** ইঁটভাটা **
------দীপাঞ্জনা সন্ন্যাসী
বাসের জানলাটা খোলা, ঠাণ্ডা ধুলো ভর্তি বাতাসে চুল গুলো মুক্তি পাবার প্রত্যাশায় আটকে আছে।।
চোখের পালকের টিপটিপানিতে অশুভ আর শুভরা অকাতর নৃত্য করে চলেছে।।।
হাতের একফালি চাঁদ, তাতে ভর্তি রিল।
আর খোজার চেষ্টা সাধারণের মধ্যে অসাধারন বস্তু।।
পাশের সিটে বসে থাকা ওই ক্যমেরা নামক চাঁদের মনিব সাহেব ।।
হালকা দাড়ি ,হলুদ পাঞ্জাবী ,আর বঙ্গ বাবুদের মতো আমার আদরের চার চোখ।।
বড্ড প্রিয় এই মানুষটি কেবল তার চেহারাবন্দি হাসিতে নয়, হাতের যাদু আর মনের ছোয়ার মিলের মাধুর্যে।।
হঠাৎ চোখদুটি নৃত্য বন্ধ করে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সারা দিয়ে উঠল।।
কান দুটি শুনতে পেল বাস নামক যন্ত্রের পাদুকা দ্বয়ে কাঁটা ফুটেছে,,সেই কাঁটা বের করতে বেশ কিছু সময় লাগবে।।।
বসে থাকার আড়ষ্টতা কাটাতে প্রিয় মানুষটি
সাথে নেমে পরলাম চাঁদের ব্যবহার কার্যে।।
নামতেই চোখে পড়ল একখানি যমগৃহ (অর্থে ইটভাটা).,
ক্যামেরায় দুচার খানি মডেল সেজে প্রিয় মানুষটির সাথে ছবি তোলার ইচ্ছেতে ঢুকে পড়লাম যমপুরিতে।।
ঘোরাঘুরি করে একটা ভাঙা দেওয়ালের পাশে
পোস দিচ্ছি আর চাঁদের ব্যবহার করছি।।
পোস দিচ্ছি আর চাঁদের ব্যবহার করছি।।
একখানি ডিপি তুলে দেখতে গিয়েই চোখে পড়ল দুটো গোল্লা গোল্লা চোখ।।
কাঁদা মাখা দেহ আর একখানি ফোলা পেট,
দেখে মনে হয় যেন কোন দানবের বাচ্চা।।
নিজের খুশিতে ডাক দিলেই সে দৌড়ে পালিয়ে গেলো।।।।
ওর পিছন পিছন কিছু দূর গিয়েই দেখতে পেলাম এক অদ্ভুত রাজ্য,,
যেখানে ভর্তি কিছু খেতে না পাওয়া ছানাদের গোল্লা
গোল্লা চোখ।।
বলার ভাষা ছিল না তবুও ওই। দেহগুলো দেখে চোখ গুলো মায়ায় ভরে গেল।।।
এক বৃদ্ধের কর্কশ শব্দে নিরবতা টা কাটল,,
উনি বললেন এখানে নাকি আসা বারণ।।
কারণ, ওই না খেতে পাওয়া বাচ্চা আর
আমার হাতে থাকা ওই ক্যামেরা।।।।
যদি, ওই বাচ্চা গুলিকে ক্যামেরা বন্দি করে নিয়ে যাই, আর যদি তাদের শ্রমিকের অভাব হয়ে পড়ে এই ভয়ে।।।।
মুখের উপর কোন প্রতিবাদ করতে পারিনি
শুধু কষ্টে নিজের চোখদুটিকে সামলে রেখেছিলাম।।
যমপুরি থেকে বেরিয়ে আসতে পিছন থেকে এক আচমকা টান।।
ডাক দিদি এটা কি?
এই দিদি ডাকে হাজারটা হৃদয়ও কেঁদে ওঠে।।।
কিন্তু ভাবলে আবাক লাগে যে "এরা কি সেই শিশু শ্রমিক?? " যাদের রাখা দণ্ডনীয় অপরাধ??
নাকি সত্যি দানবের ডানাকাটা বাচ্চা?????
উলঙ্গ সমাজের নোংরা ধূলিকনা।।।
**-----
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন