একবিংশ শতাব্দী আর ‛ওরা’....
ওদের আকাশ তখন শুয়েছিল অন্ধকার বিছানায়।
আমি ঠান্ডা ঘরে গদির বিলাসিতায়।
স্বীকারোক্তির ঠোঁট আর কথার মধ্যেকার কথা বলে উঠল,
“কিছু না পার, কলম তো ধরতে পারিস।
কলম ধরতে তো আর টাকার মালিশ লাগে না,
ভয় নেই; নিঃস্ব সবাই হয় না।”
বিষাদের আনন্দ হল একটু ওদের জন্য।...
ওদের কাছে আমি অচেনা। তবে,
ওদের সাথে অচিরস্থায়ী একটা সম্পর্ক আছে, আমার।
সম্পর্কটা শুধুমাত্র দেনার, তাও কখনো সখনো!
পৃথিবী নাকি নীলগ্রহ!
কিন্তু ধনী অস্পৃশ্যের মাধ্যাকর্ষণে
পৃথিবী আজ পয়সা মোড়া গ্রহও বটে।
আর এই খুচরো পয়সার পৃথিবীর কাছে, ওরা অমূল্য।
অর্থনীতির কাছেও ওরা অনাত্মীয়।
সহজ ভাষায় বলতে গেলে ওরা অযাচিত
আমাদের বিলাসিতার অন্ধ চোখে।
অন্ধ আর কি!
অন্ধ বলেই তো সবাই আর অন্ধ কবি হোমার নয়।
সূর্যের বাসি উদয় আর; ওদের বাসি ভাঙা ঘুম
অনেকটা একরকম।
বেরিয়ে পড়ে বস্ত্রহীন বস্ত্রে। চটি ছাড়া ফাটা পায়ে।
কখনো ছেড়া একটা দামী ঝুলিও সাথে,
কখনো ফাঁকাই রেখাকাটা হাতে।
লক্ষ্যে অলক্ষ্যেই “দিন না বাবু”,
অথবা ভদ্র জামায় অহেতুক টানাটানি,
কখনো সভ্যতার পায়ে আঙুল রাখা,
কখনো জল চোখে শুধু নির্বাক চাহনি।
সকালের এইই এক নির্মম শুরু ওদের জীবনে।
রোজ! রোজ!
এ এক নির্দয় প্রয়োজন।
এক উশৃঙ্খল বাধ্যবাধকতা।
এক অফুরন্ত টানাপোড়েন।
এক অর্থহীন ভাগ্য।
অবশ্য নিঃস্বদের নাকি ভাগ্যই থাকতে নেই!
সকাল পেরিয়ে বারো,
বারো পেরিয়ে দুই - তিন।
কিছু নিস্তব্ধ চিৎকার আর শূন্য অভিযোগে
ওদের পেট ভরে,
দৈনন্দিনের সহবাস তাই উপবাস আর অভিশাপের সাথেই।
মায়ের কথায় জেনেছি, ‛সহ্যের বহু গুণ’,
আমরা বলি, ‛ওরা অভ্যস্তই বটে! সহ্য তো করতেই হবে।
কালো বাজারের সৎ টাকা তো আর
ওদের জন্য ব্যয় করা যায় না।
ওরা অভ্যস্ত। অভ্যস্ত হতেই হবে।’
জানতে পেরেছি পাজর গোনা শরীর আর
ভেতরে ঢোকা পেটের সাথে,
ওদের নাকি একটা মনও আছে।
হ্যাঁ, হ্যাঁ, মন; ----- মরা মন।
মরা মন তো এক প্রকার মরা দেহই।
সব শব আর ওদের অসফল চিৎকার জড়াজড়ি করলেও,
পূর্বপুরুষ -- আমি -- আমরা,
এক সুন্দর থিয়েটারের মনমুগ্ধ হওয়া রোমাঞ্চকর দর্শক।
অতীতের বোবা চোখ ছিল।
আমাদের অন্ধ ঠোঁট।
আমরা রং বদলাতে পারা সভ্য জাতের মানুষ।
সভ্যদের সাথে ফুটপাতে থাকা অসভ্যদের মেলবন্ধন;
তা তো আর সম্ভব নয়।
একটা বাজার চলতি সন্মান আছে।
সন্মানের দর দামও আছে।
আচ্ছা;
আদিমের এই বর্ণবিদ্বেষ সত্যিই কি এক সরল উন্নয়ন?
জানি, ভারী শব্দে অনাহারীদের পেট ভরে না।
ফাকা পেটের শিক্ষায় ওরা আজ সর্বজ্ঞানী।
রাস্তার কোনা কাঞ্চিতে পড়ে থেকেও,
ভূগোলের ইতিহাসে স্থান না পাওয়া, ওরা যুদ্ধরত সৈনিক।
রাজনীতির অনুর্বর স্নেহে লালিত হয়েও,
ওরাই আজ পাশবিক।
ওরা ফাঁকা পেটেই সুখী হতে চাওয়া দুগ্ধহীন স্তন্যপায়ী।
আর আমরা?
আমরা, ভদ্র সমাজে মানুষ হওয়া এক নিঃস্ব ধনী।।
সুমি সাহা...
.... .... ...... ..... ..... ..... ... ..... ... ........ .... .... .... .... .
ওদের আকাশ তখন শুয়েছিল অন্ধকার বিছানায়।
আমি ঠান্ডা ঘরে গদির বিলাসিতায়।
স্বীকারোক্তির ঠোঁট আর কথার মধ্যেকার কথা বলে উঠল,
“কিছু না পার, কলম তো ধরতে পারিস।
কলম ধরতে তো আর টাকার মালিশ লাগে না,
ভয় নেই; নিঃস্ব সবাই হয় না।”
বিষাদের আনন্দ হল একটু ওদের জন্য।...
ওদের কাছে আমি অচেনা। তবে,
ওদের সাথে অচিরস্থায়ী একটা সম্পর্ক আছে, আমার।
সম্পর্কটা শুধুমাত্র দেনার, তাও কখনো সখনো!
পৃথিবী নাকি নীলগ্রহ!
কিন্তু ধনী অস্পৃশ্যের মাধ্যাকর্ষণে
পৃথিবী আজ পয়সা মোড়া গ্রহও বটে।
আর এই খুচরো পয়সার পৃথিবীর কাছে, ওরা অমূল্য।
অর্থনীতির কাছেও ওরা অনাত্মীয়।
সহজ ভাষায় বলতে গেলে ওরা অযাচিত
আমাদের বিলাসিতার অন্ধ চোখে।
অন্ধ আর কি!
অন্ধ বলেই তো সবাই আর অন্ধ কবি হোমার নয়।
সূর্যের বাসি উদয় আর; ওদের বাসি ভাঙা ঘুম
অনেকটা একরকম।
বেরিয়ে পড়ে বস্ত্রহীন বস্ত্রে। চটি ছাড়া ফাটা পায়ে।
কখনো ছেড়া একটা দামী ঝুলিও সাথে,
কখনো ফাঁকাই রেখাকাটা হাতে।
লক্ষ্যে অলক্ষ্যেই “দিন না বাবু”,
অথবা ভদ্র জামায় অহেতুক টানাটানি,
কখনো সভ্যতার পায়ে আঙুল রাখা,
কখনো জল চোখে শুধু নির্বাক চাহনি।
সকালের এইই এক নির্মম শুরু ওদের জীবনে।
রোজ! রোজ!
এ এক নির্দয় প্রয়োজন।
এক উশৃঙ্খল বাধ্যবাধকতা।
এক অফুরন্ত টানাপোড়েন।
এক অর্থহীন ভাগ্য।
অবশ্য নিঃস্বদের নাকি ভাগ্যই থাকতে নেই!
সকাল পেরিয়ে বারো,
বারো পেরিয়ে দুই - তিন।
কিছু নিস্তব্ধ চিৎকার আর শূন্য অভিযোগে
ওদের পেট ভরে,
দৈনন্দিনের সহবাস তাই উপবাস আর অভিশাপের সাথেই।
মায়ের কথায় জেনেছি, ‛সহ্যের বহু গুণ’,
আমরা বলি, ‛ওরা অভ্যস্তই বটে! সহ্য তো করতেই হবে।
কালো বাজারের সৎ টাকা তো আর
ওদের জন্য ব্যয় করা যায় না।
ওরা অভ্যস্ত। অভ্যস্ত হতেই হবে।’
জানতে পেরেছি পাজর গোনা শরীর আর
ভেতরে ঢোকা পেটের সাথে,
ওদের নাকি একটা মনও আছে।
হ্যাঁ, হ্যাঁ, মন; ----- মরা মন।
মরা মন তো এক প্রকার মরা দেহই।
সব শব আর ওদের অসফল চিৎকার জড়াজড়ি করলেও,
পূর্বপুরুষ -- আমি -- আমরা,
এক সুন্দর থিয়েটারের মনমুগ্ধ হওয়া রোমাঞ্চকর দর্শক।
অতীতের বোবা চোখ ছিল।
আমাদের অন্ধ ঠোঁট।
আমরা রং বদলাতে পারা সভ্য জাতের মানুষ।
সভ্যদের সাথে ফুটপাতে থাকা অসভ্যদের মেলবন্ধন;
তা তো আর সম্ভব নয়।
একটা বাজার চলতি সন্মান আছে।
সন্মানের দর দামও আছে।
আচ্ছা;
আদিমের এই বর্ণবিদ্বেষ সত্যিই কি এক সরল উন্নয়ন?
জানি, ভারী শব্দে অনাহারীদের পেট ভরে না।
ফাকা পেটের শিক্ষায় ওরা আজ সর্বজ্ঞানী।
রাস্তার কোনা কাঞ্চিতে পড়ে থেকেও,
ভূগোলের ইতিহাসে স্থান না পাওয়া, ওরা যুদ্ধরত সৈনিক।
রাজনীতির অনুর্বর স্নেহে লালিত হয়েও,
ওরাই আজ পাশবিক।
ওরা ফাঁকা পেটেই সুখী হতে চাওয়া দুগ্ধহীন স্তন্যপায়ী।
আর আমরা?
আমরা, ভদ্র সমাজে মানুষ হওয়া এক নিঃস্ব ধনী।।
সুমি সাহা...
.... .... ...... ..... ..... ..... ... ..... ... ........ .... .... .... .... .
খুব ভালো..
উত্তরমুছুনভালো লাগলো
উত্তরমুছুন