একলা সময়
পূজা ব্যানার্জ্জী
আঠারোটা সিঁড়ি ভেঙে সবুজ
রঙের বন্ধ দরজার চাবির
মালিক আমি।
রঙচটা পাপোশ পেরোলেই
আমার সাজানো একলা ঘর।
অফিস ফেরার পরের
সময় কাটানোর একমাত্র জায়গা হল লোহার রেলিং ঘেরা এই ব্যালকনি।
চিনি কম চা -এর কাপে
চুমুক দিতে দিতে আনমনে
বিস্কুটের অর্ধেকটা চা-এ
মিশে কেমন একটা বেস্বাদ
করে দিলো পুরো ব্যাপারটা।
একলা চেয়ারে একলা আমি সাথে একলা কাপে হাফ বিস্কুট।
এখানে বসে থাকলে বাড়ির বড় টকটকে লাল রঙের মেঝের কথা বড্ড মনে পড়ে।
মাঠের ওপাশের কোয়াটারগুলোকে
দেখলেই,বড় আপন লাগে।
ঐ একলা হলুদে সবুজে
কোয়াটারগুলো আমার মতোই
কেমন যেন সঙ্গহারা।
সামনের কিছু কোয়াটারের
জানলা বেয়ে তার ছায়া গিয়ে পড়েছে
নিচের পিচে রাস্তার উপর।
চারিদিকে অন্ধকার।
টিমটিমে কয়েকটা
ল্যাম্পপোস্ট একা একা
দাঁড়িয়ে।ওদিকের ঐ
ঝোপগাছটা আজ কেটে
ফেলে ফাঁকা করে দিয়েছে।
পাশের আম গাছ আজ থেকে একা।
হারমোনিয়ামের উপরের কয়েকটা সুর হালকা হয়ে ভেসে আসছে,দূরের কোনো বাড়ি থেকে।
সারাদিনের পর একা থাকাটা যেন
বড়ই শান্ত,বড়ই চুপচাপ।
আজকাল তো ঘড়ির কাঁটা নড়ার
শব্দ স্পষ্ট শুনতে পাই।
রোজই ভাবি আবার
লেখালিখি শুরু করব।
বাড়ি থেকে আসার সময় ট্রলিতে
মনে করে লেখার ডাইরিটা নিয়েও এসেছি।ছ'মাস হয়ে গেল ওটা কাবার্ডেই রয়েছে,হাত পড়েনি।
প্রতিদিনের হিসেবী জীবনে
ভাবনায় ভর দেবার
সাহস এবার জুগিয়ে ফেলতেই হবে।
দুদিক-চাপা ইঁটের সারিতে
একা একা দমবন্ধ হয়ে আসে।
খোলা বাতাসে দুহাতে
মনখুলে বাঁচতে চাই।
বাঁচতে চাই।
ঠিকানা:-
ভদ্রেশ্বর
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন