শ্রাবণের শেষ বেলায় বিষাদের শ্রাবণধারা
শ্রেয়া রায়
সকাল থেকেই অঝোড়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছে, আকাশে কালো মেঘ ঘিরে চারিদিকে আঁধার নেমে এসেছে। রাস্তা ঘাটে জলে থৈ থৈ। তবুও কাজকর্ম তো আর থেমে থাকলে চলবে না। রোজের মত পেখম বেরিয়ে পড়ল অফিসের উদ্দেশ্যে। মুষলধারার বৃষ্টিতে অর্ধ ভিজে অবস্থায় পৌঁছালো অফিসে।
অফিসে হাজার কাজের ব্যস্ততার মধ্যেও পেখমের উদাসীন মন বারে বারে অতীত স্মৃতির ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে। মনে পড়ে যাচ্ছে শ্রাবণের শেষ বেলায় হারিয়েছিল অভির চোখের প্রথমবার।
মন গুনগুন করে উঠেছিল কবি গুরুর গানে..
"কেবল আঁখি দিয়ে আঁখির সুধা পিয়ে,
হৃদয় দিয়ে হৃদি অনুভব..."
প্রথম প্রেমের প্রথম অনুভূতি শুরু হয়েছিল এমন শ্রাবণ ধারায়। সেই বৃষ্টিভেজা দিন, একসাথে ভেজার জন্য অভির জোর করা, বৃষ্টিতে ভিজে আইসক্রিম খেয়ে আবার একসাথে দুজনের ঠান্ডা লেগে জ্বরে ভোগা... কতই না পাগলামিতে ভরা ছিল দিনগুলো। সেদিনের শ্রাবণ ধারায় ছিল এক অদ্ভুত প্রেম-আনন্দ-অনুভূতি। পেখমের মনময়ূরী আনন্দে নেচে উঠেছিল..মেতে উঠেছিল গুনগুনিয়ে সেই কবিগুরুর গানেই...
"এমন দিনে তারে বলা যায়,
এমন ঘনঘোর বরিষায়....."
বৃষ্টির সোঁদা গন্ধে ছিল অভি আর পেখমের মিষ্টি প্রেমের ঘ্রাণ।আজ সবই অতীত.. অতীত স্মৃতির পাতায় আজ সবই বন্দি। অভির উপহার দেওয়া মুহূর্ত গুলো পেখম আজও যত্নে সাজিয়ে রেখেছে তার একান্তের হৃদয় কুঠুরিতে। যদিও অভির মনে আজ পেখমের জন্য নেই কোনো অনুভূতি.. নেই কোনো স্থান... কারন সে ঘর বেঁধেছে অন্য মনের মানুষকে নিয়ে.. ভুলে গেছে পেখমকে..
আজ বাইরের শ্রাবণ ধারার সাথে পেখমের আঁখি জুড়ে ঝড়ছে অঝোরে কান্নার বরিষধারা। ব্যর্থ প্রেম আজও খুঁজে যায় সেই অভিকে... অভির স্পর্শকে... ফিরে পেতে চায় সেই অভির মনটাকে.. যেই মনটা একসময় ছিল শুধু পেখমের..।
Daroon hoyache
উত্তরমুছুন