ভিড় থেকে সরে আসি। সমুদ্র জানে না কারও নাম। অনেক লেখার শেষে সাদা পাতা এখনও আরাম...শ্রীজাত

রবিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৯

গল্প


নববর্ষের সেকাল -একাল

সেকাল নিয়ে বলতে গেলে আমার ছোটোবেলা, মানে নব্বইয়ের দশকের কথা মনে পড়ে। আমার জন্ম থেকে বেড়ে ওঠা সবটাই বীরভূমের সিউড়িতে। জ্ঞান হয়ে থেকেই দেখতাম, সেদিনটা বছরের অন্যান্য দিনগুলির চেয়ে অনেকটাই আলাদা। সকাল সকাল স্নান করেই একটা নতুন ফ্রক পেতাম। সেটা পড়েই কাছের কোনো মন্দিরে যেতাম মমা-বাবার সাথে পুজো দিতে। তারপর জলখাবারে লুচি, আলুর দম আর মিষ্টি। দুপুরে ভাত, ডাল, সবজি, মাছ, চাটনি,দই। এইদিন থেকে প্রথম আমাদের বাড়িতে কাঁচা আম খাওয়া শুরু হতো। সারা দিনটা বেশ আনন্দের সঙ্গে কাটতো। তারপর বিকেলে বাবা,মা,আমি আর ভাই, চারজন মিলেই বেরোতাম দোকানে দোকানে হালখাতা করতে। কতগুলো যে মিষ্টির প্যাকেট হতো! ওই প্যাকেটের ভিতর মিষ্টির সঙ্গে গুটকা কচুরি থাকতো, ওটা খেতে খুবই পছন্দ করতাম আমি। বাড়ি ফেরার আগে বাবা আমাদেরকে আইসক্রিম বা কোনো ঠাণ্ডা পানীয় খাওয়াতেন। কি যে ভালো কাটতো দিন টা!

এখন নববর্ষের জাঁকজমক বেড়েছে। চৈত্রের প্রথম থেকেই জামাকাপড়ের দোকান গুলোতে সেল শুরু হয়। সেল চলে বড় বড় মল গুলোতেও। মানুষের কেনাকাটাও বেড়েছে। আড়ম্বর বেড়েছে দোকানগুলোতেও। হালখাতার প্যাকেট গুলোতেও লেগেছে আভিজাত্যের ছোঁয়া। মানুষ আগের চেয়ে অনেক বেশি মাতোয়ারা হয় এই দিনটিতে। খাদ্যাভ্যাস  এবং জীবনযাত্রার মানের সঙ্গে সমঞ্জস্য রেখে, খাদ্যতালিকারও বদল হয়েছে।
 সাহিত্য জগতেও এই দিনটির গুরুত্ব এখন অপরিসীম। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার নববর্ষ সংখ্যা প্রকাশিত হয় । প্রকাশিত হয় বিভিন্ন গল্প ও কাব্য গ্রন্থও। টিভির বিভিন্ন চ্যানেলগুলোতেও বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান চলে দিনভর। সর্বোপরি এই দিনটির গুরুত্ব উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। বাঙালি হিসাবে সত্যিই গর্ববোধ করি আমাদের এমন একটা রীতির জন্য।
সব্বার জন্য শুভ নববর্ষের একরাশ শুভেচ্ছা রইলো। ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন। সৃজনে থাকুন।
       
কলমেঃ-পাপিয়া মণ্ডল।

1 টি মন্তব্য: