ভিড় থেকে সরে আসি। সমুদ্র জানে না কারও নাম। অনেক লেখার শেষে সাদা পাতা এখনও আরাম...শ্রীজাত

সোমবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৮

(আজ এখনই প্রবল ঝড় বৃষ্টিতে আমার ছোট্ট অনুভূতি)

______মেঘদূত
                 সুনন্দ মন্ডল

বৃষ্টি তুমি মেঘের পাঠানো দূত!

ছেড়ে এলে কালো আকাশ,
মর্ত্যলোকের আঙিনায়।

উষ্ণ বায়ু হালকা হয়ে খবর দিলো তোমায়
তুমি ভেজালে রুক্ষ মাটি,
মনের খরা করলে দূর বাসনায়।

দিগন্ত ঘিরেছে অশান্ত ঝড়
ধূলি ওরে এ-ঘর ও-ঘর,
পরিবেশে এলে তুমি দূত হয়ে।

গন্ধ ভেসে এলো সৃষ্টির উচ্ছ্বাসে
ধুয়ে দিলে অমলিনতা
ঝড়ের প্রতিহিংসার দাবানলে।

বৃষ্টি তুমি মেঘের পাঠানো দূত!

নিয়ে এলে খই ছড়ানো শীতল ভালোবাসা,
প্রাণের নব আনন্দে কলকল্লোল।

বৃষ্টি তুমি ছুঁলে সকল মনের তপ্ততা,
জড়িয়ে নিলে কালিমা সকল!
উপহার দিলে তকতকে গৃহের দুয়ার।
             ---------------

কাঠিয়া,মুরারই, বীরভূম

রবিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৮

                 এক্সক্লুসিভ অংশুমান



♦★♦ নিজেকে রেট করার মতো জায়গায় আমি এখনও পৌঁছাইনি না কবিতার জগতে না মানুষ হিসেবে ওই ২-৩ বেশি নিজেকে দোওয়া যাবে না♦★♦

--------♦--------♦------♦-----------
কবি শ্রী অংশুমান করের সাক্ষাৎকার নিলো জলফড়িং-র টিম তাঁর কাজের চাপেও তিঁনি আমাদের টাইম দিলেন আর দূরত্বের জন্য ফোনেই সাক্ষাৎকার নেওয়া হলো রাত দশটার পর আমরা কৃতজ্ঞ তাঁর কাছে।

♥নমস্কার জলফড়িং ওয়েব ম্যাগের পক্ষ থেকে আপনাকে স্বাগত জানাই।

♥অংশুমান:- তোমাদেরও শুভেচ্ছা।

১.)সমসাময়িক সময়ে অংশুমান কর সাহিত্যের আকাশে একটা উজ্বল নাম এই যে অংশুমান কর থেকে কবি অংশুমান কর হয়ে উঠা এই ব্যাপারটার আপনার উপলব্ধি কেমন?

উ:-উপলব্ধি কী বলবো বলো, আমি এসব ভাবিনা শুধু এটুকুই বুঝি কবিতা না লিখে আমার কোনো উপায় নেই এই বিশ্বাসটাই হয়ে গেছে আমার জীবনে। আর পাঠকের কাছে আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।

২.) আমরা জানি আপনি 'সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের' পত্রিকা "কৃত্তিবাস"-র সহ সম্পাদক সময় টা যদি একটু বলেন?

উ:-আসলে কাজটাকে  এগিয়ে নিয়ে যেতেই আসা ওই ২০১৪ থেকে আমি আর শ্রীজাত মিলে সহ সম্পাদকের কাজ করি।

৩.)কত বছর বয়স থেকে লেখালেখির শুরু?

উ:- এটা বলা খুব মুশকিল,অনেক ছোটো থেকেই লিখছি।


৪.) আপনার প্রথম লেখার নাম মনে আছে?

উ:- নানা একদমই মনে নেই,সেই লেখা কোথায় হারিয়ে গেছে নেইও আমার কাছে।

৫.)আপনার নতুন পদক্ষেপ?

উ:- বর্ষার সময় আমার একটা নতুন বই বেরবে দেখা যাক কী হয়।

৬.)কৃত্তিবাস নতুনদের সুযোগ দেয়?

উ:- খুব বেশি করে সুযোগ দেয়, তরুণদের জন্য কৃত্তিবাসের দরজা সবসময় ওপেন আমরা সবসময় চাই তরুণরা তাদের শ্রেষ্ঠ লেখাটা কৃত্তিবাসে দিখ।


৭.)শুধু লেখা কী পেট ভরাবে আপনার কী মনে হয়?

উ:- সেটা depend করে, সবার ক্ষেত্রে তো নয় কারোর ক্ষেত্রে লেখাই অন্ন সংস্থানের উপায়। তবে যদি কেউ এমনটা মনে করে শুধু কবিতা লিখে উপার্জন করবো তাহলে সেটা পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে অসম্ভব।

৮.) আপনার পাওয়া প্রথম পুরস্কার এবং কীসের জন্য পেয়েছিলেন? সেই সময়ের অনুভূতি? আপনার লেখা বই-র নাম গুলি যদি বলেন?

উ:- প্রথম পুরস্কার কবিতা পাক্ষিক আমার প্রকাশিত কাব্য গ্রন্থ  "খেলনা পিস্তল" এর জন্য পেয়েছিলাম। এক ফর্মার বই ভাবিনি এর জন্য পুরস্কার পাবো তবে যখন পেলাম সত্যিই খুব উৎসাহিত হয়েছিলাম।
লেখা বই~ 'পিগমিরা লিখছে' ; 'একজন বিষণ্ণ  মানুষ কী কী করে' ; 'স্ব নির্বাচিত অংশুমান' ইত্যাদি।

৯.) আজকের দিনে দাঁড়িয়ে আপনার কী মনে হয় পাবলিশার্স আপনার বাড়ী এসে লেখা নিয়ে যাবে?

উ:- এটা নির্ভর করে কে কত বছর লিখছে, তার পাঠক সংখ্যা কেমন এই সব কিছুর ওপরে। আবার এমনও দেখছি  খুব নতুনদের লেখা নিয়ে বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা  স্বযত্নে  সম্পূর্ণ নিজেস্ব  ব্যয়ভারে বই ছাপছে।

১০.) সমাজের প্রতি অংশুমান করে'র বার্তা?

উ:- পরস্পরকে আরও বেশি শ্রদ্ধা করতে পারলে সমাজটা আরও সুন্দর হয়, কী বলেন?

১১.) নতুন যারা লিখছে তাদের প্রতি উপদেশ?

উ:-আমি উপদেশ দেওয়ার মতো জায়গায় পৌঁছাতে পারিনি আর মনেও করিনা কবিতা লেখার ক্ষেত্রে উপদেশ দেওয়া ভালো কাজ,নিজের আনন্দে সবাই লিখুক।

১২.) আপনি লিটিল ম্যাগাজিনকে সাপোর্ট করেন?

উ:- আমি লিটল ম্যাগাজিনের কর্মী তাই নিশ্চয় সাপোর্ট করি।

১৩.) আপনাকে ফেসবুকে দেখিনা খুব একটা।

উ:-কাজের চাপ থাকায় ফেসবুকে টাইমে দিতে পারিনা খুব একটা।

১৪.) আজকের দিনে ওয়েব ম্যাগ অসাধারণ সাড়া ফেলেছে বা ফেলছে কী বলবেন?

উ:-ওয়েব ম্যাগকে সাপোর্ট করি তবে ভালো লেখা  প্রকাশ করা ও পাঠক পাওয়ার ক্ষেত্রে আমার মনে হয়না সবকটা ওয়েব ম্যাগাজিন একই জায়গায় আছে।
তবে একদিন ওয়েব ম্যাগাজিন শুধু বিকল্প নয় লেখালেখির অনিবার্য মাধ্যম হিসেবে প্রকাশ পাবে।


♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥  
     |        অংশুমানের ভালোলাগা      |
     ♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥
♦. প্রিয় রঙ:- সাদা রঙের প্রতি আকর্ষন আছে

♦. প্রিয় পোশাক:- সেটা depend করে Occasion-র ওপর

♦.প্রিয় ঋতু:- দুটো। বসন্ত আর বর্ষা

♦.প্রিয় খাবার :- বিরিয়ানি

♦.প্রিয় কবি:- এটা বলা সম্ভব না। অনেকজন আছেন।

♦. প্রিয় কবি সমসাময়িক :-এই ভাবে একটা নাম বলা উচিত না। অনেকের লেখাই আমার ভালোলাগে।

 ♦.একাধিকবার পড়েছেন এমন কবিতা:- আমার লেখা "টেলিভিশন" কবিতাটি।

  ♦.আপনার চোখে বিশ্বকবি:- ক্রমশ আমার জীবন  হয়ে যাচ্ছেন।

♦. ছুটির দিন গুলো কীভাবে কাটান:- ছুটির দিন বলে কিছু আছে বুঝতে পারিনা আর যদি পাই ঘুমিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করি।
👀👀👀
♥★♥  কবিতার জন্য আমাকে একটু অপেক্ষা করতে হয় ইচ্ছে করলেই লিখলাম এরকম ভাবে পারিনা তাই অপেক্ষা করতেই চাই আমি♥★♥

শনিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৮

     ♦ দৃষ্টিকোণ ♦
------------সুদীপ্ত সেন(ডট.পেন)

কোর্ট থেকে ফিরে আসা কোর্টে অন্য রকম অন্যের গন্ধের গন্ধ,
নতুন কেসের মাথা ধরা স্টাডির ডায়রির পাতা ঘেঁটে রাত কাভার,
এরওপর চশমার পাওয়ার, না দেখা চোখে ঘোলাটে সাদার কাছে  দায়ী,
সম্পর্কে বিচ্ছেদ কচি-কাচা ছেড়ে দূরে...
ডয়ার হাতরে চুরুটের স্পর্শ আদরে,
এর মাঝে ভাগাভাগি হয়ে গেছে কিছুটা
কিছু শেখা আর শিখে যাওয়ার মাঝে এক্সপেরিমেন্ট করছে জীবন,
দু-ফোটা চোখের জল সাদা ঘোলাটে থেকেও পড়ে দৃষ্টিকোণে,
আমি কিছু ভাবিনা আর ন্যাপথলিনের গন্ধ শুঁকি,
      আর.....
বাড়ীর উঠানের ঝড় পাতলা ডানায় হওয়াই মিশিয়ে দিলাম আলগোছে!!

         

শুক্রবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৮

" কালো নৌকোর মাঝি "
           গগন ভুঁইমালী
আঘাত হানলো ঢেউ এসে হঠাৎ কালো নৌকোর বুকে,
যার মাঝি ছিল গভীর ঘুমের মধ্যে ঘুম ছিল প্রেমিের মত মাঝির চোখে ।
চোখে ঘুম মৃদু বাতাস
এবং ঢেউয়ের হাহাকার,
সাদা কালো স্বপ্ন বিভোরে
দুটি চোখে অতি ঘোর অন্ধকার।ব্যাকুল হাওয়া খেলছিল নীল পালের সনে,
কালের কিছু চাওয়া পাওয়া
রয়েছে মাঝির চোখের স্বপ্নে।
আঘাত হানলো ঢেউ এসে কালো নৌকোর বুকে,
আঘাত লাগল হঠাৎ
মাঝির নরম বুকে ।
যার মাঝি ছিল তখনও
গাঢ় ঘুম ঘোরে,
ক্রমাগত নৌকো চলে
সুগভীর ঘুম, ধূসর কুয়াশার ভিতরে।
-: ক্লান্ত :-

তুমি তো কবেই পালিয়ে গেলে,
পড়ে শুধু প্রতিশ্রুতির শিলান্যাস,
তুমি পাগল হৃদয় বহে,বাস্তবতার
পরিহাস্।
রক্তিম শীথিল ভরাডুবি মন, দোটানায় আজ একাকার
ঘরে বসে শুনি নিশুতি রাতে
অন্তর্ভেদি এক চিৎকার
নিঃশব্দ পথে বাকরুদ্ধ বেদনায়
হোঁচট খাই বারবার,
নির্বাক অধ্যায় হয়েছে বিমূঢ়
পাই না কোনো প্রতিকার
দুরন্ত স্বপ্নময় জগতে ঠিকানাহীন
ফেরারী দূরস্ত মন
কলঙ্কিত নির্বাচিত সঠিকের
আজ অনাথ দিনযাপন ।
     -অলক দেবনাথ
জীবন ছায়া
-------------------
ঋতুপর্ণা ব‍্যানার্জী

সময় শরীর সঙ্গী খোঁজে নির্জনতার

একটা সরীসৃপ কালো ছায়া নামে পরিপাটি ত্বকের আনাচে কানাচে

কপালের তাপ শুষে নেবার বর্ষা নেই

প্লাস্টার খসা লাল ইঁট থেকে উঁকি মারে অন্য একটা কাল

চাঁদ চোয়ানো ঘরে গ্রামোফোনে বাজে
ন‍্যাট কিংকোল
"হোয়েন আই ফল ইন লাভ"

সারি সারি বই ঘুমিয়ে আছে স্মৃতির লকারে

মাকড়সার জালে আবৃত্ত সেই ছায়া ছায়া কাল লিখেছিল তিনটি প্রেমের কবিতা অতি পুরাতন উইপোকায় কাটা জীবন প্রচ্ছদ।।

বৃহস্পতিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৮


কে তুমি এ বিশ্বলয়ে সাজিয়ে দিচ্ছ সুর মহা
সমারোহে♥♥♥
       


যে সমাজে আমার কোনো জায়গা নেই সেই সমাজে আবার গাইছি গান♪♪♪♪♪
 

 
  ♪♥সুরের জাদুকর অনুপম রায়♥♪

বাংলা সুরের আরেক নাম অনুপম হ্যাঁ অনুপম রায়। ১৯৮২ সালের ২৯ মার্চ জন্মানো এই ছেলেটি সেদিন হয়তো জানতোনা তারই গলায় গোটা বাংলা দোল খাবে কিন্তু আজ সেটায় হয়েছে কাঁটাতার ভেদ করে তার কন্ঠ চলে গেছে দুই বাংলার মানুষের কাছে এটা শুধু তার নয় তার বাব-মারও কৃতিত্ব। ছেলে যখন মেডেল পাচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারিং-এ আর একটা ভালো চাকরি পেয়ে নতুন পা রাখছে একটা নামী কম্পানিতে ঠিক তখনই বাংলা মুভির প্রতি নাক বাঁকানো বাঙালীদের কথা না ভেবেই বাংলা সিনেমা গেয়ে ওঠলো আমাকে "আমার মতো থাকতে দাও" ফিরতি পথের বাঙালীরা থমকে দাঁড়ালো সেই সুরে আর মেনে নিল ঠিকই তো তোরা যা বলবি বল আমরা আমাদের মতই থাকবো কিন্তু গলায় থাকলো অদ্ভূত এক সুরের মাদকতা তাই ছেলে থেকে বুড়োরাও বলে উঠলো "আমাকে আমার মতো থাকতে দাও" আর অনুপম রায়ের বাবা-মা'ও বড়ো স্যাক্রিফাইস করলো যা বাবা তুই থাক নিজের মতোই আর তার প্রতিদান একের পর এক দেখতে পেলো বাংলা গানের জগৎ।
শীতের ফিস্টে রাত্রিবেলা যেখানে সবাই বিয়ার ঢেলে হিন্দি গান শুনতো আজ তারও আগুনে হাত রেখে মাউথঅর্গান আর গীটারে গেয়ে ওঠে এখন অনেক রাত,প্যারালাইজড হয়ে যাওয়া রুগীটাও আজ আর কষ্টে থাকে না সেও বলে "আজকাল আমি প্রায় সারা সকাল প্যারালাইজড" এটাও যেন একটা ভালোলাগা  সে কিন্তু ভালোবেসে গাইছে। এইভাবে বাংলা সিনেমা এক ঢিলে দুই পাখি মারলো, কীরকম? অনুপম রায়ের সুরের নেশা নিতে মানুষ কে দেখতেই হলো বাংলা সিনেমা, নাক না বাঁকিয়ে মানুষ দেখল বাংলা মুভি যা বিশাল মাওনা। প্রেমিকারা তাকে যেকোনো পোশাকেই ভালোবেসে ফেললো পা ফেলা ঘাসের ওপর।
আর হানিমুনে যেতে চাইল নবদম্পতি তার গান শুনে কারন তারা নাকি দু-হাত দিয়ে ঝিনুক কুরাতে চায়।
মা-বাবাকে দূরে ছেড়ে থাকা দাদু দিদার কাছে মানুষ হওয়া পোস্ত নামের ছেলেটি  পশু-পাখির ডাক শুনে চাঁদে যাওয়ার স্বপ্ন দেখলো গানের ছন্দে, পুরো ব্যাপারটায় "আহারে আহা" হয়ে গেলো। ফ্লিম ফেরার আর একের পর এক পুরস্কার পেতেই থাকলো সুর জাদুকর অনুপম রায়।
নতুন প্রেমে পরা ছেলেটিও আড়াল করতে শিখলো তার গানে আর তাই বাড়ী ফেরার আগে  শুকিয়ে নিলো জলে ভেজা এক পা। নতুন প্রেমিকাও কিছু যাঁচাই করছে না সত্যি না মিথ্যে তবে ঠগছে না কিন্তু। বাংলা দেশের মেয়ে নাবিলা দি'ও শাড়ী উপহার পেলো আর তার ভালোবাসা পেলো কেও বাদ গেলো না তার ভালোবাসার, বাংলাদেশের মেয়ে নাবিলা দি নিশ্চয় আসবে এই দুর্গা-পূজোয় কলকাতা। শহর ভুলিয়ে তোলপার করছে এই সুর রুমাল নেড়ে জাহাজ তাড়ানো থেকে আড়ম্ভ করে, গাছেদের কথা বলতেও ভুলনো না তাই বলছে এবার মরলে অনুপম রায় গাছ হবে!
তার গানের টানে ভেঙে যাওয়া প্রেম বিষ না খেয়ে বললো "আমি আজকাল ভালো আছি",
তার গান যেমন বসন্ত আনে আবার আনে ইস্টোজেনের গন্ধ প্রান পায় নতুন ভ্রুণ। তার লেখা বই গুলো অসাধারণ, "ছোঁয়াচে কলম"
,"আমাদের বেঁচে থাকা" নতুন প্রানের সঞ্চয় করে। অনুপম রায় বড্ড নিজ শহর প্রেমিক শহরে শান্তি নেই জানলেও ট্রাম লাইনকে আঁকড়ে ধরে তার শহরেই ফিরে আসে "তিস্তানে"। প্রেমকেও কেয়ার করতে জানতে হয় জানতে হয় সে ভালো আছে কিনা  তাই রিসেন্ট অনুপম রায় জানতে চাইলেন "আমি কী তোমায় খুব বিরক্ত করছি? বলে দিতে পারো তা আমায়"।

এ ভাবে সবই হয়ে যাচ্ছে অনুপম সুরময় আর নবীনেরা তো প্রতিদিনই গভীরে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে শুধুই। এই ভাবে বলতে গেলে চলতেই থাকবে তাই এবার থামবো যদিও থামা খুব কঠিন আজ শুধু বাংলা নয় হিন্দিও ছুঁতে চায়লো অনুপম
মাদকতা।
         
♥জলফড়িং তোমার প্রতি দিলো অনেক ভালোবাসা, দাদা বেশি কিছু দেওয়ার ক্ষমতা নেই এটাই দিতে পারি শুধু অনেকটা, তবে ঝড়ের পাঠানো কাঠবাদাম যাকে আমরা ঝড়ের পাঠানো চকলেট বলি সেটাও দিলাম তোমাকে আর তোমার ব্যান্ডের সক্কলকে। আর  বৌদিভাই (প্রিয়া দি) কেও।  
 


♥জেঠ্যু-জেঠিমাকে আমাদের প্রনাম দিলাম আর দিলাম ফ্রিজের ডিপ থেকে আনা শীতল শ্রদ্ধা♥
           
সবশেষে জলফড়িং এটাই বলতে চাই

'দাদা তুমি বুড়ো হইও না কোনোদিন, শুধুই বড়ো হয়ে যাও.....'
     
                               
                             ধন্যবাদান্তে,

                  জলফড়িং ওয়েব ম্যাগের টিম

                       [ লিখলো ডট.পেন ]
             ছবি:- অনুপম দার ফেসবুক থেকে।
একটু ক্ষমা করেই দিও যেহেতু না বলে নিয়েছি
বিষাক্ত জীবন

#### তোর্ষা

ব্যাস্ততার শহরে আমি কোণঠাসা,
না হয় স্তূপের মধ্যে জমিয়ে রাখা মিউনিসিপালিটিরর জঞ্জাল ।

চারিদিকে সভ্যতার উঁকিঝুঁকি,
স্বপ্নের ফেরিওয়ালারা মর্মভেদী হাঁক ডাকে,

সবাই ব্যাস্ত অর্হনিশি ঘোলা আকাশের নীচে,

দু'দন্ড শান্তির অম্বেষন কেন পাবো না বলতে পারো?

অপাংক্তেয় এই অভিশপ্ত জীবনের দরদাম,

করি নি তো কোনো কালে, নিত্য যতিচ্ছেদে বেড়ে ওঠা দূরন্ত শৈশবের অকাল মৃত্যু ।।

আক্ষেপ,অভিমান,দুঃখ কোনোটিই নেই কারোর প্রতি।

একে একে আমার স্বপ্ন গুলো দুমরে-মুচরে ভেঙ্গে চুরমার,

শুধু ক্লান্তি অবসাদ বিচ্ছুরিত যত রঙ্গিন ভাবনা গুলো,
এ সবের কি হবে বলতে পারো?

আমি তো চায় না, এ সব এলোমেলো -অগোছালো মৃত্যপ্রায় স্বপ্ন গুলো বয়ে বেড়াতে ।

সভ্যতা!  সে তো মধ্যরাতের লালসার নুপুর
                      কিংবা
শকুনের আঁচড়ে ক্ষতবিক্ষত শতচ্ছিন্ন বসনের ফাঁক দিয়ে,

উঁকি দেওয়া যৌবনের লোলুভ নির্মোহ আগ্রাসনে,
আমি কেন বয়ে বেড়াবো এসবের দায় নিতে?

আমি শুধু বিধাতার নামের পক্ষপাত দুষ্ট, এ সব নিত্যকার সাক্ষী !!

আমি বুঝি বিছানায় শুয়ে শুয়ে স্যালাইনের খোঁচা খাওয়ার যান্ত্রনা!

এক-দুই করে আমাকে ব্যঙ্গ করে নিত্যদিন ।

বাক্সে রাখা এন্টিবায়োটিকের ঔষুধ গুলো তেতো লাগে না আর,

প্রিয়তমের অপেক্ষায় দিন ফুরিয়ে গেলো বলে,

রঙ্গিন পাতায় দীর্ঘ আবেগ আর লেখা হয় না,

আবর্জনার স্তূপে অপেক্ষা করে থাকা মুক্তির প্রত্যাশায়।।

আমি আর অভিমান করি না , দু'চোখের নোনা জলের জন্য,

মুছতে চেষ্টা করি না, চোখের নীচে কালো দাগ, এমন কী প্রিয়তমের অবজ্ঞা কোনোটিই নাহ্।

আমার ইচ্ছের,  আমার ভালোবাসার অকাল মৃত্যু,

মরিচীময় স্বপ্নের কফিনে এখন পেরেক বন্দি ।।

                       #### তোর্ষা 😊
রঙ বদল

স্বপ্ন কে সত্যি বলে মানছি দেখো,
রাজধানী মিথ্যে নামের শব্দ বোনে,
ইভিএমে জনগণের আঙুল গুনে,
রক্তের লাল মিশেছে ধর্মপ্রাণে

আজকাল গেরুয়া সবুজও মিশতে জানে,
গনতন্ত্রে ভোটের মত সত্যি কোথায়,
মানবিকতা পুড়ছে দেখো ধর্মস্থানে,
সাধারণ মানুষের এখন দাফন সাজায়,

শহরের রঙ বদলের রাজনীতিতে,
ফুটপাতে এখন আমি ভিখিরি সাজাই,
বস্তিগুলো পুড়ছে দেখো আগুন আঁচে,
আমরা এখন ভোটের থালায় আতর মাখাই ।।

_______ সুরজিৎ রায় (সুরজিৎ বাগ)

বুধবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৮

অসম্পূর্ণ ও সম্পূর্ণ ।
অরূপ সরকার ।

জানিস ইচ্ছে ছিল তোর সাথে অনেক পথ চলার ।
    কিন্ত তা হয়নি,
মানুষের সব ইচ্ছে তো পুরণ হয়না,
ইচ্ছে ছিল তোর সাথে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার।
কটা সূর্যোদয় দেখেছিলাম তা হাতে গোনা।
তোর পদধ্বনী আজও শুনি বাতাসে।
বাতাস যখন ছোঁয় তখন তোকে অনুভব করি।
জানি কখোনোই তুই ফিরবি না,
এটাও ভীষণ রকম বাড়াবাড়ি।
কী করব বল স্বপ্নের তো ইয়াত্তা নেই।
অবশ্য আমার এই একাকীত্বের তোর কোনো দায় নেই ।
তবু বলি ভীষন ভাবে তোকে অনুভব করি
আমার মন খারাপের রাতে।
তুই থেকে যাস আমার স্রোতের অনুকুলে।
ভালবাসার ভাগ নাই বা হলি।
থাকিস আমার মন্দবাসার গল্পে।

  ছবি ঋণ ব্রততী রায় ।
-:মোপেট:-

তোমার জন্য আজ গন্তব্যে পাড়ি
তুমি আমার একমাত্র শ্রদ্ধা,
তোমার গতিতে আমি বাকরুদ্ধা,
বলুক লোকে তুমি নিকৃষ্ট,
আমার কাছে তুমি উৎকৃষ্ট,
সৌজন্য লহমায় তুমিই শ্রেষ্ঠ
আছে তোমাতে অন্তরঙ্গের ছায়া
তুমি পিতাশ্রীর যান্ত্রিক মায়া,
তোমাকে নিয়ে তাই শ্রদ্ধাজ্ঞাপন
করেছি তাই হৃদয়ার্জন,
শিশুসুলভ মন দিয়ে।
    -অলক দেবনাথ

মঙ্গলবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৮

-: আক্ষেপ:-

সেই অশান্ত সমুদ্র সৈকতে,
অসংখ্য নুড়ি কাঁকড়ের ভীড়ে
হেঁটে চলেছি চোখ ধাঁধানো নীলাভ পানে চেয়ে,
দেখি কিছু মাঝি নিরলস শ্রমে,
পাল তুলে নৌকায়,করছে মৎস ধরবার উপক্রম,
বেপরোয়া চিত্তে, প্রাণ নিয়ে হস্তে,  নির্ভীক হৃদয়ে চলে জীবনযাপন,
কখনো উত্তাল ঢেউয়ে, কখনো বা ঘেমে নেয়ে, চলছে এ জীবনধারা
ব্যাস্ত শহরে পড়বে না ধরা,
পড়বেনা এ শ্রমের মূল্য দৈনিক আহারে ।
       -অলক দেবনাথ
Will you be Mine?
Arup sarkar.

O girl ,will you be mine?
Not for the lifetime.
But for a while, I know that I don't deserve your life long company.
I can live with you an era in a second.
I don't claim your lips
But you are my ecstacy .
When I sleep I feel you
In the air ,in the moon light dream,
I am a gazayar of you
Your eyes like a dazzling light.
Will you be Mine for a while.

সোমবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৮

★জলফড়িং অনলাইন ব্লগ★

জলফড়িং-এ মাসিক সংখ্যার জন্য লেখা আহ্বান।

আপনার পছন্দের যে কোনো বিষয় নিয়ে লিখে ফেলুন....আর চটপট পাঠিয়ে দিন jholfhoring@gmail.com -এই ইমেলে। সঙ্গে দিন একটি নিজস্বী।

গল্প/অনুগল্প/কবিতা/অনুকবিতা/দীর্ঘ কবিতা/ভ্রমন বিষয়ক/প্রবন্ধ..... আপনার স্বরচিত লেখা মে মাসের ১০ তারিখের মধ্যে আসা চায়।

তাই আর দেরি না করে পাঠিয়ে দিন....প্রাপ্তি স্বীকার করা হবে। তবে অবশ্যই ১৫ই মে মাসিক সংখ্যা প্রকাশ হবে....তখন প্রত্যেকের লেখার লিংক পাঠিয়ে দেওয়া হবে.... অবশ্যই সেগুলি নির্বাচিত লেখার লিংক।

প্রয়োজনে সব খবর জানতে চোখ রাখুন "জলফড়িং তক্তাপোষ" ফেসবুক পেজে।
                -------------------


একটা স্বপ্ন নিয়ে শুরু করেছি এই ওয়েব ম্যাগাজিন টি ২০১৭ সালের ১৫ নভেম্বর প্রথম প্রকাশ হয়েছিল। তার একটা উদ্দেশ্য নিশ্চয় আছে,
 কিন্তু সেটা কী?
~~~উদ্দেশ্য হলো জলফড়িং সাহিত্যকে কিছু দিতে চায় সে বাংলা হোক বা ইংরেজি। যে কেও লেখা পাঠাতে পারেন কোনো নিষেধ নেই কোনো কাঁটাতার না মেনেই জলফড়িং। আমরা কবিতা, গল্প, অনুকবিতা, অনুগল্প সাহিত্য বিষয়ক সবই নিয়ে থাকি।
আমরা মাসিক সংখ্যা করি আবার দৈনিকও লেখা নিয়ে থাকি আর যেটা করি সেটা হলো আমরা আকস্মিক সংখ্যা করি। এই আকস্মিক, মাসিকের জন্য আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে আমাদের ফেসবুক গ্রুপে যার নাম জলফড়িং-র তক্তাপোশ। আসুন যুক্ত হয় হাত ধরি একে অপরের আর আপনার লেখারা ডায়রি থেকে উঠে এসে সাহিত্যের আকাশে ডানা মেলুক জলফড়িং-এ।
-: ব্যক্তিগত:-

শান্তির খোঁজে সে এক তীর্থযাত্রা
লিখন প্রকাশে এনেছে অনুভূতির বার্তা
শূন্যতায় টেনেছে কাল্পনিক রচনা যত
আবেগের বশে অকারণ যাতনা তত
আলাপন ছন্দৎশ্রিত কাব্যের ভাবনায়,
নিরুৎসাহী অনৈতিক ছলনায়,
কবিত্ব হারায় আকস্মিক উদাসীনতায়।
       -অলক দেবনাথ
সুদীপ্ত'র ভালোলাগা
-----------------ডট.পেন লিখছে

সুনন্দ দা তোমার লেখা গুলো বেশ লাগে
তোমার ইমপিচমেন্ট আমার খুব মনে আছে।
আজাহারুল দা তুমি দারুণ এককথায় বললাম,
তুমি কাফন ঢাকা দিয়েছিলে মনে আছে আমার।
তুষার বাবু,কবি তুষার কান্তি রায় খুব প্রিয় ব্যক্তিত্ব আপনার পুচু ডাক মনে আছে
আপনার দোসরটা আমার খুব ভালো লেগেছে।
অংশুবাবু,কবি অংশুমান কর শ্রদ্ধা নেবেন যে মেয়েকে(আসিফা) সবাই অবজ্ঞা করবে আপনি তার বাবা হয়েছিলেন, মনে আছে আমার
অনুব্রতা দি তুমি চিরকাল ওমনি করেই হেসো
তোমার মেসবালক কেমন আছে?
তোমার কন্ঠকে আমি ভালোবাসা দিলাম।
আসিফ দা তোমার একটু খানি ঘেঁটে দেখা ইন্টারনেট, বুঝতে পেরেছো নিশ্চয় হা'হা দারুণ।
মাসিমণি তুমি প্রনাম নিও তোমাকে কোনোদিন ভুলব না,লেখা দিয়ে তোমায় ভালোবাসা দিতে যাবনা।
সুবীর দা তোমার অনুকবিতা গুলো বেশ ভালো,
দিদান, তোমার ওই হাসিটা তোমার লেখার মতই শুদ্ধ, তৃপ্তি দায়ক, অসামান্য।
কাব্যশ্রী তোমাকে প্রনাম, তোমাকেই দেখি প্রায়দিন তুমি বিজয়ী হয়েছো ভালোলাগে, দারুণ লাগে।
জয়দীপ দা লেখাগুলো অন্যরকম তোমার
বারবার পড়তে ইচ্ছে করে কাদম্বরীর চোখ আরও একটা যেটাতে পোস্ত-র কথা বলা ছিল।
শাল্যদানী রুপম দা, কবি শাল্যদানী রুপম, দাদা দাঁড়িয়ে শুনবো তোমার গলা এক শান্ত,ভেজানো গলা কোনো অন্ধকার বা আলো বা গুহা'ই তোমার সাথে বসবো কবিতা নিয়ে, ইচ্ছে আছে।

সুপ্রকাশ কাকু,কবি তোমায় শ্রদ্ধা,
ভগবান প্রসন্ন হলে সব হয় তুমি বলেছিলে
তোমার সাজানো বইগুলো একবার নেড়ে দেখবো, সেদিন দেখা হয়নি আবার যাবো একদিন।
পার্থ দা তোমার লেখায় অদ্ভূত একটা কেমন আছে,
সৌরভ দা  তোমার লেখা আমার অসম্ভব ভালো লাগে।
অরূপ দা তোমার লেখাই একটা প্রান আছে,
অনুরূপা দি  তোমার সব লেখাই সেরা,
রাহুল দা, কবি রাহুল গাঙ্গুলী, তোমার লেখাগুলো খুব কঠিন বারবার পড়ে বোঝার চেষ্টা করি কিন্তু, আচ্ছা দু-একটা লেখা একটু সহজ করে লিখতেই পারো...


তোমরা সবাই আমার কাছে প্রিয় সবাই
প্রত্যেকটা কবিতা পড়ি তোমাদের সত্যি বলছি, দারুণ লাগে..
তোমরা হয়তো কেউ নামী বা অনামী আমার মতোই।।
সার্থক তুমি রূপকার ।
অরূপ সরকার ।
তোমার হাতের স্বর্ণকলম,
কাটালো সাহিত্য স্থবিরতা।
তোমার সৃষ্টি সর্বদাই বসন্তের আবির মাখা।
তোমার হাতেই রূপ পেয়েছিল সাহিত্য নব দিগন্ত ।
তোমার কাছেই রূপ পেল sonnet কিংবা sonnetto,
নতুন ধারায় লিখে তুমি আনলে নতুন ধারা।
নতুন রূপে উদ্বেলিত হল তোমার ছন্দেরা,
দিনটি ছিল  23 শে এপ্রিল সাল 1564,
সকল সাহিত্যিক দিল তোমার কর্মের জয়ধ্বনী;
লিখেছিলে প্রথম কাব্যনাট্য Hamlet কিংবা oethello,
তোমার হাতেই নাটক গুলো সর্বপ্রথম প্রান পেল।
তাই আমি বলছি তোমায় সার্থক তুমি রূপকার,
যেখানেই থাকো ভালো থেকো,
শুভ জন্মদিন  WILLIAM SHAKESPEARE ।

রবিবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৮

রক্তে লেখা

প্রেমিক নাম টি খুবই মিথ্যা এখন,
প্রেমে তাও বিষ খেয়ে যাই সত্যি ভেবে,

চিঠি তে কবির কলম মারছে চাবুক ,
ভুল হয়েছে প্রেমিক নামের সত্যি জেনে,

প্রেমিক এখন শরীর নামের শব্দ চেনে,
প্রেমিকা গল্প লেখে ভাতের পাতে,

চিঠিতে লাগতে পারে টকটকে লাল
প্রেমিক এখন সত্যি খুবই আঁধার মাখে,

প্রেম এখন প্রান্তে গিয়ে পুড়ছে দেখো
প্রেমিকার রক্ত গুলোই হচ্ছে সেকা ,

রাস্তায় নামলে পরে খাচ্ছি হোঁচট জ্যান্ত লাশে,
শহর এখন শব্দ লেখে লাভ জিহাদে,

আকাশেই জমছে যত প্রেমের আগুন,
শহর আজ ঢাকতে পারে মেঘের গানে ।।

_______ সুরজিৎ
#আমার_শহর_শান্তিপুর

তুমি আসবে বলে শান্তিপুরের, ভূমিতে মিশে শ্রী চৈতন্য,
তুমি আসবে বলে বনেদিআনা ভাঙেনি, গোস্বামী দের জন্য।

তুমি আসবে বলে লক্ষ্মীকান্তের বৃহত্তর কলেজ ভূমি দান,
তুমি আসবে বলে কবি করুণানিধানের অক্ষত মান-সম্মান।

তুমি আসবে বলে নেতাজী সুভাষ ডাকঘরে অপেক্ষাতে,
তুমি আসবে বলে আমার শহর, শ্রেষ্ঠ রাস উৎসবে মাতে।

তুমি আসবে বলে আমার শহরে স্থাপিত হয়েছে রাজ্যের দ্বিতীয় পৌরসভা,
তুমি আসবে বলে স্বকৃত পেয়েছে তাঁতি দের নিপুণ  প্রতিভা।

তুমি আসবে বলে আমার শহর, ধর্মে, মিলিয়ে চলে কাঁধ,
তুমি আসবে বলে অক্ষত সেই টেরাকোটার শ্যামচাঁদ।

তুমি আসবে বলে গঙ্গা পার করেছে, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ,
তুমি আসবে বলে পাবলিক লাইব্রেরী'টা সেজেও অনাথ।

তুমি আসবে বলে স্টেডিয়াম'টা আজ পেয়েছে অনুমোদন,
তুমি আসবে বলে স্থগিত আছে, কালনা ব্রিজের বোধন।

তুমি আসবে বলে কৃতি পেয়েছে রিয়া পাল, সীমা বসাক,
তুমি আসবে বলে পদ্মভূষণ ছিনিয়েছে, ফুলিয়ার বীরেন বসাক।

তুমি আসবে বলে নকশালবাদ আর মাথা মাথাচাড়া দেয়নি,
তুমি আসবে বলে বাবলা আজও সাহেব দের কাছে বিক্রি হয়নি।

তুমি আসবে বলে বৌ বাজারের বউ টা কে জানতে পারিনি,
তুমি আসবে বলে বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী সচক্ষে ধরা দেয়নি।

তুমি আসবে বলে খ্যাতি পেয়েছে অ্যামেচার, সবুজ সংঘ,
তুমি আসবে বলে কবি কিত্তিবাস শান্তিপুরের অঙ্গ।

তুমি আসবে বলে মুখ দেখেনি, আগমেশ্বরী মহিষখাগী,
তুমি আসবে বলে গঙ্গার স্রোত, এখনো ভীষণ রাগী।

তুমি আসবে বলে উন্নয়ন হবে, বলছে রাজনীতিবিদ,
তুমি আসবে বলে জাতপাত ভেঙে সাজবে খুশির ঈদ।

তুমি আসবে বলে গুরুমা আজও শরৎ কুমারীর জননী,
তুমি আসবে বলে জানুয়ারি তে ফুটবে পুষ্প প্রদর্শনী।

তুমি আসবে বলে গান্ধী ঘাটের বটগাছ টা জলে তলিয়ে যায়নি,
তুমি আসবে বলে রেজিস্ট্রি অফিসটা এ শহরে জায়গা পাইনি।

তুমি আসবে বলে ভেঙেও ভাঙেনি, বনিক দের হাতি শালা,
তুমি আসবে বলে ট্রয় ট্রেন ফেরেনি, পড়েছে কারশেডে তালা,

তুমি আসবে বলে শান্তিপুরের বিক্ষাত তাঁত শাড়ী।
তুমি আসবে বলে আমার শহরে অসৎ এর মহামারি।

তুমি আসবে বলে সন্ধ্যা আকাশে কৃষ্ণ নাম শোনো,
তুমি আসবে বলে ঘটি বাঙালের দ্বন্দ্ব বাঁধেনি এখনো,।

তুমি আসবে বলে বঙ্গ হাটে ব্যাবসাহী দের সমাগম,
তুমি আসবে বলে গীতা প্যালেস টা পরিচ্ছন্ন, ব্যাবহার হয়েছে কম।

তুমি আসবে বলে মশাল বন্ধ, যুক্তি দিয়েছে সায়েন্স ক্লাব,
তুমি আসবে বলে ফুটপাতে ত্রিফলা লাগিয়ে, হয়নি কোনো লাভ।

তুমি ফিরবে বলে তোমার প্রতীক্ষায় প্রত্যেকটা দিন পার হোক,
তুমি আসবে বলে তোমায় জন্য আমি অপেক্ষার অভিভাবক।

                    কলমে-- সুপ্রিয় কর।👏
রঙীন বসন্ত ।
অরূপ সরকার ।
আমি গ্রীষ্মের দুপুরেও বসন্ত আনতে পারি ,
তোর হাসি মুখে।
আবার  তোকে হাসাতেও পারি নিছক পাগলামিতে,
তুই তো আবার রেগেই যাস কারণ অকারনে
অভিমানে আবার দুরত্ব বাড়াস কেমন আবেগ বশে।
রাগ আভিমান হাসিতে কেমন আস্ত একটা তুই
তোকে আমি কেবল মাত্র দুর থেকেই ছুঁই।
আজ এসেছে আবার দেখ সেই রঙিন দিন।
তাই তো আমি বলছি তোকে শুভ জন্মদিন ।
এই সুন্দর মুহুর্তে এই আশাই রাখ,
 তোর সকল স্বপ্নগুলো চরম পূর্ণতা পাক।
-: সংযত অভিমান :-

সাজিয়ে ভালোবাসার নৈবেদ্য,
প্রস্ফুটিত হৃদয়ের হয়েছে সূর্যাস্ত
বাস্তব লোকারণ্যের ভীড়ে মিশেছে অতীতখানি,
অনুতাপে মগ্ন বিষন্ন জীবনকাহিনী
নিয়ে বিদ্ধেষী অচেতন আসক্তি,
টূকরো স্মৃতির ঢেউয়ে পরকালের অবনতি
জাগরনের জন্য অপেক্ষায় পথ চলা,
কাঁপে আত্মা কাঁপে পদতলা
লক্ষ্যকে সামনে রেখে আরোও এক প্রচেষ্টা,
ঝুঁকেছি নিরবে নিভৃতে বুঝবে কি সে কষ্টটা ।
      -অলক দেবনাথ

শনিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৮

-: ব্যক্তিগত:-

শান্তির খোঁজে সে এক তীর্থযাত্রা
লিখন প্রকাশে এনেছে অনুভূতির বার্তা
শূন্যতায় টেনেছে কাল্পনিক রচনা যত
আবেগের বশে অকারণ যাতনা তত
আলাপন ছন্দৎশ্রিত কাব্যের ভাবনায়,
নিরুৎসাহী অনৈতিক ছলনায়,
কবিত্ব হারায় আকস্মিক উদাসীনতায়।
       -অলক দেবনাথ

নির্জনে একলা

" একলা ঘরে "

আমি আমার একলা ঘরে
একাই কাটাই রোজ....
রোজের অফিস, ঘরে ফেরা
কেউ নেয় না খোঁজ....
কাজের নামে ব্যস্ত থাকি
মিথ্যে অজুহাতে....
কখনওবা অলসভাবেই প্রহর কাটে
নরম বিছানাতে....
সময় পেলে জানালা ধারে
দাঁড়াই দুচোখ খুলে....
যতদূর দেখি ঝাপসা লাগে
বাস্তব যাই ভুলে....
সুখের খোঁজে উদাসী মন
ঘরের কোন-ই খোঁজে....
মনের ঘরে একলা আমি
আমার ঘর-ই বোঝে....।।
                           
নাম- পাখি পাল

ঠিকানা--(গ্রাম-মির্জাপুর, জেলা-হাওড়া, রাজ্য-পশ্চিমবঙ্গ, দেশ-ভারতবর্ষ)

নির্জনে একলা২




একলা সময়
পূজা ব‍্যানার্জ্জী

‌আঠারোটা সিঁড়ি ভেঙে সবুজ
রঙের বন্ধ দরজার চাবির
মালিক আমি।
রঙচটা পাপোশ পেরোলেই
আমার সাজানো একলা ঘর।


অফিস ফেরার পরের
সময় কাটানোর একমাত্র জায়গা হল লোহার রেলিং ঘেরা এই ব্যালকনি।


চিনি কম চা -এর কাপে
চুমুক দিতে দিতে আনমনে
বিস্কুটের অর্ধেকটা চা-এ
মিশে কেমন একটা বেস্বাদ
করে দিলো পুরো ব্যাপারটা।
একলা চেয়ারে একলা আমি সাথে একলা কাপে হাফ বিস্কুট।
এখানে বসে থাকলে বাড়ির বড় টকটকে লাল রঙের মেঝের কথা বড্ড মনে পড়ে।


মাঠের ওপাশের কোয়াটারগুলোকে
দেখলেই,বড় আপন লাগে।
ঐ একলা হলুদে সবুজে
কোয়াটারগুলো আমার মতোই
কেমন যেন সঙ্গহারা।


সামনের কিছু কোয়াটারের
জানলা বেয়ে তার ছায়া গিয়ে পড়েছে
নিচের পিচে রাস্তার উপর।
চারিদিকে অন্ধকার।
টিমটিমে কয়েকটা
ল্যাম্পপোস্ট একা একা
দাঁড়িয়ে।ওদিকের ঐ
ঝোপগাছটা আজ কেটে
ফেলে ফাঁকা করে দিয়েছে।
পাশের আম গাছ আজ থেকে একা।

হারমোনিয়ামের উপরের কয়েকটা সুর হালকা হয়ে ভেসে আসছে,দূরের কোনো বাড়ি থেকে।
সারাদিনের পর একা থাকাটা যেন
বড়ই শান্ত,বড়ই চুপচাপ।
আজকাল তো ঘড়ির কা‍ঁটা নড়ার
শব্দ স্প‌ষ্ট শুনতে পাই।

রোজই ভাবি আবার
লেখালিখি শুরু করব।
বাড়ি থেকে আসার সময় ট্রলিতে
মনে করে লেখার ডাইরিটা নিয়েও এসেছি।ছ'মাস হয়ে গেল ওটা কাবার্ডেই রয়েছে,হাত পড়েনি।

প্রতিদিনের হিসেবী জীবনে
ভাবনায় ভর দেবার
সাহস এবার জুগিয়ে ফেলতেই হবে।

দুদিক-চাপা ইঁটের সারিতে
একা একা দমবন্ধ হয়ে আসে।
খোলা বাতাসে দুহাতে
মনখুলে বাঁচতে চাই।
বাঁচতে চাই।


ঠিকানা:-

ভদ্রেশ্বর

রবিবার, ১৫ এপ্রিল, ২০১৮

   
       

       _______নববর্ষ
                       সুনন্দ মন্ডল

নববর্ষের গন্ধ ভেসে এলো
একটুকরো কালবৈশাখীর ঝরাপাতায়।
স্নিগ্ধ সুবাস প্রাণ-মন জুড়ে
দেহে ঘর্মাক্ত ক্লেদ।
মাটির বুকে গাছেদের দাঁড়িয়ে থাকা,
মাথা নুইয়ে নতুনের আহ্বান।
উজ্জ্বল দিন মুক্ত বাতাস
প্রকৃতির ছন্দে গানের ভেলায়,
নবপ্রভাতে রবির দান।
মেখে নেব স্বজন একান্ত স্নেহ মায়া,
তেঁতুল পাতায় হাসব ন'জন!
উন্মুক্ত ডানায় পাখিরা ওরে,
ফুলের গায়ে প্রজাপতিরা ছোটে।
আমের বোল ফুটেছে উৎসবে
হেসেছে মনের সিদ্ধিদাতা।
নববর্ষের নবদিনে নব জ্যোৎস্না বয়ে যাক,
নব কিরণে এ-শহর নতুন করে ধুয়ে যাক!
গ্রামের মলিনতা মুছে যাক নবসিঞ্চনে।
চোখে-মুখে গ্রহণ ভেঙে স্বাগত জানাই
কলঙ্কিনী পোড়া চাঁদের স্নায়ুকে।
             --------------------
কাঠিয়া,মুরারই,বীরভূম

(রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের...ছেলেটা,আফ্রিকা,
ক্যামেলিয়া,বাঁশি, সোনারতরী, চিত্রা ইত্যাদি 
কবিতা ভালো লাগে)
@সমাজের প্রতি ক্ষুদ্র মানবের বার্তা এই যে, 
নতুন বছরে সবাই যেন শান্তিতে থাকতে পারি)
            ------------$-------------
     
       
         শুভ নববর্ষ "- শৈশবের কিছু টুকরো স্মৃতি

   লেখাটি লিখতে বসেছি নববর্ষের ঠিক আগেরদিন অর্থাৎ আগামীকাল বাংলার নতুন বছর ১৪২৫ এ পা দিতে চলেছে। লিখতে বসে নানান পুরাতন স্মৃতি মনের মধ্যে আঁকিবুঁকি কেটে চলেছে সমানে, বিশেষত ছোটবেলার স্মৃতিগুলি।স্মৃতি সুখের সবসময় না হলেও আমার জীবনে নববর্ষের দিনগুলি আনন্দের ছিল।

নববর্ষ বলতে ছিল পয়লা বৈশাখ আর পয়লা বৈশাখ মানেই হালখাতা! পয়লা না ১লা এই নিয়ে মনে বেশ একটা দ্বন্দ্ব হতো মনে। নতুন বছরের প্রথম দিনটি সবার সাথে আনন্দ করে পয়লা নম্বর হয়ে থাকতো, ১লা নয়। বেশ মনে পড়ে মিষ্টির খুব একটা ভক্ত না হওয়া সত্ত্বেও হালখাতার মিষ্টির ওপর বেশ আগ্রহ ছিল! নববর্ষের সকালটা শুরু হতো দূরদর্শন ডি ডি বাংলার প্রভাতী অনুষ্ঠান দিয়ে। আমার ছোটবেলায় এতো চ্যানেল আর বিচিত্রানুষ্ঠানের ভিড় ছিল না; তাই সেই অনুষ্ঠানটির জন্য অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করতাম। প্রিয় শিল্পীদের গান ও আবৃত্তিতে নতুন বছরের প্রথম সকাল ভরে উঠত যেন নতুন সুগন্ধে।

একান্নবর্তী পরিবারের মেয়ে হলেও বাবার চাকরী সূত্রে বিভিন্ন এলাকায় যেতে হয়েছে; তাই নববর্ষের প্রথম দিন উদযাপন শুধু বাবা-মার সাথেই অত্যন্ত সাদামাটা ভাবেই। নতুন জামার কথা বলতে গেলে বলতে হয়, পয়লা বৈশাখে কোনো পোশাক কেনা হতো না আমাদের ; শুধু দূর্গাপুজোর সময় ছাড়া। তবে মা মাঝের মধ্যে কিনতেন আমাদের জন্য। সারাদিন ধরে নানা সুস্বাদু পদ রান্না করতেন। বাবা নাস্তিক হওয়ার প্রভাব আমার আর বোনের ওপর পড়েছিল। তাই সারাবছরের মতো এইদিনও কোনো পূজো হতো না বা প্রণাম করার প্রথাও ছিল না। সন্ধ্যে হলেই বাবার হাত ধরে পরিচিত দোকানগুলিতে যেতাম। সবার আগে দেওয়া হতো রঙিন পানীয়, তারপর মিষ্টির বাক্স আর তার সঙ্গে অবশ্যই নতুন সালের বাংলা ক্যালেন্ডার। বাড়িতে ফিরে দেখতাম ক্যালেন্ডারে কি ছবি আঁকা আছে। আমি আর বোন মিলে সেটা আঁকার চেষ্টা করতাম। এমনভাবেই কেটে যেতো দিনটা।

তারপর যত সময় চলে যেতে লাগল ততই পড়াশোনা ইত্যাদি নিয়ে ক্রমশ ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। নববর্ষ,  হালখাতা সবকিছুই  facebook, what's app এর মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে গেল। নতুন বাংলা ক্যালেন্ডার বা বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের প্রতি আকর্ষণ বোধ করি না আগের মতো। তাছাড়া বোনও থাকে হোস্টেলে, আমিও ব্যস্ত সরকারী চাকরীর পরীক্ষার প্রস্তুতিতে। তবে এসব তো অছিলা মাত্র ; চারপাশ যেভাবে পালটাতে দেখেছি সেকি কম ভয়ংকর! সাম্প্রদায়িক হিংসা, যুদ্ধ,  হানাহানি সব কিছু ভুলে গিয়ে ১৪২৫ কাটুক নতুন ভরসা, নতুন আশা নিয়ে।

নাম: সায়ন্তনী বকসী

ঠিকানা: গ্রাম- দুইল্যা, জেলা- হাওড়া, রাজ্য- পশ্চিমবঙ্গ, দেশ- ভারতবর্ষ ( নতুন বছরে আমি পৃথিবীর মানুষ - যদি এই ঠিকানা লিখতে পারতাম তবে সবচেয়ে খুশি হতাম)

প্রিয় রবীন্দ্র কবিতা: সাধারণ মেয়ে ( বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে)

বার্তা : একজন শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ হিসেবে চাই অন্তত একটি ধর্ষণহীন দিন নতুন বছরে!
           ---------------$--------------



      "শুভ নববর্ষ "- শৈশবের কিছু টুকরো স্মৃতি

লেখাটি লিখতে বসেছি নববর্ষের ঠিক আগেরদিন অর্থাৎ আগামীকাল বাংলার নতুন বছর ১৪২৫ এ পা দিতে চলেছে। লিখতে বসে নানান পুরাতন স্মৃতি মনের মধ্যে আঁকিবুঁকি কেটে চলেছে সমানে, বিশেষত ছোটবেলার স্মৃতিগুলি।স্মৃতি সুখের সবসময় না হলেও আমার জীবনে নববর্ষের দিনগুলি আনন্দের ছিল।
নববর্ষ বলতে ছিল পয়লা বৈশাখ আর পয়লা বৈশাখ মানেই হালখাতা! পয়লা না ১লা এই নিয়ে মনে বেশ একটা দ্বন্দ্ব হতো মনে। নতুন বছরের প্রথম দিনটি সবার সাথে আনন্দ করে পয়লা নম্বর হয়ে থাকতো, ১লা নয়। বেশ মনে পড়ে মিষ্টির খুব একটা ভক্ত না হওয়া সত্ত্বেও হালখাতার মিষ্টির ওপর বেশ আগ্রহ ছিল! নববর্ষের সকালটা শুরু হতো দূরদর্শন ডি ডি বাংলার প্রভাতী অনুষ্ঠান দিয়ে। আমার ছোটবেলায় এতো চ্যানেল আর বিচিত্রানুষ্ঠানের ভিড় ছিল না; তাই সেই অনুষ্ঠানটির জন্য অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করতাম। প্রিয় শিল্পীদের গান ও আবৃত্তিতে নতুন বছরের প্রথম সকাল ভরে উঠত যেন নতুন সুগন্ধে।
একান্নবর্তী পরিবারের মেয়ে হলেও বাবার চাকরী সূত্রে বিভিন্ন এলাকায় যেতে হয়েছে; তাই নববর্ষের প্রথম দিন উদযাপন শুধু বাবা-মার সাথেই অত্যন্ত সাদামাটা ভাবেই। নতুন জামার কথা বলতে গেলে বলতে হয়, পয়লা বৈশাখে কোনো পোশাক কেনা হতো না আমাদের ; শুধু দূর্গাপুজোর সময় ছাড়া। তবে মা মাঝের মধ্যে কিনতেন আমাদের জন্য। সারাদিন ধরে নানা সুস্বাদু পদ রান্না করতেন। বাবা নাস্তিক হওয়ার প্রভাব আমার আর বোনের ওপর পড়েছিল। তাই সারাবছরের মতো এইদিনও কোনো পূজো হতো না বা প্রণাম করার প্রথাও ছিল না। সন্ধ্যে হলেই বাবার হাত ধরে পরিচিত দোকানগুলিতে যেতাম। সবার আগে দেওয়া হতো রঙিন পানীয়, তারপর মিষ্টির বাক্স আর তার সঙ্গে অবশ্যই নতুন সালের বাংলা ক্যালেন্ডার। বাড়িতে ফিরে দেখতাম ক্যালেন্ডারে কি ছবি আঁকা আছে। আমি আর বোন মিলে সেটা আঁকার চেষ্টা করতাম। এমনভাবেই কেটে যেতো দিনটা।
তারপর যত সময় চলে যেতে লাগল ততই পড়াশোনা ইত্যাদি নিয়ে ক্রমশ ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। নববর্ষ,  হালখাতা সবকিছুই  facebook, what's app এর মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে গেল। নতুন বাংলা ক্যালেন্ডার বা বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের প্রতি আকর্ষণ বোধ করি না আগের মতো। তাছাড়া বোনও থাকে হোস্টেলে, আমিও ব্যস্ত সরকারী চাকরীর পরীক্ষার প্রস্তুতিতে। তবে এসব তো অছিলা মাত্র ; চারপাশ যেভাবে পালটাতে দেখেছি সেকি কম ভয়ংকর! সাম্প্রদায়িক হিংসা, যুদ্ধ,  হানাহানি সব কিছু ভুলে গিয়ে ১৪২৫ কাটুক নতুন ভরসা, নতুন আশা নিয়ে।

নাম: সায়ন্তনী বকসী

ঠিকানা: গ্রাম- দুইল্যা, জেলা- হাওড়া, রাজ্য- পশ্চিমবঙ্গ, দেশ- ভারতবর্ষ ( নতুন বছরে আমি পৃথিবীর মানুষ - যদি এই ঠিকানা লিখতে পারতাম তবে সবচেয়ে খুশি হতাম)

প্রিয় রবীন্দ্র কবিতা: সাধারণ মেয়ে ( বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে)

বার্তা : একজন শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ হিসেবে চাই অন্তত একটি ধর্ষণহীন দিন নতুন বছরে!

শনিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৮

সম্পাদকীয় কলমে.......

                       
_____বর্ষ-বিদায়ে
                  সুনন্দ মন্ডল
   
                বর্ষ শেষের পালা শুরু,

  খসে পড়ছে একটা একটা করে সময়ের পাতা
গাছেরা সভা করছে নতুনকে স্বাগত জানাবে বলে।

           সূর্যের সেই হাসি আজ দেখিনা
     ম্লান চোখে মাথা ঠেকিয়েছে দীঘির জলে।
  রক্ত রাঙা হৃদয়টা ফ্যাকাশে মেঘের আবরনে!

              চাঁদ কি আজ আর উঠবেনা!
 সেও কি শোকের ছায়ায় বিদায়ের প্রহর গুনছে!
 কলঙ্ক গায়ে মেখে মুখ ঢেকেছে আকাশের বুকে।

 আসুক না! পৃথিবীর পাঁজরে হাজার পাথর নেমে।
 তবু সে স্বচ্ছন্দে সানন্দে মেনে নেবে কষ্টের মুহূর্ত।

      শঙ্খ ধ্বনিতে মুখরিত বাতাসের জানালা
         উলু ধ্বনিতে নব উৎসবের হুলিয়া।
         ‎
              চোখের দামি জল খরচ করে    
        শিরা-উপশিরায় ব্যথার উপশম নিয়েও
   ‎চৈত্র শেষে পুরোনো স্মৃতি ভুলতে প্রস্তুত প্রকৃতি।
   ‎
        আমরাও দু'হাত তুলে সারেন্ডার করেছি
   মানব-পশু-পাখি নতুনের আলো মাখব বলে।
   ‎               -----------------
             
💃 সবাই চমকাবে 💃

✌জলফড়িং ওয়েব ম্যাগাজিন একটা স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে এসেছিলো একটা বৃহৎ সাহিত্য সাফল্যের আশায়। তাই ত্রৈমাসিক থেকে মাসিক হয়েছে কিন্তু তাতে করে আমাদের মন ভরছে না এমনও অনেক কবিরা আছেন যাঁরা বলে আপনাদের কোনো সংখ্যা কবে আছে?
এমনও কবিরা আছেন যারা বলে এখন লেখা দেওয়া যাবে না
যাই হোক আরও আছে.....

তাই নতুন সিদ্ধান্তে এসেছি আর তৈরী করেছি তিনটে বক্স যার ঠিকানা একটিই মাত্র মেল

★   jholfhoring@gmail.com

এখানেই মেল করে লেখা পাঠাতে হবে

🎁তিনটে বক্স কী জিনিস চলুন দেখি👀

১ম বক্স : এটা মাসিক ওয়েব ম্যাগ হিসেবে কাজ করে। (আমরা মাসিকের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময়ই বিষয় রাখি তাতে করে লেখার সংখ্যা কম হলেও মানের সংখ্যা বাড়ে)

★ মাসিক সংখ্যা য় লেখা পাঠাতে গেলে
গ্রুপ ফোলো করতে হবে।

২য় বক্স : আমরা হঠাৎ একদিন সংখ্যা করি সেটা বিশেষ দিন হতে পারে আবার নাও হতে পরে। এই সংখ্যায় কোনো সময় বিষয় থাকে বা থাকেনা যদিও সেটা নির্ভর করে দিনের ওপর।

★ লেখা পাঠাতে গেলে গ্রুপ ফোলো করতে হবে।

৩য় বক্স: আমরা টপাটপ সংখ্যা অর্থাৎ দৈনিক সংখ্যাও করছি তবে এরজন্য লেখা পাঠাতে গেলে মেলের বিষয় বডিতে উল্লেখ করবেন এটা টপাটপের জন্য আর নিজস্বী এবং সঙ্গে ঠিকানা আরও একটা কথা লেখার সারসংক্ষেপ দু-লাইনে বলে দেবেন।

আর কিছু নিয়মাবলী আছে

১.) আমরা লেখার সাথে কোনো ছবি নিই না (মাসিক আর হঠাৎ একদিনের জন্য, কিন্তু টপাটপ সংখ্যায় নিজস্বী লাগবেই)

২.) আমরা প্রাপ্তিস্বীকার পাঠাই  কিন্তু তার মানে এটা নয় যে তাঁর লেখা মনোনীত হয়ে গেছে আর মনোনীত হলে জানাতে পারিনা তারজন্য দু:খিত।

৩.) আচ্ছা আমরা সব ছাপিত লিঙ্ক এই গ্রুপে দিই তবে এবার থেকে যারা মেল করবেন আর যাঁদের মনোনীত হবে তাঁদেরও দিয়ে দেব ভেবেছি।

৪.) আরও একটা কথা বলি যারা মেল করবেন তাদের আমরা আমাদের গ্রুপের লিঙ্ক দেব পাড়লে যুক্ত হবেন উপকৃত হবো কারণ ৩ নং কথাটা রাখা নাও যেতে পারে।

আরও জানতে ফোন করতে পারেন এই নম্বরে, ম্যাগাজিনে আছে নম্বর দেখুন এখানে দিলাম না তার কারন আপনারা ম্যাগটা এই সুযোগে ঘুরে আসলেন। লিঙ্ক নীচে

Www.jolfhoring.blogspot.com

★ দরকারি কথা:- এমন যদি কেও আছেন যাঁরা সমকামিতা সংখ্যা অর্থাৎ আগের সংখ্যায় লেখা দিয়েছিলেন কিন্তু লিঙ্ক পাননি তাহলে ওপরে দেওয়া লিঙ্কে ক্লিক করে দেখে নিন, আপনার লেখা থাকলে এই নম্বরে জানাবেন ৭৪০৭৭৬০১৭২।

  ২. নং দরকারি কথা না বললেই নই সেটা হলো আমরা মাসিক সংখ্যায় লেখা জমা দেবার যে লাস্ট তারিখ দিয়ে থাকি তার দু-দিন আগেই পাঠাবেন অনেক সময় লাস্ট তারিখের দু-দিন আগে থেকেই কাজ শুরু করি বাছাই পর্বের। কেন?  প্রশ্ন করবেন না তাইতো আগেই বলে দিলাম যেন দোষ দিতে না পারেন।

সবার লেখাই ভালো,স্বচ্ছতার প্রকাশ রাখে
       বেশ ভালো থাকবেন কলম চলুক।

                                       ধন্যবাদ

শুক্রবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৮

নিষিদ্ধ প্রেম ।
অরূপ সরকার ।
তোমায় হৃদয় দিয়ে ছুঁতে চেয়েছি
শরীর দিয়ে নয় ।
প্রশ্ন টা তো এখানেই; শুধু ভালোবাসলে কী ভালোবাসা পাওয়া যায় ?
চেয়েছিলাম তো মন গহীনে প্রবেশ করতে।
পারিনি আমি সেটা করতে।
হযতো আমার যোগ্যতা নেই ,
তোমার গহীনে প্রবেশ করার ।
চেয়েছিলাম তো দুটি সত্তা মিশিয়ে দিতে।
পারিনি তোমার সাথে নিজেকে মেলাতে,
আজ বুঝতে পারছি শর্তহীন ভালোবাসার ও শর্ত থাকে।
কী করব বল নিজেকে বাঁধতে পারিনি কোনো শর্তের বাধনে।
নিজের মতই গুছিয়ে নিযেছি নিজের মতন করে।

অঙ্কন  ব্রততী রায় ।

 অঙ্কন

রবিবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৮

মা গো পোশাক টা পাল্টে নাও
-----------------------------------

মাতৃক্রোড়ে যে শিশুর থাকার কথা ছিলো
সে এখন ডাস্টবিনে শুয়ে,
পিঁপড়ের কামড় খেয়ে কান্না জুড়ে দিয়েছে
মুখে এক ফোটা দুধ নেই -
তাকে আর্বজনার মধ্যে ফেলে গেছে।
এ কোন মা?  এ কেমন মা?
কুমারী মা,সধবা মা আবার কী
মা তো মা য় হয়, তাই না হে পৃথিবী।
পিঁপড়ের কামড়ে চোখ খোবলানো যে শিশুটা
এই মাএ অন্ধ হয়ে গেল
ছাড়পএ পেয়ে এই পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হওয়ার জন্য
ওর তো কোনো দোষ ছিলো না,
কলঙ্ক ঢাকতে সেই মা তো হাত ধুয়ে-মিশে যাবে শত যোজন দূরের ভিড়ে
সন্দেহের কাঁটা সরিয়ে অন্য এক চেনা স্রোতে,
নাড়ী ছেড়ার কুসুম গন্ধে অথবা স্তনবৃন্তের দুধের ভারে
তার হৃদয়ে কি কোনো সংলাপ ফুটে উঠবে না,কোনো যন্ত্রনা?
আবার হয়তো ডাস্টবিনে পড়বে চরন চিহ্ন
মৃত শিশুটাকে ঘিরে তখন মানুষের কৌতুহল,কোলাহল
সে তখন জনতার একজন হয়ে ধিক্কার জানাচ্ছে
অনামী মায়ের উদ্দেশ্যে,
কিন্তু সূক্ষতার সেই টানটা তো বাউলের একতারার মত বেজেই চলেছে....
ধিক্কার জানাতে গিয়ে বারবার মনে পড়েছে শিশুটার সঙ্গে তার আধঘণ্টারর আলাপ...
চোখের জলেতে লেখা হয়ে গেছে হৃদয়ের সংলাপ।
হে পৃথিবী সর্বসংহা পৃথিবী মানুষ এখন আর মানুষ নেই..
মানুষের জামা কাপড়ের পোষাকটা পাল্টে দাও এবার-
সেখানে থাক,মানবতার বস্ত্র,
ডাস্টবিনের শিশুদের রক্ষার্থে তুমি কী করতে পারো-
কী হতে পারে,তোমার সেই অস্ত্র??????

রবিবার, ১ এপ্রিল, ২০১৮



♠সম্পাদকীয় কলম♠

তরল জীবাশ্ম ঘটিত ভাসমান ইনভারশন্
-------------------------------------------------------
                               অনুরূপা পালচৌধুরী



উল্টোদিকের অবয়বটির চুলের ঢেউ, তারপর চোখের গভীর কালো খাত থেকে করা পাকের লাল উঠোন ভাঙা ২টো ঠোঁট, উবু হয়ে বসে যায় কাচের বিছানায়।ঠোঁট উঠতেই চোখ দেখে নেয় তার সেপ্,নরম ভাঁজের ফাঁক গুলোর স্পষ্ট ছাপ।ধীরে ধীরে স্তন,কোমর,নিতম্ব ছুঁয়ে কাচপর্দা ভেদে বেরিয়ে আসে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম আমিত্ব।সবচেয়ে সুন্দর নারী তখন নিজেই মসৃণ আয়নাতলে। তবে কি আমি/আমরা সমকামী নই? কেনো নই? নিজেকেই তো সবচেয়ে সুন্দর দেখি আর ভালোবাসি। তা কিবা পুরুষ কিবা নারী।

সমকামিতা বা Sexual Inversion-কে একধরনের যৌন বিপর্যয় হিসাবে ধরা হয়।ভারতীয় আইনে অপরাধ এবং ধর্মে পাপান্তর। Homosexuality বা সমকামনার ভাবনা না থাকলে নিজেকে সুন্দর রাখা/নিজেকে ভালোবাসা তো অসম্ভব, আর তা না থাকলে মানুষের নিজের বাঁচার তাগিদটাই তো ফুরিয়ে যেত।কারণ মানুষ নিজেকে আগে সবচেয়ে বেশী ভালোবাসে এবং সুন্দর দ্যাখে তা সে সাজে-পোশাকে বা শরীরে যাই হোক না কেনো।তাই সমকামনার ভাবনায় আমরা প্রত্যেকেই পর্যবসিত। কিন্তু সমকামনা থাকলেই যে সে সমকামিতায় অন্তর্গত হবে এমনটা নয় তাহলে সবাই সমলিঙ্গেই যৌনসংগমে লিপ্ত হতো।

বলা যেতে পারে সৃষ্টিনাশের উপকরণ এই সমকামিতা তাই ধর্মে এই বিধান নেই।অথচ ধর্মেরই সাধন-ভজনে উচ্চারিত দুর্গাস্তব :

নমস্তে শরণ্যে শিবে শানুকম্পে,নমস্তে
জগদ্ ব্যাপিকে বিশ্বরূপে।নমস্তে জগদ্ বন্দ্য-পদারবিন্দে,নমস্তে জগত্তারিণি ত্রাহি দুর্গে।।

নারীসুলভ ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বররেই পুরুষালী রূপ হিসাবে দূর্গার আরাধোনা।মাথায় ব্জ্রাঘাত হলো? ভুল বকছি!!!কেনো দেবতা বলে কি তার সমকামিতায় ফুল,বেলপাতা ছুড়ে পূণ্য সঞ্চয়ের মোমমধু বিকোতে থাকে?আবার বিষ্ণুর নারীসুলভ মোহিনী রূপটাও তো বিশ্বসংসারে দেবতাদের অমর করে রাখে অমৃত খনির মতো।

অথচ শ্যামলদা পাপবিদ্ধ!!!তবু সেই শ্যামলীদি কে ( ওরফে শ্যামল ) শুনতে হয়- 'মদ্দা মাগী হইছে'।হাস্যরসের পানপাত্রে তখন লিঙ্গ সুরা চলতে থাকে।স্থানান্তরিত হতে বাধ্য হয় শ্যামলীদি।আমি গার্লসস্কুলে পড়তাম।এই প্রসঙ্গে মনে পড়ে গেলো অর্চিতা আর পৌলমীর সমপ্রেম।ওরা ছিলো তখন সকলের চোখে বিপথগামী সন্তান।ওরা পরস্পর বিয়ে করতে চেয়েছিলো।হয়তো অর্চিতার বংশবৃদ্ধির দায়বদ্ধতা ছিলো।দায় ছিলো সমাজ আর পরিবারের, তাই হয়তো ওর ভালোবাসার খবর বাড়ির চৌকাঠ মাড়ায়নি।এখন ও অর্চিত তবে ১পুরুষকর্তৃক, কিন্তু পৌলমির খবর পাইনি।জানিনা ও অর্চিতা হতে পেরেছে কিনা নাকি নিজ অর্চনায় লিপ্ত আছে।

আসলকথা হলো মানসিক ভারসাম্যতা।সত্যি কি মানসিক ভারসাম্য-০ হয়ে পরছি না আমরা!সমতা যদি শান্তি দিতে পারে সমকামিতায় অসুখ কোথায়!ফড়িং ডানায় ভেসে যাক সমভাবনার সমকাম।সকল সমকামিতা সম্পন্ন মানুষদের জানাই শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।


লজ্জাবতী পাতায় ১পত্তন ঝুলন্ত চাঁদ

২য় কালজয়ী ৩য় স্তনবৃন্ত : আদরআঁচর

বিধিবদ্ধ বিকালের রেলিঙে ওড়নাশাড়ী মেঘবতী

         নখের ওপর নখ্
জরায়ু ভেঙে জরায়ু।গোপন ভাঁজে গোপন


সহবাসের জলবিছানা : ১নারী আদিমতম পাপবাক্সে আরো ১নারী

গাঢ় হয় কালোজামের ক্লিটোরিয়াস্ ভোর

সমরেখায় আড়াআড়ি গর্তে মাংসল সমুদ্র

                  আমাদের ভুল!
             সরলরেখায় গ্রহণ হয়


যোনির ঠোঁটে বিকৃত সূর্যের ১টুকরো উপদ্বীপীয় আগুন রাখি

রোদের আড়ালে প্রজাপতির অসুখ ভেজে

মানো / না মানো তরল বীর্যের বুদবুদে ডুবন্ত বিকলাঙ্গ সমাজের নগ্ন যৌনতা

আত্মসুখ। সুখপাখি ওড়ে। গর্ভহীন। সমলিঙ্গে অবশ ঠিকানা
          সমকামিতা সংখ্যার সুচিপত্র
  কবিতা                                         নাম
1. সমকামিতা                          সুনন্দ মন্ডল
2. রক্তিম অভিবাদন।              রুনা দত্ত
3. সমকামিতা                       সুদীপ্ত সেন

          গল্প                                     নাম
4. ফেক একাউন্ট                   সুদীপ্ত দেবনাথ
     
      প্রবন্ধ                                        নাম
5. সমকামিতা কি একটি নিষিদ্ধ।      সায়ন্তনী বক্সী         
শব্দ ?

                             💐**-----------------***💐                   
1. ______সমকামিতা
                   --সুনন্দ মন্ডল

সভ্যতার এ-গলি থেকে সে-গলি
রাতের অন্ধকারে জন্ম নেয় কামনার চিড়ে।
জনমানবের আর্ততা কিংবা কান্নার পলি
মিলিয়ে যায় পণ্যতার সমাজে।

সমকামনা তথা সমকামিতা সেতো
ভালোবাসার ফসল।
কে কার প্রিয়, কার কাকে ভালো লাগে?
বলবে কে? এই সমাজ!

নদীর স্রোতে বয়ে যায় সব আবর্জনা
ভাবতে শেখায় পবিত্র সে জল।
উভলিঙ্গের কামনার তীব্রতায়
ধরা পড়ে এক বাস্তব কঠোর প্রেম।

সম কিংবা অসম লিঙ্গের টান
জন্ম দেয় শুধুই পবিত্রতা
ভালোবাসায় অপার বিশ্বটাও
জন্ম দিক নিঃশর্ত মানব জীবন।
          ---------------
2.) রক্তিম অভিবাদন
         ----রুনা দত্ত


 সমকামী আর সমকামিতা এক নতুন বোধের

 অনুরণন,

 মনের অলিন্দে ঘটে যাওয়া এক নিঃশব্দ নীরব

 বিস্ফোরণ।

 শরীর তো মনেরই অনুসারী,মনের ভেতরেই এই

 ভাবনার রূপান্তর,

 মন অভিমুখী শরীর নিয়েই তাই যেন সমকামী

 মানুষটির জন্মান্তর।


আর দশটা মানুষের মতোই সমকামী মানুষরাও

ভীষণভাবে মানবিক মানুষ,

মানুষের মতোই স্নেহ মায়া মমতার বন্ধনে খুঁজে

নিতে চায় একমুঠো সুখ।

পৃথিবীর খোলা আকাশে মেলে দিতে চায় আপন

 মনের যতো ভাবনা,

 ভালোবেসে ভালোবাসার মানুষকে কাছে টেনে

 নিতেও নেইযে কোনো দোটানা।


 আমরাও যুগ থেকে যুগান্তরের পথে হেঁটে চলেছি 

 আজ আধুনিকতার পথ বেয়ে,

 তাহলে কেন এতো সংকোচ কেন এতো দ্বিধা

  সম্পর্কেরএই নতুন সমীকরণে।

 ভালোবাসা, প্রেম অতীতে বা বর্তমানে কোনদিনই

 মানেনি কোন বাঁধন,

 তাহলে কেন অযথা বিধিনিষেধের কড়াকড়ি কেন

 এই নির্লজ্জ শাসন।


 সমাজ, মানুষ এবার তোমরা ভাবনায় চেতনায়

 একটু আধুনিক হও,

 সমকামীরাও মানুষের মতোই মানুষ ,এ বিশ্বাসে

 সাহসী হাতদুটো বাড়াও।

 ভালোবেসে উদার মনে এনতুন সম্পর্ককে করো

 আজ গ্রহণ,

 মুক্তমনা হয়ে সমকামী মানুষদের জানাও উজ্জ্বল

 রক্তিম অভিবাদন। 

3 .{ সমকামিতা }
  --------------সুদীপ্ত সেন

কালরা পেরচ্ছে
ঋতু-রা চমকায়।
ধূলো-তো উড়ে যায়
কেও-বা ধমকায়!

ওরা-তো নিঃস্ব
কিছু-তো বোঝেনা,
ওরা-তো শূন্য
যৌনতা আসেনা?

ওরা-তো হাত পাতে
কমেতে রেগে যায়
আসলে রাগতা--
না পারা চুসে খায়!!

---------------*--------------
আমার ঠিকানা
পাইকর,বীরভূম(ভারত)

[ভালোলাগা থেকে আর দাদার লেখা দেখে লেখায় আগ্রহ প্রকাশ।]
                    ফেক একাউণ্ট

                   - সুদীপ্ত দেবনাথ 


ঘড়ির ছোট কাঁটাটি তখন বারোর ঘরে ৷ হালকা হাওয়া বইছে ৷ আকাশে কোনো তারা নেই ৷ শুধু আছে একটা এঁটো চাঁদ ৷ সায়ক তখন ছাদের রেলিং এ বসে কানে হেডফোন দিয়ে তারা গুনছে ৷

হেডফোনে বাজছে "চাঁদ কেন আসে না আমার ঘরে..." ৷


হঠাত সায়কের ফোনে নোটিফিকেশন ৷

আশ্চর্য হল সায়ক ৷ এত রাতে আবার কে কি পাঠাচ্ছে ?

ফোনটি হাতে তুলে নিতেই চোখে পরল 'সায়নী রয়' এর ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট ৷

ও ! কি খুশি সায়কের ! লাফিয়ে উঠে দাঁড়াল সে৷

সঙ্গে সঙ্গে ফেসবুকের সেই ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট একসেপ্ট করে একটি 'হাই' মেসেজ পাঠিয়ে দিল৷

আর ঠিক তার পরের মুহুর্তেই সায়নীর প্রতিত্তর চলে এল ৷

শুরু হল তাদের কথপকথন ৷

এদিকে ঘড়ির কাঁটা কখন যে বারোর ঘর ছেড়ে দু'এর ঘরে চলে এসেছে , তা খেয়ালই করে নি সায়ক ৷

কথা চলতে চলতে সায়ক হঠাতই ভালোবাসার সেই তিনটে শব্দ পাঠিয়ে দিল সায়নীর মেসেজ ইনবক্সে ৷


তারপর মিনিট তিনেক কারোর কোনো মেসেজ নেই ৷ হাওয়াও আর বইছে না ৷ টুকরো চাঁদটা মেঘে ঢেকে গেল ৷ গুমট গরম লাগতে লাগল সায়কের ৷


তারপর সায়নীর আবার মেসেজ এল

"আই লাভ ইউ টু " ৷

সায়ক আনন্দে লাফিয়ে উঠল ৷


এদিকে নিচের ঘরে ঘুমিয়ে থাকা তার মা  সায়কের ঘুমন্ত বাবাকে ডেকে বলল  "এই শুনছ, ছাদে বোধ হয় চোর উঠেছে ৷"

ঘুমন্ত সায়কের বাবা এপাশ থেকে ওপাশে ফিরে বলল "ও সব মন চুরি গো ৷ করতে দাও৷"

তার মা আবারও বলে উঠল "কি লোক বাবা ! বাড়িতে চোর ঢুকেছে , আর উনি ঘুমোচ্ছেন !"


তারপর সায়ক আবার সায়নীকে মেসেজ করল "আই লাভ ইউ থ্রি" ৷ সায়নী উত্তর দিল "আই লাভ ইউ ফোর" ৷

এসময় আবার সায়কের কোনো এক বন্ধু সায়ককে ফোন করেছে ৷

ফোনটি রিসিভ করেই সায়ক বলল "কিরে বিসি ? এত রাতে ফোন ?"


তার বন্ধু উত্তর দিল "আর বলিস না ভাই ৷ রাতে ঘুম আসছে না যে ৷ কোলবালিসে কি মন ভরে !"


"মন বলিস না শালা ৷ বল শরীর , শরীর ভরে না৷"


"হ্যাঁ ভাই, সেটাই ৷ তো একটা জিএফ জোগার করে দে ৷"


সায়ক জানাল "ও ভাল কথা ; আমার একটা নতুন মাল জুটেছে ৷"


"কে ভাই কে ? কে ? প্রোপোজ করেছিস ?"


"হ্যাঁ, হ্যাঁ ; আবার রিপ্লাইও দিয়ে দিয়েছে ৷"


"বলিস কি ! নাম কী তার ?"


"সায়নী ৷"


"সন্ধ্যেই দেখা হল তোর সাথে ৷ তখন তো কিছু বললি না ?"


"আরে এখনই তো সব হল ৷"


"কোথায় ?"


"ফেসবুকে ৷"


"হুস ! তাই বল ৷ ওসব অনেক দেখা ৷"


"কী দেখা ?"


"মেয়েটাকে একটা ভিডিও কল কর, তাহলে উত্তরটা পেয়ে যাবি ৷"


বন্ধুর কথা মতো সায়ক - সায়নীকে ভিডিও কল করল ৷ কলটি রিসিভ হল ৷

অপর প্রান্তে শুধুই অন্ধকার, দেখতে পেল সায়ক ৷

- "একটু আলোতে এসো সায়নী ৷"


ঘরের আলোটি জ্বলে উঠল ৷ সায়ক দেখল বিপরীতে একটি ছেলেকে দাড়িয়ে থাকতে ৷ সায়ক অবাক ৷ সে ছেলেটিকে বলল "সায়নী নেই ?"

তবুও চুপ করে দাড়িয়ে ছেলেটি ৷

সায়ক আবারও জিজ্ঞাসা করল - "আপনি কি সায়নীর দাদা ? আমি সায়নীর বন্ধু ৷ সায়নীকে একটু ডেকে দেবেন প্লিজ ৷"


ছেলেটি উত্তর দিল "তুমি যাকে দেখছ , সেই-ই সায়নী ৷"


হঠাত এমন সময় আকাশের মেঘ গর্জন করে উঠল ৷


ছেলেটি আবারও বলল "আমার আসল নাম সায়ন ৷ মজা করছি না ৷ আই অ্যাম সিরিয়াস ৷ আমি সত্যিই তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি ৷ ডু ইউ লাভ মি ?"



                          -----------------
                   5.সমকামিতা কী একটি নিষিদ্ধ শব্দ?

                                         -----(সায়ন্তনী বক্সী)

আজ এই একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়েও আমাদের দেশের সিংহভাগ মানুষই 'সমকামী ' বা 'সমকামিতা' শব্দটি শুনলে ঠিক যেন ভূত দেখার মতোই চমকে ওঠেন! যেন একটি নিষিদ্ধ শব্দ বা অভিধান বহির্ভূত শব্দ উচ্চারিত হয়েছে। বলতে কোনো দ্বিধা নেই, তথাকথিত শিক্ষিত মানুষেরাও সমকামীদের প্রতি বিরূপ ধারণা পোষন করেন। সমকামিতা তাঁদের কাছে যেন অশ্লীলতম ঘটনা;আর সমকামী সম্পর্কে লিপ্ত নারী-পুরুষ ভিনগ্রহের কুৎসিত দর্শন জীব! সত্যি কথা বলতে কী আধুনিক যুগের মানুষ হয়েও মধ্যযুগীয় সামন্ততান্ত্রিক ধ্যানধারণা পোষণ করে চলেছি আমরা।

হ্যাঁ আমরাই; কারণ যুবসম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসাবে বলতে পারি আমার প্রজন্মের অনেক ছেলে-মেয়েরাই সমকামিতার মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা বা শব্দটির অর্থ সম্বন্ধে সঠিকভাবে অবগত নয়। বরং অনেক young starকে বলতে শুনি ইস্ কী অসভ্য! কী নোংরা সব! সুতরাং পুঁথিগত বিদ্যা যে মানুষের চেতনার বিকাশ ঘটায় না সেতো বোঝাই যায় এই সমস্ত মন্তব্য থেকে। তবে সমকামের স্বরূপ জানার বা বোঝার পূর্বে 'লিঙ্গ' সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণার প্রয়োজন আছে বলে অন্তত আমি মনে করি। লিঙ্গ শব্দের আক্ষরিক অর্থ বাহ্যিকভাবে যতটা সহজ বলে মনে করা হয়, সত্যিকার ততটা সহজ না। লিঙ্গ শুধুমাত্র দেহগতই নয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, মনস্তাত্ত্বিক আবার মনোগতও বটে। আমাদের সমাজে বেশিরভাগ মানুষই ভাবেন যেকোন সুস্থ মানুষই শরীর ও মন উভয় দিক থেকেই হয় পুরুষ অথবা নারী। এর ব্যতিক্রম যদি কিছু হয় অর্থাৎ একজন পুরুষ যদি পুরুষের প্রতি এবং একজন নারী যদি একজন নারীর প্রতি যৌন আকর্ষণ বোধ করে তবে তারা মানবসমাজে হয়ে যায় নির্বাসিত।

লিখতে লিখতে বারবার নিজের কিশোরীবেলার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। তখন অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী --- বালিকা বিদ্যালয়ে পড়ি। আমাদেরই সহপাঠী দুজন ছাত্রীর মধ্যে সমকামী সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে এলো; সমস্ত স্কুলের মধ্যে রীতিমত ছি ছি রব উঠল। সত্যি কথা বলতে কী,  আমি নিজেও সেই ছি ছির সাথে গলা মিলিয়ে ছি ছি করে উঠে ছিলাম। কারণ আমার নিজেরও তখন সমকামিতা বিষয়ে বিতৃষ্ণার মনোভাব ছিল। সে যাই হোক, ঘটনাটির উল্লেখের পিছনে আমার একটাই উদ্দেশ্য আর সেটা হল এই যে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চিন্তাভাবনার পরিবর্তন একান্তভাবেই প্রয়োজন। আমার চিন্তাজগতকে সব দৈনতা থেকে মুক্ত হতে না পারলে এই প্রবন্ধ লেখায় হাত দিতাম না। সেই কিশোরী বয়সের চিন্তাভাবনার সাথে এই যৌবনের ভাবনাচিন্তার বিস্তর ফারাক। তা বলে সমস্ত মানুষের মননে এই পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় না। তাঁরা প্রাপ্তবয়স্ক তো হয়ে যান, কিন্তু প্রাপ্তমনস্ক হন না। পুরুষশাসিত সামন্ততান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার taboo গুলোকে   কিছুতেই দূরে ছুড়ে দিতে পারেন না সবলে!

প্রকৃতির বিচিত্র এই সৃষ্টির খেলায় শুধু যদি পুংলিঙ্গ ও স্ত্রীলিঙ্গের অস্তিত্বই থাকত, তাহলে উভলিঙ্গের কোনো অস্তিত্বই থাকত না। উভলিঙ্গ অর্থাৎ যে শরীরে পুং ও স্ত্রী লিঙ্গের সহাবস্থান থাকে। এখন রহস্যময়ী প্রকৃতিতে ঘটা এই ঘটনাকে কি আখ্যা দেবেন রক্ষণশীল সুধীজনেরা? অশ্লীল না কুৎসিত? জগতে কামের বিভিন্ন প্রকারভেদ দেখতে পাওয়া যায়: সমকাম, বিষমকাম, উভকাম, রূপান্তরকাম, বহুকাম, সর্বকাম, নিষ্কাম। এদের কোনোটিই অপ্রাকৃতিক নয় এবং অন্যান্য কামের মতো সমকাম সম্পর্কেও এই একই কথা প্রযোজ্য। সমকামকে ব্যতিক্রম বলা চলে যেহেতু কম সংখ্যায় ঘটে। কিন্তু কোনোমতেই অস্বাভাবিক, কুৎসিত প্রভৃতি বিশেষণে বিশেষিত করা উচিত না। প্রকৃতির অজস্র প্রজাতির মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে ভিন্নতর যৌনপ্রবৃত্তি। ভেড়া, শিম্পাজি, সিংহ, জিরাফ,হাতি, ডলফিন, পেঙ্গুইন, হাঁস ইত্যাদি প্রাণীরা বিভিন্ন সময়ে সমকামে লিপ্ত হয় বলে সমীক্ষায় জানা গেছে। মানুষের নিকটতম আত্মীয়  'Bonobo' যাদের DNA এর ৯৮% শতাংশ সাদৃশ্য রয়েছে; এরা কিন্তু প্রচন্ডরকম উভকামী বলে জানা গেছে। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, প্রকৃতি শুধু প্রজননের দ্বারা বংশবৃদ্ধির মন্ত্রের উপাসক না, আরও অনেক হিসেবই চলে তার দুনিয়ায়। বিবর্তনের তত্ত্ব দিয়ে বিচার করলে দেখতে পাওয়া যাবে সমকামীরা মোটেই মানব সমাজের অপ্রয়োজনীয় অংশ নয়।

সমাজে আত্মসম্মান নিয়ে মানুষের মতো বাঁচার অধিকার সব লিঙ্গের মতো সমকামীদেরও সমানভাবে থাকা উচিত। এ ব্যাপারে যারা অবিশ্বাসী,  তারা মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী। যারা নারী-পুরুষের কাম ব্যতীত অন্য সব কামকে প্রকৃতি বিরুদ্ধ বলে স্বঘোষিত ফতোয়া জারী করছে, সমকামীদের উপর নির্যাতন করছে তাদের জনমত নির্বিশেষে শিক্ষিত ও সচেতন করা অত্যন্ত জরুরি বিষয়।

ভারতবর্ষ স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশ। অপগন্ড মূর্খেরা সংখ্যায় বেশি বলেই তাদের মূর্খামি নির্বিচারে মেনে নিতে হবে কথা আমাদের গণতন্ত্রও বলে না, সংবিধানও স্বীকার করে না।সমকামীদের নিজেদের অধিকার রক্ষার আন্দোলন চলছে চতুর্দিকে। ওঁরা চাইছেন নিজের লিঙ্গ নিজে নির্ণয় ও সেই নির্ণয়কে জনসমক্ষে প্রকাশ করতে। নিগৃহীত না হওয়া, মানসিক রোগী হিসেবে চিহ্নিত না হওয়া, বিবাহ, যৌন সঙ্গম, সন্তান দত্তক গ্রহণ প্রভৃতি বিষয়ে তাঁরা নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়ে নিরন্তর সংগ্রাম করে চলেছেন। যে পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় এই একুশ শতকেও নারীকে নারী হয়ে জন্মানোর জন্য প্রতিনিয়ত নিগৃহীত হতে হয় সেখানে সমকামীদের নিজেদের মৌলিক অধিকারের জন্য যে আরও সুদীর্ঘকাল যাবৎ সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে একথা সহজেই অনুমেয়।

   
           

        

                              দীপশিখা----

----------------------------------------------------------------

দীপের মন ভাল নেই। বাড়ী ঢুকতেই বাবার চীৎকার কানে এল।মায়ের ফোঁপানি, আবার তাকে নিয়ে ঝামেলা। বাবা বলছে--

তোমার ঐ নেকু সখী পনা ছাড়তে বল ছেলেকে। দু চোক্ষের বিষ। তার দুই দিদি, ১ জনের বিয়ে হয়ে স্বামী নিয়ে বিদেশে, আর মেজদি ইউনিভার্সিটি তে রিসার্চ করে। দীপ ও কলেজে পড়ে, এবার ফাইনাল ইয়ার। আসলে তার চেহারাটাই সমস্যার কারন। মাঝারি লম্বা, ফর্সা,মুখ খানা লাবন্যে ঢলঢল একটু মেয়লি গোছের। সে স্বভাবেও মেয়েদের মত নরম। সে ভেবে পায় না এই চেহারার জন্যে তো সে দায়ী নয়। তবু সবাই তাকে নিয়ে হাসি মশকরা করে। বাবা দিদি রোজ মা কে কথা শোনায়। সে মায়ের মত  মুখ পেয়েছে, বড়দি সুশ্রী,আর মেজদি বাবার মত চোয়াড়ে কঠিন দেখতে। বাবার মেজাজ সারাক্ষন সপ্তমে চড়ে থাকে। মা শান্ত শ্রীময়ী। মুখ বুজে সব সহ্য করে। ছোট থেকেই দীপের মেয়েদের মত সাজগোজ করতে ভাল লাগে। মায়ের ড্রেসিং টেবিলে রুজ লিপস্টিক মাখতো, মায়ের শাড়ি পরতো নিজের শার্টের সাথে। পাড়ার ফাংশনে, কলেজের অনুষ্ঠানে সে নারী চরিত্রে অভিনয় করত। পাড়ার বোস কাকু তাকে হাতে ধরে পারফেকশন শিখিয়েছেন। মা আর বোস কাকু ছাড়া আর কারুর স্নেহ জোটেনি তার কপালে। সে লুকিয়ে নাচের স্কুলেও ভর্ওি হয়েছে। মা লুকিয়ে তার খরচ দেন। বাবা জানলে বিশাল ঝড় উঠবে। তার খুব ইচ্ছে একজন ধ্রুপদী নৃত্য শিল্পী হবে। দেশ - বিদেশের মঞ্চে পারফর্ম করবে। যখন পুরোপুরি নিজে দাঁড়িয়ে যাবে তখন মাকে এখান থেকে নিয়ে গিয়ে নিজের কাছে রাখবে।কলেজে তার বান্ধবীর সংখ্যা বেশি। আর ছেলের দল তাকে নিয়ে মজা করে, বিরক্ত করে। শুধু একজন বাদে। সে হল অনিরুদ্ধ।  তাকে দীপ ভীষন ভালবাসে। সে কোনদিন কলেজে না হলে তার বুক খাঁ খাঁ করে। সে যত্ন করে নোটস তুলে রাখে। কারন অনি সায়েন্সের স্টুডেন্ট হলেও ইংরেজী বিষয় টা তাদের এক। তাই সারাদিনে ঐ সময়টাতেই তাদের দেখা হয়। অনি তার সাথে ভাল ব্যবহারই করে, কিন্তু একটু ঘনিষ্ট হবার চেষ্টা করলেই বিরক্ত হয়। তবু দীপের তার প্রতি মোহ যায় না। এদিকে ১ দিন একটা ঘটনা ঘটল। কলেজের কয়েকটা ছেলে তাকে প্রায়ই টানাটানি করত। জোর করে চুমু খাবার চেষ্টা, গায়ে হাত বুলনো এসব। সে হাতজোড় করে নিষ্কৃতি চেযেছে কিন্তু ওরা তাতে কান দেয় নি। একদিন ক্লাস ছুটির পর লাইব্রেরিতে পড়াশুনার জন্যে গিয়েছিল। পড়তে পড়তে কখন কলেজ ফাঁকা হয়ে গেছে বুঝতে পারেনি। করিডরে ঐ ছেলেদের ২ জন তাকে টেনে নিয়ে যায় ছাদে। তারপর শ্লীলতা হানি করে। কোনরকমে ছাড়িয়ে  পালায়। ছেলেগুলো শাসায় কাউকে বললে মেরে ফেলবে। তাও সে সাহস করে প্রিন্সিপালের কাছে কমপ্লেন করেছিল। উনি অবিশ্বাসি চোখে তাকিয়ে শুনলেন। কিন্তু প্রমান দিতে বললেন। কারন তেনার মনে হয়েছিল ছেলেরা আবার ছেলেদের গায়ে হাত দেয় নাকি? তারা তো মেয়েদের নিয়েই ইন্টারেস্ট দেখায়! ঐ ছেলেদের একজন কোন প্রভাবশালী নেতার ছেলে, কলেজের পরিচালন কমিটির হোমরা চোমরা পদে আছেন তাই কিছু করা কঠিন তিনি তাকেই সতর্ক হতে পরামর্শ দিলেন। সে বুঝল তার জন্যে কেউ মুখ খুলবে না।আজকাল অনি ও পাওা দেয় না। সে কলেজের সেরা সুন্দরীর প্রেমে পড়েছে। তার সাথেই সময় কাটায়। এদিকে তার জীবনের যে ধ্রুবতারা ছিল সেই মা মারা গেল হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকে। তার আর কেউ রইল না। সে ঠিক করেছে তার যা ভাল লাগে তাই করবে। সে মেয়েদের মত শাড়ী, গয়না পরে রাস্তায় বেরতো।পাড়ার লোক টিটকিরি দিত, হাসত। বাবার কানে বিষ ঢালার লোকের অভাব হল না। বাবা প্রথমে তাকে শাসালেন, তারপর ও সে একই রকম আছে দেখে বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দিলেন ত্যাজ্য করে। প্রথম দিকে দু একজন বন্ধুদের বাড়ীতে থেকে নাচের স্কুলেই ছোট বাচ্চাদের নাচ শেখাতে লাগল।আত্মীয়রা তো জায়গা দিলই না উল্টে গালাগালি করত। দেখা হলে মুখ ফিরিয়ে নিত। কোন হস্টেলে তার জায়গা হল না। ছেলেদের মেসে কিছুদিন ছিল কিন্তু ঐ বিরক্ত করত। সেখানেও স্পষ্ট বলে দিল মেয়েলি পোষাক আসাক সে ব্যবহার করতে পারবে না। এরই ভেতর দূর্গাপূজো চলে এল। সবাই সেজে গুজে হৈ চৈ করছে। সেও সুন্দর করে সেজে পাড়ার পূজোয় কাকীমাদের সাথে হাত লাগায়। পাড়ার মেয়েদের সাথে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে হপিং করে। এলো দশমী। এবার দূগ্গা মায়ের যাবার পালা। রাএে মহা সমারোহে আলোক সজ্জায়, ব্যান্ড পার্টির গানে ছেলে মেয়ে বুড়ো সবাই উল্লাসে নাচতে নাচতে শোভা যাএা সহকারে এগিয়ে চলে। দীপ এখন নিজের নাম বলে বেড়ায় দীপশিখা। সেও নাচতে নাচতে সবার সাথে গলা মেলায় ---

" বল দুগ্গা মাইকী। আসছে বছর আবার হবে "। বাবু ঘাটে গিয়ে ঠাকুর নামানোর তোড়জোড় চলে। প্রচুর ক্লাব থেকে প্রতিমা নিরঞ্জনে এসেছে। অনেক ভীড়ে দীপশিখা নিজের পাড়ার লোকদের হারিয়ে ফেলে। এদিকে বেশ কিছুদিন আগে কিছু লোক তাকে পুরুষ সমকামী দের লালসা মেটাতে তাকে টাকার বিনিময়ে অফার দেয় কিন্তু দীপ তাদের তাড়িয়ে দিয়েছিল। এখানে তাদেরকে দেখে সে একটু অন্ধকারের লুকিয়ে থাকার চেষ্টা করে। এভাবেই তাদের সাথে আলো অন্ধকারে লুকোচুরি চলতে থাকে। একসময় একটা বজ্র কঠিন হাত তার মুখ চেপে ধরে।তাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায়। সে হাত পা ছোঁড়ে, কিন্তু কোন লাভ হয় না।এর ভেতর তার হাত পা বেঁধে, মুখে প্লাস্টার আটকে দিয়ে নির্যাতন চলতে থাকে। একসময় তার হুঁশ হারায়। যন্ত্রনায় দীর্ণ হয় সে। পরদিন প্রিন্সেপ ঘাটের কাছে তার লাশ পড়ে থাকে। পুলিশ অপরিচিত বডি মর্গে ঢোকায়। দীপশিখা সকাল বেলার খবর কাগজে টি ভি তে হেড লাইন হয়ে যায়। সমাজের অবহেলা, বাড়ীর নন্ কোঅপারেশন তাকে বাঁচতে দিল না।



গল্প : আলপনা বন্দ্যোপাধ্যায়