ভিড় থেকে সরে আসি। সমুদ্র জানে না কারও নাম। অনেক লেখার শেষে সাদা পাতা এখনও আরাম...শ্রীজাত

শুক্রবার, ২৯ জুন, ২০১৮

-: স্মৃতি বিলাসী :-
রঙিন বিবর্ণ হিসাব খাতায় জমে আছে আজও উন্মাদনার ধূলোরাশি, আছে কিছু তবুও নিহত বাক্ বিরুদ্ধ অব্যাক্ত আনন্দ বিনাসী,
কর্দমাক্ত পথে একাকী ফেলে লুকিয়েছিলে তুমি বাস্তব অরন্য কুটিরে, আমি নিত্যদিন ছিলাম তোমারিতো পথ চেয়ে, আমি নিরাকার, আশার ছলনায় হাড়িয়েছি আপন প্রাণ, খুঁজছি আপ্রাণ, ডেকেছি বারংবার কিন্তু তুমি আর দিলেনা সাড়া।
আমার উৎকন্ঠার রাতে এখোনো হিম্ পড়ে, বাড়ে আঁখিদ্বারে জলস্ফিতির ধারা যখনি দৃষ্যমান হয় তোমার নয়নতারা ।
                 - অলক দেবনাথ

বুধবার, ২৭ জুন, ২০১৮

তাজা কবি / অনুপম দাশশর্মা

তাজা কবি, টিপ এক, ঘায়েল ভিন্ন মত-ই। এমন তো স্বাভাবিক হেথায়

এই যে উৎসাহ রন্ধনের বিপুল আয়োজন
সে-তো, উঁমিচাদ, ঘসেটি বেগমদের মনে করায়

অপরিণত ঠাউরেছো যাহাদের
তাঁরা কী বেবাক গিলবে তেতো পাচন

কালান্তর বিছিয়েছে নজর আদি সভ‍্যতার
উজালা ভেপার নিভে গেলে
গুনে দেখো আঁধারে থাকা জোনাকগুলো
কতটা প্রতিষেধক তোমাদের যোগায়।

ব এ বর্ণমালা ( অ - ক্ষ ) ***মাধব মণ্ডল



আমি তো খুঁজবই তোকে
ভালবাসাকে সস্তা করে দিলি যে তুই!
ভালবাসা জ্বলে গেলো
আর হাজারটা কৈফিয়ত চাস
আমি তো মরবই আলিপুর জেলে।

আসলে ওখানে মন তো মজেছিল
কোন এক ফসল কাটার মরসুমে
আজও জিব চাটি ঘুমের আশেপাশে
আছোলা মাঠকুমড়ো আর আলু ঢালা
হালকা রঙের ঝোলের বিস্বাদে।

আমি তো খুঁজবই তোকে
ভালবাসা চরিত্র খুঁড়লো যে
সময়ের হাত পা কেটে
জিভ বের করা হাঁপানি গিলে
কি পুরস্কার, আহা!!


মঙ্গলবার, ২৬ জুন, ২০১৮

| স্বপ্নভঙ্গ |
_____________সুদীপ্ত সেন (ডট.পেন)

আমারও ছিল বয়স অল্প থাকা
নির্ভীক হয়ে পথঘাট পার হতাম
বাবার হাতেই তাধিন-নাধিন করে
প্রতিদিন ব্যাগে স্কুল ফিরে যেতাম।

আমারও কিন্তু বন্ধু ছিল অনেক
মন খারাপে মেঘের কথা শুনি
আমারও কিন্তু সাইকেল চালা হতো
রাতের আঁধারে সপ্তষী গুলো গুনি।

আমারও কিন্তু স্কুল ছুটি গুলো
তোমার মতোই পার্কে কেটে যায়
হাট তলাতে রথের মেলা হলে
লাল বেলুনটাই আমার কিন্তু চাই।

কোথায় গেল ওসব কিছু এক নিমিষে
আর আমায় ডাকছে না তো কেউ
মাধ্যমিক তো এখনও দেওয়া হয়নি
শূন্য আজকে জানালার কাছে তেও।

ফুরিয়ে গেছে, শুধাতে গেলাম যখন
সপাটে একটা উত্তর আর নয়,তোমার বিয়ে
বইপত্র গুছিয়ে রাখা হয়েছে
বসলাম আমি মায়ের কাছে গিয়ে।

মাধ্যমিক আমার দেওয়া হয়নি আজও
সেদিন যখন বোনের ফোন এলো
বোনের সাথে এমন করোনা যেন
মাকে বললাম বাবাকে এবার বোলো!
প্রেমিক সত্তা

অন্তত কাল ধরে হেঁটে চলেছি
তোমাকে পাব বলে,
আমি ক্লান্ত,চলতে পারছিনা,তবুও হাঁটছি
আর তুমি ভাবছ সব ভুল,সব মিথ্যে
আমি আদেও আসেনি..

ধু-ধু মাঠ,গা ছমছমে অন্ধকার
রাতকানা পেঁচার মতো অন্ধ আমি আজ
চারিদিকে কি গাঢ়,জমাট কালো পৃথিবী
তবুও অন্ধকারে হাতড়ে চলেছি তোমার নীল চোখ
আর তুমি বলছো,আসলে আমায় তুমি খোঁজনি..

রাতদুপুরে গেয়ে চলেছি সপ্তমসুর,
ঝিঁঝিপোকার রি-রি শব্দে স্বরগ্রামের
আওয়াজ তুমি শুনতে পাওনি,
আর তুমি ভাবছ ,তোমার জন্য আমি গান গায়নি..

মেঘের মধ্যে মিশে গিয়ে
বজ্রের আকারে আকাশ,বাতাস কাঁপিয়ে
ডেকে চলেছি,
তুমি হয়তো খেয়াল করোনি,
আর তুমি ভাবছ,আমি তোমায় ডাকিনি..

তোমাকে ভালবেসে নীল সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়ে,
তুলে এনেছি লক্ষ কোটি ঝিনুক
একটু দেরি হয়েছে বলে,
তুমি বলছো,আমি তোমায় ভালোবাসিনি..

ভালবেসে তোমার নীলনদ চোখের অতলে
সেই কবে ডুব দিয়েছি, তুমি তো জানো
আমি সাঁতার জানিনা,হাবুডুবু খাচ্ছি
তবুও তুমি টেনে তোলোনি..

তাই আজও আমার মৃত শরীর ভেসে যায়
জলের স্রোতে,,
তবুও কোনদিন তুমি পিছুডাক ডাকনি,
আর কোনদিন তুমি প্রেমিক সত্তা ও সাজনি..।।

@মধুমিতা নস্কর
প্রেমিক সত্তা

অন্তত কাল ধরে হেঁটে চলেছি
তোমাকে পাব বলে,
আমি ক্লান্ত,চলতে পারছিনা,তবুও হাঁটছি
আর তুমি ভাবছ সব ভুল,সব মিথ্যে
আমি আদেও আসেনি..

ধু-ধু মাঠ,গা ছমছমে অন্ধকার
রাতকানা পেঁচার মতো অন্ধ আমি আজ
চারিদিকে কি গাঢ়,জমাট কালো পৃথিবী
তবুও অন্ধকারে হাতড়ে চলেছি তোমার নীল চোখ
আর তুমি বলছো,আসলে আমায় তুমি খোঁজনি..

রাতদুপুরে গেয়ে চলেছি সপ্তমসুর,
ঝিঁঝিপোকার রি-রি শব্দে স্বরগ্রামের
আওয়াজ তুমি শুনতে পাওনি,
আর তুমি ভাবছ ,তোমার জন্য আমি গান গায়নি..

মেঘের মধ্যে মিশে গিয়ে
বজ্রের আকারে আকাশ,বাতাস কাঁপিয়ে
ডেকে চলেছি,
তুমি হয়তো খেয়াল করোনি,
আর তুমি ভাবছ,আমি তোমায় ডাকিনি..

তোমাকে ভালবেসে নীল সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়ে,
তুলে এনেছি লক্ষ কোটি ঝিনুক
একটু দেরি হয়েছে বলে,
তুমি বলছো,আমি তোমায় ভালোবাসিনি..

ভালবেসে তোমার নীলনদ চোখের অতলে
সেই কবে ডুব দিয়েছি, তুমি তো জানো
আমি সাঁতার জানিনা,হাবুডুবু খাচ্ছি
তবুও তুমি টেনে তোলোনি..

তাই আজও আমার মৃত শরীর ভেসে যায়
জলের স্রোতে,,
তবুও কোনদিন তুমি পিছুডাক ডাকনি,
আর কোনদিন তুমি প্রেমিক সত্তা ও সাজনি..।।

@মধুমিতা নস্কর

সোমবার, ২৫ জুন, ২০১৮

মূর্ছনা ।
অরূপ সরকার ।

তোমার গল্প গুলো অনেক রোগ সারায় ।
জীবনের অনেক সমীকরণই মিলিয়ে দেয়,
অনেক শেষের শুরুও হয়  তোমার গানে,
অনেক ব্যাথার ক্ষয় হয় তোমার গানে,
সেই গান হৃদয়ের তন্ত্রীতে বাজে,
তোমার গানেই নিজের মত থাকতে শিখিয়েছে ।
তোমার গানেই বলতে পারি আমি আজকাল ভালো আছি,
তোমার সুরের জাদুই আয়ু রেখা ধরে হাঁটাতে শেখায়,
মরলে পুনর্জন্মের স্বপ্ন দেখেছি তোমার মধ্যে দিয়ে ।
দুঃখ গুলো একে একে বেরোয় তোমার ওই গীটারে,
তোমার কথাও কাঁধে নিশ্বাস ফেলে;
তোমার উপমা তুমি নিজেই  সত্যিই তুমি অনুপম।

রবিবার, ২৪ জুন, ২০১৮

সম্পর্ক
------------
ঋতুপর্ণা ব‍্যানার্জী
১৪/০৬/১৮

সেই কোন
আদিম অরন‍্যে সুপ্ত ছিল উলঙ্গ প্রেমের ইতিহাস
তারপর ঘুম ভেঙে গেছে
জঠরের নিভৃত  থেকে বেরিয়ে
এসেছে দেহতত্ত্বের নীল ছবি
কিশোরীর ঠোঁটে   ভিজে গেছে সন্ধ্যার লাল চাঁদ
জোনাকী মেঘের দীর্ঘ নিতম্বছায়ায়
মদিরার মন্থন টুপটুপে মৌতাত

নষ্ট শিশির জেগে থাকে আঙুর চোখের তারায়
পর্দা সরে যায়
নতুন একটা রাত! পেঁচার কোটর জুড়ে হায়নার নাশকতা
রক্তের ভাইব্রেশন
তলপেটে মাংসল শ্বাস

শুরু হয় তৃতীয় অধ‍্যায়!!
রাতপোশাকের বোতামভাঙা হাসি
চুঁইয়ে পড়ে প্রোটিন-ভিটামিন
বুক অবধি হেঁটে আসে ভ্রূণের ফণা   হৃৎপিণ্ডে পাম্প মারে সম্পর্কেরা
দিশেহারা সব উত্তেজনা
ঘন থাকে বালিশ বিছানা।।
দুটি কবিতার সংকলন ( একসাথে লেখা)

      |♦গলা বরফের হৃৎপিন্ড♦|
---_-------_------_------_------_----
     
       

১.)
  আলস্যতা
-----------------ডট.পেন

নিছকি ভাবনার একটা পথ
তৎক্ষণাৎ এলোমেলো হয়ে যাওয়া
কিছু খাতার পাতা আর আমার পেনগুলো
নিদারুণ বিছানায় একটা আলস্যতার রেশ
কি জানি কি হলো, আমার মুঠোফোনে তোমার
ম্যাসেজ।

অনেক দিন পর তাই এত এলোমেলো আর আলস্যতার ভিড়
আর সেই ভিড় সরিয়ে তোমার দিকে চাওয়া
উমম্ না'তো ছবি কোথায়, অন্যকারোর ছবি
ম্যাসেজ ঘেঁটে দেখা গেল অনেক আগে কথা বলেছিলাম।

মাঝখানটা শূন্যের মতো আর বাকিটা ইতিহাস
যেখানে হাতরে খোঁজা হবে মাপকাঠি আর কতগুলো পুরনো স্মৃতি তৈরী করা হবে আর তারই প্রস্তুতি মাত্র।

এরমাঝে আবার একটা মাঝখান, যেখানে
আমরা হাতরাব একটা নতুন কিছু
নাম দেব ঝিনুকমালা!!
তুমি রাজি তো ?

             ----/---/---/---


ঝিনুকমালা
------------@মধুমিতা নস্কর

ভাবনা গুলো অবাধ্য আজ
উষ্ণ প্রেমের ছোঁয়া,
কল্পলোকে হাত বুলিয়ে
তোকেই খুঁজে আনা..

অল্পচেনা তোকেই আঁকি
রামধনুর ঐ রঙে,
তুইও রাখিস হাতটা মাথায়
ভালবাসার ঢঙে..

অকুল দরিয়ার মাঝে তুই
নৌকা হয়ে থাকিস,
দাঁড় হারিয়ে,পাল উড়িয়ে
অতল সমুদ্র তোর বুকের ভিতর রাখিস..

মুক্ত ভেবে ঝিনুক যদি হরণ করে আমায়
উদ্ধার করে লুকিয়ে রাখিস তোর মনপিঞ্জরের খাঁচায়,
ঝিনুকমালা নামটি দিয়ে বাঁধিস গোপন প্রেমের লাজে
থাকব আমি সারাজীবন তোর মগ্ন হৃদয় মাঝে..।।



                      ♦♦♦♦♦





২.)
 | তুমি যাওয়ার পর |
-------------------ডট.পেন

উঠে গেলে তুমি, উঠে তো যেতেই.. ভোর হতে বাকি ছিল
তুমি গল্পের মতো এলে, এসেছিলে তো, আঁচ পেয়েছিল পিলো।

কত কথা হলো রাত জেগে জেগে সারা,
চোখ ভুলে গেছে ঘুমপথ গুলো, জেগে জেগে থাকে তারা।

তুমি বলেছিলে কিছু কথা কানে, কিছুবা সরিয়ে নিলে
আদতে আমরা আঙুল ছুঁয়েছি তুমি-আমিতে মিলে।

থেকে গেছে সেই ঘাম মিশে যাওয়া গন্ধ তোমার চুলের
বালিশ বুঝেও করেনি নালিশ শেষ মিনিটের ভুলের!

সব মুছে যাবে ভোরে আলো এলে, যতটুকু যা ছিল
আঁশটে গন্ধ হিসেব চাইছে ভেজা প্রতিশ্রুতি গুলোর!!


             ------/-----/------

আলোকলতা
  ------------@ মধুমিতা নস্কর

আমার বুকের ভিতর আলোকলতার ছোট্ট কুঁড়ি,
তোমার বুকের ভিতর প্রেম সোহাগী বৃষ্টি..

আমার বুকের ভিতর বাড়ছে দেখো আলোকলতা,
তুমি খবর পেয়ে বলছো আমায় মিষ্টি কথা..

আমার বুকের ভিতর সুগন্ধ জমছে দেখো বিশ্বাসে,
তুমি হৃদয় দ্বারে ঘ্রাণ পাচ্ছ তোমার প্রতি নিশ্বাসে..

আলোকলতা দ্বীপ্তি ছড়ায় আমার বুকের ভিতর,
তোমার ঘুপচি মনে আলোকচ্ছটা করছে অবলোকন..

আলোছায়ায় আলোকলতা আজকে আলেয়া,
মধ্যরাতে মতিভ্রমে কুড়িয়ে আনে আসশেওড়া..

আমার মনের ভিতর আলোকলতা করছে খুনসুটি,
তোমার মনের মাঝে পড়ছে ঝরে স্বর্ণ হয়ে বেলি..

আলোকলতা বাড়তে থাকুক নিত্য নিয়ম করে,
তোমার আমার মিলন ঘটুক আলোকসজ্জা পরে..।।




শুক্রবার, ২২ জুন, ২০১৮

" বিরহ কান্নার পাণ্ডুলিপি "

        গগন ভুঁইমালী
            _______  
গ্রীষ্মের তাপদাহে শহরময় বিষন্নতা
নিত্য মানুষ ব্যস্ত ,জনসমুদ্র পারাপারে !
পৃথিবীর সময়ের কাঁটা__
  অবিরত, টিক... টিক !
সভ্যতার ছুটে চলা বিরামহীন
ডিজেলের ছোঁয়া অ্যাসিড ও
কেমিক্যালের বিষাক্ততা শুকে-শুকে !
স্বপ্নরাও মন মরা, নীরবতা পালনে,____
স্বপ্নরাও, স্বপ্ন অনুভূতি ছোঁয়ার
    স্বপ্ন দেখেনা আর___ !!
জোনাকিরা শোকাহত
      ওদের নাকি ভীষণ জ্বর ,
 তাই একবার নিজেকে মেপে ফেলি
  ধূলো-বালি জমে হৃৎপিণ্ড কালপাহাড় !!

 অলি-গলি ও রাজ সরণির, ল্যাম্পপোস্টের
       নজরদারি পাহারা____,
 সারি বদ্ধ কংক্রিটের বিশালতা
 যামিনীর বপু চুঁইয়ে পরে তীক্ষ্ণ ঘাম ,
 সমুদ্রের শরীর ছোঁয়া বাতাসে
     কিছুটা আরাম____ !!

 গুমোট ধরা মেঘে বিকেলের আকাশ
 আগন্তুক এক আভাসে__
 বৃষ্টির বারতা পাঠায়__,
 এক আনকোরা ধূসর খামে__,
 শহরতলীর ডাকনামে__!!
 তার ঠিক কিছু পরে সন্ধে মুখর
 নীলিমা চুঁইয়ে চুঁইয়ে ,
 কংক্রিটের গা বেয়ে চকিতে
ঝরে যায় শহরের বিরহ কান্না !!
 ইঁট পাথরে রা সুদীর্ঘ শ্বাস ফেলে !!
 পুলকিত করা শীতল সমীরণে
   সিক্ত তনু_____
___ অস্থির চিত্ত!!
  বেলকুনির শিকের উপর হাত
 দৃষ্টি,ভেদ করে যায় অন্ধকার
 নিমেষে ঠোঁটে, তাপমাত্রা মাপি ,
 আর এঁকে যায় পাণ্ডুলিপি...!!
 
   ___________
  ২০ শে জ্যৈষ্ঠ ১৪২৫
            মুম্বাই

বৃহস্পতিবার, ১৪ জুন, ২০১৮



১০) _______অম্লান
                          সুনন্দ মন্ডল

রবি যখন মধ্য আকাশ, মুক্ত বিহগ ঠোঁট
নজরুল তখন সেই আকাশের বুকে ভ্রাম্যমাণ।
ছন্দ সুরে মগজ ঠাসা, মজলিশ পূর্ন চমক
রবির জামা উড়ছে দেখি, নজরুল তখনও দুঃখী।

বিশ্ব মায়ের চরণ তলে রবি-দুখুর স্থান
একজন জ্ঞানের পূজারী, প্রান্ত চষা চাষী।
চোখের জলে রাতের গল্প লেখে অন্যজন
দিন লুকিয়ে উপোষী পেটে বাঁধে গান।

রবি, দিকনা যতই গীতাঞ্জলি, গীতিমাল্য
পাশে পেয়েছি অগ্নিবীণা, ফনিমনসা।
সোনার তরী বয়ে গেছে একূল-ওকূল
তখন সাম্যবাদীর শিখর জুড়ে প্রতিবাদের ভিন্নতা।

প্রেমের বাতাস শিহরন জাগায় রবীন্দ্র সংগীত
নজরুল গীতিও কম যায়না পাশাপাশি।
যদিও দুজনে নদীর দুকূলে বাস ঢিবি
তবু চির ভাস্বর, একে অপরের স্মরণে অম্লান।
              ----------------



৯) রবীন্দ্রনাথ,অস্তিত্বের আর এক নাম
                    কৃষ্ণেন্দু দাসঠাকুর

রবীন্দ্রনাথ, আমার রবীন্দ্রনাথ

আমার প্রতিটি ক্রোমোজমের মধ্যে তুমি

তোমাকে জড়িয়েই কম্পাস ঘুরিয়ে দিয়েছি

শিশির মোমে মাখামাখি রাতে

কত দিন তোমাকেই পাঠ করতে করতে---

বুড়ো আঙুল মাটিতে বসিয়েছি

ভালোবাসার খোঁজে পাগলের মতো যখন চুল ছিঁড়েছি,তখন প্রতিটি চুলে জড়িয়ে ছিল রবীন্দ্রনাথ

ভীষণ গতিতে ছুটে যাওয়া আঁকা বাঁকা রাস্তা যখন আমায় বারবার ছুড়ে দিয়েছে ফুটপাতে

তোমাকেই নিবিড় আশ্লেষে ধরেছি।আজও ধরি

রবীন্দ্রনাথ--আমার ঘামে ভেজা শার্ট


রবীন্দ্রনাথ শুধু দু'দিনের কিছু ফুল আর ধূপদানীর নয়

মাইক্রোফোন আর স্টেজের নই

কোনো সোনালী চার দাগের রবীন্দ্রনাথ নই।

বালতির রঙের বা কালচে ধর্মের কচকচানির নই

দড়ি টানাটানির বাচ্ছাদের খেলা বন্ধ হোক

রবীন্দ্রনাথ আকাশের থেকেও বড়ো আকাশ

যে আকাশের নীচে মিটিমিটি চাওয়া যাই

কৃষ্ণচূড়া-রঙ গাঁয়ে মেখে চোখ বন্ধ করা যাই

মাথার উপর থেকে যায় গীতা নই গীতাঞ্জলী।
               ----------------



৮) রবীন্দ্র-নজরুল' ময়
              পাখি পাল

আজও তোমরা মিশে আছো
জীবনের প্রতিটা পরতে পরতে..
আবেগ,আন্দোলন,শঙ্কা,সংকোচ
প্রকাশ শৈলীর নিখুঁত আমিতে..
সেই শিশুকালের আধো বুলি থেকে
আজকের fb, whatsapp status..
সর্বক্ষণের পথ চলায় রয়েছ পাশে
দিয়ে যাচ্ছ অভিভাবকত্বের আশ্বাস..
জীবন যখন খেই হারায়....
বিস্মিতভাবে খুঁজি ফেরার পথ..
তখনই স্মরণে আসে তোমাদের বাণী
ধ্বংসের মধ্যেই তো থাকে সৃষ্টি রথ..
অন্যায়,অবিচার, কুসংস্কার....যা
যুগে যুগে মানুষকে করেছে গ্রাস..
তা থেকে পরিত্রানের আভাষ দেয়
ধূমকেতু'র....'প্রলয়োল্লাস'....
জীবন যতই হোক না জটিল
থাকনা যতই ওঠা-পড়া ....
জীবনের এই সত্যগুলো সহজে বুঝিয়ে দেয়
ভানুসিংহের  'বোঝাপড়া'....।।
           --------------



৭) রবীন্দ্র-নজরুল
        সুজান মিঠি


রাত টা চোখে নেমেছে আগেই তবু জ্যোৎস্না দেখি।

সূর্য টা মুখ ফিরিয়েছে কবেই তবু উত্তাপ মাখি।

রাত গুলোকে আগলে রাখি বুকে থাকি সূর্য চাঁদে,

একলা বাউল ভোর ডেকে যায় খঞ্জনীতে কৃষ্ণ রাধে।


একটা সূর্য রোজই আসে আমার বিছনায় বসে

তারা গুলোও উল্কা হয় চোখে আমার খসে।

একটা খাটে পাশাপশি আমি, রবি, নজরুল,

বোবা চোখেও সুবাস ফোটায় গন্ধ রাজের ফুল।


অন্ধ চোখের হাতে বুকে দুইয়ের ছোঁয়া আঁকা

রবি নজরুল ছটায় চোখে সূর্য চন্দ্র মাখা।

রাত গুলোকে দিন করে যায় আমার কবি দুই

একলা দিনের অন্ধ ঘরে তাদের চরণ ছুঁই।


আমার বুকের সব কুঠুরি রবি-রুলে ঠাসা

রক্ত স্নায়ু আঁকড়ে আছে সাম্য-প্রভাত ভাষা।

শেষের দিনেও থেকো তবে শেষ যাত্রার গানে,

সেটাই হবে ‘হরিবোল’ মৃত আমার প্রাণে।
              ---------------



৬) বিরামচিহ্ন
      আকাশ সৎপতি

একই দোলাচল ছড়িয়ে যে

মূর্তিটি ভ্রাম্যমাণ ,

মুহূর্তের ব্যপ্তি ঘটিয়ে যে ফুল

দেবতার স্পর্শ পায়

নিঃশব্দ পুকুর পাড়ে

যে চিত্রকল্প গুলি স্থির দাঁড়িয়ে থাকে

যে মানুষ হঠাৎই বন্ধু হারায়

রাত্রি গ্রাস করে যে সব তারাগুলিকে

তারাই মুহূর্ত , প্রান্তসীমার পথিক

মাঝরাত , সেঁজুতি আর বিরামচিহ্ন ।
              ------------



৫) তুমি নও শুধু কবি
        শ্যামাপদ মালাকার

আমি তোমায় চিনি

তুমি আমার চিন্তার অতীত!

তুমি দিয়েছো চিরসত্যের সন্ধান- -

যুগিয়েছো বেঁচে থাকার প্রেরণা!

 তোমার মর্মমূলে কানপেতে

শুনেছি- সেই গীত, যে সুর সারা অন্তঃকরণ ধ্বনিত করে ছুঁটে বেড়ায়-

খুঁজেফেরে ব্যক্তচেতনার

এক মুক্তদ্বার--

তুমি সীমাহীন! তাই হৃদয় খুলে

বলতে ইচ্ছে করে,

হে কবি! হে বিশ্বকবি!

তুমি নও শুধু কবি-


জগতের বুকে জননীর তুমি

     দিয়ে গেলে পরিচয়-

মা'য়ের ললাটে রবি হয়ে জ্বলো

      করবে কে পরাজয়!

তুমি যে আমার দুঃখিনীর দীপে

    না বলা যে কত কথা-

তুমি যে আমার শ্রমিকের বুকে

      হঠাৎ গর্জে ওঠা!

তুমি যে আমার কবিতার পোড়া

        ক্লান্ত-চরণে ব্যথা-

আবার কখন অবহেলিতার

        নয়নের চিরধারা।

তুমি তো আমার ভিখারিনী কোনো

      সহসা থমকে দাঁড়া-

      সহসা থমকে দাঁড়া-

      সহসা থমকে দাঁড়া!।
              ------------



৪) হে যুগনায়ক
          সুমন দিন্দা

ছেলেবেলা থেকেই তোমার সাথে পরিচয়

যেদিন থেকে কিশলয় হাতে পেয়েছিলাম

সেদিনই দেখেছিলাম তোমার অদ্ভুত মূ্র্তি

স্থির প্রাজ্ঞতায় তাকিয়ে আছো নীরবে

কখনও তরুন ছিলে ভাবতে পারিনি

কোনোদিন অল্পবয়সের ছবি দেখা হয়নি

যত বড়ো হলাম যতো তোমার লেখা পড়লাম

অবাক হলাম, তুমিই তো দৃপ্ত যৌবন

তুমিই তো রুদ্ধ আবেগ, অনন্ত আধুনিক।

তোমার গানে উদ্বেল আমার যৌবন

তোমার কবিতায় অনুপ্রানিত আমার লেখা

তোমার ভাষায় মুগ্ধ দুচোখ বিনম্র শ্রদ্ধায়।

তবু আজো কেউ প্রাচীন বলে

তোমায় ফেলে দেয় আবর্জনার মতো

কষ্ট পাই, প্রতিবাদ করে উঠি

তুমি কালের ঊর্ধে, সময়ের বাইরে

যার চোখে ভেসে ওঠে আগামী শতাব্দী

যার মননে দেখা দেয় সুদূরের ভাবনা।

এখন চারদিকে বিষাক্ত বাতাস

পশ্চিমের ঢলে পড়া সূর্য নিস্তেজ

শাসক আর শাসিতের সংগ্রাম

এখন আরো তীক্ষ্ম, আরো ভয়ংকর,

তুমি ফিরে এসে ওদের জানিয়ে দাও

সাধারন হয়েও তুমি কতটা অসাধারন

আজো তোমার সবুজ লেখায়

প্রতিবাদ জাগুক, বুকে আসুক সাহস

আমরা যেন খুঁজে পাই মেরুদন্ড

আর সোজা হয়ে দাঁড়াতে শিখি আবার।
              -------------


৩) এক বৃন্তের ফুল
        জয়দীপ রায়

স্বপ্নের ফেরিওয়ালার দল
জিজ্ঞাস্যে বলেছিল
বৃন্ত মাঝে নাকি নয়ন আঁকা আছে
তবে নয়ন দেখি নাই
তবু রাখি দেখিয়াছি
মইদুলের হাতে
কাঁটাতারের বেড়া দেখিয়াছি,
বঙ্গাব্দের এক খোলা চিঠি
যমুনা হইতে
হাকিম সাহেব কেমন আইসে যমুনা
আমাগো কথা জিগায়?
কহনের লগ্যে
চিঠি আহে নাই
ঢিল ছুড়া দূরত্বের বাড়ি
আইজ দূর দেশ কহলায়
উনানের ধুয়া আসে
তেরঙ্গা বদলে গেছে ছোড়া
বৃন্তে দেখি তাই একটা ফুল
দুসরা ফোটে নাই ।
 --------------


২) এক কলমে রবি ও কাজী
                 ভারতী ধর

কবিপক্ষের জন্মজয়ন্তী বাসরে
   দুই কবির জন্ম জাগরণ,
মানবতার সাম্য আর প্রেমের দেবতীর্থে
   রবীন্দ্র-নজরুল চির অম্লান।

কাব্য জগতের পূজারী দুজনেই শুধু
               জীবন প্রণালী ভিন্ন,
নিয়মে বাঁধা বেড়া বাধা রবির জীবনে
               নজরুল মুক্ত,সকল বাধা ছিন্ন।

বন্ধ ঘরে রবির খেলা
          প্রকৃতির ঈশারায়,
বাঁধন হারা মুক্ত দুখুর
          সারা বিশ্বে খেলার ঠাঁই ।

মিলনের খোঁজে রবির মনে
       প্রবল প্রণয়ের আকর্ষণ,
নজরুলের ছিল না আড়াল আবডাল
            সবই মুক্ত বাতায়ন।

রবীন্দ্রনাথ ছিল আকাশের কবি
       নজরুল সমতলে জোয়ার ,
রবির নিসর্গ অনুভূতি,প্রেম
        কাজী বিদ্রোহের রুদ্রঙ্কর।

পৃথিবীর শিরায় শিরায় শিকড়ে শিকড়ে
           তাদের চেতনা আত্মীয়বৎ ,
বিচিত্রগামী সর্বত্রগামী ফারাক  তবু
           অন্তরের পরিচয় একই সঞ্চারী পথ ।

রবির কিরণে দূরীভূত যত
          ধরার মালিন্য আঁধার ,
নজরুলের ঝংকারে চুরমার হয়
            কারার লৌহদ্বার ।

রাজার ছেলে রবি প্রেমের পূজারী
                 সবাঙ্গসুন্দর,
নজরুল ছিল ক্ষুধাতুর প্রাণ
           বেদনা সাগরে জোয়ার।

তাই তো রবি পেতেছিল কান
           সে কবির বাণী লাগি—
যে ছিল মাটির কাছাকাছি
        কৃষাণের জীবনের সুখ দুঃখের ভাগী।
               ------ -----------



১)  রবীন্দ্র নজরুল প্রসঙ্গে
          অমিয়া গড়াই

দুইজন ছিলেন দুই ভিন্ন আঙ্গিকে,একজন প্রকৃতি প্রেমে উন্মুক্ত হয়ে প্রেমে ছিলেন বিলীন আর অন্যজন ছিলেন বিদ্রোহে উন্মুক্ত এক নবজাগরনের দিশারী৷তারা হলেন বাংলার কাব্যিক সাহিত্যে বহু আলোচিত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং কাজী নজরুল ইসলাম৷বিহারীলাল পরবর্তী যুগে রবীন্দ্র সাহিত্য সারা জাগিয়েছিল সর্ববাংলায়;ঠিক তার পরবর্তী মুহূর্তে উঠতি কবিগণ যখন রবীন্দ্র অনুসরণে সম কাব্যের অণুরননকারী ঠিক তখন রবীন্দ্র যুগের অবসান ঘটিয়ে সম্পূর্ণ বিদ্রোহী তেজের এক ভিন্ন কাব্যের উদভাবক দাতা ছিলেন নজরুল৷


যদিও দুইজন ছিলেন সম্পূর্ণ ভিন্নসমাজ ও ভিন্ন ভাবনার অধিকারী ,তবুও দুইজনেই গুরু শিষ্যের সম্পর্কে ছিলেন উত্তীর্ণ ৷দুইজন দুই ভিন্নমাত্রার কবি হলেও একে ওপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল৷মূলত নজরুলকে কবি হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানে রবীন্দ্রনাথ ছিলেন অগ্রগন্য৷তাই বলা যেতে পারে নজরুল ছিলেন রবীন্দ্র কাব্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ,অপরদিকে রবীন্দ্রনাথ ছিলেন নজরুল কবিতার অনুপ্রেরণাদাতা ৷এ প্রসঙ্গে বলা যায় রবি ঠাকুর নজরুল লিখিত 'ধূমকেতু 'কে আশীবার্দ জানিয়ে লিখেছিলেন-'আয় চলে আয় রে ধুমকেতু/আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু/দুদিনের এই দুর্গাশিরে,উড়িয়ে দে তোর বিজয়কেতন'-
আবার '১৪০০সাল'কবিতাটি যখন তিনি শতবর্ষের পরের পাঠককে বসন্তের পুষ্পাঞ্জলী পাঠানোর উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করেছিলেন-
"আজি হতে শতবর্ষ পরে
কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতাখানি
কৌতুলভরে আজি হতে শতবর্ষ পরে৷"
এর প্রতুত্তরে রবীন্দ্রনাথ এর প্রতি শ্রদ্ধা ও ভক্তি জানিয়ে নজরুল বলেছেন-
"আজি হতে শতবর্ষ আগে
কে কবি,স্মরণ তুমি করেছিলে শত অনুরাগে
আজি হ'তে শতবর্ষ আগে!"


       অতএব রবীন্দ্র নজরুল ছিলেন পরস্পর এর প্রতি শ্রদ্ধাশীল দুই ভিন্ন চিন্তাধারার কবি৷
                  -----------------


বিষয় : রবীন্দ্র-নজরুল (জুন সংখ্যা)

                            সূচিপত্র

১) দুইজন ছিলেন দুই ভিন্ন আঙ্গিকে,একজন প্রকৃতি প্রেমে উন্মুক্ত হয়ে প্রেমে ছিলেন বিলীন আর অন্যজন ছিলেন বিদ্রোহে উন্মুক্ত এক নবজাগরনের দিশারী৷........................
২) কবিপক্ষের জন্মজয়ন্তী বাসরে
          দুই কবির জন্ম জাগরণ.............
৩) স্বপ্নের ফেরিওয়ালার দল
জিজ্ঞাস্যে বলেছিল............
৪) ছেলেবেলা থেকেই তোমার সাথে পরিচয়.......
৫) আমি তোমায় চিনি
তুমি আমার চিন্তার অতীত!...............
৬) একই দোলাচল ছড়িয়ে যে
মূর্তিটি ভ্রাম্যমাণ....................
৭) রাত টা চোখে নেমেছে আগেই তবু জ্যোৎস্ন
 দেখি।.................
৮) আজও তোমরা মিশে আছো
জীবনের প্রতিটা পরতে পরতে.................
৯) রবীন্দ্রনাথ, আমার রবীন্দ্রনাথ .................
১০) রবি যখন মধ্য আকাশ, মুক্ত বিহগ ঠোঁট...........
            -------------------

বুধবার, ১৩ জুন, ২০১৮



               
মাধবীলতা

বৃষ্টি ভেজা মাটির সোঁদা গন্ধ মেখে চলতে থাকি
জল টুপটুপ পায়ে,
পুঁইমাচা থেকে ঝরে পড়া বৃষ্টিতে ময়ূরের ডানা আঁকতে থাকি আলকুশির গায়ে..
রক্তবর্ণ তেলাকুচো ফলের লোভে ছুটে আসে বুলবুলি অদ্ভুত অমোঘ আকর্ষণে,
আমার দুর্ণিবার বেদনা ঘূর্ণিঝড়ে ঘুরতে ঘুরতে
ডুকরে কেঁদে ওঠে শিরিষের ডালে..
কচুরিপানা থেকে টুপ করে ঝরে পরে একবিন্দু
জল আমার পলকহীন চোখের দৃষ্টিতে,
এইখানে শরীর আমার এলিয়ে পড়ে ফলন্ত যবের শিষের অগ্রভাগে..
মাধবীলতা অবিরাম গান গেয়ে যায় আলুক শালুকের সাথে শেফালিবনের মাঠে,
প্রেম মৃদু সৌরভ ছড়াতে থাকে রোদ্দুরের আনাচেকানাচে আর পুকুরের ঘাটে..
বেনের মেয়ে কলসী কাঁখে তপস্বীকে জল দেয়
করে যতন,
গোধূলি বেলার রক্তিম সূর্য যেন আজ সিঁদুর
কৌট আমের মতন..
মাধবীলতার শুভ্র পাপড়ি কোঁচড়ে কোড়ায়
চাতকী,
পাড়াগাঁয়ের কুঁড়েঘরে উষাকালে জন্ম নেয়
মাধবীলতা জাতকী...।।

@মধুমিতা নস্কর
  | অনেক রাতের শহর |
--------------------সুদীপ্ত সেন
যখন শহর শান্ত হয়, আওয়াজ গাড়ির শুনছে কান
তখন একটা জোনাকি জ্বলে আর একটা পোকাও মূল্যবান
গাড়ির চাকা দৌড়ে চলে, পাশ কাটিয়ে
ওভারটেক
ল্যাম্পপোস্টরা একলা জ্বলে,বন্ধ তখন চায়ের ঠেক
একটা পাগল করছে হাসি তার হাসিতে আর্তনাদ
শহর তখন একলা কাঁদে, দৌড়ে চলা বাকিরা বাদ
রাত্রি যত কালো হবে, শুকিয়ে যাবে শব্দ সব
একলা শহর তখন কাঁদে বাকিরা সবাই দারুণ নিরব!!


Translated version

| City of deep night |
-------------------- Sudipta Sen
When the city is calm, the ears are listening to the sounds of the vehicle
Then a firefly burns and a worm is valuable
The wheel of the car runs, passing the side
Overtake
The lamppost burns alone;
Has a crazy smile laughing at his laughter
The city is lonely, the rest of the others are running
The night is as dark as it is, all the words will dry up
The whole city is crying all the people silently!


       ♦♦♦♦♦♦♦

             
          Gireesh peruvaka
         ♥♥♥♥♥♥♥

Drawing teacher. Waynad district. Kerala

 Sir thanks a lot for drawing  the image.
আকাশ বুক ।
 শ্রী আশীষ ।
----------------+-------------------
আমি অবিচ্ছেদ্য উপভোগ
করতে পারি বসন্ত ,
কোকিলের মতো ,
মরুর বক্ষে যদি
চিরহরিৎ পায় ।
আমি আবির পূর্ণিমা
পান করতে পারি রোজ
চকোর পিপাসায় ,
আকাশ যদি মনে
বুক পেতে দেয় । 

----------------+-------------------

মৃত্যু।
অরূপ সরকার ।
     মৃত্যু
তুমি শাশ্বত; তুমি সুন্দর ।
       মৃত্যু
তুমি নিখাত, তুমি সত্য ।
তুমি তো করো না বিভেদ ।
সকল মানুষে এক আর অভেদ।

        মৃত্যু ,
   তুমিই  একমাত্র নিশ্চিত,
 তুমি তো কাউকে ঠকাও না;
তুমি তো খুব সুন্দর
যে তোমায় দেখে বেচে থাকা ছেড়ে দেয় ।

    মৃত্যু
তুমি তো আসবেই,এসো একদিন।
আমায় শান্ত করে দিও।

সোমবার, ১১ জুন, ২০১৮

সন্ধ্যা রাগ
---+++---
শ্রী আশীষ ।
বলাকার পাখা হতে ঝরা অনাবিল আনন্দ
সবুজের হিন্দোলে কম্পিত মেঘের ওড়নায়
সন্ধ্যা রাগ মিশে যায়
আমার হিয়ার ঝর্ণায় ।
মন ঊতল সুর দেয়
পাগল ভালো বাসা ,
দ্বিগ্বালিকার চপল নূপুর
উন্মনা প্রতিধ্বনি ,
বিমূঢ় বিহ্বল সুরসপ্তকের
বিমূর্ত মূর্চ্ছনা শুনি ।
(০৪-০২-০৫ এ অপ্রকাশিত লেখা )

রবিবার, ১০ জুন, ২০১৮



_____আমের ঠোঁটে কামড়
                সুনন্দ মন্ডল

সূর্য পড়েছে ঈষৎ সিঁদুরে হলুদ পোশাক
প্লেটে কেটে রাখা আমের মতো।
খবর এলো দক্ষিণের হাওয়ায় ফোনের তারে পাল্লা দিয়ে!
ভ্যাপসা গরম গলে গেল সুখের ছোঁয়ায়।

সবন্ধু ভাইটি এলো সশরীরে,
আমের ঠোঁটে কামড় বসানো হাসি নিয়ে।
জলফড়িং উড়তে শেখাল পাখনাবিহীন
নতুন বার্তা, নতুন মুখের গন্ধ পেতে।

আমিও ছিলাম ব্যস্ত কেমন
হারিয়ে গেল কবিতার ভিড়ে।
আলোচনা কিছুই তেমন হলো কই?
তবুও যেন অনেক কিছুই পেলাম আমের প্লেটে।

নিয়ম মেনে ব্যস্ত সূর্য আপ্রাণ চেষ্টা করে
আকাশের বিছানায় মুখ লুকাতে।
যদিও জমল সন্ধ্যেটা সেলফি যোগে
আমের গন্ধে জলফড়িং নাচল পেখম তুলে।
             ------------------

প্ৰথমে আসিফ, মাঝে সুনন্দ(আমি) ও শেষে সুদীপ্ত।

কাঠিয়া, মুরারই, বীরভূম

শনিবার, ৯ জুন, ২০১৮

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম হয়েছিল ৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪  ফরিদপুরে। বিংশ শতকের শেষার্ধে একজন প্রতিভাবান বাঙালি সাহিত্যিক। ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুর পূর্ববর্তী চার দশক তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব হিসাবে বাংলা ভাষী পাঠকদের কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিত ছিলেন। বাঙলাভাষী এই ভারতীয় সাহিত্যিক সাধক একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, সম্পাদক, সাংবাদিক ও কলামনিস্ট হিসাবে অনেক স্মরণীয় রচনা উপহার দিয়েছেন। তিনি আধুনিক বাংলা কবিতার জীবনানন্দের পরবর্তী সময় অন্যতম প্রধান কবি। একই সঙ্গে তিনি আধুনিক ও রোমান্টিক। তাঁর কবিতার বহু পংক্তি সাধারণ মানুষের আজ‌ও মুখস্থ। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় "নীললোহিত", "সনাতন পাঠক" ও "নীল উপাধ্যায়" ইত্যাদি কলম নাম ব্যবহার করেছেন।তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বই হল আমি কী রকম ভাবে বেঁচে আছি, যুগলবন্দী শক্তি চট্টোপাধ্যায় সঙ্গে, হঠাৎ নীরার জন্যে, রাত্রির রঁদেভূ, শ্যামবাজারের মোড়ের আড্ডা, অর্ধেক জীবন, অরণ্যের দিনরাত্রি, অর্জুন, প্রথম আলো, সেই সময়, পূর্ব পশ্চিম, ভানু ও রাণু, মনের মানুষ ইত্যাদি। বাংলা সাহিত্য ও তার অগ্ৰগতি নিয়ে নীললোহিতের অবদান আমাদের ও নবীন লেখক কবিদের এক অমূল্য সম্পদ রেখে গেছেন‌এই মহা মানবের সৃষ্টি। ২৩ শে অক্টোবর ২০১২ তার অন্তিম শ্বাস এই ইহলোক ত্যাগ করে।তিনি বাংলা সাহিত্য ও বাঙালির হৃদয়ে আজও অমর তার সৃষ্টির সৃজনশীলতার পরিচয়ে।


★নাম : সঞ্জয় কুমার মুখোপাধ্যায়
শিক্ষাগত যোগ্যতা: স্নাতক বানিজ্য শাখা,এম.বি.এ ম‍্যানেজমেন্ট , পি এইচ ডি (ম‍্যানেজমেন্ট) করছেন।

কাব্যগ্রন্থ :
একক কাব্যগ্রন্থ - ইচ্ছে পাখীর স্বপ্ন (২০১৮)




পুরস্কার :
** কাব্যশ্রী - ২০১৮ ( বিশ্ববঙ্গ বাংলা সাহিত্য একাডেমী ও যুথিকা সাহিত্য পত্রিকা),
* নিখিলবঙ্গ কবিতা প্রতিযোগিতা সেরা দশ,
** আলোর দিশা সাহিত্য সম্মান - ২০১৭ ( আলোর দিশা সাহিত্য পত্রিকা ),
* ছাড়পত্র পত্রিকায় কাব্য পাঠের পুরস্কার
* সিসৃক্ষু পত্রিকায় কাব্য পাঠের পুরস্কার,
* রজত জয়ন্তী সাহিত্য সম্মান - ২০১৮ ( যুথিকা সাহিত্য পত্রিকা),
* আনন্দ মুখর সাহিত্য পত্রিকা থেকে সেরা কবি সন্মান ২০১৮
* নজরুল একাডেমী ও কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে নজরুল মেলায়  স্মারক সন্মান ২০১৮।
* বিশ্ববঙ্গ বাংলা সাহিত্য একাডেমী ও যুথিকা সাহিত্য পত্রিকা থেকে ঘোষিত কাব‍্যভারতী সন্মাননা প্রাপ্ত ২০১৮(ঘোষিত)।


যোগাযোগ:-৯৮৩১৮৪০১৯৬/৮২৪০৯৪৪৬৫০
মৃত্যুঞ্জয়ী মাঝি
#সুকান্ত_পাল
.
ক্লান্ত শরীরে মেঘ জমেছে, -- শ্যাওলা জমেছে মনে,
বৃদ্ধা নদীরে বান ডেকেছে, -- যৌবন জোয়ারের টানে!
ফাগুন বনেতে রঙ লেগেছে, -- মোরগ ফুলের-ই মতো,
আপন মনেতে মাঝি পুষেছে, -- ছিন্ন খঞ্জনার ক্ষত!
.
নৌকা তখনও মাঝ দরিয়ায় -- অথৈ সাগরের জলে,
যাত্রী এখনও কূল কিনারায় -- রাত্রি গিয়েছে গলে!
এপার শুধু-ই স্থূল ভরসায়,-- ওপার মিলবে বলে,
ওপার ধু-ধু-ই বালু কণিকায়, -- স্বর্ণ শিখারা জ্বলে!
.
বৈরী বাতাসে পাল তুলেছে, -- দাঁড় কষেছে খেয়া!
শৌরি আকাশে চাঁদ উঠেছে, -- মন জুড়িয়ে কেয়া!
প্রাণ ভরিয়ে গান ধরেছে, -- দূর পাহাড়ের টিয়া!
স্নেহ কুড়িয়ে মাঝি চলেছে -- বৈঠা হাতে-ই নিয়া!
.
জীবন মরণের এই পারাবার -- গোলক ভূলোকে ধাঁধা,
শাসন বারণের ওই কারাগার -- অলীক অসীমে বাঁধা!
এই স্রোতস্বিনী, স্রোত হারাবার -- ভয় পুষেছে মনে!
মৃত্যু মিছিলে পা মাড়াবার, -- স্বাদ জেগেছে প্রাণে!


★ চলুন জেনে নিই উনি কে

জন্মস্থান - ধানশিমলা স্টেশন, ধানশিমলা, সোনামুখী, বাঁকুড়া,

শিক্ষাগত যোগ্যতা - সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ( বি.ই )

একক কাব্যগ্রন্থ - ১ হৃদয় বীণা,  ২ অনুভবের অনুভূতি!

যৌথ কাব্য সংকলন - ১ প্রথম অস্ত্র, ২ সরিষা, ৩ সৃষ্টি, ৪ প্রেমের ইতিকথা ৫ অচেনা ঘ্রাণ, ৬ প্রেম পর্ব, ৭ পরীর দেশে, ৮ কালো পূর্ণিমা

পত্রিকা -- দেশ, মাসিক কৃত্তিবাস, সন্দেশ, সংবাদ, উত্তরের সারাদিন, অনন্দবাজার, সাপ্তাহিক বর্তমান, কবি মশাই, আয়ুধ সাহিত্য পত্রিকা, শব্দায়ন, আলো, অন্তহীন সাহিত্য পত্রিকা, সহ বহু ছোটো বড় পত্রিকা,

পুরস্কার -- বিজ্ঞান মঞ্চ সাহিত্য পুরস্কার, সৃজনী সাহিত্য পুরস্কার, নক্ষাত্রাণি কবিতা কোলাজ বরেণ্য সম্মান, সহ কিছু ঘরোয়া সম্মান!


কবি মাসুদ বড়া'র কলমে
--------------------------
আচ্ছা, একটা কথা বলুন তো? আপনি যদি কোনো গল্প পোকা বা কবিতা প্রেমিক হোন, আর আপনার সামনে যদি খাতা ভর্তি গল্প বা কবিতার ডালি সাজানো থাকে কিংবা একটানা একমাস ধরে যদি আপনার রবিবারের বিকেল গুলো শিকল বন্দি করে রাখি তাহলে আপনার যে অবস্থা হবে সেটা আপনি আমার থেকে ভালো বলতে পারবেন। যাক প্রসঙ্গ এটা নয়,তবুও কিছুটা প্রাসঙ্গিক।একদিন খুব ইচ্ছে করছিল কিছুটা অতিরিক্ত সময় ব্যাগে করে নিয়ে শিয়ালদহ,পার্ক সার্কাস হয়ে যাদবপুর ফেরার পথে রেললাইনের ধারে চোখ বুলিয়ে প্রতিটা স্টেশন লাগোয়া ফুটপাত গুলোর সাথে বন্ধুত্ব করবো,কিন্তু কি করি বলুন,ওই সময় টার খুব অভাব,এদিকে সেই দিনই এক বন্ধুর বিয়ের নেমন্তন্ন না গেলেও একটা খারাপ দেখায়,পুরো শেষ লগ্নে গিয়ে হাজির হলাম।খাওয়া দাওয়া শেষে বাড়ি ফিরছি দেখি কয়েকটা ছোট বাচ্চা উচ্ছিষ্টে আধেক নিমজ্জিত হয়ে কি যেন হাতরাচ্ছে,বিশ্বাস করুন সেদিন রাতের ওই দৃশ্য দেখার পর আমার আর সাহস হয়নি ফুটপাত গুলোর সামনে বুক ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি।কিন্ত আমি, আপনি তো এই স্বাধীন প্রগতিশীল ভারতবর্ষের বিশেষ করে বিশাল জনঘনত্বের সমুদ্রে সাঁতার কাটছি,তাই স্বভাবতই স্বপ্নে মাঝে মধ্যে ওদের খিদের কান্না ভেসে আসে, এক টুকরো রুটির জন্য যে তারা কতটা আগ্রাসী হয়ে ওঠে সেটা বলবার নয়।আমরা ঘড়ির কাঁটার সাথে সমাজকে একদশক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবি,কিন্তু ওই ফুটপাত গুলো চোখে আঙুল দিয়ে বারবার দেখিয়েছে এখনো সময় হয়নি,আমরা ওসব কথা কানে নিইনা আমাদের ডিনারে গরম লুচি আর আলুর দম টাই শেষ কথা।ইতিমধ্যে বোধহয় খুবই বিরক্ত হয়েছেন এত খাপছাড়া লেখার চক্করে,কোনো প্রেমের গল্প বা রহস্য কাহিনী হলে মনেহয় ভালো হতো,কিন্তু কি করবো বলুন ওরা যে আজও আমাদের চোখে চোখে ঘোরে,ওদের খিদের কান্না টা ঠিক হজম করতে পারিনা তাই এই খাপছাড়া লেখা কিছুটা খিদে নিয়ে।


★ একক কাব্যগ্রন্থ :- বিকলাঙ্গ সহবাস



বই পেতে যোগাযোগ করুন:- ধ্যানবিন্দু (কলেজ স্ট্রিট) / 8116844002






** আজকের দিনে ওয়েব ম্যাগাজিন /ব্লগজিন কতখানি প্রাসঙ্গিক?  ওয়েব ম্যাগাজিনে লেখায় লাভ বা ক্ষতি কোনটা বেশি?

                      নাসির ওয়াদেন
১ম অংশ

অন্তর্জাল সাহিত্য প্রসঙ্গে বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, আজকাল হু হু করে এর বিস্তার ঘটছে । এর ভালমন্দ আলোচনা করার আগে আমাদের সাহিত্য প্রকাশের মাধ্যমগুলো জানতে হবে । ম্যাগাজিন সাহিত্য সৃষ্টির অন্যতম হাতিয়ার এবং নিজের সাহিত্য সৃষ্টিকে অপরের কাছে পৌঁছানোর এক মাধ্যম । আমরা দেখেছি যে, প্রযুক্তিকরণ হওয়ার আগে মানুষ তাঁর সৃষ্টির কথা বহুমানুষের কাছে তুলে ধরতে বিভিন্ন ম্যাগাজিনের ব্যবহার করতো। তার মধ্যদিয়ে সাধারণ থেকে বুদ্ধিজীবীগণ সেই ব্যক্তির সাহিত্যকর্ম সম্পর্কে অবহিত হতেন ।বর্তমান সময়ে চাহিদার সাথে সাথে প্রযুক্তিকরণের ফলে বিভিন্ন ধরনের প্রকাশ ক্ষেত্রেও সৃষ্টি হয়েছে, মানুষ সেই মাধ্যমকে ব্যবহার করে অল্প খরচে, স্বল্পশ্রমে, মূল্যবান সময় বাঁচিয়ে সহজে সম্পাদনা করে সাহিত্যকর্মকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দিতে পারছে । ফলে বলতে দ্বিধা নেই যে, কেউ কেউ এই মাধ্যমে সাহিত্যিক হওয়ার চেষ্টা করছেন ।এই মাধ্যমকে বর্তমানে একেবারেই  উড়িয়ে দেওয়া যাবে না ।
      আমরা সাহিত্য প্রকাশের ক্ষেত্রে লিটল ম্যাগাজিন ও বিগ ম্যাগাজিন বলতে অনেক কিছু বুঝি। সুবিমল মিশ্র তাঁর " উল্টো দূরবীন " পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে, 'লিটল ম্যাগাজিন ঘাঁটতে ঘাঁটতে এমন লেখা হঠাৎ হঠাৎ পেয়ে যাই বইকি চমকে ওঠার মতো, মূলত তরুণদের ।,,যা কিছু পেয়েছি চমকে দেবার মতো লিটল ম্যাগাজিনেই।বিগ ম্যাগে তথাকথিত সাহিত্য -সংস্কৃতির মাতব্বর পাক্ষিক কাগজে তো,,,"
  আমার মনে হচ্ছে যে, বিগ ও লিটল ম্যাগাজিনে স্থানসংকুলনের ক্ষেত্রে এক মস্ত বড়ো বাধা । ফলে অগণিত তরুণ লেখকদের লেখার ক্ষেত্রভূমি এই অন্তর্জাল সাহিত্য হতে পারে ।তবে, " অন্তর্জালের ঝঞ্ঝাটে না গিয়ে কাগজে কলমে পত্রিকা করার একটা ভালো দিক হল দিনে ক'খানা লেখার কটা ' হিট' হল তা চেক করার কোন দায় থাকে না ।একবার হাত চালান হয়ে গেলেই হল। ক'জন পাঠক কোন লেখাটা কতবার পড়েছেন সেসব খুঁটিয়ে জানার দায়িত্ববোধ বা স্পৃহা সম্পাদকের থাকুক ছাই না থাকুক উপায় থাকে না ।" এ প্রসঙ্গে লিটল ম্যাগাজিন নিয়ে কিছু আলোচনা করা যাক, কারণ লিটল ম্যাগাজিন আঙ্গিকে ছোট হলেও এর অন্তর্নিহিত রূপ বা দর্শন সুতীব্র গভীরে প্রোত্থিত। বাঙালি কবি সাহিত্যিক বা প্রাবন্ধিকদের আঁতুরঘর। বিশ্ব সাহিত্যের ক্ষেত্রে প্রতিথযশা সাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিকদের এই আঁতুর ঘরেই জন্ম। অবশ্য একথা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, লিটল ম্যাগাজিন সাহিত্যের মূল্যায়নে অস্পৃশ্য- মূল্যহীন প্রয়াস । তথাপি একথা জোর দিয়ে বলতে পারি যে, লিটল ম্যাগাজিনগুলোই প্রকৃত কবিদের উন্মোচনের একমাত্র ক্ষেত্রভূমি ,যেখানে ভাব ও ভাবনার সংমিশ্রণে ব্যঞ্জিত শব্দের মাধ্যমে বিকীর্ণ পথে অসংখ্য নবীন লেখক হাতকে মসৃণ ও কারুশীল করে তোলে । বাংলা সাহিত্যের আঙিনায় যে সকল কবিলেখকের লেখনী, মেধাশক্তির স্ফূরণ ঘটেছে, তা এরই হাত ধরে ।অনেকে আবার এইভাবে মতামত প্রকাশ করে থাকে যে, লিটল ম্যাগাজিনের মূল্য বলতে শূন্য -- কেবলমাত্র প্রলাপ কথন,পাগলামি ব্যতীত আর কিছুই না ।কতকগুলি পাগল একসঙ্গে উপবিষ্ট হয়ে মতামত সরলীকরণের মধ্যদিয়ে একটা ছায়া রূপের সৃজনে সংঘবদ্ধ হয়ে সেই বৃক্ষের ডালে নকল পুষ্প গেঁথে তাকে সৌন্দর্যায়ন করার প্রচেষ্টা করে ।
       যাক, এ নিয়ে নানাধরণের মতামত শোনা যায়, ফলে তাদের প্রত্যেকের মতের পক্ষে বিপক্ষে নানা যুক্তি তর্ক থাকতে পারে । আমার মূল বক্তব্য ছিল, ওয়েব ম্যাগাজিন বা ব্লগজিন আজকের দিনে কতখানি প্রাসঙ্গিক । এ বিষয়ে আলোচনা করার আগে ওয়েব ম্যাগাজিন নিয়ে কিছু বলা যাক । ছয়ের দশকের সময় থেকেই আমেরিকার নানা শহর থেকে ছাপা পত্রিকা বের হতো ।সংখ্যায় কম হলেও এখনো বেরোয় কিছু ।তবে এই সব সাময়িক ছাপা পত্রিকার চেয়ে মার্কিনমুলুকেও বাংলা ভাষা ও সাহিত্য চর্চার প্রসার এবং প্রচারে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছে 'ওয়েবজিন ও ওয়েব ভিত্তিক প্রকাশনা ।সবচেয়ে পুরোনো ওয়েবজিন 'পরবাস'। কুড়ি বছর অতিক্রম করেছে।
   ২০০০ সালে আর এক ওয়েবজিনের প্রকাশ 'অবসর ' ,এতে মাসে দুবার মননশীল প্রবন্ধ, রম্যরচনা ইত্যাদি প্রকাশ করে থাকে ।২০০৪ সালে মার্কিন দেশে "গুরুচাণ্ডাঌ" ওয়েবজিনের প্রকাশ ।সাম্প্রতিক নানা নিয়ে সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায়ের কলম উল্লেখযোগ্য । নয়ের দশকের শেষেরদিকে আমেরিকা থেকে আর্যনীল মুখোপাধ্যায় প্রকাশ করেন " কৌরব" অনলাইন পত্রিকা ।বাংলাদেশ থেকে ওয়েবজিন " গল্পপাঠ " প্রকাশ করেন কুলদা রায়।সুমিত রায় " গীতবিতান " সাইট তৈরি করেন রবীন্দ্রানুরাগীদের জন্য ।
        যেহেতু প্রাত্যহিক জীবনে হাজারো কাজের সঙ্গে প্রযুক্তি যুক্ত হয়ে যাচ্ছে। কেনাবেচা থেকে শুরু করে দৈনন্দিন জীবনের নানাকাজ অনলাইনে হচ্ছে ।ফলে শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতিও এখন প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে পড়ছে ।খরচের তুলনা করলে লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশ করা ব্যয় সাপেক্ষ,কাগজ, কভার ডিজাইন, প্রিন্ট, বাঁধাই খরচা আছে ।
     
২য় অংশ
কিন্তু ওয়েবজিন প্রকাশের ক্ষেত্রে সেরকম খরচা নেই । তবে, ইদানীং সাহিত্য লেখকদের ওয়েবজিনের দিকে বেশি বেশি করে ঝুঁকতে দেখছি ।তার ফলে দিন দিন ওয়েব ম্যাগাজিনের সংখ্যা বাড়ছে ।বাংলাভাষায় প্রচুর ওয়েব ম্যাগাজিন প্রকাশিত হচ্ছে, মূলত যেগুলো বেশ ছড়িয়ে গেছে, কবিতা উৎসব, শব্দের মিছিল, রংরুট, জিরো বাউন্ডারি কবিতা, অন্যনিষাদ,পদক্ষেপ, বাক, এখন তরঙ্গ, জলফড়িং, মেঘ বৃষ্টি রোদ্দুর ইত্যাদি ইত্যাদি ।তবে ওয়েবজিনের কিছু কিছু ক্ষেত্রে সম্পাদনার ত্রুটি থাকছে ।ফলে লেখার দুর্বলতা ও মানহীনতা অনেক ওয়েবজিনে লক্ষ করছি ।বানান ভুল তো আছেই, ফলে শব্দের গাম্ভীর্য বিনষ্ট হচ্ছে ।আবার কিছু কিছু ওয়েব ম্যাগাজিন বিগ ম্যাগাজিনকেও টেক্কা দিতে সক্ষম বলা বাহুল্য ।
এখানে দুটো কথা না বলে পারছি না যে, ওয়েব ম্যাগাজিন বেশি বেশি প্রকাশ হতে থাকলে লিটল ম্যাগাজিন ও দৈনিক সাহিত্যের পাতার মূল্য কমে যাবে, এটা সম্পূর্ণ ঠিক কথা নয়,তবে পাঠক সংখ্যা কিছুটা কমবে নিঃসন্দেহে ।তাই,ওয়েব ম্যাগাজিন হোক প্রকৃত সৃজনশীল পত্র, শিক্ষা সংস্কৃতির ধারক ও বাহক ।সুস্থ সংস্কৃতি চেতনা, শুদ্ধ ভাষাজ্ঞান, নান্দনিক পরিশীলিত রুচি ও মানসিকতা গঠনের প্লাটফরম হিসেবে । লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশ থেকে প্রেরণ করা পর্যন্ত যে সমস্যা থেকে থাকে, ওয়েব ম্যাগাজিনে সেই সমস্যা নেই । ফলে দ্রুততর পর্যায়ে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব এবং ক্ষনেকের মধ্যে সারা বিশ্বে ছড়িয়েও দেওয়া যায়।
     ওয়েব ম্যাগাজিন প্রকাশের লাভ ক্ষতি বিচার করতে গেলে অনেক কিছু বেরিয়ে আসে, তবে দক্ষ সম্পাদনার দ্বারা পরিশীলিত পত্রিকার মূল্য সর্বদাই থাকে ও থাকবে বলে মনে করি ।পরিশেষে, তবুও বলি যে,বাণিজ্য বৃদ্ধির পরোয়া না করে, পুঁজির শাসনতন্ত্র উপেক্ষা করে, প্রতিবাদী চেতনাকে উস্কে দেওয়ার সহজ মাধ্যম যেমন লিটল ম্যাগাজিন, তেমনি ওয়েবজিন বা ব্লগজিন । যা নতুন নতুন লেখক,কবি, প্রাবন্ধিকদের নির্মাণে এগিয়ে থাকে। এখানেই লিটল ম্যাগাজিনের মতো ওয়েবজিনের গুরুত্ব কম নয় আমার কাছে । ধন্যবাদ ।

** কৃতজ্ঞতা স্বীকার বিভিন্ন লেখকের লেখা ও ইন্টারনেট সহযোগিতা।
                     *******

       নাসির ওয়াদেন
       মুরারই, বীরভূম
       শিক্ষকতার পেশায় নিযুক্ত
      ফোন -- 8926625921

♦লেখা বই:-১| বুক ছুঁয়েছি নগ্নরাতে, কাঞ্চীদেশ প্রকাশনী, বীরভূম,  ২| প্রিয় ফুল ও অভিমানী ইচ্ছেরা,কবিতা প্রতিমাসে, কলকাতা   ৩| অন্ধকার কুরুক্ষেত্র খোঁজে , দৌড় প্রকাশনী, কলকাতা  গল্প বই ১|অথবা অন্য পৃথিবী  কাঞ্চীদেশ প্রকাশনী  বীরভূম ,

সম্মান ও পুরস্কার :-সম্মান কাঞ্চীদেশ সাহিত্য পুরস্কার ২০১২।







এক জ্যৈষ্ঠের সকাল

সকালটা আজ মেঘে ঢাকা। কেমন একটা ভ্যাপসা গরম। রোদের তাপটা নেই বলে সকাল সকাল ছাদে চলে এলাম। দেখি মেঘেরা আকাশ জুড়ে আধিপত্য বিস্তার করেছে। অনায়াস ছোটাছুটিতে রয়েছে মেতে। পাশের ছাদে কিছু পাখি কিচিরমিচির করছে। একটা কাক ও বসে কা কা ডাকছে। সকাল সকাল একটা একাকীত্বের ঘোরে চলে গেলাম। ছাদের রেলিং বরাবর হেঁটে কিছুক্ষন সকালিত হাওয়ার স্পর্শ নিলাম। যদিও ঠাণ্ডা নয় তবুও ভেতরের ভ্যাপসা গরমটা এখানে নেই। অনেকটা যেন মুক্তিরও স্বাদ। মেঘেদের দলকে ভেসে যেতে দেখে মনে হল- মেঘেরা মুক্ত, অবাধ তাদের গতি। কত সহজেই তারা আকাশে উড়তে পারে, পাহাড় নদী সমতল কতকিছু অনায়াসে অতিক্রম করে।
একটু একটু করে রোদের ছোঁয়া পড়তে লাগল মেঘেদের গায়ে। কালো মেঘের গায়ে রোদের সোনা রঙ মনটাকে আরও ভাল করে দিল। আকাশে যেন এক একটি উপত্যকা তৈরি হচ্ছে। মেঘেদের সরিয়ে এবার রোদ উঁকি দিতে লাগল। জ্যৈষ্ঠের রোদে বেশিক্ষণ থাকা যাবে না। তাকিয়ে দেখি পাখিগুলোও উড়ে পাশের আমগাছটিতে বসল। ভাবলুম শুধু আমি নয়, সমস্ত জীবই আমার মতো করে ভাবে, শুধু প্রকাশের মাধ্যমটা পৃথক।


★মৌসুমি ভৌমিকের সম্মান ও পুরস্কার
---নক্ষত্রাণি সম্মান
যূথিকা সাহিত্য পুরস্কার

★একক কাব্যগ্রন্থ - যাপন


             

বই পেতে যোগাযোগ করুন :-https://goo.gl/ivub8T

বৃহস্পতিবার, ৭ জুন, ২০১৮

অলিখিত প্রেম
---------------------
ঋতুপর্ণা ব‍্যানার্জী
০৭/০৬/১৮

ভোরের আকাশ ঋতুমতী হয়
পলাশের রঙ মেখে...
সাদা বেডশীটে লেগে থাকা
রক্তের ছাপ যেন!
হঠাৎ গ্রহণের গ্রাসে
নিমেষে উধাও লাল

সূর্য হারায় নীল অবেলায়
কোথাও বেজে ওঠে পুরোনো ক্ল‍্যারিওনেটের সুর
নীরবে চলে অন্তরালের ছোঁয়াছুঁয়ি খেলা

ছবিঘরে তাকিয়ে আছে আগুন চোখো এক নারী
আস্ত শ্রাবণ খুঁজে বেড়ায় প্রতিটি ঋতুতেই

পুরুষের তমোঃগুণ ধোঁয়া হয়ে ওঠে
যেন বা ডানকিল মরুভূমির ইথিওপিয়ান

একটা চিরকুট উড়ে আসে বেনামী নামের আগড়ে
অলিখিত কিছু প্রেম অজস্র কবিতা হয়ে ঝরে পড়ে
লেখা রয় হৃদকোষ চোঁয়ানো রক্তের শিরোনামে!!

বুধবার, ৬ জুন, ২০১৮

বিরামচিহ্ন
আকাশ সৎপতি

একই দোলাচল ছড়িয়ে যে
মুর্তিটি ভ্রাম্যমাণ ,
মুহূর্তের ব্যপ্তি ঘটিয়ে যে ফুল
দেবতার স্পর্শ পায়
নিঃশব্দ পুকুর পাড়ে
যে চিত্রকল্প গুলি স্থির দাঁড়িয়ে থাকে
যে মানুষ হঠাৎই বন্ধু হারায়
রাত্রি গ্রাস করে যে সব তারাগুলিকে
তারাই মুহূর্ত , প্রান্তসীমার পথিক
মাঝরাত , সেঁজুতি আর বিরামচিহ্ন ।

মঙ্গলবার, ৫ জুন, ২০১৮

(পরিবেশ দিবসে ছোট্ট নিবেদন)

_____গাছ
             সুনন্দ মন্ডল

রোদ পোড়া উঠোন,
            বৃষ্টিহীন শুষ্ক পাথুরে বুক
            ‎তোমাতে কান্না লুকিয়ে মানবিক।

ঝড় ও ঝরাপাতা --- মৃত্যুর পদধ্বনি,
         মর্মর আওয়াজ, বেসুর!
লাগাতার ধাক্কা গায়ের প্রতি লোমে।
   
                          শাখা-প্রশাখার গলিপথ
লাল লাল শিরায় টানা ঝংকার
        অসাবধানতা, অনিবার্য সংকলন।

পরিবেশ ও পরিবেশের সংস্কৃতি
গাছের ছালে আঁকা
       বিদগ্ধ অমানুষিকতা খোদাই।

দিনরাত ঘর্ষন --- অনিয়মিত কাটার উৎসব
মানুষ ভাবেনা! অক্সিজেন লুপ্ত বায়ুমন্ডল
        প্রতিনিয়ত বাড়ায় বিপদ।

গাছের বদলে গাছ বেঁচে থাকার অব্যর্থ মলম।
                 ---------------

কাঠিয়া, মুরারই, বীরভূম

সোমবার, ৪ জুন, ২০১৮

অবহেলিত বনানী ।
অরূপ সরকার ।

উন্নয়ন চলছে ,মানুষের গতি দুর্বার হচ্ছে।
কিন্তু দেখেছ কী কেউ যে কাঁদছে।
দেখেছ কী তাদের চোখের জল,
আজ আর বৃষ্টি আসেনা ,
চেয়ে রয় সভ্যতা তার প্রতীক্ষায় ।
প্রতীক্ষার  অবসান ঘটেনা,
সভ্যতা আরও অথর্ব হয়,
তারা কেবল শুষ্ক বনানীর দিকে চেয়ে থাকে।
কখন আসবে  সজল বারি ধারা ?
কোথায় সে সভ্যতার সৃষ্টিকারের রা?
সভ্যতা শুনেছ যাদের আর্তনাদ?

শুক্রবার, ১ জুন, ২০১৮

-: আমার শহর :-
ওই শহরে লোকজনের বড্ড আনাগোনা
এই শহরে আমি ভারী একলা
নরম ঘাসে‌ শীতল অনুভূতি জড়িয়ে উদাসী চিত্তে দাঁড়িয়ে আছি
একাকিত্বের কঠিন আবর্তনে
অভিশপ্ত স্বপ্নের প্রহর
জড়িয়েছে পোড়া মনে বাস্তবতার চাদর ।
                 -অলক দেবনাথ