ভিড় থেকে সরে আসি। সমুদ্র জানে না কারও নাম। অনেক লেখার শেষে সাদা পাতা এখনও আরাম...শ্রীজাত

বুধবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৮

আমন্ত্রিত

কবিতার ছন্দ থেকে

১.)

হৈমন্তিক শীতলতায় জন্মদিন এলে
          নেচে ওঠে জলফড়িং।
ছটফটে তারুণ্যের খোঁজে
       নেচে ওঠে তিড়িং বিড়িং।
সদ্য শরৎ পেরোনো দিন গুনে গুনে
        এখন তার মহা আনন্দ
জন্ম মোড়কে স্পন্দিত মুখোশে
            কত না রঙিন ছন্দ!
এভাবেই এগোক, উড়ুক ডানা
                     মেলুক পাখা
দেশ বিদেশের ওয়েবে সহাস্য কলতানে
        বিস্তৃত হোক--তার শাখা।

____শুভ জন্মদিন জলফড়িং_____

                মৌসুমী ভৌমিক
               
সম্পাদক কবিতার ছন্দ ব্লগ
         ------------


২.)অপরাজিতা.
কৌশিক কোনার
................................................

অপরাজিতা....
সব শেষে তুমিই জিতে গেলে।
আমার জন্য হেরে যাওয়াই ঠিক,
এতেই আমি অভ্যস্ত।
হেরে যাওয়ার মাঝেও অনন্য সুখ আছে,
অবশ্য যারা জিতে যায় এই সুখ তাদের জন্য নয়।
অপরাজিতা...
আমি জানি তুমি হারতে ভালবাসোনা,
জয়তিলক তোমার কপালের টিপ হয়ে থাকে আজন্ম।
আর আমি কোনদিন জিততেই পারিনি,
নিন্দুকেরা বলে ব্যর্থ মানুষ।
যদিও আমার আফশোস নেই কনামাত্র,
কিছু মানুষ হেরে যাবার জন্যই জন্ম নেয়।
আর আমি সেই পাড়াতেই থাকি,
যদিও তোমার অন্যপাড়ায় বাড়ি।

অপরাজিতা.....
তোমার বিজয়বানী লোক মুখে শুনি,
আমার হিংসা হয়টা মোটেও।
যা কিছু ভালো তোমার হোক ক্ষিতি কি?
তোমার জন্য ফুল মালা,
আমার জন্য না হয় কাঁটার আঁচড়।
তোমার জন্য কোজাগরী,
আর আমি অমাবস্যার অন্ধকারে সুখ খুঁজি।
তোমার জন্য ঝলমল প্রাচুর্য্যের বৃত্ত্য,
আমি নিতান্ত সমান্তরাল পথে হাঁটি।

অপরাজিতা....
এমন ভাবেই দুজনে ভালো থাকি,
এক জীবনে ভালো থাকাটা জরুরি।
কে কিভাবে ভালো থাকে তার ধ্রুব নিয়ম বোধহয় নেই,
দ্বীপান্তরে কেউ সুখী আবার কেউ মনমরা।
তুমি জয়মাল্যে উচ্ছ্বল,
আর আমি পরাজয়ের কলঙ্কে সাবলীল।

এই ভালো,
 বৈপরীত্যেও  জীবন খুঁজে নেয় নিজের মতন পূর্ণতা,
দূরত্বেই বেঁচে থাকো পরবাশী অপরাজিতা।
                   -----------

৩.)
সময়টা হারিয়ে যায় কত সহজে.....
  রীতা রায়

সময়টা হারিয়ে যায় কত সহজে!

যখন গভীর রাতে হঠাৎ ডেকে ওঠা
অচিন পাখির মতো সুর ভেসে আসতো,  দূরদূরান্তের ছায়াপথ ধরে.

কখনো সন্ধার ঘরফেরা বলাকার    নিভৃতে খসে পড়া একটি পালক,
বুলিয়ে দিয়ে যেত মনের আশপাশ
স্নিগ্ধতার পরশে...

কখনো দ্বৈপ্রহরিক নিঃঝুমতার
ঝাঁঝমাখা রোদ্দুর,দগ্ধ ক্ষত শুকিয়ে
হেঁটে আসা একান্তের অপরাহ্ন...

আবার কখনো, ঊষষীর প্রথম   তির্যক রশ্মিমালা,স্বরের বিচ্ছুরনে
অলক্ষ্যে হয়ে ওঠা হৃদয়ের মানুষী...।

সহস্র মূল্যের সেই আমিকে আজ
হোয়াট্স অ্যাপ,ফেসবুকের সাধারন মেসেন্জারের মতোই দেখাচ্ছে...,
অচেনার আনন্দ খুঁজতে গিয়ে
পথ হারানো বালিকা.....

সময়টা হারিয়ে যায় কত সহজে!
যখন একটা রিংটোনে লেখা হত
রূপকথার  গোটা একটা গল্প,
মিসড্ কলে বাবুই বাসার সুখ....।

 ধূপের ধোঁয়ায় ঘর ছিল পরিপূর্ণ,
উদ্বেলিত একটাই অনুভূতি !
এখন অগুণিত ধূপকাঠির সৌরভে
ক্ষণেকের স্বস্তি...

ঘিয়ে ভাজা লুচির আস্বাদ মুছিয়ে,
হাজারো বনস্পতির ব্র্যান্ডনেমে
ফুটপাতের ফুচকার স্বাদ,
মুখে দিলেই যা মিলিয়ে যায় ...

থেকে থেকে ওঠে টক্ ঝাল মিষ্টির
চোঁয়া ঢেকুর...
ওদিকে,স্মৃতির কিনারে বেজে ওঠে
পুরোনো সেই সব সুর...
একটানা...ফাঁকা ফাঁকা সুর...।

সময়টা হারিয়ে যায় কত সহজে!

*******************************

৪.)স্বপ্নের রঙ _____
দেবার্ঘ্য চ্যাটার্জী
***************
আজও স্বপ্ন জাগে নিদ্রাহীন নয়নে,
বৃষ্টিভেজা প্রাতে স্বপ্নহীন অজানা তৃণে ।
আকাশ রঙিন হয়েছে কালো মেঘে,
যে রঙ শুধু আমাকে ভালোবাসে ।
তাইতো বারবার ধরা দিয়েছো স্বপ্নে,
হয়েছি ম্লান কালো কাজল নয়নে ।
মৃত্যুর আগুন কখনো পারে নি ছুঁতে,
তোমার পরশে ভিজেছি নিশিতে ।
সাগর হয়েছে উচ্ছলিত ভরা বর্ষণে,
নদী মিশেছে পথ ভুলে স্বপ্নের রঙে ।
মাতাল হয়েছি মুক্ত পাখিদের কলহে,
তোমার রঙ উজ্জ্বলিত স্বপ্ন কাননে ।
আজও ভোরকে জাগিয়ে দেয় রবির আলো --
স্বপ্নরা জাগে না, আকাশ আজ নেই কালো ।
তবুও স্বপ্ন জাগ্রত হয় তোমার পরশে,
মৃত্যহীন প্রাণ শিহরিত মলিন হরষে ।
আকাশ ভরা তারার মাঝে আঁকি চিত্র,
স্বপ্নের রঙ করেছে হরণ তোমার চিত্ত ।
              -----------

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন