আমার পাণ্ডুলিপির রূপকার হে প্রভু অক্সিজেন কমছে ক্রমশ । অসমাপ্ত  মাংসাশী তুমি,সিগারেট পোড়া দেখেছ!!  আচারের জারে হাত রেখে তুমি কাল্পনিক শুয়ে থাকো, এদিকে আহত বধ্যভূমি জলমগ্ন হচ্ছে,সামনে পড়ে আছে প্রিয় আচরণ বমির মতন । প্রভু! বমি করেছো কখনো!!  রক্তবমি!!  কারফিউ হয় তোমার শহরে! অথবা কোনদিন নরক ছুঁয়ে মৃত বটগাছের গুড়ির বিপরীতে বসা সন্ন্যাস দেখেছ!!  এতো প্রশ্ন করছো! বরাহ অবতারে তুমি কিকি খেতে!  অথবা পাক ঘেঁটে কিকি পেয়েছিলে যদি বলে দিতে বুঝতে সুবিধে হতো,নিভন্ত দিন থেকে কেবলি শুকনো পাতায় আগুন দিও প্রভু, কারণ তুমি বৃষ্টি এনেছো   । 
আঠারো বছর

                   সুমিত বিশ্বাস

ওরে তোরা শোন কান পেতে
মোহে তোরা যাস না মেতে৷
পৃথিবী আজ অস্তাচলে
যাস নাতোরা সেটা ভুলে ৷
তোরা তো দেশের আর্দশ ছেলে
গড়বি দেশটা সবাই মিলে৷
অমূর্খ রা বলছে কথা
রাজসভা তে যথাতথা ৷
ওদের কথায় পাচ্ছে ব্যথা
জন্মদাতা ও ভারতমাতা৷
দেশ টা আজ দিচ্ছে বেচে
এক প্লেট ভাত ও মাছে৷
এরাই নাকি দেশের নেতা
ওদের কাছে দেশের খাতা৷
কারচুপি সব করছে তারা
তোরা সব রুখে দাড়া৷
তোরা সব দেশে সেরা
আঠারো বছর যে তোরা৷
তোদের রক্ত হুঙ্কার মারে
ওদের কে সব করবে দূরে৷
মোদের দেশ তোদের হাত ধরে
আবার সত্য পথে আসবে ফিরে৷

কোনো কাঁটাতার না মেনেই জলফড়িং

ফড়িং পোষার আনন্দ

মোশাররফ মাহমুদ
বাংলাদেশ ,ঢাকা

অনেকদিন আগের কথা । মাত্র মাদরাসা বন্ধ হয়েছে । ছাত্রবন্ধুরা সবাই যে যার বাড়িতে চলে যাচ্ছে । আমিও বাড়ির পথ ধরলাম । কিন্তু সেই ছোট বয়সেও বাড়িতে যেতে আমার মোটেও ভালো লাগত না । একা একা থাকতে হয় । পাড়ার ছেলেরা সারাদিন নিজেদের মতো করে ব্যস্ত থাকে । খেলাধুলায় মেতে থাকে । তাদের সঙ্গে আমি কখনো মিশতে পারতাম না, খেলতে ইচ্ছে হত না । আবার একা থাকতেও ভালো লাগত না ।
বাড়ির পূবপাশে আমাদের বিভিন্ন সবজি চাষ করা হত । আমি একাকী সেখানে হেঁটে বেড়াতাম । আনমনা হয়ে হাঁটতাম । মনে কোনো উচ্ছ্বাস কিংবা আনন্দ থাকত না । শুধু দিন গুণতাম- কবে মাদরাসা খোলা হবে!
একদিন বিকেলের কথা । সবজি ক্ষেতে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ একটি ফড়িং দেখলাম । সবুজ ঘাসফড়িং।

 অনেক ছোট । দেখতে অনেক সুন্দর আর চমৎকার তার রূপ । নিপুণ কারুকার্যের অপূর্ব সৃষ্ট । আমি তার সামনে হাত বাড়িয়ে ধরলাম । কিন্তু ফড়িংছানাটি বোধহয় একটু ভয় পেয়েছে । আমি বুঝতে পেরেছি । কারণ মৃত্যুকে যে সবাই ভয় পায়! এই ঘাসফড়িংও ভয় পেয়েছে । হয়ত ভেবেছে আমি তাকে মেরে ফেলব । মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত । আবার এই বৃহত মানবসম্প্রদায়ের কিছু মানুষকে ইঙ্গিত করেই তো বলা হয়েছে, "উলাইকা কাল আনআম, বাল হুম আযাল"!
আমি ঘাসফড়িংটিকে আদর করে দুহাতের মুষ্টিতে ভরে নিলাম । সে ভয়ে কাঁপছে । তিরতির করে কাঁপছে তার ডানা । আমি তাকে অভয় দিয়ে বললাম, 'ভয় পেয়ো না ফড়িংছানা । আমি তোমার যত্ন নিব, কষ্ট দিব না । তুমি আমার কাছে থাকবে । আমি তোমাকে রোদে পুড়তে দেব না, বৃষ্টিতে ভিজতে দেব না । যত্ন করে খাওয়াব, উপোষ রাখব না ।
মানুষ শখের পোষা প্রাণীদের একটা নাম দেয় । আমি আমার ঘাসফড়িঙের নাম দিলাম 'তিন্নু' । তিন্নু নামের অর্থ কী, আমি জানি না । কিন্তু ফড়িংছানাটিকে আমার তিন্নু নামে ডকতে ভীষণ ভালো লাগত । তাকে আঙুলের মাথায় বসিয়ে সারাদিন বাড়ি বাগান আর রস্তায় ঘুরে বেড়াতাম । আমি ছোট তাই কেউ কিছু বলত না । বাড়িতে আমার নিঃসঙ্গতাটা দূর করে দিয়েছে আমার আদরের এই ছোট্ট ঘাসফড়িং তিন্নু । আমি প্রতিদিন মাছি মেরে মেরে তাকে খেতে দিই ।

দেখতে দেখতে ছুটির সাতদিন শেষ হয়ে গেলো । এই সাতদিন সময়ে তিন্নুর সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব গভীর হয়ে গেছে । তার প্রতি আমার ছোট্ট মনে মায়া জমে গেছে । আমি মাদরাসায় চলে গেলে তাকে যত্ন করবে কে? তার বাবা মার কাছে ছেড়ে দিয়ে এলে ভালো হয় । কিন্তু তাদের খুঁজে পাই কোথায়!
আমার সেই ছোট্ট বয়সে একটা দারুণ আইডিয়া এলো মাথায় । বুদ্ধি করলাম- আমি তিন্নুকে মাদরাসায় নিয়ে যাবো । সেখানে সে আমার চোখে চোখে থাকবে । ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে তাকে নিয়ে আনন্দ করবো । মাছি মেরে মেরে খাওয়াবো । সে আরো বড় হবে । মাদরাসার ছাত্ররা তাকে নিয়ে আনন্দ করবে। আনেক মজা হবে।
আমি একটা কৌটায় ভরে তিন্নুকে মাদরাসায় নিয়ে এলাম । প্রতিদিন মাছি মেরে মেরে টাংকের ভিতরে রেখে তাকে খাওয়াই । আমার টাংকটাই তার বাড়ি । সে ওখানে নিরাপদে থাকে । ক্লাসের ছুটির ফাঁকে ফাঁকে তাকে নিয়ে আনন্দ করি । আমার সাথে ছাত্রবন্ধুরাও আনন্দ করে । আমরা সারা বিকেল তিন্নুকে নিয়ে আনন্দে মেতে থাকি । মাছি মেরে খাওয়াই ।
আবুজ সুন্দর ঘাসফড়িং তিন্নুকে টাঙ্কের ভিতরে রাখতে হয় । জানি তার কষ্ট হয় । কিন্তু এছাড়া উপায় নেই । মাদরাসায় যে ফড়িং পোষার ব্যবস্থা নেই!

প্রায় একমাস তিন্নুকে নিয়ে আনন্দ করেছি । আঙুলে বসিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছি । আমার ছাত্রবন্ধুরাও আনন্দে মেতে ছিলো । মানুষ হাঁস পালে মুরগি পালে, ময়না শালিক কবুতর পোষে । কিন্তু ঘাসফড়িং পুষতে শোনা যায় না । আমি পুষেছি । অথচ এর আগে কখনো কোনো পশু পাখি পুষিনি । আমার শিশুমনকে দারুণভাবে আন্দোলিত করেছে সবুজ ফড়িং তিন্নু ।
একদিন এক হুযুর বিষয়টি জানতে পারলেন । আমরা অনেক ভয় পেয়ে যাই । না জানি আমাদের পিটুনি খেতে হয়! কিন্তু না,হুযুর বেশিকিছু বললেন না । সুন্দর করে বুঝিয়ে বললেন- আমরা মানুষ যেমন আল্লাহর সৃষ্টি, এই ছোট্ট ঘাসফড়িংও তার সৃষ্টি । তোমাদেরকে যদি কেউ তোমাদের আব্বু আম্মুর কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে আটকে রাখে, তোমাদের ভালো লাগবে?
আমরা সমস্বরে বলে উঠলাম- জ্বি না!
তা হলে ঘাসফড়িংটাকে যে বন্দি করে রেখেছো, সে কষ্ট পাচ্ছে না!?
আমরা বললাম, জ্বি হুযুর, পাচ্ছে ।
তা হলে তাকে ছেড়ে দাও । সে তার আব্বু আম্মুর কাছে চলে যাক । শুধু শুধু একটি দুর্বল প্রাণীকে বন্দী করে রেখো না । তোমাদের অনেক বড় হতে হবে, এসবের পেছনে সময় নষ্ট করো না । যাও, তাকে ছেড়ে দাও!

তিন্নুকে দূরে সরিয়ে দিতে আমার খুব কষ্ট হচ্ছিলো । তবু ছেড়ে দিলাম । সে লম্বা পা দুটো ঝাঁকিয়ে লাফিয়ে চলে গেলো । আর কখনো খুঁজতে যাইনি । আমার মন খারাপ দেখে এক বন্ধু তিন্নুকে তন্নতন্ন করে খুঁজেছে, কিন্তু পায়নি । আর কোনোদিন পাবেও না । যেমন আর পাবো না সেই শৈশবকে ।
আন্তরিকতা বিলুপ্ত/সুপ্রিয়া চক্রবর্ত্তী
২৮/৮/১৮
✴️✴️✴️✴️✴️✴️✴️✴️✴️✴️✴️✴️✴️✴✴✴✴

সুবিশাল এই পৃথিবীতে,কোটি কোটি
মানুষের ভিড়ে,তুমি ক্ষুদ্র একটি প্রাণ,
কে তোমার খোঁজ রাখে? প্রত্যেকে ব্যস্ত
নিজেকে নিয়ে,আপনারে নিয়ে আপনি
হয়রাণ, ব্যস্ত এ জীবনের পথে,প্রত্যেকেই
একান্ত একা,,,,

কিন্তু কেনো এত শুন্যতা,হাহাকার সবার ভিতরে? সকলেই আছে তবু কেউ নেই যেনো,শত, শত প্রাচুর্যের ভিড়ে,আনন্দ মুছে গেছে কেনো,জীবন থেকে সবার?
উত্তর কি জানা আছে
 কারো? ছোট ছোট পাওনা গুলো হারিয়ে গেছে,যেগুলো মানুষকে দিত নিখাদ আনন্দ,,,,

বহির্জগতের সবটাই মুখোশের মধ্যে, মেকি হাসি দিয়ে সাজানো আন্তরিকতা,অন্তর হারিয়েছে আজ মানুষ,সম্পর্ক আজ আন্তরিকতা হীন,পয়সায় মোড়া,অর্থই
অনর্থের মূল,স্বার্থ নিয়ে মানুষে,মানুষে
সম্পর্ক,ভালোবাসা গেছে হারিয়ে,বিবেক
মাড়িয়ে,পদপিষ্ট অন্তর আর আন্তরিকতা।

*ষড়ঋতু
সন্দীপ ভট্টাচার্য

সেদিন আমার বারান্দায় মেঘ নেমেছিল
এঁকে ছিল অবাক চুমু আমার ফাটা ঠোঁটে
বাষ্প ছোঁয়ায় আমি শিশির হয়ে গেছিলাম
তখন কোথাও শিউলি ঝরেছিল
কানে এসেছিল নৈঃশব্দের হাহাকার

সমব্যাথী কথাদের পাহাড় জমতে জমতে
জলের তোড়ে কাদা হয়ে যায় বেলেমাটি
বুকের মাঝে অভিমান খোঁজে জলপটি
দুঃখ ভাষণের হাতেরা
ব্যস্ত তখন রোজনামচায় পেটের জোগাড়ে

ভাঙাচোরা ভারসাম্যহীন জীবন উথালপাথাল
জোয়ার শেষ হলে পাখি ফেরে নিজের ঘরে
খুঁটে খাওয়া সকালে কুয়াশার সাথে আলাপচারি
দগদগে ঘা সরে নতুন চামড়া
গতানুগতিক বন্ধুত্বের হাত বাড়ায় ষড়ঋতু
বৈশাখী হাওয়া গায় ওঁ গাং গণেশায় নমঃ।।


নির্লজ্জ সভ্যতা
  --সৌনক ভট্ট
বিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে, মানুষ আজ সত্যি দৃষ্টিহীন।
চোখ থাকতেও তারা দেখতে পায় না।
 তারা দেখতে পায় না..
এ সমাজের সমস্ত প্রহসন জনিত কাজ,কর্ম
 কারো মুখে থাকে না কোন কথা কোন প্রতিবাদ ।
সত্যিই আজ মানুষ হয়েছে বোবা।
 আবার কেউবা প্রতিবাদে এগিয়ে গিয়েও
পিছিয়ে আসতে হয় অনেকের ভয়ে।
 এ সমাজের অগ্রদূত ছাত্র  -যুব সমাজ তারা ও প্রতিবাদে,
 এগিয়ে গিয়ে পিছিয়ে পড়ে।
আজ প্রতিবাদের ভাষা নিস্তব্ধ সবার মুখে।
 ছাত্র এখন বোকা হয়ে দাঁড়িয়েছে ফুটপাতে।
 হায় রে ! সভ্যতা...
তোমার চোখেও কী রয়েছে বাধা কালো কাপড়ে।
নিজের বুদ্ধি বিক্রত আজ অন্য জনের কাছে ।
সত্যিই নির্লজ্জ এ সমাজ।


**ভালোবাসার গান**
**শিহাব আহম্মাদ**
এই জনমুখর প্রান্তরে।*
একবার,দুইবার,তিনবার-যদি বার বার ফিরে আসি;*
তবে হয়ত মানুষ পাব!*
কিন্তু আজকের এই সুবর্ণ বিকেল,আজকের সব মানুষ;*
আজকের বিকেলের মত করেই পাব কী?
*
এই জনমুখর প্রান্তরে।
একবার,দুইবার,তিনবার-যদি বার বার ফিরে আসি;*
হয়ত! হয়ত! 
আবারো একটি বিকেল পাব,কিন্তু আজকের মানুষগুলো।
আজকের মত;*
লাল বর্ণ মিশ্রিত সেদিনের দিগন্তে,হয়ত সেদিন আর মানুষ নয়।
মানুষের ভালোবাসা,বিকেলের স্মৃতি বিজরিত ক্ষাণিক সময়,*
বিরহী মনকে শান্তনা দিবে আজকের মত করেই।
*
এই জনমুখর প্রান্তরে।
একবার,দুইবার,তিনবার-বার বার ফিরে আসতে চাই!*
কিছু মানুষের জন্য,কিছু মানুষের ভালোবাসার গান শুনার জন্য।।