ভিড় থেকে সরে আসি। সমুদ্র জানে না কারও নাম। অনেক লেখার শেষে সাদা পাতা এখনও আরাম...শ্রীজাত

রবিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৯

কবিতা


অনুজ্জ্বল বৈশাখের প্রসাদ
সুনন্দ মন্ডল

বিষণ্ন বিকেলে অবহেলায় অবহেলায় ক্ষত বিক্ষত হতে থাকা যুবকটি এক বৃদ্ধের মতো কুঁজো হয়ে বসে পড়ল বটের নীচে।
 
কেউ একজন বলেছিল পূর্ণিমা চাঁদের হাই দেখতে পাবি!
সেও বলেছিল একরাশ হতাশা আর অবজ্ঞার বাতাবরণ কিছুই না এই সমাজের চৌকোনে।
আর অমুক বলেছিল নির্ভেজাল বাস্তুভিটেতে সুখের মোড়কে দুঃখটাকেও সঙ্গী করে চলতে হয়।
তমুকও বলতে চেয়েছিল কিছু মানুষের মানসিক বৃত্তির পরিকাঠামো।

রঙিন স্বপ্নগুলো বাস্তবতার ভিড়ে হারিয়ে ফেলা যুবকের চোখের কোনে এখনও সেই অনামিকা।
যে খড়কুটোর মত আশা জোগাবে ভেবে দিনের মলিনতা ঢাকতে চেয়েছে যুবকটি।
রাতের জ্যোৎস্না মেখেও কোটরাগত শরীরের হাড়ে জ্বালানির মতো অবসন্নতার আস্তাকুঁড়।

বর্তমান অতীত হবে একদিন, আবার অতীত বর্তমানকে সঙ্গে করে ভবিষ্যতে পৌঁছায়।

অনামিকা সাতাশ পেরিয়ে অপেক্ষায় সেই সদ্য পেরিয়ে যাওয়া পঁয়ত্রিশের আর মনে পড়ে বসন্তের বিকেল, কমলার গাছ, রামপুরহাট প্ল্যাটফর্ম, ঝালমুড়ি, ভাঁড়ের চা, অভাবী পকেটে কয়েকটা খুচরো আর হলুদ পাঞ্জাবির ওপরে জেগে থাকা এতবছরের বেকারত্বের ঘানি টানা যুবকটির ম্লান মুখ! আর প্রার্থনা করে একটা সরকারি লেবেল দেওয়া কর্মীর হাসিমুখ।

পয়লা বৈশাখে স্নান সেরেছে বাঙালি, শুদ্ধ হতে চেয়েছে সমাজ। কিন্তু অনুজ্জ্বল এই সদ্য কয়েকটা পাকা দাড়ি গজিয়ে ওঠা মুখটি। 

চাকরি নেই, কাজ নেই, হয়তো অনামিকাও নেই জীবনের রথে। তবুও টাকা ছাড়া মূল্যহীন হয়ে পড়া শুকনো চেহারায় অনামিকার মুখোমুখি হতে চায়! কিন্তু বাস্তব আর মনুষ্যত্ব কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে অনিমেষের।

নতুন বছর, নতুন পয়লা, নতুন বৈশাখ, আরও একটা বেকার জীবন। অস্তিত্বহীন সংকটে ভালোবাসা ছাড়াই সমাজের চৌকাঠ। যা এই অনুজ্জ্বল বৈশাখে প্রসাদের নমুনা!
                    


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন