আমি কোন অবস্থাতেই বাচিক শিল্পী নই
-----------------------------------------------------------------------------
জলফড়িং-র পক্ষ থেকে আপনাকে প্রথমেই জানাই নমস্কার।
-->> প্রতি নমস্কার! 🙏
১.)বাচিক শিল্পী জয়িতা ভট্টাচার্য, প্রথমেই যদি বলি কত নম্বর দেবে নিজের কন্ঠ কে?
উ:- প্রথমেই বলি, বাচিক শিল্পের পরিধি অনেক বড়। আমি তার একটা ছোট্ট অংশ চর্চা করি। তাই আমি কোন অবস্থাতেই বাচিক শিল্পী নই।
নম্বরের কথায় বলি, আগে আমার চোখকে নম্বর দিতে হবে কারণ ওটা দিয়ে লেখাটা পড়ি, মন কে দিতে হবে কারণ লেখাটা মনে যাপন করি, বোধ কে দিতে হবে কারণ ওখানেই অনুভূতির বাসা, তারপর তো আসে কন্ঠ।
তাছাড়া, আমি আমার কন্ঠকে নম্বর দেবার কেউ নই। সে অধিকার আমার শ্রোতাদের।
২.) কত বছর বয়স থেকে আবৃত্তি করো?
উ:- ঠিক মনে পড়েনা। অনেক ছোট থেকেই।
৩.) এই যে শিল্পী জীবন এটা কবে থেকে শুরু হলো আর কীভাবে হলো?
উ:- শিল্পী কিনা জানি না। আবৃত্তি চর্চা করি। কারন আবৃত্তি করতে ভালোবাসি। মাঝে আমার একটা ১৪ বছরের বনবাস ছিলো। সেই বনবাস কাটিয়ে আবার আবৃত্তিতে ফিরতে পেরেছি। এটাই অনেক।
৪.) বাচিক শিল্পী জয়িতা ভট্টাচার্য প্রিয় নাকি শুধু জয়িতা ভট্টাচার্য প্রিয়?
উ:- আগেই বলেছি, আমি শুধু আবৃত্তি চর্চা করি। শিল্পী জয়িতা আর শুধু জয়িতা কয়েনের এপিঠ ওপিঠ। একজনকে ছাড়া অন্যজন অচল।
৫.) বৃষ্টিতে ভিজতে ভালো লাগে নাকি মেঘ চমকানো দেখতে ভালো লাগে?
উ:- দুটোই ভালো লাগে। একটি ভালো লাগলে অন্যটি ভালো লাগা যাবে না, এমন কোন কথা তো নেই।
৬.) তোমার থেকে ভালো আবৃত্তি করে এমন শিল্পীর নাম জানতে চাই শিল্পী জয়িতা নয় শুধু জয়িতার ঠোঁট থেকে?
উ:- প্রজাপতি ব্রহ্মার মুখ নিঃসৃত প্রথম শব্দ "নাদ", যদিও নিজে কানে শুনিনি তবু জানি তাঁর চেয়ে ভালো কেউ উচ্চারণ করতে পারেন না, কারণ প্রথম সবকিছু প্রথমই হয়।
--------------------------------------------------------------------------
চিনিও ভালো গুড়ও ভালো
------------------------------------------------------------------------
৭.) আচ্ছা আবৃত্তির জন্য আবহ সঙ্গীতের প্রয়োজন কতটা?
উ:- নিশ্চয়ই প্রয়োজন আছে। তবে সেটা পরিপূরক হতে হবে। মনে রাখতে হবে, আবৃত্তির জন্য আবহ। আবহ আবৃত্তিকে সাজিয়ে তোলে। কিছু একটা বাজনা পিছনে চললেই হয় না।
একই সাথে এটাও বলি, আমি আবহ ছাড়াও আবৃত্তি করে থাকি।
৮.) এখন পর্যন্ত পাওয়া পুরস্কার বা সম্মান?
উ:- হাততালি আর প্রচুর মানুষের ভালোবাসা।
৯.) শুধু মাত্র একজন কবিরই লেখা আবৃত্তি কেন করে জয়িতা ম্যাডাম?
উ:- আমার মনে হয় The Drama Queen এর এপিসোডগুলো ঠিক মতো দেখা হয় নি আপনার। সেখানে অনেক কবির কবিতাই আছে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এই বছর (২০১৮) শুধু কবি অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায় এর লেখাই পড়ব। এই বছরে এখনো পর্যন্ত পড়া প্রতিটি কবিতা নিজ নিজ ক্ষেত্রে আলাদা। আর আমি নিশ্চিত, যদি কবিতা এক রেখে, কবির নাম বিভিন্ন হতো, তাহলে এই প্রশ্নই উঠত না। আমার প্রশ্ন, আমি কবিতা আবৃত্তি করবো নাকি কবি নিয়ে চিন্তিত হবো? আমি কন্টেন্ট দেখবো, ভ্যারাইটি দেখবো। এক কবির লেখাতেই যদি সব রকমের ইমোশান পাই, তবে আসুবিধাটা কোথায়?
১০.)আচ্ছা আমরা দেখি প্রত্যেকটা ভিডিও'র শেষে একজন বয়স্ক মতো মহিলার ছবি,ওই ছবিটি কার জানতে পারি?
উ:- হাহাহাহাহ...অনেকদিন ড্রামা কুইনের লাস্ট স্লাইডের ছবিটা লক্ষ্য করেননি বুঝতে পারছি, এখন তাকিয়ে দেখবেন ব্রান্ড নিউ একদম।
১১.) রবীন্দ্র সঙ্গীত পছন্দ নাকি বাংলা ব্যান্ড?
উ:- কী বলি! চিনিও ভালো গুড়ও ভালো।
১২.)প্রশ্ন করি যদি আবৃত্তি করে কী পাও?
উ:- মুক্তি।
১৩.) কখনও মনে হয়না যে সুযোগ আরও কিছুটা হলে ভালো হতো?
উ:- মানুষ যতো বড় হয় তার চাহিদা মানে ভিক্ষার পাত্রটা আরো বড় হতে থাকে। সুতরাং এ ভালোর কোন শেষ নেই।
১৪.) যদি বলি ব্রততী ম্যাডাম তোমার চেয়ে ভালো আবৃত্তি করে তো তোমার কন্ঠ শুনব না, কী বলবে?
উ:- দেখুন, আমি তো তুলনাতে বিশ্বাসী নই। তবে জানেন তো যেমন এই সময়েও বি এম ডাব্লু, হুন্ডাই, মাহিন্দ্রা, টাটা, মারুতি ইত্যাদি সব ধরণের গাড়ি কিন্তু পাওয়া যায়, লোকে পছন্দমতো কেনেন। তেমনই মানুষের মন যদি স্পর্শ করতে পারি তবে মানুষ নিশ্চয়ই শুনবেন।
১৫.) কোনো একদিন দেখা গেল যে, কেউ তোমায় হুমকি দিল, বলল আবৃত্তি করা যাবে না, কী করবে?
উ:- যুদ্ধ।
------------------------------------------------------------------------------
শরীরে অক্সিজেন নেবার কোন নির্দিষ্ট সময়কাল থাকে নাকি!
-----------------------------------------------------------------------------------------১৬.) এতো মানুষের ভালোবাসা, মুগ্ধতা, প্রাপ্তি ইত্যাদি কেমন লাগে?
উ:- খুব ভালো লাগে। নিজেকে স্পেশাল মনে হয়। সেই সঙ্গে কিছু দায়িত্বও অনুভব করি।
১৭.) নতুন যারা আবৃত্তি করছে তাদের জন্য কী বলবে?
উ:- কবিতাকে জীবনের সাথে মিশিয়ে নেওয়া দরকার। কবিতা যাপন করা জরুরি।
১৮.) তোমার জীবনে ঘটা সেরা একটা মজার ঘটনা?
উ:- মজার ঘটনা অনেক আছে। তবে এই মুহূর্তে যেটা সবচেয়ে বেশী মজার লেগেছে তা হলো আপনার করা ১০ নম্বর প্রশ্নটি। হাহাহাহাহা!
১৯.) আবৃত্তি করার কী কোনো সময় হয়?
উ:- বাঙালির চা প্রীতির মতোই আমার কাছে আমার আবৃত্তি। কোন নির্দিষ্ট সময় নেই। শরীরে অক্সিজেন নেবার কোন নির্দিষ্ট সময়কাল থাকে নাকি!
২০.)কোনো লেখা আবৃত্তি করতে গেলে জয়িতা কত বার পড়ে লেখাটা ?
উ:- ইনবক্সে প্রচুর মানুষ বলেন, এটা পড়ে দিন, ওটা পড়তে পারেন, আরো অন্য অনেক কিছু চেষ্টা করা উচিত, আরো অনেক কবি নিয়ে কাজ করলে আমার ভালো হবে, ইত্যাদি নানান রকমের প্রলোভন থাকার পরেও আমি বিশ্বাস করি, মুখে পড়ার থেকেও মনে পড়াটা বেশী জরুরি। যেটা মন ছুঁলো সেটাই পড়ি। সেটা যদি হয়, তারপর সবটুকু। হয়তো একবার। হয়তো একশোবার।
| জয়িতার পছন্দ জানবো |
প্রিয় খাবার:- আমি একেবারেই ভোজন বিলাসী নই। খাবার খাওয়াটা জরুরি তাই খাই।
প্রিয় পোশাক:- যে পোশাকে কম্ফর্টেবেল। আমি অবশ্য শাড়িতেই নিজেকে বেশী চিনতে পারি।
প্রিয়ঋতু:- এক এক ঋতুর রং রস গন্ধ এক এক রকম। আমার সব কিছুই ভালো লাগে।
প্রিয় রং:- সাদা
প্রিয় শহর :- কলকাতা
প্রিয় মানুষ:- যাঁর মধ্যে নিজেকে দেখতে পাই।
প্রিয় বাংলা গায়িকা:- অনেকের গান ভালো লাগে। কোন একজন গায়িকার নাম বলতে পারবো না।
প্রিয় কবি (বেনামি) :- বেনামী সম্পত্তি শুনেছি। তবে বেনামী কবি শুনিনি। আর তাছাড়া, এক এক কবির এক এক রকমের কবিতা ভালো লাগে। কি করে একজনের নাম বলি বলুন তো!
প্রিয় বাংলা সিনেমা:- অনেক সিনেমা আছে।
প্রিয় বাংলা অভিনেতা:- এক্ষেত্রেও একই কথা বলবো। কোন একজন বিশেষ কেউ নন। যাঁর অভিনয় চরিত্রটিকে জাস্টিফাই করে, আমার তার অভিনয়ই ভালো লাগে।
জয়িতার চোখে কবি শ্রীজাত:- এতজন কবি থাকতে, আলাদা করে শুধু শ্রীজাত কেন? যাঁরা স্বনাম ধন্য, তাঁরা নিজ নিজ গুণে মানুষের মন জয় করেছেন। সেখানে আমার মতো নগন্য মনুষের মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন।
👀[জয়িতার কাছে রবীন্দ্রনাথ ঠিক কিরকম]
--->>> জীবন। জীবনকে নতুন করে দেখার নাম রবীন্দ্রনাথ।
==================================
প্রশ্নে সুদীপ্ত সেন (ডট.পেন)
জয়িতা ম্যাডামের সাথে কথা বলে আমি মুগ্ধ,
অনেক গভীর তিঁনি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন